Search This Blog

Sunday, February 2, 2020

বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২২-(ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ অধ্যায়)-৩৬টি হাদিস


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২২
(ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ অধ্যায়)
হাদিস গ্রন্থ-আল লু'লু ওয়াল মারজান- তাওহীদ পাবলিকেশন
(২৪৪২- ২৪৭৭টি মোট  ৩৬টি হাদিস)
 (আল লু'লু ওয়াল মারজান-সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত)
(জাল-জইফ হাদিস আমলযোগ্য নয়)
 (আল লু'লু ওয়াল মারজান--হুবগু প্রকাশিত)
আল লু'লু ওয়াল মারজান
৫২
ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ              
১৮২৯-১৮৬৪
৫২/১.
ফিতনা নিকটবর্তী হওয়া এবং ইয়াজুজ মাজুজের (দেয়াল) খুলে যাওয়া।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮২৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৪২
যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর নিকট আসলেন এবং বলতে লাগলেন, লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আরবের লোকেদের জন্য সেই অনিষ্টের কারণে ধ্বংস অনিবার্য বা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে গেছে। এ কথার বলার সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির অগ্রভাগকে তার সঙ্গের শাহাদাত আঙ্গুলির অগ্রভাগের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাকার করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহশ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের মধ্যে পুণ্যবান লোকজন থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বললেন, হাঁ যখন পাপকাজ অতি মাত্রায় বেড়ে যাবে। (মুসলিম (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৩৩৪৬; মুসলিম ৫২ হাঃ ২৮৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩০
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৩
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীরে আল্লাহ এ পরিমাণ ছিদ্র করে দিয়েছেন। এই বলে, তিনি তাঁর হাতে নব্বই সংখ্যার আকৃতির মত করে দেখালেন। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৩৩৪৭; মুসলিম ৫২/১ হাঃ ২৮৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২.
কা’বা আক্রমণকারী সৈন্যদলের যমীনে দেবে যাওয়া।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩১
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৪
 ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (পরবর্তী যামানায়) একদল সৈন্য কা‘বা (ধ্বংসের উদ্দেশে) অভিযান চালাবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাদের আগের পিছের সকলকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তাদের অগ্রবাহিনী ও পশ্চাৎবাহিনী সকলকে কিভাবে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে, অথচ সে সেনাবাহিনীতে তাদের বাজারের (পণ্য-সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকবে এবং এমন লোকও থাকবে যারা তাদের দলভুক্ত নয়, তিনি বললেন, তাদের আগের পিছের সকলকে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। তারপরে (কিয়ামতের দিবসে) তাদের নিজেদের নিয়্যাত অনুযায়ী উত্থিত করা হবে। (বুখারী পর্ব ৩৪ অধ্যায় ৪৯ হাদীস নং ২১১৮; মুসলিম ৫২/২, হাঃ ২৮৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/৩.
অজস্র বৃষ্টি ফোঁটার ন্যায় ফিতনা অবতরণ।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩২
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৫
উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহর কোন একটি পাথর নির্মিত গৃহের উপর আরোহণ করে বললেনঃ আমি যা দেখি তোমরা কি তা দেখতে পাচ্ছ? (তিনি বললেন) বৃষ্টি বিন্দু পতিত হওয়ার স্থানসমূহের মত আমি তোমাদের গৃহসমূহের মাঝে ফিতনার স্থানসমূহ দেখতে পাচ্ছি। (বুখারী পর্ব ২৯ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ১৮৭৮; মুসলিম ৫২/৩, হাঃ ২৮৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৬
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শীঘ্রই ফিতনা রাশি আসতে থাকবে। ঐ সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে উত্তম (নিরাপদ), দাঁড়ানো ব্যক্তি ভ্রাম্যমান ব্যক্তি হতে অধিক রক্ষিত আর ভ্রাম্যমান ব্যক্তি ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে অধিক বিপদমুক্ত। যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে চোখ তুলে তাকাবে ফিতনা তাকে গ্রাস করবে। তখন যদি কোন ব্যক্তি তার দ্বীন রক্ষার জন্য কোন ঠিকানা অথবা নিরাপদ আশ্রয় পায়, তবে সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করাই উচিত হবে। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০১; মুসলিম ২৮৮৬
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/৪.
দু’জন মুসলিম যখন তরবারি নিয়ে পরস্পরের সম্মুখীন হয়।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৭
আহনাফ ইব্‌নু কায়স (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি (সিফফীনের যুদ্ধে) এ ব্যক্তিকে [আলী (রাঃ)-কে] সাহায্য করতে যাচ্ছিলাম। আবূ বাকরা (রাঃ)-এর সঙ্গে আমার দেখা হলে তিনি বললেনঃ‘তুমি কোথায় যাচ্ছ?’ আমি বললাম, ‘আমি এ ব্যক্তিকে সাহায্য করতে যাচ্ছি।’ তিনি বললেনঃ‘ফিরে যাও। কারণ আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, দু’জন মুসলমান তাদের তরবারি নিয়ে মুখোমুখি হলে হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামে যাবে।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল্! এ হত্যাকারী (তো অপরাধী), কিন্তু নিহত ব্যক্তির কী অপরাধ? তিনি বললেন, (নিশ্চয়ই) সেও তার সাথীকে হত্যা করার জন্য উদগ্রীব ছিল।’ (বুখারী পর্ব ২ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৩১; মুসলিম ৫২/৪ হাঃ ২৮৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৮
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত হবে না যে পর্যন্ত এমন দু’টি দলের মধ্যে যুদ্ধ না হবে যাদের দাবী হবে এক। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০৮; মুসলিম ১৫৭
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/৬.
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যে সকল ঘটনা ঘটবে সে সম্পর্কে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সংবাদ প্রদান।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৪৯
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একদা) আমাদের মাঝে এমন একটি ভাষণ প্রদান করলেন যাতে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে এমন কোন কথাই বাদ দেননি। এগুলি স্মরণ রাখা যার সৌভাগ্য হয়েছে সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে। আমি ভুলে যাওয়া কোন কিছু যখন দেখতে পাই তখন তা চিনে নিতে পারি এভাবে যেমন, কোন ব্যক্তি কাউকে হারিয়ে ফেললে আবার যখন তাকে দেখতে পায় তখন চিনতে পারে। (বুখারী পর্ব ৮২ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৬৬০৪; মুসলিম ৫২/৬, হাঃ ২৮৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/৭.
সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় ফিতনা ছড়িয়ে পড়বে।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৭
PMMRC হাদিস নং-২৪৫০
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ফিতনা-ফাসাদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে মনে রেখেছো? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, ‘যেমনভাবে তিনি বলেছিলেন হুবহু তেমনিই আমি মনে রেখেছি।’ ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী মনে রাখার ব্যাপারে তুমি খুব দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছো। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে যে ফিতনায় পতিত হয়, সলাত, সিয়াম, সাদকাহ, (ন্যায়ের) আদেশ ও (অন্যায়ের) নিষেধ তা দূরীভূত করে দেয়। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং আমি সেই ফিতনার কথা বলছি, যা সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় ভয়াল হবে। হুযাইফা (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সে ব্যাপারে আপনার ভয়ের কোনো কারণ নেই। কেননা, আপনার ও সে ফিত্নার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। ‘উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, সে দরজাটি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেয়া হবে? হুযাইফাহ (রা.) বললেন, ভেঙ্গে ফেলা হবে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তাহলে তো আর কোনো দিন তা বন্ধ করা যাবে না। [হুযাইফাহ (রাঃ)]-এর ছাত্র শাকীক (রহ.) বলেন], আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ‘উমার (রাঃ) কি সে দরজাটি সম্বন্ধে জানতেন? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, হাঁ, দিনের পূর্বে রাতের আগমন যেমন সুনিশ্চিত, তেমনি নিশ্চিতভাবে তিনি জানতেন। কেননা, আমি তাঁর কাছে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছি, যা মোটেও ক্রুটিযুক্ত নয়। (দরজাটি কী) এ বিষয়ে হুযাইফাহ (রাঃ)-এর নিকট জানতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম। তাই আমরা মাসরূক (রহ.)-কে বললাম এবং তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, দরজাটি ‘উমার (রাঃ) নিজেই। (বুখারী পর্ব ৯ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৫২৫; মুসলিম ১৪৪
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/৮.
ফোরাত নদী সোনার পাহাড় উন্মুক্ত না করা পর্যন্ত ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৮
PMMRC হাদিস নং-২৪৫১
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অদূর ভবিষ্যতে ফোরাত নদী তার গর্ভস্থ স্বর্ণের খনি বের করে দেবে। সে সময় যারা উপস্থিত থাকবে তারা যেন তা থেকে কিছুই গ্রহণ না করে। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৭১১৯; মুসলিম ৫২/৮, হাঃ ২৮৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/১৪.
হিজাজ থেকে আগুন বের না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৩৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৫২
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত কায়িম হবে না যতক্ষণ না হিজাযের যমীন থেকে এমন আগুন বের হবে, যা বুসরার উটগুলোর গর্দান আলোকিত করে দেবে। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৭১১৮; মুসলিম ৩৩/৪১, হাঃ ১৯০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/১৬.
ফিতনা পূর্ব দিক থেকে যেখান থেকে শাইত্বনের শিং বেরিয়ে আসে।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪০
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৩
ইব্‌নু ‘উমার (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পূর্ব দিকে মুখ করে বলতে শুনেছেন, সাবধান! ফিতনা সে দিকে যে দিক থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়। [৩১০৪; মুসলিম (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ৭০৯৩; মুসলিম ৫২/১৬, হাঃ ২৯০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/১৭.
দাউস গোত্র যালখালাসার ‘ইবাদাত না করা পর্যন্ত ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪১
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৪
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাত কায়িম হবে না, যতক্ষণ ‘যুলখালাসাহর’ পাশে দাওস গোত্রীয় রমণীদের নিতম্ব দোলায়িত না হবে।
‘যুলখালাসাহ’ হলো দাওস গোত্রের একটি মূর্তি। জাহিলী যুগে তারা এর উপাসনা করত। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২৩ হাদীস নং ৭১১৬; মুসলিম ৫২/১৭, হাঃ ২৯০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/১৮.
ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না ক্ববরের পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রমকারী ব্যক্তি বলবে, মৃতের জায়গায় যদি আমি থাকতাম (বালা মুসিবতের কারণে)।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪২
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৫
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত কায়িম হবে না, যতক্ষণ এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় না বলবে হায়! যদি আমি তার স্থলে হতাম। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৭১১৫; মুসলিম ১৫৭
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৬
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, হাবাশার অধিবাসী পায়ের সরু নলা বিশিষ্ট লোকেরা কা‘বাগৃহ ধ্বংস করবে। (বুখারী পর্ব ২৫ অধ্যায় ৪৭ হাদীস নং ১৫৯১; মুসলিম ৫২/১৮, হাঃ ২৯০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৭
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত কাহ্তান গোত্র হতে এমন এক ব্যক্তির আগমন না হবে যে মানুষ জাতিকে তার লাঠির সাহায্যে পরিচালিত করবে। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৩৫১৭; মুসলিম ২৯১০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৮
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের জুতা হবে পশমের। আর ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না,যতদিন না তোমরা এমন জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, মুখমণ্ডল পেটানো চামড়ার ঢালের মত। (বুখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৯৬ হাদীস নং ২৯২৯; মুসলিম ৫২/১৮ হাঃ ২৯১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৫৯
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কুরাইশ গোত্রের এ লোকগুলি (যুবকগণ) মানুষের ধ্বংস ডেকে আনবে। সহাবাগণ বললেন, তখন আমাদেরকে আপনি কী করতে বলেন? তিনি বললেন, মানুষেরা যদি এদের সংসর্গ ত্যাগ করত তবে ভালই হত। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০৪; মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৭
PMMRC হাদিস নং-২৪৬০
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কিসরা ধ্বংস হবে, অতঃপর আর কিসরা হবে না। আর কায়সার অবশ্যই ধ্বংস হবে, অতঃপর আর কায়সার হবে না এবং এটা নিশ্চিত যে, তাদের ধনভাণ্ডার আল্লাহ্‌র পথে বণ্টিত হবে। (বুখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৫৭ হাদীস নং ৩০২৭; মুসলিম ৫২/১৮ হাঃ ২৯১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৮
PMMRC হাদিস নং-২৪৬১
জাবির ইব্‌নু সামূরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ @ বলেছেন, যখন কিসরা ধ্বংস হয়ে যাবে অতঃপর আর কোন কিসরা হবে না। আর যখন কায়সার ধ্বংস হয়ে যাবে, তারপরে আর কোন কায়সার হবে না। যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, অবশ্যই উভয় সাম্রাজ্যের ধনভাণ্ডার আল্লাহ্‌র পথে ব্যয়িত হবে। (বুখারী পর্ব ৫৭ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩১২১; মুসলিম ৫২/১৮ হাঃ ২৯১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৪৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৬২
 ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ইয়াহূদীরা তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। তখন জয়লাভ করবে তোমরাই। স্বয়ং পাথরই বলবে, হে মুসলিম, এই ত ইয়াহূদী; আমার পিছনে, একে হত্যা কর। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৫৯৩; মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫০
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৩
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত কায়িম হবে না যে পর্যন্ত প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাচারী দাজ্জালের আবির্ভাব না হবে। এরা সবাই নিজেকে আল্লাহ্‌র রাসূল বলে দাবী করবে। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০৯; মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/১৯.
ইবনু সাইয়্যাদের বর্ণনা।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫১
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৪
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) কয়েকজন সহাবীসহ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ইব্‌নু সাইয়্যাদের নিকট যান। তাঁরা তাকে বনী মাগালার টিলার উপর ছেলে-পেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে দেখতে পান। আর এ সময় ইব্‌নু সাইয়্যাদ বালিগ হওয়ার নিকটবর্তী হয়েছিল। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (আগমন) সে কিছু টের না পেতেই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিঠে হাত দিয়ে মৃদু আঘাত করলেন। অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহ্‌র প্রেরিত রাসূল? তখন ইব্‌নু সাইয়্যাদ তাঁর প্রতি তাকিয়ে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মী লোকদের রাসূল । ইব্‌নু সাইয়াদ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আপনি কি এ সাক্ষ্য দেন যে, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল? নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, আমি আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর সকল রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কী দেখ? ইব্‌নু সাইয়্যাদ বলল, আমার নিকট সত্য খবর ও মিথ্যা খবর সবই আসে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আসল অবস্থা তোমার জন্য কিছু কথা গোপন রেখেছি ইব্‌নু সাইয়্যাদ বলল, তা’ হচ্ছে ধোঁয়া। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আরে থাম, তুমি তোমার সীমার বাইরে যেতে পার না। ‘উমার (রাঃ) বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে হুকুম দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি সে প্রকৃত দাজ্জাল হয়, তবে তুমি তাকে কাবু করতে পারবে না, যদি সে দাজ্জাল না হয়, তবে তাকে হত্যা করে তোমার কোন লাভ নেই। (বুখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৭৮ হাদীস নং ৩০৫৫; মুসলিম ২৯৩১
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫২
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৫
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) উভয়ে সে খেজুর বৃক্ষের নিকট গমন করেন, যেখানে ইব্‌নু সাইয়্যাদ অবস্থান করছিল। যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে পৌঁছলেন, তখন তিনি খেজুর ডালের আড়ালে চলতে লাগলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল যে, ইব্‌নু সাইয়্যাদের অজান্তে তিনি তার কিছু কথা শুনে নিবেন। ইব্‌নু সাইয়্যাদ নিজ বিছানা পেতে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে গুণগুণ ছিল এবং কী কী যেন গুণগুণ করতেছিল। তার মা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখে ফেলেছিল যে, তিনি খেজুর বৃক্ষ শাখার আড়ালে আসছেন। তখন সে ইব্‌নু সাইয়্যাদকে বলে উঠল, হে সাফ! আর এ ছিল তার নাম। সে জলদি উঠে দাঁড়াল। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নারীটি যদি তাকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দিত, তবে তার ব্যাপারটা প্রকাশ পেয়ে যেত। (বুখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৭৮ হাদীস নং ৩০৫৬; মুসলিম)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৬
ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের মাঝে দাঁড়ালেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ তা‘আলার যথাযথ প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জাল সম্পর্কে উল্লেখ করলেন। আর বললেন, আমি তোমাদের দাজ্জাল হতে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নাবীই তাঁর সম্প্রদায়কে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। নূহ (‘আ.) তাঁর সম্প্রদায়কেও দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে তার সম্পর্কে এমন একটি কথা জানিয়ে দিব, যা কোন নাবী তাঁর সম্প্রদায়কে জানান নি। তোমরা জেনে রেখ যে, সে হবে এক চক্ষু বিশিষ্ট আর অবশ্যই আল্লাহ এক চক্ষু বিশিষ্ট নন। (বুখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৭৮ হাদীস নং ৩০৫৭; মুসলিম)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২০.
দাজ্জাল, তার ও তার সঙ্গে যারা থাকবে তাদের বর্ণনা।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৭
 ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকজনের সামনে মাসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ট্যাড়া নন। সাবধান! মাসীহ দাজ্জালের ডান চক্ষু ট্যাড়া। তার চক্ষু যেন ফুলে যাওয়া আঙ্গুরের মত। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৪৮ হাদীস নং ৩৪৩৯; মুসলিম ২৯৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৫
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৮
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হন নি যিনি তার উম্মাতকে এই কানা মিথ্যুক সম্পর্কে সতর্ক করেননি। জেনে রেখো, সে কিন্তু কানা, আর তোমাদের রব কানা নন। আর তার দু’ চোখের মাঝখানে কাফির كَافِرٌশব্দটি লিপিবদ্ধ থাকবে। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২৬ হাদীস নং ৭১৩১; মুসলিম ৫২/২০, হাঃ ২৯৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৬
PMMRC হাদিস নং-২৪৬৯
 ‘উকবাহ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আপনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে যা শুনেছেন, তা কি আমাদের নিকট বর্ণনা করবেন না? তিনি জবাব দিলেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, যখন দাজ্জাল বের হবে তখন তার সঙ্গে পানি ও আগুন থাকবে। অতঃপর মানুষ যাকে আগুনের মত দেখবে তা হবে মূলত ঠাণ্ডা পানি। আর যাকে মানুষ ঠাণ্ডা পানির মত দেখবে, তা হবে আসলে দহনকারী অগ্নি। তখন তোমাদের মধ্যে যে তার দেখা পাবে, সে যেন অবশ্যই তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, যাকে সে আগুনের মত দেখতে পাবে। কেননা, আসলে তা সুস্বাদু শীতল পানি। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫০ হাদীস নং ৩৪৫০; মুসলিম ২৯৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৭
PMMRC হাদিস নং-২৪৭০
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে এমন একটি কথা বলে দেব না, যা কোন নাবীই তাঁর সম্প্রদায়কে বলেননি? তা হলো, নিশ্চয়ই সে হবে এক চোখওয়ালা, সে সঙ্গে করে জান্নাত এবং জাহান্নামের দু’টি জাল ছবি নিয়ে আসবে। অতএব যাকে সে বলবে যে, এটি জান্নাত, প্রকৃতপক্ষে সেটি হবে জাহান্নাম। আর আমি তার সম্পর্কে তোমাদের নিকট তেমনি সাবধান করছি, যেমনি নূহ (‘আ.) তার সম্প্রদায়কে সে সম্পর্কে সাবধান করেছেন। (বুখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৩ হাদীস নং ৩৩৩৮; মুসলিম ৫২/২০ হাঃ ২৯৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২১.
দাজ্জালের বিবরণ, মদিনায় প্রবেশ তার জন্য নিষিদ্ধ করা হবে, তার দ্বারা একজন মু’মিনকে হত্যা এবং সে মু’মিনকে আবার জীবিতকরণ।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৮
PMMRC হাদিস নং-২৪৭১
আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে দাজ্জাল সম্পর্কে এক দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত কথাসমূহের মাঝে তিনি এ কথাও বলেছিলেন যে, মাদীনাহর প্রবেশ পথে অনুপ্রবেশ করা দাজ্জালের জন্য হারাম করে দেয়া হয়েছে। তাই সে মাদীনার উদ্দেশে যাত্রা করে মাদীনাহর নিকটবর্তী কোন একটি বালুকাময় জমিতে অবতরণ করবে। তখন তার নিকট এক ব্যক্তি যাবে যে উত্তম ব্যক্তি হবে বা উত্তম মানুষের একজন হবে এবং সে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমিই হলে সে দাজ্জাল যার সম্পর্কে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অবহিত করেছেন। দাজ্জাল বলবে, আমি যদি একে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করতে পারি তাহলেও কি তোমরা আমার ব্যাপারে সন্দেহ করবে? তারা বলবে, না। এরপর দাজ্জাল লোকটিকে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। জীবিত হয়েই লোকটি বলবে, আল্লাহর শপথ! আজকের চেয়ে অধিক প্রত্যয় আমার আর কখনো ছিল না। অতঃপর দাজ্জাল বলবে, আমি তাকে হত্যা করে ফেলব। কিন্তু সে লোকটিকে হত্যা করতে আর সক্ষম হবে না। (বুখারী পর্ব ২৯ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ১৮৮২; মুসলিম ৫২/২১, হাঃ ২৯৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২২.
দাজ্জাল- আল্লাহ্‌র নিকট তার মর্যাদা খুবই নিন্মে।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৫৯
PMMRC হাদিস নং-২৪৭২
মুগীরাহ ইব্‌নু শু‘বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাজ্জাল সম্পর্কে যত বেশি প্রশ্ন করতাম সেরূপ আর কেউ করেনি। তিনি আমাকে বললেনঃ তা থেকে তোমার কি ক্ষতি হবে? আমি বললাম, লোকেরা বলে যে, তার সঙ্গে রুটির পর্বত ও পানির নহর থাকবে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র কাছে অতি সহজ। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২৬ হাদীস নং ৭১২২; মুসলিম ৫২/২২, হাঃ ২৯৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২৩.
দাজ্জালের আবির্ভাব এবং পৃথিবীতে তার অবস্থান।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৬০
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৩
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাক্কাহ ও মাদীনাহ ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল পদচারণা করবে না। মাক্কাহ এবং মাদীনাহর প্রত্যেকটি প্রবেশ পথেই ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। এরপর মাদীনাহ তার অধিবাসীদেরকে নিয়ে তিনবার কেঁপে উঠবে এবং আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত কাফির এবং মুনাফিকদেরকে বের করে দিবেন। (বুখারী পর্ব ২৯ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ১৮৮১; মুসলিম ৫২/২৪, হাঃ ২৯৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২৬.
ক্বিয়ামাতের নিকটবর্তী হওয়া।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৬১
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৪
 ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাত যাদের জীবদ্দশায় কায়িম হবে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক। (বুখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৭০৬৭; মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৬২
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৫
সাহল ইব্‌নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুলের নিকটবর্তী অঙ্গুলিদ্বয় এভাবে একত্র করে বললেন, ক্বিয়ামাত ও আমাকে এমনিভাবে পাঠানো হয়েছে। [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (৭৯) আন্-নাযি‘আত অধ্যায় হাদীস নং ৪৯৩৬; মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৫০]
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৬৩
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৬
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে ক্বিয়ামাতের সঙ্গে এ রকম। (বুখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৩৯ হাদীস নং ৬৫০৪; মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২/২৭.
(পুনরুত্থান দিবসে) সিঙ্গায় দু’বার ফুঁক দেয়ার মাঝে সময়ের ব্যবধান।
আল লু'লু ওয়াল মারজান হাদিস নং-১৮৬৪
PMMRC হাদিস নং-২৪৭৭
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রথম ও দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফূৎকারের মধ্যে চল্লিশের ব্যবধান হবে। [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]-এর এক ছাত্র বললেন, চল্লিশ বলে চল্লিশ দিন বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, আমি অস্বীকার করলাম। তারপর পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বলে চল্লিশ মাস বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও অস্বীকার করলাম। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বছর বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও আমি অস্বীকার করলাম। এরপর আল্লাহ্ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করবেন। এতে মৃতরা জীবিত হয়ে উঠবে, যেমন বৃষ্টির পানিতে উদ্ভিদরাজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। তখন শিরদাঁড়ার হাড় ছাড়া মানুষের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে গলে শেষ হয়ে যাবে। ক্বিয়ামাতের দিন ঐ হাড়খণ্ড থেকেই আবার মানুষকে সৃষ্টি করা হবে। [বুখারী পর্ব ৬৫ সূরা (৭৮) আন্-নাবা অধ্যায় হাদীস নং ৪৯৩৫; মুসলিম ২৯৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(আল লু'লু ওয়াল মারজান সমাপ্ত)

(সুনানে ইবনে মাজাহ-হতে কলহ ও বিপর্যয়  অধ্যায়


 প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ

Please Share On

No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...