Search This Blog

Sunday, May 19, 2019

কুরআন ও সহিহ হাদিস হতে অধিক ফজিলতপূর্ণ যিকির ও দোয়াসমূহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

কুরআন ও সহিহ হাদিস হতে অধিক ফজিলতপূর্ণ যিকির ও দোয়াসমূহ


দোয়া অর্থ আহবান বা ডাকা, যা ইসলামে একটি বিশুদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া। এই শব্দটি এসেছে একটি আরবি শব্দ থেকে যার বাংলা অর্থ ডাকো বা তলব করো।

আল্লাহ বলেন,

“আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেবো। নিশ্চয় যারা অহঙ্কার বশতঃ আমার ইবাদাত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। (সুরা আল মুমিন ৪০, আয়াত ৬০)।

রাসুল সাঃ বলেছেন:

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর নিকট দু‘আর চেয়ে কোন জিনিসের অধিক মর্যাদা (উত্তম) নেই।  (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৩২, তিরমিযী ৩৩৭০, ইবনু মাজাহ ৩৭২৯, আহমাদ ৮৭৪৮, মু‘জামুল আওসাত ৩৭০৬, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৮০১, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ৩, শু‘আবূল ঈমান ১০৭১, ইবনু হিববান ৮৭০, আল-আদাবুল মুফরাদ ৭১৮, সহীহ আত্ তারগীব ১৬২৯)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

 দুআ দুই প্রকারঃ

(এক) দুআউল ইবাদাহ বা উপাসণামূলক দু'আ। সকল প্রকার ইবাদতকে এ অর্থে দু'আ বলা হয়।

(দুই) দুআউল মাছআলা অর্থাৎ প্রার্থনাকারী নিজের জন্য যা কল্যাণকর তা চাবে এবং যা ক্ষতিকর তা থেকে মুক্তি প্রার্থনা করবে। (বাদায়ে আল-ফাওয়ায়েদ : ইবনুল কায়্যিম)।

যেমন কেউ সালাত আদায় করল। এ সালাতের মধ্যে অনেক প্রার্থনামূলক বাক্য ছিল। এগুলোই দুআউল ইবাদাহ বা উপাসণামূলক প্রার্থনা। আবার সে পরীক্ষা দেবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল হে আল্লাহ! তুমি আমার পরীক্ষা সহজ করে দাও এবং কৃতকার্য করে দাও! এটা হল দুআ আল-মাছআলা বা চাওয়া।

নেক আমল ও দু’আ ব্যতীত ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না

 নেক আমল ও দো‘আর মাধ্যমে মানুষের তাকদীরের পরিবর্তন হয়। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা মিটিয়ে দেন এবং যা ইচ্ছা করেন তা বহাল রাখেন”। (সূরা রা’দ, আয়াত  ৩৯)।

সালমান আল ফারিসী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু‘আ ছাড়া অন্য কিছুই তাকদীদের লিখনকে পরিবর্তন করতে পারে না এবং নেক ‘আমল ছাড়া অন্য কিছু বয়স বাড়াতে পারে না। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৩৩, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২১৩৯,  সুনান ইবনু মাজাহ ৪০২২, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৬১২৮, সহীহাহ্ ১৫৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৬৩৯, সহীহ আল জামি ৭৬৮৭)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

আসুন কুরআন ও সহিহ হাদিস হতে অধিক ফজিলতপূর্ণ দোয়াসমূহ মুখস্থ করে সহিহভাবে আমল করি।

কুরআন হতে অধিক ফজিলতপূর্ণ  যিকির ও দোয়াসমূহ

(দোয়া নং-১):- রাসুল (সাঃ) হিজরতের প্রাক্কালে বলেছিলেনঃ-

“ওয়া কুররব্বি আদখিলনি মুদখলা সিদক্বিওঁ ওয়া আখরিজনি মুখরজা সিদক্বিওঁ ওয়াজআললি মিল্লাদুনকা সুলত্বানান নাসিরা।”  (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)।

অর্থঃ বলুন, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাকে দাখিল করুন সত্যরূপে, বের করুন সত্যরূপে এবং দান করুন আমাকে নিজের নিকট থেকে রাষ্ট্রীয় সাহায্য।’

(দোয়া নং-২):- একদা ক্বাতাদা (রাঃ) আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসুল (সাঃ) কোন দোয়াটি বেশী বেশী পড়তেন। আনাস (রাঃ) বললেন, রাসুল (সাঃ) বেশী বেশী বলতেনঃ-

“আল্ল-হুম্মা আ-তিনা- ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আ-খিরতি হাসানাতাও ওয়াকিনা- ‘আযা-বান না-র”।

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোত্তম কল্যাণ দান করো এবং আগুনের আযাব হতে আমাদের রক্ষা করো। (বাক্বারাহঃ ২০১, সহীহ মুসলিম ২৬৯০, আবু দাউদ ১৫১৯)।

হাদিসঃ

যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ).....আবদুল আযীয ইবনু সুহায়ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কাতাদাহ্ আনাস (রাযিঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দুআ সর্বাধিক পড়তেন? তিনি বললেন, তিনি যে দু’আ দ্বারা সর্বাধিক দু’আ করতেন তাতে বলতেনঃ

“আল্ল-হুম্মা আ-তিনা- ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আ-খিরতি হাসানাতাও ওয়াকিনা- ‘আযা-বান না-র”।

অর্থাৎ- "হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতে কল্যাণ দান কর। আর আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে বঁচিয়ে রাখো।"

রাবী বলেন, আনাস (রাযিঃ) যখনই কোন দু’আ করার সংকল্প করতেন তখন তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ন্যায়) দুআ করতেন। তারপর যখন তিনি কোন ব্যাপারে দু’আ করার সংকল্প করতেন তখন তাতে এ দু’আ পড়তেন। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৩৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৯০, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৮৯, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫১৯, বুখার৬৩৮৯), আহমাদ ১৩৯৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৯৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৬৪৮)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৩):- নবি করিম (সাঃ) কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় তা গ্রহণের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে নবি! আপনি বলুন,

“রব্বি যিদনী ইলমা’।

অর্থঃ- হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (ত্বহাঃ১১৪)।

(দোয়া নং-৪):- আদম আঃ ও তাঁর স্ত্রী হাওয়া তাঁদের ভুলের ক্ষমা চেয়ে বলেছিনে,

“রব্বানা য-লামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কূনান্না মিনাল খ-সিরীন। ”

অর্থঃ “হে আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আমাদের প্রতি করুণা না কর তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।” (সূরা আ‘রাফ- ২৩)।

(দোয়া নং-৫):-  ইবরাহিম আঃ কা‘বা ঘর নির্মানের পর বলেছিলেন,

"রব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস ছামিউল আলিম- রব্বানা ওয়াজ আলনা মুসলিমাইনি লাকা ওয়া মিন জুররি ইয়াতিনা উম্মাতাম মুসলিমাতাল লাকা ওয়া আরিনা মানাসিকানা ওয়াতুব আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত তাওয়াবুর রাহিম।”

 অর্থ: "হে আমাদের প্রভু! আমাদের এ কাজ গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। হে আমাদের প্রভু! আমাদের উভয়কে আপনার একান্ত অনুগত এবং আমাদের বংশধর হতে আপনার এক অনুগত উম্মত করবেন। আমাদেরকে ইবাদতে নিয়ম-পদ্ধতি দেখিয়ে দিন এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হোন। আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু" (সূরা-আল বাকারা : ১২৭ ও ১২৮)।

(দোয়া নং-৬):- পিতা-মাতার জন্য দোয়াসমূহঃ

(ক) আল্লাহ তা‘আলা রাসুল (সাঃ) –কে বলেন, হে নবি! আপনি বলুন,

“রব্বির হামহুমা কামা রব্বায়া-নী সগিরা’।

অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের (পিতা-মাতা) প্রতি রহম করুন, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন পালন করেছেন। (সুরা ইসরা-২৪)।

(খ) “রব্বিগফিরলি' ওয়ালি ওয়া-লিদাইয়া ওয়ালিমান দাখলা বাইতিয়া মু'মিনা, ওয়া লিলমু'মিনীনা ওয়াল মু'মিনা'তি ওয়ালা' তাযিদিজ জ'লিমি'না ইল্লা তাবা র'।

অর্থ:- হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং মুমিন হয়ে আমার ঘরে যারা প্রবেশ করবে এমন সব লোককে এবং মুমিন পুরুষ এবং মহিলাদেরকে ক্ষমা করে দাও। আর যালেমদের জন্যে ধ্বংস ছাড়া অন্য কিছুই বৃদ্ধি করো না।। (সুরা নূহ: ২৮)।

(গ) ইবরাহিম আঃ পিতা মাতা, ছেলে-মেয়ে ও মুমিনদের প্রার্থনায় বলেছিলেন,

“রব্বিজ আলনী মুক্বীমাস সলাতি ওয়া মিন যুররিইয়াতি রব্বানা- ওয়া তাক্বব্বাল  দো’আ-রব্বানাগ ফিরলী ওয়ালি ওয়া লি-দাইয়া ওয়া লিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।”

অর্থ: হে আমার পালনকর্তা! আমাকে সলাত কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্য থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের দোয়া কবুল করুন। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাকে,, আমার পিতা মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যে দিন হিসাব কায়েম হবে। (সুরা ইব্রাহিম-৪০,৪১)।

(দোয়া নং-৭):-  ইবরাহিম আঃ প্রার্থনা করেছিলেন,

“রব্বি হাবলি হুকমাঁও ওয়ালহিক্বনী বিস্সলিহীন ওয়াজ আল লী লিসা-না স্বিদকিন ফীল আ-খিরীন ওয়াজ আলনী মিঁও ওয়ারাছাতি জান্নাতিন নাঈম।”

অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে হিকমত দান করুন এবং সঃকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (হে প্রভু!) আপনি পরকালে আমাকে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং “নাঈম” জান্নাতের উত্তরাধীকারী করুন।” (শু‘আরাঃ৮৩-৮৫)।

(দোয়া নং-৮):- মুসা আঃ ফিরাউনের দরবারে গমনের সময় বলেছিলেন,

“রব্বিশ রহলি' সদরি' ওয়াসসিরলি' আমরি' ওয়াহলুল উকদাতাম মিল লিছানি' ইয়াফক্বাহু ক্বওলি"।

অর্থ:- হে আমার পালনকর্তা! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন এবং আমার কর্ম সহজ করে দিন, আমার জিহ্ববার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। (সুরা ত্বহা- ২৫-২৮)।

(দোয়া নং-৯):-“রব্বি আওঝি’নি আন্ আশকুরা নি’মাতাকা-ল্লাতি আন্ আ’মতা আ’লাইয়্যা ওয়া আ’লা ওয়া-লিদাইয়্যা ওয়া আন আ’মালা স-লিহান্ তারযহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ই’বাদিকাস সলিহিন।”

অর্থ: হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমাকে সামর্থ দা, যেনো আমি তোমার সেই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা মাতাকে দান করেছো এবং যেনো আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করো। (নমল-২০)।

(দোয়া নং-১০):-  আল্লাহ তা‘আলা মুসা আঃ-কে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠের নির্দেশ দিয়েছিলেনঃ-

(ক) “রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়াআনতা খইরুর রহিমীন”।

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক! তুমি ক্ষমা কর ও দয়া কর, আর তুমিইতে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াময়। (মুমিনুন-১১৮)।

(খ) “রব্বি ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলি’।

অর্থঃ- হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার নিজের প্রতি যুলুম করেছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করো। (ক্বাছাছ-১৬)।

(দোয়া নং-১১):- সুলায়মান আঃ বলেছিলেন,

“রব্বিগফিরলী ওয়া হাবলী মুলকাল লা ইয়ামবাগী লি আহাদিম মিম্ বা‘দী ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব।”

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যা আমার পরে কারো জন্য শোভনীয় হবে না। নিশ্চয়ই আপনি বড় দাতা। (ছোয়াদ-৩৫)।

(দোয়া নং-১২):-”রব্বানা-লা-তুঝিগ কুলুবানা-বা’দা ইয হাদাইতানা-ওয়া হাবলানা- মিল্লাদুনকা রাহমাতান, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহাব, রব্বানা- ইন্নাকা জা-মি‘উন না-স, লিইয়াওমিল লা -রইবা ফিহ, ইন্নাল্ল-হা লা-ইউখলিফুল মি-আ-দ।”

অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রদর্শনের পর আপনি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করো না এবং আপনার নিকট থেকে আমাদেরকে অনৃগ্রহ দান করুন। আপনিই সব কিছুর দাতা। হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি মানুষকে একদিন একত্রিত করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার ওয়াদার বরখেলাপ করেন না। (আলে ইমরান-৮-৯)।

(দোয়া নং-১৩):- “রব্বানা-লা-তুআ-খিযনা-ইন নাসিনা-আও আখত্ব‘না, রব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু আলাল্লাযিনা মিন ক্ববলিনা, রব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা-লা-ত্ব ক্বাতালানা বিহ, ওয়া‘ফু আন্না ওয়াগফিরলানা  ওয়ারহামনা আন্তা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বওমিল কা-ফিরিন।”

অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পন করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর করেছ, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করাইও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ সমূহ মোচন করো। তুমি আমাদের ওলী। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করো। (বাকারাহ-২৮৬)।

(দোয়া নং-১৪):-“রব্বানা –আ-মান্না ফাগফিরলানা ওয়ার হামনা ওয়া আন্তা খয়রুর রহিমিন।”

অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করো ও আমাদের প্রতি রহম করো। (মুমিনুন-১০৯)।

(দোয়া নং-১৫):-“রব্বানা–ইন্নানা-আ-মান্না-ফাগফিরলানা–যুনুবানা–ওয়াক্বিনা আযা-বান না-র”।

অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ইমান এনেছি, কাজেই আমাদের গুণাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হতে রক্ষা করো। (আলে ইমরান- ১৬)।

(দোয়া নং-১৬):- “রব্বানা–আতমিম লানা-নুরনা-ওয়াগফিরলানা-ইন্নাকা আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর।”

অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে পূর্ণ আলো দান করুন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চই আপনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (তাহমীম-৮)।

(দোয়া নং-১৭):-“রব্বানা-আ-তিনা-মিল লাদুনকা রহমাতাওঁ ওয়া হাইয়ি’ লানা মিন আমরিনা-রশাদা”।

অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন’। (কাহাফ-১০)।

(দোয়া নং-১৮):- “রব্বি আ’উযুবিকা মিন হামাযা-তিশ শায়া-ত্বীন, ওয়া আ’উযুবিকা রব্বি ইয়াহ যুরুন।”

অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার প্রতিপালক! তাদের উপস্থিতি থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (মুমিনুন-৯৭-৯৮)।

(দোয়া নং-১৯):- “রব্বানা–লিইউক্বীমুছ সলাতা ফাজ‘আল আফয়িদাতাম মিনাননাসি তাহবী ইলাইহিম ওয়ারঝুক্বহুম মিনাছ ছামারা-তি লা’আল্লাহুম ইয়াশকুরুন”।

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! তারা যেনো সলাত কায়েম করে। মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দাও এবং তাদেরকে ফল-ফলাদি দ্বারা রুযী

দান করো। সম্ভবত তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। (ইব্রাহিম-৩৭)।

(দোয়া নং-২০):- “রব্বানা-হাবলানা- মিন আঝওয়া জিনা ওয়া যুররিইয়া-তিনা –কুররতা আ‘য়ুনিউ ওয়াজ’ আলনা-লিল মুত্তাক্বীনা ইমা-মা”।

অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং সন্তানদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদেরকে মুত্তাক্বীদের জন্য আদর্শ স্বরুপ করো। (ফুরক্বান-৭৪)।

(বিঃদ্রঃ কুরআন হতে উল্লেখিত দোয়াগুলো দুই হাত তুলে মুনাজাতে, সালাতের মধ্যে তাশাহুত বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও প্রচলিত মাছুরা নামক দোয়াটি পাঠ করার পর পাঠ করা যাবে। এছাড়া সালাতে সুরা ফাতিহার পর উক্ত কুরআনি দোয়া দিয়ে সালাত আদায় করা যাবে। বরঞ্চ উক্ত কুরআনি দোয়া দিয়ে সালাত আদায় করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। কারন সালাতে বান্দা সরাসরি আল্লাহর সাথে কথা বলেন। আর পুরো সালাতই এক প্রকার দোয়া।)

সহিহ হাদিস হতে অধিক ফজিলতপূর্ণ  যিকির ও দোয়াসমূহ

(দোয়া নং-১):- “আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বি আন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহদাকা লা শারীকা লাকাল মান্না-নু, ইয়া বাদী’আস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদী, ইয়া যালজালা-লি ওয়াল-ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, ইন্নী আস্আলুকাল জান্নাতা ওয়া আ’উযু বিকা মিনান্না-র”।

(বিঃদ্রঃ দোয়াটি সালাতে তাশাহুদ বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাছুরা পাঠ করার পর পাঠ করবেন। এছাড়া দুই হাত তুলে মোনাজাতে সবকিছু বলার পর শেষে উক্ত দোয়াটি পাঠ করবেন। সালাত শেষে সালাম ফিরানোর এবং অন্য সময়েও পাঠ করা যাবে।)

অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাই, কারণ, সকল প্রশংসা আপনার, কেবলমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই, আপনার কোনো শরীক নেই, সীমাহীন অনুগ্রকারী: হে আসমানসমূহ ও যমীনের অভিনব স্রস্টা! হে মহিমাময় ও মহানুভব! হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী-সর্বসত্তার ধারক! আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই”।

হাদিসঃ

আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলেন, সে সময় এক লোক নামায আদায় করে দু'আ করছিল এবং সে তার দু'আয় বলছিলঃ “হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া আর কোন মা'বূদ নেই, তুমি পরম অনুগ্রহকারী, আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, অসীম ক্ষমতাবান ও মহাসম্মানিত।" নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি জানো আল্লাহ তা'আলার নিকট সে কিসের মাধ্যমে দুআ করেছে? সে আল্লাহ তা'আলার নিকটে তার মহান নাম এর মাধ্যমে দু'আ করেছে। যে নামে দুআ করা হলে তিনি তা কবুল করেন এবং ঐ নামের মাধ্যমে প্রার্থনা করা হলে তিনি দান করেন। (সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৫৪৪, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮৫৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)-১৪৯৫, ১৪৯৫, আহমাদ ১১৭৯৫, ১২২০০, ১৩১৫৮, ১৩৩৮৭, রাওদুন নাদীর ১৩৩, আস-সহীহ ১৩৪২, নাসায়ী ১৩০০, ১২৯৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

উক্ত দোয়াটির মধ্যে আল্লাহ তায়ালার মহান তিনটটি নাম আছে যাকে ইসমে আজম বলে। ‘ইসমে আজম’ হলো আল্লাহ তাআলার মহান নাম। ‘ইসমে আজম’ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাওয়া হলে মহান আল্লাহ তাআলা তা পূরণ করেন। এ মহান নামের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করলে, ডাকলে তিনি বান্দার  ডাকে সাড়া দেন।

আল্লাহর নাম নিয়ে দু‘আর ক্ষেত্রে বিশেষ একটি নাম “ইয়া যাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম" । দু‘আর মধ্যে এই নাম বেশি বেশি বলতে রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন।

আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে কঠিন কাজ হাযির হলে তিনি বলতেনঃ “ইয়া যাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম" “হে চিরজীবি, হে চিরস্থায়ী! আমি তোমার রহমতের ওয়াসীলায় সাহায্য প্রার্থনা করি”।

একই সনদসূত্রে আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সবসময় “ইয়া যাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম" পাঠ করাকে অপরিহার্য করে নাও (দু‘আয় বেশি বেশি বলবে)। (সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৫২৪, ৩৫২৫, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৭৬, মুসনাদ আবী ইয়ালা ৬/৪৪৫, তুহফাতুল আহওয়াযী ৯/৩৫৯, সহীহুল জামিয়িস সাগীর ১/২৬৯, নং ১২৫০,আল-কালিমুত তাইয়্যিব (হাঃ ১১৮/৭৬),  সিলসিলাতুস সহীহাহ ৪/৪৯-৫১, সহীহাহ (হাঃ ১৫৩৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২):- মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ফরয সালাতের পরে এ দু‘আ পড়তেনঃ

‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, আল্ল-হুম্মা লা- মা-নি‘আ লিমা- আ‘ত্বয়তা, ওয়ালা- মু‘ত্বিয়া লিমা- মানা‘তা, ওয়ালা- ইয়ানফা‘উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু’’।

(অর্থাৎ আল্লাহ ভিন্ন কোন উপাস্য নেই। তিনি অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই! রাজত্ব একমাত্র তারই এবং সব প্রশংসা একমাত্র তাঁর জন্যে। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করো, কেউ নেই তা ফিরাবার। আর যা তুমি দান করতে বারণ করো, কেউ নেই তা দান করার। ধনবানকে ধন-সম্পদে পারবে না কোন উপকার করতে আপনার আক্রোশ-এর সামনে)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), ৯৬২, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৮৪৪, ১৪৭৭, ২৪০৮, ৫৯৭০, ৬৩৩০, ৬৪৭৩, ৬৬১৫, ৭২৯২, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১২২৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৯৩, আহমাদ ১৮১৬২, আধুনিক প্রকাশনী ৭৯৬ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৮০৪)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৩):- আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামাযের জন্য দণ্ডায়মান হতেন, তখন তাশাহহুদ ও সালাম ফিরার মধ্যখানে শেষ বেলায় অর্থাৎ সালাম ফিরবার আগে) এই দো‘আ পড়তেন,

“আল্ল-হুম্মাগফিরলী মা- ক্বদ্দামতু ওয়ামা- আখখারতু ওয়ামা আসসারতু ওয়ামা আ'লানতু ওয়ামা আসরাফতু ওয়ামা আনতা আ'লামু বিহী মিন্নী আনতাল মুকাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখখিরু লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা"

অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মার্জনা কর, যে অপরাধ আমি পূর্বে করেছি এবং যা পরে করেছি, যা গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি, যা অতিরিক্ত করেছি এবং যা তুমি আমার চাইতে অধিক জান। তুমি আদি, তুমিই অন্ত। তুমি ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই।

(সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), ৩৪২২, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন, ১১২০, ৬৩১৭, ৬৩৮৫, ৭৪৪২, ৭৪৯৯, ৭৩৮৫, সুনান ইবনু মাজাহ, ১৩৫৫, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), ৩৪১৮, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৬৯৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৭১, নাসায়ী ১৬১৯, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৭৭১, আহমাদ ২৮১৩, ২৭০৫, ২৭৪৩, ২৮০৮, ৩৩৫৮,৩৪৫৮; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫০০, দারিমী ১৪৮৬,আধুনিক প্রকাশনী ১০৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১০৫৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ।

(দোয়া নং-৪):- ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে এ দু‘আ শিক্ষা দিতেন যেমন তাদেরকে কুরআনের সূরাহ্ শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, তোমরা বলো,

‘‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল কবরি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-ল ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া- ওয়াল মামা-তি’’।

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই জাহান্নামের শাস্তি হতে। তোমার কাছে আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি হতে। তোমার নিকট আশ্রয় চাই দাজ্জালের পরীক্ষা হতে। তোমার কাছে আশ্রয় চাই জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা হতে।)।

(মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)-৯৪১, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১২২০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৯০, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৪২, মুয়াত্তা মালেক ৪৯৯, নাসায়ী ২০৬৩, ৫৫১২, ৯৮৪, ১৫৪২, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৯৪, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮৪০, আহমাদ ২১৬৯, ২৩৩৮, ২৭০৪, ২৭৭৪, ২৮৩৪, , সহীহ আত্ তারগীব ৩৬৫১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ সালাতের শেষে শেষ তাশাহুদ পড়ে অবসর হয়ে যেন আল্লাহর কাছে চারটি জিনিস হতে পানাহ চায়। (১) জাহান্নামের ‘আযাব। (২) কবরের ‘আযাব। (৩) জীবন ও মৃত্যুর ফিতনাহ্ (ফিতনা)। (৪) মাসীহুদ্ দাজ্জালের অনিষ্ট।

(মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)-৯৪০, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১৩৭৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১২১১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৮৮,  সুনান ইবনু মাজাহ ৯০৯, ৯১০, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৯৮৩, নাসায়ী ১৩১০, ৫৫০৫-৬, ৫৫০৮-১১, ৫৫১৩-১৮, ৫৫২০, আহমাদ ৭১৯৬, ৭৮১০, ৭৯০৪, ৯০৯৩, ৯১৮৩, ২৭৫৯৬, ২৭৮৯০, ৯৮২৪, ২৭২৮০, দারেমী ১৩৮৩,১৩৪৪,  সহীহ আল জামি ৬৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১২০০, ইসলামীক সেন্টার ১২১১ )। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৫):- কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ).....আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাতের বেলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ বলে দু'আ করতেনঃ

"আল্ল-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা নুরুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ালাকাল হামদু আনতা ক্বইয়্যামুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আৱযি ওয়ালাকাল হামদু আনতা রব্বুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামান ফীহিন্না আনতাল হাক্কু ওয়া ওয়াদুকাল হাক্কু ওয়াক্বাওলুকাল হাক্কু ওয়ালিকা-উকা হাক্কুন ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন ওয়ান্না-রু হাক্কুন ওয়াস সা-আতু হাক্কুন, আল্লহুম্মা লাকা আসলামতু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়া আলায়কা তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলায়কা আনাব্তু ওয়াবিকা খাসামতু ওয়া ইলায়কা হা-কামতু ফাগফিরলী মা- ক্বদ্দাম্তু ওয়া আখখারতু ওয়া আস্রারতু ওয়া আলানতু আনতা ইলা-হী লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা”

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমার জন্যই সব প্রশংসা। তুমি আসমান ও জমিনের নূর বা আলো। তোমার জন্যই সব প্রশংসা, তুমিই আসমান ও জমিনের ব্যবস্থাপক। তোমার জন্যই সব প্রশংসা তুমিই আসমান ও জমিনের এবং এ সবের মধ্যে অবস্থিত সবকিছুর প্রতিপালক। তুমিই হাক্ব বা সত্য। তোমার ওয়া’দা সত্য, তোমার সব বাণী সত্য তোমার সাথে সাক্ষাতের বিষয়টি সত্য। জান্নাত সত্য, জাহান্নামও সত্য এবং কিয়ামতও সত্য। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছি, তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, তোমার ওপরই তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করেছি, তোমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করেছি, তোমারই জন্যে অন্যদের সাথে বিবাদ করেছি এবং তোমার কাছেই ফায়সালা চেয়েছি। তাই তুমি আমার আগের ও পরের এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে কৃত সব পাপ ক্ষমা করে দাও। একমাত্র তুমিই আমার ইলাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই।)। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)  ১৬৯৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬৭৮, ইসলামীক সেন্টার ১৬৮৫)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৬):- মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম, আবদ ইবনু হুমায়দ ও আবূ মা'ন আররাক্বাশী (রহঃ)....'আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উন্মুল মু'মিনীন আয়িশাহ (রাযিঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা যখন সালাত আদায় করতেন তখন কীভাবে তার সালাত শুরু করতেন? জবাবে আয়িশাহ (রাযিঃ) বললেনঃ রাতে যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ দু'আটি পড়ে সালাত শুরু করতেনঃ

"আল্ল-হুম্মা রব্বা জিবরীলা ওয়া মীকাঈলা ওয়া ইসরা-ফীলা ফা-তিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি আ-লিমাল গয়বি ওয়াশ্ব শাহা-দাতি আনতা তাহকুমু বায়না ইবা-দিকা ফীমা কা-নূ ফীহি ইয়াখতালিফ নাহদিনী লিমাখ তুলিফা ফীহি মিনাক হাক্কি বি ইযনিকা ইন্নাকা তাহদী মান তাশা-উ ইলা সিরা-ত্বিম মুসতাকীম"

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! জিবরীল, মিকাঈল ও ইসরাফীলের প্রতিপালক, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়সমূহের জ্ঞানের অধিকারী। তোমার বান্দারা যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করে তুমিই সেগুলোর ফায়সালা করবে। সত্য ও ন্যায়ের যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করা হয়েছে সে বিষয়ে তুমি আমাকে পথ দেখাও। তুমিই তো যাকে ইচ্ছা সরল-সহজ পথ দেখিয়ে থাকো।)। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৬৯৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৬৮১, ইসলামীক সেন্টার ১৬৮৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৭):- “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল ফাক্বরি  ওয়াল কিল্লাতি ওয়ায যিল্লাতি  ওয়া আ’উযুবিকা মিন আন আযলিমা আও উযলিমা”।

অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট অভাব, স্বল্পতা ও অপমান হতে আশ্রয় চাই,  আরো আশ্রয় চাই অত্যাচার করা ও অত্যাচার হওয়া থেকে।

হাদিসঃ-

 আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি দরিদ্রতা হতে, আপনার কম দয়া হতে এবং অসম্মানী হতে। আমি আপনার কাছে আরো আশ্রয় চাইছি যুলুম করা অথবা অত্যাচারিত হওয়া হতে।’’ (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৪৪, নাসায়ী ৫৪৭৫), আহমাদ (৩/৩০৫), হাকিম (১/৫৪০)।হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৮):- ‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া যলা‘ইদ্ দায়নি ওয়া গলাবাতির্ রিজাল’’।

অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে; অপারগতা ও অলসতা থেকে; কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে; এবং ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। (সহীহ বুখারি, হা/২৮৯৩/৬৩৬৯, মিশকাত, হা/ ২৪৫৮, তিরমিযি, হা/৩৪৮৪, আবু দাউদ, হা/১৫৪১, আদাবুল মুফরাদ, হা/৬৭২)।

হাদিসঃ-

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া যলা‘ইদ্ দায়নি ওয়া গলাবাতির্ রিজা-ল’’।

(অর্থাৎ-হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা, শোক-তাপ, অক্ষমতা-অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণের বোঝা ও মানুষের জোর-জবরদস্তি হতে আশ্রয় চাই)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৫৮, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৬৯, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৬৯, ৬৭৬৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭০৬, নাসায়ী ৫৪৪৯, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৮৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯১৪১, আহমাদ ১০৫২, মু‘জামুল আওসাত লিত্ব ত্ববারানী ১২৯, সহীহ আল জামি ১২৮৯, আধুনিক প্রকাশনী ৫৯২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৮১৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৯):-“আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আ’ন হারামিক; ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।”

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার হালালের সাহায্যে হারাম থেকে বাঁচান। এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আপনি ব্যতীত অন্যের মুখাপেক্ষি হতে বাঁচান।’

হাদিসঃ-

আলী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, একটি চুক্তিবদ্ধ গোলাম তার নিকটে এসে বলে, আমার চুক্তির অর্থ পরিশোধ করতে আমি অপরাগ হয়ে পড়েছি। আমাকে আপনি সহযোগিতা করুন। তিনি বললেন, আমি তোমাকে কি এমন একটি বাক্য শিখিয়ে দিব না যা আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়েছিলেন? যদি তোমার উপর সীর (সাবীর) পর্বত পরিমাণ ঋণও থাকে তবে আল্লাহ তা'আলা তোমাকে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিবেন। তিনি বলেনঃ তুমি বল, “হে আল্লাহ! তোমার হালালের মাধ্যমে আমাকে তোমার হারাম হতে বিরত রাখ বা দূরে রাখ এবং তোমার দয়ায় তুমি ব্যতীত অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া হতে আমাকে আত্মনির্ভরশীল কর”। (সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৫৬৩, তা’লীকুর রাগীব (২/৪০), আল-কালিমুত তাইয়্যিব ১৪৩/৯৯, মুসতাদরাকে হাকিম, হা/১৯৭৩)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।

(দোয়া নং-১০):-  (সায়্যিদুল ইসতিগফার)

“আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী ওয়া আনা ‘আব্দুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘উযু বিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী। ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা”।

“হে আল্লাহ্! আপনি আমার রব্ব, আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্য মতো আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির উপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আপনি আমাকে আপনার যে নিয়ামত দিয়েছেন তা আমি স্বীকার করছি, আর আমি স্বীকার করছি আমার অপরাধ। অতএব আপনি আমাকে মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করে না।”

হাদিসঃ-

শাদ্দাদ ইবনু আউস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দু‘আ পড়া- ‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নি‘য়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর।’’

যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দু‘আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩০৬, ৬৩২৩, আল-আদাবুল মুফরাদ ৬২১, আধুনিক প্রকাশনী ৫৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭৫৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১১):- “আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ'উযুবিকা মিন জাহদিল বালা-ই, ওয়া দারাকিশ শাক্বা-ই, ওয়া সূইল ক্বাযা-ই, ওয়া শামা-তাতিল আ'দা-ই।“ 

অর্থঃ আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি অক্ষমকারী বিপদের কষ্ট হ'তে , দুভার্গ্যের  আক্রমন হতে , মন্দ ফায়সালা হ'তে এবং শত্রুর হাসি হ'তে।

হাদিসঃ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালা মুসীবতের কঠোরতা, দুর্ভাগ্যে পতিত হওয়া, ভাগ্যের অশুভ পরিণতি এবং দুশমনের আনন্দিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাইলেন। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৪৭, ৬৬১৬, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৭০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭০৭, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৫৭, নাসাঈ- ৫৪৯১, ৫৪৯২, ৭৩০৮, আদাবুল মুফরাদ ৬৬৯, সহীহ আল জামি ২৯৬৮, সহীহাহ্ ১৫৪১, আধুনিক প্রকাশনী ৫৯০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭৯৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১২):- “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন ফিতনাতিন্নারি অআযাবিন্নারি অমিন শার্রিল গিনা ওয়াল ফাক্ব।“

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি জাহান্নামের ফিতনা থেকে, জাহান্নামের আযাব থেকে এবং ধনবত্তা ও দারিদ্রের মন্দ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

হাদিসঃ-

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যগুলো দিয়ে দু‘আ করতেনঃ ‘‘হে আল্লাহ! আমি জাহান্নামের পরীক্ষা, আগুনের আযাব এবং প্রাচুর্য ও দারিদ্রের মধ্যে নিহিত অকল্যাণ হতে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।’’ (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৪৩,   সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৭৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

(দোয়া নং-১৩):- “আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী সাম্‘ঈ আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাসারী। লা ইলা-হা ইল্লা আনতা। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল কুফরি ওয়াল-ফাক্বরি ওয়া আ‘উযু বিকা মিন ‘আযা-বিল ক্বাবরি, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা”।

“হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শরীরে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শ্রবণশক্তিতে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কুফরি ও দারিদ্র্য থেকে। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে। আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই।” (আবূ দাউদ ৪/৩২৪, নং ৫০৯২; আহমাদ ৫/৪২, নং ২০৪৩০; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল্লাইলাহ, নং ২২; ইবনুস সুন্নী, নং ৬৯; বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, নং ৭০১। আর শাইখ আল্লামা ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ ‘তুহফাতুল আখইয়ার’ গ্রন্থের পৃ. ২৬ এ এর সনদকে হাসান বলেছেন)।

(দোয়া নং-১৪):- “আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল- ‘আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাতি। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল-‘আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়াদুনইয়াইয়া, ওয়া আহ্লী ওয়া মা-লী, আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী ওয়া আ-মিন রাও‘আ-তি। আল্লা-হুম্মাহফাযনী মিম্বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফী ওয়া ‘আন ইয়ামীনী ওয়া শিমা-লী ওয়া মিন ফাওকী। ওয়া আ‘ঊযু বি‘আযামাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহ্তী”। 

“হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা এবং নিরাপত্তা চাচ্ছি আমার দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার ও অর্থ-সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন, আমার উদ্বিগ্নতাকে রূপান্তরিত করুন নিরাপত্তায়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হেফাযত করুন আমার সামনের দিক থেকে, আমার পিছনের দিক থেকে, আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে এবং আমার উপরের দিক থেকে। আর আপনার মহত্ত্বের অসিলায় আশ্রয় চাই আমার নীচ থেকে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়া থেকে”।

হাদিসঃ-

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যায় ও সকালে উপনীত হয়ে নিম্নোক্ত দোয়া পড়তেনঃ ‘‘ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আমার দীন, আমার দুনিয়া, আমার পরিবার ও আমার সম্পদের স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমার লজ্জাস্থানকে গোপন রাখো, আমার ভয়কে শান্তিতে পরিণত করো এবং আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে ও আমার উপরের দিক থেকে আমাকে হেফাজত করো। আমি তোমার নিকট আমার নিচের দিক দিয়ে আমাকে ধ্বসিয়ে দেয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি্। (সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮৭১, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৫০৭৪, নাসায়ী ৫৫২৯, ৫৫৩০, তাখরীজুল কালিমুত তায়্যিব ২৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১৫):-  আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বলে দিন, যদি আমি ‘কদর রাত’ পাই, এতে আমি কী দু‘আ করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি বলবে,

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুব্বুন, তুহিব্বুল আফ্ওয়া‘, ফা‘ফু ‘আন্নী’’।

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই ক্ষমাকারী। আর ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও।) (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২০৯১, সুনান ইবনু মাজাহ, ৩৮৫০, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৫১৩, আহমাদ ২৫৩৮৪, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৯৪২, সহীহাহ্ ৩৩৩৭, সহীহ আল জামি ৩৩৯১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১৬):- মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ)....আবদুল্লাহ (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি এ বলে দুআ করতেন,

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল হুদা ওয়াত তুকা ওয়াল “আফা-ফা ওয়াল গিনা”

অর্থাৎ-"হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পথনির্দেশ, আল্লাহভীতি, চারিত্রিক উৎকর্ষতা ও সচ্ছলতার জন্য দুআ করছি।" (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৯৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬৫৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৭০৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১৭):- “আল্ল-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়াল হারামি ওয়া আযাবিল ক্ববরি। আল্ল-হুম্মা আ-তি নাফসী তাকওয়া-হা- ওয়া যাক্কিহা-আন্তা খইরু মান যাক্কা-হা আন্তা ওয়ালিয়্যুহা- ওয়া মাওলাহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন ইলমিন লা- ইয়ানফাউ ওয়া মিন ক্বলবিন লা-ইয়াখশা-উ ওয়া মিন নাফসিন লা-তাশবা’উ ওয়া মিন দা’ ওয়াতিন লা-ইউসতাজা-বু লাহা।”

অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট আশ্যয় চাচ্ছি অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, বার্ধ্যকতা ও ক্বরেরর আযাব হতে। হে আল্লাহ! আমার আত্মাকে সংযম দান করুন, একে পবিত্র করুন, আপনি শ্রেষ্ঠ পবিত্রকারী, আপনি তার অভিভাবক ও প্রভু। হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি এমন ইলম হতে যা উপকার করে না। এমন অন্তর হতে যা ভয় করে না। এমন আত্মা হতে যা তৃপ্তি লাভ করে না এবং এমন দোয়া হতে যা কবুল হয় না।

হাদিসঃ-

যায়দ ইবনু আরক্বম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল ‘আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়াল হারামি ওয়া ‘আযা-বিল কবরি, ‘আল্ল-হুম্মা আ-তি নাফসী তাকওয়া-হা- ওয়াযাক্কিহা- আন্তা খয়রু মিন্ যাক্কা-হা- আন্তা ওয়ালিয়্যুহা- ওয়ামাও লা- হা-, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন্ ‘ইল্মিন লা- ইয়ানফা‘উ ওয়ামিন্ কলবিন লা- ইয়াখশা‘উ ওয়ামিন্ নাফসিন লা- তাশবা‘উ ওয়ামিন্ দা‘ওয়াতিন্ লা- ইউসতাজা-বু লাহা-’’

(অর্থাৎ-হে আল্লাহ! আমি অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, বার্ধক্য ও কবরের ‘আযাব হতে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমার আত্মাকে সংযমী করো ও একে পবিত্র করো। তুমিই শ্রেষ্ঠ পুতঃপবিত্রকারী, তুমি তার অভিভাবক ও রব। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ঐ জ্ঞান লাভ হতে আশ্রয় চাই, যে জ্ঞান (আত্মার) কোন উপকারে আসে না, ঐ অন্তর হতে মুক্তি চাই যে অন্তর তোমার ভয়ে ভীত হয় না। ঐ মন হতে আশ্রয় চাই যে মন তৃপ্তি লাভ করে না এবং ঐ দু‘আ হতে, যে দু‘আ কবূল করা হয় না।) (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৬০,  সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৯৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭২২, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯১২৪, সহীহাহ্ ৪০০৫, সহীহ আল জামি ১২৮৬, সহীহ আত্ তারগীব ১২৩)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১৮):- আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এ দোয়া পড়তেন-

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন যা-ওয়া-লি নি’মাতিকা ওয়া তাহাওঁবুলি আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজা-আতি নিক্বমাতিকা ওয়া জামী’ঈ সাখাতিক।”

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি তোমার নি’আমতের হ্রাসপ্রাপ্তি, তোমার শান্তির বিবর্তন, তোমার শাস্তির হঠাৎ আক্রমণ এবং সমস্ত অসন্তোষ হতে।

হাদিসঃ-

 উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল কারীম আবু যুর’আহ (রহঃ)....আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’আর মধ্যে একটি ছিল এই যে, "আল্ল-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন যাওয়া-লি নি'মাতিকা ওয়াতা হাওউলি আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজা-য়াতি নিকমাতিকা ওয়া জামী’ই সাখাতিকা" অর্থাৎ- "হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই নি’আমাত দূর হয়ে যাওয়া হতে, তোমার দেয়া সুস্থতা পরিবর্তন হয়ে যাওয়া থেকে, তোমার অকস্মাৎ শাস্তি আসা হতে এবং তোমার সকল প্রকার অসন্তুষ্টি থেকে"। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৮৩৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৩৯, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৬১, সুনান আবূ দাঊদ ১৫৪৫, মু‘জামুল আওসাত লিত্ব ত্ববারানী ৩৫৮৮, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৯৪৬, শু‘আবূল ঈমান ৪২২৪, সহীহ আল জামি ১২৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬৯৩, ইসলামিক সেন্টার ৬৭৪৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-১৯):- ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে দু‘আ করতেন,

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা- ‘আমিলতু ওয়ামিন্ শাররি মা-লাম আ‘মাল’’।

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই যা আমি করেছি এবং যা আমি করিনি তার অনিষ্টতা বা অপকারিতা হতে)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৬২, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৮৮-৬৭৯১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭১৬, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৫০, নাসায়ী ৫৫২৭, ইবনু হিববান ১০৩১, সহীহ আল জামি ১২৯৩)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২০):- আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু‘আয়) বলতেনঃ

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুযা-মি, ওয়াল জুনূনি, ওয়ামিন্ সাইয়্যিয়িল আসক্বা-ম’’।

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি শ্বেতরোগ, কুষ্ঠরোগ, উম্মাদনা ও কঠিন রোগসমূহ হতে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৭০,  সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৫৪, নাসায়ী ৫৪৯৩, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯১২৯, আহমাদ ১৩০০৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ১০৯৭, সহীহ আল জামি ১২৮১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২১):- “আল্ল-হুম্মা লা-ত্বয়রা ইল্লা ত্বয়রুকা, ওয়া লা খয়রা ইল্লা খয়রুকা, ওয়া লা ইলা হা গয়রুকা”।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি কিছু ক্ষতি না করলে অশুভ বা কুলক্ষণ বলে কিছু নেই এবং তোমার কল্যাণ ছাড়া কোনো কল্যাণ নেই। তুমি ছাড়া কোনো হক্ব মা’বুদ নেই। (সিলসিলা সহীহাহ, হা/১০৬৫, বায়হাকী, হা/১১৮০)।

(দোয়া নং-২২):- আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি বিছা এক ব্যক্তিকে দংশন করলে ঐ রাতে সে আর ঘুমাতে পারেনি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হলো, অমুক ব্যক্তিকে বিছায় দংশন করায় সে গত রাতে ঘুমাতে পারেনি। তিনি বলেনঃ আহা, সে যদি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলতো,

‘‘আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক’’।

অর্থঃ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালামের উসীলায় তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই, তাহলে বিছার দংশন সকাল পর্যন্ত তার কোন ক্ষতি করতে পারতো না। (সুনান ইবনু মাজাহ ৩৫১৮, ৩৫৪৭,  মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪২২, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৭১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭০৮, আবূ দাউদ ৩৮৯৯, আহমাদ ৭৮৩৮, ৮৬৬৩, ২৭১২২ আত-তালীকুর রাগীব ১/২২৫-২২৬, মুসলিম ২৭০৮, তিরমিযী ৩৪৩৭, মুয়াত্ত্বা মালিক ৩৫৮৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৪০৯, ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫৬৬, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৬০৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০৩২২, ইবনু হিব্বান ২৭০০, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৮০, সহীহাহ্ ৩৯৮০, সহীহ আত্ তারগীব ৩১৩০, সহীহ আল জামি‘ ৮০৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২৩):- ‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা ‘ইলমান না-ফি‘আন ওয়া ‘আমলান মুতাকব্বালান ওয়া রিযকন ত্বইয়্যিবা’’।

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে উপকারী জ্ঞান, কবূলযোগ্য ‘আমল ও হালাল রিযক চাই”।

হাদিসঃ

উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত আদায় করে বলতেন,

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা ‘ইলমান না-ফি‘আন ওয়া ‘আমলান মুতাকব্বালান ওয়া রিযকন ত্বইয়্যিবা’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে উপকারী জ্ঞান, কবূলযোগ্য ‘আমল ও হালাল রিযক চাই)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৯৮, সুনান ইবনু মাজাহ ৯২৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯২৬৫, আহমাদ ২৬৫২১, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ১১৯, শু‘আবূল ঈমান ১৬৪৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২৪):- “হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়াহুয়া রব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম”। (সকাল বিকেল ৭ বার করে)।

“আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি। আর তিনি মহান আরশের রব্ব।”

হাদিসঃ-

আবূ দারদা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সাতবার বলেঃ ‘‘আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমি তাঁর উপর ভরসা করি এবং তিনি মহান আরশের রব’’ আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হবেন যা তাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তার বিরুদ্ধে চাই সে সত্যিকারভাবে অথবা কৃত্রিমভাবে বলুক না কেন।

যে ব্যক্তি দো‘আটি সকালবেলা সাতবার এবং বিকালবেলা সাতবার বলবে তার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল চিন্তাভাবনার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট হবেন। (ইবনুস সুন্নী, নং ৭১, মারফূ‘ সনদে; আবূ দাউদ ৪/৩২১; মাওকূফ সনদে, নং ৫০৮১, কানজুল উম্মাল: ৫০১১)। আর শাইখ শু‘আইব ও আব্দুল কাদের আরনাঊত এর সনদকে সহীহ বলেছেন। দেখুন, যাদুল মা‘আদ ২/৩৭৬)।

(দোয়া নং-২৫):- “বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআ’সমিহি শাইয়্যুন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিসসামাই ওয়া হুয়াস সামিয়ুল আলিম”।  (সকাল বিকেল ৩ বার করে)।

অর্থঃ আল্লাহর নামে (আমি এই দিন বা রাত শুরু করছি)- যার নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কেউ কোন ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। তিনি সব শুনেন ও জানেন।

হাদিসঃ

আবান ইবনু উসমান (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, এবং তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবেঃ

“বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআ’সমিহি শাইয়্যুন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিসসামাই ওয়া হুয়াস সামিয়ুল আলিম”।

‘‘আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।’’ সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না।

আবান (রহঃ) পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে যে লোকটি তার থেকে হাদীস শুনেছিল, তার দিকে তাকাচ্ছিল। তখন আবান তাকে বললেন, তোমার কি হয়েছে? তুমি আমার দিকে তাকাচ্ছো কেন? বিশ্বাস করো, আল্লাহর কসম! আমি উসমান (রাঃ)-এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করিনি আর উসমান (রাঃ)-ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেননি। তবে যেদিন আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছে সেদিন আমি রাগের বশে তা বলতে ভুলে গিয়েছি। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৫০৮৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২৬):- আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ (রহঃ)....নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কোন বান্দার ওপর মুসীবাত আসলে যদি সে বলে,

"ইন্না- লিল্লা-হি ওয়া ইন্না- ইলায়হি র-জাউন, আল্ল-হুম্মা' জুরনী ফী মুসীবাতী ওয়া আখলিফ লী খয়রাম মিনহা ইল্লা- আজারাহুল্ল-হু ফী মুসীবাতিহী ওয়া আখলাফা লাহ্ খয়রাম মিনহা”। (সকাল বিকেল ৩/৭ বার করে)।

(অর্থাৎ-আমরা আল্লাহর জন্যে এবং আমরা তারই কাছে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমাকে এ মুসীবাতের বিনিময় দান কর এবং এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান কর। তবে আল্লাহ তাকে তার মুসীবাতের বিনিময় দান করবেন এবং তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করবেন।)

উম্মু সালানাহ (রাযিঃ) বলেন, এরপর যখন আবূ সালামাহ ইনতিকাল করলেন, আমি ঐরূপ দুআ করলাম যেরূপ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন। অতঃপর মহান আল্লাহ আমাকে তার চেয়েও উত্তম নি'আমাত অর্থাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে স্বামীরূপে দান করলেন। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ২০১২, ২০১১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৯১৮, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯৯৬, ইসলামীক সেন্টার ২০০৩)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

 (দোয়া নং-২৭):-  আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, বিপদের সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন,

‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ‘আযীমুল হালীম, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু রব্বুল ‘আর্শিল ‘আযীম; লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু রব্বুস্ সামা-ওয়া-তি, ওয়া রব্বুল আরযি রব্বুল ‘আরশিল কারীম’’।

(অর্থাৎ- মহান ধৈর্যশীল আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই। মহান ‘আরশের মালিক আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই, যিনি সমগ্র আকাশম-লীর রব, মহান ‘আরশের রব।) (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪১৭, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬৩৪৬, ৬৩৪৫, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৮১৪, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৩০, আহমাদ ২০১২, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১০৭৭২, সহীহ আল জামি‘ ৪৯৪০, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১১৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২৮):- যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ)...আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, আদম সন্তানের কলবসমূহ পরম দয়াময় আল্লাহ তা’আলার দু’আঙ্গুলের মধ্যে এমনভাবে আছে যেন তা একটি কলব। তিনি যেভাবে চান সেভাবেই তা উলট পালট করেন। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“আল্ল-হুম্মা মুসাররাফাল কুলুবি সাররাফ কুলুবানা আলা তা -আতিকা”।

অর্থঃ “কলব সমূহের পরিচালক হে আল্লাহ! আপনি আমাদের কলব সমূহকে তোমার বশ্যতার উপর স্থির রাখুন।” (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৬৪৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৫৪, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৮৯, আহমাদ ৬৫৬৯, সহীহাহ্ ১৬৮৯, সহীহ আল জামি ২১৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫০৯, ইসলামিক সেন্টার ৬৫৬০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-২৯):-  আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ অধিক পাঠ করতেনঃ

“ইয়া মুক্বাল্লিবাল কুলুবি সাব্বিত ক্বালবি আলা দ্বীনিকা”।

অর্থঃ “হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত (দৃঢ়) রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমরা ঈমান এনেছি আপনার উপর এবং আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার উপর। আপনি আমাদের ব্যাপারে কি কোনরকম আশংকা করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কেননা, আল্লাহ তা'আলার আঙ্গুলসমূহের মধ্যকার দুটি আঙ্গুলের মাঝে সমস্ত অন্তরই অবস্থিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন। (সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২১৪০, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ১০২,  সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮৩৪, আদাবুল মুফরাদ, ৬৮৩)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৩০):-  শুতায়র ইবনু শাকাল ইবনু হুমায়দ (রহঃ) তাঁর পিতা শাকাল (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি একদিন বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমাকে এমন একটি দু‘আ শিখিয়ে দিন, যা দিয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে পারি। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, পড়-

‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন্ শাররি সাম্‘ঈ, ওয়ামিন্ শাররি বাসারী, ওয়া শাররি লিসা-নী ওয়া শাররি কলবী ওয়া শাররি মানিয়্যি’’।

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই- আমার কানের [মন্দ শোনার] অনিষ্টতা, চোখের [দেখার] অনিষ্টতা, আমার মুখের [বলার] অনিষ্টতা, আমার কলবের [অন্তরের চিন্তা-ভাবনার] অনিষ্টতা ও বীর্যের [যিনা-ব্যভিচারের] অনিষ্টতা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য।)। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৪৭২,  সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ১৫৫১, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৩৪৯২, নাসায়ী ৫৪৫৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৪৫, আহমাদ ১৫৫৪১, সহীহ আল জামি ১২৯২, ৪৩৯৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(দোয়া নং-৩১):- “আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা- ‘আ’লামু  ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা-লা-আ’লামু”।

“হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই”।

হাদিসঃ

মাকিল ইবনে ইয়াসার (রাঃ) বলেন, আমি আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) এর সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তিনি বলেনঃ হে আবু বাকর! নিশ্চয় শিরক পিপীলিকার পদচারণা থেকেও সন্তর্পণে তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। আবু বাকর (রাঃ) বলেন, কারো আল্লাহর সাথে অপর কিছুকে ইলাহরূপে গণ্য করা ছাড়াও কি শিরক আছে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! শিরক পিপীলিকার পদধ্বনির চেয়েও সূক্ষ্ম। আমি কি তোমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিবো না, তুমি যা বললে শিরকের অল্প ও বেশী সবই দূর হয়ে যাবে? তিনি বলেনঃ তুমি বলো,

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা-‘আ’লামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা-লা-আ’লামু”।

“হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই”। (ইমাম বুখারীর আল-আদাবুল মুফরাদ, নং ৭২১, সহীহ আল জামে ৩/২৩৩; সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল আলবানী, ১/১৯, আহমাদ ৪/৪০৩, নং ১৯৬০৬, ইবনুস সুন্নী)।

(বিঃদ্রঃ এখানে উল্লেখিত দোয়াগুলো সালাতের মধ্যে তাশাহুদ বৈঠকে, সালাতের বাহিরে সকাল বিকেল বা যেকোনো সময় পাঠ করা যাবে)।

 (সমাপ্ত)

লেখক ও সংকলকঃ

মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।

আরো অধিক বিষয় জানতে এদের উপর ক্লিক করুনঃ

(ক) সকাল ও বিকেলে পঠিতব্য অধিক ফজিলতপূর্ণ দোয়াসমূহ।

(খ) অভাব-অনটন ও দুঃখ কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার দোয়া বা আমলসমূহ।

(গ) বিপদ আপদ ও টেনশন বা দুশ্চিন্তা দূর করার দোয়া বা আমলসমূহ।

আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

(ক) “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)।

(খ) “তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)।

 (গ) ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ).....আবু হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না। (সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৬৯৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৬০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬১৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

(ঘ) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,  রিয়াদুস  সলেহিন,  হাদিস নং  ১৩৮৮, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২১২)।  হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।

লেখক ও সংকলকঃ

মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।

.................................................................................................................

এক সাথে সকল পর্ব দেখতে চাইলে এর উপর ক্লিক করুন

MSHRC

-----------------------------------------------------

Please Share On

ঈমান বিষয়ক ৬৯টি সহিহ হাদিস

  বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ঈমান বিষয়ক ৬৯টি সহিহ হাদিস মূল গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) (১) উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্...