বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-৪ (পবিত্রতা-উযু
অধ্যায়)- (১২৫-২৮৭টি মোট ১৬৩টি হাদিস)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-৪ (পবিত্রতা-উযু অধ্যায়)
(১২৫-২৮৭টি মোট ১৬৩টি হাদিস)
সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত
সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত
উযূর বর্ণনা।
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
(ওহে যারা ঈমান এনেছ!) তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে
নিজেদের মুখমণ্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত আর মাস্হ করে নিবে নিজেদের মস্তক এবং ধৌত
করে নিবে নিজেদের পা গ্রন্থি পর্যন্ত। (সূরা আল-মায়িদাহ্ ৫/৬)
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ বুখারী
(রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উযূর ফরয হ’ল
এক-একবার করে ধোয়া। তিনি দু’-দু’বার করে এবং তিন-তিনবার করেও উযূ করেছেন, কিন্তু
তিনবারের অধিক ধৌত করেন নি। পানির অপচয় করা এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর ‘আমলের সীমা অতিক্রম করাকে ‘উলামায়ে কিরাম মাকরূহ বলেছেন।
পবিত্রতা ব্যতীত সালাত
কবুল হবে না।
হাদিস নং-১২৫
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তির হাদাস হয় তার সালাত
কবুল হবে না, যতক্ষণ না সে উযূ করে। হাযরা-মাওতের জনৈক ব্যক্তি বললো, ‘হে আবূ
হুরাইরা! হাদাস কী? হাদাস কী?’ তিনি বললেন, ‘নিঃশব্দে বা সশব্দে বায়ু বের হওয়া।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৩৫, ৬৯৫৪; মুসলিম ২/২, হাঃ ২২৫, আহমাদ ৮০৮৪) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৩২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূর ফযীলত এবং উযূর
প্রভাবে যাদের উযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উজ্জ্বল হবে।
হাদিস নং-১২৬
নু’আয়ম মুজমির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ
হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি উযূ করে বললেনঃ ‘আমি
আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামাতের
দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও
মুখমন্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে
যেন তা করে।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৩৬, মুসলিম ২/১২, হাঃ ২৪৬, আহমাদ ৯২০৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
১৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১২৭
আবূ মালিক আল আশ’আরী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক অংশ। ‘আলহাম্দু
লিল্লা-হ’ মিযানের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে দিবে এবং “সুবহানাল্লা-হ ওয়াল হাম্দুলিল্লা-হ”
আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দিবে। ‘সলাত’ হচ্ছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি।
‘সদাকাহ্’ হচ্ছে দলীল। ‘ধৈর্য’ হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর ‘আল কুরআন’ হবে তোমার পক্ষে অথবা
বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সকল মানুষই প্রত্যেক ভোরে নিজেকে ‘আমালের বিনিময়ে বিক্রি
করে। তার ‘আমাল দ্বারা সে নিজেকে (আল্লাহর ‘আযাব থেকে) মুক্ত করে অথবা সে তার নিজের
ধ্বংস সাধন করে। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৪২২, (ই.ফা. ২য় খন্ড, ৪২৫; ই.সে. ৪৪১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
সলাত আদায়ের জন্যে পবিত্রতার আবশ্যকতা
হাদিস নং-১২৮
মুস’আব ইবনু সা’দ (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু
‘উমার (রাঃ) অসুস্থ ইবনু ‘আমিরকে দেখতে গিয়েছিলেন। তখন ইবনু ‘আমির তাঁকে বললেন, হে
ইবনু ‘উমার! আপনি কি আমার জন্যে আল্লাহর কাছে দু’আ করেন না? ইবনু ‘উমার বললেন, আমি
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তাহারাত ব্যতিরেকে
সলাত কবূল হয় না। খিয়ানাতের সম্পদ থেকে সদাকাহ্ও কবূল হয় না। আর তুমি তো ছিলে বাস্রার
শাসনকর্তা। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৪২৩, (ই.ফা. ৪২৬, ই. সে. ৪৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১২৯
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কতগুলো হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার মধ্য থেকে
একটি হাদীস তিনি এভাবে বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের কারো ওযূ নষ্ট হলে পুনরায় ওযূ না করা পর্যন্ত তার সলাত কবূল হয় না।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৪২৫, (ই. ফা. ৪২৮, ই. সে. ৪৪৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
নিশ্চিত না হওয়া
পর্যন্ত সন্দেহের কারণে উযূ করতে হয় না।
হাদিস নং-১৩০
‘আব্বাদ ইব্নু তামীম
(রহঃ)-এর চাচা থেকে বর্ণিতঃ
একদা আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হলো যে, তার
মনে হয়েছিলো যেন সালাতের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিলো। তিনি বললেনঃ সে যেন ফিরে না
যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৩৭, ১৭৭, ২০৫৬; মুসলিম ৩/২৬, হাঃ ৩৬১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৪,
ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৩১
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘কোন মুসল্লী যখন তার পেটের মধ্যে কোন
(গোলযোগ) অনুভব করবে এবং এতে মনে সন্দেহের সৃষ্টি হবে যে, পেট হতে কিছু (বায়ু) বের
হলো কিনা; এমতবস্থায় যতক্ষণ না সে তার কোন শব্দ শোনে বা গন্ধ পায়। সে যেন মাসজিদ
থেকে বের হয়ে না যায়।’ মুসলিম (৩৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৩২
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘শয়তান সলাতে তোমাদের কারও নিকট
উপস্থিত হয়ে ওযু আছে কি নেই এ নিয়ে মনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে। যদি কারো এমন
হয় তাহলে যেন সে তার বায়ু নির্গত হওয়ার শব্দ বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত
ছেড়ে না দেয়।’
বাজ্জার (২৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৩৩
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
অত্র হাদীসের মূল বক্তব্য
বুখারী ও মুসলিমে ‘আবদুল্লাহ বিন যায়দ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত রয়েছে। [
হাদীসের শব্দ হচ্ছেঃ (আরবী) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিকট অভিযোগ দেয়া হলো যে, কোন ব্যক্তি সলাতে এ ধারণা করে যে, তার কিছু হয়ে গেছে
(তখন কী করবে)? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে শব্দ
পাওয়া বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত পরিত্যাগ করবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৩৪
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
মুসলিমেও আবূ হুরাইরা
(রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৩৫
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
আর হাকিমে আবূ সা‘ঈদ হতে
‘মারফু’ রূপে বর্ণিত আছে, “যখন শয়তান তোমাদের কারো নিকট এসে বলে যে, নিশ্চয় তুমি
বায়ু নিঃস্বরণ করেছো তখন সে যেন বলে ‘নিশ্চয়ই তুমি মিথ্যা বলছ।” ইবনু হিব্বানে
এই শব্দেঃ ‘তুমি মিথ্যে বললে’ কথাটা মনে মনে বলবে।
যঈফ। হাকিম (১৩৪), ইবনু হিব্বান (২৬৬৬), তাঁদের উভয়ের বর্ণনাতে
পূর্ণ হাদীসটি রয়েছে (আরবী) যতক্ষণ না সে নিজ কানে এর আওয়াজ শুনে অথবা নাকে গন্ধ
পায়।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
৬. অধ্যায়ঃ
হালকাভাবে উযূ করা।
হাদিস নং-১৩৬
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়েছিলেন, এমনকি তাঁর নিঃশ্বাসের শব্দ হতে লাগলো। অতঃপর
তিনি সালাত আদায় করলেন। সুফিয়ান (রহঃ) আবার কখনো বলেছেন, তিনি শুয়ে পড়লেন, এমনকি
নাক ডাকার আওয়ায হতে লাগলো। অতঃপর দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন। অন্য সূত্রে সুফিয়ান
(রহঃ) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ আমি এক রাতে আমার খালা
মাইমূনা (রাঃ)-এর নিকট রাত কাটালাম। রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঘুম থেকে উঠলেন এবং রাতের কিছু অংশ চলে যাবার পর আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ঝুলন্ত মশক হতে হালকা ধরনের উযূ করলেন। রাবী ‘আমর (রহঃ)
বলেন যে, হালকাভাবে ধুলেন, পানি কম ব্যবহার করলেন এবং সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন তিনি যেভাবে উযূ করেছেন আমিও সেভাবে উযূ করলাম এবং এসে
তাঁর বাঁয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। সুফিয়ান (রহঃ) কখনো কখনো يسار (বাম) শব্দের
স্থলে شمال বলতেন। তারপর
আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ধরে তাঁর ডান দিকে দাঁড়
করালেন। অতঃপর আল্লাহ্র যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সালাত আদায় করলেন।
অতঃপর কাত হলেন আর ঘুমিয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নাক ডাকালেন। অতঃপর মুয়াযযিন এসে
তাঁকে সালাতের কথা জানিয়ে দিলেন। তিনি তার সঙ্গে সালাতের জন্য চললেন এবং সালাত
আদায় করলেন, কিন্তু উযূ করলেন না। আমরা ‘আমর (রহঃ)-কে বললামঃ লোকে বলে যে, আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চোখ ঘুমায় কিন্তু তাঁর অন্তর ঘুমায়
না। তখন ‘আমর (রহঃ) বললেন, ‘আমি ‘উবায়দ ইব্নু ‘উমায়র (রহঃ) কে বলতে শুনেছি,
নবীগণের স্বপ্ন ওয়াহী। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেন, إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ “আমি স্বপ্নে
দেখেছি যে, তোমাকে কুরবানী করছি” – (সূরা আস সাফ্ফাত ৩৭/১০২)।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৩৮, ১১৭ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
পূর্ণরূপে উযূ করা।
হাদিস নং-১৩৭
ইব্ন ‘উমর (রাঃ) বলেন,
‘ভালভাবে পরিষ্কার করাই হল পূর্ণরুপে উযূ করা।’
উসামাহ ইব্নু যায়দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আরাফার ময়দান হতে রওনা হলেন এবং
উপত্যকায় পৌঁছে নেমে তিনি পেশাব করলেন। অতঃপর উযূ করলেন কিন্তু উত্তমরূপে উযূ
করলেন না। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্র রসূল! সালাত আদায় করবেন কি?’ তিনি বললেনঃ
‘সালাতের স্থান তোমার সামনে’। অতঃপর তিনি আবার সওয়ার হলেন। অতঃপর মুযদালিফায় এসে
সাওয়ারী থেকে নেমে উযূ করলেন। এবার পূর্ণরূপে উযূ করলেন। তখন সালাতের জন্য ইক্বামাত
দেওয়া হলো। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর সকলে তাদের অবতরণ স্থলে নিজ নিজ
উট বসিয়ে দিলো। পুনরায় ‘ইশার ইক্বামাত দেয়া হলো। অতঃপর তিনি ‘ইশার সালাত আদায়
করলেন এবং উভয় সালাতের মধ্যে অন্য কোন সালাত আদায় করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৩৯, ১৮১, ১৬৬৭, ১৬৬৯, ১৬৭২; মুসলিম ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮০, আহমাদ
২১৮০১, ২১৮০৮, ২১৮৯০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
এক আঁজলা পানি দিয়ে
দু’হাতে মুখমণ্ডল ধোয়া।
হাদিস নং-১৩৮
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি উযূ করলেন এবং তাঁর
মুখমন্ডল ধুলেন। এক আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। অতঃপর
আর এক আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে অনুরূপ করলেন অর্থাৎ আরেক হাতের সাথে মিলিয়ে
মুখমন্ডল ধুলেন। অতঃপর আর এক আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে ডান হাত ধুলেন। অতঃপর আর এক
আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে তাঁর বাম হাত ধুলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাস্হ করলেন। অতঃপর
আর এক আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে ডান পায়ের উপর ঢেলে দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর আর
এক আঁজলা পানি নিয়ে তা দিয়ে বাম পা ধুলেন। অতঃপর বললেনঃ ‘আমি আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এভাবে উযূ করতে দেখেছি।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৪০, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
সর্বাবস্থায়, এমনকি
সহবাসের সময়েও বিস্মিল্লাহ্ বলা।
হাদিস নং-১৩৯
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী করীম
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলনের
পূর্বে যদি বলে, بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا (আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে শয়তান থেকে
দূরে রাখো এবং যা আমাদেরকে দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখো)- তারপর (এ মিলনের
দ্বারা) তাদের কিসমতে কোন সন্তান থাকলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৪১, ৩২৭১, ৩২৮৩, ৫১৬৫, ৬৩৮৮, ৭৩৯৬; মুসলিম ত্বলাক অধ্যায়, অনুচ্ছেদ
১৭ হাঃ ১৪৩৪, আহমাদ ১৯০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূর মধ্যে একবার করে
ধৌত করা।
হাদিস নং-১৪০
ইব্নু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক উযূতে একবার করে ধুয়েছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৫৭, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূতে দু’বার করে ধোয়া।
হাদিস নং-১৪১
‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন
যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূতে দু’বার করে ধুয়েছেন।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৫৮, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূতে তিনবার করে ধোয়া।
হাদিস নং-১৪২
হুমরান (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি ‘উসমান ইব্নু আফ্ফান
(রাঃ)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা
ধুয়ে নিলেন। অতঃপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি
দিয়ে নাক পরিস্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ধুয়ে এবং দু’হাত কনুই
পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর মাথা মাস্হ করলেন। অতঃপর দুই পা টাখনু পর্যন্ত
তিনবার ধুলেন। পরে বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম উযূ করবে, অতঃপর দু’রাক’আত সালাত আদায় করবে,
যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৫৯, ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩; মুসলিম ২/৩, হাঃ ২২৬, আহমাদ ৪৯৩,
৫১৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৪৩
ইব্নু শিহাব (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উরওয়াহ
হুমরান থেকে বর্ণনা করেন, ‘উসমান (রাঃ) উযূ করে বললেন, আমি তোমাদের নিকট একটি
হাদীস পেশ করবো। যদি একটি আয়াতে কারীমা না হতো, তবে আমি তোমাদের নিকট এ হাদীস
বলতাম না। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে কোন
ব্যক্তি সুন্দর করে উযূ করবে এবং সালাত আদায় করবে, পরবর্তী সালাত আদায় করা পর্যন্ত
তার মধ্যবর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ
সে আয়াতটি হলো : “আমি যে
সব স্পষ্ট নিদর্শন অবতীর্ণ করেছি তা যারা গোপন করে...।” (সূরা বাক্বারাহ : ১৫৯)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬০, ১৫৯; মুসলিম ২/৪, হাঃ ২২৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৬ শেষাংশ,
ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬১ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূতে নাকে পানি দিয়ে
নাক পরিস্কার করা।
‘উসমান (রাঃ),
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাঃ) ও ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হতে এ কথা বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নং-১৪৪
আবূ ইদরিস (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি আবূ হুরায়রা
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি উযূ করে সে যেন নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করে। আর যে শৌচকার্য করে সে
যেন বিজোড় সংখ্যক ঢিলা ব্যবহার করে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬১, ১৬২; মুসলিম ২/৮, হাঃ ২৩৭, আহমাদ ১০৭২৩) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
দু’পা ধৌত করা এবং তা
মাসহ্ না করা।
হাদিস নং-১৪৫
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু
‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে আমাদের পিছনে রয়ে গিয়েছিলেন, অতঃপর
তিনি আমাদের নিকট পৌঁছে গেলেন। তখন আমরা আসরের সালাত শুরু করতে দেরী করে
ফেলেছিলাম। তাই আমরা উযূ করছিলাম এবং (তাড়াতাড়ির কারণে) আমাদের পা মাস্হ করার মতো
হালকাভাবে ধুয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈস্বঃরে বললেনঃ ‘পায়ের গোড়ালিগুলোর জন্য
জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে।’ দু’বার অথবা তিনবার তিনি একথার পুনরাবৃত্তি করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৩, ৬০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
১৫. অধ্যায়ঃ
ওযূ করার নিয়ম ও ওযূর পূর্ণতা
হাদিস নং-১৪৬
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ওযূর পানি চাইলেন। এরপর
তিনি ওযূ করতে আরম্ভ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন), তিনি [উসমান (রাঃ)] তিনবার তাঁর হাতের
কব্জি পর্যন্ত ধুলেন, এরপর কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। এরপর তিনবার তাঁর মুখমন্ডল ধুলেন
এবং ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর বাম হাত অনুরূপভাবে ধুলেন। অতঃপর তিনি
মাথা মাসাহ করলেন। এরপর তাঁর ডান পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুলেন – অতঃপর তদ্রুপভাবে
বাম পা ধুলেন তারপর বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
আমার এ ওযূর করার ন্যায় ওযূ করতে দেখেছি এবং ওযূ শেষে রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার এ ওযূর ন্যায় ওযূ করবে এবং একান্ত মনোযোগের সাথে
দু’রাকা’আত সলাত আদায় করবে, সে ব্যক্তির পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
ইবনু শিহাব বলেন, আমাদের
‘আলিমগণ বলতেন যে, সলাতের জন্য কারোর এ নিয়মের ওযূই হল পরিপূর্ণ ওযূ। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪২৬, (ই.ফা. ৪২৯, ই.সে. ৪৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
উযূর সময় কুলি করা।
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) ও
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে তা
বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নং-১৪৭
‘উসমান ইব্নু
‘আফ্ফান (রাঃ)-এর মুক্ত করা দাস হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উসমান (রাঃ)-কে
উযূর পানি আনাতে দেখলেন। অতঃপর তিনি সে পাত্র হতে উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তা
তিনবার ধুলেন। অতঃপর তাঁর ডান হাত পানিতে ঢুকালেন। অতঃপর কুলি করলেন এবং নাকে পানি
দিয়ে নাক ঝাড়লেন। অতঃপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার এবং উভয় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার
ধুলেন, অতঃপর মাথা মাস্হ করলেন। অতঃপর উভয় পা তিনবার ধোয়ার পর বললেনঃ আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমার এ উযূর ন্যায় উযূ করতে দেখেছি এবং
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার এ উযূর
ন্যায় উযূ করে দু’রাক’আত সালাত আদায় করবে এবং তার মধ্যে অন্য কোন চিন্তা মনে আনবে
না, আল্লাহ্ তা’আলা তার পূর্বকৃত সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৪, ১৫৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
ওযূ এবং ওযূর পরপরই সলাত আদায়ের ফযিলত
হাদিস নং-১৪৮
‘উসমান ইবনু আফফান (রাযিঃ)-এর
আযাদকৃত দাস হুমরান থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উসমান ইবনু
আফফান (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি মাসজিদের বারান্দায় ছিলেন। এমন সময় ‘আসর সলাতের
জন্যে মুওয়াযযিন তাঁর নিকট আসলে তিনি ওযূর পানি চাইলেন এবং ওযূ করে বললেনঃ আল্লাহর
কসম! আমি অবশ্যই তোমাদেরকে একটি হাদীস শুনাব, যদি আল্লাহর কিতাবে একটি আয়াত না থাকতো
তাহলে আমি তোমাদেরকে হাদীসটি শুনাতাম না। (অতঃপর তিনি বললেন) আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি উত্তমরুপে ওযু করে সলাত আদায় করবে
তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪২৮, (ই.ফা. ৪৩১, ই.সে.
৪৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৪৯
হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উসমান (রাঃ) ওযূ
শেষে বললেন যে, আল্লাহর কসম, আমি তোমাদেরকে একটি হাদীস শুনাব। আল্লাহর কসম, যদি আল্লাহর
কিতাবের মধ্যে একটি আয়াত না থাকত তাহলে আমি তোমাদেরকে কখনই হাদীসটি শুনাতাম না। আমি
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, কোন ব্যক্তি যখন
ওযূ করে এবং উত্তমরূপে ওযূ করে (অর্থাৎ ভালভাবে ওযূর স্থানগুলি ভিজায়) তারপর সলাত আদায়
করে তখন তার এ সলাত ও পিছনের সলাতের মধ্যবর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ‘উরওয়াহ
বলেন, আয়াতটি হলঃ “আমি যেসকল স্পষ্ট নিদর্শন ও পথনির্দেশ অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্যে
কিতাবে তা সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়ার পরেও যারা তা গোপন রাখে , আল্লাহ তাদেরকে লা’নাত
দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাদেরকে অভিশাপ দেয়” –(সূরাহ আল-বাকারাহ ২:১৫৯), সহিহ
মুসলিম- হাদিস নং-৪৩০, (ই.ফা. ৪৩৩, ই.সে. ৪৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৫০
আমর ইবনু সা’ঈদ ইবনুল ‘আস
(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উসমান(রাঃ)-এর
নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তিনি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলিমের যখন কোন ফারয
সলাতের ওয়াক্ত হয় আর সে উত্তমরুপে সলাতের ওযূ করে, সলাতের নিয়ম ও রুকু’কে উত্তমরুপে
আদায় করে তা হলে যতক্ষণ না সে কোন কাবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হবে তার এ সলাত তার পিছনের
সকল গুনাহের জন্যে কাফফারাহ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আর এ অবস্থা সর্বযুগেই বিদ্যমান।
সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৩১, (ই.ফা.৪৩৪, ই.সে. ৪৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৫১
‘উকবাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার ওপর উট চড়ানোর
দায়িত্ব ছিল। আমার পালা এলে আমি উট চরিয়ে বিকেলে ফিরিয়ে নিয়ে এলাম। তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে পেলাম, তিনি দাঁড়িয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তখন আমি তাঁর
এ কথা শুনতে পেলাম, “যে মুসলিম সুন্দরভাবে ওযু করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে আল্লাহ্র
প্রতি নিবদ্ধ রেখে দু রাক’আত সলাত আদায় করে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। ‘উকবাহ্ বলেন,
কথাটি শুনে আমি বলে উঠলামঃ বাহ! হা্দীসটি কত চমৎকার! তখন আমার সামনের একজন বলতে লাগলেন,
আগের কথাটি আরও উত্তম। আমি সেদিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনি ‘উমার। তিনি আমাকে বললেন, তোমাকে
দেখেছি, এ মাত্র এসেছো। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আগে বলেছেন, তোমাদের
মধ্য থেকে যে ব্যক্তি উত্তম ও পূর্ণরূপে ওযু করে এ দু’আ পড়বে- “আশহাদু আল্লা- ইলা-হা
ইল্লাল্লা-হু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহূ”। তার জন্য জান্নাতের আটটি
দরজা খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। সহিহ
মুসলিম- হাদিস নং-৪৪১, (ই.ফা. ৪৪৪, ই.সে. ৪৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওযু সম্পর্কেঃ
হাদিস নং-১৫২
‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম আল আনসারী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
যিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহচর্য লাভ করেছিলেন।
রাবী বলেন, তাঁকে বলা হলো যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওযু (কেমন
ছিল) আমাদেরকে দেখিয়ে দিন। তখন তিনি পানির পাত্র আনালেন। তারপর তা থেকে দু’হাতের ওপর
পানি ঢেলে উভয় হাত তিনবার ধুলেন। তারপর পাত্রে হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে এক আজলা পানি
দ্বারা কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। এরূপ তিনবার করলেন। পুনরায় পানিতে হাত ঢুকিয়ে
পানি নিয়ে তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন। আবার হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে দু’হাত কনুই পর্যন্ত
দু’বার করে ধুলেন। তারপর হাত ঢুকিয়ে পানি বের করে মাথার সামনে ও পিছনে দু’হাত দিয়ে
মাসাহ্ করলেন- তারপর, উভয় পা গিরা পর্যন্ত ধুলেন, এরপর বললেনঃ এরূপ ছিল রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওযু। সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৪৩, (ই.ফা. ৪৪৬, ই.সে. ৪৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৩
কাসিম ইবনু যাকারিইয়্যা,
খালিদ ইবনু মাখলাদ, সুলাইমান ইবনু বিলাল, ‘আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তবে তিনি “উভয় পায়ের গিরা পর্যন্ত” ধুয়েছেন এ কথাটি উল্লেখ করেননি।
সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৪৪, (ই.ফা. ৪৪৭, ই.সে. ৪৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৪
‘আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত সনদ দ্বারা এভাবেও বর্ণিত
হয়েছে যে, তিনি তিনবার কুলি করলেন এবং নাকে পানি ঢেলে ঝাড়লেন, এক হাতে পানি নিয়ে করেছেন
এ কথাটি তিনি বলেননি। অবশ্য এ বাক্যটির পরে নিম্নের বাক্যগুলো বর্ধিত করেছেন; মাথা
মাসাহ্ করার সময় হাত দু’খানা মাথার সম্মুখভাগে রাখলেন এবং পরে তা টেনে মাথার পেছনভাগে
নিয়ে গেলেন। অতঃপর আবার পূর্বের জায়গায় অর্থাৎ যেখান থেকে আরম্ভ করেছিলেন সেখানে নিয়ে
আসলেন এবং পরে পা দু’খানা ধুলেন। সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৪৫, (ই.ফা. ৪৪৮, ই.সে. ৪৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৫
‘আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
উহায়ব (রহঃ) বর্ণনা করেছেন
যে, ‘আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রাঃ) থেকে পূর্ব বর্ণিত সানাদের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে
এ হাদীসে রাবী বলেন যে, তিনি তিন আঁজলা পানি দ্বারা কুলি করেছেন এবং নাকে পানি দিয়ে
নাক ঝেড়েছেন। তিনি আরও বলেছেন যে, তিনি একবার মাত্র মাসাহ্ করেছেন তবে হাতগুলো মাথার
সম্মুখের দিক থেকে পেছনে টেনে নিয়েছেন। বাহয বলেছেন, উহায়ব এ হাদীসটি আমাকে লিপিবদ্ধ
করে দিয়েছেন আর উহায়ব বলেছেনঃ এ হাদীসটি ‘আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া আমাকে দু’বার লিখিয়েছেন।
সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৪৬, (ই.ফা. ৪৪৯, ই.সে. ৪৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৬
‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু
‘আসিম আল মাযানী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এভাবে ওযু করতে দেখেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কুলি করলেন, নাকে পানি দিয়ে ঝাড়লেন, অতঃপর মুখমণ্ডল তিনবার ধুলেন। ডান
হাত এবং বাম হাত খানাও তিনবার ধুলেন। এরপর হাতের অবশিষ্ট পানি ছাড়া নতুন পানি দিয়ে
মাথা মাসাহ্ করলেন। অতঃপর পা দু’খানা খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিস্কার করলেন। আবূ তাহির
বলেনঃ ইবনু ওয়াহ্ব, ‘আম্র ইবনু হারিস-এর উদ্ধৃতি দিয়ে আমাদের নিকট এ হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন। সহিহ মুসলিম- হাদিস নং-৪৪৭, (ই.ফা. ৪৫০, ই.সে. ৪৬৬)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
উভয় পা পুরোপুরি ধোয়ার আবশ্যকতাঃ
হাদিস নং-১৫৭
সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সা’দ ইবনু
আবূ ওয়াক্কাস-এর ইন্তেকালের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর স্ত্রী
‘আয়িশাহ্(রাঃ)- এর কাছে উপস্থিত হই। সে সময় ‘আব্দুর রহমান ইবনু আবূ বাকরও এলেন এবং
‘আয়িশাহ্(রাঃ)- এর সামনে ওযু করতে লাগলেন। তখন ‘আয়িশাহ্(রাঃ) বললেনঃ হে ‘আব্দুর রহমান!
পূর্ণভাবে ওযু কর। কেননা আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ কথা বলতে
শুনেছি যে, পায়ের ঐ গোড়ালিগুলোর জন্য আগুনের শাস্তি রয়েছে (যেগুলো শুকনো থাকে)। (ই.ফা.
৪৫৭, ই.সে. ৪৭৩), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৮
হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহ্ইয়া,
ইবনু ওয়াহ্ব, হাইওয়াহ্ মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দুর রহমান-এর মাধ্যমে শাদ্দাদ ইবনুল হাদ-এর
আযাদকৃত গোলাম আবূ ‘আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ
একদিন তিনি ‘আয়িশাহ্(রাঃ)-এর
নিকট গেলেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি ‘আয়িশাহ্(রাঃ)- এর উদ্ধৃতি দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। (ই.ফা.
৪৫৮, ই.সে. ৪৭৪), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৫৯
সালিম মাওলা আল মাহরী (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও ‘আব্দুর
রহমান ইবনু আবূ বাকর (রাঃ) সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস এর জানাযার উদ্দেশ্যে বের হলাম।
আমরা ‘আয়িশাহ্(রাঃ)-এর ঘরের দরজার সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন তিনি (সালিম) ‘আয়িশাহ্(রাঃ)-এর
সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অবিকল হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা.
৪৫৯, ই.ফা. ৪৭৫), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬০
শাদ্দাদ ইবনু হাদ (রহঃ)-এর
আযাদকৃত গোলাম সালিম থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ একদা আমি ‘আয়িশাহ্(রাঃ)-এর
সাথে ছিলাম। অতঃপর তিনি ‘আয়িশাহ্(রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৬০, ই.সে. ৪৭৬), সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬১
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আম্র
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সময় আমরা রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মক্কা থেকে মাদীনায় ফিরে আসছিলাম। পথিমধ্যে
আমরা যখন এক জায়গায় পানির কাছে পৌঁছলাম, তখন কিছু সংখ্যক লোক ‘আস্রের সালাতের সময়
তাড়াহুড়া করল। এরা ওযুও করল তাড়াহুড়া করে। আমরা যখন তাদের কাছে পৌছলাম, তখন তাদের পায়ের
গোড়ালিসমূহ এমনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যে, তাতে পানি পৌঁছেনি। এ দেখে রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওযু করার সময় পায়ের গোড়ালি যে সব স্থানে পানি পৌঁছেনি
সেগুলোর জন্য জাহান্নাম। তাই তোমরা ভালভাবে ওযু করো। (ই.ফা. ৪৬১, ই.সে. ৪৭৭), সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬২
আবূ বক্র ইবনু আবূ শাইবাহ্
(রহঃ) সুফ্ইয়ান-এর সূত্রে এবং ইবনু আল মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার শু‘বাহ্ (রহঃ)-এর
সূত্রে উভয়ে থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত সানাদে মানসূর থেকে বর্ণনা
করেন তবে শু‘বাহ্ বর্ণিত হাদীসে “পরিপূর্ণভাবে ওযূ করো” কথাটি নেই। এ হাদীসের সানাদে
“আবূ ইয়াহ্ইয়া” শব্দের সাথে “আল আ‘রাজ” যুক্ত আছে। (ই.ফা. ৪৬২, ই.সে. ৪৭৮), সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬৩
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক সফরে নাবী(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের পিছনে পড়ে যান। অবশেষে তিনি আমাদের পেলেন যখন ‘আস্রের
সময় উপস্থিত এবং আমরা ওযূ করতে গিয়ে পা মাসাহ করছি। তখন তিনি ঘোষণা দিলেন, ধ্বংস ঐ
গোড়ালিগুলোর জন্যে, যে সব স্থানে পানি পৌঁছেনি; যেগুলোর ঠিকানা জাহান্নাম। (ই.ফা. ৪৬৩,
ই.সে. ৪৭৯), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬৪
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে তার গোড়ালি ধোয়নি। তখন তিনি বললেন, ধ্বংস
ঐ গোড়ালিগুলোর জন্য, যে সব স্থানে পানি পৌঁছেনি; যেগুলোর ঠিকানা জাহান্নাম। (ই.ফা.
৪৬৪, ই.সে. ৪৮০), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬৫
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি কয়েকজন লোককে দেখলেন,
তারা পাত্র থেকে পানি নিয়ে ওযূ করছে। তখন তিনি বললেনঃ পরিপূর্ণরূপে ওযূ করো। কারণ,
আমি আবূল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ ধ্বংস ঐ গোড়ালিগুলোর
জন্যে, যে সব স্থানে পানি পৌঁছেনি; যেগুলোর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। (ই.ফা. ৪৬৫, ই.সে.
৪৮১), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬৬
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ধ্বংস ঐ গোড়ালিগুলোর জন্যে, যে সব স্থানে পানি পৌঁছেনি;
যেগুলোর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। (ই.ফা. ৪৬৬, ই.সে. ৪৮২), সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
তাহারাতের সকল অঙ্গ পূর্ণভাবে ধোয়ার আবশ্যকতা
হাদিস নং-১৬৭
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ওযূ
করতে তার পায়ের ওপর নখ পরিমাণ অংশ ছেড়ে দেয়। তা দেখে নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ যাও, আবার ভালভাবে ওযূ করে আসো। লোকটি ফিরে গেল। তারপর (পুনরায়) ওযূ
করে সলাত আদায় করল। (ই.ফা. ৪৬৭, ই.সে. ৪৮৩), সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ওযূর পানির সঙ্গে গুনাহ ঝরে যাওয়াঃ
হাদিস নং-১৬৮
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলিম কিংবা মু’মিন বান্দা (রাবীর সন্দেহ) ওযূর
সময় যখন মুখমন্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সাথে অথবা (তিনি বলেছেন)
পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় এবং যখন সে দু’টি হাত ধৌত করে তখন তার দু’হাতের
স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানির অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝড়ে যায়। অতঃপর যখন সে
পা দু’টি ধৌত করে, তখন তার দু’পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা
পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝড়ে যায়, এমনকি সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন
হয়ে যায়। (ই.ফা. ৪৬৮, ই.সে. ৪৮৪), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৬৯
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ওযূ করে এবং তা উত্তমরূপে করে, তার দেহ থেকে
সমস্ত পাপ ঝড়ে যায়, এমনকি তার নখের ভিতর থেকেও (গুনাহ) বের হয়ে যায়। (ই.ফা. ৪৬৯, ই.সে.
৪৮৫), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ওযূতে মুখমন্ডলের নূর এবং হাত-পায়ের দীপ্তি বাড়িয়ে নেয়া মুস্তাহাবঃ
হাদিস নং-১৭০
নু‘আয়ম ইবনু ‘আবদুল্লাহ
আল মুজমির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আবূ হুরায়রা্(রাঃ)-কে
ওযূ করতে দেখেছি। তিনি খুব ভালভাবে মুখমন্ডল ধুলেন, এরপর ডান হাত ধুলেন এবং বাহুর কিছু
অংশ ধুলেন। পরে বাম হাত ও বাহুর কিছু অংশসহ ধুলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন। অতঃপর ডান
পায়ের নালার কিছু অংশসহ ধুলেন, এরপর বাম পায়ের নালার কিছু অংশসহ একইভাবে ধুলেন। অতঃপর
বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এভাবে ওযূ করতে দেখেছি।
তিনি আরো বললেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পূর্ণাঙ্গরূপে
ওযূ করার কারণে কিয়ামাতের দিন তোমাদের মুখমন্ডল, হাত ও পায়ের ওযূর স্থান জ্যোতির্ময়
হবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা সক্ষম তারা যেন নিজ নিজ মুখমন্ডল, হাত ও পায়ের জ্যোতি
বাড়িয়ে নেয়। (ই.ফা. ৪৭০, ই.সে. ৪৮৬), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৭১
নু‘আয়ম ইবনু ‘আবদুল্লাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আবূ হুরায়রা্(রাঃ)-কে
ওযূ করতে দেখলেন। ওযূ করতে তিনি মুখমন্ডল ও হাত দু’টি এমনভাবে ধুলেন যে, প্রায় কাঁধ
পর্যন্ত ধুয়ে ফেললেন। এরপর পা দু’টি এমনভাবে ধুলেন যে, পায়ের নালার কিছু অংশ ধুয়ে ফেললেন।
এভাবে ওযূ করার পর বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমার উম্মাত ওযূর প্রভাবে কিয়ামাতের দিন দীপ্তিময় মুখমন্ডল ও
হাত-পা নিয়ে উঠবে। কাজেই তোমরা যারা সক্ষম তারা অধিক বিস্মৃত দীপ্তিসহ উঠতে সে যেন
চেষ্টা করে। (ই.ফা. ৪৭১, ই.সে. ৪৮৭), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৭২
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার হাওযে কাওসার হবে ‘আদান (ইয়ামানের বন্দর নগরী) থেকে
আইলা (আরবের উত্তরাঞ্চলীয় শহর)-এর যত দূরত্ব তার থেকেও বেশি দীর্ঘ। আর তা হবে বরফের
থেকেও সাদা এবং দুধ মধু থেকে মিষ্টি। আর তার পাত্রের সংখ্যা হবে তারকারাজির চেয়েও অধিক।
আমি কিছু সংখ্যক লোককে তা থেকে ফিরিয়ে দিতে থাকবো যেমনিভাবে লোকে তার হাওয থেকে অন্যের
উট ফিরিয়ে দেয়। সহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ! সেদিন কি আপনি আমাদেরকে
চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, “হ্যাঁ, তোমাদের এমন চিহ্ন হবে যা অন্য কোন উম্মাতের হবে
না। ওযূর বিনিময়ে তোমাদের মুখমন্ডল জ্যোতির্ময় ও হাত-পা দীপ্তিমান অবস্থায় তোমরা আমার
কাছে আসবে”। (ই.ফা. ৪৭২, ই.সে. ৪৮৮), সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৬৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৭৩
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের কিছুলোক কিয়ামাতের দিন আমার কাছে হাওযে
কাওসারে উপস্থিত হবে। আর আমি তাদেরকে তা থেকে এমনভাবে বিতাড়িত করব, যেভাবে কোন ব্যক্তি
তার উটের পাল থেকে অন্যের উটকে বিতাড়িত করে থাকে। (এ কথা শুনে) লোকেরা জিজ্ঞেস করলঃ
আল্লাহর নাবী! আপনি কি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। তোমাদের এমন
এক চিহ্ন হবে যা অন্য কারোর হবে না। ওযূর প্রভাবে তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত-পায়ের দীপ্তি
ও উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়বে। উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত অবস্থায় তোমরা আমার নিকট আসবে। আর
তোমাদের একদল লোককে জোর করে আমার থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তাই তারা আমার কাছে পৌঁছাতে
পারবে না। তখন আমি বলব, হে আমার প্রভু! এরাতো আমার লোক। এর জবাবে একজন ফেরেশতা আমাকে
বলবে, আপনি জানেন না, আপনার অবর্তমানে (ইনতিকালের পরে) তারা কি কি নতুন কাজ (বিদ‘আত)
করেছে। (ই.ফা. ৪৭৩, ই.সে. ৪৮৯),সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৭০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৭৪
হুযাইফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার হাওয (হাওযে কাওসার) আইলা থেকে ‘আদান-এর দূরত্ব
পরিমাণ দীর্ঘ। সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! আমি তা থেকে কিছু মানুষকে
এমনভাবে তাড়াবো যেমন কোন ব্যক্তি অপরিচিত উটকে তার পানির কূপ থেকে তাড়িয়ে দেয়। লোকেরা
জিজ্ঞেস করলঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি সেদিন আমাদেরকে চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
ওযূর প্রভাবে তোমাদের চেহারা ও হাত-পা থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় তোমরা
আমার নিকট উপস্থিত হবে। এটা তোমাদের ছাড়া অন্য উম্মাতের জন্যে হবে না। (ই.ফা. ৪৭৪,
ই.সে. ৪৯০),সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৭১।
হাদিস নং-১৭৫
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একবার রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি কবরস্থানে এসে বললেন, তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। হে
কবরবাসী মু’মিনগণ! ইন্শাআল্লাহ আমরাও তোমাদের সাথে এসে মিলব। আমার বড় ইচ্ছা হয় যে
আমাদের ভাইদেরকে দেখি। সহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা কি আপনার ভাই
নই? তিনি বললেন, তোমরা তো আমার সহাবা। আর যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তারা আমাদের ভাই।
সহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনার উম্মাতের মধ্যে যারা এখনো (পৃথিবীতে)
আসেনি তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন? তিনি বললেন, “কেন, যদি কোন ব্যক্তি সাদা রঙের কপাল
ও সাদা রঙের হাত-পা বিশিষ্ট ঘোড়া অনেকগুলো কালো ঘোড়ার মধ্যে মিশে যায় তবে সে কি তার
ঘোড়াকে চিনে নিতে পারবে না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, তাঁরা
(আমার উম্মাত) সেদিন এমন অবস্থা আসবে যে, ওযূর ফলে তাদের মুখমন্ডল, হাত-পা জ্যোতির্ময়
হবে। আর হাওযের পাড়ে আমি হব তাদের অগ্রনায়ক। জেনে রাখ, কিছু সংখ্যক লোককে সেদিন আমার
হাওয থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে যেমনিভাবে বেওয়ারিশ উটকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। আমি তাদেরকে ডাকব,
এসো এসো। তখন বলা হবে, “এরা আপনার পরে (আপনার দীনকে) পরিবর্তন করে দিয়েছিল”। তখন আমি
বলব, “দূর হও, দূর হও”। (ই.ফা. ৪৭৫, ই.সে. ৪৯১),সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৭২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৭৬
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একবার রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ববরস্থানে গেলেন ও বললেন, “মু’মিনদের বাসস্থানে (ক্ববরস্থানে)
তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর আমরা ইনশাআল্লাহ তোমাদের সাথে এসে শামিল হব। অবশিষ্টাংশ
ইসমা‘ঈল ইবনু জা‘ফার-এর বর্ণিত (পূর্বের) হাদীসের অনুরূপ। তবে মালিক-এর হাদীসের এতটুকু
বেশি আছে, অবশ্যই কিছু লোককে এ হাওয থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। (ই.ফা. ৪৭৬, ই.সে. ৪৯২),সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৭৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
যে পর্যন্ত ওযূর পানি পৌঁছবে সে পর্যন্ত অলঙ্কার পরানো হবেঃ
হাদিস নং-১৭৭
আবূ হাযিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, একদিন আমি আবূ
হুরায়রা্(রাঃ)-এর পিছনে ছিলাম। (দেখলাম) তিনি সালাতের জন্যে ওযূ করছেন। তিনি হাতের
বগল পর্যন্ত ধুলেন। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা্(রাঃ)! এটা কেমন ধরনের ওযূ? তিনি
অবাক হয়ে বললেন, হে বানী ফার্রূখ! যদি আমি জানতাম তোমরা এখানে আছো, তাহলে আমি এ ধরনের
ওযূ করতাম না। আমি আমার বন্ধু [রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে
বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন যে স্থান পর্যন্ত ওযূর পানি পৌঁছবে সে স্থান পর্যন্ত মু’মিন
ব্যক্তির উজ্জ্বলতা অথবা সৌন্দর্যও পৌঁছবে। (ই.ফা. ৪৭৭, ই.সে. ৪৯৩),সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৭৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণভাবে ওযূ করার ফযীলত
হাদিস নং-১৭৮
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের এমন কাজ জানাবো না, যা করলে আল্লাহ (বান্দার)
পাপরাশি দূর করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন? লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন।
তিনি বললেনঃ অসুবিধা ও কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, মাসজিদে আসার জন্যে বেশি
পদচারণা করা এবং এক সালাতের পর আর এক সালাতের জন্যে প্রতীক্ষা করা; আর এ কাজগুলোই হল
সীমান্ত প্রহরা। [১] (ই.ফা. ৪৭৮, ই.সে. ৪৯৪),সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৭৫।
[১] রিবাত (সীমান্ত
প্রহরী) অর্থঃ কোন জিনিস থেকে বন্ধ থাকা, অর্থাৎ ইতা‘আতের উপর নিজের আত্মাকে বন্ধ রাখা, তাতে যত কষ্টই হোক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মালিক ও শু‘বাহ্ (রাঃ),
উভয়েই ‘আলা ইবনু ‘আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাদিস নং-১৭৯
একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন। তবে শু‘বাহ্র হাদীসের [আরবী] এর উল্লেখ নেই এবং মালিক (রাঃ)-এর হাদীসে [আরবী]
দু’বার উল্লেখ রয়েছে। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৭৬, (ই.ফা. ৪৭৯, ই.সে. ৪৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিসওয়াকের বিবরণ
ইব্ন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ
আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে রাত কাটিয়ে ছিলাম।
তখন [১] তিনি মিসওয়াক করলেন।
[১] তাহাজ্জুদের জন্য ঘুম
থেকে উঠে ।
হাদিস নং-১৮০
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনদের জন্যে এবং যুহায়র-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, আমার উম্মাতের
জন্য যদি কষ্টসাধ্য না হতো, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যেক সলাতের সময় মিসওয়াক করার
নির্দেশ দিতাম। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৭৭, (ই.ফা. ৪৮০, ই.সে. ৪৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৮১
মিকদাম-এর পিতা শুরায়হ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস
করলাম যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে ঢুকে সর্বপ্রথম
কোন্ কাজটি করতেন? তিনি বললেন, সর্বপ্রথম মিসওয়াক করতেন। সহিহ মুসলিম-হাদিস
নং-৪৭৮, (ই.ফা. ৪৮১, ই.সে. ৪৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৮২
‘আয়িশাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(বাইরে থেকে এসে) বাড়িতে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম মিসওয়াক করতেন। সহিহ মুসলিম-হাদিস
নং-৪৭৯, (ই.ফা.৪৮২, ই.সে. ৪৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৮৩
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, আমি একবার নাবী(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেলাম তখন মিসওয়াকের এক অংশ তাঁর জিহবার উপর ছিল। সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৮০, (ই.ফা.৪৮৩, ই.সে. ৪৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৮৪
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে রাত কাটালেন। (তিনি দেখলেন) আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠলেন এবং বাইরে গিয়ে আকাশের দিকে তাকালেন
এর পরে সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরানের এ আয়াতটি তিলওয়াত করলেনঃ ‘আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং
রাত ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানীদের জন্যে বহু নিদর্শন রয়েছে... অতএব আপনি অনুগ্রহ করে আমাদেরকে
আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন’’ পর্যন্ত পড়লেন-(সূরাহ আ-লি ‘ইমরান ৩ঃ ১৯০-১৯১)। অতঃপর
ঘরে ফিরে এসে মিসওয়াক ও ওযূ করলেন। এরপর দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করলেন। সলাত শেষে শুয়ে পড়লেন।
পুনরায় কিছুক্ষন পরে উঠে বাইরে গেলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে উক্ত আয়াতটি পাঠ করলেন।
অতঃপর ফিরে এসে (আবার) মিসওয়াক করে ওযূ করলেন; অতঃপর ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৮৪, (ই.ফা. ৪৮৭, ই.সে. ৫০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১৮৬
আবূ বুরদাহ (রহঃ)-র
পিতা [আবূ মূসা (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একবার আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম। তখন তাঁকে দেখলাম তিনি মিসওয়াক
করছেন এবং মিসওয়াক মুখে দিয়ে তিনি উ' উ' শব্দ করছেন যেন তিনি বমি করছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪৪, মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫৪, আহমাদ ১৯৭৫৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
২৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৮৭
হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রাতে (সালাতের জন্য) উঠতেন তখন মিসওয়াক
দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪৫, ৮৮৯, ১১৩৬; মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫৫, আহমাদ ২৩৪৭৫) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
বয়সে বড় ব্যক্তিকে
মিসওয়াক প্রদান করা।
হাদিস নং-১৮৮
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমি মিসওয়াক করছি। আমার নিকট
দু' ব্যক্তি এলেন। একজন অপরজন হতে বয়সে বড়। অতঃপর আমি তাদের মধ্যে কনিষ্ঠ
ব্যক্তিকে মিসওয়াক দিতে গেলে আমাকে বলা হলো, 'বড়কে দাও'। তখন আমি তাদের মধ্যে
বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে দিলাম। আবূ 'আবদুল্লাহ বলেন, 'নু'আয়ম, ইব্নুল মুবারাক
সূত্রে ইব্নু ‘উমর (রাঃ) হতে হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪৬, মুসলিম ৪২/৪, হাঃ ২২৭১, আহমাদ ৬১০৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
২৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭২ অনুচ্ছেদ)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
গোড়ালি ধোয়া।
হাদিস নং-১৮৯
মুহাম্মাদ ইব্নু যিয়াদ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা
(রাঃ) আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। লোকেরা সে সময় পাত্র থেকে উযূ করছিল। তখন
তাঁকে বলতে শুনেছি, তোমরা উত্তমরূপে উযূ কর। কারণ আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পায়ের গোড়ালিগুলোর জন্য জাহান্নামের ‘আযাব রয়েছে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৫, মুসলিম ২/৯, হাঃ ২৪২, আহমাদ ৯২৭৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৬)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৫, মুসলিম ২/৯, হাঃ ২৪২, আহমাদ ৯২৭৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
২৭. অধ্যায়ঃhttps://pmmrc.blogspot.com/
জুতা পরা অবস্থায় উভয়
পা ধুতে হবে জুতার উপর মাস্হ করা যাবে না।
হাদিস নং-১৯০
‘উবায়দ ইব্নু
জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু
‘উমর (রাঃ)-কে বললেন, ‘হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করতে দেখি,
যা আপনার অন্য কোন সাথীকে দেখি না।’ তিনি বললেন, ‘ইব্নু জুরায়জ, সেগুলো কী?’ তিনি
বললেন, আমি দেখি, (১) আপনি ত্বওয়াফ করার সময় দুই রুকনে ইয়ামানী ব্যতীত অন্য রুক্ন
স্পর্শ করেন না। (২) আপনি ‘সিবতী’ (পশমবিহীন) জুতা পরিধান করেন; (৩) আপনি (কাপড়ে)
হলুদ রং ব্যবহার করেন এবং (৪) আপনি যখন মক্কায় থাকেন লোকে চাঁদ দেখে ইহ্রাম
বাঁধে; কিন্তু আপনি তারবিয়ার দিন (৮ই যিলহজ্জ) না এলে ইহরাম বাঁধেন না।
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বললেনঃ রুক্নের কথা যা বলেছ, তা এজন্য করি যে আমি আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ইয়ামানী রুকনদ্বয় ব্যতীত আর কোনটি স্পর্শ
করতে দেখিনি। আর ‘সিবতী’ জুতা, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে সিবতী জুতা পরতে এবং তা পরিহিত অবস্থায় উযূ করতে দেখেছি, তাই আমি তা
পরতে ভালবাসি। আর হলুদ রং, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে তা দিয়ে কাপড় রঙিন করতে দেখেছি, তাই আমিও তা দিয়ে রঙিন করতে ভালবাসি।
আর ইহরাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে তাঁর সওয়ারী
রওনা না হওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে ইহরাম বাঁধতে দেখিনি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৬, ১৫১৪, ১৫৫২, ১৬০৯, ২৮৬৫, ৫৮৫১; মুসলিম ১৫/৫, হাঃ ১১৮৭)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
উযূ এবং গোসল ডান দিক
থেকে শুরু করা ।
হাদিস নং-১৯১
উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মেয়ে [ যায়নাব (রাঃ) ]-কে গোসল করানোর সময়
তাঁদের বলেছিলেনঃ তোমরা তার ডান দিক হতে এবং উযূর অংগ হতে আরম্ভ কর।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৭, ১২৫৩ হতে ১২৬৩ পর্যন্ত) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৮)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৭, ১২৫৩ হতে ১২৬৩ পর্যন্ত) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৯২
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুতা পরা, চুল আচঁড়ানো এবং পবিত্রতা অর্জন করা
তথা প্রত্যেক কাজই ডান দিক হতে আরম্ভ করতে পছন্দ করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৮, ৪২৬, ৫৩৮০, ৫৮৫৪, ৫৯২৬; মুসলিম ১৫/৫, হাঃ ১১৮৭) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৬৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
সালাতের সময় হলে উযূর
পানি অনুসন্ধান করা।
আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ একবার
ফজরের সময় হল, তখন পানি তালাশ করা হল; কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না । তখন তায়াম্মুম
(এর আয়াত) নাযিল হল ।
হাদিস নং-১৯৩
আনাস ইব্নু মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম, তখন আসরের সালাতের সময় হয়ে
গিয়েছিল। আর লোকজন উযূর পানি খুঁজতে লাগল কিন্তু পেল না। তারপর আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু পানি আনা হল। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন এবং লোকজনকে তা
থেকে উযূ করতে বললেন। আনাস (রাঃ) বলেন, সে সময় আমি দেখলাম, তাঁর আঙ্গুলের নীচ থেকে
পানি উপচে পড়ছে। এমনকি তাদের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত তার দ্বারা উযূ করল।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৬৯, ১৯৫, ২০০, ৩৫৭২ হতে ৩৫৭৫ পর্যন্ত; মুসলিম ৪৩/৩, হাঃ ২২৭৯,
আহমাদ ১২৪৯৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩০. অধ্যায়ঃhttps://pmmrc.blogspot.com/
যে পানি দিয়ে মানুষের
চুল ধোয়া হয়।
‘আত্বা (রহঃ) চুল দিয়ে
সুতা এবং রশি প্রস্তুত করায় দোষের কিছু মনে করতেন না। কুকুরের ঝুটা এবং মসজিদের
ভিতর দিয়ে কুকুরের যাতায়াত সম্পর্কে যূহরী (রহঃ) বলেন, কুকুর যখন কোন পানির পাত্রে
মুখ দেয় এবং ঊযূ করার জন্য সে পানি ব্যতীত অন্য কোন পানি না থাকে, তবে তা দিয়েই
উযূ করবে। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, হুবুহু এ মাসআলাটি বিধৃত হয়েছে আল্লাহ তা’আলার এ
বাণীতে النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا “তারপর তোমরা যদি
পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম কর।” আর এ তো পানিই । কিন্তু অন্তরে
যেহেতু কিছু সন্দেহ রয়েছে তাই তা দিয়ে উযূ করবে, পরে তায়াম্মুমও করবে।
হাদিস নং-১৯৪
ইব্নু সীরীন (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আবীদাকে
বললাম, আমাদের নিকট নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চুল রয়েছে যা আমরা
আনাস (রাঃ)-এর নিকট হতে কিংবা আনাস (রাঃ)-এর পরিবারের নিকট হতে পেয়েছি। তিনি
বললেন, তাঁর একটি চুল আমার নিকট থাকাটা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা
অর্জনের চেয়ে অধিক পছন্দের।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭০, ১৭১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মাথা মুন্ডন করলে আবূ তালহা (রাঃ)-ই
প্রথমে তাঁর চুল সংগ্রহ করেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭১, ১৭০; মুসলিম ১৫/৫৬, হাঃ ১৩০৫, আহমাদ ১২০৯৩) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৬৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
কুকুর যদি পাত্র হতে
পানি পান করে ।
হাদিস নং-১৯৬
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো পাত্রে যদি কুকুর পান
করে তা যেন সাতবার ধুয়ে নেয়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭২, মুসলিম ২/২৭, হাঃ ২৭৯, আহমাদ ৭৩৫০, ৭৩৫১,৭৪৫১) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৯৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (পূর্ব যুগে) জনৈক ব্যক্তি একটি কুকুরকে তৃষ্ণার্ত
অবস্থায় ভিজা মাটি চাটতে দেখতে পেয়ে তার মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য কুয়া হতে পানি
এনে দিতে লাগল যতক্ষণ না সে ওর তৃষ্ণা মিটাল। আল্লাহ্ এর বিনিময় দিলেন এবং তাকে
জান্নাতে প্রবেশ করালেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৩, ২৩৬৩, ২৪৬৬, ৬০০৯ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৪)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৩, ২৩৬৩, ২৪৬৬, ৬০০৯ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৯৮
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যামানায় কুকুর মসজিদের ভিতর দিয়ে আসা-যাওয়া
করত অথচ এজন্য তাঁরা কোথাও পানি ছিটিয়ে দিতেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৪, আ.প্র. ১৬৯ শেষাংশ, ই.ফা. ১৭৪ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-১৯৯
‘আদী ইব্নু
হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি
(প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর সম্পর্কে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ তুমি যখন তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকার ধরতে ছেড়ে
দাও, তখন সে হত্যা করলে তা তুমি খেতে পারো। আর সে তার অংশবিশেষ খেয়ে ফেললে তুমি তা
খাবে না। কারণ সে তা নিজের জন্যই শিকার করেছে। আমি বললামঃ কখনো কখনো আমি আমার
কুকুর (শিকারে) পাঠিয়ে দেই, অতঃপর তার সঙ্গে অন্য এক কুকুরও দেখতে পাই (এমতাবস্থায়
শিকারকৃত প্রাণীর কী হুকুম)? তিনি বললেনঃ তবে খেও না। কারণ তুমি বিসমিল্লাহ্
বলেছো কেবল তোমার কুকুরের বেলায়, অন্য কুকুরের বেলায় বিসমিল্লাহ্ বলোনি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৫, ২০৫৪, ৫৪৭৫, ৫৪৭৬, ৫৪৭৭, ৫৪৮৩ হতে ৫৪৮৭,৭৩৯৭ দ্রষ্টব্য)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
সামনের এবং পেছনের
রাস্তা দিয়ে কিছু নির্গত হওয়া ব্যতীত অন্য কারণে যিনি উযূর প্রয়োজন মনে করেন না।
আল্লাহ্ তা'আলার এ বাণীর
কারণেঃ أَو جاَ ءَ أَحَدٌ مِنكُم مِنَ الغاَئِطِ “অথবা তোমাদের কেউ
শৌচাগার হতে আসে।” (সূরা আন-নিসা ৪/৪৩)
‘আত্বা (রহঃ) বলেন, যার
পেছনের রাস্তা দিয়ে পোকা বের হয় অথবা যার পুরুষাঙ্গ দিয়ে উকুনের ন্যায় কিছু বের
হয়, তার পুনরায় উযূ করতে হবে।
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) বলেন, কেউ সালাত অবস্থায় হেসে ফেললে পুনরায় শুধুমাত্র সালাতই আদায় করবে,
পুনঃ উযু করবে না। হাসান (রাঃ) বলেন, কেউ যদি চুল অথবা নখ কাটে অথবা তার মোজা খুলে
ফেলে তবে তার পুনরায় উযূ করতে হবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘হাদাস’ ব্যতীত
অন্য কিছুতে উযূর প্রয়োজন নেই। জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত । নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘যাতুর রিকা’-এর যুদ্ধে ছিলেন। সেখানে জনৈক ব্যক্তি তীরবিদ্ধ
হলেন এবং ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটল,কিন্তু তিনি (সে অবস্থায়ই) রুকূ করলেন, সাজদা করলেন
এবং সালাত আদায় করতে লাগলেন। হাসান (রহঃ) বলেন, মুসলিমগণ সব সময়ই তাদের যখম অবস্থায়
সালাত আদায় করতেন এবং তাঊস (রহঃ), মুহাম্মদ ইব্ন আলী (রহঃ), আত্বা (রহঃ) ও
হিজাযবাসীগণ বলেন, রক্তক্ষরণে উযূ করতে হয় না। ইব্নু ‘উমর (রাঃ) একদা একটি ছোট
ফোড়াঁ টিপ দিলেন, তা থেকে রক্ত বের হল, কিন্তু তিনি উযূ করলেন না । ইব্নু আবূ
আওফা (রাঃ) রক্ত মিশ্রিত থুতু ফেললেন কিন্তু তিনি সালাত আদায় করতে থাকলেন। ইব্নু
‘উমর (রাঃ) ও হাসান (রহঃ) বলেন, কেউ শিঙ্গা লাগালে কেবল তার শিঙ্গা লাগানো স্থানই
ধুয়ে ফেলা দরকার।
হাদিস নং-২০০
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা যে সময়টা মসজিদে সালাতের
অপেক্ষায় থাকে, তার সে পুরো সময়টাই সালাতের মধ্যে গণ্য হয় যতক্ষণ না সে হাদাস করে।
জনৈক অনারব বলল, হে আবূ হুরায়রা ! ‘হাদাস কি?’ তিনি বললেন, ‘শব্দ করে বায়ু বের
হওয়া।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৬, ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৮, ৬৫৯, ২১১৯, ৩২২৯, ৪৭১৭ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৬)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৬, ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৮, ৬৫৯, ২১১৯, ৩২২৯, ৪৭১৭ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২০১
‘আব্বাস ইব্নু
তামীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাঁর চাচার সূত্রে
বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (কোন মুসল্লী) সালাত
থেকে সরে থাকবে না যতক্ষণ না সে শব্দ শুনতে পায় কিংবা গন্ধ পায়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৭, ১৩৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২০২
মুহাম্মাদ ইব্নুল
হানাফিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আলী (রাঃ)
বলেছেন, আমার অধিক পরিমাণে মযী বের হতো। কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করছিলাম। তাই আমি
মিকদাদ ইব্নু আসওয়াদ (রাঃ) কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-নিকট জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেনঃ
এতে শুধু উযূ করতে হয়। হাদীসটি শু’বাহ (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৭৮, ১৩২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২০৩
যায়দ ইব্নু খালিদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উসমান ইব্নু আফফান (রাঃ)-কে
জিজ্ঞেস করলেনঃ কেউ যদি স্ত্রী সহবাস করে, কিন্তু মনী (বীর্য) বের না হয় (তবে তার
হুকুম কী)? ‘উসমান (রাঃ) বললেনঃ ‘সে সালাতের ন্যায় উযূ করে নেবে এবং তার
লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে। উসমান (রাঃ) বলেন, আমি এ কথা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি। (যায়দ বলেন) তারপর আমি এ সম্পর্কে আলী (রাঃ),
যুবায়র (রাঃ), তালহা (রাঃ) ও উবাই ইব্নু কা’ব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছি। তাঁরা
আমাকে এ নির্দেশেই দিয়েছেন। [১]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস
নং-১৭৯, ২৯২; মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৭, আহমাদ ৪৫৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৪, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ১৭৯)
[১] হাদীসগুলোর হুকুম মানসুখ হয়ে
গেছে। ইসলামিক প্রাথমিক যুগে তা বৈধ ছিল। পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ সামান্যও যদি
স্ত্রীর যোনীতে প্রবেশ করে তাহলে বীর্যপাত হোক না হোক গোসল ফরয হয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২০৪
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক আনসারীর নিকট লোক পাঠালেন। তিনি আসলেন।
তখন তাঁর মাথা থেকে পানির ফোঁটা ঝরছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ ‘সম্ভবত আমরা তোমাকে তাড়াহুড়া করতে বাধ্য করেছি।’ তিনি বললেন, ‘জ্বী’।
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যখন তাড়াহুড়ার কারণে মনী
বের না হবে (অথবা বললেন), মনীর অভাবজনিত কারণে তা বের না হবে তখন উযূ করে নিবে।
ওয়াহ্ব (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) সূত্রে এ রকমই বর্ণনা করেন। তিনি [শু’বাহ (রহঃ)] বলেন,
আবূ ‘আব্দুল্লাহ (রহঃ) বলেছেনঃ গুনদার (রহঃ) ও ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ)- এর
সূত্রে বর্ণনায় উযূর কথা উল্লেখ করেননি। [২]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮০, মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৫, আহমাদ ১১১৬২, ১১২০৭) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৭৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮০)
[২] এটি পূর্বের হুকুম
যা পরে রহিত হয়ে গেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৩. অধ্যায়ঃ
নিজের সাথীকে উযূ করিয়ে
দেয়া ।
হাদিস নং-২০৫
‘উসামা ইব্নু
যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ‘আরাফা হতে ফিরছিলেন, তখন তিনি একটি
গিরিপথের দিকে গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলেন। উসামা (রাঃ) বলেন, পরে আমি তাঁকে
পানি ঢেলে দিচ্ছিলাম আর তিনি উযূ করেছিলেন। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল !
আপনি কি সালাত আদায় করবেন? তিনি বললেনঃ সালাতের স্থান তোমার সম্মুখে (অর্থাৎ
মুযদালিফায়)।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮১, ১৩৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২০৬
মুগীরা ইব্নু শু’বাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি কোন এক সফরে আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সাথে ছিলেন। এক সময় তিনি প্রকৃতির
ডাকে সাড়া দিতে গেলেন। (প্রয়োজন সেরে আসার পর) মুগীরা (রাঃ) তাঁকে পানি ঢেলে
দিচ্ছিলেন এবং তিনি উযূ করছিলেন। তিনি তাঁর মুখমন্ডল এবং দু’হাত ধুলেন এবং তাঁর
মাথা মাস্হ করলেন ও উভয় মোজার উপর মাস্হ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮২, ২০৩, ২০৬, ৩৬৩, ৩৮৮, ২৯১৮, ৪৪২১, ৫৭৯৮, ৫৭৯৯; মুসলিম
২/২২, হাঃ ২৭৪, আহমাদ ১৮১৮৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৪. অধ্যায়ঃ
বিনা উযূতে কুরআন
প্রভৃতি পাঠ।
ইবরাহীম (রহঃ) বর্ণনা
করেনঃ বিনা উযূতে গোসলখানায় (কুরআন) পাঠ এবং পত্র লেখায় কোন দোষ নেই। হাম্মাদ
(রহঃ) ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, গোসলখানার লোকদের পরনে লুঙ্গি থাকলে সালাম
দিও নইলে সালাম দিও না।
হাদিস নং-২০৭
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী মাইমূনা (রাঃ)-এর ঘরে রাত কাটান।
তিনি ছিলেন ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর খালা। ইব্নু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ অতঃপর আমি
বিছানায় প্রশস্ত দিকে শুলাম এবং আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)- ও তাঁর স্ত্রী বিছানার লম্বা দিকে শুলেন; আর আল্লাহর রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনিভাবে রাত যখন অর্ধেক হয়ে
গেল তাঁর কিছু পূর্বে কিংবা কিছু পরে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) জাগলেন। তিনি বসে হাত দিয়ে তাঁর মুখমন্ডল থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে লাগলেন।
অতঃপর সূরা আল-‘ইমরানের শেষ দশটি আয়াত তিলাওয়াত করলেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে একটি ঝুলন্ত
মশক হতে সুন্দরভাবে উযূ করলেন। অতঃপর সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
বলেন, আমিও উঠে তিনি যেরূপ করেছেন তদ্রুপ করলাম। তারপর গিয়ে তাঁর বাম পাশে
দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপর রাখলেন এবং আমার ডান কান ধরে একটু
নাড়া দিয়ে ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন। অতঃপর তিনি দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন।
তারপর দু’রাক’আত, তারপর দু’রাক’আত, তারপর দু’রাক’আত, তারপর দু’রাক’আত, তারপর
দু’রাক’আত, তারপর বিতর আদায় করলেন। তারপর শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর তাঁর নিকট
মুয়ায্যিন এলে তিনি দাঁড়িয়ে হাল্কাভাবে দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন। তারপর বেরিয়ে
গিয়ে ফাজরের সালাত আদায় করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৩, ১১৭; মুসলিম ৬/২৬, হাঃ ৭৬৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৮, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ১৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৫. অধ্যায়ঃ
অজ্ঞান না হলে উযূ না
করা ।
হাদিস নং-২০৮
আসমা বিনতু আবূ বক্র
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি একদা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ)- এর নিকট আসলাম। তখন
সূর্যে গ্রহণ লেগেছিল। দেখলাম সব মানুষ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছে এবং ‘আয়িশা
(রাঃ)-ও দাড়িঁয়ে সালাত আদায় করছেন। আমি বললাম, লোকদের কী হয়েছে? তিনি তাঁর হাত
আকাশের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন ‘সুবাহান্নালাহ্’! আমি বললাম, এটা কি কোন আলামত?
তিনি ইঙ্গিত করে বললেনঃ ‘হ্যাঁ’। অতঃপর আমিও সালাতে দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি আমার
জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম হলো এবং আমি আমার মাথায় পানি দিতে লাগলাম। অতঃপর
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) [মুসল্লীদের দিকে] ফিরে আল্লাহর
হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেনঃ “যেসব জিনিস আমি ইতোপূর্বে দেখিনি সেসব আমার এ স্থানে
আমি দেখতে পেয়েছি, এমনকি জান্নাত এবং জাহান্নামও। আর আমার নিকট ওয়াহী পাঠানো হয়েছে
যে , কবরে তোমাদের পরীক্ষা করা হবে দাজ্জালের ফিতনার ন্যায় অথবা কাছাকাছি।”
বর্ণনাকারী বলেনঃ আসমা (রাঃ) কোন্টি বলেছিলেন, আমি জানি না। তোমাদের প্রত্যকের
নিকট (ফেরেশতাগণ) উপস্থিত হবে এবং তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, “এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি
কি জান?”- তারপর ‘মু’মিন,’ বা ‘মু’কিন ব্যক্তি বলবে- আসমা ‘মু’মিন’ বলেছিলেন না
‘মুকিন’ তা আমি জানি না- ইনি আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)। তিনি আমাদের নিকট মু’জিযা ও হিদায়াত নিয়ে আগমন করেছিলেন। আমরা তাঁর ডাকে
সাড়া দিয়েছি, তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং তাঁর ইত্তেবা’ করেছি। তারপর
তাকে বলা হবে, নিশ্চিন্তে ঘুমাও। আমরা জানলাম যে, তুমি মু’মিন ছিলে। আর ‘মুনাফিক’
বা ‘মুরতাদ’ বলবে- আমি জানি না আসমা এর কোনটি বলেছিলেন- লোকজনকে এর সম্পর্কে কিছু
একটা বলতে শুনেছি আর আমিও তাই বলেছি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৪, ৮৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৬. অধ্যায়ঃ
পূর্ণ মাথা মাস্হ করা।
আল্লাহ তা’আলার এ বাণীর
পরিপ্রেক্ষিতে وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ (আর তোমাদের মাথা মাস্হ কর) (সূরা আল- মায়িদাহ্ ৫/৬)।
ইব্নুল মুসায়্যিব বলেন,
নারী পুরুষের মধ্যে মাথা মাস্হ করার ব্যাপারে কোন ভেদাভেদ নেই। ইমাম মালিক
(রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল, মাথার কিছু অংশ মাস্হ করা কি যথেষ্ট হবে ? তিনি
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাঃ)-এর হাদীস দলিল হিসেবে পেশ করলেন।
হাদিস নং-২০৯
ইয়াহ্ইয়া আল-মাযিনী
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈক ব্যক্তি ‘আব্দুল্লাহ
ইব্নু যায়দ (রাঃ)-কে (তিনি ‘আমর ইব্নু ইয়াহ্ইয়ার দাদা) জিজ্ঞেস করলঃ আপনি কি
আমাদেরকে দেখাতে পারেন, কীভাবে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উযূ করতেন? ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) বললেনঃ ‘হ্যাঁ’। অতঃপর তিনি পানি
আনালেন। হাতের উপর সে পানি ঢেলে দু’বার তাঁর হাত ধুলেন। তারপর কুলি করলেন এবং
তিনবার নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়লেন। অতঃপর চেহারা তিনবার ধুলেন। তারপর দু’হাত কনুই
পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। তারপর দু’হাত দিয়ে মাথা মাস্হ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি
সামনে ও পেছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত পেছনের চুলের শেষ
পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে শুরু করেছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। তারপর
দু’পা ধুলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৫, ১৮৬, ১৯১, ১৯২, ১৯৭, ১৯৯; মুসলিম ২/৭, হাঃ ২৩৫, আহমাদ
১৬৪৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৭. অধ্যায়ঃ
উভয় পা টাখনু পর্যন্ত
ধোয়া।
হাদিস নং-২১০
‘আমর ইব্নু আবূ
হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু
যায়দ (রাঃ)- কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর উযূ সম্পর্কে প্রশ্ন
করলে তিনি এক পাত্র পানি আনলেন এবং তাঁদের (দেখাবার) জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর মত উযূ করলেন। তিনি পাত্র থেকে দু’হাতে পানি ঢাললেন। তা
দিয়ে হাত দু’টি তিনবার ধুলেন। অতঃপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিন খাবল পানি নিয়ে
কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়লেন। তারপর আবার হাত ঢুকালেন। তিনবার তাঁর
মুখমন্ডল ধুলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে (পানি নিয়ে) দুই হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার
ধুলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে উভয় হাত দিয়ে সামনে এবং পেছনে একবার মাত্র মাথা মাস্হ
করলেন। তারপর দু’পা টাখনু পর্যন্ত ধুলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৬, ১৮৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৮. অধ্যায়ঃ
উযূর অবশিষ্ট পানি
ব্যবহার।
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) তাঁর পরিবারকে মিসওয়াক ধোয়া অবশিষ্ট পানি দিয়ে উযূ করতে নির্দেশ দেন।
হাদিস নং-২১১
আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন একদা দুপুর
বেলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট এলেন। তাঁকে উযূর পানি
এনে দেয়া হলে তিনি উযূ করলেন। লোকে তার উযূর ব্যবহৃত পানি নিয়ে গায়ে মাখতে লাগল।
অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের দু’রাক‘আত এবং ‘আসরের
দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। আর তাঁর সামনে ছিল একটি লাঠি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৭, ৩৭৬, ৪৯৫, ৪৯৯, ৫০১, ৬৩৩, ৬৩৪, ৩৫৫৩, ৩৫৬৬, ৫৭৮৬, ৫৮৫৯)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২১২
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পাত্র আনালেন যাতে পানি ছিল। অতঃপর তিনি তার মধ্যে উভয়
হাত ও মুখমন্ডল ধুলেন এবং তার দ্বারা কুলি করলেন। অতঃপর তাদের দু’জন [আবূ মূসা
(রাঃ) ও বিলাল (রাঃ)]-কে বললেনঃ ‘তোমরা এ থেকে পান কর এবং তোমাদের মুখমন্ডলে ও
বুকে ঢাল।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৮, ১৯৬, ৪৩২৮; মুসলিম ৪/৪৭, হাঃ ৫০৩, আহমাদ ১৮৭৬৯, ১৮৭৮২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮২ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৭ শেষাংশ)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৮, ১৯৬, ৪৩২৮; মুসলিম ৪/৪৭, হাঃ ৫০৩, আহমাদ ১৮৭৬৯, ১৮৭৮২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮২ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৭ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২১৩
মাহমূদ ইব্নুর-রবী’
‘(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণনাকারী বলেনঃ তিনি সে
ব্যক্তি, যার মুখমন্ডলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের
কুয়া হতে পানি নিয়ে কুলির পানি দিয়েছিলেন। তিনি তখন বালক ছিলেন। ‘উরওয়া (রহঃ)
মিসওয়ার (রহঃ) প্রমুখের নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করেন। এ উভয় বর্ণনা একটি অন্যটির
সত্যায়ন স্বরূপ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন উযূ করতেন তখন তাঁর
ব্যবহৃত পানির উপর তাঁরা (সাহাবায়ে কিরাম) যেন হুমড়ি খেয়ে পড়তেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৮৯, ১৯৬, ৪৩২৮ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৩ কিন্তু
প্রথমাংশ নেই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২১৪
সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার খালা আমাকে নিয়ে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেনঃ ‘হে আল্লাহর রসূল!
আমার ভাগিনা অসুস্থ’। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মাথায়
হাত বুলালেন এবং বরকতের দু‘আ করলেন। অতঃপর উযূ করলেন। আমি তাঁর উযুর (অবশিষ্ট)
পানি পান করলাম। তারপর তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম। তখন আমি তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে
নবুওয়াতের মোহর দেখতে পেলাম। তা ছিল পর্দার ঘুণ্টির মত।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯০, ৩৫৪০, ৩৫৪১, ৫৬৭০, ৬৩৫২; মুসলিম ৪৩/৩০, হাঃ ২৩৪৫) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৩৯. অধ্যায়ঃ
এক আঁজলা পানি দিয়ে
কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া।
হাদিস নং-২১৫
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু
যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি পাত্র হতে
দু’হাতে পানি ঢেলে দু’হাত ধৌত করলেন। অতঃপর এক খাবল পানি দিয়ে (মুখ) ধুলেন বা কুলি
করলেন এবং নাকে পানি দিলেন। তিনবার এরূপ করলেন। তারপর দু’ হাত কনুই পর্যন্ত
দু’-দু’বার ধুলেন এবং মাথার সামনের অংশ এবং পেছনের অংশ মাস্হ করলেন। আর টাখনু
পর্যন্ত দু’ পা ধুলেন। অতঃপর বললেনঃ “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর উযূ এরূপ ছিল।”
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯১, ১৮৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪০. অধ্যায়ঃ
একবার মাথা মাস্হ করা।
হাদিস নং-২১৬
ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘আমি একদা
‘আমর ইব্নু আবূ হাসান (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যায়দ
(রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন।
অতঃপর তিনি পানির একটি পাত্র এনে তাঁদের উযূ করে দেখালেন। তিনি পাত্রটি কাত করে
উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তিনবার তা ধুয়ে ফেলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন
এবং তিন খাবল পানি দিয়ে তিনবার করে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে তা ঝাড়লেন।
অতঃপর পুনরায় পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিনবার মুখমন্ডল ধুলেন। অতঃপর পুনরায়
পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত দু’-দু’বার ধুলেন। অতঃপর পুনরায়
পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তাঁর মাথা হাত দিয়ে সামনে এবং পেছনে মাস্হ করলেন। তারপর
আবার পাত্রের মধ্যে তাঁর হাত ঢুকিয়ে দুই পা ধুলেন।’ [১]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯২, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯১)
উহায়ব (রহ.) সূত্রে মূসা
(রহ.) বর্ণনা করেন, মাথা একবার মাসেহ করেন। (১৮৫) (ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯২)
[১] ঘাড় মাস্হ করা
বিদ‘আত। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ঘাড় মাস্হ প্রমাণিত নয়। সহীহ্ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম
নাবাবী (রহঃ) একে বিদ‘আত বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪১. অধ্যায়ঃ
স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে
উযূ করা এবং স্ত্রীর উযূর অবশিষ্ট পানি (ব্যবহার করা)।
‘উমর (রাঃ) গরম পানি দিয়ে
এবং খৃস্টান মহিলার ঘরের পানি দিয়ে উযূ করেন।
হাদিস নং-২১৭
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল
–এর সময় পুরুষ এবং মহিলা একত্রে (এক পাত্র হতে) উযূ করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৩, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৩)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৩, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪২. অধ্যায়ঃ
অজ্ঞান লোকের উপর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উযূর পানি ছিটিয়ে দেয়া।
হাদিস নং-২১৮
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি অসুস্থ
থাকা অবস্থায় একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার
খোঁজ-খবর নিতে এলেন। আমি তখন এতই অসুস্থ ছিলাম যে আমার জ্ঞান ছিল না। তারপর তিনি
উযূ করলেন এবং তাঁর উযূর পানি আমার উপর ছিঁটিয়ে দিলেন। তখন আমার জ্ঞান ফিরে এল।
আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! (আমার) ‘মীরাস’ কে পাবে? আমার একমাত্র ওয়ারিস হল
কালালাহ [১]। তখন ফারায়েযের আয়াত অবতীর্ণ হল।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৪, ৪৫৭৭, ৫৬৫১, ৫৬৬৪, ৫৬৭৬, ৫৭২৩, ৬৭২৩, ৬৭৪৩, ৭৩০৯
দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৪)
[১] কালালাহঃ যার
ছেলেমেয়ে ও পিতা নেই তার উত্তরাধিকারীকে কালালাহ বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৩. অধ্যায়ঃ
গামলা, কাঠ ও পাথরের
পাত্রে উযূ-গোসল করা।
হাদিস নং-২১৯
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা সালাতের
সময় উপস্থিত হলে যাঁদের বাড়ি নিকটে ছিল তাঁরা (উযূ করার জন্য) বাড়ি চলে গেলেন। আর
কিছু লোক রয়ে গেলেন (তাঁদের কোন উযূর ব্যবস্থা ছিল না)। তখন আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি পাথরের পাত্রে পানি আনা হল।
পাত্রটি এত ছোট ছিল যে, তার মধ্যে তাঁর উভয় হাত মেলে দেয়া সম্ভব ছিল না। তা থেকেই
কওমের সকল লোক উযূ করলেন। আমরা জিজ্ঞেস করলামঃ ‘আপনারা কতজন ছিলেন’? তিনি বললেনঃ
‘আশিজন বা তারও কিছু অধিক।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৫, ১৬৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২০
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পানি ভর্তি পাত্র আনালেন। তাতে তাঁর উভয় হাত ও মুখমন্ডল
ধুলেন এবং কুলি করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৬, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২১
‘আবদুল্লাহ ইব্নু যায়দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বাড়ি এলেন। আমরা তাঁকে পিতলের একটি পাত্রে পানি দিলে
তা দিয়ে তিনি উযূ করলেন। তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ও উভয় হাত দু’-দু’বার করে ধুলেন এবং
তাঁর হাত সামনে ও পেছনে এনে মাথা মাস্হ করলেন আর উভয় পা ধুলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী,
হাদিস নং-১৯৭, ১৮৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২২
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুস্থতা বেড়ে গেলে তিনি আমার ঘরে শুশ্রূষার জন্য তাঁর
স্ত্রীদের নিকট অনুমতি চাইলে তাঁরা অনুমতি দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) (আমার ঘরে আসার জন্য) দু’ব্যক্তির উপর ভর করে বের হলেন। আর তাঁর পা
দু’খানি তখন মাটিতে চিহ্ন রেখে যাচ্ছিল। তিনি ‘আব্বাস (রাঃ) ও অন্য এক ব্যক্তির
মাঝখানে ছিলেন। ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ আমি ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস
(রাঃ)-কে এ কথা জানালাম। তিনি বললেনঃ সে অন্য ব্যক্তিটি কে তা কি তুমি জান? আমি
বললাম, না। তিনি বললেনঃ তিনি হলেন ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ)। ‘আয়িশা (রাঃ)
বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে আসলে অসুস্থতা আরো
বৃদ্ধি পেল। তিনি বললেনঃ ‘তোমরা আমার উপর মুখের বাঁধন খোলা হয়নি এমন সাতটি মশকের
পানি ঢেলে দাও, তাহলে হয়ত আমি মানুষকে কিছু উপদেশ দিতে পারব।‘ তাঁকে তাঁর স্ত্রী
হাফসা (রাঃ)–এর একটি বড় পাত্রে বসিয়ে দেয়া হল। অতঃপর আমরা তাঁর উপর সেই সাত মশক
পানি ঢালতে লাগলাম। এভাবে ঢালার পর এক সময় তিনি আমাদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন, (এখন
থাম) তোমরা তোমাদের কাজ করেছ। অতঃপর তিনি বের হয়ে জনসম্মুক্ষে গেলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৮, ৬৬৪, ৬৬৫, ৬৭৯, ৬৮৩, ৬৮৭, ৭১২, ৭১৩, ৭১৬, ২৫৮৮, ৩০৯৯,
৩৩৮৪, ৪৪৪২, ৪৪৪৫, ৫৭১৪, ৭৩০৩ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯২, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ১৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৪. অধ্যায়ঃ
গামলা হতে উযূ করা।
হাদিস নং-২২৩
ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আমার চাচা উযূর পানি অধিক
খরচ করতেন। একদা তিনি ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাঃ)-কে বললেনঃ ‘নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কীভাবে উযূ করতেন আপনি কি তা দেখেছেন?’ তিনি
এক গামলা পানি আনালেন। সেটি উভয় হাতে কাত করে (তা থেকে পানি ঢেলে) হাত দু’টি
তিনবার ধুলেন, অতঃপর তার হাত গামলায় ঢুকালেন। অতঃপর এক খাবল (করে) পানি দিয়ে
তিনবার কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। তারপর পানিতে তাঁর হাত ঢুকালেন। উভয় হাতে এক
খাবল (করে) পানি নিয়ে মুখমন্ডল তিনবার ধুলেন। অতঃপর উভয় হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার
করে ধুলেন। অতঃপর উভয় হাতে পানি নিয়ে মাথার সামনে এবং পেছনে মাস্হ করলেন এবং দু’
পা ধুলেন। তারপর বললেনঃ ‘আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এভাবেই
উযূ করতে দেখেছি।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-১৯৯, ১৮৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২৪
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একপাত্র পানি চাইলে একটি বড় পাত্র তাঁর নিকট আনা হল, তাতে
সামান্য পানি ছিল। তারপর তিনি তার মধ্যে তাঁর আঙ্গুল রাখলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমি
পানির দিকে তাকাতে লাগলাম। তাঁর আঙ্গুলের ভেতর দিয়ে পানি উপচে পড়তে লাগল। আনাস
(রাঃ) বলেনঃ যারা উযূ করেছিল, আমি অনুমান করলাম তাদের সংখ্যা ছিল সত্তর হতে আশি
জনের মত।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০০, ১৬৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৫. অধ্যায়ঃ
এক মুদ [১] (পানি) দিয়ে
উযূ করা।
[১] ১ মুদ = ৬০০ গ্রাম,
চার মুদ = ১ সা‘ অর্থাৎ প্রায় আড়াই কেজির পাত্র বিশেষ। তবে শস্যের তারতম্যের কারণে
ওজনের তারতম্য ঘটে। যেমন যব কিংবা গম হলে আড়াই কেজির কিছুটা কম হতে পারে। আবার চাল
ভারি হবার কারণে বেশী হতে পারে। (ইত্তেহাফুল কিরাম তা‘লীক বুলুগুল মারাম ২৩ পৃঃ)
বিশিষ্ট সাহাবী যায়দ বিন
সাবিত (রাঃ) এর ব্যবহৃত পাত্র যা ‘উনাইয়াহ শহরে মাটির নীচে পাওয়া গেছে সে অনুযায়ী
ভাল জাতের গম হলে এক সা‘ সমান হয় ২ কেজি ৪০ গ্রাম। -মুহাম্মাদ বিন সালিহ বিন
উসাইমিন। (আশ্-শারহুল মুফতী ‘আলা যাদিল মুসতাকদি ৬ষ্ঠ খন্ড, ৭৪, ৭৬, ১৭৬, ১৭৭
পৃষ্ঠা) (মাজালিশে শাহরি রমাযান ১৩৮ পৃষ্ঠা) সলিহ আল ‘উসাইমীনের বরাত দিয়ে অনেকে ২
কেজি ৪০০ গ্রাম উল্লেখ করেছেন যা ভুল। কারণ তিনি তাঁর কিতাবে সংখ্যায় না লিখে কথায়
লিখেছেনঃ
হাদিস নং-২২৫
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সা‘ (৪ মুদ) হতে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি
দিয়ে গোসল করতেন এবং উযূ করতেন এক মুদ দিয়ে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০১, মুসলিম ৩/১০, হাঃ ৩২৫, আহমাদ ১৪০০২, ১৪০৯৫) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ১৯৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৬. অধ্যায়ঃ
মোজার উপর মাস্হ করা।
হাদিস নং-২২৬
সা‘দ ইব্নু আবূ
ওয়াককাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উভয় মোজার উপর মাস্হ করেছেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর
(তাঁর পিতা) ‘উমর (রাঃ)-কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ‘হাঁ! সা’দ (রাঃ)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কিছু বর্ণনা করলে সে ব্যাপারে আর
অন্যকে জিজ্ঞেস করো না।’
মূসা ইব্নু ‘উকবাহ
(রহঃ)....সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ অতঃপর ‘উমর (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে
অনুরূপ বললেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০২, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২৭
মুগীরা ইব্নু শু‘বাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলে তিনি [
মুগীরা (রাঃ) ] পানি সহ একটা পাত্র নিয়ে তাঁর অনুসরণ করলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজন শেষ করে এলে তিনি তাঁকে
পানি ঢেলে দিলেন। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করলেন এবং উভয়
মোজার উপর মাস্হ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৩, ১৮২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২২৮
উমাইয়া যামরী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উভয় মোজার উপর মাস্হ করতে দেখেছেন। হার্ব
ও আবান (রহঃ) ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৪, ২০৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
২০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২২৯
উমাইয়া (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর পাগড়ীর উপর এবং উভয় মোজার উপর মাস্হ
করতে দেখেছি’। মা‘মার (রহঃ) ‘আম্র (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেনঃ ‘আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা করতে দেখেছি।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৫, ২০৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৭. অধ্যায়ঃ
পবিত্র অবস্থায় উভয় পা
(মোজায়) প্রবেশ করানো।
হাদিস নং-২৩০
মুগীরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কোন এক সফরে ছিলাম। (উযূ করার সময়)
আমি তাঁর মোজা দু’টি খুলতে চাইলে তিনি বললেনঃ ‘ও দু’টো থাক, আমি পবিত্র অবস্থায় ও
দু’টি পরেছিলাম’। (এই বলে) তিনি তার উপর মাস্হ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৬, ১৮২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৮. অধ্যায়ঃ
বকরীর গোশত ও ছাতু খেয়ে
উযূ না করা।
আবূ বক্র, ‘উমর ও ‘উসমান
(রাঃ) গোশত খেয়ে উযূ করেননি।
হাদিস নং-২৩১
‘আবদুল্লাহ ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বকরীর কাঁধের গোশত খেলেন। অতঃপর সালাত
আদায় করলেন; কিন্তু উযূ করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৭, ৫৪০৪, ৫৪০৫; মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৪, আহমাদ ১৯৯৪, ১৯৮৮)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৩২
উমাইয়া (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি বকরীর কাঁধের গোশ্ত কেটে খেতে দেখলেন। এ সময়
সালাতের জন্য আহ্বান হল। তিনি ছুরিটি ফেলে দিলেন, অতঃপর সালাত আদায় করলেন; কিন্তু
উযূ করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৮, ৬৭৫, ২৯২৩, ৫৪০৮, ৫৪২২, ৫৪৬২; মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৫,
আহমাদ ১৭২৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৪৯. অধ্যায়ঃ
ছাতু খেয়ে উযূ না করে
কুলি করা যথেষ্ট।
হাদিস নং-২৩৩
সুওয়াইদ ইব্নু নু’মান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ খায়বার
যুদ্ধের বছর তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বের
হলেন। চলতে চলতে তাঁরা সাহবা-য় পৌঁছলেন, এটি খায়বরের নিকটবর্তী অঞ্চল, তখন তিনি
আসরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খাবার আনতে বললেনঃ কিন্তু ছাতু ব্যতীত আর কিছুই আনা
হল না। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিলে তাতে পানি মেশানো হয়। আল্লাহর রসূল তা খেলেন এবং
আমরাও খেলাম। অতঃপর তিনি মাগরিবের জন্য দাঁড়ালেন এবং কুলি করলেন এবং আমরাও কুলি
করলাম। পরে তিনি সালাত আদায় করলেন; উযূ করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২০৯, ২১৫, ২৯৮১, ৪১৭৫, ৪১৯৫, ৫৩৮৪, ৫৩৯০, ৫৪৫৪, ৫৪৫৫) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৩৪
উম্মুল মু’মিনীন
মাইমূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর (বকরীর) কাঁধের গোশত খেলেন, অতঃপর সালাত আদায় করলেন অথচ
উযূ করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১০, মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৪, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ২১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫০. অধ্যায়ঃ
দুধ পান করে কি কুলি
করতে হবে?
হাদিস নং-২৩৫
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
একদা আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুধ পান করলেন। অতঃপর কুলি করলেন এবং বললেনঃ
‘এতে রয়েছে তৈলাক্ত বস্তু’ (কাজেই কুলি করা উত্তম)। ইউনুস ও সালিহ ইব্নু কায়সার
(রাঃ) যুহরী (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১১, ৫৬০৯; মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৮, আহমাদ ১৯৫১, ৩০৫১) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২০৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫১. অধ্যায়ঃ
ঘুমালে উযূ করা এবং
দু’একবার তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বা মাথা ঝুঁকে পড়লে উযূ না করা।
হাদিস নং-২৩৬
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতরত অবস্থায় তোমাদের কেউ
তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সে যেন ঘুমের আমেজ চলে না যাওয়া পর্যন্ত ঘুমিয়ে নেয়। কারণ,
যে তন্দ্রাচ্ছন্ন সালাত আদায় করে সে জানে না যে, সে কি ইস্তেগফার করছে নাকি নিজেকে
গালি দিচ্ছে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১২, মুসলিম ৬/৩১, হাঃ ৭৮৬, আহমাদ ২৪৩৪১, ২৫৭৫৭) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২০৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৩৭
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যদি সালাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে
পড়ে, সে যেন ততক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়, যতক্ষণ না সে কী পড়ছে, তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১৩, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫২. অধ্যায়ঃ
হাদাস ব্যতীত উযূ করা।
হাদিস নং-২৩৮
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক সালাতের সময় উযূ করতেন। আমি বললাম :
আপনারা কী করতেন? তিনি বললেনঃ হাদাস (উযূ ভঙ্গের কারণ) না হওয়া পর্যন্ত আমাদের
(পূর্বের) উযূ যথেষ্ট হত।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১৪, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৩৯
সুওয়াইদ ইব্নু নু’মান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ খায়বার
যুদ্ধের বছর আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বের
হলাম। সহ্বা নামক স্থানে পৌঁছে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদের নিয়ে আসরের সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি খাবার আনতে বললেন। ছাতু
ব্যতীত আর কিছুই আনা হল না। আমরা তা খেলাম এবং পান করলাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের জন্য দাঁড়ালেন, অতঃপর কুলি করলেন; অতঃপর আমাদের
নিয়ে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন অথচ তিনি (নতুন) উযূ করলেন না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২১৪, ২০৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২০৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৩. অধ্যায়ঃ
মুসল্লীর পিঠের উপর
ময়লা বা মৃত জন্তু ফেললে তার সালাত বাতিল হবে না।
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সালাত
আদায়ের অবস্থায় তাঁর কাপড়ে রক্ত দেখলে (সেভাবেই) তা রেখে দিয়ে সেভাবে সালাত আদায়
করে নিতেন।
ইব্নুল মুসায়্যাব ও
শা'বী (রহঃ) বলেন, যখন কেউ সালাত আদায় করে আর তার কাপড়ে রক্ত অথবা জানাবাতের
নাপাকী থাকে অথবা সে ক্বিবলাহ ব্যতীত অন্যদিকে মুখ করে অথবা তায়াম্মুম করে সালাত
আদায় করে অতঃপর ওয়াক্তের মধ্যেই যদি পানি পেয়ে যায় তবে (সালাত) দুহ্রাবে না।
হাদিস নং-২৪০
'আবদুল্লাহ ইব্নু
মাস'ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদারত অবস্থায় ছিলেন। অন্য সূত্রে
আহমাদ ইব্নু 'উসমান (রহঃ)..... 'আবদুল্লাহ ইব্নু মাস'ঊদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে,
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বায়তুল্লার (ক্বাবার) পাশে সালাত আদায়
করছিলেন এবং সেখানে আবূ জাহেল ও তার সাথীরা বসা ছিল। এমন সময় তাদের একজন অন্যজনকে
বলে উঠল 'তোমাদের মধ্যে কে অমুক গোত্রের উটনীর নাড়িভুঁড়ি এনে মুহাম্মাদ যখন সাজ্দা
করেন তখন তার পিঠের উপর চাপিয়ে দিতে পারে'? তখন গোত্রের বড় পাষণ্ড ('উকবাহ)
তাড়াতাড়ি গিয়ে তা নিয়ে এল এবং তাঁর প্রতি লক্ষ্য রাখল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন সাজদায় গেলেন, তখন সে তাঁর পিঠের উপর দুই কাঁধের মাঝখানে তা রেখে
দিল। ইব্নু মাস'ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি (এ দৃশ্য) দেখছিলাম কিন্তু আমার কিছু করার ছিল
না। হায়! আমার যদি বাধা দেবার শক্তি থাকত! তিনি বলেন, তারা হাসতে লাগল এবং একে
অন্যের উপর লুটোপুটি খেতে লাগল। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তখন সাজদায় থাকলেন, মাথা উঠালেন না। অবশেষে ফাতিমা (রাঃ) এসে সেটি তাঁর
পিঠের উপর হতে ফেলে দিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মাথা উঠিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি কুরায়শকে ধ্বংস করুন। এরূপ তিনবার বললেন। তিনি
যখন তাদের বদ দু'আ করেন তখন তা তাদের অন্তরে ভয় জাগিয়ে তুলল। বর্ণনাকারী বলেন,
তারা জানত যে, এ শহরে দু'আ কবূল হয়। অতঃপর তিনি নাম ধরে বললেনঃ হে আল্লাহ! আবূ
জাহেলকে ধ্বংস করুন এবং 'উতবাহ ইব্নু রবী'আহ, শায়বাহ ইব্নু রবী'আ, ওয়ালীদ ইব্নু
'উতবাহ, উমাইয়া বিন খালাফ ও 'উকবাহ ইব্নু আবী মু'আইতকে ধ্বংস করুন। রাবী বলেন,
তিনি সপ্তম ব্যক্তির নামও বলেছিলেন কিন্তু তিনি স্মরণ রাখতে পারেননি। ইব্নু
মাস'ঊদ (রাঃ) বলেনঃ সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাদের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, তাদের আমি বদরের
কূপের মধ্যে নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪০, ৫২০, ২৯৩৪, ৩১৮৫, ৩৮৫৪, ৩৯৬০; মুসলিম ৩২/৩৯, হাঃ ১৭৯৪, আহমাদ
৩৭২২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৪. অধ্যায়ঃ
থুথু, নাকের শ্লেম্মা
ইত্যাদি কাপড়ে লেগে গেলে।
'উরওয়াহ (রহঃ) মিসওয়ার ও
মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হুদায়বিয়ার সময় বের হলেন। অতঃপর পূর্ণ হাদীস বর্ণনার পর তিনি বলেন, আর নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সেদিন) যখনই কোন শ্লেম্মা ঝেড়ে ফেলছিলেন, তখন
তা তাদের কারো না কারো হাতে পড়ছিল। তারপর তা (বরকত স্বরূপ) ঐ ব্যক্তি তা তার
মুখমণ্ডল ও শরীরে মেখে নিচ্ছিল।
হাদিস নং-২৪১
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা তাঁর কাপড়ে থুথু ফেললেন। ইমাম বুখারী
(রহঃ) বলেন যে, ইব্নু আবূ মারইয়াম এ হাদীসটি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪১, ৪০৫, ৪১২, ৪১৩, ৪১৭, ৫৩১, ৫৩২, ৮২২, ১৬১৪ দ্রষ্টব্য)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৫. অধ্যায়ঃ
নবীয (খেজুর, কিসমিস,
মনাক্কা, ইত্যাদি ভিজানো পানি) এবং নেশার উদ্রেককারী পানীয় দ্বারা উযূ না-জায়িয।
হাসান (রহঃ) ও আবুল
'আলিয়াহ (রহঃ) একে মাকরূহ বলেছেন। 'আত্বা (রহঃ) বলেনঃ নবীয এবং দুধ দিয়ে উযূ করার
চেয়ে তায়াম্মুম করাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।
হাদিস নং-২৪২
'আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা
হারাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪২, ৫৫৮৫, ৫৫৮৬ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪১)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪২, ৫৫৮৫, ৫৫৮৬ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৬. অধ্যায়ঃ
পিতার মুখমণ্ডল হতে
কন্যা কর্তৃক রক্ত ধুয়ে ফেলা।
আবুল 'আলিয়াহ (রহঃ) বলেনঃ
আমার পায়ে ব্যাথা, তোমরা আমার পা মালিশ করে দাও।
হাদিস নং-২৪৩
আবূ হাযিম থেকে বর্ণিতঃ
যখন আমার এবং সাহল ইব্নু
সা'দ আস-সা'ঈদী (রাঃ)-র মাঝখানে কেউ ছিল না, তখন লোকে তার নিকট আরয করলঃ (উহুদ
যুদ্ধে) কী দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যখমের চিকিৎসা করা
হয়েছিল? তখন তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে আমার চেয়ে অধিক জানে এমন কেউ জীবিত নেই। 'আলী
(রাঃ) তাঁর ঢালে করে পানি আনছিলেন আর ফাতিমাহ্ (রাঃ) তাঁর মুখমণ্ডল হতে রক্ত ধুয়ে
দিলেন। অবশেষে চাটাই পুড়িয়ে (তার ছাই) তাঁর ক্ষতস্থানে দেয়া হল।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং-২৪৩, ২৯০৩, ২৯১১, ৩০৩৭, ৪০৭৫, ৫২৪৮, ৫৭২২ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৭. অধ্যায়ঃ
উযূসহ রাতে ঘুমাবার
ফযীলত।
হাদিস নং-২৪৪
বারাআ ইব্নু 'আযিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন সালাতের
উযূর মতো উযূ করে নেবে। তারপর ডান পাশে শুয়ে বলবেঃ
"হে আল্লাহ! আমার
জীবন আপনার নিকট সমর্পণ করলাম। আমার সকল কাজ তোমার নিকট অর্পণ করলাম এবং আমি তোমার
আশ্রয় গ্রহণ করলাম তোমার প্রতি আগ্রহ ও ভয় নিয়ে। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন আশ্রয়স্থল
ও পরিত্রাণের স্থান নেই। হে আল্লাহ! আমি ঈমান আনলাম তোমার অবতীর্ণ কিতাবের উপর এবং
তোমার প্রেরিত নবীর প্রতি।"
অতঃপর যদি সে রাতেই তোমার
মৃত্যু হয় তবে ইসলামের উপর তোমার মৃত্যু হবে। এ কথাগুলো তোমার সর্বশেষ কথায় পরিণত
কর। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ কথাগুলি
পুনরায় শুনালাম। যখন اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ পর্যন্ত পৌছে وَرَسُولِكَ বললাম, তখন তিনি বললেনঃ না; বরং وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ বল। [১]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস
নং-২৪৭, ৬৩১১, ৬৩১৩, ৬৩১৫, ৭৪৮৮; মুসলিম ৪৮/১৭, হাঃ ২৭১০, আহমাদ ১৮৫৮৫) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ২৪০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৫)
[১] কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণিত দু'আয়
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ণিত শব্দের পরিবর্তন করা
যাবে না। এবং দু'আ নিজ পক্ষ হতে তৈরী করাও যাবে না। কারণ 'আমল কবূলের দু'টি শর্ত
রয়েছেঃ
(১) ইখলাস বা নিছক আল্লাহর উদ্দেশে
হতে হবে।
(২) নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া
সাল্লামের হুবহু অনুসরণ হতে হবে। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে
দু'আ যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই দু'আ পড়তে হবে। দু'আর সঙ্গে শব্দ সংযোজন
বা বিয়োজন সম্পূর্ণ অবৈধ বা বিদ'আত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে আমাদের দেশে
রেডিও ও টেলিভিশনে ও বেশীরভাগ মসজিদে আযানের দু'আর মধ্যে অতিরিক্ত শব্দ সংযোজন করা
হয় যা বিদ'আত। কিংবা দরুদ পাঠের সময় কিছু কিছু অতিরিক্ত বানানো শব্দ দ্বারা দরুদ
পাঠ করা হয় এমনকি নতুন নতুন অনেক দরুদ তৈরী করা হয়েছে সবই বিদ'আত যা আল্লাহর রসূল
শিক্ষা দেননি। কারণ, এ অতিরিক্ত শব্দগুলো ও বানানো দরুদগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা
প্রমাণিত নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৮. অধ্যায়ঃ
মাথা একবার মাসাহ করা
হাদিস নং-২৪৫
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উযু করার পদ্ধতি বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাত্র একবার মাথা মাসহ করেছিলেন। -আবূ দাঊদ।
নাসায়ী ও তিরমিযী সহীহ সানাদে; বরং তিরমিযী বলেন, এ বাবে বর্ণিত হাদীসগুলির মধ্যে
এটি সর্বাধিক সহীহ। [১]
[১] আবূ দাঊদ (১১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৫৯. অধ্যায়ঃ
দু’কান মাসাহ করার
বিবরণ
হাদিস নং-২৪৬
আব্দুল্লাহ বিন ‘আমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ওযুর নিয়ম পদ্ধতি
সম্পর্কে বলেন, অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মাথা মাসহ
করার জন্য তাঁর দু’হাতের শাহাদাত আঙ্গুলদ্বয়কে তাঁর দু’কানের ছিদ্রে ঢুকালেন ও
বৃদ্ধাঙ্গুলদ্বয় দিয়ে দু’কানের উপরিভাগে মাসহ করলেন। ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ
বলেছেন। [১]
[১] আবূ দাঊদ (৯১৩৫);
নাসায়ী (১/৮৮) ‘আমর বিন শুয়াইব সূত্রে তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে
বর্ণনা করেন। এর আরো সমর্থক হাদীস রয়েছে। কিন্তু আবূ দাঊদে যে শব্দে হাদীসটি
বর্ণিত হয়েছে তা সহীহ নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬০. অধ্যায়ঃ
ঘুম থেকে উঠার সময় নাক
পরিষ্কার করা শরীয়ত সম্মত
হাদিস নং-২৪৭
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল
সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা হতে জাগ্রত হবে তখন
সে যেন তিনবার তার নাক ঝেড়ে নেয়, কেননা শয়তান নাকের ছিদ্রপথে রাত্রি যাপন করে। [১]
[১] বুখারি- ৩২৯৫,
মুসলিম- ২৩৮
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬১. অধ্যায়ঃ
ঘুম থেকে জাগ্রত
ব্যক্তির দু হাতের তালু কোন পাত্রে প্রবেশ করার পুর্বে ধৌত করা আবশ্যক
হাদিস নং-২৪৮
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
‘তোমাদের কেউ যেন ঘুম
থেকে উঠে তিনবার হাত ধুয়ে না নেয়ার পুর্বে পানির পাত্রে না ডুবিয়ে দেয়। কেননা,
সেতো জানেনা যে, ঘুমের অবস্থায় তার হাত কোথায় ছিল। [১]
[১] সহীহ। (বুখারি-
১৬২, মুসলিম- ২৭৮) শব্দ মুসলিমের
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬২. অধ্যায়ঃ
অযুর পদ্ধতির বিবরন
হাদিস নং-২৪৯
লাকীত বিন সাবিরাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “ভালভাবে উযু কর ও আংগুলের ফাকা স্থানে
খিলাল কর, সাওম পালনকারি না হলে নাকে পুর্নভাবে পানি প্রবেশ করাও।“ আবূ দাঊদ, নাসায়ী,
তিরমিযী, ইবনু মাজাহ। ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ বলেছেন। [১] আবূ দাঊদের অন্য বর্ননায়
রয়েছে যখন তুমি উযু করবে তখন কুলি করবে। [২]
[১] সহীহ। আবূ দাঊদ
(১৪২, ১৪৩) নাসায়ী (১/৬৬,৬৯), তিরমিযী (৩৮), ইবনু মাজাহ (৪৪৮), ইবনু খুযাইমাহ
(১৫০, ১৬৮) ‘আসিম বিন লাক্বীত বিন সাবেরাহ সুত্রে, তিনি তার পিতা হতে।
[২] সুনান আবূ দাঊদ
(১৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৩. অধ্যায়ঃ
অযুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
গুলো ঘষা শরীয়তসম্মত
হাদিস নং-২৫০
আব্দুল্লাহ বিন যায়দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খেদমতে দুই তৃতীয়াংশ মুদ (প্রায় আধা সের) পরিমান পানি পেশ
করা হলে তিনি তা দিয়ে তার দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ঘষে ধুতে লাগলেন।’ [১]
[১] আহমাদ (৪/৩৯), ইবনু
খুযাইমাহ (২২৮), ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ বলেছেন। হাদীসের শব্দ ইবনু খুযাইমার।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৪. অধ্যায়ঃ
মাথা মাসহ করার জন্য নতুন
পানি গ্রহন করা শরীয়তসম্মত
হাদিস নং-২৫১
আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
‘তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মাথা মাসাহ -এর অবশিষ্ট পানি ব্যতীত কান মাসহ করতে
নতুনভাবে পানি নিতে দেখেছেন। [১]
মুসলিমের সুরক্ষিত শব্দ
বিন্যাস এরুপ- ‘এবং তিনি তাঁর মাথা মাসহ করেছিলেন। তাঁর হস্তদ্বয়ের অবশিষ্ট পানি
ব্যতীত অন্য পানি দিয়ে।’ [২] [হাদিসের প্রথম অংশ শায ও দ্বিতীয় অংশ মাহফুয, শায
প্রত্যাখ্যাত ও মাহফুয গ্রহণীয়]
[১] বায়হাক্বী (১/৬৫), বায়হাক্বী বলেন
হাদীসটির সনদ সহীহ। তিরমিযীও একে সহীহ বলেছেন। ইমাম নাবাবী তার আল মাজমূ’ (১/৪১২)
গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ইবনু উসাইমীন আশ-শারহুল মুমত্বী (১/১৭৮) ও শারহে
বুলুগুল মারাম (১/১৮৯) গ্রন্থে হাদীসটিকে শায বলেছেন। শাতখ আলবানী সিলসিলা সহীহা
(১/৯০৫) গ্রন্থে হাদীসটি শায ও সহীহ নয়।
[২] মুসলিম (২৩৬), ইমাম বায়হাক্বী
বলেন, এটি পুর্বে এ বিষয়ে বর্নীত হাদীসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৬৫. অধ্যায়ঃ
অযূতে ডান দিক থেকে
শুরু করার নির্দেশ
হাদিস নং-২৫২
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা যখন উযু করবে তখন ডান দিক থেকে আরম্ভ করবে।’
[৫৮]
[৫৮] আবূ দাঊদ (৪১৪১), তিরমিযী
(১৭৬৬), নাসায়ী তার সুনানুল কুবরায় (৫/৪৮২), ইবনু মাজাহ (৪০২) ইবনু খুযাইমাহ (১৭৮)
ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ বলেছেন। হাদীসের শব্দ ইবনু মাজাহর। আর আবূ দাঊদ ও ইবনু
মাজাহর শব্দ হল (আরবী) তোমরা যখন পোশাক পরবে বা ওযু করবে তখন তোমাদের ডান দিক হতে
শুরু করবে। তিরমিযী ও নাসায়ীর শব্দ হচ্ছেঃ (আরবী) তিনি যখন পোশাক পরতেন তখন ডান
দিক হতে শুরু করতেন। এ থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, হাফেয ইবনু হাজার তাখরীজ করার
ক্ষেত্রে ভুল করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৬. অধ্যায়ঃ
পাগড়ি সহকারে মাথার
সম্মুখভাগ মাসাহ করা যথেষ্ট
হাদিস নং-২৫৩
মুগীরাহ বিন শু‘বাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওযু করা কালে তাঁর কপাল, পাগড়ি ও মুজাদ্বয়ের উপর মাসহ
করেছেন।’ [১]
[১] সহীহ মুসলিম (৮৩,
২৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৭. অধ্যায়ঃ
অযূতে ধারাবাহিকতা
রক্ষা আবশ্যক
হাদিস নং-২৫৪
জাবির বিন্ ‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘(কুরআনে) আল্লাহ্ যা দিয়ে শুরু করেছেন তোমরাও
(সায়ী) তা দিয়ে শুরু কর।’ নাসায়ী আদেশমূলক শব্দে বর্ণনা করেছেন। [১] এবং মুসলিমে
(এটা বিবৃতি সূচক শব্দ দ্বারা) বর্ণিত হয়েছে। [২]
[১] সহীহ্ নাসায়ী (৫৩৬)
[২] মুসলিম (২/৮৮৮);
তিনি (আরবী) শব্দে বর্ণনা করেন। দেখুন (৭৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৮. অধ্যায়ঃ
অযূতে বিসমিল্লাহ্
বলার বিধান
হাদিস নং-২৫৫
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘(ওযুর শুরুতে) যে ব্যক্তি ‘বিসমিল্লাহ্’
না বলে তার ওযু শুদ্ধ হয় না।’ ইবনু মাজাহ এটি দুর্বল সানাদে বর্ণনা করেছেন।
কতক শাওয়াহেদ তথা
সমর্থক হাদীস থাকার কারণে হাদীসটি হাসান। আহমাদ (২/৪১৮); আবূ দাঊদ (১০১), ইবনু
মাজাহ (৩৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
তিরমিযীতে হাদীসটি সা‘ঈদ
বিন্ যায়দ থেকে বর্ণিত হয়েছে। [১]
[১] সুনান তিরমিযী (২৫)
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
হাদিস নং-২৫৬
আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। [১] আহমাদ বলেন, ‘বিসমিল্লাহ্ বলা প্রসঙ্গে কিছু প্রমাণিত নেই।’ [২]
[১] আল-ইলালুল কুবরা
(১১২-১১৩)
[২] যেমনটি “মাসায়েল
ইবনু হানী” তে (১/১৬/৩) বর্ণিত হয়েছে। মুহাক্কিত সুমাইর আয-যুহাইরি বুলগুল মারামের
ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ কিন্তু হাদীসটি কতক সমর্থক থাকার কারণে সহীহ। হাফেজ ইবনু
হাজার ব্যতীত অন্যরা একে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৬৯. অধ্যায়ঃ
কুলি করা ও নাকে পানি
দেয়ার পদ্ধতি
হাদিস নং-২৫৭
ত্বালহা বিন মুসরিফ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) -কে কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য করতে দেখেছি। (অর্থাৎ
দুই কাজে আলাদা আলাদা পানি ব্যবহার করতেন)। আবূ দাঊদ এটি দুর্বল সানাদে বর্ননা
করেছেন। [১]
[১] যঈফ। আবূ দাঊদ (১৩৯), ইবনুল
মুলকিন তাঁর খুলাসা আল বাদরুল মুনীর (১/৩২) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন, আর
তিনি একই গ্রন্থে (২/১০৪) এবং তুহফাতুল মুহতাজ (১/১৮২) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি
দুর্বল, কেননা প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণের নিকট লাইস বিন আবূ সুলাইম দুর্বল বর্ণনাকারী
হিসেবে পরিগণিত। ইমাম তাঁর খুলাসা (১/১০১) গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন আর আল মাজমু’
(১/৩৮৫) গ্রন্থে বলেছেনঃ এর সনদ শক্তিশালী নয়। ইমাম সনআনী তাঁর সুবুলুস সালাম
(১/৮২) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে লাইস বিন আবূ সুলাইম রয়েছেন যিনি দুর্বল
বর্ণনাকারী।ইমাম শওকানী তাঁর সাইলুল জাররার গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটিকে মুসরিফ
ওয়ালিদ ত্বলহার অজ্ঞতার কারণে ত্রুটিপূর্ণ মনে করা হয় কিন্তু ইবনুস সালাহ এর সনদকে
হাসান বলেছেন ...। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাঁর গায়াতুল মাকসুদ (১/৪০৪), আওনুল মা’বুদ
(১/১১৭) গ্রন্থেও হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী যঈফ আবূ দাঊদ (১৩৯)
গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন।ইবনু হাজার তাঁর আত তালখীসুল হাবীর (১/১১৫) গ্রন্থে বলেন,
এর সনেদ লাইস বিন আবূ সুলাইম দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছে যাকে ইয়াহইয়া ইবনুল কাত্তান,
ইবনু মুঈন, আহমাদ বিন হাম্বাল পরিত্যাগ করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
হাদিস নং-২৫৮
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“অতঃপর নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুলি করলেন ও তিনবার নাকে পানি দিয়ে নাক ঝেড়ে
নিলেন। তিনি কুলি করা এবং নাক ঝাড়ার কাজ একবার নেয়া পানিতেই সমাধা করলেন।” –আবূ
দাঊদ ও নাসায়ী। [১]
[১] এটি পূর্বের হাদীসের একটি অংশ। হাঃ ৩৪
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৫৯
আবদুল্লাহ্ বিন্ যায়দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রে হাত প্রবেশ করালেন এবং একবারে নেয়া পানিতেই কুলি
করলেন ও নাকে পানি দিলেন। তিনি অনুরূপ তিনবার করলেন। [১]
[১] এটি পূর্বের
হাদীসের একটি অংশ। হাঃ ৩৫
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭০. অধ্যায়ঃ
নাক ঝাড়া ও ঢিলা ব্যবহারে বেজোড় সংখ্যা প্রসঙ্গে
হাদিস নং-২৬০
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঢিলা ব্যবহার করে, তখন যেন বেজোড় সংখ্যা ব্যবহার
করে। আর তোমরা কেউ যখন ওযু করে তখন যেন নাকের ভেতর পানি প্রবেশ করায় এবং নাক ঝেড়ে সাফ
করে। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৪৮, (ই.ফা. ৪৫১, ই.সে. ৪৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২৬১
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এগুলো আবূ হুরায়রা্(রাঃ) আমাদের
কাছে মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।
এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। তন্মধ্যে এও ছিল যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা যখন ওযু করবে তখন উভয় নাকের ছিদ্রে পানি টেনে নিবে,
এরপর ঝেড়ে ফেলবে। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৪৯, (ই.ফা. ৪৫২, ই.সে. ৪৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২৬২
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ওযু করবে, সে যেন নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়ে, আর যে
ঢিলা ব্যবহার করবে, সে যেন বেজোড় সংখ্যক ব্যবহার করে। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৫০, (ই.ফা
৪৫৩, ই.সে. ৪৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২৬৩
আবূ হুরাইরাহ্ ও আবূ সা’ঈদ
আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশিষ্টাংশ অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। সহিহ
মুসলিম-হাদিস নং-৪৫১, (ই.ফা. ৪৫৪, ই.সে. ৪৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২৬৪
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠবে সে যেন নাকে পানি দিয়ে তিনবার
নাক ঝেড়ে নেয়। কেননা, শাইতান তার নাকের ভেতর রাত্রি যাপন করে। সহিহ মুসলিম-হাদিস
নং-৪৫২, (ই.ফা. ৪৫৫, ই.সে. ৪৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-২৬৫
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ঢিলা ব্যবহার করবে তখন বেজোড় সংখ্যা
নিবে। সহিহ মুসলিম-হাদিস নং-৪৫৩, (ই.ফা. ৪৫৬, ই.সে. ৪৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭১. অধ্যায়ঃ
অযুর মাঝে বিরতি না
দেয়া
হাদিস নং-২৬৬
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জনৈক ব্যক্তির পায়ে নখ পরিমাণ জায়গায় ওযুর পানি না পৌঁছা দেখে তাকে
বললেন, “তুমি ফিরে গিয়ে তোমার ওযুকে ভালভাবে সমাধা কর।” আবূ দাঊদ নাসায়ী এটি
বর্ণনা করেছেন। [১]
[১] আবূ দাঊদ (১৭৩), হাদীসটিকে ইবনু
হাজার নাসায়ীর সাথে সম্পৃক্ত করে ভুল করেছেন। কেননা হাদীসটিকে সুনানুল কুবরা ও
সুনানুল সুগরাতে পাওয়া যায় না।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭২. অধ্যায়ঃ
অযূর পর যা বলতে হয়
হাদিস নং-২৬৭
উমার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করবে অতঃপর
বলবে- উচ্চারণঃ আশহাদু আল্লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু আহ্দাহু লা-শারীকালাহু অ আশহাদু
আন্না মুহাম্মাদান্ আবদুহু অ রসূলুহু; আল্লাহুম্মাজ্ আলনী মিনাত্ তওয়াবীন অজ্ আলনী
মিনাল মুতাত্বহহেরীন। অর্থঃ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য
নাই, এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
বান্দা ও রসূল।” যে্ এই দুয়া পাঠ করবে সে যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছে জান্নাতে প্রবেশ
করতে পারবে- মুসলিম [১] ও তিরমিযী। তিরমিযীতে অতিরিক্ত আছে, “হে আল্লাহ্ আমাকে
তওবাহকারী ও পবিত্রতা হাসিলকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কর।” তার জন্য জান্নাতের ৮টি
দরজা খুলে দেয়া হবে। [২]
[১] মুসলিম (২৩৪) উকবাহ বিন আমির হতে
বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের উপর উট চরানোর দায়িত্ব ছিল। অতঃপর আমার বিশ্রামের
পালা এসে গেল। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মানুষের
মাঝে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলতে লক্ষ্য করলাম। আমি এ কথাটুকু শুনতে পেলাম, “কোন
মুসলিম যখন উত্তমরূপে ওযূ করে গভীর মনোযোগের সাথে দু’রাকাত সালাত আদায় করে। তার
জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। রাবী বলেন, আমি বললাম এটা কতনা উত্তম। আমাকে হঠাৎ
করে একজন বলল, এটা পূর্ব থেকেই উত্তম। অতঃপর আমি দেখি যে তিনি উমার (রাঃ)। তিনি
বললেন, আমি তো দেখছি যে, তুমি এইমাত্র বুঝতে পেরেছ। তারপর তিনি এ হাদীস শুনালেন।
এবং এর সাথে আরো বৃদ্ধি করে বললেন, আটটি দরজার যেকোনটি দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করতে
পারবে।
[২] সানান তিরমিযী (৫৫), তিরমিযী হতে
এই অতিরিক্ত বর্ণনাটি সহীহ নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭৩. অধ্যায়ঃ
মোজার উপর মাসাহ করার
পরিমান
হাদিস নং-২৬৮
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
নাসায়ী ব্যতীত সুন্নান
চতুষ্টয়ে (আবূ দাঊদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ) বর্নিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চামড়ার মোজার উপরে ও নীচের দিকে মাসাহ করে নিলেন। এটার সানাদ
দুর্বল। [১]
[১] যঈফ। আবূ দাঊদ (১৬৫) তিরমিযী (৯৭), ইবনু
মাজাহ (৫৫০); এ হাদীসে কয়েকটি ত্রুটি আছে। সকল ইমাম এ হাদীটিকে দুর্বল বলেছেন।
ইমাম তিরমিযী তাঁর সুনানে (৯৭) ইমাম বুখারী একে বিশুদ্ধ নয় বলেছেন। এবং ইমাম তিরমিযী
এ হাদীসটিতে ত্রুটির কথা বলেছেন। ইমাম বাগাবী তাঁর আশ শারহুস সুন্নাহ (১/৩৩৩)
গ্রন্থে বলেন, (আরবী) । ইবনু কাসীর তাঁর ইরশাদুল ফাকীহ (১/৪৬) গ্রন্থে বলেন, এর
সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, হাদীসটি মুরসালরূপে বর্নিত হয়েছে। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী
তাঁর গায়াতুল মাকসূদ (২/৫২)ও আওনুল মা‘বূদ (১/১৪০) গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দুর্বল।
আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী (১/২৩৫) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটির
ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণের বিতর্ক রয়েছে। ইবনু উসাইমীন তাঁর শহরহে বুলুগুল মারাম
(১/২২৪) গ্রন্থে, বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম (৯০) গ্রন্থে, শাইখ আলবানী
যঈফ তিরমিযী (৯৭) ও যঈফ ইবনু মাজাহ (১০৮) গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বুখারী
তাঁর ইলালুল কাবীর (৫৬) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটি সহীহ নয়। ইবনু আবদুল বার তাঁর আল
ইসতিযকার (১/২৬৯) গ্রন্থে বলেন, এর বর্ণনাকারী সাত্তর বিন যায়দ তিনি রাজা বিন
হুওয়াই থেকে হাদীসটি শুনেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিস নং-২৬৯
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন- ‘দ্বীন যদি
কিয়াস বা বুদ্ধির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হতো তবে মাসাহ করার ক্ষেত্রে মোজার উপরি ভাগে
মাসহ করার চেয়ে নীচের দিক মাসাহ করাই উত্তম (গন্য) হত অবশ্যই নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমি মোজার উপরিভাগে মাসহ করতে দেখেছি। –আবূ দাঊদ এটিকে
হাসান সানাদে বর্ণনা করেছেন।
সহীহ্ আবূ দাঊদ (১৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৭০
সাফ্ওয়ান বিন্ ‘আসসাল্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের আদেশ দিতেন যে, ‘আমরা যেন সফরে
থাকাবস্থায় তিন দিন তিন রাত জানাবত (ফরয গোসল কারণ) ব্যতীত মোজা না খুলি; এমনকি
প্রস্রাব পায়খানা ও ঘুমের পরও নয়। শব্দগুলো তিরমিযী ও ইবনু খুযাইমাহ্র। দু’জনেই
এটাকে সহীহ্ বলেছেন।
হাসান। নাসায়ী (১/৮৩-৮৪); তিরমিযী
(৯৬); ইবনু খুযাইমাহ (১৯৬); ইমাম তিরমিযী বলেছেন: হাসান সহীহ
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
হাদিস নং-২৭১
আলী বিন আবূ তালিব
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসাফির ব্যক্তির পক্ষে তিন দিন তিন রাত ও মুকিম ব্যক্তির
পক্ষে এক দিন এক রাত নির্ধারণ করেছেন। অর্থাৎ মোজার উপর মাসাহ করার সময়কাল।
মুসলিম (২৭৬) শুরাইহ বিন হানীর
সূত্রে। তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ (রাঃ) কে মোজার উপর মাসাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে
এলাম। তিনি বললেন, তুমি ইবনু আবী তালিবকে বল কেননা সে আল্লাহর রাসূলের সাথে সফর
করতো। অতঃপর আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তার উত্তরে উক্ত হাসীস বর্ণনা করেন। তাতে
(আরবী) ব্যতীত বর্ণনা করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭৪. অধ্যায়ঃ
পাগড়ির উপর মাসাহ করা
বৈধ
হাদিস নং-২৭২
সওবান (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূরুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ছোট্ট সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করেন। তাদেরকে পাগড়ি ও
চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করতে আদেশ করেন। হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন।
আহমাদ (৫৭৭); আবূ দাঊদ (১৪৬); হাকিম
(১৬৯); এ হাদীসের ত্রুটি বর্ণনা করা হলেও তা ক্ষতিকর নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭৫. অধ্যায়ঃ
সময় নির্ধারণ ব্যতীত
মোজার উপর মাসাহ করা অস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে
হাদিস নং-২৭৩
উমার (রাঃ) এবং আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের কেউ যখন উযূ
অবস্থায় মোজা পরবে সে ইচ্ছ করলে জানাবাত বা অপবিত্রতা ছাড়া মোজা না খুলে তার উপর
মাসাহ করবে ও সলাত আদায় করবে; তবে গোসল করা হলে মোজা খুলতে হবে।” - দারাকুৎনী,
হাকিম এটিকে সহীহ্ বলেছেন।
দারাকুৎনী (১০৩-২০৪);
হাকিম (১৮২)
হাদিসের মানঃ শায
৭৬. অধ্যায়ঃ
মাসাহ করারা জন্য
পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করা শর্ত
হাদিস নং-২৭৪
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন; “নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসাফির
ব্যক্তিকে তিন দিন তিন রাত আর মুকীম (স্থানীয়) ব্যক্তিকে এক দিন এক রাত মোজার উপর
মাসাহ করার অনুমতি প্রদান করেছেন, যদি সে উযু অবস্থায় মোজা পরিধান করে থাকে।” -
দারাকুৎনী, আর এক ইবনু খুযাইমাহ সহীহ্ বলেছেন।
হাসান। দারাকুৎনী; ইবনু কাযাইমাহ
(১৯২); এ হাদীসটি দুর্বল হলেও এর কয়েকটি সমর্থক হাদীস থাকার কারণে ইমাম বুখারী
হাসান হলেছেন এবং ইমাম তিরমিযী তাঁর ইলাল গ্রন্থে অনুরূপ মন্তব্য করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭৭. অধ্যায়ঃ
সময় নির্ধারণ ব্যতীত
মোজার উপর মাসাহ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা
হাদিস নং-২৭৫
উবাই বিন্ ‘ইমারাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে) আরয করলেন, “হে আল্লাহর রসূল! আমি কি মোজার উপর মাসাহ
করতে পারি? তিনি বললেন, ‘হাঁ;’ তিনি (সাহাবী) বললেন, ‘দু দিন পর্যন্ত করতে পারি?’
তিনি বললেন, ‘হাঁ’ তিনি (সাহাবী) বললেন, ‘তিনদিন পর্যন্ত করতে পারি?’ তিনি বললেন,
‘হাঁ’ আর তুমি যে কদিন ইচ্ছে কর।” আবূ দাঊদের এ বর্ণনা মজবুত নয়।
যঈফ। আবূ দাঊদ (১৫৮), শাইখ নাসিরুদ্দীন
আলবানী যঈফ আবূ দাঊদ (১৫৮) গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাঁর
আওনুল মা‘বূদ (১/১৩৪) গ্রন্থে বলেন, বর্ণনার অজ্ঞতার কারণে এটি শক্তিশালী নয়।
তাছাড়া ইয়াহইয়া বিন আইয়ূবকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। ইবনুল কাইয্যিম তাঁর তাহযীবুস
সুনান (১/২৬৬) গ্রন্থে বলেন, ইয়াহইয়া বিন আইয়ূবকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আর
আবদুর রহমান, মাহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ও আইয্যূব বিন ক্বাতন সকলেই অপরিচিত
বর্ণনাকারী্।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
৭৮. অধ্যায়ঃ
উযু বিনষ্টকারী বিষয়
সমূহ
হাদিস নং-২৭৬
আনাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে তাঁর সাহাবাগন ‘ইশার সলাতের
জামা‘আতের জন্য অপেক্ষায় থাকতেন আর নিদ্রায় তাঁদের মাথা ঝুঁকে ঝুঁকে হেলে পড়ত,
তারপরও তাঁরা পুনরায় উযু না করেই সলাত আদায় করতেন।” আবূ দাঊদ এবং দারাকুৎনী একে
সহীহ্ বলেছেন; [১] মুসলিমে এর মূল বর্ণনা রয়েছে। [২]
[১] আবূ দাঊদ (২০০); দারাকুতনী
(১/১৩১/৩); দারাকুতনী সহীহ বলেছেন।
[২] মুসলিম (৩৭৬); মুসলিমের শব্দ
হচ্ছেঃ (আরবী) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবাগণ ঘুমাতেন
অতঃপর সালাত আদায় করতেন তবে ওযু করতেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৭৯. অধ্যায়ঃ
পুরুষাংগ স্পর্শে অযূ
বিনষ্ট হয় না
হাদিস নং-২৭৭
ত্বালক্ বিন্ ‘আলী
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সাহাবী (রাঃ) নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বললেন, ‘আমি আমার লিঙ্গ স্পর্শ করে ফেলেছি
অথবা বললেন, ‘যদি কেউ সলাতে তা স্পর্শ করে ফেলে, তবে এর কারণে কি তাকে উযু করতে
হবে?’ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না, এটা তো তোমারই
(শরীরের) একটি অংশ বিশেষ। -৫জন। আর ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন [১] এবং ইব্নুল্
মাদানী (বুখারীর উস্তাদ) বলেন, বুস্রার হাদীস হতে এটি অধিক উত্তম।
[১] আবূ দাঊদ (১৮২, ১৮৩); নাসায়ী
(১০১); তিরমিযী (৮৫); ইবনু মাজাহ (৪৮৩); আহমাদ (৪৩); ইবনু হিব্বান (২০৭ মাওয়ারেদ)।
কিন্তু এ হাদীসটি স্পষ্টতঃ মানসূখ তথা রহিত হয়ে গেল। যখন ইবনু হাযম তাঁর
‘মুহাল্লা’য় (১৩৯) কত সুন্দর কথা বলেছেন যে, এ তালক রাবীর হাদীস সহীহ তবে তাদের
কথার দুটি দিক দিয়ে সঠিক নয়। ১। এ হাদীসটি লজ্জাস্থান স্পর্শ করার নির্দেশ বর্ণিত
হওয়ার পূর্বেকার সময়ের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ। এতে কোন সন্দেহ নেই। বিষয় যদি এমনই হয়ে
থাকে তবে এ হাদীস রহিত হওয়াতে কোন সন্দেহ নেই যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লজ্জাস্থান স্পর্শ করার কারণে ওযু করার নির্দেশ প্রদান
করেছেন। ফলে কোন বিষয়ের রহীতকারী হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস হতে তা বর্জন করা এবং যা
মানসূখ বা রহিত হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস অর্জিত হয় তা গ্রহণ করা বৈধ নয়। ২।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কথাঃ এটা তো তোমারই (শরীরের)
একটি অংশ বিশেষ।” লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে ওযূ করার বিধান দেয়ার পূর্বের উক্তি
হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলীল। কেননা তা পরবর্তীকালের বিষয় হতো তবে রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন কথা বলতেন না। বরং এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়
যে, এ কথাটি রহিত হয়ে গেছে। লজ্জাস্থান যে, “অন্যান্য অঙ্গের মত” কথার পূর্বে এ বিষয়ে
মূলতঃ কোন হুকুমই বর্ণিত হয়নি।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৮০. অধ্যায়ঃ
পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে
অযূ ভেংগে যায়
হাদিস নং-২৭৮
বুস্রাহ বিনতে সাফ্ওয়ান
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তাঁর পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করবে যে যেন উযু করে’। ৫
জনে ( আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)। তিরমিযী ও ইবনু হিব্বান একে
সহীহ্ বলেছেন। [১] আর ইমাম বুখারী বলেন, ‘এ বিষয়ে অধ্যায়ের হাদীসগুলোর মধ্যে এটিই
সর্বাধিক সহীহ্।’
[১] আবূ দাঊদ (১৮১); নাসায়ী; (১০০);
তিরমিযী (৮২); ইবনু মাজাহ (৪৭৯),আহমাদ (৬/৪০৬); ইবনু হিব্বান (২১২ মাওয়ারেদ), এ
হাদীস কিছু দোষ ধরা হলেও ক্ষতিকর নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮১. অধ্যায়ঃ
অযূ ভঙ্গের কতিপয়
কারণসমুহের বর্ণনা
হাদিস নং-২৭৯
আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয়, নাক দিয়ে রক্ত
পড়ে ও ভক্ষিত খাদ্য বস্তু মুখ পর্যন্ত চলে আসে কিংবা মাযী নির্গত হয় সে যেন (সলাত
ছেড়ে ) ওযু করে নেয় এবং (এর মধ্যে কারো সাথে) কোন কথা না বলে; তাহলে সে সলাতের
বাকী অংশ সমাধান করে নিবে।’ - ইবনু মাজাহ। [১] আহমদ ও প্রমুখ এক য‘ঈফ বলেছেন।
[১] যঈফ। ইবনু মাজাহ (১২২১)
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
৮২. অধ্যায়ঃ
উট ও বকরীর গোশ্ত
ভক্ষণের ফলে অযু ভঙ্গ হওয়া , না হওয়ার বিধান
হাদিস নং-২৮০
জাবির বিন্ সামুরাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক ব্যক্তি নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল, মেষ ছাগলের গোশত খেয়ে কি ওযু
করবো?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘যদি তুমি চাও’। জিজ্ঞেস
করা হলো, ‘উটের গোশত খেয়ে কি ওযু করবো?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, ‘হাঁ, করবে’।
মুসলিম (৩৬০)।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৮৩. অধ্যায়ঃ
মৃত ব্যক্তিকে গোসল
দিলে গোসল করা ও তাকে বহন করলে অযূর বিধান
হাদিস নং-২৮১
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মৃতকে গোসল করায় যে
নিজেও গোসল করে নিবে। আর যে ব্যক্তি কোন (মাইয়িতকে) বহন করবে সে যেন ওযু করে।’
তিরমিযী একে হাসান বলেছেন। [১] ইমাম আহমাদ বলেছেন, ‘এ বিষয়ে কোন সহীহ্ হাদীস
নেই।’
[১] আহমাদ (৭৬৭৫), তিরমিযী (৯৯৩);
একদল আয়ম্মায়ে কেরাম এ হাদীসকে দোষ বর্ণনা করেছেন। যেমন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল।
যেমনটি বর্ণনা করেছেন ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) কিন্তু এ হাদীসের সনদ ও সর্মথক
হাদীস এত বেশী যে এ হাদীসটির সহীহ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
৮৪. অধ্যায়ঃ
কুরআন স্পর্শ করার জন্য
পবিত্রতা অর্জন শর্ত
‘আবদুল্লাহ বিন আবূ
বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আমর বিন হযমকে যে পত্র পাঠিয়েছিলেন তাতে ছিল-
পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ যেন কুরআন স্পর্শ না করে। ইমাম মালিক একে মুরসাল রূপে
বর্ণনা করেছেন। নাসায়ী ও ইবনু হিব্বান একে ‘মাওসুল’ বলেছেন। হাদীসটি মা‘লুল
(দোষযুক্ত) ।
মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাঁর গায়াতুল
মাকসূদ (২/২৭৯) গ্রন্থে, আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী (১/৩৩৬)
গ্রন্থে, আবূ দাঊদ মারাসিল (১৯৬) গ্রন্থে এটিকে মুরসাল বলেছেন। ইবনু উসাইমীন তাঁর
শরহে বুলুগুল মারাম (১/২৭১) গ্রন্থে একে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
পায়খানা ও পেশাবের
রাস্তা ব্যতীত রক্ত নির্গত হলে অযূ নষ্ট হয় না
হাদিস নং-২৮৩
আনাস বিন মালিক (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
‘নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিঙ্গা লাগিয়ে পুনঃ ওযু না করেই সলাত আদায় করেছেন।
দারাকুৎসী বর্ণনা করেছেন এবং তিনি একে দুর্বল বলেছেন।
যঈফ। দারাকুতনী (১৫১-১৫২), ইমাম শওকানী
তাঁর আদ দিরারী আল মুযীয়া (৫২) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে সালিহ বিন মুকাতিল রয়েছেন
যিনি দুর্বল বর্ণনাকারী। ইমাম সনআনী তাঁর সুবুলুস সালাম (১/১০৯) গ্রন্থেও উক্ত
বর্ণনাকারীকে ‘শক্তিশালী নয়’ বলেছেন। তাছাড়া ইমাম নববী তাঁর আল খুলাসা (১/১৪৩),
ইবনু উসাইমীন তাঁর আশ শারহুল মুমতি‘ (১/২৭৪) গ্রন্থে, ও মাজমূ ফাতাওয়া লি উসাইমীন
(১১/১৯৮) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
৮৬. অধ্যায়ঃ
ঘুম অযূ ভঙ্গের
সম্ভাব্য কারণ
হাদিস নং-২৮৪
মু‘আবিয়াহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘চক্ষু মলদ্বারের বন্ধনস্বরূপ।
চক্ষুদ্বয় ঘুমিয়ে পড়লে উক্ত বন্ধন খুলে যায়। (যার কারণে উযূ নষ্ট হয়ে যায়)
-আহমাদ ও ত্বাবারানী। আর তাবারানী অতিরিক্ত শব্দ যোগ করেছেনঃ “যে ঘুমিয়ে পড়ে সে
যেন ওযু করে।” এ অতিরিক্ত অংশটুকু আবূ দাঊদেও ‘আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে।
“তবে এতে ‘বন্ধন খুলে যায়’ অংশটুকু নেই। উক্ত সানাদ দু’টিই দুর্বল।
হাসান। আহমাদ (৪/৯৭),
আবূ দাঊদ (২০৩)
হাদিসের মানঃ হাসান
হাদিস
চিত হয়ে ঘুমালে অযূ
ভেঙ্গে যায়
হাদিস নং-২৮৫
বর্ণনাকারী থেকে
বর্ণিতঃ
আবূ দাঊদে ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) থেকে আর একটি ‘মারফূ’ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি হাত পা বিছিয়ে শরীর
এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে যাবে তাকে উযু করতে হবে।’ এ সানাদেও দুর্বলতা রয়েছে।
মুনকার। আবূ দাঊদ (২০২), ইমাম নববী তাঁর আল মাজমূ
(২/২০) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটি মুনকার হওয়ার ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণ ঐকমত্য পোষণ
করেছেন। ইবনু আবদুল বার তাঁর আত তামহীদ (১৮/২৪৩) গ্রন্থেও প্রায় একই কথা বলেছেন।
হাকিম (১৩৪), ইবনু হিব্বান (২৬৬৬),
শাইখ আলবানী তাঁর যঈফুল জামে‘ (৫৬৮) ও যঈফ আবূ দাঊদ (১০২৯) গ্রন্থে হাদীসটিকে
দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ মুনকার
জুমু‘আর দিন উযু করা
সামূরাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
হাদিস নং-২৮৬
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন উযু করবে সে
ভালোই করবে। আর যে ব্যক্তি গোসল করবে সে আরও উত্তম কাজ করল।’ তিরমিযী এটিকে হাসান
বলেছেন। [১]
[১] আবূ দাঊদ ৩৫৪;
তিরমিযী ৪৯৭; নাসায়ী ৩/৯৪; আহমাদ ১৫, ২২, ৫১। ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
একসাথে একাধিক বার
স্ত্রী সহবাসে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য অযু করা শরীয়তসম্মত
হাদিস নং-২৮৭
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে
সঙ্গমের পর পুনরায় সঙ্গমের ইচ্ছা করবে সে যেন উভয় সঙ্গমের মাঝে একবার উযূ করে।’
[১] আর হাকিম এ কথাটি বৃদ্ধি করেছেনঃ “পুনর্মিলনের জন্য এটা (ওযু করা)
তৃপ্তিদায়ক।” [২]
[১] মুসলিম ৩০৮।
[২] মুসতাদরাক হাকিম
১৫২; বর্ধিত অংশটুকুও সহীহ। সহীহ তিরমিযী ১৪১।
হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
কোরআন ও সহিহ হাদিস ভিত্তিক আরো বিষয় জানতে এদের উপর ক্লিক
করুনঃ
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন
রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email
Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির
লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত,
মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ
করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর
কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি
সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের
প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা
তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়,
তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু
হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে
আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও,
যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে
ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ
আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী
৩৪৬১,হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ,
সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
No comments:
Post a Comment