Thursday, September 26, 2019

মানুষ হত্যা মহাপাপ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

মানুষ হত্যা মহাপাপ

 

পৃথিবীতে যতো রকমের গুনাহের কাজ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় মহান আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা। এরপর সবচেয়ে বড় গুনাহ অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। হত্যাকারীর জন্য মহান আল্লাহ দুনিয়ায় বড় শাস্তি এবং আখেরাতে তীব্র আযাবের ঘোষণা দিয়েছেন।

আল্লাহ  তায়ালা বলেন,

“কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয় যে, সে অন্য মুমিনকে হত্যা করবে, অবশ্য ভুলবশত করে ফেললে অন্য কথা। ...আর কেউ স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তাকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন”। (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৯২-৯৩)।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,

“নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল”। (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৩২)।

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের (অপরাধের) মধ্যে সর্বপ্রথম নরহত্যার (অপরাধের) বিচার করা হবে। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৫৩৩, ৬৮৬৪, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬১৫, ২৬১৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪২৭৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৭৮, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৯৬, ১৩৯৭, নাসায়ী ২৯৯১, ২৯৯২, ২৯৯৩, ২৯৯৪, ২৯৯৬, আহমাদ ৩৬৬৫, ৪২০১, সহীহাহ ১৭৪৮, আধুনিক প্রকাশনী ৬০৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৮৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়লো, সে আল্লাহর যিম্মায় থাকলো। অতএব তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারিকে নষ্ট করো না। যে ব্যক্তি তাকে হত্যা করবে, আল্লাহ তাকে তলব করে এনে উল্টো মুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (সুনান ইবনু মাজাহ ৩৯৪৫)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

আবদুল্লাহ ইবনে ’আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম যিম্মীকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ তার সুগন্ধ অবশ্যই চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যাবে। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৮৬, ২৬৮৭, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩১৬৬, ৬৯১৪, নাসায়ী ৪৭৫০, গায়াতুল মারাম ৪৪৯, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৯২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৩৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

রিফা’আ ইবনে শাদ্দাদ আল-কিতবানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমর ইবনুল হামিক আল-খুযাঈ (রাঃ) -র নিকট আমি যে বাক্যটি শুনেছি তা না থাকলে আমি মুখতারের মাথা ও দেহের মাঝখান দিয়ে হাঁটাচলা করতাম (তাকে হত্যা করতাম)। আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন লোকের জানের নিরাপত্তা দেয়ার পর তাকে হত্যা করলো সে কিয়ামতের দিন বিশ্বাসঘাতকতার ঝান্ডা বয়ে বেড়াবে। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৮৮, আহমাদ ২১৪৩৯, ২১৪৪, রাওদুন নাদীর ৭৫১, ৭৫২, সহীহাহ ৪৪১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

নরহত্যা- একটি সমীক্ষাঃ

০৩ মার্চ ২০২২ তারিখে ”কালের কন্ঠ” পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য হলো, খুনের ঘটনায় ২০২১ সালে সারা দেশে তিন হাজার ৪৫৮টি মামলা হয়েছে। ২০২০ সালে মামলা হয়েছে তিন হাজার ৪৮৫টি।  ২০২০ সালে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ জন করে খুন হয়েছে। ২০২১ সালে গড়ে দৈনিক সাতজন করে খুন হয়েছে।

সারাদেশে  হত্যাকাণ্ড কত?

২০১৫ সালে সারাদেশে  হত্যাকাণ্ড হয়েছে চার হাজার ৩৩৫টি। ২০১৬ সালে তিন হাজার ৫৯১টি, ২০১৭  সালে তিন হাজার ৫৪৯টি, ২১৮ সালে তিন হাজার ৮৩০টি।  আর ২০১৯ সালে পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে মোট  হত্যাকাণ্ডের কথা লেখা আছে ৩৫১টি। অথচ ডিএমপির হিসাব বলছে ২০১৯ সালে ঢাকা শুধু ঢাকা শহরেই ২১৯টি  হত্যাকাণ্ডের  ঘটনা ঘটেছে। বছরে হত্যাসহ নানা অপরাধে প্রায় দুই লাখ মামলা হয়।

নারী হত্যা–আত্মহত্যাঃ

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলছে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সালের প্রথম ৭ মাসে মোট ৩ হাজার ৩৭৬ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছেন বা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। বছর অনুযায়ী আলাদা করে বললে, ২০১৭ সালে ৫৯৭ জন, ২০১৮ সালে ৫২৮, ২০১৯ সালে ৫৮৭, ২০২০ সালে ৬৬১, ২০২১ সালে ৬৮৪ ও ২০২২ সালের প্রথম সাত মাসে ৩১৯ জন নারীর জীবনে এই চরম ঘটনা ঘটেছে; অর্থাৎ মাসে গড়ে ৫০ জনের বেশি নারী হারিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে আত্মহত্যার চেয়ে হত্যার সংখ্যাই বেশি।

এই হত্যাকান্ডগুলো যে কারনেই হোক না কেনো তবে ইচ্ছেকৃতভাবেই হত্যাকান্ডগুলো ঘটানো হয়েছে। তাই এদের দুনিয়ার শাস্তি মানবরচিত আইনে যাই হোক না কেনো এদের স্থান হবে জাহান্নামে।

অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করলে তার শাস্তিঃ

অবৈধভাবে কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করলে তার শাস্তি হচ্ছে, ক্বিসাস্ তথা হত্যার পরিবর্তে হত্যা অথবা দিয়াত তথা ক্ষতিপূরণ স্বরূপ শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত সম্পদ। তবে এ ব্যাপারে হত্যাকৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা রাজি থাকতে হবে অথবা আপোস-মীমাংসার মাধ্যমে নির্ধারিত সম্পদ। অনুরূপভাবে হত্যাকৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা হত্যাকারীকে একেবারে ক্ষমাও করে দিতে পারে।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর নিহতদের ব্যাপারে ক্বিসাস্ তথা হত্যার পরিবর্তে হত্যা নির্ধারণ করা হলো। স্বাধীনের পরিবর্তে স্বাধীন, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারী। তবে কাউকে যদি তার ভাই (মৃত ব্যক্তি) এর পক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষমা করে দেয়া হয় তথা মৃতের ওয়ারিশরা ক্বিসাসের পরিবর্তে দিয়াত গ্রহণ করতে রাজি হয় তবে ওয়ারিশরা যেন ন্যায় সঙ্গতভাবে তা আদায়ের ব্যাপারে তাগাদা দেয় এবং হত্যাকারী যেন তা সদ্ভাবে আদায় করে। এ হচ্ছে তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে লঘু সংবিধান এবং (তোমাদের উপর) তাঁর একান্ত করুণা। এরপরও কেউ সীমালংঘন করলে তথা হত্যাকারীকে হত্যা করলে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’’। (বাক্বারাহ্  ১৭৮)।

ক্বিসাস সত্যিকারার্থে কোন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়। বরং তাতে এমন অনেকগুলো ফায়েদা রয়েছে যা একমাত্র বুদ্ধিমানরাই উদ্ঘাটন করতে পারেন।

আল্লাহ্ তা‘আলা ক্বিসাসের ফায়েদা বা উপকার সম্পর্কে বলেন:

‘‘হে জ্ঞানী লোকেরা! ক্বিসাসের মধ্যেই তোমাদের সকলের বাস্তব জীবন লুক্কায়িত আছে। (কোন হত্যাকারীর উপর ক্বিসাসের বিধান প্রয়োগ করা হলে অন্যরা এ ভয়ে আর কাউকে হত্যা করবে না। তখন অনেকগুলো তাজা জীবন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে) এতে করে হয়তো বা তোমরা আল্লাহ্ভীরু হবে’’। (বাক্বারাহ্ ১৭৯)।

রাসুল সাঃ বলেন,

আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোনো মুসলিম ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয়- আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, তাকে হত্যা করা বৈধ নয় তিনটি অপরাধের যে কোনো একটিতে লিপ্ত না হলেঃ (১) বিবাহিত লোক ব্যভিচার করলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করবে, (২) আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে অথবা ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলানো হবে অথবা তাকে দেশ থেকে নির্বাসন দেয়া হবে, (৩) আর কাউকে হত্যা করলৈ তার বিনিময়ে কিসাসস্বরূপ তাকেও হত্যা করা যাবে। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৩৫৩, নাসায়ী : ৭/৯১; হাকিম : ৪/৩৬৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

রাসুল সাঃ আরো বলেন,

 সাঈদ ইবনু আবূ সাঈদ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সুরাই আল কাবি (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শোনো হে খুযাআহ গোত্রের লোকেরা! তোমরা হুযাইল গোত্রের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছো। আর আমি তার রক্তমূল্য পরিশোধ করবো। আমার এ কথার পর যাদের কোনো লোককে হত্যা করা হবে তখন নিহতের পরিবার দু’টি বিকল্প অবস্থার যে কোনো একটি গ্রহণ করতে পারবে। দিয়াত গ্রহণ করবে অথবা হত্যা করবে। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫০৪, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪০৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

তিনি আরো বলেন,

যুহায়র ইবনু হারব ও উবায়দুল্লাহ্ ইবনু সাঈদ (রহঃ)....আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখন তার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মক্কাহ (মক্কা) বিজয় দান করলেন- তখন তিনি লোকদের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। তিনি প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করলেন। অতঃপর বললেন, নিশ্চিত আল্লাহ তা’আলা হস্তী বাহিনীর মক্কায় (মক্কায়) প্রবেশে বাধা প্রদান করেছেন এবং তার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদেরকে মক্কাহ (মক্কাহ) অভিযানে বিজয়ী করেছেন। আমার পূর্বে কারও জন্য এখানে রক্তপাত বৈধ ছিল না। আর আমার জন্যও একদিনের কিছু সময় এখানে যুদ্ধ করা হালাল করা হয়েছিল। আমার পরে আর কারও জন্য তা কখনও হালাল করা হবে না। অতএব এখানকার শিকারের পশ্চাদ্ধাবণ করা যাবে না, এখানকার কাটাদার গাছও উপড়ানো যাবে না এবং এখানকার পতিত জিনিস তোলা যাবে না। তবে ঘোষণা প্রদানকারী (তা তুলে নিতে পারবে)।

কারও কোন আত্মীয় নিহত হলে তার জন্য দুটি অবস্থার যে কোন একটি গ্রহণের অধিকার রয়েছেঃ হয় ফিদয়া (রক্তপণ) গ্রহণ করতে হবে নতুবা হত্যাকারীকে কিসাস স্বরূপ হত্যা করতে হবে। আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! কিন্তু ইযখির ঘাস যা আমরা কবরে দিয়ে থাকি এবং আমাদের ঘরের চালায় ব্যবহার করি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিন্তু ইযখির ঘাস (এর কাটার অনুমতি দেয়া হল)। ইয়ামানের অধিবাসী আবূ শাহ (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে (এ কথাগুলো) লিখে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আবূ শাহকে লিখে দাও।

ওয়ালীদ (রহঃ) বলেন, আমি আওযাঈ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলামঃ "হে আল্লাহর রসূল! আমাকে লিখে দেয়ার ব্যবস্থা করুন"-তাঁর এ কথার অর্থ কী? তিনি বললেন, যে ভাষণ তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দিতে শুনলেন তা। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৩১৯৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৩৫৫, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১১২, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫০৫; সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩১৭১, ইসলামীক সেন্টার ৩১৬৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

রাসুল সাঃ বলেন,

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, যখন আল্লাহ তা’আলা তার রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে) মক্কা-বিজয় দান করলেন তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদের সামনে দাড়িয়ে আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেনঃ যার আপন কেউ নিহত হয়েছে সে দুটি বিকল্পের মধ্যে একটি গ্রহণ করতে পারে। সে চাইলে খুনীকে ক্ষমাও করতে পারে অথবা তাকে হত্যাও করতে পারে। (সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪০৫, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১১২, ২৪৩৪, ৬৮৮০, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৩১৯৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৩৫৫, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪০৫, নাসায়ী ৪৭৮৫, ৪৭৮৬, ৪৫০৫, আহমাদ ৭২০১, ইরওয়া ৪/২৪৯, ৭/২৫৮, ২১৯৮, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬২৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

তবে বিচারকের দায়িত্ব হচ্ছে, তিনি সর্বপ্রথম হত্যাকৃতের ওয়ারিশদেরকে ক্ষমার পরামর্শ দিবেন।

রাসুল সাঃ বলেন,

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দেখেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কোনো কিসাস জনিত বিবাদ পেশ করা হলে তিনি ক্ষমা করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিতেন। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৪৯৭, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৯২)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

পিতা-মাতা অথবা দাদা-দাদী তাদের কোন সন্তানকে হত্যা করলে তাদেরকে তার পরিবর্তে হত্যা করা যাবে না।

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ সন্তান হত্যার অপরাধে পিতাকে হত্যা করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৬২, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪০০, ইরওয়া ২২১৪, আহমাদ : ১/২২ ইব্নুল জারূদ্, হাদীস ৭৮৮ বায়হাক্বী : ৮/৩৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

তবে তাদেরকে সন্তান হত্যার দিয়াত অবশ্যই দিতে হবে এবং তারা হত্যাকৃতের ওয়ারিসি সম্পত্তি হিসেবে উক্ত দিয়াতের কোন অংশই পাবে না।

আমর ইবনে শু’আইব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। মুদলিজ গোত্রীয় আবূ কাতাদা নামক এক ব্যক্তি নিজ পুত্রকে হত্যা করে। উমার (রাঃ) তার থেকে একশত উট আদায় করেন, যার মধ্যে ছিল তিরিশটি হিক্কা, তিরিশটি জাযাআ এবং চল্লিশটি গর্ভবতী উষ্ট্রী। অতঃপর তিনি বললেন, নিহতের ভাই কোথায়? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ হত্যাকারীর জন্য (নিহতের) উত্তরাধিকার স্বত্ব নাই। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৬, আহমাদ ৩৪৯, মুয়াত্তা মালেক ১৬২০, ইরওয়া ১৬৭০, ১৬৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

এ ছাড়াও হত্যাকারী ব্যক্তি হত্যাকৃত ব্যক্তির যে কোন ধরনের ওয়ারিশ হলেও সে উক্ত ব্যক্তির ওয়ারিসি সম্পত্তির কিছুই পাবে না। এমনকি দিয়াতের কোন অংশও নয়।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হত্যাকারী (নিহতের) ওয়ারিস হবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৫, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২১০৯, ইরওয়া ১৬৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

হত্যাকারী কোন মুসলিমকে কোন কাফির হত্যার পরিবর্তে ক্বিসাস্ হিসেবে হত্যা করা যাবে না। বরং তাকে উক্ত হত্যার পরিবর্তে দিয়াত দিতে হবে।

(ক) আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আলী ইবনে আবূ তালিব (রাঃ) কে বললাম, আপনাদের নিকট এমন কোন জ্ঞান আছে কি যা অন্যদের অজ্ঞাত? তিনি বলেন, না, আল্লাহর শপথ! লোকেদের নিকট যে জ্ঞান আছে তা ব্যতীত বিশেষ কোন জ্ঞান আমাদের নিকট নাই। তবে আল্লাহ যদি কাউকে কুরআন বুঝবার জ্ঞান দান করেন এবং এই সহীফার মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দিয়াত ইত্যাদি প্রসঙ্গে যা আছে (তাহলে স্বতন্ত্র কথা)। এই সহীফার মধ্যে আরো আছেঃ কোন কাফেরকে হত্যার অপরাধে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫৮, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১১১, ১৮৭০, ৩০৪৭, ৩০৩৪, ৩১৭২, ৩১৮০, ৬৭৫৫, ৬৯০৩, ৬৯১৫, ৭৩০০, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪১২, ২১২৭, নাসায়ী ৪৭৩৪, ৪৭৩৫, ৪৭৪৪, ৪৭৪৫, ৪৭৪৬, ৪৫৩০, আহমাদ ৬০০, ৬১৬, ৪৮৪, ৯৬২, ৯৯৪, ১০৪০, দারেমী ২৩৫৬, ইরওয়া ২২০৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(খ) আমর ইবনে শু’আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন কাফেরকে হত্যার অপরাধে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫৯, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪১৩, ইরওয়া ২২০৮)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(গ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোন কাফেরকে হত্যার অপরাধে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না এবং চুক্তিভুক্ত কোন যিম্মীকেও তার চুক্তি বহাল থাকা অবস্থায় হত্যা করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৬০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

হত্যাকারী যে কোন পুরুষকে যে কোন মহিলা হত্যার পরিবর্তে হত্যা করা যাবে। অনুরূপভাবে হত্যাকারী ব্যক্তি যেভাবে হত্যাকৃত ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ঠিক সেভাবেই হত্যাকারীকে হত্যা করা হবে।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, এক ইয়াহূদী একটি দাসীর মাথা দু’টি পাথরের মাঝখানে রেখে পিষে দিয়েছিল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, কে তোমাকে এরূপ করেছে? অমুক ব্যক্তি, অমুক ব্যক্তি? যখন জনৈক ইয়াহূদীর নাম বলা হল- তখন সে দাসী মাথার দ্বারা হ্যাঁ সূচক ইশারা করল। ইয়াহূদীকে ধরে আনা হল। সে অপরাধ স্বীকার করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন। তখন তার মাথা দু’টি পাথরের মাঝখানে রেখে পিষে দেয়া হল। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ২৪১৩, ২৭৪৬, ৫২৯৫, ৬৮৭৬, ৬৮৭৭, ৬৮৭৯, ৬৮৮৪, ৬৮৮৫, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪২৫৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৭২, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৬৫, ২৬৬৬, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৯৪, নাসায়ী ৪০৪৪, ৪৭৪১, ৪৭৪২, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫২৭, ৪৫২৮, ৪৫২৯, ৪৫৩৫, ১২৩৩৭, ১২৫৯৪, ১২৬৯৪, দারেমী ২৩৫৫, ইরওয়া ১২৫২, আত-তালীকু আলাত তানকীল ২/৮৮,আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৫৩)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

হত্যাকারী ছাড়া অন্য কাউকে কারোর হত্যার পরিবর্তে হত্যা করা যাবে নাঃ

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

‘‘প্রত্যেক ব্যক্তি স্বীয় কৃতকর্মের জন্য নিজেই দায়ী। কোন পাপীই অন্যের পাপের বোঝা নিজে বহন করবে না’’। (আন্‘আম: ১৬৪)।

আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:

‘‘কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার ওয়ারিশকে আমি (আল্লাহ্) ক্বিসাস্ গ্রহণের অধিকার দিয়ে থাকি। তবে (হত্যার পরিবর্তে) হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে। (যেমন: হত্যাকারীর পরিবর্তে অন্য নির্দোষকে হত্যা, হত্যাকারীর সঙ্গে অন্য নিরপরাধকেও হত্যা অথবা হত্যাকারীকে অমানবিকভাবে হত্যা করা ইত্যাদি)। কারণ, তার এ কথা জেনে রাখা উচিৎ যে, ক্বিসাস্ নেয়ার ব্যাপারে তাকে অবশ্যই সাহায্য করা হবে’’। (ইস্রা’/বানী ইস্রা’ঈল: ৩৩)।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আম্র (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

‘‘মানব জাতির মধ্য থেকে তিন ব্যক্তিই আল্লাহ্ তা‘আলার সঙ্গে সব চাইতে বেশি গাদ্দারী করে থাকে। তারা হচ্ছে: (মক্কা-মদীনার) হারাম এলাকায় কাউকে হত্যাকারী। যে ব্যক্তি হত্যাকারীর পরিবর্তে অন্যকে হত্যা করে। শত্রুতাবশত: অন্যকে হত্যাকারী। যা বরবর যুগের নিয়ম ছিলো’’। (আহমাদ: ২/১৭৯, ১৮৭ ইব্নু হিববান: ১৩/৩৪০)।

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সন্তানকে হত্যার অপরাধে পিতাকে হত্যা করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৬১, ২৬৬২, তিরমিযী ১৪০১, ইরওয়া ৭/২৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।

আমর ইবনুল আহ্ওয়াস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিদায় হজ্জের দিন বলতে শুনেছিঃ সাবধান! অপরাধী তার অপরাধের দ্বারা নিজেকেই দায়বদ্ধ করে। পিতার অপরাধে পুত্রকে এবং পুত্রের অপরাধে পিতাকে দায়বদ্ধ করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৬৯, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২১৫৯, ৩০৮৭, ইরওয়া ৭/৩৩৩-৩৩৪, সহীহাহ ১৯৭৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

তারিক আল-মুহারিবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর হস্তদ্বয় এতো উপরে তুলে বলতে শুনেছি যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছেঃ সাবধান! সন্তানের অপরাধে মাকে অভিযুক্ত করা যাবে না। সাবধান! সন্তানের অপরাধে মাকে অভিযুক্ত করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৭০, নাসায়ী ৪৮৩৯, ইরওয়া ৭/৩৩৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

উসামা ইবনে শরীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজনের অপরাধের জন্য অপরজনকে দায়বদ্ধ করা যাবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৭২)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

কেউ কাউকে এমন বস্ত্ত দিয়ে হত্যা করলে যা কর্তৃক সাধারণত কেউ কাউকে হত্যা করে না সে জন্য তাকে অবশ্যই দিয়াত দিতে হবে। এ জাতীয় হত্যা ‘‘তুলনামূলক ইচ্ছাকৃত হত্যা’’ নামে পরিচিত। এ হত্যার সাথে ইচ্ছাকৃত হত্যার কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। কারণ, তাতে হত্যার সামান্যটুকু ইচ্ছা অবশ্যই পাওয়া যায়। তবে উক্ত হত্যাকে নিরেট ইচ্ছাকৃত হত্যা এ কারণেই বলা হয় না যে, যেহেতু তাতে এমন বস্ত্ত ব্যবহার করা হয়নি যা কর্তৃক সাধারণত কাউকে হত্যা করা হয়। অনুরূপভাবে এ জাতীয় হত্যাকান্ডে ক্বিসাস্ নেই বলে ভুলবশত: হত্যার সঙ্গেও এর সামান্যটুকু সাদৃশ্য থেকে যায়।

কারোর হত্যাকারীর পরিচয় পাওয়া সম্ভবপর না হলেও তার দিয়াত দিতে হয়। কারণ, কোন মুসলিমের রক্ত কখনো বৃথা যেতে দেয়া হবে না। তবে সরকারই সে দিয়াত বহন করবে। সে জন্য কাউকে হত্যা করা যাবে না। যেমন: কোন ভিড় শেষ হওয়ার পর সেখানে কাউকে মৃত পাওয়া গেলে।

কোন ব্যক্তি কারোর ক্বিসাস্ অথবা দিয়াত বাস্তবায়নের পথে বাধা সৃষ্টি করলে তার উপর আল্লাহ্ তা‘আলার অভিশাপ নিপতিত হয় ও তার ফরজ নফল কোনো ইবাদত কবুল হবে নাঃ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি অন্ধ বিদ্বেষ অথবা গোত্রীয় বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে পাথর, চাবুক অথবা লাঠির আঘাতে হত্যাকান্ড ঘটায় তার উপর কতলে খাতার দিয়াত ধার্য হবে। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে তার উপর কিসাস বাধ্যকর হবে। আর যে ব্যক্তি হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণের মধ্যে প্রতিবন্ধক হবে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতাকুলের এবং মানবজাতির অভিসম্পাত। তার নফল অথবা ফরয কোন ইবাদতই কবুল করা হবে না। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৩৫, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৩৯,  নাসায়ী ৪৭৮৯, ৪৭৯০,  সহীহ আল জামি আস-সগীর ৬৪৫০, ৬৪৫১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

যেসব আঘাতে কিসাস নেইঃ

(ক) আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মস্তিকের মূলে (আঘাত) না পৌঁছলে, পেটের অভ্যন্তরে (আঘাত) না পৌঁছলে এবং হাড় ভেঙ্গে স্থানচ্যুত না হলে তাতে কিসাস নেই। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৩৭, সহীহাহ ২১৯০)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(খ) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ জাহম ইবনে হুযায়ফা (রাঃ) কে যাকাত আদায়কারী নিয়োগ করে পাঠান। এক ব্যক্তি তার যাকাতের ব্যাপারে তার সাথে বিবাদে লিপ্ত হয়। আবূ জাহম (রাঃ) তাকে আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায়। সেই গোত্রের লোকজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কিসাস দাবি করছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা এতো এতো পরিমাণ মাল পাবে। কিন্তু তারা তাতে রাজী হলো না। তিনি বলেনঃ তোমরা এতো এতো পরিমাণ মাল পাবে। এবার তারা রাযী হয়ে গেলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি কি লোকেদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তোমাদের রাযী হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দিবো? তারা বললো, হ্যাঁ।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ দেন এবং বলেনঃ এই লাইস গোত্রের লোকজন আমার নিকট কিসাসের দাবি নিয়ে এসেছে। আমি তাদেরকে এতো এতো পরিমাণ মাল প্রদানের প্রস্তাব করে জিজ্ঞেস করলামঃ তোমরা কি সম্মত হলে? তারা বললো, না। এতে মুহাজিরগণ ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে শাস্তি দিতে উত্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বিরত হতে নির্দেশ দিলে তারা বিরত হন। তিনি মালের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে তাদেরকে পুনরায় প্রস্তাব দিয়ে বলেনঃ তোমরা কি সম্মত হলে? তারা বললো, হ্যাঁ। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৩৮, নাসায়ী ৪৭৭৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৩৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।

যে সব অপরাধের প্রতিবিধান নেইঃ

(ক) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পশুর আঘাতে দন্ড নেই, খনিতে দন্ড নেই এবং কূপে পড়াতে দন্ড নেই। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৭৩, ২৬৭৪, ২৬৭৫, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১৪৯৯, ২৩৫৫, ৬৯১২, ৬৯১৩, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৬৪২, ১৩৭৭, নাসায়ী ২৪৯৫, ২৪৯৭, ২৪৯৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৯৩, ৪৫৯৪, আহমাদ ৭৪০৭, ৭৬৪৭, ৭৭৬৯, ২৭৪৭২, ৮৭৭৯, ৯০১৩, ৯৫৭২, ২৭২৬৩, ১০০৪৪, ১০১০৬, ১০১৩৭, ১০২০৯, মুয়াত্তা মালেক ১৬২২, দারেমী ১৬৬৮, ২৩৭৭, ২৩৭৮, ২৩৭৯, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/২৯। রাওদুন নাদীর ১১০৬, ১১১৪, ইরওয়া ৮১২)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(খ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আগুনে পতিত হওয়ায় দন্ড নেই এবং কূপে পতিত হওয়ায়ও দন্ড নেই। (ইবনু মাজাহ ২৬৭৬, ২৬৭৩, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১৪৯৯, ২৩৫৫, ৬৯১২, ৬৯১৩, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৬৪২, ১৩৭৭, নাসায়ী ২৪৯৫, ২৪৯৭, ২৪৯৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৯৩, ৪৫৯৪, আহমাদ ৭৪০৭, ৭৬৪৭, ৭৭৬৯, ২৭৪৭২, ৮৭৭৯, ৯০১৩, ৯৫৭২, ২৭২৬৩, ১০০৪৪, ১০১০৬, ১০১৩৭, ১০২০৯, মুয়াত্তা মালেক ১৬২২, দারেমী ১৬৬৮, ২৩৭৭, ২৩৭৮, ২৩৭৯, সহীহাহ ২৩৮১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahi।

দিয়াত বা ক্ষতিপূরণের পরিমানঃ

(ক) আমর ইবনে শু’আইব (রাঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি (কাউকে) ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলে তাকে নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের নিকট সোপর্দ করা হবে। তারা ইচ্ছা করলে তাকে হত্যা করবে অথবা ইচ্ছা করলে দিয়াত গ্রহণ করবে। আর দিয়াত হলো তিরিশটি হিক্কা (চার বছরের উট), তিরিশটি জাযাআ (পাঁচ বছরের উট) এবং চল্লিশটি খালিফা (গর্ভধারী উষ্ট্রী)। এটাই হলো ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার দিয়াত। উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা (সোলেহ)-ও হতে পারে। আর এটা হলো কঠোর দিয়াত। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬২৬, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৮৭, ইরওয়া ২১৯৯)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(খ) আমর ইবনে শু’আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি ভুলবশত নিহত হলো তার দিয়াত ৩০টি বিনতে মাখায (এক বছরের উষ্ট্রী), ৩০টি বিনতে লাবূন (দু বছরের উষ্ট্রী), ৩০টি হিক্কা (চার বছরের উষ্ট্রী) এবং দশটি ইবনে লাবূন (দু বছরের উট)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রামবাসীদের বেলায় এগুলোর মূল্য নির্ধারণ করেন চারশত দীনার অথবা তার সমতুল্য রৌপ্য মুদ্রা। তিনি দিয়াতের নগদ মূল্য নির্ধারণ করতেন উটের বাজার দর অনুসারে।

উটের বাজার দর বৃদ্ধি পেলে দিয়াতের পরিমাণও বেড়ে যেতো এবং উটের বাজার দর হ্রাস পেলে দিয়াতের পরিমানও হ্রাস পেতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এর মূল্য চারশত দীনার থেকে আটশত দীনার পর্যন্ত অথবা এর সমমূল্যের (রৌপ্য) মুদ্রায় আট হাজার দিরহাম পর্যন্ত পৌঁছেছিল। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সিদ্ধান্তও দিয়েছিলেন যে, গরুর মালিক গরুর দ্বারা তাদের দিয়াত পরিশোধ করতে চাইলে দুইশত গরু এবং বকরীর মালিক বকরী দ্বারা দিয়াত পরিশোধ করতে চাইলে দু’ হাজার বকরী দিতে হবে। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৩০, নাসায়ী ৪৮০১, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৪১, আহমাদ ৬৯৯৪, আত-তালীক আলার রাওদাহ ২/৩০৭)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(গ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গর্ভস্থ ভ্রুণের দিয়াত বাবত একটি ক্রীতদাস অথবা একটি ক্রীতদাসী নির্ধারণ করেন। তিনি যার উপর দিয়াত ধার্য করেন সে বললো, আমরা কি এমন মানুষের দিয়াত দিবো যে না পান করেছে, না চীৎকার করেছে আর না শব্দ করে কেঁদেছে? এর রক্ত (দিয়াত) তো বাতিল, অর্থহীন! রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ লোকটি তো কবি সুলভ কথা বলছে। ভ্রুণের জন্য একটি ক্রীতদাস অথবা একটি ক্রীতদাসী দিয়াতস্বরূপ দিতে হবে। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৩৯, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৫৭৫৮, ৫৭৬০, ৬৭৪০, ৬৯০৪, ৬৯০৯, ৬৯১০, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪২৮১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৮১, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪১০, ২১১১, নাসাঈ ৪৮১৭, ৪৮১৮, ৪৮১৯, ৪৫৭৬, ৪৫৭৯, আহমাদ ১০০৮৯, ৭১৭৬, ১০৫৩৩, ১০৫৭০, মুয়াত্তা মালিক ১৬০৮, দারিমী ২৩৮২, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/১১৩, ১১৫, ইবনু হিব্বান ৬০২২, দারাকুতনী ৩/১১৫, ইরওয়া ২২০৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।

(ঘ) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হান্যালী (রহঃ)...মুগীরাহ ইবনু শুবাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা তার সতীনকে কুঁড়ে ঘরের খুঁটি দ্বারা আঘাত করল। সে ছিল গর্ভবতী মহিলা। (আঘাতকারী মহিলা আঘাত দিয়ে) তাকে মেরে ফেলল। বর্ণনাকারী বলেন যে, তাদের একজন ছিল লিহইয়ান গোত্রের মহিলা। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্যাকারী মহিলার ওয়ারিসগণের ওপর নিহত মহিলার হত্যার (দিয়াত) ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং গর্ভে নিহত হওয়া (সন্তানের) জন্য একটি দাস (ক্ষতিপূরণ হিসেবে) প্রদানের হুকুম দিলেন। তখন হত্যাকারী মহিলার গোত্রের এক ব্যক্তি বলল, আমরা এমন শিশুর কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেব যে খায়নি, পান করেনি এবং কোন শব্দও করেনি? সে তো এলো আর গেল। এ বাতিলযোগ্য। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে যেন বেদুঈনের মত ছন্দযুক্ত বাক্যে কথা বলল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাদের উপর (দিয়াত) ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪২৮৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৮২, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪০, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৯০৭, ৬৯০৮, ৭৩১৭, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪১১, নাসায়ী ৪৮২১, ৪৮২২, ৪৮২৩, ৪৮২৪, ৪৮২৫, ৪৮২৬, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৬৮, ৪৫৭০, আহমাদ ১৭৬৮০, ১৭৬৭২, ১৭৬৮২, ১৭৭১২, ১৭৭৪৮, দারেমী ৬৪২, ২৩৮০, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/৯১, ১১৩, ১১৫, ইবনু হিব্বান ৬০২২, দারাকুতনী ৩/১১৫, ইরওয়া ৭/২৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২৪৬, ইসলামিক সেন্টার ৪২৪৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঙ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) লোকজনের নিকট গর্ভস্থ ভ্রুণের (দিয়াতের) ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফয়সালা জানতে চাইলেন। তখন হামল ইবনে মালেক ইবনে নাবিগা (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি আমার দু’ স্ত্রীর মাঝখানে ছিলাম। তাদের একজন তাঁবুর কিলক দ্বারা অপরজনকে আঘাত করে তার গর্ভস্থ ভ্রুণসহ তাকে হত্যা করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হত্যা করার এবং গর্ভস্থ ভ্রুণের দিয়াতস্বরপ একটি ক্রীতদাস প্রদানের নির্দেশ দেন। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪১, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৭২, আহমাদ ১৬৬২৮৮, দারেমী ২৩৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

(চ) আমর ইবনে শু’আইব (রাঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফয়সালা দেন যে, দু’ আহলে কিতাব সম্প্রদায় অর্থাৎ ইহূদী ও নাসারাদের দিয়াত হবে মুসলিমদের দিয়াতের অর্ধেক। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৪, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪১৩, নাসায়ী ৪৮০৬, ৪৮০৭, ইরওয়া ২২৫১)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(ছ) আমর ইবনে শুআইব (রাঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, কোন নারীর উপর দিয়াত বাধ্যকর হলে তার তার বিদ্যমান (বংশীয়) আত্মীয়গণ পরিশোধ করবে। কিন্তু তারা তার ওয়ারিস হবে না। তবে তার ওয়ারিসদের প্রদানের পর কিছু অবশিষ্ট থাকলে তা তারা পেতে পারে। কোন নারী নিহত হলে তা দিয়াত পাবে তার ওয়ারিসগণ। তারাই হত্যাকারীকে (কিসাসস্বরূপ) হত্যা করার অধিকারী। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৭, নাসায়ী ৪৮০১, আহমাদ ৭০৫২, ইরওয়া ২৩০২)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(জ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্যাকারী নারীর উপর ধার্যকৃত দিয়াত প্রদানের দায় তার বংশীয় আত্মীয়গণের উপর আরোপ করেন। তখন নিহত নারীর বংশীয় আত্মীয়রা বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তার মীরাছ কি আমরা পাবো? তিনি বলেনঃ না, তার মীরাছ তার স্বামী ও সন্তানের প্রাপ্য। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৭৫, ইরওয়া ২৬৪৯, আস-সাহীহ ২৫৯৯, ২৬০০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

দাঁতের কিসাস বা ক্ষতিপূরণঃ

(ক) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তার ফুফু রুবায়্যি একটি বালিকার সামনের পাটির দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিল। অপরাধীর গোত্র ক্ষমা প্রার্থনা করলে আহতের গোত্র তা অস্বীকার করে। তারা দিয়াত প্রদানের প্রস্তাব দিলে তাও তারা প্রত্যাখ্যান করে। অতঃপর তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র নিকট উপস্থিত হলে, তিনি কিসাস গ্রহণের নির্দেশ দেন। তখন আনাস ইবনুন নাযর (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রুবায়্যির সামনের পাটির দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হবে। সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, তার দাঁত ভাঙ্গা যাবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হে আনাস! আল্লাহর কিতাবের বিধান হলো কিসাস। রাবী বলেন, তখন আহত মেয়েটির গোত্র সম্মত হয়ে (কিসাস) ক্ষমা করে দেয়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ্র বান্দাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে আল্লাহর নামে শপথ করলে আল্লাহ তা অবশ্যই পূর্ণ করার ব্যবস্থা করেন। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৪৯, সহীহুল সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৮৯৪, ২৭০৩, ২৮০৬, ৪৪৯৯, ৪৫০০, ৪৬১১, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪২৬৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৭৫, নাসায়ী ৪৭৫৫, ৪৭৫৬, ৪৭৫৭, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৯৫, আহমাদ ১২২৯৩, ১৩৬১৪, মুশকিলাতুল ফিকর ১২৫, আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(খ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সব দাঁতের মূল্য ও মর্যাদা সমান। সামনের দাঁত ও মাড়ির দাঁত (দিয়াতের ক্ষেত্রে) এক সমান। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫০, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৫৯, ইরওয়া ২২৭৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(গ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি দাঁতের দিয়াত পাঁচটি উট নির্ধারণ করেছেন। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫১, ইরওয়া ২২৭৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

আঙ্গুলসমূহের দিয়াত বা ক্ষতিপূরণঃ

(ক) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এটা এবং এটা অর্থাৎ কনিষ্ঠা, ও বৃদ্ধাঙ্গুলির (দিয়াত) সমান। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫২, ২৬৫৪, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৫৮, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৯২, নাসায়ী ৪৮৪৭, ৪৮৪৮, আহমাদ ২০০০, ৬১৪০, দারেমী ২৩৮০, ইরওয়া ৭/৩১৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(খ) আমর ইবনে শু’আইব (রাঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবগুলো আঙ্গুল (দিয়াত) সমান। প্রতিটি আঙ্গুলের দিয়াত দশটি করে উট। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫৩, নাসায়ী ৪৮৫০, ৪৮৫১, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৬২, আহমাদ ৬৬৪৩, ৬৭৩৩, ইরওয়া ৭/৩১৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

হাড় উন্মুক্তকারী যখম (মাওযিহা):

আমর ইবনে শু’আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হাড় উন্মুক্তকারী প্রতিটি যখমের দিয়াত পাঁচটি করে উট। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫৫, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৬৬, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৯০, নাসায়ী ৪৮৫২, আহমাদ ৬৬৪৩, ৬৭৩৩, ৬৮৯৪, ৬৯৭৩, ৬৯৯৪, দারেমী ২৩৭২, ইরওয়া ২২৮৫-২২৮৮)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

 কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাত কামড়ে ধরলে এবং সে তার হাত টান দেয়ার ফলে প্রথমোক্ত ব্যক্তির সামনের দাঁত পড়ে গেলেঃ

উমায়্যার পুত্রদ্বয় ইয়ালা ও সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাবুক যুদ্ধে রওয়ানা করলাম। আমাদের সাথে এক সাথীও ছিল। পথিমধ্যে সে এবং অপর এক ব্যক্তি বিবাদে লিপ্ত হয়। রাবী বলেন, আমাদের লোকটি তার প্রতিপক্ষের হাত কামড়ে ধরলো। সে তার মুখ থেকে নিজের হাত মুক্ত করার জন্য সজোরে টান দিলো। এতে তার সামনের পাটির দাঁত উপড়ে পড়ে গেলো। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে তার দাঁতের দিয়াত দাবি করলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে ষাঁড়ের মত কামড়ে ধরে, অতঃপর এসে দিয়াত দাবি করে। এর কোন দিয়াত নেই। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দাঁতের দিয়াতের দাবি নাকচ করে দিলেন। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৫৬, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ২২৬৬, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৫৮৪, নাসায়ী ৪৭৬৩, ৪৭৬৪, ৪৭৬৫, ৪৭৬৬, ৪৭৬৭, ৪৭৬৯, ৪৭৭১, ৪৭৭২, আহমাদ ১৭৪৮৯, ১৭৫০৫, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২১২২ শেষাংশ)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

হত্যাকারী সনাক্ত করা না গেলে রাষ্ট্র তার ক্ষতিপূরণ দিবেঃ

সাহল ইবনে আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাকে তার কওমের কয়েকজন সম্ভ্রান্ত লোক জানিয়েছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনে সাহল এবং মুহাইয়্যাসা দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে খায়বার এলাকায় গেলেন। অতঃপর মুহাইয়্যাসার নিকট লোক মারফত খবর পৌঁছলো যে, আবদূল্লাহ ইবনে সাহলকে হত্যা করে তার লাশ খায়বারের একটি গর্তে অথবা একটি কূপে নিক্ষেপ করা হয়েছে। মুহাইয়্যাসা (রাঃ) ইহূদীদের নিকট গিয়ে বললেন, আল্লাহর শপথ! তোমরাই তাকে হত্যা করেছো। তারা বললো, আল্লাহর শপথ! আমরা তাকে হত্যা করিনি।

অতঃপর তিনি তার গোত্রে ফিরে এসে তাদের নিকট এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি ও তার বড় ভাই হুয়াইয়্যাসা এবং আবদুল রহমান ইবনে সাহল (রাঃ) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলেন। খায়বারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুহাইয়্যাসা (রাঃ) কথা বলতে উদ্যত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেনঃ জ্যেষ্ঠকে, জ্যেষ্ঠকে অগ্রাধিকার দাও। তিনি বয়সে বড় বুঝাতে চাচ্ছিলেন। হুওয়াইয়্যাসা কথা বললেন, তারপর মুহাইয়্যাসা কথা বললেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইহূদীরা হয় তোমাদের সঙ্গীর দিয়াত প্রদান করবে অথবা যুদ্ধের ঘোষণা দিবে। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি সম্পর্কে পত্র লিখলে ইহূদীরা প্রতি উত্তরে লিখে পাঠায়, আল্লাহর শপথ! আমরা তাকে হত্যা করিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুওয়াইয়্যাসা, মুহাইয়্যাসা ও আবদুর রহমান (রাঃ)-কে বললেনঃ তোমরা কি শপথ করে তোমাদের সঙ্গীর খুনের বদলা দাবি করতে পারো? তারা বললো, (আমরা শপথ করবো) না। তিনি বলেনঃ তারা তো মুসলিম নয় (মিথ্যা শপথ করবে)।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের অর্থাৎ (রাষ্ট্রের) পক্ষ থেকে তার দিয়াত পরিশোধ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট একশত উষ্ট্রী পাঠান এবং সেগুলি তাদের বসতিতে পৌঁছে গেলো। সাহল (রাঃ) বলেন, সেগুলির মধ্যকার একটি লাল উষ্ট্রী আমাকে লাথি মেরেছিল। (সুনান ইবনু মাজাহ ২৬৭৭, ২৬৭৮, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ২৭০২, ৩১৭৩, ৬১৪২, ৬৮৯৮, ৭১৯২, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৪২২, নাসায়ী ৪৭১০, ৪৭১১, ৪৭১২, ৪৭১৩, ৪৭১৪, ৪৭১৫, ৪৭১৬, ৪৭১৭, ৪৭১৯, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৬৩৮, ৪৫২০, ৪৫২১, ৪৫২২, ৪৫২৩, আহমাদ ১৫৬৬৪, ১৬৬২৫, মুয়াত্তা মালেক ১৬৩০, ১৬৩১, দারেমী ২৩৫৩, ইরওয়া ১৬৪৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

ভুলবশতঃ হত্যা করলে ক্ষতির পরিমাণঃ

 আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ভুলবশত হত্যা (কাতলে খাতা) হলো শিবহে আম্দ-এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন চাবুক বা লাঠির আঘাতে মৃত্যু। এতে এক শত উট (দিয়াতস্বরূপ) দিতে হবে। তার মধ্যে চল্লিশটি হতে হবে গর্ভবতী। (সুনান ইবনু মাজাহ  ২৬২৭, ২৬২৮, নাসায়ী ৪৭৯১, ৪৭৯৩, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)৪৫৪৭, দারেমী ২৩৮৩, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/৬৫, ইরওয়া ২১৯৭, ২৫৭, আত-তালীকু আলাত তানকীল ৪/৭৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

খুনীকে ক্ষমা করবে কে, রাষ্ট্রপতি নাকি নিহতের পরিবার?

বাংলাদেশ সংবিধানের ১ম পরিচ্ছেদ ৪৯ নং ধারায় উল্লেখ আছে  “কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে−কোন দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে−কোন দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে”।

উক্ত ধারার ক্ষমতাবলে একজন রাষ্ট্রপতি যেকোনো খুনীসহ যেকোনো অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারেন।

কিন্তু ইসলামে ক্ষমা করার বিষয়টি ছেড়ে দেয়া হয়েছে নিহতের পরিবারের উপর। কেউ কাউকে খুন করলে নিহতের পরিবার অভিযোগ দায়ের করলে ইসলাম তাকে তিনটি শর্ত দিয়ে দেয়। শর্ত তিনটি হচ্ছে,

(ক)  নিহতের পরিবার খুনের পরিবর্তে খুনীকে খুন করবে তথা কিসাস আদায় করবে।

(খ)  অথবা দিয়াত বা ক্ষতিপূরণ আদায় করবে।

(গ)  নতুবা ক্ষমা করে দিবে।

এখানে তিনটির যেকোনো একটি করতে হবে। দুইটি এক সাথে আদায় করা যাবে না।

প্রিয় মুসলমান ভাইয়েরা, আল্লাহর এই আইন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে চালু নেই। (ব্যতীক্রম ১/২টি রাষ্ট্র)। যেসব রাষ্ট্রে অনৈসলামিক দল ক্ষমতায় আছে সেইসব রাষ্ট্রে ইসলামি কোনো সমাজ ব্যবস্থা নেই। অথচ মুসলিম নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিল যে, তারা সরকার গঠন করলে ইসলামি আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কিন্তু সেই দায়িত্ব থেকে তারা সরে এসে মানবরচিত আইন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এর জন্যে দায়ী মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও সেইসব ভোটার যারা তাদেরকে ভোট দিয়ে ইসলাম বিমূখী হতে সহযোগীতা করেছে।

(সমাপ্ত)

লেখক ও সংকলকঃ

মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, বিবিসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।

...........................................................................................

কুরআন ও সহিহ হাদিস ভিত্তিক লেখকের অন্যান্য সকল বই এক সাথে দেখতে চাইলে PMMRC এর উপর ক্লিক করুন।

(PMMRC)

Please Share On

No comments:

Post a Comment

আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব ও ফজিলত ভূমিকা: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ...