Search This Blog

Friday, January 31, 2020

বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২০ (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়)-সুনানে' আত-তিরমিজি-১১২টি হাদিস


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২০
(কলহ ও বিপর্যয়  অধ্যায়)
হাদিস গ্রন্থ-সুনানে' আত-তিরমিজি-হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী
(২১৫৭- ২২৬৮টি মোট  ১১২টি হাদিস)
 (সুনানে' আত-তিরমিজি-সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত)
 (সুনানে' আত-তিরমিজি--হুবগু প্রকাশিত)
সুনানে' আত-তিরমিজি
৩১
কলহ ও বিপর্যয়
                  ২১৫৮-২২৬৯
১. অনুচ্ছেদঃ
তিনটি কারণের কোন একটি ব্যতীত কোন মুসলমানের রক্তপাত বৈধ নয়
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং- ২১৫৮
PMMRC হাদিস নং-২১৫৭
আবূ উমামা ইবনু সাহ্‌ল ইবনু হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উসমান (রাঃ)বিদ্রোহীদের দ্বারা বাড়ীতে অবরুদ্ধ থাকাকালে (বিদ্রোহীদের) বলেন, আমি আল্লাহর শপথ করে তোমাদেরকে বলছি: তোমরা কি জান যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তিনটি অপরাধের কোন একটি ব্যতীত মুসলমান ব্যক্তিকে খুন করা হালাল নয়? বিয়ে করার পর যিনা করা, ইসলাম ক্ববূল করার পর ধর্মত্যাগী হওয়া এবং কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে খুন করা। এগুলোর যে কোন একটি অপরাধের কারণে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা যায়”। আল্লাহর শপথ! আমি জাহিলী আমলেও যিনা করিনি এবং ইসলাম ক্ববূলের পরেও নয়। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যেদিন আনুগত্যের শপথ (বাই’আত) গ্রহণ করেছি সেদিন হতে ধর্মত্যাগীও হইনি। আর এরূপ কোন প্রাণও আমি হত্যা করিনি যার হত্যা আল্লাহ্ তা’আলা অবৈধ করেছেন। আমাকে কি কারণে তোমরা হত্যা করবে?
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫৩৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ, আইশা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ হতে হাম্মাদ ইবনু সালামা মারফুরূপে বর্ণনা করেছেন। আর এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ হতে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-কাত্তানসহ একাধিক বর্ণনাকারী মাওকুফভাবে বর্ণনা করেছেন, মারফুভাবে নয়। উসমান (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একাধিক সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২. অনুচ্ছেদঃ
পরস্পরের জীবন ও সম্পদে হস্তক্ষেপ করা হারাম
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৫৯
PMMRC হাদিস নং-২১৫৮
সুলাইমান ইবনু আমর (রহঃ) হতে তার বাবা আমর (রাঃ)এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বিদায় হাজ্জে জনগণের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি: এটা কোন দিন? জনগণ বলল, বড় হাজ্জের দিন। তিনি বললেনঃ আজকের এ দিন ও তোমাদের এ শহর যেমন হারাম (মহাপবিত্র) অনুরুপভাবে তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের সম্ভ্রম পরস্পরের জন্য হারাম। সাবধান! অপরাধী তার অপরাধের জন্য নিজেই দায়ী। সাবধান! সন্তানের প্রতি জনকের অপরাধ এবং জনকের প্রতি সন্তানের অপরাধ বর্তায় না। জেনে রাখো, শাইতানের কোন ইবাদাত তোমাদের এ নগরে কখনো হবে না, সে এ ক্ষেত্রে নিরাশ হয়ে গেছে। তবে তোমরা যে সকল কাজকে তুচ্ছ মনে কর অতি শিঘ্রই সে সকল কাজে তার অনুসরণ করা হবে এবং সে তাতে সন্তুষ্ট হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩০৫৫)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ বাকর (রাঃ), ইবনু আব্বাস (রাঃ), জাবির (রাঃ) ও হিযইয়াম ইবনু আমর আস-সা’দী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। যাইদাও একইরকম হাদীস শাবীব ইবনু গারকাদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র শাবীব ইবনু গারকাদার সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩. অনুচ্ছেদঃ
এক মুসলমানকে অপর মুসলমানের ভীতি প্রদর্শন করা বৈধ নয়
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬০
PMMRC হাদিস নং-২১৫৯
সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) হতে তার বাবার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের লাঠিতে ঠাট্টাস্বরূপ বা প্রকৃতই যেন হাত না দেয়। যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের লাঠি নিয়ে যায় তাহলে সে যেন তাকে তা ফেরত দেয়।
সহীহ্, লিগাইরিহি, সহীহাহ (৯২১)।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার, সুলাইমান ইবনু সুরাদ, জা’দাহ ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ বিষয়ে আমাদের ইবনু আবী যিবের বর্ণনা ব্যতীত আর কিছুই জানা নেই। সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহচার্য্য পেয়েছেন। তিনি নাবালেগ থাকাকালীন সময়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হতে অনেক হাদীস শুনেছেন। সাইব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যুকালে সাত বছরের বালক ছিলেন। তার বাবা ইয়াযীদ ইবনুস সাইব (রাঃ) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্যতম সাহাবী। তিনি কয়েকটি হাদীস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি ছিলেন নামিরের বোনের ছেলে।
হাদিসের মানঃ সহিহ লিগাইরিহি
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬১
PMMRC হাদিস নং-২১৬০
সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াযীদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে বিদায় হাজ্জ পালন করেন, আমি সে সময়ে সাত বছরের বালক ছিলাম। আলী ইবনুল মাদীনী ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-কাত্তান (রহঃ)-এর সূত্রে বলেন, হাদীস শাস্ত্রে মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ একজন বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। সাইব ইবনু ইয়াযীদ তার নানা ছিলেন। মুহাম্মদ ইঊসুফ বলতেন সাইব ইবনু ইয়াযীদ আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং তিনি আমার নানা হন।
সনদ হাসান, মাওকুফ।
হাদিসের মানঃ হাসান মাওকুফ
৪. অনুচ্ছেদঃ
কোন ব্যক্তির তলোয়ার দ্বারা মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ইশারা করা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬২
PMMRC হাদিস নং-২১৬১
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে তার ভাইয়ের দিকে লৌহ (তলোয়ার) দ্বারা ইশারা করে, ফেরেশতাগণ তাকে অভিসম্পাত করেন।
সহীহ্, গাইয়াতুল মারাম (৪৪৬), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ বাকরা, আইশা ও জাবির (রাঃ)হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং এ সূত্রে গারীব। খালিদ আল-হাযযার কারণে এতে গারীবী এসেছে। একইরকম হাদীস আইয়্যুব মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তবে তা মারফুভাবে নয়। আর সেই হাদিসে “ওয়াইন কানা আখাহু লিআবীহি ওয়া উম্মিহি” (যদিও সে তার সহোদর ভাই হয়) কথাটুকুও আছে। এ বর্ণনাটি কুতাইবা-হাম্মাদ ইবনু যাইদ এর বরাতে আইয়্যুব (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫. অনুচ্ছেদঃ
কোষমুক্ত অবস্থায় তলোয়ার আদান-প্রদান নিষেধ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৩
PMMRC হাদিস নং-২১৬২
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোষমুক্ত অবস্থায় তলোয়ার আদান-প্রদান করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন।
সহীহ্, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩৫২৭)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ বাকর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং হাম্মাদ ইবনু সালামার বর্ণনা হিসেবে গারীব। আবুয যুবাইর-জাবির হতে, তিনি বান্নাতুল জুহানী (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে ইবনু লাহীআ (রহঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আমার মতে হাম্মাদ ইবনু সালামা হতে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬. অনুচ্ছেদঃ
যে লোক ফজরের নামায আদায় করে সে আল্লাহ্ তা’আলার হিফাযাতে থাকে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৪
PMMRC হাদিস নং-২১৬৩
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফজরের নামায যে লোক আদায় করে, সে আল্লাহ্ তা’আলার হিফাযতে থাকে। সুতরাং আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে যেন তাঁর দায়িত্ব প্রসঙ্গে অভিযুক্ত না করেন।
সহীহ্, সহীহুত তারগীব (৪৬১), তা’লীকুর রাগীব (১/১৪১, ১৫৫৫, ১৬৩)
আবূ ঈসা বলেন, জুনদাব ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং এ সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭. অনুচ্ছেদঃ
সংঘবদ্ধ হয়ে থাকার প্রয়োজনীয়তা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৫
PMMRC হাদিস নং-২১৬৪
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘জাবিয়া’ (সিরিয়ার অন্তর্গত) নামক জায়গায় উমার (রাঃ) আমাদের সামনে খুতবাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে বলেনঃ হে উপস্থিত জনতা! যেভাবে আমাদের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়াতেন, সেভাবে তোমাদের মাঝে আমিও দাঁড়িয়েছি। তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার সাহাবীদের ব্যাপারে আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি (তাদের জমানা শ্রেষ্ঠ জমানা), তারপর তাদের পরবর্তী জমানা, তারপর তাদের পরবর্তী জমানা, তারপর মিথ্যাচারের বিস্তার ঘটবে। এমনকি কাউকে শপথ করতে না বলা হলেও সে শপথ করবে, আর সাক্ষ্য প্রদান করতে না বলা হলেও সাক্ষ্য প্রদান করবে। সাবধান! কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত হলে সেখানে অবশ্যই তৃতীয়জন হিসাবে শাইতান অবস্থান করে (এবং পাপাচারে প্ররোচনা দেয়)। তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস কর। বিচ্ছিন্নতা হতে সাবধান থেকো। কেননা, শাইতান বিচ্ছিন্নজনের সাথে থাকে এবং সে দুজন হতে অনেক দুরে অবস্থান করে। যে লোক জান্নাতের মধ্যে সবচাইতে উত্তম জায়াগার ইচ্ছা পোষণ করে সে যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকে (মুসলিম সমাজে)। যার সৎ আমল তাকে আনন্দিত করে এবং বদ্‌ আমল কষ্ট দেয় সেই হলো প্রকৃত ঈমানদার।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৬৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু সুকার সূত্রে ইবনুল মুবারাকও বর্ণনা করেছেন। একাধিক সূত্রে উমার (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৬
PMMRC হাদিস নং-২১৬৫
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জামা’আতের উপর আল্লাহ্ তা’আলার (রাহমাতের) হাত প্রসারিত।
সহীহ্, তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ (৬১), যিলালুল জান্নাত (১-৮১), মিশকাত (১৭৩), তাহকীক বিদায়াতুল সূল (৭০/১৩৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনু আব্বাস(রাঃ) এর সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৭
PMMRC হাদিস নং-২১৬৬
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা আমার উম্মাতকে অথবা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র উম্মাতকে কখনোও গোমরাহীর উপর সমবেত করবেন না। আর জামা’আতের উপর আল্লাহ্ তা’আলার হাত (সাহায্য) প্রসারিত। যে লোক (মুসলিম সমাজ হতে) আলাদা হয়ে গেছে, সে বিচ্ছিন্নভাবেই জাহান্নামে যাবে।
হাদিসে বর্ণিত “মান শাযযা শাযযা ফিননারী” অংশটুকু ব্যতীত হাদীসটি সহীহ্। মিশকাত(১৭৩), আয্ যিলাল (৮০)।
আবূ ঈসা বলেন, উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীসটি গারীব। সুলাইমান আল-মাদানী বলতে আমার মতে সুলাইমান ইবনু সুফিয়ানকে বুঝায়। আবূ দাউদ আত-তায়ালিসী, আবূ আমির আল-আল আক্বাদী প্রমুখ বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা আরো বলেন, হাদীস বিশারদগণের মতে ‘আল-জামা’আত’ বলতে ফিকহ ও হাদীসসহ অন্যান্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধারক বিশেষজ্ঞ আলিমগনের জামা’আতকে বুঝায় (জনগনকে তাদের সাথে সংঘবদ্ধ থাকতে হবে )। আমি আল-জারুদ ইবনু মুআযকে বলতে শুনেছি, আমি আলী ইবনুল হাসানকে বলতে শুনেছি, আমি আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাকের নিকট জামা’আত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করি। তিনি বলেন, আবূ বকর ও উমার (রাঃ) এর দলকে বুঝায়। তাকে বলা হলো, তারা তো মারা গেছেন। তিনি বলেন, অমুক এবং অমুক। তাকে বলা হলো, অমুক ও অমুকও তো মারা গেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক বলেন, আবূ হামযা আস-সুককারী হলেন, জামা’আত (কেন্দ্রবিন্দু)। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হামজার নাম মুহাম্মাদ, পিতা মাইমূন। তিনি ছিলেন, একজন সৎকর্মপরায়ণ বুযুর্গ। আবূ হামযা আমাদের নিকট জীবিত থাকাকালে ইবনুল মুবারক একথা বলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮. অনুচ্ছেদঃ
অন্যায় কাজ প্রতিরোধ না করা হলে আযাব অবতীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৮
PMMRC হাদিস নং-২১৬৭
আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে লোকসকল! তোমরা তো অবশ্যই এই আয়াত তিলাওয়াত করে থাক: “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের নিজেদেরই কর্তব্য তোমাদেরকে সংশোধন করা। যদি তোমরা সৎপথে থাক তাহলে যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তারা তোমাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না” (সুরা: মাইদা -১০৫)। অথচ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছিঃ মানুষ যদি কোন অত্যাচারীকে অত্যাচারে লিপ্ত দেখেও তার দুহাত চেপে ধরে তাকে প্রতিহত না করে তাহলে আল্লাহ্ তা’আলা অতি শীঘ্রই তাদের সকলকে তাঁর ব্যাপক শাস্তিতে নিক্ষিপ্ত করবেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ(৪০০৫)।
উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মুহাম্মদ ইবনু বাশশার-ইয়াযীদ ইবনু হারুন হতে, তিনি ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আইশা, উম্মু সালামা, নু’মান ইবনু বাশীর, আব্দুল্লাহ ইবনু উমার ও হুযাইফা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহীহ্। ইসমাঈলের সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী ইয়াযীদ হতে বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণনা করেছেন। এটি ইসমাঈল হতে কেউ মারফু হিসাবে আবার কেউ মাওকুফ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯. অনুচ্ছেদঃ
সৎকাজের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৬৯
PMMRC হাদিস নং-২১৬৮
হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই তোমরা সৎকাজের জন্য আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। তা না হলে আল্লাহ্ তা’আলা শীঘ্রঈ তোমাদের উপর তাঁর শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তোমরা তখন তাঁর নিকট দু’আ করলেও তিনি তোমাদের সেই দু’আ গ্রহন করবেন না।
সহীহ্, সহীহাহ (২৮৬৮), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় হাদীস আলী ইবনু হুজর-ইসমাঈল ইবনু জাফর হতে, তিনি আমর ইবনু আবূ আমর (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০. অনুচ্ছেদঃ
একটি স্বৈরাচারী সামরিক বাহিনী ধ্বসে যাবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭০
PMMRC হাদিস নং-২১৬৯
হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যতক্ষন না তোমরা তোমাদের ইমামকে হত্যা করবে এবং পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হবে এবং নিকৃষ্টতম ব্যক্তিরা তোমাদের হর্তাকর্তা হবে, ততক্ষন কিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪০৪৩)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমর ইবনু আবূ আমরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭১
PMMRC হাদিস নং-২১৭০
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোনো একদিন একটি সামরিক বাহিনী প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলোচনা করলেন, যারা ভূমিতে (জীবন্ত) ধ্বসে যাবে। উম্মু সালাম (রাঃ)বলেন, তাদের মধ্যে কিছু লোককে হয়তো জবরদস্তিমূলকভাবে ভর্তি করা হয়ে থাকবে। তিনি বললেনঃ তাদের নিয়্যাত অনুসারে তাদেরকে পুনরুত্থান করা হবে।
সহীহ্, তা’লীক আলা ইবনু মা-জাহ, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উপরক্ত সূত্রে গারীব। নাফি ইবনু জুবাইর হতে আইশা (রাঃ)এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেও এ হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১. অনুচ্ছেদঃ
হাতের শক্তি অথবা ভাষা অথবা অন্তর দ্বারা হলেও অন্যায় প্রতিহত করতে হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭২
PMMRC হাদিস নং-২১৭১
তারিক ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মারওয়ান ঈদের নামাজের পূর্বে সর্বপ্রথম খুতবাহর প্রচলন করেন। তখন কোন একজন লোক এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মারওয়ানকে বলেন, আপনি তো সুন্নাত (বিধান) পরিপন্থী কাজ করলেন। মারওয়ান বলল, হে মিয়া! ঐ পন্থা এখানে বাতিল হয়ে আছে। আবূ সাঈদ (রাঃ) পরবর্তীতে বলেন, এ প্রতিবাদকারী তার দায়িত্ব পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি: যদি তোমাদের মধ্যে কোন লোক কোন অন্যায় সংঘটিত হতে দেখে তাহলে সে যেন তার হাত দ্বারা (ক্ষমতা প্রয়োগে) তা প্রতিহত করে। যদি এই যোগ্যতা তার না থাকে সে যেন তার মুখ দ্বারা তা প্রতিহত করে। যদি এই যোগ্যতাও তার না থাকে তাহলে, সে যেন তার অন্তর দ্বারা তা প্রতিহত করে (অন্যায়কে ঘৃনা করে)। আর এটা হলো দুর্বলতম ঈমান।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১২৭৫), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১২. অনুচ্ছেদঃ
একই বিষয় প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৩
PMMRC হাদিস নং-২১৭২
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যারা আল্লাহ্ তা’আলার বিধানকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে এবং যারা অবহেলা করে তাদের উদাহরণ হলো সমুদ্রগামী একটি জাহাজের যাত্রীদের অনূরূপ, যারা লটারীর মাধ্যমে এর দুই তলায় আসন নির্ধারণ করল। একদল উপর তলায় অন্যদল নীচের তলায়। নীচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে উপর তলায় উঠত। ফলে উপরের লোকেদের ঐখানে পানি পড়ত। উপর তলার লোকেরা বলল, আমাদের এখানে পানি ফেলে তোমরা আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছ। সুতরাং আমরা তোমাদেরকে উপরে উঠতে দিব না। নীচের তলার লোকেরা বলল, তাহলে জাহাজের তলা ছিদ্র করে আমরা পানি সংগ্রহ করব। এরকম পরিস্থিতিতে উপরের তলার লোকেরা যদি নীচের তলার লোকদের হাত জাপটে ধরে তাদেরকে ছিদ্র করা হতে বিরত রাখতে পারে তাহলে সকলেই বেঁচে যাবে। কিন্তু তারা যদি এদেরকে এ কাজ করতে ছেড়ে দেয় (প্রতিরোধ না করে) তাহলে সকলেই ডুবে মরবে।
সহীহ্, সহীহাহ (৬৯), তা’লীকুর রাগীব(২/১৬৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৩. অনুচ্ছেদঃ
স্বৈরাচারী শাসকের সামনে হক্ব কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৪
PMMRC হাদিস নং-২১৭৩
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সবচেয়ে উত্তম জিহাদ হচ্ছে স্বৈরাচারী শাসকের সামনে ন্যায্য কথা বলা।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৪০১০)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ উমামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৪. অনুচ্ছেদঃ
উম্মাতের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর তিনটি দু’আ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৫
PMMRC হাদিস নং-২১৭৪
আব্দুল্লাহ ইবনু খাব্বাব ইবনুল আরাত (রাঃ) হতে তার বাবার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা খুব দীর্ঘায়িত করে নামায আদায় করেন। সাহাবিগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আপনি তো কখনো এভাবে নামায আদায় করেননি! তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এ নামায ছিলো অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও ভীতিপূর্ণ। আমি এতে তিনটি বিষয়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আবেদন করেছি। তিনি আমাকে দুটি দিয়েছেন এবং একটি দেননি। আমি তাঁর নিকট আবেদন করেছি, তিনি আমার উম্মাতকে যেন দুর্ভিক্ষে নিক্ষেপ করে ধ্বংস না করে দেন। আমার এ দু’আ তিনি ক্ববুল করেছেন। তারপর আমি আবেদন করেছি যে, তিনি বিজাতীয় শত্রুদেরকে যেন তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না দেন। আমার এ দু’আও তিনি ক্ববুল করেছেন। আমি আরো আবেদন জানিয়েছি যে, তারা যেন পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহের আস্বাদ না নেয়। আমার এ দু’আ তিনি ক্ববুল করেননি।
সহীহ্, সিফাতুস সালাত।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। সা’দ ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৬
PMMRC হাদিস নং-২১৭৫
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার জন্য দুনিয়াকে আল্লাহ্ তা’আলা সংকুচিত করেন। ফলে আমি এর পূর্ব-পশ্চিম সকল দিক দর্শন করি। আমার জন্য দুনিয়ার যেটুকু পরিমাণ সংকুচিত করা হয়েছে, আমার উম্মতের রাজত্ব শীঘ্রই ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করবে। আর আমাকে লাল-সাদা (সোনা-রুপা) দুটি খনিজ ভান্ডারই প্রদান করা হয়েছে। অধিকন্তু আমি আমার উম্মতের জন্য আমার প্রভুর নিকট আবেদন করেছি যে, তিনি যেন তাদেরকে মারাত্মক দুর্ভিক্ষে ফেলে ধ্বংস না করে দেন এবং তাদের ব্যতীত বিজাতি দুশমনদেরকে যেন তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না দেন যাতে তারা তাদেরকে সমূলে ধ্বংস না করার সূযোগ পেতে পারে। আমার প্রভু বলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি কোন ফায়সালা করলে তা কোন ক্রমেই পরিবর্তিত হওয়ার নয়। আমি তোমার উম্মাতের জন্য ক্ববুল করলাম যে, প্রচন্ড দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে তাদের ধ্বংস করব না, তাদের নিজেদের ব্যতীত অন্য কোন দুশমনদেরকে তাদের উপর আধিপত্যশালী করব না যাতে তারা তোমার উম্মাতকে বিনাশ করতে সূযোগ না পায়, এমনকি (দুনিয়ার) সকল অঞ্চল হতে তারা একজোট হয়ে এলেও। তবে তারা পরস্পর পরস্পরকে ধ্বংস করবে এবং কতক কতককে বন্দী করবে।

সহীহ্, ইবনু মা-জাহ(৩৯৫২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৫. অনুচ্ছেদঃ
ফিতনায় পতিত ব্যক্তি প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৭
PMMRC হাদিস নং-২১৭৬
উম্মু মালিক আল-বাহ্যিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন একটি ফিতনার উল্লেখ করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা খুব নিকটবর্তী। বর্ণনাকারী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এ ফিতনা চলাকালে সর্বোত্তম ব্যক্তি কে হবে? তিনি বললেন, যে লোক তার পশুপাল নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, পশুপালের হ্ক্ব (যাকাত) প্রদান করবে এবং তাঁর প্রভুর ইবাদাত করবে। আর যে লোক তার ঘোড়ার মাথা ধরে থাকবে এবং শত্রুদের ভীতি প্রদর্শন করবে এবং তারাও তাকে ভয় দেখাবে।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৬৯৮), তা’লীকুর রাগীব (২/১৫৩)।
আবূ ঈসা বলেন, উম্মু মুবাশশির, আবূ সাঈদ ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। এ হাদীসটি তাউস-উম্মু মালিক আল-বাহযিয়া (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে লাইস ইবনু আবূ সুলাইমও বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৬. অনুচ্ছেদঃ
জিহ্‌বা হবে তরবারির চাইতেও মারাত্মক
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৮
PMMRC হাদিস নং-২১৭৭
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন এক ফিতনার সৃষ্টি হবে, যা পুরো আরবকে গ্রাস করবে। এতে নিহত ব্যক্তিরা হবে জাহান্নামী। তখন জিহ্‌বা হবে তরবারির চাইতেও মারাত্মক।

যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৯৬৭),
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে বলতে শুনেছি, এ হাদীস ব্যতীত যিয়াদ ইবনু ‘সীমীন কোশের’ বর্ণিত আরো হাদীস আছে বলে আমাদের জানা নেই। হাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ) লাইস হতে মারফূরূপে এবং হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রহঃ) লাইস হতে মাওকূফ হিসেবে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
১৭. অনুচ্ছেদঃ
আমানতদারি থাকবে না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৭৯
PMMRC হাদিস নং-২১৭৮
হুযাইফা ইবনুল ইয়ামা-ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুটি হাদীস বর্ণনা করেন। আমি এদুটির মধ্যে একটিকে প্রকাশিত হতে দেখেছি এবং অপরটির অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেনঃ নিশ্চয়ই মানুষের হৃদয়মুলে আমানাত অবতীর্ণ হয়। তারপর কুরআন অবতীর্ণ হয়। সুতরাং তারা কোরআনের শিক্ষা অর্জন করে এবং সুন্নাহ (হাদীস) সমন্ধেও শিক্ষা অর্জন করে। তারপর আমানাত তুলে নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ ঘুমিয়ে যাবে এবং এই অবস্থায় তার হৃদয় হতে আমানাত তুলে নেয়া হবে। আর এর চিহ্নটা হবে কালো বিন্দুর মতো। তারপর সে নিদ্রামগ্ন হবে এবং আমানাত তুলে নেয়ে হবে। এতে ফোস্কার ন্যায় চিহ্ন পড়বে, যেমন জ্বলন্ত অঙ্গার তোমার পায়ে রাখা হলে ফোস্কা পড়ে। তুমি তা স্ফীত অবস্থায় দেখতে পাও কিন্তু তার ভিতরে কিছুই নেই। তারপর তিনি তাঁর পায়ে একটি শিলাখণ্ড রেখে দেখান। তিনি আরো বলেন, মানুষেরা ব্যবসা-বানিজ্য ও কেনা-বেচা করবে কিন্তু কেউই আমানাত রক্ষা করবে না। এমনকি বলা হবে অমুক গোত্রে একজন বিশ্বস্ত ও আমানাতদার লোক আছে। এরকম পরিস্থিতি দাঁড়াবে যে, কারো প্রসঙ্গে বলা হবে, সে কত বড় জ্ঞানী, সে কত হুঁশিয়ার এবং সে কত সাহসী। অথচ তার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ইমানও থাকবেনা। হুযাইফা (রাঃ)বলেন, আমার উপর দিয়ে এমন একটি সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন আমি তোমাদের কারো সাথে বেচা-কেনার চিন্তা করতাম না। কেননা, সে ব্যক্তি মুসলমান হতে তার দ্বীনদারিই তাকে আমার প্রাপ্য ফিরত দিতে বাধ্য করত। আর সে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান হলে তার শাসকই তাকে আমার প্রাপ্য আদায় করে দিত। কিন্তু এখন অমুক অমুক লোক ব্যতীত তোমাদের কারো সাথে কেনা-বেচা ও ব্যবসা-বাণিজ্য করি না।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৮. অনুচ্ছেদঃ
তোমরা তো তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি অবলম্বন করবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮০
PMMRC হাদিস নং-২১৭৯
আবূ ওয়াকিদ আল-লাইসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হুনাইনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাত্রা শুরু করলেন। তিনি মুশরিকদের একটি গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই গাছটিকে ‘যাতু আনওয়াত’ বলা হতো। তারা এর মধ্যে তাদের অস্ত্রসমূহ লটকিয়ে রাখত। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তাদের যাতু আনওয়াতের মতো আমাদের জন্য একটা যাতু আনওয়াতের ব্যবস্থা করুণ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! এটা তো মূসা (আঃ) এর উম্মতের কথার মতো হলো। তারা বলেছিল, কাফিরদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে তদ্রুপ আমাদেরও উপাস্যের ব্যবস্থা করে দিন। সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা অবশ্যই তোমাদের পুর্ববর্তিগনের নীতি অবলম্বন করবে।
সহীহ্, যিলালুল জান্নাহ্(৭৬), মিশকাত(৫৩৬৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ ওয়াকিদ আল-লাইসীর নাম আল-হারিস ইন্বু আওফ। আবূ সাঈদ ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯. অনুচ্ছেদঃ
হিংস্র জন্তু কথা বলবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮১
PMMRC হাদিস নং-২১৮০
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! কিয়ামাত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে, যে পর্যন্ত না কারো চাবুকের মাথা এবং জুতার ফিতা তার সাথে কথা বলবে এবং তার উরুদেশ বলে দিবে তার অনুপস্থিতিতে তার পরিবার কি করেছে।
সহীহ্, সহীহাহ (১২২), মিশকাত(৫৪৫৯)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। কেননা, এ হাদীসটি আল-কাসিম ইবনুল ফাযলের রিওয়ায়াত ব্যতীত আমাদের জানা নেই। হাদীস বিশারদদের মতে আল-কাসিম ইবনুল ফাযল নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-কাত্তান ও আবদুর রাহমান ইবনু মাহদী তাঁকে সিকাহ্ (নির্ভরযোগ্য) বর্ণনাকারী বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২০. অনুচ্ছেদঃ
চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮২
PMMRC হাদিস নং-২১৮১
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র আমলে একদা চাঁদ বিদীর্ণ হলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো।
সহীহ্, মুসলিম (৮/১৩৩)।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ, আনাস ও যুবাইর ইবনু মুতইম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২১. অনুচ্ছেদঃ
ভূমিধস প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৩
PMMRC হাদিস নং-২১৮২
হুযাইফা ইবনু মাসউদ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন কিয়ামাত প্রসঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকম সময় তাঁর ঘর হতে বেরিয়ে আমাদের সামনে এলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা দশটি নিদর্শন না দেখা পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হবে না: (১) পশ্চিম প্রান্ত হতে সুর্য উঠবে, (২) ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, (৩) দাব্বাতুল আরদ নামক প্রাণীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে, তিনটি ভূমি ধস হবে: (৪) একটি প্রাচ্যে (৫) একটি পাশ্চাত্যে এবং (৬) একটি আরব উপদ্বীপে, (৭) ইয়ামানের অন্তর্গত আদন (এডেন) এর একটি গভীর কূপ হতে অগ্নুত্পাত হবে, যা মানুষকে তাড়িয়ে নেবে বা একত্র করবে, তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে রাত্রি কাটাবে এবং তারা যেখানে দিনের বেলায় বিশ্রাম করবে, আগুনও সেখানেই বিশ্রাম করবে।
সহীহ্, মুসলিম(৮/১৭৮-১৭৯)।
উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মাহমুদ্ ইবনু গাইলান-ওয়াকী হতে, তিনি সুফিয়ান (রহঃ) হতে এই সনদসূত্রে বর্ণিত আছে। তাতে আছে: আদ-দুখান অর্থাত ধোয়া নির্গত হবে। এ বর্ণনাটিও সহীহ্। হান্নাদ-আবুল আহওয়াস হতে, তিনি ফুরাত আল-কাযযায (রহঃ) এর সূত্রেও সুফিয়ান হতে ওয়াকী (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের ন্যায় বর্ণিত আছে। মাহমুদ্ ইবনু গাইলান-আবূ দাঊদ আত-তাইয়ালিসী হতে, তিনি শুবা ও মাসঊদী-ফুরাত আল-কাযযায (রহঃ) হতে ফুরাতের সূত্রে সুফিয়ান বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসের মতো হাদীস বর্ণিত আছে। এই বর্ণনায় দাজ্জাল ও ধোয়ার উল্লেখ রয়েছে। এ বর্ণনাটিও সহীহ্। আবূ মূসা মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না-আবুন নূ’মান আল-হাকাম ইবনু আব্দুল্লাহ আল-ইজলী হতে, তিনি শুবা হতে, তিনি ফুরাত (রহঃ) এর সূত্রে আবূ দাঊদ-শুবা (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনূরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সূত্রে আরো আছে: “কিয়ামাতের দশম নিদর্শন হলো এমন প্রবল বাতাস যা তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে অথবা ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ:) এর অবতরণ”। সহীহ্, প্রাগুক্ত। আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী, আবূ হুরাইরা, উম্মু সালামা ও সাফিয়্যা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৪
PMMRC হাদিস নং-২১৮৩
সাফিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার এই ঘরের (কা’বা) বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করা হতে মানুষ বিরত থাকবে না। অবশেষে একটি বাহিনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে যখন বাইদা নামক উপত্যকা অথবা উন্মুক্ত প্রান্তরে হাজির হবে তখন তাদের সম্মুখ-পিছনের সবাইকে নিয়ে যমীন ধসে যাবে। তাদের মধ্যভাগের মানুষও মুক্তি পাবে না। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি জোর-জবরদস্তির ফলে বাধ্য হয়ে অংশগ্রহন করবে তাদের কি হবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে তাদের অন্তরের নিয়্যাত অনুসারে পুনরুত্থান করবেন।
সহীহ্, তা’লীক আলা ইবনু মা-জাহ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৫
PMMRC হাদিস নং-২১৮৪
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এই উম্মাতের শেষ পর্যায়ে ভূমিধস, শারীরিক অবয়ব বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি নিপতিত হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমাদের মাঝে সৎলোক বিদ্যমান থাকা সত্তেও কি আমাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন ঘৃণ্য পাপাচারের প্রকাশ ও ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

সহীহ্, সহীহাহ (৯৮৭), রাওযুন নাযির (২/৩৯৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আইশা (রাঃ)এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার আল-উমারীর স্মৃত্সক্তি দুর্বল বলে সমালোচনা করেছেন (অবশ্য তার ছোট ভাই উবাইদুল্লাহ একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী )।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২. অনুচ্ছেদঃ
পশ্চিম প্রান্ত হতে সূর্যোদয়
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৬
PMMRC হাদিস নং-২১৮৫
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কোন একদিন আমি সুর্য অস্ত যাওয়ার সময় মাসজিদে গেলাম। সে সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে বসা অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! তুমি কি জান এই সুর্য কোথায় যায়? তিনি বললেনঃ সে (আল্লাহর তা’আলার নিকটে) সাজদার অনুমতি প্রার্থনা করতে যায়। তারপর তাকে সম্মতি প্রদান করা হয় এবং তাকে যেন বলা হয়, তুমি যে প্রান্তে এসেছ সে প্রান্ত হতেই উদিত হও। সে তখন পশ্চিম প্রান্ত হতে উদিত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করেন: “এবং এটাই তার নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল। ” (সুরা: ইয়াসীন -৩৮ )।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, সাফওয়ান ইবনু আসসাল, হুযাইফা ইবনু উসাইদ, আনাস ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩. অনুচ্ছেদঃ
ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৭
PMMRC হাদিস নং-২১৮৬
যাইনাব বিনতু জাহশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম হতে জাগ্রত হলেন, তখন তাঁর মুখমন্ডল রক্তিমবর্ণ ধারণ করেছিল। তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে লাগলেন। তা তিনবার বলার পর তিনি বললেনঃ ঘনিয়ে আসা দুর্যোগে আরবদের দুর্ভাগ্য। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এতটুকু পরিমাণ ফাঁক হয়ে গেছে। এই বলে তিনি তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলের সাহায্যে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে ইঙ্গিত করেন। যাইনাব (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের মধ্যে শতলোক থাকা অবস্থায়ও কি আমরা হবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৯৫৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসটিকে সুফিয়ান (রহঃ) উত্তম বলে মন্তব্য করেছেন। হুমাইদী, আলী ইবনুল মাদিনী এবং আরোও অনেকে মুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ্ হতে অনূরূপ বর্ণনা করেছেন। হুমাইদী বলেন, সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা বলেছেন, আমি এ হাদীসের সনদে চারজন মহিলার নাম যুহরীর নিকট হতে মুখস্থ করেছি। যাইনাব বিনতু আবূ সালামা ও হাবীবা দুজনই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর পত্নীকন্যা (তাদের পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত) ছিলেন। উম্মু হাবীবা ও যাইনাব বিনতি জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা দুজন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর স্ত্রী ছিলেন। এ হাদীসটি যুহরীর সূত্রে মা’মার আরোও অনেকে বর্ণনা করেছেন কিন্তু তারা সনদে হাবীবার কথা উল্লেখ করেননি। এই হাদীসটি ইবনু উয়াইনার কোন কোন শিষ্য ইবনু উয়াইনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন কিন্তু তারা সনদে উম্মু হাবীবা (রাঃ) নাম উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মারিকা অর্থাৎ খারিজীদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৮
PMMRC হাদিস নং-২১৮৭
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ যুগে আবির্ভাব ঘটবে এক সম্প্রদায়ের, যারা বয়সে হবে নবীন, বুদ্ধিতে অপরিপক্ক ও নির্বোধ হবে। তারা কোরআন তিলাওয়াত করবে কিন্তু তা তাদের গলার নিচের হাড়ও অতিক্রম করবে না। তারা সৃষ্টির সেরা মানুষের কথাই বলবে, কিন্তু তারা এমনভাবে ধর্ম হতে বেরিয়ে যাবে, যেমনভাবে তীর ধনুক হতে বেরিয়ে যায়।
হাসান, সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৮), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আলী, আবূ সাঈদ ও আবূ যার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। উক্ত সম্প্রদায়ের ব্যাপারে এ হাদীস ব্যতীত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর আরো হাদীস রয়েছে, যাদের সমন্ধে বলা হয়েছে যে, “তারা কোরআন তিলাওয়াত করবে, কিন্তু তা তাদের গলার হাড়ও অতিক্রম করবে না, যেমনিভাবে তীর ধনুক হতে বেরিয়ে যায় তেমনিভাবে তারাও ধর্ম হতে বেরিয়ে যাবে” তাদের প্রসঙ্গে উক্ত হাদীসসমূহে বলা হয়েছে যে, এরা হলো হারূরী প্রভৃতি খারিজী সম্প্রদায়।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
২৫. অনুচ্ছেদঃ
স্বজনপ্রীতি, স্বার্থপরতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৮৯
PMMRC হাদিস নং-২১৮৮
উসাইদ ইবনু হুযাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন একজন আনসারী বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি অমুক ব্যক্তিকে কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ করেছেন অথচ আমাকে নিয়োগ করেননি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা খুব শীঘ্রই আমার পড়ে স্বজনপ্রীতি (স্বার্থপরতা) দেখতে পাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাউজে কাউসারে আমার সাথে তোমাদের দেখা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করতে থাক।
সহীহ্, আযজিলাল(৭৫২,৭৫৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯০
PMMRC হাদিস নং-২১৮৯
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা খুব শীঘ্রই আমার পরে স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্ব ও তোমাদের অপছন্দনীয় অনেক বিষয় দেখতে পাবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ঐ সময়ে কি করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেন? তিন বললেনঃ তোমাদের উপর তাদের যে অধিকার রয়েছে তোমরা তা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের অধিকার আল্লাহ্ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করবে।
সহীহ্, বুখারী(৭০৫২, ৬/১৬-১৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৬. অনুচ্ছেদঃ
কিয়ামাত পর্যন্ত যা ঘটবে, সে প্রসঙ্গে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবীদের অবহিত করেছেন
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯১
PMMRC হাদিস নং-২১৯০
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একসময় রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে একটু বেশি বেলা থাকতেই আসরের নামাজ আদায় করেন, তারপর ভাষণ দিতে দাঁড়ান। উক্ত ভাষণে কিয়ামাত পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটবে সেই প্রসঙ্গেই তিনি আমাদেরকে জানিয়ে দেন। কেউ সেগুলো মনে রেখেছে কেউ আবার তা ভুলে গেছে। তাঁর ভাষণে তিনি যা বলেছিলেন তার মধ্যে ছিলঃ দুনিয়াটা সবুজ-শ্যামল ও সুমিষ্ট (আকর্ষণীয়), আর আল্লাহ্‌ তা’আলা তোমাদেরকে এর উত্তরাধিকার বানিয়েছেন। সুতরাং তোমরা কি করছ তা তিনি লক্ষ্য রাখছেন। শোন! দুনিয়া ও নারীদের ব্যাপারে সাবধান। তিনি আরো বলেন: সাবধান! কেউ যখন কোন সত্য কথা জানবে, তখন তাকে মানুষের ভয় যেন সেই সত্য বলা থেকে বিরত না রাখে। রাবী বলেন, এই কথা বলে আবূ সাঈদ (রাঃ) কেঁদে ফেলেন এবং বলেন আল্লাহ্‌ তা’আলার কসম! আমরা এরকম কত কাজ হতে দেখেছি কিন্তু তা বলতে মানুষকে ভয় করেছি। তিনি আরও বলেনঃ জেনে রাখ! কিয়ামাতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য তার বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ অনুযায়ী একটি করে পতাকা স্থাপন করা হবে। মুসলিম রাষ্ট্রনায়কের বিশ্বাসঘাতকতার চাইতে ভীষণ কোন বিশ্বাসঘাতকতা নেই। তার এই পতাকা তার নিতম্বের কাছে স্থাপন করা হবে। সেদিনের আরও যেসব কথা আমরা মনে রেখেছি তার মধ্যে ছিলঃ শুনে রাখ! আদম-সন্তানদেরকে বিভিন্ন শ্রেণীতে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের এক দল তো মু’মিন অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, মু’মিন অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং মু’মিন অবস্থাতেই মারা গেছে। তাদের অপর দল কাফির অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, কাফির অবস্থায় জীবন কাটিয়েছে এবং কাফির অবস্থায়ই মারা গেছে। অপর দল মু’মিন অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছেন, মু’মিন অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং কাফির অবস্থায় মারা গেছে। অপর দল আবার কাফির অবস্থায় জন্মগ্রহন করেছে, কাফির অবস্থায় জীবন যাপন করেছে এবং মু’মিন অবস্থায় মারা গেছে। জেনে রাখ! মানুষের মধ্যে কারো রাগ আসে দেরিতে এবং চলে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আবার কারো রাগ আসে তাড়াতাড়ি আবার চলেও যায় তাড়াতাড়ি। সুতরাং এর জন্য এই। জেনে রাখ! তাদের মধ্যে কারো রাগ আসে খুব তাড়াতাড়ি কিন্তু চলে যায় খুব দেরিতে। জেনে রাখ! তাদের মধ্যে উত্তম হল যাদের রাগ আসে দেরিতে এবং চলে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আর তারাই খুব নিকৃষ্ট, যাদের রাগ আসে খুব তাড়াতাড়ি কিন্তু চলে যায় দেরিতে। জেনে রাখ! মানুষের মধ্যে কেউ পাওনা পরিশোধের বেলায়ও ভালো আবার পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রেও ভদ্র। আবার কেউ পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে ভদ্র কিন্তু আদায়ের ক্ষেত্রে অভদ্র। এক্ষেত্রে একটি অপরটির পরিপূরক হয়ে যায়। জেনে রাখ! তাদের মধ্যে কারো পাওনা পরিশোধ নিকৃষ্ট এবং সে তাগাদা প্রদানের ক্ষেত্রে অভদ্র। জেনে রেখ সেই সবচেয়ে ভাল, যে পাওনা পরিশোধের বেলায় ভাল এবং পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রেও ভদ্র। জেনে রাখ! তাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি খুবই খারাপ যার পাওনা পরিশোধও নিকৃষ্ট এবং যে তাগাদা প্রদানেও অভদ্র। জেনে রাখ! রাগ মানুষের অন্তরের অগ্নিস্ফুলিংগর মত। তোমরা কি লক্ষ্য করনি যে, রাগান্বিত ব্যক্তির চক্ষুদ্বয় রক্তিম বর্ণ ধারণ করে এবং তার ঘাড়ের শিরাগুলো ফুলে উঠে। সুতরাং তোমাদের কেউ এরূপ অনুভব করলে সে যেন মাটিতে লুটিয়ে যায় (তাহলে রাগ কমে যাবে)। রাবী বলেন, আমরা সূর্যের দিকে তাকাতে লাগলাম যে, তা এখনও অবশিষ্ট আছে কি না। রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জেনে রাখ! তোমাদের এই দুনিয়ার যতটুকু অতীত হয়ে গেছে, সেই হিসাবে এতটুকুও আর অবশিষ্ট নেই যতটুকু আজকের এই দিনের অতিবাহিত হয়েছে তার তুলনায় যতটুকু অবশিষ্ট আছে।
যঈফ, রাদ্দুন আলা বালিক (৮৬), কিন্তু এই হাদীসের কিছু অংশ সহীহ, দেখুন হাদীস নং (৪০০০), এবং মুসলিম (৮/১৭২-১৭৩)
এই অনুচ্ছেদে হুযাইফা, আবূ মারইয়াম (রাঃ) আবূ যাইদ ইবনু আখতাব, মুগীরা ইবনু শুবা, হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। তারা বর্ণনা করেন যে, কিয়ামাত পর্যন্ত যেসব ঘটনা সংঘটিত হবে, রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগুলো তাদের নিকট বলেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
২৭. অনুচ্ছেদঃ
সিরিয়াবাসীদের প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯২
PMMRC হাদিস নং-২১৯১
মুআবিয়া ইবনু কুররা (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন সিরিয়াবাসীরা খারাপ হয়ে যাবে তখন তোমাদের আর কোন কল্যাণ থাকবে না। তবে আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সকল সময়েই সাহায্যপ্রাপ্ত (বিজয়ী) থাকবে। যেসব লোকেরা তাদেরকে অপমানিত করতে চায় তারা কিয়ামাত পর্যন্ত তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬)।
মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) বলেন, আলী ইবনুল মাদীনী বলেছেন, সাহায্যপ্রাপ্ত (বিজয়ী) সেই সম্প্রদায়টি হলো হাদীস বিশারদদের জামা’আত (আহলুল হাদীস)। আবূ ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু হাওয়ালা, ইবনু উমার, যাইদ ইবনু সাবিত ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটি হাসান সহীহ্। আহমাদ ইবনু মানি’-ইয়াযীদ ইবনু হারুন হতে তিনি বাহয্ ইবনু হাকিম হতে তিনি তার পিতা হতে, তিনি তার দাদা হতে তিনি (বাহযের দাদা) বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আমাকে কোথায় থাকতে নির্দেশ দেন? তিনি বললেন, এখানে আর হাত দিয়ে সিরিয়ার দিকে ইঙ্গিত করলেন।
বাহয ইবনু হাকীম (রাঃ) হতে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (উপরোক্ত হাদীসের বক্তব্য শুনে) আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে কোন জায়গায় বসবাসের জন্য আপনি নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ এই দিকে। তিনি এই কথা বলে হাত দিয়ে সিরিয়ার দিকে ইশারা করেন।
সহীহ্, ফাযাইলুশ্‌শাম হাদীস নং ১৩।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৮. অনুচ্ছেদঃ
আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানি করে কুফরীতে প্রত্যাবর্তন করো না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৩
PMMRC হাদিস নং-২১৯২
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি বলেওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরবর্তীতে তোমরা পরস্পর হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তিত করো না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ(৩৯৪২-৩৯৪৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ, জারীর, ইবনু উমার, কূরয ইবনু আলকামা ওয়াসিলা ইবনুল আসকা ও আস-সুনাবিহী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৯. অনুচ্ছেদে:
এমন এক বিপর্যয়কর যুগের আগমন ঘটবে যখন উপবিষ্ট ব্যক্তি দন্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে ভাল (নিরাপদ) থাকবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৪
PMMRC হাদিস নং-২১৯৩
বুসর ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খালিফা উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর (রাজনৈতিক) বিপর্যয় ও বিদ্রোহকালে সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ)বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অনতি বিলম্বেই এমন এক বিপর্যয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যখন বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির চেয়ে ভাল (নিরাপদ) থাকবে, দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে ভাল থাকবে। সা’দ (রাঃ) বলেন, আপনি এ ব্যাপারে কি মনে করেন যদি ফিতনাবাজ কোন লোক আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং আমাকে খুন করতে উদ্যত হয়? তিনি বললেনঃ তুমি আদমের ছেলের (হাবিলের) মতো হয়ে যাও।

সহীহ্ : ইরওয়া (৮/১০৪)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, খাব্বাব ইবনুল আরাত্তি, আবূ বাকরা, ইবনু মাসঊদ, আবূ ওয়াকিদ, আবূ মূসা ও খারাশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি লাইস ইবনু সা’দের সূত্রে কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন এবং আরো একজন বর্ণনাকারীর কথা এই সনদে উল্লেখ রয়েছে। এ হাদীসটি অন্য সূত্রেও সা’দ (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩০. অনুচ্ছেদঃ
অনতিবিলম্বেই অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় বিপর্যয় দেখা দিবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৫
PMMRC হাদিস নং-২১৯৪
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় বিপর্যয় আগমনের পূর্বেই তোমরা সৎকাজের প্রতি অগ্রসর হও। ঐ সময় যে ব্যক্তি সকাল বেলায় মু’মিন থাকবে সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় মু’মিন থাকবে সে সকালে কাফির হয়ে যাবে। মানুষ দুনিয়াবী স্বার্থের বিনিময়ে তার ধর্ম বিক্রয় করে দিবে।
সহীহ্, সহীহাহ (৭৫৮), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৬
PMMRC হাদিস নং-২১৯৫
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একরাতে ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! আজ রাতে কতই না বিপর্যয় নাযিল হয়েছে, কতই না অনুগ্রহের ভান্ডার অবতীর্ণ হয়েছে? এরূপ কে আছে যে এই গৃহবাসীদের জাগ্রত করবে? পৃথিবীতে অনেক পোশাক পরিহিতা, পরকালে থাকবে উলঙ্গ।

সহীহ্, বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৭
PMMRC হাদিস নং-২১৯৬
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের নিকটতম সময়ে অন্ধকার রাতের টুকরার মতো বিপর্যয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তখন যে লোক সকাল বেলায় মু’মিন থাকবে সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। আর যে লোক সন্ধ্যা বেলায় মু’মিন থাকবে সকালে সে কাফির হয়ে যাবে। একদল লোক দুনিয়াবী স্বার্থের বিনিময়ে তাদের ধর্ম বিক্রয় করবে।
হাসান সহীহ্, সহীহাহ (৭৫৮,৮১০)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, জুনদাব, নু’মান ইবনু বাশীর ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি উক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৮
PMMRC হাদিস নং-২১৯৭
হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায় তিনি বলতেন যে, সেই বিপর্যয়ের সময়ে সকাল বেলায় যে লোক মু’মিন অবস্থায় থাকবে সন্ধ্যায় সে কাফির হয়ে যাবে আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় মু’মিন থাকবে সে সকালে কাফির হয়ে যাবে। কোন লোক তার ওপর ভাইয়ের রক্ত (প্রাণ), সম্মান ও সম্পদ (ধ্বংস করা)-কে সকাল বেলায় অবৈধ মনে করবে, অথচ সে সন্ধ্যা বেলায় এগুলো নিজের জন্য বৈধ মনে করবে। আবার এক লোক তার ভাইয়ের রক্ত, সম্মান ও সম্পদকে সন্ধ্যা বেলায় অবৈধ মনে করবে, অথচ সে সকালে এগুলোকে নিজের জন্য বৈধ মনে করবে।
হাসান বাসরী হতে সহীহ্ সনদে বর্ণিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২১৯৯
PMMRC হাদিস নং-২১৯৮
আলকামা ইবনু ওয়াইল ইবনু হুজর (রহঃ) হতে তাঁর বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (ওয়াইল) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি। কোন একজন লোক তাঁকে প্রশ্ন করল: যদি আমাদের নেতারা এরূপ হয় যে, আমাদের প্রাপ্য অধিকার তারা প্রদান করে না কিন্তু তাদের প্রাপ্য অধিকার সঠিকভাবে আদায় করে নেয়, এমতবস্থায় আমরা কি করব বলে আপনি মনে করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (তাদের কথা) শ্রবণ কর ও আনুগত্য কর। কেননা, তাদেরকে তাদের দায়-দায়িত্বের জন্য জবাবদিহি করতে হবে এবং তোমাদেরকে তোমাদের দায়-দায়িত্বের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
সহীহ্, মুসলিম(৬/১৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১. অনুচ্ছেদঃ
ব্যাপক গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইবাদাত-বন্দিগিতে লিপ্ত থাকা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০০
PMMRC হাদিস নং-২১৯৯
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের পরবর্তীতে এরূপ এক যুগের আগমন ঘটবে, যখন (দ্বীনি) ইলমকে উঠিয়ে নেয়া হবে এবং হারাজ বৃদ্ধি পাবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারাজ কি? তিনি বললেনঃ ব্যাপক গণহত্যা।
সহীহ্, সহীহুল জামি’ (২২২৯)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, খালিদ ইবনুল ওয়ালীদ ও মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০১
PMMRC হাদিস নং-২২০০
মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ব্যাপক গণহত্যা চলাকালীন সময়ে ইবাদাত করা আমার কাছে হিজরাতের সমতুল্য।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ(৩৯৮৫), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে মুআল্লা ইবনু যিয়াদের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২. অনুচ্ছেদঃ
(একবার মারামারি শুরু হলে কিয়ামাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হবে না)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০২
PMMRC হাদিস নং-২২০১
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে যখন তলোয়ার রাখা হবে (পরস্পর হানাহানি শুরু হবে) তখন হতে কিয়ামাত পর্যন্ত তা আর তুলে নেয়া হবে না (হানাহানি বন্ধ হবে না)।
সহীহ্, মিশকাত (৫৪০৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
বিপর্যয়কালে কাঠের তলোয়ার ধারণ করা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৩
PMMRC হাদিস নং-২২০২
উদাইসা বিনতু ওহবান সাইফী আল-গিফারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) আমার বাবার নিকট আসেন এবং তার সাথে যুদ্ধে গমনের আহবান জানান। আমার বাবা তাকে বললেন, আমার পরম বন্ধু এবং আপনার চাচাতো ভাই (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে উপদেশ দিয়েছেন যে, “মানুষ যখন পরস্পর বিবাদে জড়িয়ে পরে, তখন আমি যেন কাঠের তলোয়ার তৈরী করে নেই (অকেজো তলোয়ার রাখি যাতে যুদ্ধ বা ফিতনায় জড়াতে না হয়)। আমি বর্তমানে তা-ই করেছি। এখন আপনি ইচ্ছা করলে আমি সেটি নিয়েই আপনার সাথে যাত্রা করতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আলী (রাঃ) তাকে স্বঅবস্থায় রেখে গেলেন।
হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ(৩৯৬০)।
আবূ ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুল্লাহ ইবনু উবাইদের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৪
PMMRC হাদিস নং-২২০৩
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ফিতনা সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এ সময় তোমরা তোমাদের ধনুক ভেঙ্গে ফেল, ধনুকের ছিলা কেটে ফেল, তোমাদের ঘরের কোনে অবস্থান কর এবং আদম (আ:) এর ছেলের (হাবিল) মতো হয়ে যাও।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৩৬১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ্। আবদুর রাহমান ইবনু সারওয়ান হলেন আবূ কাইস আল-আওদী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
কিয়ামাতের আলামাত প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৫
PMMRC হাদিস নং-২২০৪
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এরূপ একটি হাদীস তোমাদেরকে শুনাচ্ছি যা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র নিকট শুনেছি। তোমাদের সামনে এ হাদীসটি আমার পরবর্তীতে আর কেউ বর্ণনা করবেন না, যিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের নিদর্শন হলো: ‘ইলম (দ্বীনি জ্ঞান ) উঠে যাবে, মুর্খতার প্রসার ঘটবে, ব্যাপকহারে জিনা-ব্যভিচার ছড়িয়ে পরবে, মদ্যপান করা হবে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন তত্ত্বাবধায়ক পুরুষ থাকবে।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ মূসা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ)হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
(বিগত বছরের তুলনায় আগত বছর নিকৃষ্টতর হবে )
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৬
PMMRC হাদিস নং-২২০৫
যুবাইর ইবনু আদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে এসে তার নিকট অভিযোগ করলাম আমাদের উপর হাজ্জাজের পক্ষ হতে যে জুলুম-নির্যাতন চলছিল সে প্রসঙ্গে। তিনি বললেন, তোমাদের প্রতিটি বছর বিগত বছর অপেক্ষা নিকৃষ্টতর হবে, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রভুর সাথে মিলিত হও। এ কথা আমি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-র নিকট শুনেছি।

সহীহ্, সহীহাহ (১/১০,১২১৮),বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৭
PMMRC হাদিস নং-২২০৬
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পৃথিবীতে যখন আল্লাহ্ আল্লাহ্ বলা না হবে তখন কিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
সহীহ্, সহীহাহ(৩০১৬), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় হাদীস মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না-খালিদ ইবনুল হারিস হতে, তিনি হুমাইদ হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণিত আছে। তবে হাদীসটি এই সনদ্সুত্রে মারফুভাবে বর্ণিত হয়নি। আর প্রথমোক্ত রিওয়ায়াতের চাইতে এই রিওয়ায়াত অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
(যামীন তার অভ্যন্তরস্থ সম্পদ উদগিরণ করে দিবে)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৮
PMMRC হাদিস নং-২২০৭
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (এমন এক সময়ের আগমন ঘটবে) যখন যামীন তার সোনা-রুপার সমস্ত খনিজভান্ডার কলিজার টুকরার মতো স্তুপাকারে বের করে দিবে। তখন চোর এসে বলবে, এ সম্পদের জন্যই তো আমার হাত কাটা হয়েছে। হত্যাকারী (হন্তা) এসে বলবে, আমি এ সম্পদের জন্যই তো খুন হয়েছি। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী এসে বলবে, আমি তো এ সম্পদের কারণেই আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। তারপর তারা এ সম্পদ ছেড়ে যাবে, তা হতে কিছুই নেবে না।
সহীহ্ : মুসলিম (৩/৮৪-৮৫)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। আমরা হাদীসটি শুধুমাত্র এ সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
নিকৃষ্ট মানুষেরা দুনিয়াবী সৌভাগ্যের অধিকারী হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২০৯
PMMRC হাদিস নং-২২০৮
হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যতক্ষণ না নিকৃষ্ট লোকের পুত্র নিকৃষ্টরা পৃথিবীতে ভাগ্যবান হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (২৩৬৫)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আমর ইবনু আবূ আমরের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
আকৃতি পরিবর্তন ও ভূমি ধসের আলামাত অবতীর্ণ হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১০
PMMRC হাদিস নং-২২০৯
আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাত যখন পনেরটি বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়বে তখন তাদের উপর বিপদ-মুসীবত এসে পড়বে। প্রশ্ন করা হল ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি কি? তিনি বললেনঃ যখন গানীমতের মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানাত লুটের মালে পরিণত হবে, যাকাত জরিমানা রূপে গণ্য হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধুর সাথে ভাল ব্যবহার করবে কিন্তু পিতার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে, মসজিদে শোরগোল করা হবে, সবচাইতে খারাপ চরিত্রের লোক হবে তার সম্প্রদায়ের নেতা, কোন লোককে তার অনিষ্টতার ভয়ে সম্মান করা হবে, মদ পান করা হবে, রেশমী বস্ত্র পরিধান করা হবে, নর্তকী গায়িকাদের প্রতিষ্ঠিত করা হবে, বাদ্যযন্ত্রসমূহের কদর করা হবে এবং এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাদের পূর্ব যুগের লোকদের অভিসম্পাত করবে, তখন তোমরা একটি অগ্নিবায়ু অথবা ভূমিধ্বস অথবা চেহারা বিকৃতির আজাবের অপেক্ষা করবে।
যঈফ, মিশকাত (৫৪৫১)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উক্ত সূত্রেই এটিকে আলী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসরূপে জেনেছি। আল-ফারাজ ইবনু ফাযালা (রহঃ) ব্যতীত আর কেউ এই হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারী (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। কোন কোন হাদীসবেত্তা আল-ফারাজ ইবনু ফাযালার সমালোচনা করেছেন এবং স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করেছেন। ওয়াকী (রহঃ) এবং আরও কিছু রাবী তার সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১১
PMMRC হাদিস নং-২২১০
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যখন গানীমাতের (যুদ্বলব্দ) মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানতের মাল লুটের মালে পরিণত হবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, ধর্ম বিবর্জিত শিক্ষার প্রচলন হবে, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়ে যাবে কিন্তু নিজ মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধু-বান্ধবকে কাছে টেনে নিবে, কিন্তু পিতাকে দূরে ঠেলে দিবে, মসজিদে কলরব ও হট্টগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হবে, নিকৃষ্ট লোক সমাজের কর্ণধার হবে, কোন মানুষের অনিষ্ট হতে বাঁচার জন্য তাকে সম্মান দেখানো হবে, গায়িকা-নর্তকী ও বাদ্য যন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদপান করা হবে, এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাদের পূর্ববতী মনীষীদের অভিসম্পাত করবে, তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি ও পাথর বর্ষণরূপ শাস্তির এবং আরো আলামতের অপেক্ষা করবে যা একের পর এক নিপতিত হতে থাকবে, যেমন পুরানো পুঁতিরমালা ছিড়ে গেলে একের পর এক তার পুঁতি ঝরে পড়তে থাকে।
যঈফ, মিশকাত (৫৪৫০)
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১২
PMMRC হাদিস নং-২২১১
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আযাব এ উম্মাতের মাঝে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কখন এসব আযাব সংঘটিত হবে? তিনি বললেনঃ যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করবে এবং মদ্যপানের সয়লাব হবে।
হাসান, সহীহাহ (১৬০৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুরসালভাবেও আ’মাশ হতে আবদুর রাহমান ইবনু সাবিত এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী: আমার প্রেরণ ও কিয়ামাত এই দুই আঙ্গুলের মত কাছাকাছি
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৩
PMMRC হাদিস নং-২২১২
আল-মুস্তাওরিদ ইবনু শাদ্দাদ আল-ফিহ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি তো কিয়ামাতের শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে (কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার নিকটতর সময়ে) প্রেরিত হয়েছি। আমি তার অগ্রে এসেছি মাত্র যেমন এটি ও এটি অর্থাৎ তর্জনী ও মধ্যমার মাঝে যতটুকু দূরত্ব (আমার ও কিয়ামাতের মধ্যে সে রকমই নিকটতর দূরত্ব)।

যঈফ, মিশকাত (৫৫১৩)
আবূ ঈসা বলেন, আল-মুসতাওরিদ ইবনু শাদ্দাদ (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদীসটি গারীব। কেননা এই সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৪
PMMRC হাদিস নং-২২১৩
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার প্রেরণ ও কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার মাঝে এতটুকু ব্যবধান, যেমন এ দুটি। আবূ দাউদ (রহঃ) তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলের মাধ্যমে ইঙ্গিত করে দেখান। এই দুইটির মাঝে খুব একটা ব্যবধান নেই।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪০. অনুচ্ছেদঃ
তুর্কীদের সাথে যুদ্ধ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৫
PMMRC হাদিস নং-২২১৪
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে যাদের জুতা হবে চুলের তৈরী। আর কিয়ামাত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, যাদের মুখমন্ডল হবে বহু স্তরবিশিষ্ট ঢালের মতো।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক, বুরইদা, আবূ সাঈদ, আমর ইবনু তাগলিব ও মুআবিয়া (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪১. অনুচ্ছেদঃ
কিসরার পরাজয়ের পর আর কোন কিসরা ক্ষমতাসীন হবে না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৬
PMMRC হাদিস নং-২২১৫
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (পারস্য সম্রাট) কিসরার পরাজয়ের পর আর কোনো কিসরা ক্ষমতাসীন হবে না এবং (রোম সম্রাট) কাইসারের পরাজয়ের পরও আর কোন কাইসার ক্ষমতাসীন হতে পারবে না। সেই মহান সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এই দুই রাজ্যের সকল ধনভান্ডার আল্লাহ্ তা’আলার পথে খরচ করা হবে।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪২. অনুচ্ছেদঃ
হিজাযের দিক হতে একটি অগ্নুৎপাত হওয়ার আগ পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হবে না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৭
PMMRC হাদিস নং-২২১৬
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের পূর্বে হাযরামাওত হতে অথবা হাযরামাওতের সাগরের দিক হতে শিঘ্রই একটি অগ্নুত্পাত হবে এবং তা লোকদেরকে একত্র করবে। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তখন আমাদেরকে কি করার জন্য নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ তোমরা সিরিয়াতে অবস্থান করবে।
সহীহ্, ফাযাইলুশশাম (১১), মিশকাত (৬২৬৫)।
আবূ ঈসা বলেন, হুযাইফা ইবনু উসাইদ, আনাস, আবূ হুরাইরা ও আবূ যার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ্ এবং ইবনু উমার (রাঃ)এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
কিছুসংখ্যক ডাহা মিথ্যাবাদীর (নাবুওয়াতের দাবিদারের) অবির্ভাব হওয়ার পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হবে না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৮
PMMRC হাদিস নং-২২১৭
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রায় ত্রিশজন ডাহা মিথ্যাবাদী প্রতারকের আবির্ভাবের পূর্বে কিয়ামাত সংঘটিত হবে না। তাদের সকলে দাবি করবে যে, সে আল্লাহ্ তা’আলার প্রেরিত রাসুল।
সহীহ্, সহীহাহ (১৬৮৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, জাবির ইবনু সামুরা ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২১৯
PMMRC হাদিস নং-২২১৮
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুশরিকদের সাথে আমার উম্মতের কতিপয় গোত্র না মিলিত হওয়া পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হবে না, এমনকি তারা মূর্তিপূজাও করবে। আমার উম্মতের মধ্যে খুব শীঘ্রই ত্রিশজন ডাহা মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব হবে। এদের সকলেই দাবি করবে যে সে নাবী। অথচ আমি সর্বো সর্বশেষ নাবী, আমার পরে কোন নবী নেই।

সহীহ্, মিশকাত (৫৪০৬), সহীহাহ (১৬৮৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
সাকীফ বংশে এক মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতকের জন্ম হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২০
PMMRC হাদিস নং-২২১৯
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতক সাকীফ বংশে জন্মগ্রহণ করবে।
সহীহ্, মুসলিম(৭/১৯১)।
আবূ ঈসা আরো বলেন, কথিত আছে যে এ মিথ্যাবাদী ব্যক্তিটি হলো মুখতার ইবনু আবূ উবাইদ এবং রক্ত পিপাসু নরঘাতক হলো হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ (এরা দুজনেই সাকীফ বংশের)। উপরোক্ত হাদীসের অনূরূপ হাদীস আবদুর রাহমান ইবনু ওয়াকিদ-শারীক (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান ইবনু উমারের বর্ণনা হিসাবে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র শারীকের সূত্রে জেনেছি। শারীক বলেন, বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনু উসম এবং ইসরাঈল বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু ইসমাহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
তৃতীয় যুগের বর্ণনা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২১
PMMRC হাদিস নং-২২২০
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি: আমার যমানাই হলো সর্বউৎকৃষ্ট যমানা, তারপর এর নিকটবর্তীদের যমানা, তারপর এর নিকটবর্তীদের যমানা। তারপর এমন যুগের আগমন ঘটবে যখনকার লোকেরা হবে মোটা দেহ বিশিষ্ট এবং তারা মোটা দেহের অধিকারী হতে পছন্দ করবে। সাক্ষ্য না চাওয়া হলেও তারা সাক্ষ্য প্রদান করবে।

সহীহ্: সহীহাহ (১৮৪০), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আমাশ-আলী ইবনু মুদরিক হতে তিনি হিলাল ইবনু ইয়াসাফের সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু ফুযাইল অনুরুপভাবে বর্ণনা করেছেন। আর একাধিক হাদিস বর্ণনাকারী আমাশ হতে, তিনি হিলাল ইবনু ইয়াসাফের সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, তবে তারা বর্ণনাকারী আলী ইবনু মুদরিকের কথা উল্লেখ করেননি। হুসাইন ইবনু হুরাইস (রহঃ) ওয়াকী হতে, তিনি আমাশ হতে, তিনি হিলাল ইবনু ইয়াসাফ হতে, তিনি ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনূরূপ বর্ণনা করেছেন। (তিরমিযী বলেন) আমার মতে মুহাম্মদ ইবনু ফুযাইলের সূত্র অপেক্ষা এ সূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্। এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২২
PMMRC হাদিস নং-২২২১
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যে যুগে যাদের মাঝে প্রেরিত হয়েছি সেই যুগের আমার উম্মাতই হলো শ্রেষ্ঠ; তারপর তাদের পরবর্তী যুগের লোক। বর্ণনাকারী বলেন, তৃতীয় যুগের কথা বলা হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। তারপর এমন কিছু মানুষের আগমন ঘটবে যাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া না হলেও তারা সাক্ষ্য প্রদান করবে। তারা খিয়ানাত করবে, আমানাত রক্ষা করবে না এবং তাদের মধ্যে মোটা দেহ বিশিষ্ট মানুষের বিস্তার ঘটবে।
সহীহ্, সহীহাহ (১৮৪০), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
খালিফাগণ প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৩
PMMRC হাদিস নং-২২২২
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরে বারোজন শাসক হবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি কি যে বললেন, আমি তা বুঝতে পারিনি। তাই আমি আমার কাছের একজন লোককে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাদের সকলেই কুরাইশ বংশীয় হবে।
সহীহ্, সহীহাহ (১০৭৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণিত আছে আবূ কুরাইব হতে, তিনি উমার ইবনু উবাইদ হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবূ বাক্র ইবনু আবী মূসা হতে, তিনি জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে। জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতে এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। এ হাদীসটিকে আবূ মূসা হতে জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) এর সূত্রে গারীব বলা হয়। ইবনু মাসউদ ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা’আলার নিযুক্ত শাসককে যে ব্যক্তি অপমান করবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৪
PMMRC হাদিস নং-২২২৩
যিয়াদ ইবনু কূসাইব আল-আদাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু আমিরের মিম্বরের নিকট আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে বসা ছিলাম। সে সময় তিনি সুক্ষ মিহি পোশাক পরিহিত অবস্থায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। আবূ বিলাল বললেন, তোমরা আমাদের শাসকের প্রতি লক্ষ্য করে দেখ, তিনি গুনাহগারদের অনূরূপ পোশাক পড়েছেন। আবূ বকর (রাঃ)বললেন, তুমি চুপ থাক, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি: দুনিয়াতে আল্লাহ্ তা’আলার নিযুক্ত শাসককে যে ব্যক্তি অপমান করবে, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে অপমান করবেন।
হাসান, সহীহাহ (২২৯৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
খিলাফাত প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৫
PMMRC হাদিস নং-২২২৪
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে বলা হলো, আপনি যদি আপনার পরবর্তী খালিফা (প্রতিনিধি) মনোনীত করে যেতেন। তিনি বললেন, আমি যদি পরবর্তী খালীফা মনোনীত করি তাহলে আবূ বকর (রাঃ) ও পরবর্তী খালীফা মনোনীত করেছিলেন। আর আমি যদি পরবর্তী খালীফা মনোনীত না করে যাই (তাও যথার্থ হবে), কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাউকে খালিফা মনোনীত করে যাননি।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাউদ (২৬০৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসে আরো দীর্ঘ ঘটনা আছে (যা সহীহ্ মুসলিমের কিতাবুল ইমারা-এর প্রথমদিকে উল্লেখিত)। এ হাদীসটি সহীহ্। এ হাদীসটি ইবনু উমার (রাঃ) হতে একাধিকসূত্রে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৬
PMMRC হাদিস নং-২২২৫
সাঈদ ইবনু জুহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাফিনাহ (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মতের খিলাফাতের সময়কাল (শাসনকাল) হবে ত্রিশবছর, তারপর হবে রাজতন্ত্র।

সহীহ্, সহীহাহ (৪৫৯, ১৫৩৪, ১৫৩৫)।
তারপর সাফিনাহ (রাঃ) আমাকে বললেন, তুমি আবূ বকর (রাঃ) এর খিলাফতকাল গণনা কর। তারপর বললেন, উমার ও উসমান (রাঃ)-এর খিলাফতকাল গণনা কর। তারপর বললেন, আলী (রাঃ)-এর খিলাফতকালও গণনা কর। আমরা গণনা করে এর সময়কাল ত্রিশবছরই পেলাম। সাঈদ (রাঃ) বললেন, আমি তাকে বললাম বানু উমাইয়ার জনগণ ও দাবি করে যে, তাদের মাঝে ও খেলাফাত বিদ্যমান? তিনি বললেন যারকার সন্তানেরা মিথ্যা বলছে, বরং তারা তো নিকৃস্ট রাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত রাজতান্ত্রিক গোষ্ঠী।
আবূ ঈসা বলেন, উমার ও আলী (রাঃ)হতে ও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। তারা বলেন, খিলাফাত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন অঙ্গীকার করে যাননি। এ হাদীসটি হাসান। অবশ্য এ হাদীসটি সাঈদ ইবনু জুহমান (রহঃ) হতে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে শুধুমাত্র তার রিওয়ায়াত হিসাবেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
কুরাইশদের মধ্য হতেই কিয়ামাত পর্যন্ত খালিফা হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৭
PMMRC হাদিস নং-২২২৬
হাবীব ইবনুয যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবুল হুযাইল (রহঃ) কে বলতে শুনেছি: আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর সামনে রাবীআ বংশের কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিল। বাকর ইবনু ওয়াইল বংশের কোন একজন লোক বলল, অবশ্যই অন্যায় কাজ হতে কুরাইশদের বিরত থাকা উচিত। তা না হলে আল্লাহ্ তা’আলা এ (খিলাফাতের) দায়িত্ব আরবদের মাঝে অন্যদেরকে প্রদান করবেন। আমর ইবনুল আস (রাঃ)বলেন, তুমি ভূল বলেছ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছি: কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত কুরাইশগণ ভাল-মন্দ সর্বাবস্থায় জনগনের নেতৃত্ব দিবে।
সহীহ্, সহীহাহ (১১৫৫)।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ ইবনু উমার ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫০. অনুচ্ছেদঃ
জাহজাহ্ নামক মুক্তদাসের রাজ্যাধিকারী হওয়া
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৮
PMMRC হাদিস নং-২২২৭
উমার ইবনুল হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরা (রাঃ)কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘জাহজাহ্’ নামক কোন এক মুক্তদাস অধিপতি না হওয়া পর্যন্ত দিন-রাতের অবসান (কিয়ামাত) হবে না।
সহীহ্, সহীহাহ(২৪৪১), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫১. অনুচ্ছেদঃ
পথভ্রষ্টকারী নেতৃবৃন্দ প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২২৯
PMMRC হাদিস নং-২২২৮
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে পথ্ভ্রষ্টকারী নেতাদেরকেই ভয় করি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ আমার উম্মাতের এক দল লোক আল্লাহ্ তা’আলার হুকুম (কিয়ামাত) আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বদা বিজয়ীবেশে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদের অপমানিত করতে চাইবে তারা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।
সহীহ্, সহীহাহ (৪/১১০, ১৯৫৭), মুসলিম ২য় অংশ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে আমি বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র উক্তো হাদীসটি আলী ইবনুল মাদীনীকে এভাবে বর্ণনা করতে শুনেছি: আমার উম্মাতের এক দল সর্বাবস্থায় সত্যের উপর বিজয়ী থাকবে। তাদের ব্যাপারে আলী (রাঃ) বলেন, এরা হলো আহলুল হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২. অনুচ্ছেদঃ
ইমাম মাহ্দী প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩০
PMMRC হাদিস নং-২২২৯
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরিবারের একজন আরবের অধিপতি না হওয়া পর্যন্ত পৃথিবী ধ্বংস হবে না। আমার নামের অনূরূপই তার নাম হবে।
হাসান সহীহ্, মিশকাত(৫৪৫২), ফাযাইলুশশাম (১৬), বাওযুন নাযীর (৬৪৭)।
আবূ ঈসা বলেন, আলী, আবূ সাঈদ, উম্মু সালামা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সছিহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩১
PMMRC হাদিস নং-২২৩০
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরিবারের মধ্যে একজন লোক রাজাধিপতি হবে, তার নাম হবে আমার নামের অনূরূপ। আসিম (রহঃ) বলেনঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে আবূ সালিহ (রহঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, যদি পৃথিবী ধ্বংসের মাত্র একদিনও অবশিষ্ট থাকে, তাহলে তার রাজত্বের জন্য আল্লাহ্ তা’আলা সে দিনটিকেই দীর্ঘায়িত করে দিবেন।
হাসান সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
(মাহ্দীর রাজত্বকাল)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩২
PMMRC হাদিস নং-২২৩১
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ভয় পাচ্ছিলাম যে, আমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরে নতুন কোন দুর্ঘটনা ঘটবে। সুতরাং আমরা এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের মাঝে মাহ্‌দীর আগমন ঘটবে, সে পাঁচ অথবা সাত অথবা নয় বৎসর পর্যন্ত বেঁচে থাকবে (যাইদ সন্দেহে পতিত হয়েছে যে, উর্ধ্বতন বর্ণনাকারী কোন সংখ্যাটি বলেছেন)। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা প্রশ্ন করলাম, এই সংখ্যায় কি বুঝায়? তিনি বললেনঃ বছর। মানুষ তার নিকট এসে বলবে, হে মাহদী! আমাকে কিছু দান করুন, আমাকে কিছু দান করুন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর সে তার কাপড় বা থলেতে যেটুকু পরিমাণ বহন করে নিতে পারবে তিনি তাকে সেটুকু পরিমাণ দান করবেন।
হাসান, ইবনু মা-জাহ(৪০৮৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র এ হাদীসটি আবূ সাঈদ (রাঃ) এর বরাতে অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবাস সিদ্দীক আন-নাজীর নাম বাক্র ইবনু আমর, মতান্তরে বাক্‌র ইবনু কাইস।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ:) এর অবতরণ প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৩
PMMRC হাদিস নং-২২৩২
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের মাঝে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ:) খুব শীঘ্রই ন্যায়বিচারক শাসক হিসাবে অবতরণ করবেন। তিনি ক্রুশ ভঙ্গ করবেন, শুকর হত্যা করবেন এবং জিয্য়া বাতিল করবেন। তখন এতই ধন-সম্পদের প্রাচুর্য হবে যে, কেউ তা গ্রহণ করবে না।
সহীহ্, সহীহাহ (২৪৫৭), বুখারী, মুসলিম আরো পূর্ণাঙ্গ রূপে বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জাল প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৪
PMMRC হাদিস নং-২২৩৩
আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি: নূহ্ (আঃ)-এর পর হতে এমন কোন নবী আসেননি যিনি দাজ্জাল প্রসঙ্গে তাঁর জাতিকে সতর্ক করেননি। আর আমিও তোমাদেরকে তার (দাজ্জাল) প্রসঙ্গে সতর্ক করে দিচ্ছি। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকটে দাজ্জালের পরিচয় বর্ণনা করলেন তারপর তিনি বললেন, যারা আমাকে দেখেছ বা আমার কথা শুনেছ তাদের কেউ হয়ত তার সাক্ষাত পাবে। উপস্থিত জনতা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সে সময় আমাদের অন্তরের অবস্থা কেমন হবে? তিনি বললেনঃবর্তমানে যে রকম আছে সেই রকম বা তার চেয়েও ভাল হবে।
যঈফ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৫৪৮৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনু বুসর, আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস আল-জুযাঈ আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল, ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস হিসাবে এটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জালের আবির্ভাবের লক্ষণ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৫
PMMRC হাদিস নং-২২৩৪
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন জনগনের মাঝে খুতবাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন। তিনি আল্লাহ্ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করার পর দাজ্জালের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বললেনঃ আমি অবশ্যই দাজ্জাল সমন্ধে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। আর এমন কোন নবী অতিবাহিত হননি যিনি তাঁর জাতিকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেননি, এমনকি নূহ (আ:) ও তাঁর সম্প্রদায়কে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আমি তার ব্যাপারে এমন একটি কথা বলতে চাই যা আর কোন নবী তাঁর জাতিকে বলেননি। নিশ্চয়ই সে হবে অন্ধ। অথচ আল্লাহ্ তা’আলা তো অন্ধ নন।
সহীহ্, সহীহ্ আদাবুল মুফরাদ, বুখারী, মুসলিম।
যুহরী (রহঃ) বলেন, আমাকে উমার ইবনু সাবিত আনসারী (রহঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কয়েকজন সাহাবী তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, সেদিন জনগনকে ফিতনা প্রসঙ্গে সাবধান করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জেনে রাখ, তোমাদের কেউই মৃত্যুর আগে তার প্রভুকে দেখতে পাবে না, বিশেষত: তার (দাজ্জালের) দুই চোখের মধ্যবর্তী স্থানে ‘কাফির’ শব্দটি লিখিত থাকবে। যে তার কান্ডক্রিয়া অপছন্দ করবে, সে তা পড়তে সক্ষম হবে।
সহীহ্, সহীহাহ(২৮৬১), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৬
PMMRC হাদিস নং-২২৩৫
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়াহুদীরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তাতে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করবে। এমনকি পাথর পর্যন্ত বলবে, হে মুসলিম! এই যে আমার অন্তরালে এক ইয়াহুদী (লুকিয়ে) আছে, তাকে হত্যা কর।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
কোন স্থান হতে দাজ্জালের আগমন ঘটবে ?
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৭
PMMRC হাদিস নং-২২৩৬
আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বলেছেনঃ প্রাচ্যের ‘খোরাসান’ হতে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। এমন কতক জাতি তার অনুসরণ করবে, যাদের মুখমন্ডল হবে স্তর বিশিষ্ট চওড়া ঢালের মতো।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৪০৭২)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। অধিকন্তু এ হাদীসটি আবুত তাইয়াহ হতে আবদুল্লাহ ইবনু শাওযাব প্রমুখ বর্ণনা করেছেন। আমরা এই হাদীস প্রসঙ্গে শুধমাত্র আবুত তাইয়াহ্’র সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জাল আগমনের আলামত
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৮
PMMRC হাদিস নং-২২৩৭
মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: মহা হত্যাকান্ড, কনষ্টান্টিনোপল বিজয় এবং দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে সাত মাসের মধ্যে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪০৯২)
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে সা'ব ইবনু জাসসামা, আবদুল্লাহ ইবনু বুসর, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৩৯
PMMRC হাদিস নং-২২৩৮
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কনষ্টান্টিনোপল বিজয় সংঘটিত হবে কিয়ামতের কাছাকাছি সময়ে।
সনদ সহীহ্, মাওকুফ।
মাহমূদ বলেন, এ হাদীসটি গারীব। ‘কনষ্টান্টিনোপল’ রোম সাম্রাজ্যের (বর্তমান তুরস্কের) একটি প্রসিদ্ধ শহর। দাজ্জালের আবির্ভাবকালে এটা বিজিত হবে। এটা অবশ্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র কিছু সাহাবীদের যামানায় (আমীর মু’আবিয়ার রাজত্বকালে) বিজিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ মাওকুফ
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জালের অনাচার
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪০
PMMRC হাদিস নং-২২৩৯
আন-নাওয়াস ইবনু সামআন আল-কিলাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সকালে দাজ্জাল প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি এর ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতা তুলে ধরেন। এমনকি আমাদের ধারণা সৃষ্টি হলো যে, সে হয়তো খেজুর বাগানের ওপাশেই বিদ্যমান। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হতে চলে গেলাম, তারপর আবার আমরা তাঁর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আমাদের মধ্যে দাজ্জালের ভীতির চিহ্ন দেখে প্রশ্ন করেনঃ তোমাদের কি হয়েছে? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি সকালে দাজ্জাল প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং এর ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতা এমন ভাষায় উত্থাপন করেছেন যে, আমাদের ধারণা হচ্ছিল যে, হয়তো সে খেজুর বাগানের পাশেই উপস্থিত আছে। তিনি বললেনঃ তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়াও আমার আরো কিছু আশংকা রয়েছে। যদি সে আমার জীবদ্দশাতেই তোমাদের মাঝে আসে তাহলে আমিই তোমাদের পক্ষে তার প্রতিপক্ষ হবো। আর সে যদি আমার অবর্তমানে আবির্ভূত হয়, তাহলে তোমরাই তার প্রতিপক্ষ হবে। আর আল্লাহ্ তা‘আলাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আমার পরিবর্তে সহায় হবেন। সে (দাজ্জাল) হবে কুঞ্চিত (কোঁকড়া) চুলবিশিষ্ট, স্থির দৃষ্টিসম্পন্ন যুবক, সে হবে আবদুল উযযা ইবনু কাতানের অনুরুপ। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার দেখা পায় তাহলে যেন সে সূরা কাহফ-এর প্রাথমিক আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে। তিনি বললেনঃ সে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী কোন এলাকা হতে আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর সে ডানে-বামে ফিতনা ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়াবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দৃঢ়তার সাথে অবস্থান করবে আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে কত দিন দুনিয়াতে থাকবে? তিনি বললেনঃ চল্লিশ দিন। এর একদিন হবে একবছরের সমান, একদিন হবে একমাসের সমান এবং একদিন হবে এক সপ্তাহের সমান, আর অবশিষ্ট দিনগুলো হবে তোমাদের বর্তমান দিনের মতো। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার কি ধারণা, যে দিনটি একবছরের সমান হবে, তাতে একদিনের নামায আদায় করলেই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমরা সেদিনের সঠিক অনুমান করে নেবে (এবং সে অনুযায়ী নামায আদায় করবে)। আমরা আবার প্রশ্ন করলাম, দুনিয়াতে তার চলার গতি কত দ্রুত হবে? তিনি বললেনঃ তার চলার গতি হবে বায়ূচালিত মেঘের অনুরূপ; তারপর সে কোন জাতির নিকট গিয়ে তাদেরকে নিজের দলের দিকে আহবান জানাবে, কিন্তু তারা তাকে মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করবে এবং তার দাবি প্রত্যাখ্যান করবে। সে তখন তাদের নিকট হতে ফিরে আসবে এবং তাদের ধন-সম্পদও তার পিছনে পিছনে চলে আসবে। তারা পরদিন সকালে নিজেদেরকে নিঃস্ব অবস্থায় পাবে। তারপর সে অন্য জাতির নিকট গিয়ে আহবান করবে। তারা তার আহবানে সাড়া দিবে এবং তাকে সত্য বলে মেনে নিবে। সে তখন আকাশকে বৃষ্টি বর্ষনের জন্য আদেশ করবে এবং সে অনুযায়ী আকাশ বৃষ্টি বর্ষন করবে। তারপর সে যামীনকে ফসল উৎপাদনের জন্য নির্দেশ দিবে এবং সে মুতাবিক যামীন ফসল উৎপাদন করবে। তারপর বিকেলে তাদের পশুপালগুলো পূর্বের চেয়ে উঁচু কুঁজবিশিষ্ট মাংসবহুল নিতস্ববিশিষ্ট ও দুগ্ধপুষ্ট স্তনবিশিষ্ট হবে। তারপর সে নির্জন পতিত ভূমিতে গিয়ে বলবে, তোর ভিতরের খনিজভান্ডার বের করে দে। তারপর সে সেখান হতে ফিরে আসবে এবং সেখানকার ধনভান্ডার তার অনুসরণ করবে যেভাবে মৌমাছিরা রানী মৌমাছির অনুসরণ করে। তারপর সে পূর্ণযৌবন এক তরুণ যুবককে তার দিকে আহবান করবে। সে তলোয়ারের আঘাতে তাকে দুই টুকরা করে ফেলবে। তারপর সে তাকে ডাক দিবে, অমনি সে হাস্যোজ্জল চেহারা নিয়ে সামনে এসে দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় এদিকে দামিস্কের পূর্ব প্রান্তের এক মসজিদের সাদা মিনারে হলুদ রংয়ের দুটি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দুজন ফেরেশতার ডানায় ভর করে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) অবতরণ করবেন। তিনি তাঁর মাথা নীচু করলে ফোঁটায় ফোঁটায় এবং উঁচু করলেও মনিমুক্তার ন্যায় (ঘাম) পড়তে থাকবে। তাঁর নিঃশ্বাস যে ব্যক্তিকেই স্পর্শ করবে সে মারা যাবে; আর তাঁর শ্বাসবায়ূ দৃষ্টির শেষ সীমা পর্যন্ত পৌছবে। তারপর তিনি দাজ্জালকে খোঁজ করবেন এবং তাকে ‘লুদ্দ’-এর নগরদ্বারপ্রান্তে পেয়ে হত্যা করবেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নিকট ওয়াহী প্র্র্রেরণ করবেনঃ “আমার বান্দাহদেরকে তূর পাহাড়ে সরিয়ে নাও। কেননা, আমি এমন একদল বান্দাহ অবতীর্ণ করছি যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই” তিনি বলেন, তারপর আল্লাহ্ ইয়াজূজ-মাজূজের দল পাঠাবেন। আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী অনুযায়ী তাদের অবস্থা হলো, “তারা প্রত্যেক উচ্চভূমি হতে ছুটে আসবে” (সূরাঃ আম্বিয়া-৯৬)। তিনি বলেন, তাদের প্রথম দলটি (সিরিয়ার) তাবারিয়া উপসাগর অতিক্রমকালে এর সমস্ত পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। এদের শেষ দলটি এ স্থান দিয়ে অতিক্রমকালে বলবে, নিশ্চয়ই এই জলাশয়ে কোন সময় পানি ছিল। তারপর বাইতুল মাকদিসের পাহাড়ে পৌঁছার পর তাদের অভিযান সমাপ্ত হবে। তারা পরস্পর বলবে, আমরা তো দুনিয়ায় বসবাসকারীদের ধ্বংস করেছি, এবার চল আকাশে বসবাসকারীদের ধ্বংস করি। তারা এই বলে আকাশের দিকে তাদের তীর নিক্ষেপ করবে। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের তীরসমূহ রক্তে রঞ্জিত করে ফিরত দিবেন। তারপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) তাঁর সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। তারা (খাদ্যভাবে) এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পতিত হবেন যে, তখন তাদের জন্য একটা গরুর মাথা তোমাদের এ যুগের একশত দীনারের চাইতে বেশি উত্তম মনে হবে। তিনি বলেন, তারপর ঈসা (আঃ) ও তাঁর সাথীরা আল্লাহ্ তা‘আলার দিকে রুজু হয়ে দু’আ করবেন। আল্লাহ্ তা‘আলা তখন তাদের (ইয়াজূজ-মাজূজ বাহিনীর) ঘাড়ে মহামারীরূপে ‘নাগাফ’ নামক কীটের উৎপত্তি করবেন। তারপর তারা এমনভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে যেন একটি প্রাণের মৃত্যু হয়েছে। তখন ঈসা (আঃ) তার সাথীদের নিয়ে (পাহাড় হতে) নেমে আসবেন। সেখানে তিনি এমন এক বিঘত পরিমাণ জায়গাও পাবেন না, যেখানে সেগুলোর পঁচা দুর্গন্ধময় রক্ত-মাংস ছড়িয়ে না থাকবে। তারপর তিনি সাথীদের নিয়ে আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট দু‘আ করবেন। আল্লাহ্ তা‘আলা তখন উটের ঘাড়ের ন্যায় লম্বা ঘাড়বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি প্রেরণ করবেন। সেই পাখি ওদের লাশগুলো তুলে নিয়ে গভীর গর্তে নিক্ষেপ করবে। এদের পরিত্যক্ত তীর, ধনুক ও তূণীরগুলো মুসলমানগণ সাত বছর পর্যন্ত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা এমন বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যা সমস্ত ঘর-বাড়ী, স্থলভাগ ও কঠিন মাটির স্তরে গিয়ে পৌছবে এবং সমস্ত পৃথিবী ধুয়েমুছে আয়নার মতো ধকধকে হয়ে উঠবে। তারপর যামীনকে বলা হবে, তোর ফল ও ফসলসমূহ বের করে দে এবং বারকাত ও কল্যাণ ফিরিয়ে দে। তখন এরূপ পরিস্থিতি হবে যে, একদল লোকের জন্য একটি ডালিম পর্যাপ্ত হবে এবং একদল লোক এর খোসার ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে। দুধেও এরুপ বারকাত হবে যে, বিরাট একটি দলের জন্য একটি উটনীর দুধ, একটি গোত্রের জন্য একটি গাভীর দুধ এবং একটি ছোট দলের জন্য একটি ছাগলের দুধই যথেষ্ট হবে। এমতাবস্থায় কিছুদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর হঠাৎ আল্লাহ্ তা‘আলা এমন এক বাতাস প্রেরণ করবেন যা সকল ঈমানদারের আত্মা ছিনিয়ে নেবে এবং অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র দুশ্চরিত্রের লোক যারা গাধার মতো প্রকোশ্যে নারী সম্ভোগে লিপ্ত হবে। তারপর তাদের উপর কিয়ামাত সংঘটিত হবে।
সহীহ্, সহীহাহ (৪৮১), তাখরীজ ফাযায়েলুশশাম (২৫), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুর রাহমান ইবনু উয়াযীদ ইবনু জাবিরের সুত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬০. অনু্চ্ছেদঃ
দাজ্জালের পরিচয়
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪১
PMMRC হাদিস নং-২২৪০
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দাজ্জালের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ জেনে রাখ, তোমাদের প্রভু অন্ধ নন। জেনে রাখ, দাজ্জালের ডান চোখ অন্ধ। তার ডান চোখটি মনে হবে যে ফুলে উঠা একটি আঙ্গুর।
সহীহ্, বুখারী (৩৪৯৩), মুসলিম (১/১০৭) প্রশ্নের উল্লেখ ব্যতীত।
আবূ ঈসা বলেন, সা’দ হুযাইফা, আবূ হুরাইরা, আসমা, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, আবূ বাকরা, আইশা, আনাস, ইবনু আব্বাস ও ফালাতান ইবনু আসিম (রাঃ) হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬১. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪২
PMMRC হাদিস নং-২২৪১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দাজ্জাল মদীনায় উপস্থিত হয়ে দেখতে পাবে যে, ফেরেশতাগণ তা পাহারা দিচ্ছেন। অতএব, আল্লাহ্ তা‘আলার ইচ্ছায় মহামারী ও দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না।
সহীহ্, সহীহাহ্ (২৪৫৮), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, ফাতিমা বিনতু কাইস, উসামা ইবনু যাইদ সামুরা, ইবনু জুনদাব ও মিহজান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৩
PMMRC হাদিস নং-২২৪২
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমান হলো ইয়ামানে, কুফর হলো প্রাচ্যে, বকরীওয়ালাদের মধ্যে আছে শান্তি এবং উচ্চঃস্বরে চিৎকারকারী ঘোড়াওয়ালা ও উটওয়ালাদের মধ্যে আছে গর্ব-অহংকার ও প্রদর্শনেচ্ছা। দাজ্জাল মাসীহ আত্মপ্রকাশ করে যখন উহুদের পিছনে উপস্থিত হবে, ফেরেশতারা তখন তার মুখমন্ডল (চলার গতি) কে সিরিয়ার দিকে ঘুরিয়ে দিবেন। আর সে ঐস্থানেই ধ্বংস হবে।
সহীহ্, সহীহাহ (১৭৭০), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬২. অনুচ্ছেদঃ
দাজ্জালকে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) হত্যা করবেন
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৪
PMMRC হাদিস নং-২২৪৩
আমর ইবনু আওফ বংশের আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ আল-আনসারী (রহঃ থেকে বর্ণিতঃ
আমি আমার চাচা মুজাম্মি ইবনু জারিয়া আল-আনসারী (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ ঈসা (আঃ) ‘লুদ্দ’ এর দ্বারপ্রান্তে দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
সহীহ্, কিচ্ছাতুল মাসীহি দ্দাজ্জালি ওয়া কাত্লুহু।
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে ইমরান ইবনু হুসাইন, নাফী ইবনু উতবা, আবূ বারযা, হুযাইফা ইবনু উসাইদ, আবূ হুরাইরা, কাইসান, উসমান ইবনু আবীল আস, জাবির, আবূ উমামা, ইবনু মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, সামুরা ইবনু জুনদাব, নাওয়াস ইবনু সামআন, আমর ইবনু আওফ হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৫
PMMRC হাদিস নং-২২৪৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন নবী প্রেরিত হননি, যিনি তাঁর সম্প্রদায়কে কানা মিথ্যাবাদীর (দাজ্জালের) ব্যাপার সর্তক করেননি। জেনে রাখ, সে অবশ্যই কানা হবে। আর তোমাদের প্রভু তো অন্ধ নন। ঐ মিথ্যাবাদীর দু চোখের মধ্যবর্তী স্থানে ‘কাফ, ফা, রা ’ শব্দটি লিখিত থাকবে।
সহীহ্, তাখরীজু শারহিল আক্বীদাতিত্ তাহাবীয়া (৭৬২), “কিচ্ছাতুল মাসীহিদ্দাজ্জাল” বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
ইবনু সাইয়্যাদ প্রসঙ্গে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৬
PMMRC হাদিস নং-২২৪৫
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন ইবনু সাইদি হাজ্জ কিংবা উমরাহ উপলক্ষ্যে আমার সঙ্গী হলো। সবাই চলে গেল কিন্তু আমি ও সে পিছনে পড়ে গেলাম। আমি তার সাথে একা হয়ে গেলে তার ব্যাপারে জনগন যা বলাবলি করত তা মনে উদয় হলে আমি ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লাম। আমি এক জায়গায় বিশ্রামের জন্য অবতরণ করে তাকে বললাম, তোমার ঐ গাছের নিকট তোমার মালামাল রেখে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর সে একপাল বকরী দেখে একটি পেয়ালা নেয় সেদিকে গেল এবং কিছু দুধ দোহন করে আমার নিকট নিয়ে এল। সে আমাকে বলল, হে আবূ সাঈদ! দুধ পান করুন। তার ব্যাপারে লোকজন বিভিন্ন কথা বলাবলি করার দুরুন আমি তার হাতের কিছু পান করা অপছন্দ করলাম। অতএব, আমি তাকে বললাম, আজকের দিনটি প্রচন্ড গরমের, আমি এরকম দিনে দুধপান করতে পছন্দ করি না। তখন সে আমাকে বলল, হে আবূ সাঈদ! আমাকে ও আমার ব্যাপারে মানুষেরা যে নানা কথা বলে সেজন্য আমার ইচ্ছা হয় একটি গাছে দড়ি বেঁধে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করি। আপনি কি মনে করেন, আমার বিষয় কারো নিকট অজানা থাকলেও আপনাদেরও নিকট তো তা মোটেই অস্পষ্ট নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র হাদীস সম্বন্ধে তো আপনারা অধিক অবহিত। হে আনসার সম্প্রদায়! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি যে, সে (দাজ্জাল) হবে কাফির? অথচ আমি মুসলমান। সে হবে নিঃসন্তান? অথচ আমি আমার সন্তান মদীনায় রেখে এসেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননি যে, মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করাটা তার জন্য বৈধ (সম্ভব) নয়? আমি কি মদীনাবাসী নই? আমি সেখান হতেই তো আপনার সাথে মক্কায় এসেছি। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! সে একটার পর একটা অনবরতভাবে যুক্তি দেখাতে লাগল। অবশেষে আমি মনে মনে বললাম, তার উপর হয়তো মিথ্যারোপ করা হয়েছে। সে আবার বলল, হে আবূ সাঈদ, আল্লাহর শপথ! আমি আপনাকে সঠিক সংবাদ দিব। আল্লাহর শপথ! আমি নিঃসন্দেহে তাকে (দাজ্জালকে) চিনি, তার বাবাকেও চিনি এবং সে এথন কোন এলাকায় আছে তাও জানি। তখন আমি বললাম, তোর পুরো দিনটাই বিফলে যাক।
সহীহ্, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৭
PMMRC হাদিস নং-২২৪৬
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন মদীনার একটি গলিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু সাইদের সাক্ষাৎ পেয়ে তিনি তাকে আটক করলেন। সে ছিল একজন ইয়াহূদী বালক। তার চুল ছিল বেণীবদ্ধ। আবূ বকর ও উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহর রাসূল? সে বলল, আপনি কি সাক্ষ্য দেন যে, আমিও আল্লাহর রাসূল? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি ঈমান এনেছি আল্লাহ্ তা‘আলার উপর, তাঁর ফেরেশতাগণের উপর, তাঁর গ্রন্থসমূহে ও তাঁর রাসূলদের উপর এবং পরকালের উপর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে প্রশ্ন করেনঃ তুমি কী দেখতে পাও? সে বলল, আমি পানির উপর একটি সিংহাসন দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি সমুদ্রে শাইতানের আসন দেখতে পাও। তিনি আরো প্রশ্ন করেনঃ তুমি আর কি দেখ? সে বলল, আমি একজন সত্যবাদী ও দুজন মিথ্যাবাদী অথবা দুজন সত্যবাদী ও একজন মিথ্যাবাদী দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা শুনে বললেন, বিষয়টা তার কাছে তালগোলে পাকিয়ে গেছে। তোমরা দুজনেই একে ত্যাগ কর।

সহীহ্, সহীহাহ, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, উমার, হুসাইন ইবনু আলী, ইবনু উমার, আবূ যার, ইবনু মাসউদ, জাবির ও হাফসা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৮
PMMRC হাদিস নং-২২৪৭
আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকর (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: দাজ্জালের পিতা-মাতার ত্রিশ বছর পর্যন্ত কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করবেনা। তারপর একটি কানা ছেলে জন্ম নেবে। সে হবে খুবই ক্ষতিকর এবং অত্যন্ত অনুপকারী। তার দুই চোখ ঘুমালেও তার অন্তর ঘুমাবে না। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকটে তার পিতা-মাতার বিবরণ দিলেন। তিনি বললেনঃতার পিতার দৈহিক আকৃতি হবে লম্বাটে, হালকা-পাতলা গড়নের এবং তার নাকটা হবে পাখীর ঠোঁটের মত লম্বা। আর তার মা হবে স্থুলকায়, মোটা ও লম্বা হস্তবিশিষ্টা। আবূ বকরা (রাঃ) বলেন, তারপর একসময় আমরা শুনতে পেলাম যে, মাদীনার ইয়াহূদী পরিবারে একটি সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। তখন আমি ও যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) সেখানে গেলাম। আমরা তার পিতা-মাতার নিকট উপস্থিত হলাম এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ণিত বিবরণ তাদের মাঝে দেখতে পেলাম। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনাদের কোন সন্তান আছে কি? তারা বলল, আমাদের ত্রিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করেনি। অবশেষে আমাদের একটি কানা পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে, কিন্তু সে অধিক ক্ষতিকর এবং কম উপকারী। তার দু'চোখ ঘুমায় কিন্তু অন্তর ঘুমায় না। রাবী বলেন, আমরা তাদের নিকট হতে বের হয়ে এসে দেখলাম সে রোদে চাদর মুড়ি দিয়ে পড়ে আছে এবং বিড়বিড় করছে। সে তার চাদর হতে মাথা বের করে প্রশ্ন করল, তোমরা কি বলেছ? আমরা বললাম, তুমি কি আমাদের কথা শুনতে পেরেছ? সে বলল, হ্যাঁ। কেননা আমার দু'চোখ ঘুমিয়ে থাকলে ও অন্তর ঘুমায় না।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৫০৩)
আবূ ঈসা বলেন এ হাদীসটি হাসান গারীব। শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনু সালমান সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৪৯
PMMRC হাদিস নং-২২৪৮
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল সাহাবী নিয়ে ইবনু সাইয়্যাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) ও ছিলেন। সে তখন ‘মাগালা’ গোত্রের দুর্গের পাশে বালকদের সাথে খেলা করছিল। সেও তখন কিশোর ছিল। সে সাড়া পাওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিয়ে তার পিঠে হাত চাপড় দিয়ে প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহর রাসূল? ইবনু সাইয়্যাদ তাঁর দিকে দৃষ্টিপাত করে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নিরক্ষরদে রাসূল! বর্ণনাকারী বলেন, এরপর সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলল, আপনি কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আমিও আল্লাহর রাসূল? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তো আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আবার প্রশ্ন করলেনঃ তোমার নিকট কী আসে? ইবনু সাইয়্যাদ বলল, আমার নিকট সত্যবাদীও আসে মিথ্যাবাদীও আসে। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার বিষয়টা তালগোল পাকিয়ে গেছে। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি একটি বিষয় তোমার জন্য ঠিক করে রেখেছি। বলতো তা কি? এই বলে তিনি মনে মনে পাঠ করলেনঃ “আকাশ সেদিন স্পষ্ট ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে” (সূরাঃ আদ-দুখান-১০)। উত্তরে ইবনু সাইয়্যাদ বলল, সেটা তো “আদ-দুখ” (ধোঁয়া)। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দুর হও! তুই কখনো তোর ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারবি না। উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে সম্মতি দিন, একে মেরে ফেলি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে যদি সত্যিই (দাজ্জাল) হয়ে থাকে তাহলে তার উপর তুমি জয়লাভ করতে পারবে না। আর সে তা না হয়ে থাকলে তবে তাকে মেরে ফেলায় তোমার কোন কল্যাণ নেই। আবদুর রাযযাক বলেন, শব্দটিতে দাজ্জাল বুঝান হয়েছে।

সহীহ্ আদাবুল মুফরাদ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
(শত বছর পর কেউ আর থাকবে না)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫০
PMMRC হাদিস নং-২২৪৯
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুনিয়াতে এখন যে সকল ব্যাক্তি জীবিত আছে, শতবছর পর এদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর (১১০০), সহীহ্, আদাবুল মুফরাদ (৭৫৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার, আবূ সাঈদ ও বুরাইদা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫১
PMMRC হাদিস নং-২২৫০
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবনের শেষ পর্যায়ে আমাদের নিয়ে এশার নামায আদায় করেন। তিনি সালাম ফিরিয়ে খুতবাহ দিতে দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা কি আজকের এই রাতের প্রতি লক্ষ্য করছ? এখন যে সকল ব্যক্তি বেঁচে আছে শতবছর পর তারা আর দুনিয়ার বুকে বেঁচে থাকবে না। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র বক্তব্য “শতবছরের” বিষয়ে লোকেরা আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত হয়ে ভুল করে বসে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র বাণীঃ “শতবছর পর কেউ দুনিয়াতে বেঁচে থাকবে না” –এর তাৎপর্য হলোঃ বর্তমানের এই শতাব্দীটি তখন সমাপ্ত হয়ে যাবে।
সহীহ্, (রাওয), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫২
PMMRC হাদিস নং-২২৫১
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাতাসকে তোমরা গালি দিও না। অপছন্দনীয় কোন কিছু দেখতে পেলে তোমরা এই দু’আ পড়বে, “হে আল্লাহ্! আমরা আপনার নিকট আকাঙ্ক্ষা করি এ বাতাসের কল্যাণ, এর মধ্যে যে কল্যাণ নিহিত আছে তা এবং সে যে বিষয়ে আদেশ প্রাপ্ত হয়েছে তার কল্যাণ। আমরা এ বাতাসের অকল্যাণ হতে তোমর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, এর মধ্যে নিহিত ক্ষতি হতে এবং সে যে বিষয়ে আদেশ প্রাপ্ত হয়েছে তার অকল্যাণ হতে”।
সহীহ্, মিশকাত (১৫১৮), সহীহাহ্ (২৭৫৬), রাওযুন নাযীর (১১০৭), কালিমুত তাইয়্যিব (১৫৪)।
আবূ ঈসা বলেন, আইশা, আবূ হুরাইরা, উসমান ইবনু আবীল আস, আনাস, ইবনু আব্বাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
জাস্সাসা ও দাজ্জাল সংক্রান্ত একটি ঘটনা
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৩
PMMRC হাদিস নং-২২৫২
ফাতিমা বিনতু কাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সময় মিম্বারে উঠে হাসতে হাসতে বললেনঃ আমাকে ‘তামীম আদ-দারী একটি খবর শুনিয়েছে। আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়েছি এবং আমি তোমাদেরকেও তা শুনাতে পছন্দ করি। কোন একদিন ফিলিষ্তীনের কয়েকজন লোক নৌযানে চড়ে সমুদ্র বিহারে যাত্রা করেছিল। হঠাৎ সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে তারা দিকক্রান্ত হয়ে পড়ে। এবং এক অচেনা দ্বীপে এসে পড়ে। তারা সে জায়গাতে এক বিচিত্র ধরনের প্রানীর সন্ধান পায়, যার চুলগুলো ছিল চারদিকে ছাড়ানো। তার প্রশ্ন করল, তুমি কে? সে উত্তর দিল, জাস্সাসা (অনুসন্ধানকারী)। তারা বলল, তুমি আমাদেরকে কিছু অনুসন্ধান দাও। সে বলল, আমি তোমাদেরকে কিছু বলবও না এবং তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইব না, বরং তোমরা এ জনপদের শেষ সীমানায় যাও। সে স্থানে এমন একজন লোক আছে যে তোমাদেরকে কিছু বলবে এবং তোমাদের নিকট কিছু জানার ইচ্ছা করবে। তারপর আমরা গ্রামের শেষ সীমানায় পৌছে দেখতে পেলাম, একটি লোক শিকলে বাঁধা আছে। সে আমাদের বলল তোমরা (সিরিয়ার) ‘যুগার’ নামক স্থানের ঝর্ণার খবর বল। আমরা বললাম, তা পানিপূর্ণ এবং এখনো সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে বলল, ‘বুহাইরা’ (তাবারিয়া উপসাগর) এর কি সংবাদ, তা আমাকে বল। আমরা বললাম, তাও পানিপূর্ণ এবং তা হতে সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে আবার বলল, জর্দান ও ফিলিস্তীনের মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত ‘বাইসান’ নামক খেজুর বাগানের খবর বল। তাতে কি ফল উৎপন্ন হয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে আবার প্রশ্ন করল, নবী প্রসঙ্গে বল, তিনি কি প্রেরিত হয়েছেন? আমরা বললাম হ্যাঁ। সে বলল, তাঁর নিকট জনগণ ভিড়ছে কেমন? আমরা বললাম, খুবই দ্রুত। বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে সে এমন এক লাফ দিল যে, শৃঙ্খলা প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল। আমরা তাকে প্রশ্ন করলাম তুমি কে? সে বলল, আমি দাজ্জাল। সে ‘তাইবা’ ব্যতীত সমস্ত শহরেই প্রবেশ করবে। ‘তাইবা’ মদীনা মুনাওয়ারা।
সহীহ্, “কিচ্ছাতু নুযূলে ঈসা আলাইহিস সালাম” মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং কাতাদা-শাবীর সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। এ হাদীসটি ফাতিমা বিনতু কাইস (রাঃ) হতে শাবীর সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
(সামর্থের বাহিরে কোন কাজে লিপ্ত হওয়া অনুচিত)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৪
PMMRC হাদিস নং-২২৫৩
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মু’মিন ব্যক্তির জন্য নিজেকে অপমানিত করাটা শোভনীয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, সে নিজেকে কিভাবে অপমানিত করে? তিনি বললেনঃ এমন কঠিন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া যার সামর্থ্য তার নেই।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৪০১৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
অত্যাচারী ও নির্যাতিতকে সাহায্য প্রদান
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৫
PMMRC হাদিস নং-২২৫৪
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার ভাইকে সাহায্য কর, সে নির্যাতনকারী হোক কিংবা নির্যাতিতই হোক না কেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! নির্যাতিতকে তো সাহায্য করবই কিন্তু নির্যাতনকারীকে কেমন করে সাহায্য করতে পারি? তিনি বললেনঃ তাকে অত্যাচার করা হতে বিরত রাখাই তার জন্য তোমার সাহায্য।
সহীহ্, ইরওয়া (২৪৪৯), রাওযুন নাযীর (৩২), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
(তিন প্রকার কাজের জন্য তিন ধরনের ফল)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৬
PMMRC হাদিস নং-২২৫৫
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গ্রামে বসবাসকারী ব্যক্তি হয় কঠোর প্রকৃতির। শিকারের পিছনে লেগে থাকা ব্যক্তি হয় অসচেতন। আর রাজ-দরবারে গমনকারী ব্যক্তি বিপদে জড়িয়ে যায়।
সহীহ্, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৭০১), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৫৪৭)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর রিওয়ায়াত হিসাব গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র সুফিয়ান সাওরীর সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭০. অনুচ্ছেদঃ
রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি মিথ্যা আরোপকারী জাহান্নামী
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৭
PMMRC হাদিস নং-২২৫৬
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি রাসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা অবশ্যই সাহায্য প্রাপ্ত হবে, বিপদগ্রস্তও হবে এবং তোমাদের মাধ্যমে অনেক জায়গা বিজিতও হবে। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সেই যুগ পায় তাহলে সে যেন আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয় করে এবং সৎকাজের আদেশ দেয় ও অসৎ কাজে বাঁধা প্রদান করে। আর যে লোক ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করে সে যেন জাহান্নামেই তার থাকার জায়গা তৈরী করে নেয়।
সহীহ্ সহীহাহ্ (১৩৮৩), দেখুন হাদীস নং (২৮০৯)।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭১. অনুচ্ছেদঃ
ফিতনার বন্ধ দরজা ভেঙ্গে যাবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৮
PMMRC হাদিস নং-২২৫৭
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় উমার (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, ফিতনা প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সকল কথা বলে গেছেন, তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি সেগুলোকে বেশি মনে রাখতে সক্ষম হয়েছে? হুযাইফা (রাঃ) বললেন, আমি। তারপর হুযাইফা (রাঃ) বললেন, কোন লোকের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি ও প্রতিবাশীর ক্ষেত্রে যে বিপদ অর্থাৎ ত্রুটি-বিচ্যুতি হয় এগুলোর জন্য নামাজ, রোযা, দান-খাইরাত, সৎকাজের প্রতি আদেশ ও মন্দ কাজে বাঁধা দেয়া হচ্ছে কাফফারা স্বরূপ।
উমার (রাঃ) তখন বলেন, আমি এ সম্বন্ধে তোমাকে প্রশ্ন করিনি, বরং সেই ফিতনা প্রসঙ্গে যা সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় মাথা তুলে আসবে। তিনি বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! সেই ফিতনা ও আপনার মাঝে একটি বন্ধ দরজা আছে। উমার (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, সেই দরজা কি ভাঙ্গা হবে, না খুলে দেয়া হবে? তিনি বলেন বরং তা ভাঙ্গা হবে। তিনি বললেন, তাহলে তো কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হবে না। আবূ ওয়াইল (রহঃ) বলেন, হাম্মাদ বর্ণিত হাদীসে আছেঃ আমি মাসরুককে বললাম, আপনি সেই দরজা প্রসঙ্গে হুযাইফা (রাঃ) কে প্রশ্ন করুন। তিনি এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলেন। তিনি (হুযাইফা) উত্তরে বলেন, উমার (রাঃ) হলেন সেই দরজা।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৫৫৫) ‌ বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭২. অনুচ্ছেদঃ
শাসকের অন্যায়ের সমর্থন করা ও না করার পরিণাম
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৫৯
PMMRC হাদিস নং-২২৫৮
কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে আমাদের সামনে আসলেন। আমরা সংখ্যায় ছিলাম নয় জন; পাঁচজন আরব এবং চারজন অনারব অথবা এর বিপরীত। তিনি বললেনঃ তোমরা শোন, তোমরা কি শুনেছ? খুব শীঘ্রই আমার পরে এমন কিছু সংখ্যক শাসক আবির্ভূত হবে, যে লোক তাদের সংস্পর্শে গিয়ে তাদের মিথ্যাচারকে সমর্থন করবে এবং তাদেরকে অত্যাচারে সহায়তা দান করবে সে আমার দলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয় এবং আমিও তার দলে অন্তর্ভুক্ত নই। আর সে ব্যক্তি হাওযে কাওসারে আমার সামনে পৌঁছতে পারবে না। আর যে লোক তাদের সংস্পর্শে যাবে না, তাদের অত্যাচারে সহায়তা দান করবেনা না তাদের মিথ্যাচারকে সমর্থন করবে না, সে আমার এবং আমিও তার। সে হাওযে কাওসারে আমার সাক্ষাত লাভ করবে।
সহীহ্, ৬১৪ নং হাদীস আরও অধিক বর্ণিত হয়েছে।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই মিসআরের বর্ণিত হাদীস হিসাবে জেনেছি। হারুন বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব (রহঃ) পূর্বোক্ত হাদীসের ন্যায় হাদীস বর্ণনা করেছেন সুফিয়ান হতে, তিনি আবূ হুসাইন হতে, তিনি শাবী হতে, তিনি আসিম আল-আদাবী হতে, তিনি কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে। হারুন আরো বলেন, মিসআর বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীসটি সুফিয়ান-যুবাইদ হতে, তিনি ইবরাহীম (ইনি ইবরাহীম নাখঈ নন) হতে, তিনি কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে মুহাম্মাদ (রহঃ) বর্ণনা করেন। হুযাইফা ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
ধর্মে অটল থাকা হাতে অগ্নি রাখার মতো কঠিন বিষয় হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬০
PMMRC হাদিস নং-২২৫৯
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষের উপর এমন একটি যুগের আগমন ঘটবে যখন তার পক্ষে ধর্মের উপর ধৈর্য ধারন করে থাকাটা জ্বলন্ত অঙ্গার মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা ব্যক্তির মতো কঠিন হবে।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৯৫৭)।
আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রে হাদীসটি গারীব। উমার ইবনু শাকির বসরার অধিবাসী মুহাদ্দিস। তার সূত্রে একাধিক হাদীস বিশারদ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
পুরুষের উপর নারীর কর্তিত্ব
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬১
PMMRC হাদিস নং-২২৬০
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আমার উম্মাত দাম্ভিকতার সাথে চলবে এবং পারস্য ও রোমের রাজবংশের লোকেরা তাদের দাসানুদাস হবে তখন এই উম্মাতের উত্তম ব্যক্তিদের উপর দুষ্ট ব্যক্তিদের কর্তিত্ব চাপিয়ে দেয়া হবে।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৯৫৪)।
আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রে হাদীসটি গারীব। এটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারী এর সূত্রে আবূ মু‘আবিয়া (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-ওয়াসিতী-আবূ মু‘আবিয়া হতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারী হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ) হতে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবূ মু‘আবিয়া-ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ) এর সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটির মূল প্রসঙ্গে কিছু জানা যায়নি। মূসা ইবনু উবাইদার বর্ণনাটি প্রসিদ্ধ। অধিকন্তু এ হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) মুরসালভাবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু দীনার-ইবনু উমার (রাঃ) হতে এই সূত্রটি তাতে উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
যে জাতি নিজেদের শাসক হিসাবে নারীকে নিয়োগ করে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬২
PMMRC হাদিস নং-২২৬১
আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট হতে শুনা একটি উক্তি দ্বারা আল্লাহ্ তাআ‘লা আমাকে (উষ্ট্রের যুদ্ধে অংশগ্রহন হতে) রক্ষা করেছেন। পারস্য সম্রাট কিস্‌রা নিহত হওয়ার পর তিনি প্রশ্ন করেনঃ তারা কাকে শাসক হিসেবে নিয়োগ করেছে? সাহাবীগণ বলেন, তার কন্যাকে। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে জাতি নিজেদের শাসক হিসাবে নারীকে নিয়োগ করে সে জাতির কখনো কল্যাণ হতে পারে না। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আইশা (রাঃ) বসরায় আসার পর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ঐ বানী আমার মনে পরে গেল। অতএব এর মাধ্যমেই আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে (আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ হতে) রক্ষা করেন।

সহীহ্, ইরওয়া (২৪৫), বুখারী।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
উত্তম লোক ও নিকৃষ্ট লোক
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৩
PMMRC হাদিস নং-২২৬২
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে থাকা কয়েকজন লোকের পাঁশে এসে দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম কে এবং সবচাইতে নিকৃষ্ট কে তা কি আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দিব না? বর্ণনাকারী বলেন, সকলেই চুপ করে রইল। তারপর তিনি ঐ কথা তিনবার জিজ্ঞেস করেন। তারপর এক ব্যক্তি বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমাদের মধ্যে কে সর্বাধিক উত্তম এবং কে সর্বাধিক নিকৃষ্ট। তিনি বললেনঃ সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম যার নিকট কল্যাণ কামনা করা যায় এবং যার ক্ষতি হতে মুক্ত থাকা যায়। আর সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট যার নিকট কল্যাণের আশা করা যায় না এবং যার ক্ষতি হতেও নিরাপদ থাকা যায় না।

সহীহ্, মিশকাত (৪৯৯৩)।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৭. অনুচ্ছেদঃ
উত্তম শাসক ও নিকৃষ্ট শাসক
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৪
PMMRC হাদিস নং-২২৬৩
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে উত্তম শাসক (নেতা) ও নিকৃষ্ট শাসকদের ব্যাপারে জানিয়ে দিব না? উত্তম শাসক হচ্ছে তারাই যাকে তোমরা ভালবাস এবং তারাও তোমাদেরকে ভালবাসে, আর তোমরা তাদের জন্য দু’আ কর এবং তারাও তোমাদের জন্য দু’আ করে। নিকৃষ্ট শাসক হচ্ছে তারাই যাকে তোমরা ঘৃণা কর এবং তারাও তোমাদেরকে ঘৃণা করে আর তোমরা তাদেরকে অভিশাপ প্রদান কর এবং তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ প্রদান করে।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৯০৭), মুসলিম প্রশ্নের উল্লেখ ব্যতীত।
আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রে হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র মুহাম্মাদ ইবনু হুমাইদের বর্ণনায় জেনেছি। আর মুহাম্মাদ তার স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণে সমালোচিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৮. অনুচ্ছেদঃ
শাসকের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে হবে
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৫
PMMRC হাদিস নং-২২৬৪
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শীঘ্রই তোমাদের মধ্যে এমন কিছু সংখ্যক ব্যক্তি শাসক হবে যাদের কতগুলো কাজ তোমরা পছন্দ করবে এবং কতগুলো কাজ অপছন্দ করবে। যে লোক (তাদের) অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে, আর যে লোক তাকে ঘৃণা করবে সেও দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু যে লোক তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে এবং তার অনুসরণ করবে সে অন্যায়ের অংশীদার বলে গণ্য হবে। প্রশ্ন করা হলোঃ হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমারা কি তাদের বিরুদ্ধে অস্র ধারণ করব না? তিনি বললেন, না, তারা যে পর্যন্ত নামায আদায় করে।
সহীহ্, মুসলিম (৬/২৩)।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৬
PMMRC হাদিস নং-২২৬৫
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যখন তোমাদের মধ্যকার উত্তম লোক তোমাদের শাসক হবে তোমাদের সম্পদশালীরা দানশীল হবে এবং তোমাদের কর্ম পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে, তখন ভূতলের তুলনায় ভূ-পৃষ্ঠই তোমাদের জন্য উত্তম হবে। আর যখন তোমাদের মধ্যকার খারাপ লোক তোমাদের শাসক হবে, তোমাদের সম্পদশালীরা কৃপণ হবে এবং তোমাদের কার্যাবলী তোমাদের নারীদের ওপর ন্যস্ত করা হবে তখন ভূতলই ভূপৃষ্ঠের তুলনায় তোমাদের জন্য উত্তম হবে (অর্থাৎ জীবনের চেয়ে মৃত্যুই উত্তম)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র সালিহ আল-মুররীর সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। সালিহ-এর রিওয়ায়াত অত্যন্ত গারীব (অখ্যাত) যার কোন সমর্থক পাওয়া যায় না। তিনি সজ্জন হলেও হাদীসের ব্যাপারে তাকে অনুসরণ করা যায় না।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৭
PMMRC হাদিস নং-২২৬৬
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এমন এক যুগে অবস্থান করছ যে, যদি তোমাদের কোন ব্যাক্তি নির্দেশিত বিষয়ের (কর্তব্যকর্মের) এক-দশমাংশ পরিমাণও ত্যাগ করে তাহলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। তারপর এমন এক যুগের আগমন ঘটবে যে, কোন ব্যাক্তি যদি নির্দেশিত বিষয়ের এক-দশমাংশ পরিমাণও পালন করে তাহলে সে মুক্তি লাভ করবে।
সহীহ্, সহিহাহ্‌ (২৫১০)।
আবূ ইসা বলেন, এ হাদীসটি গরীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র নু’আইম ইবনু হাম্মাদের সূত্রে সুফিয়ান ইবনু উআইনা হতে জেনেছি। আবূ যার ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭৯. অনুচ্ছেদঃ
(যে স্থান হতে ফিতনার উৎপত্তি)
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৮
PMMRC হাদিস নং-২২৬৭
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে প্রাচ্যের দিকে ইশারা করে বললেনঃ এই দিকেই ফিতনার স্থান, যে প্রান্ত হতে শাইতানের শিং উদিত হয়।

সহীহ্, তাখরীজ ফাজা-ইলুশশাম (হাদীস নং ৮), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ইসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্‌।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮০. অনুচ্ছেদঃ
কর্তব্যকর্মের এক-দশমাংশ ত্যাগ করলেই ধ্বংস
সুনানে' আত-তিরমিজি  হাদিস নং-  ২২৬৯
PMMRC হাদিস নং-২২৬৮
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: খুরাসানের দিক হতে কালো পতাকাবাহীগণ আবির্ভূত হবে (মাহ্দীর সর্মথনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস)-এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা ফিরাতে পারবে না।
সনদ দুর্বল, আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
(সুনানে আত-তিরমিজি সমাপ্ত)
(সুনানে আবু দাউদ-হতে ফিতনাহ ও বিপর্যয়  অধ্যায়


প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:     
 “যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” 
(বুখারী ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ

Please Share On
  

ঈমান বিষয়ক ৬৯টি সহিহ হাদিস

  বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ঈমান বিষয়ক ৬৯টি সহিহ হাদিস মূল গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) (১) উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্...