Search This Blog

Monday, April 22, 2019

দৈনিক তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

দৈনিক তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর

কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত বিভিন্ন প্রকার যিকির বা আমল কিংবা দোয়া আছে যেগুলো আমরা সালাতের মধ্যে ও সালাতের বাহিরে তথা সালাতে সালাম ফিরানোর পর এবং সকাল-বিকেলে আমল বা পাঠ করে থাকি। এসব সময় ছাড়াও দিন রাত ২৪ ঘন্টাব্যাপী কিছু যিকির বা আমল আছে যেগুলো রাসুল সাঃ সবসময় পাঠ করতেন। সেগুলো হচ্ছে, তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর।

আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বক্ষণ (সর্বাবস্থায়) আল্লাহর যিকির করতেন।

(সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৭১২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৭৩, সুনান ইবনু মাজাহ ৩০২, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)  ৩৩৮৪, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৮, আহমাদ ২৩৮৮৯, ২৪৬৭৪, ২৫৮৪৪, রিয়াযুস সালেহীন-১/১৪৫২, সহীহাহ ৪০৬। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

তাসবীহ, তাহমীদ, তাকবীর ও তাহলীল এই শব্দগুলোর অর্থ এবং কখন, কিভাবে পাঠ করতে হয় বা আমল করতে হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ-

তাসবীহ -(আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করা) অর্থাৎ “সুবহান আল্লাহ” পাঠ করা।

তাহমীদ -(প্রশংসা করা) অর্থাৎ “আলহামদুলিল্লাহ” পড়া।

তাকবীর -(আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করা) অর্থাৎ “আল্লাহু আকবার” পাঠ করা।

তাহলীল -(আল্লাহর একত্ববাদ ঘোষণা করা) অর্থাৎ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পাঠ করা।

এগুলো বিশেষভাবে সকাল-সন্ধ্যা, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর, ঘুমের পূর্বে এবং অন্য যে কোন সময় বেশি বেশি পাঠ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ আমল।

যিকির সম্পর্কে জ্ঞাতব্য বিষয়

(ক) আল্লাহ বলেন, “তোমার প্রতিপালককে মনে মনে সবিনয় ও সশঙ্কচিত্তে অনুচ্চস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ কর (জিকির কর) এবং তুমি উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না। (সূরা আরাফ ২০৫ নং আয়াত)।

(খ) তিনি আরও বলেছেন, “নিশ্চয়ই আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) পুরুষ ও আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী (সংযমী) পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী (সংযমী) নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারী---এদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহা প্রতিদান রেখেছেন।(সূরা আহযাব ৩৫ আয়াত)।

(গ) তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (সূরা আহযাব ৪১-৪২ আয়াত)।

(ঘ) আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার ধারণার পাশে থাকি। (অর্থাৎ সে যদি ধারণা রাখে যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, তার তওবা কবুল করবেন, বিপদ আপদ থেকে উদ্ধার করবেন, তাহলে তাই করি।) আর আমি তার সাথে থাকি, যখন সে আমাকে স্মরণ করে। সুতরাং সে যদি তার মনে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে আমার মনে স্মরণ করি, সে যদি কোন সভায় আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে তাদের চেয়ে উত্তম ব্যক্তিদের (ফিরিশতাদের) সভায় স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৭৪০৫, ৭৫০৫, ৭৫৩৬, ৭৫৩৬, ৭৫৩৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), ৬৬৯৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৭৫, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮২২,  সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২৩৮৮, ৩৬০৩, আহমাদ ৭৩৭৪, ৮৪৩৬, ৮৮৩৩, ৯০০১, ৯০৮৭, ৯৩৩৪, ৯৪৫৭, ১০১২০, ১০২৪১, ১০৩০৬, ১০৩২৬, ১০৪০৩, ১০৫২৬, ১০৫৮৫, ২৭২৭৯, ২৭২৮৩, সহীহাহ ২২৮৭, রিয়াযুস সালেহীন ২৮/১৪৪৩। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঙ) আবদুল্লাহ ইবনু বুসর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক বিদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, সর্বোত্তম ব্যক্তি কে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সৌভাগ্যবান সে ব্যক্তি, যে দীর্ঘ হায়াত পেয়েছে এবং যার ‘আমল নেক হয়েছে। সে ব্যক্তি আবার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! কোন ‘আমল সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি যখন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে তখন তোমার মুখে আল্লাহর জিকিররত থাকবে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তুমি সব সময় তোমার জিহবাকে আল্লাহর জিকিররত রাখবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৭০, ২২৭৯, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২৩২৯, ৩৩৭৫, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৭৯৩, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৪২০, ২৯৪৫৩, মুজামুল আওসাত লিত্ব ত্ববারানী ১৪৪১, আহমাদ ১৭২২৭, ১৭২৪৫, ১৭৬৯৮, ১৭৬৯৯, তাখরিজুল কালিমুত তায়্যিব ৩, আত-তালীকুর রাগীব ২/২২৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫২৬, সহীহাহ ১৮৩৬, আর রাওয ৯২৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৮২২,)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(চ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন জায়গায় বসেছে, আর সেখানে আল্লাহর জিকির করেনি, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী সে বৈঠক তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি বিছানায় শুয়েছে অথচ আল্লাহর জিকির করেনি, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তা তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৭২, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৮৫৬, সহীহাহ্ ৭৮, সহীহ আল জামি ৬৪৭৭)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(ছ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন দল কোন মাজলিস হতে আল্লাহর জিকির না করে উঠলে নিশ্চয় তারা মরা গাধা (মরা গাধার গোশত) খেয়ে উঠল। এ মাজলিস তাদের জন্য আক্ষেপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৭৩, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৮৫৫, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ২২৫, সহীহ আত্ তারগীব ১৫১৪, সহীহ আল জামি ৫৭৫০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(জ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন দল কোন মাজলিসে বসল অথচ আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করল না এবং তাদের নবীর প্রতিও দরূদ সালাম পাঠাল না। নিশ্চয়ই তাদের জন্য এটা ক্ষতির কারণ হলো। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তিও দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৭৪, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৩৮০, আহমাদ ৯৮৪৩, সহীহাহ্ ৭৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৫১২, সহীহ আল জামি ৫৬০৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঝ) আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শয়তান আদম সন্তানের কলবের বা অন্তরের উপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফিল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াস্ওয়াসা দিতে থাকে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৮১, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৭৭৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঞ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা যখন আমার জিকির করে আমার জন্যে তার দুই ঠোঁট নড়ে তখন আমি তার কাছে থাকি। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৮৫, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৭৯২, আহমাদ ১০৫৮৫,  ১০৯৬৮, ইবনু হিব্বান ৮১৫, সহীহ আত্ তারগীব ১৪৯০, সহীহ আল জামি ১৯০৬, আত-তালীকুর রাগীব ২/২২৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

দৈনিক তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীরসমূহ

(১ নং আমল):-

 আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক প্রতিদিন একশ’বার

“সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি”

বলবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৪০৫, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৩৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯১, আহমাদ ৮০১৪, আধুনিক প্রকাশনী ৫৯৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৮৫০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(২ নং আমল):-

ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ).....আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

"লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলাকুল্লি শাইয়্যিন কদীর।"

অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই; তিনি অদ্বিতীয়, তার কোন অংশীদার নেই, তারই রাজত্ব, তারই যাবতীয় প্রশংসা; তিনিই সব বিষয়ের উপর শক্তিধর- যে লোক এ দু’আ প্রতিদিনে একশ’ বার পাঠ করে সে দশজন গোলাম মুক্ত করার পুণ্য অর্জন হয়, তার (আমলনামায়) একশ’ নেকী লেখা হয় এবং তার হতে একশ’ পাপ মিটিয়ে দেয়া হয়। আর তা ঐ দিন বিকাল পর্যন্ত শাইতান (শয়তান) (তার কুমন্ত্রণা) হতে তার জন্যে রক্ষাকারী হয়ে যায়। সেদিন সে যা পুণ্য অর্জন করেছে তার চেয়ে বেশি পুণ্যবান কেউ হবে না। তবে কেউ তার চাইতে বেশি ‘আমল করলে তার কথা আলাদা। আর যে লোক দিনে একশ’ বার

"সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবিহামদিহী"।

অর্থাৎ- ‘আমি আল্লাহর সপ্রশংসা সহ তার পবিত্রতা বর্ণনা করছি পাঠ করবে, তার সমস্ত পাপ মিটিয়ে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৩৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯১, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩২৯৩, ৬৪০৩,  আহমাদ ৮০১৪, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৬০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৩ নং আমল):-

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র, যুহায়র ইবনু হারব, আবূ কুরায়ব ও মুহাম্মাদ ইবনু তারীফ আল বাজালী (রহঃ)....আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন দু’টি কালিমাহ জিহ্বার উপর (উচ্চারণে) খুবই হালকা, মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী, রহমান (পরম দয়ালু আল্লাহ) এর নিকট অত্যন্ত প্রিয়। তা হলো

"সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হামদিহী সুবহা-নাল্ল-হিল আযীম",

অর্থাৎ আমি আল্লাহ তা’আলার সমস্ত প্রশংসা, পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি, আমি মহান আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।’ (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৩৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯৪, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৪০৬, ৬৬৮২, ৭৫৬৩, আহমাদ ৭১৭০, আধুনিক প্রকাশনী ৫৯৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৮৫১)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৪ নং আমল):-

আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও আবু কুরায়ব (রহঃ)....আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি বলি-

"সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়ালাইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্ল-হু আকবার"।

অর্থাৎ- "আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর এবং আল্লাহ ভিন্ন কোন মা’বূদ নেই, আল্লাহ মহান" পড়া আমার নিকট বেশি প্রিয়- সে সব বিষয়ের চেয়ে, যার উপর সূর্য উদিত হয়। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৪০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬০২, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৫৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৫ নং আমল):-

আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ)....মুসআব ইবনু সা’দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা (সা'দ) আমাকে হাদীস শুনিয়েছেন যে, তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে (বসা) ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে কেউ কি প্রতিদিন এক হাজার পুণ্য হাসিল করতে অপারগ হয়ে যাবে? তখন সেখানে বসে থাকাদের মধ্য থেকে এক প্রশ্নকারী প্রশ্ন করল, আমাদের কেউ কিভাবে এক হাজার পুণ্য হাসিল করবে? তিনি বললেন, সে একশ’ তাসবীহ

“সুবহানাল্লা-হ”

পাঠ করলে তার জন্যে এক হাজার পুণ্য লিখিত হবে এবং তার (আমলনামা) হতে এক হাজার পাপ মুছে দেয়া হবে। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৪৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬০৭, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৬০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৬ নং আমল):-

জাবির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক (একবার) বলে

“সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়াবিহামদিহী”

তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়। (সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৬৪, রাওযুন নায়ীর ২৪৩, সহীহাহ ৬৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৭ নং আমল):-

আবু কামিল ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন (রহঃ).....আবু মূসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তারা (সহাবাগণ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলেন এবং তারা একটি উঁচু টিলায় আরোহণ করতেছিলেন। তিনি বলেন, লোক যখনই কোন টিলার উপরে উঠত তখন উচ্চকণ্ঠে

"লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্ল-হু আকবার"

(আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহ মহান) বলত। তিনি (রাবী) বলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তো অবশ্যই কোন বধির কিংবা অনুপস্থিত সত্তাকে ডাকছো না। তিনি বলেন, এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবূ মূসা অথবা হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! আমি কি তোমাকে এমন এক কালিমাহ সম্পর্কে জানিয়ে দিব না যা জান্নাতের গুপ্তধন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা কি? তিনি বললেন,

"লা- হাওলা ওয়ালাকুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ"

অর্থাৎ- (আল্লাহর সহযোগিতা ছাড়া কারো ভাল কর্ম করার এবং খারাপ কর্ম থেকে বিরত থাকার সামর্থ্য নেই)। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৫৭, ৬৭৫৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭০৪, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৮৪, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬১৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৭০, তিরমিযী ৩৩৭৪, ৩৪৬১, ইবনু মাজাহ ৩৮২৪, আহমাদ ১৯০২৬, ১৯০৭৮, ১৯০৮২, ১৯১০২, ১৯১০৮, ১৯১৫১, ১৯২৪৬, ১৯২৫৬, রিয়াজুস সালেহীন-তাওহীদ প্রকাশনী- ৩৬/১৪৫১, রাওদুন নাদীর ১০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬১৮, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৭২)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৮ নং আমল):-

আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ).....মুসআব ইবনু সা’দ (রাযিঃ) তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জনৈক গ্রাম্য লোক এসে বলল, আমাকে একটি কালাম শিক্ষা দিন, যা আমি নিয়মিত পাঠ করব। তিনি বললেন, তুমি বলো

"লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু আল্ল-হু আকবার কাবীরা ওয়াল হামদু লিল্লা-হি কাসীরা সুবহানাল্লা-হি রব্বিল আ-লামীনা লা- হাওলা ওয়ালা- কুত্ত্বওয়াতা ইল্লা-বিল্লা-হিল আযীযিল হাকীম"।

অর্থাৎ-"আল্লাহ ভিন্ন কোন মা’বূদ নেই, তিনি অদ্বিতীয়, তার কোন অংশীদার নেই, আল্লাহ মহান, সবচেয়ে মহান, আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা এবং আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পবিত্রতা ঘোষণা করছি। পরাক্রমশালী বিজ্ঞানময় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ভাল কাজ করার এবং খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার সাধ্য কারো নেই।" সে বলল, এসব তো আমার রবের জন্য। আমার জন্যে কি? তিনি বললেন, বলো,

“আল্লা-হুম্মাগফির লী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী,  ওয়ারযুক্বনী”

হে আল্লাহ! আপনি আমাকে মাফ করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিন এবং আমাকে জীবিকা দান করুন। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৪১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬০৩, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৫৬, রিয়াজুস সালেহীন-তাওহীদ প্রকাশনী ৭/১৪২২, আহমাদ ১৫৬৪, ১৬১৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(৯ নং আমল):-

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহঃ-কে আমি বলতে শুনেছিঃ

“লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ"

অতি উত্তম যিকর এবং

"আলহামদু লিল্লাহ"

অধিক উত্তম দুআ। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৩০৬, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৩৮৩, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮০০, সহীহাহ ১৪৯৭, আত-তালীকুর রাগীব ২/২২৯, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৮৩৪, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ১৩৭, শু‘আবূল ঈমান ৪০৬১, ইবনু হিব্বান ৮৪৬, সহীহ আত্ তারগীব ১৫২৬, সহীহ আল জামি ১১০৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(১০ নং আমল):-

“আল-বাকিয়াতুস সালিহাত” তথা চিরস্থায়ী নেক আমল হচ্ছে,

“সুবহা-নাল্লা-হি, ওয়ালহামদুলিল্লা-হি, ওয়া লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়ালা হাউলা ওয়ালা কূওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হি”

“আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই।”  (মুসনাদে আহমাদ নং ৫১৩; আহমাদ শাকের এর তারতীব অনুসারে, আর তার সনদ বিশুদ্ধ। দেখুন, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ১/২৯৭; ইবন হাজার বুলুগুল মারাম গ্রন্থে এটাকে আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর বর্ণনায় ইমাম নাসাঈ (আস-সুনানুল কুবরা, নং ১০৬১৭) নিয়ে এসেছেন বলে ইঙ্গিত করেছেন এবং বলেছেন যে, হাদীসটিকে ইবন হিব্বান (নং ৮৪০) ও হাকেম (১/৫৪১) সহীহ বলেছেন।

(১১ নং আমল):-

ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি এ দো‘আ পড়বে,

“আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু অ আতূবু ইলাইহ্।”

অর্থাৎ আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।

সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে (যাওয়ার পাপ করে) থাকে।’’ (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) আবূ দাউদ ১৫১৭, তিরমিযী ৩৫৭৭, রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)- তাওহীদ পাবলিকেশন নাম্বারঃ ১৮৮৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৮৭৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(১২ নং আমল):- শিরকের ভয়ের দুয়া:

মাকিল ইবনে ইয়াসার (রাঃ) বলেন, আমি আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) এর সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তিনি বলেনঃ হে আবু বাকর! নিশ্চয় শিরক পিপীলিকার পদচারণা থেকেও সন্তর্পণে তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। আবু বাকর (রাঃ) বলেন, কারো আল্লাহর সাথে অপর কিছুকে ইলাহরূপে গণ্য করা ছাড়াও কি শিরক আছে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! শিরক পিপীলিকার পদধ্বনির চেয়েও সূক্ষ্ম। আমি কি তোমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিবো না, তুমি যা বললে শিরকের অল্প ও বেশী সবই দূর হয়ে যাবে? তিনি বলেনঃ তুমি বলো,

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা-‘আ’লামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা-লা-আ’লামু”।

“হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই”। (ইমাম বুখারীর আল-আদাবুল মুফরাদ, নং ৭২১, সহীহ আল জামে ৩/২৩৩; সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল আলবানী, ১/১৯, আহমাদ ৪/৪০৩, নং ১৯৬০৬, ইবনুস সুন্নী)।

কীভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাসবীহ পাঠ করতেন?

ইউসায়রাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেনঃ তোমরা তাকবীর, তাকদীস এবং তাহলীল এগুলো খুব ভালভাবে স্মরণে রাখবে এবং এগুলোকে আঙ্গুলে গুনে রাখবে। কেননা আঙ্গুলগুলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং এগুলোও সেদিন (কিয়ামতের দিন) কথা বলবে। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫০২,  সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৮৬, সহীহুল জামে ৪/২৭১, নং ৪৮৬৫)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

আল্লাহর নিকট দোয়া করলে তিনটি জিনিসের যেকোনো একটি আল্লাহ অবশ্যই দিবেন

আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম দুআ করার সময় কোন গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দুআ না করলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তাকে এ তিনটির একটি দান করেন।

(১) হয়তো তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ দুনিয়ায় দান করেন,

(২) অথবা তা তার পরকালের জন্য জমা রাখেন এবং

(৩) অথবা তার মতো কোন অকল্যাণ বা বিপদাপদকে তার থেকে দূরে করে দেন। সাহাবীগণ বললেন, তবে তো আমরা অনেক বেশি লাভ করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ এর চেয়েও বেশি দেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৫৯, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯১৭০, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৫৫০/৭১০, সহীহ আত্ তারগীব ১৬৩৩, আহমাদ ১১১৩৩, শুআবূল ঈমান ১০৯০)।হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

 (সমাপ্ত)

লেখক ও সংকলকঃ

মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।

আরো অধিক বিষয় জানতে এদের উপর ক্লিক করুনঃ

(ক) সকাল ও বিকেলে পঠিতব্য অধিক ফজিলতপূর্ণদোয়াসমূহ।

(খ) অভাব-অনটন ও দুঃখ কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাওয়ারদোয়া বা আমলসমূহ।

(গ) বিপদ আপদ ও টেনশন বা দুশ্চিন্তা দূর করারদোয়া বা আমলসমূহ।

(ঘ) কুরআন ও সহিহ হাদিস হতে অধিক ফজিলতপূর্ণযিকির ও দোয়াসমূহ।

আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

(ক) “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)।

(খ) “তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)।

 (গ) ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ).....আবু হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৬৯৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৬০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬১৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঘ) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।(সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,  রিয়াদুস  সলেহিন,  হাদিস নং  ১৩৮৮, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২১২)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

লেখক ও সংকলকঃ

মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।

.................................................................................................................

এক সাথে সকল পর্ব দেখতে চাইলে এর উপর ক্লিক করুন

MSHRC

-----------------------------------------------------

Please Share On

No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...