Search This Blog

Tuesday, February 4, 2020

বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২৩ (ফিতনা অধ্যায়)-হাদিস সম্ভার-২৪টি হাদিস


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২৩
(ফিতনা অধ্যায়)
হাদিস গ্রন্থ-হাদিস সম্ভার- ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরি
(২৪৭৮-২৫০১টি মোট  ২৪টি হাদিস)
হাদিস সম্ভার-সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত)
(জাল-জইফ হাদিস আমলযোগ্য নয়)
 (হাদিস সম্ভার-হুবগু প্রকাশিত)
হাদিস সম্ভার
১৯
ফিতনা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ
ফিতনা সম্পর্কিত হাদীসসমূহ
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৭৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৮
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “মানুষের হৃদয়ে চাটাইয়ের পাতা (বা ছিলকার) মত একটির পর একটি করে ক্রমান্বয়ে ফিতনা প্রাদুর্ভূত হবে। সুতরাং যে হৃদয়ে সে ফিতনা সঞ্চারিত হবে সে হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে যাবে এবং যে হৃদয় তার নিন্দা ও প্রতিবাদ করবে সে হৃদয়ে একটি সাদা দাগ অঙ্কিত হবে। পরিশেষে (সকল মানুষের) হৃদয়গুলি দুই শ্রেণীর হৃদয়ে পরিণত হবে। প্রথম শ্রেণীর হৃদয় হবে মসৃণ পাথরের ন্যায় সাদা; এমন হৃদয় আকাশ-পৃথিবী অবশিষ্ট থাকা অবধি-কাল পর্যন্ত কোন ফিতনা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর দ্বিতীয় শ্রেণীর হৃদয় হবে উবুড় করা কলসীর মত ছাই রঙের; এমন হৃদয় তার সঞ্চারিত ধারণা ছাড়া কোন ভালোকে ভালো বলে জানবে না এবং মন্দকে মন্দ মনে করবে না (তার প্রতিবাদও করবে না)।” (মুসলিম ৩৮৬ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৭৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৯
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের মাঝে যে যুগ আসবে তার চেয়ে তার পরবর্তী যুগ হবে অধিকতর মন্দ। আর এইভাবে মন্দ হতে হতে প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময় এসে উপস্থিত হয়ে পড়বে।” (আহমাদ ১২৩৪৭, বুখারী ৭০৬৮, তিরমিযী ২২০৬, ইবনে মাজাহ, সহীহুল জামে’ ৭৫৭৬ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৭৭
PMMRC হাদিস নং-২৪৮০
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “মানুষের নিকট এমন ধোকাব্যঞ্জক যুগ আসবে, যাতে মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদীরূপে এবং সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত করা হবে। যখন খেয়ানতকারীকে আমানতদার মনে করা হবে এবং আমানতদার আমানতে খেয়ানত করবে। যখন জনসাধারণের ব্যাপারে তুচ্ছ লোক মুখ চালাবে।” (আহমাদ ৭৯১২, ইবনে মাজাহ ৪০৩৬, হাকেম ৮৪৩৯, সহীহুল জামে’ ৩৬৫০ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৭৮
PMMRC হাদিস নং-২৪৮১
ষাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “অনতিদূরে সকল বিজাতি তোমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে, যেমন ভোজনকারীরা ভোজপাত্রের উপর একত্রিত হয়। (এবং চারদিক থেকে ভোজন করে থাকে।)” একজন বলল, ‘আমরা কি তখন সংখ্যায় কম থাকব, হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, “বরং তখন তোমরা সংখ্যায় অনেক থাকবে। কিন্তু তোমরা হবে তরঙ্গতাড়িত আবর্জনার ন্যায় (শক্তিহীন, মূল্যহীন)। আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের বক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি ভীতি তুলে নেবেন এবং তোমাদের হৃদয়ে দুর্বলতা সঞ্চার করবেন।” একজন বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! দুর্বলতা কী?’ তিনি বললেন, “দুনিয়াকে ভালোবাসা এবং মরতে না চাওয়া।” (আবূ দাঊদ ৪২৯৯, মুসনাদে আহমাদ ২২৩৯৭ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৭৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৮২
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “ভবিষ্যতে বহু ফিতনা দেখা দেবে। যাতে উপবেশনকারী ব্যক্তি দণ্ডায়মান অপেক্ষা উত্তম হবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি বিচরণকারী অপেক্ষা উত্তম হবে এবং বিচরণকারী ব্যক্তি ধাবমান অপেক্ষা উত্তম হবে। নিদ্রিত ব্যক্তি জাগ্রত অপেক্ষা উত্তম হবে এবং জাগ্রত ব্যক্তি দণ্ডায়মান অপেক্ষা উত্তম হবে। যে ব্যক্তি তার প্রতি উঁকি দিয়ে দেখবে, সে (ফিতনা) তাকে গ্রাস করে ফেলবে। অতএব যে কেউ সে সময় কোন আশ্রয়স্থল পায়, সে যেন সেখানে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে।” (মুসলিম ৭৪২৯,, মিশকাত ৫৩৮৪ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮০
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৩
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “মানুষের উপর এমন এক যুগ আসছে, যখন মুসলিমের জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ হবে ভেঁড়া-ছাগল; তাই নিয়ে পর্বত-শিখরে ও পানির জায়গাতে চলে যাবে; ফিতনা থেকে নিজ দ্বীন নিয়ে পলায়ন করবে।” (বুখারী ৩৬০০ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮১
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৪
উহবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ভবিষ্যতে ফিতনা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা দেবে। সুতরাং সে সময় এলে তুমি তোমার তরবারি ভেঙ্গে ফেলো এবং কাষ্ঠের তরবারি বানিয়ে নিয়ো।” (আহমাদ ২০৬৭১ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮২
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৫
আবূ যার্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “ফিতনার সময় যদি তুমি ভয় কর যে, তরবারির চমক তোমার চোখ ঝলসে দেবে, তাহলে তুমি তোমার চেহারা আবৃত করে নাও।” (আহমাদ ২১৪৪৫, আবূ দাঊদ ৪২৬৩, ইবনে মাজাহ ৩৯৫৮ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৬
খালেদ বিন উরফুত্বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “হে খালেদ! আমার পরে বহু অঘটন, ফিতনা ও মতানৈক্য সৃষ্টি হবে। সুতরাং তুমি পারলে সে সময় আল্লাহর হত বান্দা হও এবং হত্যাকারী হয়ো না।” (আহমাদ ২২৪৯৯, হাকেম ৮৫৭৮, ত্বাবরানী ১৭০৩, আবূ য়া'লা ১৫২৩ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৭
হুযাইফাহ বিন য়্যামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লোকেরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ইষ্ট ও মঙ্গল বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করত, আর আমি ভুক্তভোগী হওয়ার আশঙ্কায় অনিষ্ট ও অমঙ্গল বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতাম। একদা আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমরা মূর্খতা ও অমঙ্গলে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ আমাদেরকে এই মঙ্গল দান করলেন। কিন্তু এই মঙ্গলের পর আর অমঙ্গল আছে কি?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ আছে।" আমি বললাম, ‘অতঃপর ঐ অমঙ্গলের পর আর মঙ্গল আছে কি?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আর তা হবে ধোঁয়াটে।”(অর্থাৎ, বিশুদ্ধ ও খাঁটি মঙ্গল থাকবে না। বরং তার সাথে অমঙ্গল, বিঘ্ন, মতানৈক্য এবং চিত্ত-বিকৃতির ধোঁয়াটে পরিবেশ থাকবে।) আমি বললাম, ‘তার মধ্যে ধোঁয়াটা কি?’ তিনি বললেন, “এক সম্প্রদায় হবে, যারা আমার সুন্নাহ (তরীকা) ছাড়া অন্যের সুন্নাহ (তরীকা) অনুসরণ করবে এবং আমার হেদায়াত (পথনির্দেশ) ছাড়াই (মানুষকে) পথপ্রদর্শন করবে। যাদের কিছু কাজকে চিনতে পারবে (ও ভালো জানবে) এবং কিছু কাজকে অদ্ভূত (ও মন্দ) জানবে।” আমি বললাম, ‘ঐ মঙ্গলের পর আর অমঙ্গল আছে কি?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ, (সে যুগে) জাহান্নামের দরজাসমূহে দন্ডায়মান আহবানকারী (আহবান করবে)। যে ব্যক্তি তাদের আহবানে সাড়া দেবে, তাকে তারা ওর মধ্যে নিক্ষিপ্ত করবে।” আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদেরকে তাদের পরিচয় বলে দিন।’ তিনি বললেন, “তারা আমাদেরই চর্মের (স্বজাতি) হবে এবং আমাদেরই ভাষায় কথা বলবে।” আমি বললাম, ‘আমাকে কি আদেশ করেন -যদি আমি সে সময় পাই?’ তিনি বললেন, “মুসলিমদের জামাআত ও ইমাম (নেতা)র পক্ষাবলম্বন করবে।” আমি বললাম, ‘কিন্তু যদি ওদের জামাআত ও ইমাম না থাকে?’ তিনি বললেন, “ঐ সমস্ত দল থেকে দূরে থাকবে; যদিও তোমাকে কোন গাছের শিকড় কামড়ে থাকতে হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমার ঐ অবস্থাতেই মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়েছে।” (বুখারী ৩৬০৬, ৭০৮৪, মুসলিম ৪৮৯০, মিশকাত ৫৩৮২ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৮
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পাঁচটির একটি পালন করবে সে আল্লাহর যামানতে হবে; কোন রোগীর সাথে সাক্ষাৎ করে তার অবস্থা জানবে, অথবা জিহাদে প্রস্থান করবে, কিংবা তার ইমাম বা নেতার নিকট তার শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে আগমন করবে, অথবা (প্রকাশ্য কুফরী্ শুরু না হলে ইমামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা বিদ্রোহ ঘোষণা না করে) স্বগৃহে উপবেশন করবে যাতে তার বাকশক্তি ও অন্যান্য শক্তি হতে জনগণ এবং জনগণের বিভিন্ন অত্যাচার হতে সে নিরাপদে থাকবে।” (আহমাদ ২২০৯৩, ত্বাবারানী ১৬৪৮৫, সঃ জামে' ৩২৫৩ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৮৯
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ফিতনার সময় মানুষের নিরাপত্তার উপায় তার স্বগৃহে অবস্থান।” (দাইলামী, সঃ জামে’৩৬৪৯ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৭
PMMRC হাদিস নং-২৪৯০
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট থেকে দু’টি (জ্ঞান) পাত্র সংরক্ষণ করেছি। যার একটি তো আমি প্রচার করে দিয়েছি। কিন্তু ওর দ্বিতীয়টি যদি প্রচার করতাম, তাহলে আমার এই কণ্ঠনালী কাটা যেত। (বুখারী ১২০ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৮
PMMRC হাদিস নং-২৪৯১
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বলেছিলেন, “তোমার কওম যদি কুফরীর নিকটবর্তী যুগের (নও-মুসলিম) না হত, তাহলে অবশ্যই আমি কা' বা ঘরকে ভেঙ্গে ইবরাহীম (আঃ)-এর ভিত্তি অনুসারে পুনর্নির্মাণ করতাম এবং তার জন্য দু' টি দরজা বানাতাম। একটি দরজা দিয়ে প্রবেশ করত ও অন্যটি দিয়ে বের হতো।” (বুখারী ১২৬, মুসলিম ৩৩০৮, আহমাদ, নাসাঈ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৮৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৯২
ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনে উমার (রাঃ) শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পূর্ব দিকে মুখ ক’রে বলেছেন, “সাবধান! ওখানে আছে ফিতনা, ওখানে আছে ফিতনা, যেখান হতে শয়তানের শিং উদয় হবে।” (বুখারী ৭০৯২, মুসলিম ৭৪৭৬ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯০
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৩
ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘তোমাদের তখন কী অবস্থা হবে, যখন তোমাদেরকে ফিতনা-ফাসাদ গ্রাস করে ফেলবে? যাতে শিশু প্রতিপালিত (বড়) হবে এবং বড় বৃদ্ধ হবে, (তা সকলের অভ্যাসে পরিণত হবে) আর তাকে সুন্নাহ (দ্বীনের তরীকা) মনে করা হবে। পরন্তু তার যদি কোনদিন পরিবর্তন সাধন করা হয় তাহলে লোকেরা বলবে, ‘এ কাজ গর্হিত !’
তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘(হে ইবনে মাসঊদ!) এমনটি কখন ঘটবে?’ তিনি বললেন, ‘যখন তোমাদের মধ্যে আমানতদার লোক কম হবে ও আমীর (বা নেতার সংখ্যা) বেশী হবে, ফকীহ (বা প্রকৃত আলেমের সংখ্যা) কম হবে ও ক্বারী (কুরআন পাঠকারীর) সংখা বেশী হবে, দ্বীন ছাড়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে জ্ঞান অন্বেষণ করা হবে এবং আখেরাতের আমল দ্বারা পার্থিব সামগ্রী অনুসন্ধান করা হবে।’ (আব্দুর রাযযা্ক ২০৭৪২, ইবনে আবী শাইবা ৩৭১৫৬, সহীহ তারগীব ১১১)
যুগের মানুষ খারাপ হলে অথবা ধর্মীয় ব্যাপারে ফিতনার আশঙ্কা হলে অথবা হারাম ও সন্দিহান জিনিসে পতিত হওয়ার ভয় হলে অথবা অনুরূপ কোন কারণে নির্জনতা অবলম্বন করা উত্তম।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
অর্থাৎ, সুতরাং তোমরা আল্লাহর দিকে পলায়ন কর; নিশ্চয় আমি তাঁর পক্ষ হতে তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। (সূরা যারিয়াহ ৫০ আয়াত)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯১
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৪
সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, “নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ঐ বান্দাকে ভালোবাসেন, যে পরহেযগার (সংযমশীল), অমুখাপেক্ষী ও আত্মগোপনকারী।”  (মুসলিম ৭৬২১ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯২
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৫
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “ঐ মু’মিন যে আল্লাহর পথে তার জান ও মাল দিয়ে যুদ্ধ করে।” সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “তারপর ঐ ব্যক্তি যে কোন গিরিপথে নির্জনে নিজ প্রতিপালকের ইবাদত করে।”
অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে আল্লাহকে ভয় করে এবং লোকেদেরকে নিজের মন্দ আচরণ থেকে নিরাপদে রাখে।” (বুখারী ২৭৮৬, ৬৪৯৪, মুসলিম ৪৯৯৪-৪৯৯৫ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৬
উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সত্বর এমন এক সময় আসবে যে, ছাগল-ভেঁড়াই মুসলিমের সর্বোত্তম মাল হবে; যা নিয়ে সে ফিতনা থেকে তার দ্বীনকে বাঁচানোর জন্য পাহাড়-চূড়ায় এবং বৃষ্টিবহুল (অর্থাৎ, তৃণবহুল) স্থানে পলায়ন করবে।” (বুখারী ১৮, ৩৩০০ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৭
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি, যিনি বকরী চরাননি।” তাঁর সাহাবীগণ বললেন, ‘আর আপনিও?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ! আমিও কয়েক ক্বীরাত্বের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের বকরী চরাতাম।” (বুখারী ২২৬২ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৮
উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “লোকেদের মধ্যে সর্বোত্তম জীবন সেই ব্যক্তির, যে আল্লাহর পথে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে আছে। যখনই সে যুদ্ধের ভয়ানক শব্দ শোনে, তখনই সেখানে তার পিঠে চড়ে দ্রুতগতিতে পৌঁছে যায়। দ্রুতগতিতে পৌঁছে সে হত্যা অথবা মৃত্যুর সম্ভাব্য জায়গাগুলো খোঁজ করে। অথবা সর্বোত্তম জীবন সেই ব্যক্তির, যে কতিপয় ছাগল-ভেঁড়া নিয়ে কোন পাহাড়-চূড়ায় কিংবা কোন উপত্যকার মাঝে বসবাস করে। সেখানে সে তার নিকট মৃত্যু আসা পর্যন্ত নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং নিজ প্রতিপালকের ইবাদত করে। লোকেদের মধ্যে এ ব্যক্তি উত্তম অবস্থায় রয়েছে।” (মুসলিম ৪৯৯৭ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ
ফিত্না-ফাসাদের সময় উপাসনা করার ফযীলত
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৯৯
মা’ক্বিল ইবনে য়্যাসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ফিতনা-ফাসাদের সময় ইবাদত-বন্দেগী করা, আমার দিকে ‘হিজরত’ করার সমতুল্য।” (মুসলিম ৭৫৮৮, মিশকাত ৫৩৯১ নং)
* (ঈমান ও দ্বীন বাঁচানোর জন্য স্বদেশত্যাগ করাকে ‘হিজরত’ করা বলে।)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৭
PMMRC হাদিস নং-২৫০০
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “ফিতনায় সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে আল্লাহর দুশমনদের পিছনে ধাওয়া করে, তাদেরকে ভয় দেখায় এবং তারা তাকে ভয় দেখায়। আর সেই ব্যক্তি, যে কোন বেদুঈন (জনহীন) এলাকায় পৃথক বসবাস ক’রে তার উপর আল্লাহর (নির্ধারিত) হক আদায় করে।” (হাকেম ৮৩৮০, ৮৪৩৩, সিঃ সহীহাহ ৬৯৮ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস সম্ভার হাদিস নং-১৮৯৮
PMMRC হাদিস নং-২৫০১
আবূ ষা’লাবাহ খুশানী কর্তৃক থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের পরবর্তীতে আছে ধৈর্যের যুগ। সে (যুগে) ধৈর্যশীল হবে মুষ্টিতে অঙ্গার ধারণকারীর মতো। সে যুগের আমলকারীর হবে পঞ্চাশ জন পুরুষের সমান সওয়াব।” জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! পঞ্চাশ জন পুরুষ আমাদের মধ্য হতে, নাকি তাদের মধ্য হতে?’ তিনি বললেন, “না, বরং তোমাদের মধ্য হতে!” অন্য বর্ণনায় আছে, “তোমাদের পঞ্চাশজন শহীদের সমান সওয়াব!” (আবূ দাঊদ ৪৩৪৩, তিরমিযী ৩০৫৮, ইবনে মাজাহ ৪০১৪, ত্বাবারানী ১৮০৩৩, সঃ জামে’ ২২৩৪ নং)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(হাদিস সম্ভার সমাপ্ত)

(আল লু'লু ওয়াল মারজান –হতে ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ অধ্যায়



 প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল
ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ

Please Share On


No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...