বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-৩ (পবিত্রতা-পেশাব-পায়খানা অধ্যায়)
সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত
(৬৮-১২৪টি মোট ৫৭টি হাদিস)
(৬৮-১২৪টি মোট ৫৭টি হাদিস)
অধ্যায়-১
শৌচাগারে যাওয়ার সময় কী বলতে হয়?
হাদিস নং-৬৮
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন প্রকৃতির ডাকে শৌচাগারে যেতেন তখন বলতেন,
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস”
(“হে আল্লাহ্ ! আমি মন্দ কাজ ও শয়তান থেকে
আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।”) ইব্ন ‘আর‘আরা (রহঃ) শুবা (রহঃ) সূত্রেও অনুরূপ বর্ণনা করেন।
গুনদার (রহঃ) শুবা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, إِذَا
أَتَى الْخَلاَءَ (যখন শৌচাগারে যেতেন)।
মূসা (রহঃ) হাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, إِذَا
دَخَلَ (যখন প্রবেশ করতেন)। সা‘ঈদ
ইব্ন যায়দ (রহঃ) ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যখন প্রবেশ করার ইচ্ছা করতেন।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪২,
৬৩২২; মুসলিম ৩/৪২, হাঃ ৩৭৫, আহমাদ ১১৯৪৭, ১১৯৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পায়খানা থেকে বের হওয়ার দো‘আঃ
(গুফরা-নাকা)
অর্থ-আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।”
হাদিসের উৎসঃ
হাদীসটি নাসাঈ ব্যতীত সকল সুনান গ্রন্থকারই
উদ্ধৃত করেছেন; তবে নাসাঈ তার ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াললাইলাহ’ গ্রন্থে (নং ৭৯) তা
উদ্ধৃত করেছেন। আবূ দাউদ, নং ৩০; তিরমিযী, নং ৭; ইবন মাজাহ্, নং ৩০০। আর শাইখ
আলবানী সহীহ সুনান আবি দাউদে ১/১৯ একে সহীহ বলেছেন।
বিঃদ্রঃ বাজারে প্রচলিত সালাত শিক্ষার বই
কিংবা দোয়ার বইগুলোতে (গুফরা-নাকা) এর পরিবর্তে
“আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি আযহাবা আন্নি আযা ওয়া ফানী” অর্থ, সমস্ত
প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি কষ্টকর জিনিস আমার থেকে বে করিয় দিয়েছেন এবং আমাকে নিরাপত্তা
দান করিয়াছেন-এই দোয়াটি দেয়া আছে। যা প্রায় সকলেই পড়ে থাকে। কিন্তু উক্ত দোয়াটি বা
হাদিসটি জইফ। তাই ইহা আমলযোগ্য নয়। তাই শুধু (গুফরা-নাকা) পড়তে হবে। {হাদিস
জঈফ / আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ} ।
অধ্যায়-২
শৌচাগারের কাছে পানি রাখা।
হাদিস নং-৬৯
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
শৌচাগারে গেলেন, তখন আমি তাঁর জন্য উযূর পানি রাখলাম। তিনি জিজ্ঞাস করলেনঃ ‘এটা কে
রেখেছে?’ তাঁকে জানানো হলে তিনি বললেনঃ ‘ইয়া আল্লাহ! আপনি তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করুন।’
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৩,৭৫;
মুসলিম ৪৪/৩০, হাঃ ২৪৭৭, আহমাদ ২৩৯৭, ২৮৮১, ৩০২৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩
পেশাব পায়খানা করার সময় ক্বিবলামুখী হবে না, তবে দেয়াল অথবা কোন আড়
থাকলে ভিন্ন কথা।
হাদিস নং-৭০
আবূ আইয়ুব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন শৌচাগারে যায়, তখন সে যেন ক্বিবলার দিকে
মুখ না করে এবং তার দিকে পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে
(এই নির্দেশ মদীনার বাসিন্দাদের জন্য) [১]।
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) বলেনঃ আমরা যখন সিরিয়ায়
এলাম তখন পায়খানাগুলো কিবলামুখী বানানো পেলাম। আমরা কিছুটা ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহ তা‘আলার
নিকট তাওবাহ ইসতেগফার করতাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৪,
৩৯৪; মুসলিম ২/১৭, হাঃ ২৬৪, আহমাদ ২৩৫৮৩, ২৩৫৯৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৪৬)
[১] যাদের ক্বিবলা উত্তর বা দক্ষিণে হবে তাদের
জন্য এই হুকুম। আর যাদের ক্বিবলা পূর্ব বা পশ্চিমে তারা উত্তর বা দক্ষিণ দিকে মুখ করে
বসবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৭১
‘আবদুল্লাহ্
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফসাহ (রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শাম-এর দিকে
মুখ করে তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন।’ (বুখারী পর্ব ৪ : /১৪ হাঃ ১৪৮, মুসলিম ২/১৭ হাঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৭২
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেনঃ ‘লোকে বলে পেশাব পায়খানা করার সময় কিবলার দিকে এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে
মুখ করে বসবে না।’ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমি একদা আমাদের ঘরের ছাদে
উঠলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম বায়তুল মুকাদ্দাসের
দিকে মুখ করে দু’টি ইটের উপর স্বীয় প্রয়োজনে বসেছেন। (বুখারী পর্ব ৪ : /১২ হাঃ ১৪৫,
মুসলিম ২/১৭, হাঃ ২৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৪
যে ব্যক্তি দু’ইটের উপর বসে মলমূত্র ত্যাগ করল।
হাদিস নং-৭৩
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘লোকে বলে পেশাব পায়খানা করার সময়
ক্বিবলার দিকে এবং বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে বসবে না।’ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন
‘উমর (রাঃ) বলেন, ‘আমি একদা আমাদের ঘরের ছাদে উঠলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে দু’টি ইটের উপর স্বীয়
প্রয়োজনে বসেছেন। তিনি [ওয়াসী (রহঃ)-কে] বললেন, তুমি বোধ হয় তাদের মধ্যে শামিল, যারা
পাছায় ভর দিয়ে সালাত আদায় করে। আমি বললাম, ‘আল্লাহ্র কসম! আমি জানি না।’ মালিক (রহঃ)
বলেন, (এর অর্থ হলো) যারা সালাত আদায় করে এবং মাটি থেকে পাছা না উঠিয়ে সাজদা দেয়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৫,১৪৮,১৪৯,৩১০২
; মুসলিম ২/১৭, হাঃ ২৬৬, আহমাদ ৪৮১২, ৪৯৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪২ হাদীসের শেষাংশ নেই,
ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৫
পেশাব পায়খানার জন্য নারীদের বাইরে যাওয়া।
হাদিস নং-৭৪
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
স্ত্রীগণ রাতের বেলায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে খোলা ময়দানে যেতেন। আর ‘উমর (রাঃ) নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতেন, ‘আপনার স্ত্রীগণকে পর্দায় রাখুন।’ কিন্তু
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা করেননি। এক রাতে ‘ইশার সময় নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী সওদা বিনতু যাম’আ (রাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে
বের হন। তিনি ছিলেন দীর্ঘাঙ্গী। ‘উমর (রাঃ) তাঁকে ডেকে বললেন, ‘হে সওদা! আমি কিন্তু
তোমাকে চিনে ফেলেছি।’ যেন পর্দার হুকুম অবতীর্ণ হয় সেই উদ্দেশ্যেই তিনি এ কথা বলেছিলেন।
অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা পর্দার হুকুম অবতীর্ণ করেন। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস
নং০-১৪৬,১৪৭, ৪৭৯৫, ৫২৩৭, ৬২৪০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৭৫
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
‘তোমাদের প্রয়োজনের জন্য বের হবার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ হিশাম (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ পেশাব
পায়খানার জন্য।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৭,১৪৬)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৬
গৃহের মধ্যে পেশাব পায়খানা করা।
হাদিস নং-৭৬
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফসা
(রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ক্বিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শাম-এর দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন।’ (সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৮, ১৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৭৭
‘আবদুল্লাহ্
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘একদা আমি আমাদের ঘরের উপর উঠে
দেখলাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’টি ইটের উপর বাইতুল মুকাদ্দাসের
দিকে মুখ করে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বসেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৪৯,
১৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৭
পানি দ্বারা শৌচ কাজ করা।
হাদিস নং-৭৮
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হতেন তখন আমি ও অপর একটি ছেলে পানির পাত্র
নিয়ে আসতাম। অর্থাৎ তিনি তা দিয়ে শৌচকার্য সারতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫০,
১৫১, ১৫২, ২১৭, ৫০০; মুসলিম ২/২১, হাঃ ২৭০, আহমাদ ১৩৭১৯, ১৩১০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
১৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৮
পবিত্রতা অর্জনের জন্য কারো সঙ্গে পানি নিয়ে যাওয়া।
আবুদ-দারদা (রাঃ) বলেন, তোমাদের মধ্যে কি জুতা,
পানি ও বালিশ বহনকারী ব্যক্তিটি [ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) ] নেই?
হাদিস নং-৭৯
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হতেন তখন আমি এবং আমাদের অন্য একটি ছেলে
তাঁর পিছনে পানির পাত্র নিয়ে যেতাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫১,
১৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৯
ইস্তিন্জার জন্য পানির সাথে (লৌহ ফলকযুক্ত) লাঠি নিয়ে যাওয়া।
হাদিস নং-৮০
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন শৌচাগারে যেতেন তখন আমি এবং একটি ছেলে পানির পাত্র এবং ‘আনাযা’ নিয়ে
যেতাম। তিনি পানি দ্বারা শৌচকার্য করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫২,
১৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪৯)
নাযর (রহঃ) ও শাযান (রহঃ) শু’বা (রহঃ) থেকে
অনুরূপ বর্ণনা করেন। হাদীসে বর্ণিত عَنَزَةً শব্দের অর্থ এমন লাঠি যার
মাথায় লোহা লাগানো থাকে। (ই.ফা. ১৫৪)
নাযর (রহঃ) ও শাযান (রহঃ) শু’বা (রহঃ) থেকে
অনুরূপ বর্ণনা করেন। হাদীসে বর্ণিত عَنَزَةً শব্দের অর্থ এমন লাঠি যার
মাথায় লোহা লাগানো থাকে। (ই.ফা. ১৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১০
ডান হাতে শৌচকার্য করা নিষেধ।
হাদিস নং-৮১
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না
ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান
হাত দিয়ে যেন শৌচকার্য না করে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫৩,
১৫৪, ৫৬৩০; মুসলিম ২/১৮, হাঃ ২৬৭, আহমাদ ২২৬২৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
১৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১১
প্রস্রাব করার সময় ডান হাতে পুরুষাঙ্গ ধরবে না।
হাদিস নং-৮২
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
তোমাদের কেউ যখন পেশাব করে তখন সে যেন কখনো ডান হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ না ধরে এবং
ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য না করে এবং পান করার সময় যেন পাত্রের মধ্যে শ্বাস না ছাড়ে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫৪,১৫৩)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১২
পাথর দিয়ে ইস্তিন্জা করা।
হাদিস নং-৮৩
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হলে আমি তাঁর অনুসরণ করলাম। আর তিনি এদিক-ওদিক
চাইতেন না। যখন আমি তাঁর নিকটবর্তী হলাম তখন তিনি আমাকে বললেনঃ ‘আমাকে কিছু পাথর কুড়িয়ে
দাও, আমি তা দিয়ে শৌচকার্য সারবো’ (বর্ণনাকারী বলেন), বা এ ধরনের কোন কথা বললেন, আর
আমার জন্য হাড্ডি বা গোবর আনবে না।’ তখন আমি আমার কাপড়ের কোচায় করে কয়েকটি পাথর এনে
তাঁর পাশে রেখে আমি তাঁর নিকট হতে সরে গেলাম। তিনি প্রয়োজন মিটিয়ে সেগুলো কাজে লাগালেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫৫,
৩৮৬০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৩
গোবর দ্বারা শৌচকার্য না করা।
হাদিস নং-৮৪
‘আবদুল্লাহ্
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একদা শৌচ কাজে যাবার সময় তিনটি পাথর কুড়িয়ে দিতে আমাকে নির্দেশ করলেন। তখন
আমি দু’টি পাথর পেলাম এবং আরেকটি খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। তাই একখন্ড শুকনো গোবর নিয়ে
তাঁর নিকট গেলাম। তিনি পাথর দু’টি নিলেন এবং গোবর খন্ড ফেলে দিয়ে বললেন, এটা অপবিত্র।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৫৬, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৩)
ইব্রাহীম ইব্নু ইউসুফ (রহঃ), তার পিতা, আবূ
ইসহাক (রহঃ), ‘আবদুর রহমান (রহঃ)-এর সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ১৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৪
(শৌচকার্যের জন্য) বিজোড় সংখ্যক ঢিলা ব্যবহার করা।
হাদিস নং-৮৫
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন উযূ করে তখন সে যেন তার নাকে পানি দিয়ে ঝাড়ে। আর যে
শৌচকার্য করে সে যেন বিজোড় সংখ্যায় ঢিলা ব্যবহার করে। আর তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে
জাগে তখন সে যেন উযূর পানিতে হাত ঢুকানোর পূর্বে তা ধুয়ে নেয়; কারণ তোমাদের কেউ জানে
না যে, ঘুমন্ত অবস্থায় তার হাত কোথায় থাকে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-১৬২,
১৬১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পেশাবের অপবিত্রতা হতে হুশিয়ার না হওয়া কাবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।
হাদিস নং-৮৬
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একদা মদীনা বা মক্কার বাগানগুলোর মধ্য হতে কোন এক বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
তিনি এমন দু’ ব্যক্তির আওয়ায শুনতে পেলেন যে, তাদেরকে কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোন
গুরুতর অপরাধে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তারপর তিনি বললেনঃ ‘হ্যাঁ, এদের একজন পেশাব
করতে গিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করত না। অপর ব্যক্তি চোগলখোরী করত। অতঃপর তিনি একটি খেজুরের
ডাল আনতে বললেন, এবং তা ভেঙ্গে দু’ টুকরা করে প্রত্যেকের কবরের উপর এক টুকরা করে রাখলেন।
তাঁকে বলা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! কেন এমন করলেন?’ তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ
পর্যন্ত এ দু’টি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২১৮,
২১৮, ১৩৬১, ১৩৭৮, ৬০৫২, ৬০৫৫; মুসলিম ২/৩৪, হাঃ ২৯২, আহমাদ ১৯৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
২১০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৫
পেশাব ধোয়া সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক
কবরবাসী সম্পর্কে বলেছেন, সে তার পেশাব থেকে সতর্ক থাকত না। তিনি শুধু মানুষের পেশাব
সম্পর্কেই উল্লেখ করেছেন।
হাদিস নং-৮৭
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বের হলে আমি তাঁর নিকট পানি নিয়ে যেতাম। তিনি তা দিয়ে
শৌচকার্য করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২১৭,
১৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৮৮
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একদা দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এ সময় তিনি বললেনঃ এদের ‘আযাব
দেয়া হচ্ছে, কোন গুরুতর অপরাধের জন্য তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব
হতে সতর্ক থাকত না। আর অপরজন চোগলখোরী করে বেড়াত। তারপর তিনি একখানি কাঁচা খেজুরের
ডাল নিয়ে ভেঙ্গে দু’ভাগ করলেন এবং প্রত্যেক কবরের উপর একখানি গেড়ে দিলেন। সাহাবীগণ
জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! কেন এমন করলেন? তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ
পর্যন্ত এ দু’টি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে। ইব্নুল মুসান্না
(রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) বলেনঃ আমি মুজাহিদ (রহঃ) হতে অনুরূপ শুনেছি। সে তার পেশাব হতে সতর্ক
থাকত না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২১৮,২১৬)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৬
জনৈক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলে পেশাব শেষ না করা পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং অন্যান্য লোকের পক্ষ হতে অবকাশ দেয়া।
হাদিস নং-৮৯
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এক বেদুঈনকে মসজিদে পেশাব করতে দেখলেন। তখন তিনি বললেনঃ ‘তাকে ছেড়ে দাও’।
সে পেশাব শেষ করলে পানি নিয়ে আসতে বললেন, অতঃপর তা সেখানে ঢেলে দিলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২১৯,
২২১, ৬০২৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৭
মসজিদে পেশাবের উপর পানি ঢেলে দেয়া।
হাদিস নং-৯০
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা জনৈক বেদুঈন দাঁড়িয়ে মসজিদে
পেশাব করল। তখন লোকেরা তাকে বাধা দিতে গেলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাদের বললেনঃ তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং ওর পেশাবের উপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও। কারণ
তোমাদেরকে কোমল ও সুন্দর আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, রূঢ় আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়নি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২০,
৬১২৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৯১
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (২১৯)
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ একবার এক বেদুঈন এসে মসজিদের এক পাশে পেশাব করে দিল। তা দেখে লোকজন তাকে ধমকাতে
লাগল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিষেধ করলেন। তার পেশাব শেষ হলে
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশে এর উপর এক বালতি পানি ঢেলে দেওয়া
হল।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২১,
২১৯ নম্বর হাদিসের অনুরুপ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৮
বাচ্চাদের পেশাব।
হাদিস নং-৯২
উম্মুল মু’মিনীন মা ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর খিদমতে শিশুদের নিয়ে আসা হতো। তিনি তাঁদের জন্য দু‘আ করতেন। একবার একটি
শিশুকে আনা হলো। শিশুটি তাঁর কাপড়ের উপর পেশাব করে দিল। তিনি কিছু পানি আনালেন এবং
তা তিনি কাপড়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন আর তিনি কাপড় ধুলেন না।
(সহিহ
বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২২, ৫৪৬৮, ৬০০২, ৬৩৫৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ
২১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-৯৩
উম্মু কায়স বিন্ত মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি।
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিশুটিকে তাঁর কোলে বসালেন। তখন সে
তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করলেন না।
[১]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২৩,
৫৬৯৩; মুসলিম ২/৩১, হাঃ ২৮৭, আহমাদ ২৭০৬৪, ২৭০৭২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
২২৩)
[১] পেশাব অপবিত্র। তবে পেশাব লেগে যাওয়া বস্তুকে
পবিত্র করার পদ্ধতি দু রকম। এক : প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি অথবা দুগ্ধপোষ্য মেয়ে হলে তার
পেশাব অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হবে। দুই : যদি দুগ্ধপোষ্য ছেলে হয় তবে পানির ছিটা দিলে তা
পবিত্র হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-১৯
দাঁড়িয়ে ও বসে পেশাব করা।
হাদিস নং-৯৪
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) একদা গোত্রের ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থানে আসলেন। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব
করলেন। অতঃপর পানি আনতে বললেন। আমি তাঁকে পানি এনে দিলে তিনি উযূ করলেন। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২৪, ২২৫, ২২৬, ২৪৭১ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৮, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ২২৪)
[১] সাধারণত বসে পেশাব করাই ছিল রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অভ্যাস । এ জন্যই হযরত আয়িশা (রাঃ) বলেন,
"যে ব্যাক্তি তোমাদের বলবে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন -– তার কথা বিশ্বাস করো না" (তিরমিযী, নাসাঈ) । এই একটি
মাত্র স্থানেই তাঁর অভ্যাসের ব্যতিক্রম পাওয়া যায় । এর কারণ সম্পর্কে আবূ হুরায়রা
(রাঃ) বলেন, "রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোমর ব্যাথার কারণে
দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন ।" (বায়হাকী, হাকেম)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২০
সাথীর নিকট বসে পেশাব করা এবং দেয়ালের আড়াল করা।
হাদিস নং-৯৫
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমার স্মরণ আছে যে, একদা আমি ও
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সাথে চলছিলাম। তিনি দেয়ালের পিছনে মহল্লার
একটি আবর্জনা ফেলার জায়গায় এলেন। অতঃপর তোমাদের কেউ যেভাবে দাঁড়ায় সে ভাবে দাঁড়িয়ে
তিনি পেশাব করলেন। এ সময় আমি তাঁর নিকট হতে সরে যাচ্ছিলাম কিন্তু তিনি আমাকে ইঙ্গিত
করলেন। আমি এসে তাঁর পেশাব করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে রইলাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২৫,
২২৪; মুসলিম ২/২২, হাঃ ২৭৩, আহমাদ ২৩৩০১, ২৩৪০৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
২২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২১
গোত্রের আবর্জনা ফেলার স্থানে পেশাব করা।
হাদিস নং-৯৬
আবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ মূসা (রাঃ) পেশাবের ব্যাপারে
খুব কঠোরতা আরোপ করতেন এবং বলতেন : বনী ইসরাঈলের কারো কাপড়ে (পেশাব) লাগলে তা কেটে
ফেলত। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আবূ মূসা (রাঃ) যদি এ হতে বিরত থাকতেন (তবে ভাল হত)। আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহল্লার আবর্জনা ফেলার স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়ে
পেশাব করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী, হাদিস নং০-২২৬,২২৪)
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২২
আবদ্ধ বা স্থির পানিতে পেশাব করা এবং তাতে ফরয গোসল করার বিধান
হাদিস নং-৯৭
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ ‘অপবিত্র (জুনুবী) অবস্থায় কেউ যেন আবদ্ধ পানিতে (নেমে) গোসল না করে। [৮]
বুখারীর বর্ণনায় আছে, “কোন ব্যক্তি যেন স্রোত
নেই এমন আবদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করার পর তাতে নেমে আবার গোসল না করে।” [৯]
সহিহ মুসলিমে ফীহি শব্দের পরিবর্তে মিনহু
(উক্ত বর্ণনাকারী থেকে) শব্দ রয়েছে। [১০] আর আবূ দাঊদে রয়েছেঃ “অপবিত্র অবস্থায় তাতে
যেন (নেমে) গোসল না করে।” [১১]
[৮]
মুসলিম (২৮৩)
[৯] বুখারী (২৩৯)
[১০] মুসলিম (২৮২)
[১১] সুনান আবূ দাঊদ (৭০)
[৯] বুখারী (২৩৯)
[১০] মুসলিম (২৮২)
[১১] সুনান আবূ দাঊদ (৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৩
জমিনকে পেশাব হতে পবিত্রকরণের পদ্ধতি
হাদিস নং-৯৮
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদা জনৈক বেদুঈন এসে মাসজিদের
এক পাশে পেশাব করে দিল। তা দেখে লোকজন তাকে ধমক দিতে লাগল। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাদের নিষেধ করলেন। সে তার পেশাব করা শেষ করলে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) -এর আদেশ এর উপর এক বালতি পানি ঢেলে দেয়া হল”। (মুত্তাফাকুন আলাইহ) [১৯]
[১৯] বুখারী (২১৯); মুসলিম (২৮৪); আনাস (রাঃ)
হতেও এ হাদীসটির একটি সূত্র বিদ্যমান। আনাস ছাড়াও অন্যান্য কতক সাহাবা (রাঃ) হতেও এরূপ
বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৪
শিশু ছেলে ও মেয়ের পেশাব যুক্ত কাপড় পবিত্রকরণের পদ্ধতি
হাদিস নং-৯৯
আবুস সাম্হি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, ‘শিশুকন্যার পেশাব লাগলে ধুয়ে ফেলবে আর দুগ্ধপোষ্য পুত্র সন্তানের পেশাব
লাগলে তাতে পানি ছিটা দিবে। হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [৩৯]
[৩৯] আবূ দাঊদ (৩৭৬); নাসায়ী (১৫৮); হাকিম
(১৬৬) আবূ সামহ হতে হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খিদমত করছিলাম। অতঃপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যখন গোসল দেয়ার ইচ্ছে করলেন, আমাকে বললেন, তুমি আমার দিকে পিঠ করে ঘুরে দাড়াও, আমি
তাই করলাম। ইতোমধ্যে হাসান অথবা হুসাইনকে সেখানে নিয়ে আসা হলো। সে রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিঠে পেশাব করে দিল। ফলে তা ধোয়ার জন্য উদ্ধত হলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন। এ হাদীসের সনদ অত্যন্ত সুন্দর। তা
না হলেও এর অনেক সমর্থক হাদীস থাকার কারণে আমি হাদীসটি সহীহ বলতাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৫
যে বস্তুতে আল্লাহর নাম রয়েছে তা নিয়ে পায়খানাতে প্রবেশ করা মাকরূহ
হাদিস নং-১০০
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে (পায়খানায়) যেতেন (আল্লাহর নাম খোদিত)
আংটি খুলে রাখতেন।’ -৪ জনে (আবূ দাঊদ, নাসায়ী, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)। সানাদটি মা‘লুল
(ক্ৰটিযুক্ত)। [১০৪]
[১০৪] মুনকার। আবূ দাঊদ ১৯); তিরমিযী ১৭৪৬);
নাসায়ী ১/১৭৮); ইবনু মাজাহ ৩০৩), ইমাম সনআনী তাঁর সুবুলুস সালাম (১/১১৩) গ্রন্থে বলেন,
এ হাদীসের বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত কিন্তু ইবনু জুরাইজ যুহরী থেকে শুনেননি বরং তিনি যিয়াদ
বিন সা‘দ থেকে, আর তিনি যুহরী থেকে শুনেছেন। কিন্তু সেটি অন্য শব্দে। এখানে হুমামের
ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তিনি বিশ্বস্ত। ইবনু উসাইমীন তাঁর আশ শারহুল
মুমতি‘ (৬/১১২) গ্রন্থে হাদীসটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম তাঁর তাহযীবুস
সুনান (১/৩৫) গ্রন্থে বলেন, এর সনদ সহীহ হলেও ত্রুটিপূর্ণ। শাইখ আলবানী যঈফ আবূ দাঊদ
(১৯) গ্রন্থে একে মুনকার বলেছেন। আর যঈফ তিরমিযী (১৭৪৬) ও যঈফ নাসায়ী (৫২২৮) গ্রন্থে
একে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ মুনকার
অধ্যায়-২৬
টয়লেটে প্রবেশ করার সময় যা বলতে হয়
হাদিস নং-১০১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পায়খানায় ঢোকার সময় (নিম্নোক্ত দু‘আটি) বলতেনঃ (বিসমিল্লাহ) আল্লাহুম্মা ইন্নী
আ‘ঊযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি মন্দ পুরুষ ও মহিলা জ্বিনের
অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাই। ৭ জনে। [১০৫]
[১০৫] বুখারী ১৪২); মুসলিম ৩৭৫); আবূ দাঊদ
৪); তিরমিযী ৫); নাসায়ী ১০); ইবনু মাজাহ ২৯৬); আহমাদ ৩/৯৯, ১০১, ২৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৭
প্রশ্রাব ও পায়খানা করার পর পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা
হাদিস নং-১০২
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন পায়খানায় যেতেন আমি ও আমার মত একটি ছেলে চামড়ার তৈরি পাত্র ও বর্ষা
নিয়ে যেতাম। তিনি সে পানি দিয়ে সৌচ কার্য সমাধা করতেন। [১০৬]
[১০৬] সহীহ বুখারী ১৫০); মুসলিম ৭০,২৭১); হাদীসের
শব্দ ইমাম মুসলিমের। হাদীসের (আরবী) হচ্ছে বর্শা ও লাঠির মাঝামাঝি আকারে ছোট বর্শা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৮
প্রশ্রাব ও পায়খানার সময় নিজেকে আড়াল করা ও দূরর্বর্তী স্থানে যাওয়া
মুস্তাহাব
হাদিস নং-১০৩
মুগীরাহ বিন্ শু‘বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ‘পানির পাত্রটি নাও, তারপর তিনি সামনে চলতে থাকলেন
এবং আমার দৃষ্টির আড়ালে গিয়ে প্রয়োজন পূর্ণ করলেন।’
(সহীহ বুখারী ৩৬৩, মুসলিম ৭৭, ২৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-২৯
যে সকল স্থানে পেশাব-পায়খানা নিষিদ্ধ
হাদিস নং-১০৪
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘দু’টি (লা‘নত) তথা অভিশাপ বর্ষণকারী কাজ থেকে নিজেদের মুক্ত
রাখ- ‘(১) যে মানুষ চলাচলের রাস্তায় বা (২) (বিশ্রাম করার) ছায়াতে পায়খানা করা।’ [১০৮]
[১০৮] সহীহ মুসলিম ৩৬৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১০৫
আবূ দাঊদ মু‘আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“(পুকুর, নদীর) ‘ঘাটে’ শব্দটি অতিরিক্ত বর্ণনা
করেছেন। [১০৯]
[১০৯] যঈফ অর্থাৎ (আরবী) শব্দটি যঈফ। আর অবশিষ্ট
অংশটুকু সহীহ। আবূ দাঊদ ২৬); আবূ দাঊদের শব্দগুলো হচ্ছেঃ “তিনটি অভিশাপের কাজ থেকে
মুক্ত থাকঃ পানিতে নামার স্থানে (ঘাটে), জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও ছায়ায় মলমূত্র
ত্যাগ করা হতে।”
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
হাদিস নং-১০৬
আহমাদ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘পানি আবদ্ধ থাকে এমন ক্ষেত্রে (পায়খানা করা
নিষেধ)।’ এ দু’টি সানাদের মধ্যেই দুর্বলতা আছে। [১১০]
[১১০] যঈফ, আহমাদ ২৭১৫, ইমাম সন্আনী তাঁর
সুবুলুস সালাম (১/১১৭) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে (প্রসিদ্ধ দুর্বল বর্ণনাকারী) ইবনু লাহিয়া
রয়েছেন, আর ইবনু আব্বাস থেকে কোন বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন তা স্পষ্ট নয়। শাইখ আলবানী
সহীহুল জামে (১১৩) গ্রন্থে একে হাসান বলেছেন। সহীহ তারগীব (১৪৭) একে হাসান লিগাইরিহী
বলেছেন। ইরয়াউল গালীল (১/১১০) গ্রন্থে বলেন, এর সনদ হাসান হত যদি এর সনদে যার নাম উল্লেখ
হয়নি, তিনি যদি না থাকতেন। ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর আল জামেউস সগীর (১৪০) গ্রন্থে একে সহীহ
বলেছেন। আহমাদ শাকের মুসনাদ আহমাদ (৪/২৫৩) গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
হাদিস নং-১০৭
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আর তাবারানী বর্ণনা করেছেনঃ ফলদার গাছ-পালার
নিচে ও প্রবাহমান নদী নালার কিনারায় পায়খানা করা নিষেধ। ইবনু ‘উমার (রাঃ)- এর বর্ণিত
এ হাদীসটির সানাদ য‘ঈফ। [১১১]
[১১১] মুনকার। পূর্ণ হাদীসটি তাবারানী তাঁর
মুজামুল আওসাত্বে বর্ণনা করেছেন। যেমনটি রয়েছে মাযমা‘আল বাহরাইন (৩৪৯); আর মুজামুল
কাবীরে এর শেষাংশ বর্ণীত হয়েছে; যেমন বর্ণিত হয়েছে মাযমা’উয যাওয়ায়েদে (১০৪), ইমাম
সন্আনী তাঁর সুবুসুল সালাম (১/১১৭) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ফুরাত বিন সায়িব নামক একজন
মাতরূক বর্ণনাকারী রয়েছেন।
হাদিসের মানঃ মুনকার
অধ্যায়-৩০
পেশাব বা পায়খানা সম্পাদনের অবস্থায় কথা বলা ও পায়খানার নির্দিষ্ট স্থানে
বসার পূর্বে পরিধানের কাপড় খোলা নিষিদ্ধ
হাদিস নং-১০৮
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘দুব্যক্তি যখন একসঙ্গে পায়খানা করতে বসবে তখন একে অপরকে দেখতে
না পাওয়া যায় সে জন্য আড়াল করে বসে। আর যেন তারা পরস্পর বাক্যআলাপ না করে। কেননা আল্লাহ
তা‘আলা এতে অত্যন্ত নাখোশ হন ।’ আহমাদ আর ইবনু সাকান ও ইবনু কাত্তান একে সহীহ্ বলেছেন।
হাদীসটি মা‘লূল (ত্রুটিপূর্ণ)। [
যঈফ হাদিস। ইবনুল কাত্তান তাঁর আল ওয়াহাম ওয়াল
ঈহাম (৫/২৬০) গ্রন্থে বলেন, এর সনদ উত্তম। ইবনুল মুলকিন তাঁর তুহফাতুল মুহতায (১/১৬৪)
গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি সহীহ অথবা হাসান। শাইখ আলবানী সিলসিলা সহীহাহ (৩১২০) গ্রন্থে
এর সনদকে হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অধ্যায়-৩১
পেশাব ও পায়খানার আদব
হাদিস নং-১০৯
আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যেন প্রসাব করার সময় তার লিঙ্গ কখনও
ডান হাতে না ধরে। শৌচ করতে সময় যেন ডান হাত ব্যবহার না করে আর পানি পান করার সময় যেন
পানপাত্রে শ্বাস না ছাড়ে।” শব্দ মুসলিমের। [১১৩]
[১১৩] বুখারী ১৫৩); মুসলিম ৬৩, ২৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১১০
সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নিষেধ করেছেনঃ আমরা পায়খানা বা প্রসাব করার সময় যেন কেবলামুখী
না হই, ডান হাতে সৌচ কর্ম না করি, তিন খানা পাথরের কমে ইস্তেঞ্জা না করি, আর গোবর ও
হাড়ের ইস্তেঞ্জার কাজে যেন বব্যহার না করি ।’ [১১৪]
[১১৪] মুসলিম ২৬২; সালমান (রাঃ) কে বলা হলো
তোমাদের নবী তোমাদেরকে সবকিছুই শিক্ষা দেয় এমনকি পেশাব পায়খানার নিয়মও। তিনি বললেন,
হ্যাঁ। তিনি আমাদের নিষেধ করেছেন... । আল-হাদীস
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩২
পেশাব-পায়খানা করার সময় কেবলার দিকে মুখ করে বসার বিধান
হাদিস নং-১১১
আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘তোমরা কিবলাহকে (কা’বা ঘরকে) পায়খানা বা
প্রস্রাবের সময় সামনে পিছনে রাখবে না বরং পূর্ব বা পশ্চিম (ডান বা বাম) রাখবে।” (মদীনাবাসীদের
কিবলাহ দক্ষিণে) । [১১৫]
[১১৫] বুখারী ১৪৪, ৩৯৪); মুসলিম ২৬৪); আবূ
দাঊদ ৯); নাসায়ী ১২-২৩); তিরমিযী ৮), ইবনু মাজাহ ৩১৮); আহমাদ ৫/৪১৪, ৪১৬, ৪১৭, ৪২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩৩
পেশাব পায়খানা করার সময় নিজেকে আড়াল করা আবশ্যক
হাদিস নং-১১২
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি পায়খানায় যাবে সে নিজকে যেন পর্দা (আড়াল) করে নেয়।’ আবূ দাঊদ। [১১৬]
[১১৬] যঈফ। শায়খ আলবানী তাঁর সিলসিলা যঈফাহ
(১০২৮) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আসকালানী তাঁর আত-তালখীসুল হাবীর
(১/১৪৯) গ্রন্থে এ হাদীসের বর্ণনাকারী আবূ সা‘দ আল-জিবরানী আল-হিমসীর ব্যাপারে বিতর্কের
কথা বলেছেন। বলা হয়ে থাকে যে তিনি সাহাবী, কিন্তু কথাটি ঠিক নয়। ইমাম শাওকানী নাইলুল
আওত্বার (১/৯৩) গ্রন্থে উক্ত রাবীর বিতর্কিত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তাকে মাজহুল
হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অধ্যায়-৩৪
পেশাব-পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় যা বলতে হবে
হাদিস নং-১১৩
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন
পায়খানা করে বের হওয়ার সময় বলতেন, গুফরানাকা (তোমার নিকট ক্ষমা চাইছি) - আবূ হাতিম
ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [১১৭] পাঁচজনে বর্ণনা করেছেন।
[১১৭]হাদীসটিকে আয়িশাহ (রাঃ) এর সম্পর্কিত
করে ইবনু হাজার ভুল করেছেন। হাদীসটি মূলতঃ আবূ হুরাইরা হতে আবূ দাঊদে (৩৫) বর্ণিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩৫
কমপক্ষে তিনটি পাথর দ্বারা ইস্তঞ্জা করা আবশ্যক
হাদিস নং-১১৪
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পায়খানা করার স্থানে এসে আমাকে তিনটি পাথর আনতে বললেন। আমি দুটি পাথর
পেলাম, তৃতীয়টি পেলাম না। তাই আমি তাঁকে (তৃতীয়টির স্থলে) এক টুকরো শুকনো গোবর দিলাম।
তিনি পাথর দু’খানা নিয়ে গোবরখানা ফেলে দিলেন এবং বললেন, ‘এটি অপবিত্র।’ [১১৮] আহমাদ
ও দারাকুৎনীঃ “এর বদলে অন্য কিছু নিয়ে এস।” কথাটি বৃদ্ধি করেছেন [১১৯]
[১১৮] বুখারী ১৫৬, ৩৮৫৯, মুসলিম ৪৫০, তিরমিযী
১৭, নাসায়ী ৩৯, ইবনু মাজাহ ৩১৪ ।
[১১৯] আহমাদ (৩৬৭৭); দারাকুতনী (১/৫৫), হাদীসের শব্দ ইমাম দারাকুতনীর । আর ইমাম আহমাদ রহ. এর শব্দ হচ্ছে: (আরবী) এটা অতিরিক্ত এবং সহীহ।
[১১৯] আহমাদ (৩৬৭৭); দারাকুতনী (১/৫৫), হাদীসের শব্দ ইমাম দারাকুতনীর । আর ইমাম আহমাদ রহ. এর শব্দ হচ্ছে: (আরবী) এটা অতিরিক্ত এবং সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩৬
যে বস্তু দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা যাবে না
হাদিস নং-১১৫
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) হাড় ও গোবর দ্বারা ইস্তেঞ্জা করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন, ‘এ দুটি
বস্তু (কোন কিছুকে) পবিত্র করতে পারে না। দারাকুৎনী সহীহ বলেছেন। [১২০]
[১২০] দারাকুর্তনী ১৯৫৬ এবং তিনি বলেছেন হাদীসের
সনদটি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩৭
পেশাবের ছিটা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক, আর এর ছিটা কবরের আযাবের
কারণ
হাদিস নং-১১৬
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা প্রসাবের ছিটা হতে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখো। কেননা, সাধারণতঃ
কবরের ‘আযাব এর কারণেই হয়ে থাকে।” [১২১]
[১২১] দারাকুতনী ৭/১২৮
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১১৭
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
হাকিমে আছেঃ “অধিকাংশ কবরের ‘শাস্তি প্রসাবের
ছিটা থেকে সতর্ক না থাকার কারণেই হয়।” এর সানাদটি সহীহ। [১২২]
[১২২] হাকিম ১৮৩ এবং তিনি বলেছেন হাদীসটি বুখারী
মুসলিমের শর্তভিত্তিক সহীহ। আমি এর কোন ক্রটি জানি না। হাদীসটিকে বুখারী মুসলিম বর্ণনা
করেননি। ইমাম জাহাবী বলেছেন: এ হাদীসের সমর্থক হাদীস রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়-৩৮
পেশাব পায়খানার সময় বাম পায়ের উপর ভর দেয়া
হাদিস নং-১১৮
সুরাকাহ বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: ‘রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে পায়খানা করতে বাম পায়ের উপর ভর দিয়ে ও ডান পা খাড়া রেখে
বসার শিক্ষা দিয়েছেন।’ বাইহাকী’ য‘ঈফ সানাদে । [১২৩]
[১২৩] যঈফ। বাইহাকী ১/৯৬, শাইখ বিন বায তাঁর
হাশিয়া বুলুগুল মারাম (১১৬) গ্রন্থে বলেন, এর মধ্যে দু’জন অস্পষ্ট বর্ণনাকারী রয়েছে।
ইবনু উসাইমীন তাঁর শরহে বুলুগুল মারাম (১/৩১৩) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম
নববী তাঁর আল মাজমূ‘ (২/৮৯) ও আল খুলাসহ (১/১৬০) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন।
ইবনু দাকীক আল ঈদ তাঁর আল ইমাম (২/৫০৬) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটির সনদ মুনকাতি‘ কেননা
এর বর্ণনাকারী বানী মুদলাজ গোত্রের ব্যক্তির ও তার পিতার পরিচয় জানা যায়নি। ইমাম
যাহাবী তাঁর আল মুহাযযাব (১/১০৫) গ্রন্থে বলেন, আবূ নাঈম এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি যামআহ
থেকে, তিনি মুহাম্মাদ বিন আবূ আবদুর রহমান থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি যেমন মাজহুল (হাদীস
বর্ণনাকারী হিসেবে অপরিচিত) ঠিক তেমনি তাঁর শিক্ষকও মাজহুল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অধ্যায়-৩৯
পেশাবের পরে পুরুষাঙ্গকে টেনে নিংড়িয়ে নেওয়া মুস্তাহাব
হাদিস নং-১১৯
ঈসা বিন ইয়াযদাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন প্রসাব করবে
তখন যেন সে তার লিঙ্গকে ৩ বার নিচড়ে বা ঝেড়ে নেয়। ইবনু মাজাহ দুর্বল সানাদে। [১২৪]
[১২৪] যঈফ। ইবনু মাজাহ ৩২৬, ইমাম হায়সামী
তাঁর মাজমাউয যাওয়ায়েদ (১/২১২) গ্রন্থে বলেন, এর একজন বর্ণনাকারী ঈসা বিন ইয়াযদাদ
সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে, কেননা, সে মাজহুল। যদিও ইবনু হিব্বান তাকে তাঁর বিশ্বস্ত রাবীদের
অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইবনু কাত্তান আল-ওয়াহম ওয়াল ঈহাম (৩/৩০৭) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি
সহীহ নয়। ইবনু হাজার আত-তালখীসুল হাবীর (১/১৬১) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইয়াযদাদ রয়েছে।
আৰূ হাতিম বলেন, তার বর্ণিত হাদীস মুরসাল। ইমাম বুখারী বলেছেন, সে বিশ্বস্ত নয়। ইবনু
মুঈন বলেন, ঈসা এবং তার পিতার পরিচয় জানা যায় না। উকাইলী বলেন, তার এ হাদীসটি ছাড়া
আর অন্য কোন বর্ণনা নেই। বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম (১১৭), মাজমু‘ ফাতাওয়া
(২৯/২০, ২৬/২৯৬) গ্রন্থে হাদীসটি দুর্বল বলেছেন। শায়খ আলবানী যঈফ ইবনু মাজাহ ৬৮, সিলসিলা
যঈফাহ ১৬২১ গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমীনও শারহে বুলূগুল মারাম ১/৩১৪
গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
অধ্যায়-৪০
ইস্তিঞ্জা করার সময় পানি ও পাথর একত্রিত করার বিধান
হাদিস নং-১২০
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কুবাবাসীকে প্রশ্ন করেন, ‘আল্লাহ তোমাদের সুনাম করেন কেন? “তারা বললো, আমরা
সৌচ করার সময় পাথর ব্যবহার করার পর পানিও ব্যবহার করে থাকি।” বাযযার য‘ঈফ সানাদে।
[১২৫]
[১২৫] যঈফ। হাদীসটিকে পাথর ও পানির একত্রিত
করণের কারণে হাদীস যঈফ হয়েছে। বাজ্জার কাশফূল আসরার‘ এ বর্ণনা করেছেন (২২৭/) । ইমাম
হায়সামী মাজমাউয যাওয়ায়েদ (১/২১৭) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল আযীয
বিন উমার আয-যুহরী রয়েছে যাকে ইমাম বুখারী, ইমাম নাসায়ী ও অন্যান্যরা যঈফ বলেছেন। ইবনুল
মুলকিন তুহফাতুল মুহতায (১/১৭০) গ্রন্থে উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন, সকলেই তাকে যঈফ বলেছেন।
ইবনু হাজার আত্-তালখীসুল হাবীর (১/১৬৯) গ্রন্থে উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন, আবূ হাতিম
অ আবদুল্লাহ বিন শাবীব তাকে দুর্বল বলেছেন। শায়খ আলবানী ইরওয়াউল গালীল (১/৮৩) গ্রন্থে
হাদীসটি দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিস নং-১২১
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
এর মূল বক্তব্য আবূ দাঊদ ও তিরমিযীতে রয়েছে
এবং ইবনু খুযাইমাহ আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসকে সহীহ বলেছেন। কিন্তু পাথরের
কথা সেখানে উল্লেখ নেই। (শুধুমাত্র পানির কথা উল্লেখ আছে)। [১২৬]
[১২৬] আবূ দাঊদ ৪৪); তিরমিযী ৩১০০) আবূ হুরাইরা
হতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন: এ আয়াতটি কুবা বাসীদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। তাদের মধ্যে এমন কতক
লোক ছিল যারা পবিত্রতা অর্জন করতে অত্যন্ত পছন্দ করতো। রাবী বলেন, তারা পানির দ্বারা
শৌচ কার্য করতো। তাদের ব্যাপারে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি
বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেন: যদিও এ হাদীসের সনদটি দুর্বল। কিন্তু এ হাদীসের
কতক শাহেদ তথা সমর্থক হাদীস থাকার কারণে সেগুলো এ হাদীসকে সহীহ হাদীসে পরিনত করেছে।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
হাদিস নং-১২২
হাম্মাম ইব্নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাম ইব্নু হারিস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি
বলেনঃ আমি জারীর ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রহ.)-কে দেখলাম যে, তিনি পেশাব করলেন। অতঃপর উযূ
করলেন আর উভয় মোজার উপরে মাসহ্ করলেন। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস
করা হলে তিনি বললেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কেও এরূপ করতে দেখেছি।
(বুখারী পর্ব ৮ : /২৫ হাঃ ৩৮৭, মুসলিম ২/২২,
হাঃ ২৭২)
১৫৫. জারীর ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি পেশাব করলেন। অতঃপর উযূ করলেন আর উভয় মোজার উপরে মাসহ্ করলেন। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে
সলাত আদায় করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কেও এরূপ করতে দেখেছি।
(বুখারী পর্ব ৮ : /২৫ হাঃ ৩৮৭, মুসলিম ২/২২,
হাঃ ২৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১২৩
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বের হলে
আমি তাঁর নিকট পানি নিয়ে যেতাম। তিনি তা দিয়ে শৌচকার্য করতেন।
(বুখারী পর্ব ৪ : /৫৬ হাঃ ২১৭, মুসলিম ২/২১,
হাঃ ২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস নং-১২৪
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পায়খানায় যেতেন তখন আমি
এবং একটি ছেলে পানির পাত্র এবং ‘আনাযাহ’ নিয়ে যেতাম। তিনি পানি দ্বারা শৌচকার্য করতেন।
(বুখারী পর্ব ৪ : /১৭ হাঃ ১৫২, মুসলিম ২/২১,
হাঃ ২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সমাপ্ত)
কোরআন ও সহিহ হাদিস ভিত্তিক আরো বিষয় জানতে এদের উপর ক্লিক করুনঃ
৭৬। বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২ (পবিত্রতা-গোসল অধ্যায়)-(৬৭টি হাদিস)
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১,হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
লেখক ও সংকলকঃ
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, গুলশান-২,ঢাকা, বাংলাদেশ।
No comments:
Post a Comment