বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
জাল হাদিসের কবলে বাংলাদেশের আলেম সমাজ (২০০০টি জাল ও জঈফ
হাদিস)-দ্বিতীয়
পর্ব - প্রচারে-PMMRC
বাংলাদেশে হাজার হাজার মুফতি, মুহাদ্দিস, ইমাম, মুয়াজ্জিন,
মাদ্রাসার শিক্ষক (আলিম ও কওমী), কোরআনের হাফেজ, হাদিসের হাফেজ, পির-অলি,
ওযাজকারী, তাবলীগ জামায়াত, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ
অসংখ্য ইসলামী সংগঠন আছে। এরা প্রত্যেকেই ইসলামের দাওয়াতী কাজ করেন। তারা নিজেরা
আমল করেন ও সেই আমল তাদের অনুসারীদেরকেও শিখিয়ে দেন। এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলছে
দাওয়াতী কাজ। কিন্তু দেখা যায়, তাদের আমলের বা দাওয়াতী কাজের ৯৫%-ই
জাল ও জঈফ হাদিস ভিত্তিক। একজন মসজিদের ইমাম, তিনি একজন কোরআনের হাফেজ
আবার মুফতি কিংবা কোনো মাদ্রাসার শিক্ষক। এই ইমাম সাহেব যখন বাংলা খোতবা দেন আর
যখন জাল ও জঈফ হাদিসগুলো বর্ণনা করেন তখন মনে হয় এরা কোনো পড়াশোনাই করেননি। আর
পড়াশোনা করলেও তাদের পাঠ্য পুস্তকগুলোই জাল ও জঈফ হাদিসে ভরপুর। তাদের ওস্তাদগণও
একই শিক্ষায় শিক্ষিত। যার ফলে তাদের সাগরেদরা ঐ ওস্তাদদের শুধুই অন্ধ অনুকরন করেই
চলছে। একবারও তারা চিন্তা করে দেখা না যে, তাদের শিক্ষা বিদআতী শিক্ষা কিনা। যাই
হোক যারা বিদআতী শিক্ষায় শিক্ষিত তাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার জন্যই জাল
ও জঈফ হাদিসগুলো দেয়া হলো। আপনারা পড়বেন আর অন্যদেরকে নতুন করে শিখিয়ে দিবেন।
এতোদিন যে ভুলের উপর আমল করে আসছেন তা কিন্তু আল্লাহর দরবারে কবুল হয়নি। তাই তওবা
করে সহীহ হাদিসের পথে ফিরে আসবেন এই অনুরোধ সকলের প্রতি রইল। এবার আওয়াজ তুলুন:-
সহীহ হাদিসের আগমন, বিদআত পলায়ন।
৮১।
হে আব্বাস! নিশ্চয় আল্লাহ আমার মাধ্যমে এ কর্ম উন্মোচন করেছেন, যার সমাপ্তি টানবেন
তোমার সন্তানদের মধ্য হতে এক যুবকের মাধ্যমে। তিনি ইনসাফ দ্বারা তাকে (যমীনকে)
পরিপূর্ণ করে দেবেন; যেমনিভাবে তাকে (যমীনকে) অত্যাচার দ্বারা পূর্ণ করে দেয়া
হয়েছিল। তিনি ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবেন (তার
ইমামতি করবেন)।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
খাতীব বাগদাদী “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (৪/১১৭) উল্লেখ করেছেন এবং তার সূত্রে
ইবনুল জাওযী “আল-ওয়াহিয়াত” গ্রন্থে (১৪৩৭) উল্লেখ করেছেন।
এটির
সনদে আহমাদ ইবনু হাজ্জাজ নামক এক বর্ণনাকারী আছেন, তাকে যাহাবী এ হাদীসের ব্যাপারে
মিথ্যার দোষে দোষী করেছেন। তার এ কথার সাথে হাফিয ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান”
গ্রন্থে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। হাদীসটি সুয়ূতী “আল-লাআলিল মাসনুয়াহ" গ্রন্থে
(১/৪৩১-৪৩৪) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি কোন হুকুম না লাগিয়ে চুপ থেকেছেন।
ইবনুল
জাওযী “মাওযুআত” গ্রন্থে (২/৩৭) উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটি জাল ।
খাতীব
বাগদাদী “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে অন্য এক সনদে (৪/১১৭) উল্লেখ করেছেন এবং তার
সূত্রে ইবনুল জাওযী "ইলালুল মুতানাহিয়াহ" গ্রন্থে (২/৩৭৫/১৪৩৮) উল্লেখ
করার পর বলেছেনঃ এটির সনদে সমস্যা নেই।
কিন্তু
এটির সনদে দুটি সমস্যা রয়েছেঃ
১।
আব্দুস সামাদ ইবনু আলী, তিনি হাশেমী; তাকে উকায়লী (৩/৮৪/১০৫৩) দুর্বল আখ্যা
দিয়েছেন।
২।
মুহাম্মাদ ইবনু নূহ ইবনে সাঈদ আল-মুয়াযযিন তার সম্পর্কে যাহাবী বলেনঃ তার এ
হাদীসটি মিথ্যা এবং তার পিতা মাজহুল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮২ | 82 | ۸۲
৮২।
হে আবূল ফযল! তোমাকে কি সুসংবাদ দেব না? নিশ্চয় আল্লাহ আমার মাধ্যমে এ কর্ম
উন্মোচন করেছেন এবং তা তোমার সন্তান দ্বারা সমাপ্ত করবেন।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
আবূ নু’য়াইম “হিলইয়্যাহ্” গ্রন্থে (১/১৩৫) লাহিয ইবনু জাফার আত-তাইনী সূত্রে ...
বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ লাহিয মিথ্যার দোষে দোষী ব্যক্তি। তার সম্পর্কে ইবনু আদী বলেনঃ
তিনি বাগদাদী মজহুল। তিনি নির্ভরশীলদের উদ্ধৃতিতে মুনকার হাদীস বর্ণনা করতেন।
অতঃপর
আলী (রাঃ)-এর ফযীলত বর্ণনায় তার একটি হাদীস উল্লেখ করে ইবনু আদী বলেনঃ وهذا باطل ‘এ হাদীসটি বাতিল।’
যাহাবী
বলেনঃ আল্লাহর কসম এটি সর্বাপেক্ষা বড় জাল হাদীস (আল্লাহর অভিশাপ সেই ব্যক্তিকে
যে আলী (রাঃ)-কে মুহাব্বাত করে না)।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৩ | 83 | ۸۳
৮৩।
তাসবীহ পাঠ এর যন্ত্র দ্বারা তাসবীহ পাঠক কতই না ভালো ব্যাক্তি। নিশ্চয় সর্বোত্তম
বস্তু সেটিই যমীনে যার উপর সাজদাহ করা হয় এবং যমীন যা উৎপাদন করে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
দাইলামী “মুসনাদুল ফিরদাউস” গ্রন্থে (৪/৯৮) বর্ণনা করেছেন। এছাড়া সুয়ূতী তার
“আল-মিনহা ফিস সিবহা” গ্রন্থে (২/১৪১) এবং তার থেকে শাওকানী “নাইলুল আওতার”
গ্রন্থে (২/১৬৬-১৬৭) উল্লেখ করেছেন। অতঃপর তারা উভয়ে (কোন হুকুম না লাগিয়ে) চুপ
থেকেছেন!
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটির সনদে রয়েছে একগুচ্ছ অন্ধকার যার একটির চেয়ে অন্যটি বড়। তার
অধিকাংশ বর্ণনাকারী মাজহুল, এমনকি তাদের কেউ কেউ মিথ্যার দোষে দোষী।
এটির
সনদে উম্মুল হাসান বিনতু জাফার ইবনুল হাসান রয়েছেন। কে তার জীবনী রচনা করেছেন
পাচ্ছি না। হাশেমী, তিনি হাদীস জাল করতেন।
ইবনু
আসাকির “তারীখু দেমাস্ক” গ্রন্থে বলেনঃ 'তিনি হাদীস জাল করতেন।' অতঃপর তিনি তার
একটি হাদীস উল্লেখ করে বলেনঃ এটি তার জালকৃত হাদীস।
অনুরূপ
ভাবে খাতীব বাগদাদীও তাকে মিথ্যার দোষে দোষী করেছেন। তিনি (৭/৪০৩) বলেনঃ এ
হাশেমীকে ইবনু বোরাই নামে চেনা যায়। তিনি যাহেবুল হাদীস। তাকে হাদীস জাল করার
দোষে দোষী করা হয়েছে।
সনদে
আরো রয়েছেন আব্দুস সামাদ ইবনু মূসা, তিনি হাশেমী। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে
খাতীব বাগদাদীর উদ্ধৃতিতে বলেছেনঃ তাকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
অতঃপর
যাহাবী বলেনঃ يروي مناكير عن جده محمد بن إبراهيم الإمام তিনি তার দাদা মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম আল-ইমাম হতে
মুনকার হাদীস বর্ণনা করতেন।
আমার
নিকট কতিপয় কারণে এ হাদীসের অর্থও বাতিলঃ
১।
তসবীহ দ্বানা দ্বারা তাসবীহ পাঠ করা বিদ'আত। কারণ তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর যুগে ছিল না। এটি আবিষ্কার হয়েছে পরবর্তীতে। কীভাবে তিনি তার
সাথীদেরকে এমন একটি কাজ করার জন্য উৎসাহিত করেন যেটিকে তারা চিনতেন না।
এর
দলীলঃ ইবনু মাসউদ (রাঃ) এক মহিলাকে তসবীহ দ্বানা দ্বারা তাসবীহ পাঠ করতে দেখে তা
কেটে ও ছুড়ে ফেলেছিলেন। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে পাথর দ্বারা তাসবীহ পাঠ করতে দেখে
তিনি তাকে তার পা দ্বারা প্রহার করেন। অতঃপর বলেনঃ তোমরা আমাদের চেয়ে অগ্রণী হয়ে
গেছ! অত্যাচার করে বিদ'আত-এর উপর আরোহন করেছ এবং জ্ঞানের দিক দিয়ে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথীগণকেও ছাড়িয়ে গেছ!
২।
এটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিক নির্দেশনা বিরোধী। কারণ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেনঃ
رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يعقد التسبيح بيمينه
'আমি
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ডান হাতের মুষ্টি বেধে তাসবীহ পাঠ করতে
দেখেছি।' হাদীসটি আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনু হিব্বান, হাকিম ও বাইহাকী সহীহ সনদে
বর্ণনা করেছেন।
৩।
এছাড়া রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশেরও বিরোধী। তিনি
মহিলাদেরকে অংগুলীগুলো মুষ্টি বেধে তাসবীহ ... পাঠের নির্দেশ দেন... । হাদীসটি
হাসান। এটি আবু দাউদ ও অন্যরা বর্ণনা করেছেন। এটিকে হাকিম ও যাহাবী সহীহ আখ্যা
দিয়েছেন আর নাবাবী ও আসকালানী হাসান আখ্যা দিয়েছেন।
কেউ
যদি বলেন যে, কোন কোন হাদীসে পাথর দ্বারা তাসবীহ পাঠের কথা এসেছে এবং রসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করেছেন। আর তাসবীহ দ্বানা ও পাথরের মধ্যে কোন
পার্থক্য নেই, যেমনভাবে শাওকানী বলেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটি মেনে নেয়া যেত যদি পাথর দিয়ে তাসবীহ পাঠের হাদীসগুলো সহীহ্
হতো। কিন্তু সেগুলো সহীহ্ নয়। এ মর্মে দুটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সুয়ূতী হাদীস
দু’টাে বর্ণনা করেছেন। একটি সা'দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে আর দ্বিতীয়টি
সাফিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। প্রথমটি আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু হিব্বান,
দাওরাকী, মুখাল্লিস ও হাকিম বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী বলেছেনঃ হাদীসটি হাসান। হাকিম
বলেছেনঃ সনদ সহীহ। যাহাবী তাতে তাকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু তিনি তাতে ভুল করেছেন।
কেননা এর সনদে খুযাইমা নামক এক বর্ণনাকারী আছেন তিনি মাজহুল। যাহাবী নিজেই বলেছেনঃ
তার পরিচয় জানা যায় না এবং তার থেকে সাঈদ ইবনু আবী হিলাল এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
এমনটিই বলেছেনঃ হাফিয ইবনু হাজার “আত-তাকরীব" গ্রন্থে انه لا يعرف তার পরিচয় জানা যায় না।
এছাড়া সাঈদ ইবনু আবী হিলাল নির্ভরযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ইমাম আহমাদ বলেনঃ তার
মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছিল। ইয়াহইয়াও তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছিল এরূপ ব্যাখ্যা
দিয়েছেন। এছাড়া কোন কোন নির্ভরশীল বর্ণনাকারী সনদে খুযাইমাকে উল্লেখ করেননি। ফলে
সনদটি মুনকাতি’ (বিচ্ছিন্নতা) ভুক্ত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়
হাদীস, যেটি সাফিয়্যা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। সেটি ইমাম তিরমিযী, আবু বাকর
আশ-শাফেজ ও হাকিম বর্ণনা করেছেন। হাদীসটিকে তিনি সহীহুল ইসনাদ বলেছেন আর যাহাবী
তাকে সমর্থন করেছেন। এটি আশ্চর্যজনক ঘটনা। কারণ তিনি হাশিম ইবনু সাঈদকে “আল-মীযান”
গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেন, ইবনু মাঈন বলেনঃ তিনি কিছুই না। ইবনু আদী বলেনঃ তিনি
যে পরিমাণ হাদীস বর্ণনা করেছেন তার অনুসরণ করা যায় না। এ জন্য ইবনু হাজার বলেনঃ
তিনি দুর্বল আর সাফিয়ার মাওলা কিনানা তিনি মাজহুলুল হাল, তাকে ইবনু হিব্বান ছাড়া
কেউ নির্ভরশীল বলেননি।
এছাড়া
এ দু'টি পাথরের হাদীস দুর্বল হওয়ার আরো কারণ হচ্ছে, উল্লেখিত হাদীস দুটির ঘটনা
ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে সহীহ বর্ণনায় যুওয়াইরিয়াহ হতে বর্ণিত হয়েছে। যাতে
পাথরের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এটি ইমাম মুসলিম (৮/৮৩-৮৪), তিরমিযী (৪/২৭৪) (এবং
তিনি সহীহ বলেছেন), নাসাঈ “আমালুল ইয়াওয়ম ওয়াল লাইলা" গ্রন্থে (১৬১-১৬৫),
ইবনু মাজাহ (১/২৩) ও আহমাদ (৬/৩২৫,৪২৯-৪৩০) বর্ণনা করেছেন।
এ
হাদীসটি দু'টি বিষয়ের প্রমাণ বহন করেঃ
১।
পূর্বে যে ঘটনার সাথে সাফিয়ার কথা বলা হয়েছে সেটি আসলে সাফিয়া নয় বরং সেটি
হচ্ছে যুওয়াইরিয়ার ঘটনা।
২।
ঘটনায় পাথরের উল্লেখ মুনকার। মুনকার হওয়াকে শক্তিশালী করছে কিছু লোককে পাথর গণনা
করতে দেখে ইবনু মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক তা ইনকার করা।
এছাড়া
তার মাদরাসা হতে শিক্ষাগ্রহণকারী ইবরাহীম আন-নাখ'ঈ তার মেয়েকে মহিলাদেরকে তসবীর
সূতা (তা দ্বারা তাসবীহ পাঠ করার জন্য) পাকিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করতে নিষেধ
করেছিলেন। এটি ইবনু আবী শায়বাহ “আলমুসান্নাফ” গ্রন্থে (২/৮৯/২) ভাল সনদে বর্ণনা
করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৪ | 84 | ۸٤
৮৪।
তার থেকে তোমরা সকলে উত্তম।
হাদীসটি
দুর্বল।
সুন্নাতের
গ্রন্থ সমূহে এটি পাচ্ছি না। এটি ইবনু কুতাইবা “উয়ূনুল আখবার” গ্রন্থে (১/২৬)
দুর্বল সনদে উল্লেখ করেছেন।
হাদীসটির
ঘটনা নিম্নরূপঃ আশ'য়ারীদের একটি দল কোন এক সফরে ছিল। তারা যখন ফিরে আসল, তখন তারা
বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর রসূলের পরে অমুক ব্যক্তি ছাড়া আর কোন উত্তম
ব্যক্তি নেই। সে দিনে সওম পালন করে, আর আমরা যখন কোন স্থানে অবতরণ করি তখন সে
দাড়িয়ে গিয়ে সলাত শুরু করে, সে স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত! (রসূল) বললেনঃ তার
কাজ কে করেছে? তারা বললেনঃ আমরা। (রসূল) বললেনঃ كلكم أفضل منه তোমরা প্রত্যেকে তার চাইতে
উত্তম। সনদের সকল বর্ণনাকারী নির্ভরশীল, কিন্তু হাদীসটি মুরসাল।
কারণ
মুসলিম ইবনু ইয়াসার বাসরী উমাবী একজন তাবেঈ। তার জীবনীতে বলা হয়েছে যে, তার
অধিকাংশ বর্ণনা আবুল আশায়াস সানায়ানী এবং আবু কিলাবা হতে বর্ণিত হয়েছে। তার এ
হাদীসটি আবূ কিলাবার সূত্রে। আবূ কিলাবা এবং মুসলিম ইবনু ইয়াসার তারা উভয়ে একশ
হিজরীর কিছু পরে মারা গেছেন। কিন্তু আবূ কিলাবা বর্ণনাকারী হিসাবে একজন মুদাল্লিস।
যাহাবী
বলেনঃ তিনি মুদাল্লিস যার সাথে মিলিত হয়েছেন তার থেকে এবং যার সাথে মিলিত হননি
তার থেকেও। তার কতিপয় সহীফা ছিল, তিনি সেগুলো হতে হাদীস বর্ণনা করতেন এবং তাদলীস
করতেন। এ জন্য হাফিয বুরহানুদ্দীন আল-আজামী আল-হালাবী তার “আত-তাবেঈন লি আসমাঈল মুদাল্লিসীন”
গ্রন্থে (পৃঃ ২১) তাকে উল্লেখ করেছেন। অনুরূপ ভাবে হাফিয ইবনু হাজারও তাকে
"তাবাকাতুল মুদাল্লিসীন" গ্রন্থে (পৃঃ ৫) উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৫ | 85 | ۸۵
৮৫।
তোমাদের সংরক্ষিত সম্পদের নিকট তিনজনকে হত্যা করা হবে। তাঁরা প্রত্যেক খলিফার
পুত্র। অতঃপর তা তাদের মধ্যের একজনের জন্যও হবে না। অতঃপর প্র্যাচ্যের দিক থেকে এক
বিরাট দলের ঝাণ্ডা প্রকাশ পাবে। তাঁরা তোমাদের এমনভাবে হত্যা করবে, যেরূপ হত্যাযজ্ঞের
সম্মুখীন কোন জাতি হয়নি। অতঃপর তিনি কিছু উল্লেখ করলেন তা আমি হেফয করতে পারিনি।
তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যদি তাকে দেখতে পাও তাহলে তার সাথে বাই’য়াত করবে। যদিও
বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়েও তা করতে হয়। কারন তিনই হচ্ছেন আল্লাহর প্রতিনিধি মাহাদী।
অন্য
এক বর্ণনায় এসেছেঃ তোমরা বড় দলের ঝাণ্ডাগুলো দেখতে পাবে। খুরাসানের দিক থেকে বের
হয়েছে। তখন তোমরা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তার নিকট আসবে।
হাদীসটি
মুনকার।
ইবনু
মাজাহ ৫১৮-৫১৯), হাকিম (৪/৪৬৩-৪৬৪) দুটি সূত্রে খালেদ আল-হাযা সূত্রে আবূ কিলাবা
হতে ... হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এছাড়া ইমাম আহমাদ (৫/২৭৭) আলী ইবনু যায়েদ সূত্রে
এবং হাকিম আব্দুল ওয়াহাব সূত্রে ... তার থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনুল জাওযী
“আল-আহাদীসুল ওয়াহিয়াত" গ্রন্থে (১৪৪৫) সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।
ইবনু
হাজার "আল-কাওলুল মুসাদ্দাদ" গ্রন্থে বলেনঃ আলী ইবনু যায়েদ দুর্বল।
মানাবীও “ফায়যুল কাদীর” গ্রন্থে একই কারণ দর্শিয়েছেন। তিনি বলেনঃ “আল-মীযান”
গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আহমাদ ও অন্যরা তাকে দুর্বল (য’ঈফ) আখ্যা দিয়েছেন।
অতঃপর যাহাবী বলেনঃ أراه حديثا منكرا আমি এ হাদীসটিকে মুনকারই মনে করি।
ইবনুল
জাওযী হাদীসটিকে তার “মাওয়ূ'আত” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ইবনু হাজার বলেনঃ জাল
হাদীস গ্রন্থে উল্লেখ করাটা সঠিক হয়নি। কারণ এ হাদীসের সনদে এমন কোন ব্যক্তি নেই
যাকে মিথ্যার দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে ইবনুল জাওযী তার জাল হাদীস
গ্রন্থে (২/৩৯) যে সনদে উল্লেখ করেছেন, সে সনদের দিকে লক্ষ্য করলে, তার জাল হিসাবে
উল্লেখ করাটা সঠিক হয়েছে। অতঃপর ইবনুল জাওযী বলেনঃ এটির ভিত্তি নেই। আমর কিছুই
না। তিনি হাসান হতে শুনেননি এবং হাসান আবু ওবায়দা হতে শুনেননি।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ আবু ওবায়দা তার পিতা ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতেও শুনেননি। সুয়ূতী তার
সমালোচনা করে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/৪৩৭) বলেনঃ তার ইসনাদ সহীহ। হাকিম শাইখায়নের
শর্তানুযায়ী সহীহ বলেছেন এবং যাহাবী তার কথাকে সমর্থন করেছেন। অথচ যাহাবী
“আল-মীযান” গ্রন্থে বলেছেনঃ আমি হাদীসটিকে মুনকার হিসাবেই দেখছি। মুনকার হওয়াটাই
সঠিক। তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন মুনকার হওয়ার কারণ ভুলে যাওয়ায়। সেটি হচ্ছে আবূ
কিলাবার আন আন সূত্রে বর্ণনা করা। কেননা তিনি মুদাল্লিসদের অন্তর্ভুক্ত, যেমনটি
উল্লেখ করেছেন যাহাবী ও অন্যরা। এ জন্যই ইবনু ওলাইয়্যাহ হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন
যেমনভাবে ইমাম আহমাদ "আল-ইলাল” গ্রন্থে (১/৩৫৬) ইবনু ওলাইয়্যাহ হতে তা
বর্ণনা করে তাকে সমর্থন করেছেন।
তবে
“فإنه خليفة الله المهدي” 'কারণ তিনিই হচ্ছেন আল্লাহর
প্রতিনিধি মাহদী' এ অংশটুকু বাদ দিয়ে হাদীসটির অর্থ সঠিক। কারণ এ অংশটুকু
সাব্যস্ত করার মত কোন বিশুদ্ধ সূত্র নেই। আবু বকর (রাঃ) কে খালীফাতুল্লাহ বলে
সম্বোধন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর খলীফা নই বরং আমি রসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খালীফা। এটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ তার মুসনাদ গ্রন্থে।
আল্লাহ অন্যের খলীফা হন, কেউ তার খালীফা হতে পারেন না।
হাদিসের
মানঃ মুনকার (সর্বদা পরিত্যক্ত)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৬ | 86 | ۸٦
৮৬।
প্লেগ (উদরাময়) তোমাদের ভাই জ্বীনদের এক অংশ।
হাদীসটির
এ বাক্যে কোন ভিত্তি নেই।
হাদীসটি
ইবনুল আসীর “আন-নেহায়া” গ্রন্থে وخز মূলের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ হাদীসটি ইমাম আহমাদ “মুসনাদ” গ্রন্থে (৪/৩৯৫,৪১৩,৪১৭), তাবারানী
“মুজামুস সাগীর” গ্রন্থে (পৃঃ ১৭) এবং হাকিম (১/৫০) আবু মূসা আল-আশয়ারী হতে
নিম্নের ভাষায় মারফু হিসাবে বর্ণনা করেছেনঃ الطاعون وخز أعدائكم من الجن অর্থঃ প্লেগ (উদরাময়) তোমাদের
দুশমন জিনদের এক অংশ। হাকিম এটিকে মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন এবং যাহাবী তা
সমর্থন করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ ভাষায় হাদীসটি সহীহ্। তবে মুসলিমের শর্তানুযায়ী এ কথাটি সঠিক
নয়।
মোটকথা
হাদিসটি (... وخز أعدائكم) এ শব্দে সহীহ, وخز إخوانكم শব্দে সহীহ নয়।
তবে طعام إخوانكم من الجن এ শব্দে সহীহ
যেটি ইমাম মুসলিম ও অন্যরা বর্ণনা করেছেন। দেখুন “নাইলুল আওতার”। সম্ভবত কারো নিকট
একটি অন্যটির সাথে গোলমাল হয়ে গেছে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৭ | 87 | ۸۷
৮৭।
খাতীব যখন মিম্বারে উঠে যাবে; তার পর সালাত (নামায/নামাজ)-ও নেই, কোন কথাও নেই।
হাদীসটি
বাতিল।
হাদীসটি
তাবারানী “মুজামুল কাবীর” গ্রন্থে ইবনু উমার (রাঃ) হতে মারফু হিসাবে নিম্নের এ
ভাষায় উল্লেখ করেছেনঃ
إذا دخل أحدكم المسجد والإمام على المنبر فلا صلاة ولا كلام، حتى يفرغ الإمام
"তোমাদের
কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে এমতাবস্থায় যে, ইমাম মিম্বারের উপরে, তখন ইমামের
খুৎবা শেষ না করা পর্যন্ত আর কোন সলাত পড়া যাবে না এবং কোন কথাও বলা যাবে
না।"
এ
হাদীসের সনদে আইউব ইবনু নাহীক নামক এক বর্ণনাকারী আছেন। তার সম্পর্কে ইবনু আবী
হাতিম “আল-জারহু ওয়াত-তা’দীল” গ্রন্থে (১/১/২৫৯) বলেনঃ আমি আমার পিতা হতে শুনেছি
তিনি বলেনঃ হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি দুর্বল। আবু যুরয়াহ হতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ
আইউব ইবনু নাহীক হতে আমি হাদীস বর্ণনা করব না এবং তার হাদীস আমাদের নিকট পড়াও হয়
না। অতঃপর বলেছেনঃ তিনি একজন মুনকারুল হাদীস।
হায়সামী
“মাজমাউয যাওয়াইদ" গ্রন্থে (২/১৮৪) বলেনঃ وهو متروك ضعفه جماعة "তিনি
মাতরূক, তাকে মুহাদ্দিসগণের এক জামা'আত দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।"
এ
কারণেই হাফিয ইবনু হাজার “ফতহুল বারীর" মধ্যে (২/৩২৭) বলেছেনঃ হাদীসটি
দুর্বল। আমি হাদীসটি বাতিল বলে হুকুম লাগিয়েছি। কারণ তার সনদে দুর্বলতা থাকা
ছাড়াও এটি দুটি সহীহ হাদীস বিরোধীঃ
إذا جاء أحدكم يوم الجمعة والإمام يخطب فليركع ركعتين وليتجوز فيهما
১।
“তোমাদের কেউ জুম'আর দিবসে যখন (মসজিদে) আসবে এমতাবস্থায় যে, ইমাম খুৎবা দিচ্ছেন,
তখন সে যেন সংক্ষেপে দুরাকাআত সলাত আদায় করে।"
হাদীসটি
মুসলিম শরীফে (৩/১৪/১৫) এবং আবু দাউদে (১০২৩) বর্ণিত হয়েছে। বুখারী এবং মুসলিম-এর
বর্ণনাতেও জাবের (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস এসেছে।
قوله صلى الله عليه وسلم: إذا قلت لصاحبك: أنصت، يوم الجمعة والإمام يخطب فقد لغوت
২।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “তুমি যদি তোমার সঙ্গীকে জুম'আর দিবসে
ইমাম খুৎবা দেয়ার সময় বল চুপ কর, তাহলে তুমি কটু কথা বললে।”
প্রথম
হাদীসটি অত্যন্ত স্পষ্ট, যা তাগিদ দিচ্ছে খংবা চলাকালীন সময়ে দু রাকাআত সলাত
আদায় করার জন্য। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীসের বিরোধিতা করে
কিছু অজ্ঞ ইমাম/খতীব খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করে যে ব্যক্তি দু'
রাকাআত সলাত আদায় করতে চাই তাকে নিষেধ করেন।
আমার
ভয় হয় তারা রসূলের হাদীসের বিরোধিতা করার কারণে নিম্নে বর্ণিত আয়াত দু'টিতে
বর্ণিত শাস্তির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় কি না।
أَرَأَيْتَ الَّذِي يَنْهَى عَبْدًا إِذَا صَلَّى
অর্থঃ
“কোন বান্দা যখন সলাত আদায় করে তখন তাকে যে নিষেধ করে তাঁর সম্পর্কে আপনার
সিদ্ধান্ত কী?” (সূরা আ'লাকঃ ৯-১০)।
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
অর্থঃ
"যারা আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতা করে তাদের ভয় করা উচিত যে, তাদেরকে কোন বিপদ
গ্রাস করবে বা তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক আযাব নাযিল হবে" (সূরা নূরঃ ৬৩)।
দ্বিতীয়
হাদীসটি হতে বুঝা যাচ্ছে ইমাম খুৎবা শুরু করলে কথা বলা নিষেধ। খুৎবা শুরু না করে
মিম্বারে বসে থাকা অবস্থায় কথা বললে তা নিষেধ নয়। কারণ উমার (রাঃ) এর যুগে তিনি
যখন মিম্বারের উপর বসতেন তখনও লোকেরা মুয়াযযিন চুপ না হওয়া পর্যন্ত কথা বলতে
থাকতেন। যখন তিনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে যেতেন তখন দু' খুৎবা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর
কেউ কথা বলতেন না।
অতএব
মিম্বারে উঠলেই কথা বলা নিষেধ এটি সঠিক নয়।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৮ | 88 | ۸۸
৮৮।
শস্য কৃষকদের জন্য, যদিও তা ছিনিয়ে নিয়ে থাকে।
হাদীসটি
বাতিল, এটির কোন ভিত্তি নেই।
সান'আনী
“সুবুলুস সালাম" গ্রন্থে (৩/৬০) বলেনঃ কেউ এটিকে উল্লেখ করেন নি।
"আল-মানার" গ্রন্থে বলা হয়েছেঃ এ হাদিসটিকে খুজাখুজি করেছি কিন্তু পাই
নি।
শাওকানী
“নাইলুল আওতার” গ্রন্থে বলেনঃ এটির ব্যাপারে অবহিত হইনি, এটিতে দৃষ্টি দেয়া
দরকার।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ আমি এটির ব্যাপারে দৃষ্টি দিয়েছি, কিন্তু তার ভিত্তি পাইনি। বরং
এটিকে সহীহ হাদীসের বিপরীতে পেয়েছি।
من أحيا أرضا ميتة فهي له، وليس لعرق ظالم حق
“যে
ব্যক্তি মৃত যমীন জীবিত করবে (আবাদ করবে) তা তার জন্যেই। অত্যাচারীর জন্য এতে কোন
হক নেই।"
হাদীসটি
সহীহ্ সনদে আবু দাউদে (২/৫০) বর্ণিত হয়েছে। তিরমিযী (২/২২৯) হাদীসটিকে হাসান
বলেছেন।
من زرع في أرض قوم بغير إذنهم، فليس له من الزرع شيء، وترد عليه نفقته
"যে
ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের জমি তাদের বিনা অনুমতিতে চাষ করবে, তার সেই ক্ষেত হতে
কোন অংশ নেই। তাকে তার খরচগুলো দিয়ে দিতে হবে।"
হাদীসটি
আবু দাউদ (২/২৩), তিরমিযী (২/২৯১), ইবনু মাজাহ (২/৯০), তাহাবী “আল-মুশকিল"
গ্রন্থে (৩/২৮০), বাইহাকী (৬/১৩৬) ও ইমাম আহমাদ (৪/১৪১) বর্ণনা করেছেন। ইমাম
বুখারী এটিকে হাসান বলেছেন। এটি সহীহ অনুরূপ অর্থের বহু হাদীস থাকার কারণে। দেখুন
“ইরওয়াউল গালীল” (হাঃ নংঃ ১৫১৯)
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৮৯ | 89 | ۸۹
৮৯।
বস্তুর মালিকই তার বস্তুটি বহন করার অধিক হকদার। তবে সে যদি দুর্বলতার কারণে তা
বহন করতে অক্ষম হয়, তাহলে তাকে তার মুসলিম ভাই সহযোগিতা করবে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনুল আরাবী তার “আল-মুজাম" গ্রন্থে (২৩৫/১-২), ইবনু বিশরান “আল-“আমালী” গ্রন্থে
(২/৫৩-৫৪) ও মুহাম্মাদ ইবনু নাসীর “আত-তানবীহ” গ্রন্থে (১৬/১-২) ইউসুফ ইবনু যিয়াদ
আল-বাসরী সূত্রে তার শাইখ আব্দুর রহমান ইবনু যিয়াদ ইবনে আন’আম হতে ... বর্ণনা
করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ সনদটি একেবারেই নিম্ন পর্যায়ের। উক্ত ইউসুফ সম্পর্কে “তারীখুল
কাবীর” গ্রন্থে (৪/২/৩৮৮) ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস। ইবনুল জাওযী
হাদীসটিকে তার “আল-মাওযূ'আত” গ্রন্থে (৩/৪৭) ইবনু আদীর সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেনঃ
হাদীসটি সহীহ নয়। দারাকুতনী “আল-আফরাদ” গ্রন্থে বলেনঃ এ হাদীসটির সমস্যা হচ্ছে
ইউসুফ ইবনু যিয়াদ। কারণ তিনি বাতিল হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ। আর তিনি
ছাড়া ইফরীকী হতে অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। মানাবী তার “আল-ফায়য" গ্রন্থে
বলেন, হাফিয ইরাকী ও ইবনু হাজার বলেছেনঃ তিনি দুর্বল। সাখাবী বলেনঃ তিনি নিতান্তই
দুর্বল। ইবনুল জাওযী হাদীসটির ব্যাপারে জাল হিসাবে হুকুম লাগিয়ে বলেছেন যে, তাতে
ইউসুফ ইবনু যিয়াদ আল-বাসরী রয়েছেন, তিনি আবদুর রহমান আল-ইফরীকী হতে বর্ণনা করেছেন।
তিনি তার নিকট হতে একমাত্র বর্ণনাকারী।
সুয়ূতী
বলেনঃ তিনি আব্দুর রহমান হতে একক বর্ণনাকারী নন, বরং বাইহাকী তার “আল-শু'য়াব”
গ্রন্থে এবং “আল-আদাব” গ্রন্থে হাফস ইবনু আবদির রহমান সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এর
উত্তরে বলতে হচ্ছে যে আমরা আব্দুর রহমান আল-ইফরীকীর কথা বলছি।
ইবনু
হিব্বান বলেনঃ يروي الموضوعات عن الثقات، فهو كاف بالحكم بوضعه তিনি
(ইউসুফ) নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে জাল হাদীস বর্ণনাকারী। অতএব তিনিই হাদীসটি জাল
হওয়ার জন্যে যথেষ্ট।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ হক হচ্ছে ইবনুল জাওযীর সাথে (তার কথাই ঠিক)। যারা ইউসুফকে শুধু
দুর্বল বলেছেন, তারা তিনি যে, নিতান্তই দুর্বল তা না বলে ভুল করেছেন। এছাড়া
(দ্বিতীয় কারণ) শাইখ আব্দুর রহমান আল-ইাফরীকীও যে নিতান্তই দুর্বল এটি বলতেও তারা
ভুলে গেছেন।
খাতীব
বাগদাদী তার “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (১৪/ ২৯৫-২৯৬) ইউসুফ সম্পর্কে বলেন, নাসাঈ
হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন। বুখারী ও সাজী বলেনঃ তিনি
মুনকারুল হাদীস। আবু হাতিমও এরূপ কথাই বলেছেন, যেমনভাবে তার “আল-জারহু ওয়াত
তা’দীল” গ্রন্থে (৪/২২২) এসেছে। তিনি হচ্ছেন মিথ্যার দোষে অভিযুক্ত।
সাখাবী
হাদীসটি “ফাতাওয়াল হাদীসাহ” গ্রন্থে (কাফ ৮৬/১) উল্লেখ করে বলেছেনঃ হাদীসটির সনদ
নিতান্তই দুর্বল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯০ | 90 | ۹۰
৯০।
তোমরা পশমী পোশাক গ্রহণ কর, তাহলে তোমরা তোমাদের হৃদয়ে ঈমানের মধুরতা পাবে। তোমরা
পশমী পোশাক গ্রহণ কর, তাহলে স্বল্প খাদ্য প্রাপ্ত হবে। তোমরা পশমী পোশাক গ্রহণ কর;
তাহলে তা দ্বারা তোমাদেরকে আখেরাতে চেনা যাবে। পশমী পোশাক হৃদয়কে গবেষণার অধিকারী
করে আর গবেষণা বিচক্ষণতার অধিকারী করে এবং বিচক্ষণতা প্রবাহিত হয় রক্তনালীর মধ্যে।
অতএব যে ব্যাক্তির গবেষণা বৃদ্ধি পাবে, তার খাদ্য কমে যাবে, তার জিহবা অকেজো হয়ে
যাবে এবং তার অন্তর পাতলা হয়ে যাবে। আর যে ব্যাক্তির গবেষণা কমে যাবে তার খাদ্য
বৃদ্ধি পাবে, তার শরীর মোটা হয়ে যাবে এবং তার হৃদয় শক্ত হয়ে যাবে। এ শক্ত হৃদয়
দূরে সরে যাবে জান্নাত হতে এবং জাহান্নামের নিকটবর্তী হয়ে যাবে।
হাদীসটি
জাল।
এটি
আবূ বাকর ইবনুন নাকূর “আল-ফাওয়াইদ” গ্রন্থে (১/১৪৭-১৪৮), ইবনু বিশরান “আল-“আমালী”
গ্রন্থে (২/৯/১), দাইলামী “মুসনাদুল ফিরদাউস” গ্রন্থে (২/২৮১) এবং ইবনুল জাওযী
“মাওযূ'আত” গ্রন্থে (৩/৪৮) আল-খাতীব এর সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু ইউনুস আল-কুদায়মী
হতে, তিনি তার শাইখ আব্দুল্লাহ ইবনু দাউদ আল-ওয়াসেতী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
ইবনুল
জাওযী বলেনঃ হাদীসটি সহীহ্ নয়। কুদায়মী হাদীস জাল করতেন এবং তার শাইখ দ্বারা
দলীল গ্রহণ করা যায় না।
সুয়ূতী
তার এ মতকে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/২৬৪) সমর্থন করেছেন। তবে তিনি বলেছেন যে,
হাদীসটিতে ইদরাজ করা হয়েছে (যা তার মধ্যে হওয়ার কথা নয় তা ঢুকিয়ে দেয়া
হয়েছে)। তিনি তার “মুদরাজ ইলাল মুদরাজ” গ্রন্থে (২/৬৪) একটি বাক্য নকল করে বলেনঃ
এটি বাইহাকী “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন যে, এটি হতে মারফু
হচ্ছে শুধুমাত্র এ অংশটুকুঃ عليكم بلباس الصوف تجدوا حلاوة الإيمان في قلوبكم অবশিষ্ট
অংশ অতিরিক্ত মুনকার।
এ
জন্যেই তিনি “আল-জামেউস সাগীর” গ্রন্থে হাকিম ও বাইহাকীর উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু এ সূত্রেও জালকারী মুহাম্মাদ ইবনু ইউনুস রয়েছেন। তার সম্পর্কে ইবনু
হিব্বান বলেনঃ সম্ভবত তিনি দু'হাজারেরও বেশি হাদীস জাল করেছেন।
এছাড়াও
হাকিম “আল-মুসতাদরাক” গ্রন্থে অন্য একটি সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু
সেটিও সহীহ নয়।
মোটকথা
এটির কোন সূত্রই সঠিক নয়। এটির সনদে ইবনু হাবীব মারওয়াযী রয়েছেন; তিনি মুনকার
হাদীস বর্ণনা করতেন এবং আহমাদ ইবনু আবদিল্লাহ নামক বর্ণনাকারী রয়েছেন। আমার ধারণা
তিনি প্রসিদ্ধ মিথ্যুক এবং তার ভাই মুহাম্মাদ মাজহুল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ৯১ | 91 | ۹۱
৯১।
আল্লাহর নাম ধরে কসম করে মিথ্যা কথা বলা আমার নিকট অতিপ্রিয়, আল্লাহ ছাড়া অন্য
কিছুর নামে কসম করে সত্য বলা হতে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
আবূ নু’য়াইম “আল-হিলইয়্যাহ্” গ্রন্থে (৭/২৬৭) এবং “আখবারু আসবাহান” গ্রন্থে
(২/১৮১) উল্লেখ করে “আখবার” গ্রন্থে বলেছেনঃ লোকেরা এটিকে মওকুফ হিসাবে বর্ণনা
করেছেন। আর "হিলইয়্যাহ" গ্রন্থে বলেছেনঃ মুহাম্মাদ ইবনু মুয়াবিয়া একক
ভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তিনি হচ্ছেন নাইসাপূরী। দারাকুতনী তাকে মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন।
ইবনু মাঈনও বলেছেনঃ তিনি মিথ্যুক।
তবে
এটি ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর বাণী, যেমনভাবে আবূ নু’য়াইম উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে
তাবারানীও “মুজামুল কাবীর” গ্রন্থে (৩/১৭/২) সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন। যেমনটি
এসেছে “আল-মাজমা" গ্রন্থে (৪/১৭৭)। অর্থাৎ এটি মওকুফ হিসাবে সহীহ্।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯২ | 92 | ۹۲
৯২।
তিনটি বস্তু যার মধ্যে থাকবে, তার বক্ষকে আল্লাহ প্রশস্ত করে দেবেন এবং তাকে
জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। দুর্বলকে দয়া করা, পিতা-মাতার প্রতি নম্র ব্যাবহার করা
এবং অধীনস্তদের প্রতি ইহসান করা।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইমাম তিরমিযী (৩/৩১৬) আব্দুল্লাহ ইবনু ইবরাহীম আল-গিফারী আল-মাদীনী সূত্রে তার
পিতা হতে ... বর্ণনা করে বলেছেনঃ হাদীসটি গারীব।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ ইবনু হিব্বান এ আব্দুল্লাহ সম্পর্কে বলেছেনঃ তিনি হাদীস জাল করতেন।
হাকিম বলেনঃ তিনি দুর্বল সম্প্রদায় হতে বহু জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন। সেগুলো তিনি
ছাড়া অন্য কেউ বর্ণনা করেননি।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তার পিতা মাজহুল, যেমনভাবে “আত-তাকরীব” গ্রন্থে এসেছে। অতএব
হাদীসটি এ সনদে জাল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৩ | 93 | ۹۳
৯৩।
কিয়ামত দিবসে লোকদের কাতার বন্দি করা হবে। অতঃপর জাহান্নামের কোন এক ব্যাক্তি অন্য
এক ব্যাক্তিকে অতিক্রম করবে আর বলবেঃ হে ব্যাক্তি! তুমি কি স্মরণ করতে পারছ না সেই
দিনটিকে যেদিন তুমি (আমার নিকট) পানি চেয়েছিলে? অতঃপর আমি তোমাকে একবার পানি
করিয়েছিলাম। তিনি বলেনঃ অতঃপর তার জন্য সুপারিশ করা হবে। অন্য এক ব্যাক্তি অতিক্রম
করবে আর বলবেঃ হে ব্যাক্তি! তুমি কি স্মরণ করতে পারছ না সেই দিনটিকে যেদিন আমি
তোমাকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি দিয়েছিলাম? অতঃপর তার জন্য সুপারিশ করা হবে।
অন্য এক ব্যাক্তি অতিক্রম করবে আর বলবে যে, হে ব্যাক্তি! তুমি কি স্মরণ করতে পারছ
না সেই দিনটিকে যেদিন তুমি আমাকে এ এ প্রয়োজনে প্রেরণ করেছিলেন আর আমি তোমার জন্য
গিয়েছিলাম? অতঃপর তার জন্য সুপারিশ করা হবে।
হাদীসটি
দুর্বল।
হাদীসটি
ইবনু মাজাহ্ (২/৩৯৪) ইয়াযীদ বুকাশী সূত্রে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
তিনি
হচ্ছেন ইয়াযীদ ইবনু আবান; তিনি দুর্বল, যেরূপভাবে ইবনু হাজার ও অন্যরা বলেছেন।
তিনি ছাড়া অন্য ব্যক্তিও হাদীসটি আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। সেগুলোর কোন
একটিও সহীহ নয়। দেখুন “আত-তারগীব" (২/৫০-৫১)।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৪ | 94 | ۹٤
৯৪।
ইসলামের হাতল ও দিনের স্তম্ভ হচ্ছে তিনটি। যেগুলোর উপর ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত।
যে ব্যাক্তি সেগুলো হতে একটি পরিত্যাগ করবে, সে তা দ্বারা কুফরীকারী হিসাবে গন্য
হবে, যার রক্ত প্রবাহিত করা হালাল। সত্যিকার অর্থে আল্লাহ ব্যাতীত কোন উপাস্য
নেই-এর সাক্ষ্য প্রদান, ফরয সালাত (নামায/নামাজ) ও রমযানের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)।
হাদীসটি
দুর্বল।
হাদীসটি
আবু ইয়ালা তার “মুসনাদ” গ্রন্থে (কাফ ১২৬/২) এবং লালকাঈ তার "সুন্নাহ"
গ্রন্থে (১/২০২/১) মুয়াম্মিল ইবনু ইসমাঈল সূত্রে ... আমর ইবনু মালেক আন-নুকারী
হতে ... বর্ণনা করেছেন।
আমর
ইবনু মালেককে ইবনু হিব্বান ব্যতীত অন্য কোন মুহাদ্দিস নির্ভরযোগ্য বলেননি। তিনি
নির্ভরযোগ্য বলতে শিথিলতা প্রদর্শনকারীদের একজন। এমনকি মাজহুল ব্যক্তিদেরকেও তিনি
নির্ভরযোগ্য বলেছেন। এছাড়া তিনি নিজেই এ মালেক সম্পর্কে বলেনঃ তার ছেলে
ইয়াহইয়ার বর্ণনা ব্যতীত অন্য বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি ভুল করতেন এবং গারীব বর্ণনা
করতেন। অতএব এ হাদীসটিকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যাবে না অন্য সনদে তা বর্ণিত না
হওয়া পর্যন্ত।
এছাড়া
মুয়াম্মিল ইবনু ইসমাঈল সত্যবাদী, কিন্তু বহু ভুল করতেন। এরূপই বলেছেন আবু হাতিম ও
অন্যরা। এছাড়া হাদীসটি সকলের ঐক্যমতের সহীহ হাদীস বিরোধী। যেটিতে ইসলামের স্তম্ভ
পাঁচটি উল্লেখ করা হয়েছে অথচ এটিতে বলা হয়েছে তিনটি। সহীহ হাদীসটির মধ্যে বলা
হয়নি যে, কোন একটি স্তম্ভকে ছেড়ে দিলে সে কাফের হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে এটিতে বলা
হচ্ছে যে, যে ব্যক্তি (তিনটির) একটি ছেড়ে দিবে সে কাফির। তবে অন্য দলীল হতে বুঝা
যায় যে, আশংকা আছে কেউ যদি সলাতের ব্যাপারে অলসতা করে তাহলে সে কুফীর উপর
মৃত্যুবরণ করবে এবং লাইলাহা ইল্লাল্লার সাক্ষী প্রদান করা ব্যতীত কোন কিছুই উপকারে
আসবে না।
অতএব
মুনযেরী (১/১৯৬) এবং হায়সামী (১/৪৮) কর্তৃক আলোচ্য হাদীসের সনদটি হাসান বলা
প্রশ্নবোধক।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৫ | 95 | ۹۵
৯৫।
তওবাকারী আল্লাহর বন্ধু।
এ
শব্দে হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই।
এ
শব্দে হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই। গাযালী “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (৪/৪৩৪) নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা হিসাবে উল্লেখ করেছেন! অথচ শাইখ তাজুদ্দীন
সুবকী “আত-তাবাকাত" গ্রন্থে (৪/১৪-১৭০) বলেনঃ لم أجد له إسنادا এর
কোন সনদ পাচ্ছি না।
এটির
ন্যায় নিম্নের হাদীসটিওঃ (দেখুন পরেরটি)
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৬ | 96 | ۹٦
৯৬।
নিশ্চয় আল্লাহ ভালবাসেন পথভ্রষ্ট তওবাকারী মু’মিন বান্দাকে।
হাদীসটি
জাল।
এটি
আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ “যাওয়াইদুল মুসনাদ” গ্রন্থে (নং ৬০৫,৮১০) এবং তার সূত্রে
আবু নু’য়াইম "হিলইয়াহ" গ্রন্থে (৩/১৭৮-১৭৯) উল্লেখ করেছেন।
এ
সূত্রে আবু আবদিল্লাহ মাসলামা আর-রায়ী রয়েছেন। তিনি আবু আমর আল-বাজালী হতে আর
তিনি আব্দুল মালেক ইবনু সুফিয়ান আস-সাকাফী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
এ
সনদটি জাল। কারণ আবু আবদিল্লাহ মাসলামা আর-রায়ীর জীবনী পাচ্ছি না। হাফিয ইবনু
হাজার তাকে তার “তা'জীলুল মানফায়াহ" গ্রন্থে উল্লেখ করেননি।
আবূ
আমর আল-বাজালী সম্পর্কে যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে এবং ইবনু হাজার “আত-তা'জীল”
গ্রন্থে বলেনঃ বলা হয় তার নাম আবীদা, তার থেকে হারামী ইবনু হাফস হাদীস বর্ণনা
করেছেন। ইবনু হিব্বান বলেনঃ তার মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করা হালাল নয়।
হাফিয
ইবনু হাজার দৃঢ়তার সাথে “আল-কুনা” গ্রন্থে “লিসানুল মীযান”-এর উদ্ধৃতিতে (৬/৪১৯)
বলেছেনঃ তিনি হচ্ছেন আবীদা ইবনু আবদির রহমান। তাকে ইবনু হিব্বান উল্লেখ করে
বলেছেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে জাল হাদীস বর্ণনা করতেন।
আব্দুল
মালেক ইবনু সুফিইয়ান আস-সাকাফী সম্পর্কে হুসাইনী বলেনঃ তিনি মাজহুল। হাফিয ইবনু
হাজার তার এ কথাকে “আত-তা'জীল” গ্রন্থে সমর্থন করেছেন।
এছাড়া
হাদীসটি ওয়াকেদী সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তিনি একজন মিথ্যুক। অতএব হাদীসটি
বানোয়াট।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৭ | 97 | ۹۷
৯৭।
নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারী যুবককে ভালবাসেন।
হাদীসটি
দুর্বল।
হাফিয
ইরাকী “আত-তাখরীজ" গ্রন্থে (৪/৪-৫) বলেনঃ এটিকে ইবনু আবিদ-দুনিয়া
“আত-তাওবাহ" গ্রন্থে এবং আবুশ শাইখ “কিতাবুস সাওয়াব” গ্রন্থে আনাস (রাঃ)-এর
হাদীস বলে দুর্বল সনদে উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৮ | 98 | ۹۸
৯৮।
নিশ্চয় আল্লাহ সেই যুবককে ভালবাসেন যে, তার যৌবন কালকে আল্লাহর আনুগত্যের মধ্যে
অতিবাহিত করে।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
আবু নু’য়াইম (৫/৩৬০) এবং তার সূত্রে দাইলামী “মুসনাদুল ফিরদাউস” গ্রন্থে (১/২/২৪৭
মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল ইবনু আতিয়া সূত্রে ... বর্ণনা করেছেন।
এ
সনদটি জাল। কারণ মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল মিথ্যুক।
এর
পরেও সনদে বিচ্ছিন্নতা থাকার আশংকা করছি, উমার ইবনু আবদিল আযীয এবং ইবনু উমার
(রাঃ)-এর মধ্যে। কারণ ইবনু উমার (রাঃ)-এর মৃত্যুর দিন উমারের বয়স ছিল ১৩ বছর মত।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ৯৯ | 99 | ۹۹
৯৯।
নিশ্চয় আল্লাহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সাথে ইবাদতকারীকে ভালবাসেন।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
খাতীব বাগদাদী তার “আত-তারীখ" গ্রন্থে (১০/১১-১২) আব্দুল্লাহ ইবনু ইবরাহীম
আল-গিফারী সূত্রে ... বর্ণনা করেছেন।
এ
সনদটি জাল। কারণ গিফারী জাল করার দোষে দোষী আর তার শাইখ মুনকাদির ইবনু মুহাম্মাদ
লাইয়েনুল হাদীস (হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল), যেমনভাবে হাফিয ইবনু হাজার
“আত-তাকরীব" গ্রন্থে বলেছেন।
এ
হাদীসটি এবং পূর্বের হাদীসটি “জামেউস সাগীর”-এর জাল হাদীস গুলোর অন্তর্ভুক্ত।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০০ | 100 | ۱۰۰
১০০।
সদাচারণকারীদের উত্তম কর্মগুলো হচ্ছে নৈকট্য অর্জন কারীগণের মন্দ কর্ম।
হাদীসটি
বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই।
গাযালী
"আল-ইহইয়া" গ্রন্থে (৪/৪৪) (... قال القائل الصادق) এ
ভাষায় উল্লেখ করেছেন।
সুবকী
(৪/১৪৫-১৭১) বলেনঃ এটি যদি হাদীস হয় তাহলে তা দেখার প্রয়োজন আছে। কারণ লেখক তার
উল্লেখিত কথা দ্বারা কাকে বুঝিয়েছেন তা দেখতে হবে।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ বাহ্যিকভাবে যা দেখা যাচ্ছে, গাযালী হাদীস হিসাবে এটিকে উল্লেখ
করেননি। এ জন্য হাফিয ইরাকী “তাখরাজু আহাদীসে ইহইয়া” গ্রন্থে উল্লেখ করেননি।
গাযালী ইঙ্গিত করেছেন যে, এটি আবু সাঈদ আল-খাররাজ আস-সূফীর কথা। ইবনুল জাওযী
“সাফওয়াতুস সাফওয়া” গ্রন্থে (২/১৩০/১) অনুরূপভাবে ইবনু আসাকিরও উল্লেখ করেছেন,
যেমনটি “আলকাশফ” গ্রন্থে (১/৩৫৭) এসেছে। অতঃপর বলেছেনঃ কোন কোন ব্যক্তি এটিকে
হাদীস হিসাবে গণ্য করেছেন। কিন্তু তেমনটি নয়।
যারা
এটিকে হাদীস হিসাবে গণ্য করেছেন, তাদের একজন হচ্ছেন আবুল ফযল মুহাম্মাদ ইবনু
মুহাম্মাদ আশ-শাফেঈ তার “জিল্লুল মওরেদ” গ্রন্থে (কাফ ১/১২)। তবে তিনি দুর্বল শব্দ
দিয়ে (রোগাক্রান্ত শব্দে) উল্লেখ করেছেন।
তার
এ দাবী সঠিক নয়। কারণ এটির কোন ভিত্তিই নেই।
অর্থের
দিক দিয়েও এটি সঠিক নয়। কারণ কখনই ভালকর্ম খারাপ কর্মে পরিণত হতে পারে না।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১০১ | 101 | ۱۰۱
১০১।
আমি ভুলিনা, কিন্তু আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয় যাতে করে আমি বিধান রচনা করতে পারি।
হাদীসটি
বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই।
এটিকে
উক্ত ভাষায় গাযালী “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (৪/৩৮) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
হাফিয
ইরাকী বলেনঃ ইমাম মালেক হাদীসটি বিনা সনদে তার নিকট পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছেন।
ইবনু আবদিল বার বলেনঃ হাদীসটি “আল-মুওয়াত্তা" গ্রন্থে সনদহীন মুরসাল হিসাবে
পাওয়া যায়। হামযা আল-কিনানী বলেনঃ ইমাম মালেক ছাড়া অন্য কারো সূত্রে এটি বর্ণিত
হয়নি। আবু তাহের আনমাতী বলেনঃ এটিকে আমি দীর্ঘ সময় খুঁজেছি, ইমাম এবং হাফিযগণকে
এটির সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু সফলকাম হইনি এবং কারো নিকট শুনিনি যে, তিনি
সফল হয়েছেন।
হাফিয
ইবনু হাজার বলেনঃ যারকানী “শরহুল মুওয়াত্তা” গ্রন্থে (১/২০৫) উল্লেখ করেছেন। এর
কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত নিম্নের সহীহ হাদীস
বিরোধীঃ
إنما أنا بشر أنسى كما تنسون، فإذا نسيت فذكروني
অর্থঃ
আমি মানুষ; আমি ভুলে যাই যেরূপভাবে তোমরা ভুলে যাও। অতএব আমি যখন ভুলে যাব তখন
তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিবে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০২ | 102 | ۱۰۲
১০২।
লোকেরা ঘুমিয়ে রয়েছে, যখন তাঁরা মৃত্যুবরণ করবে; তখন তাঁরা সতর্ক হবে (জাগ্রত
হবে)।
হাদীসটির
কোন ভিত্তি নেই।
গাযালী
এটিকে মারফু বলে উল্লেখ (৪/২০) করেছেন।
হাফিয
ইরাকী এবং তার অনুসরণ করে সুবকী বলেন (৪/১৭০-১৭১) কিন্তু মারফু' হিসাবে হাদীসটি
পাচ্ছি না। এটিকে আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ)-এর কথা হিসাবে বলা হয়েছে।
অনুরূপ
কথা “আল-কাশফ” গ্রন্থেও (২/৩১২) এসেছে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৩ | 103 | ۱۰۳
১০৩।
তোমরা তওবাকারীদের সাথে বস। কারন তাঁরা অতি নরম হৃদয়ের অধিকারী।
হাদীসটির
কোন ভিত্তি নেই।
গাযালী
এটিকে মারফু' হিসাবে উল্লেখ করেছেন। হাফিয ইরাকী এবং তার অনুসরণ করে সুবকী (৪/১৭১)
বলেছেনঃ এটিকে মারফু' হিসাবে পাচ্ছি না। হাফিয ইরাকী বলেনঃ এটি আওন ইবনু
আবদিল্লাহর কথা; যা ইবনু আবিদ-দুনিয়া “আত-তওবা” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৪ | 104 | ۱۰٤
১০৪।
যার নিকট সা’দকা করার মত কিছু থাকবে না, সে যেন ইয়াহুদীদের অভিশাপ দেয়।
হাদীসটি
জাল।
খাতীব
বাগদাদী এটিকে “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (১৪/২৭০) উল্লেখ করেছেন। এর সনদে ইয়াকুব
ইবনু মুহাম্মাদ আয-যুহরী আছেন। তিনি সত্যবাদী, কিন্তু তিনি যার নিকট হতে বর্ণনা
করেছেন তার ব্যাপারে তিনি বেপরওয়া।
ইবনু
মা'ঈন বলেনঃ هذا كذب وباطل لا يحدث بهذا أحد يعقل এটি
মিথ্যা ও বাতিল, যার আকল আছে তিনি এটি বর্ণনা করতে পারেন না।
ইবনুল
জাওযী এটিকে তার “মাওযুআত” গ্রন্থে (২/১৫৭) আল-খাতীবের সূত্রে বর্ণনা করে বলেছেনঃ
বর্ণনাকারী ইয়াকুব সম্পর্কে আহমাদ ইবনু হাম্বাল বলেনঃ তিনি কোন কিছুই না। সুয়ূতী
তার (ইবনুল জাওযীর) সমালোচনা করেছেন এবং ইয়াকুবকে নির্ভরযোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত
করেছেন। কিন্তু এ বাতিল হাদীসটির কারণ প্রকাশ করতে পারেননি। সেটি হচ্ছে ইনকিতা'
(সনদে বিচ্ছন্নতা)।
যাহাবী
ইয়াকুবের জীবনীতে বলেনঃ যিনি এ কথা বলবেন যে, তিনি হিশাম ইবনু উরওয়া হতে বর্ণনা
করেছেন তিনি ভুল করবেন। কারণ তিনি তার সাথে মিলিতই হননি। সম্ভবত তার জন্মই হয়েছে
হিশামের মৃত্যুর পরে। অতঃপর বলেনঃ আরো নিকৃষ্ট সেটি যেটিকে তিনি এক ব্যক্তি হতে
বর্ণনা করেছেন, আর সে ব্যক্তি হিশাম হতে বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ সম্ভবত যে ব্যক্তির নাম নেয়া হয়নি, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু
মুহাম্মাদ ইবনে যাযান আল-মাদানী। এর সূত্রেই ইবনু আদী, সাহমী “তারীখু জুরজান"
গ্রন্থে (২৮২) এবং যিয়া “আল-মুনতাকা" গ্রন্থে (২/৩৩) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
তার (আব্দুল্লাহর) সম্পর্কে ইবনু আদী বলেনঃ তার এমন হাদীস রয়েছে যেগুলো সংরক্ষিত
(নিরাপদ) নয়।
যাহাবী
“আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি হালেক (ধ্বংস প্রাপ্ত)। অতঃপর এ হাদীসটি উল্লেখ করে
বলেনঃ এটি মিথ্যা। তার এ কথাকে ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে সমর্থন করেছেন।
খাতীব বাগদাদী অন্য একটি সূত্রে হাদীসটি (১/২৫৮) বর্ণনা করেছেন। যার সনদে ইসমাঈল
ইবনু মুহাম্মাদ আত-তালহী, সুলাইম আল-মাক্কী ও তালহা ইবনু আমর রয়েছেন। ইবনুল জাওযী
বলেনঃ হাদীসটি সহীহ নয়, তারা সকলে মাতরূক। তালহা এবং সুলাইমকে নাসাঈ মাতরূকুল
হাদীস বলেছেন। তবে তালহী মাতরূক নয়। শাইখ আলী আল-কারী এ হাদীসটি সম্পর্কে বলেন
(পৃঃ ৮৫) এটি সঠিক নয়। অর্থাৎ এটি জাল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৫ | 105 | ۱۰۵
১০৫।
যে ব্যাক্তি তার ভাইয়ের চাহিদানুযায়ী সংহতি প্রকাশ করবে, তাকে আল্লাহ ক্ষমা করে
দিবেন।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
উকায়লী “আয-যুয়াফা" গ্রন্থে (৪৩৬, ৪৩৭), আবু নু’য়াইম “আখবারু আসবাহান” গ্রন্থে
(২/৬৬) নাসর ইবনু নাজীহ আল-বাহিলী সূত্রে উমার আবু হাফস হতে ... বর্ণনা করেছেন।
উকায়লী
বলেনঃ নাসর এবং উমার উভয়েই বর্ণনার দিক দিয়ে মাজহুল। হাদীসটি নিরাপদ নয়।
ইবনুল
জাওযী হাদীসটিকে “মাওযুআত” গ্রন্থে (২/১৭১) উল্লেখ করে বলেছেনঃ موضوع، عمر متروك এটি
বানোয়াট, উমার একজন মাতরূক বর্ণনাকারী। হাফিয ইরাকী তার এ কথাকে “তাখরীজুল
ইহইয়া” গ্রন্থে (২/১১) সমর্থন করেছেন।
কিন্তু
সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/৮৭) তার সমালোচনা করে বলেছেনঃ হাদীসটিকে বাযযার এবং
তাবারানী বর্ণনা করেছেন। অতঃপর বলেছেনঃ আবু হাফস শক্তিশালী ছিলেন না।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তার (সুয়ূতীর) এ কথায় খুবই শিথিলতা করা হয়েছে। কারণ তিনি (আবু
হাফস) খুবই দুর্বল, এমনকি তার সম্পর্কে ইবনু খারাশ বলেনঃ كذاب يضع الحديث তিনি
মিথ্যুক, হাদীস জাল করতেন।
অতঃপর
সুয়ূতী তার শাহেদ হিসাবে নিম্নের হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। যাতে মিথ্যার দোষে দোষী
বর্ণনাকারী রয়েছেন। অতএব তার এ সমালোচনা অর্থহীন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৬ | 106 | ۱۰٦
১০৬।
যে ব্যাক্তি তার মুসলিম ভাইকে তার চাহিদানুযায়ী পানাহার করাবে, আল্লাহ তার উপর
জাহান্নামকে হারাম করে দিবেন।
হাদীসটি
জাল।
বাইহাকী
এটিকে “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে তার সনদে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেনঃ হাদীসটি এ সনদে
মুনকার।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এর কারণ হচ্ছে বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনু আবদিস সালাম (তিনি হচ্ছেন
ইবনুন নূ'মান)। তার সম্পর্কে ইবনু আদী বলেনঃ كان ممن يستحل الكذب তিনি
সেই ব্যাক্তিদের অন্তর্ভুক্ত যারা মিথ্যা বলাকে হালাল জানতেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ সুয়ূতী এ হাদীসটিকে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/৮৭) উপরেরটির শাহেদ
হিসাবে উল্লেখ করেছেন। অথচ সেটিও জাল। আর তিনি দুটিকেই “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে
উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৭ | 107 | ۱۰۷
১০৭।
যে ব্যাক্তি তার ভাইকে তার চাহিদানুযায়ী তৃপ্তি দিবে, আল্লাহ তার জন্য দশ লক্ষ
সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন, তার নিকট হতে দশ লক্ষ মন্দ কর্মকে মুছে ফেলবেন, তার জন্য
দশ লক্ষ মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন এবং আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস, জান্নাতু
আদন ও জান্নাতুল খুলদ এ তিনটি জান্নাত থেকে পানাহার করাবেন।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
গাযালী “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (২/১১) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস
হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সুবকী “আত-তাবাকাত” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি এটির কোন সনদ পাননি।
তবে
হাফিয ইরাকী “তাখরীজুল ইহইয়া” গ্রন্থে বলেনঃ এটিকে ইবনুল জাওযী “আল-মাওযূ'আত”
গ্রন্থে আবূ যুবায়ের হতে মুহাম্মাদ ইবনু নাঈমের বর্ণনায় উল্লেখ করে বলেছেনঃ ইমাম
আহমাদ ইবনু হাম্বাল বলেনঃ এটি বাতিল ও মিথ্যা। অনুরূপ কথা যাহাবীর “আল-মীযান”
গ্রন্থে এবং ইবনু হাজারের “লিসানুল মীযান” গ্রন্থেও বলা হয়েছে।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তবে ইবনুল জাওযী হাদীসটিকে (২/১৭২) (... ألف ألف حسنة)
এ পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন।
হাদীসটি
সম্পর্কে তার মন্তব্যকে সুয়ূতী “আল-লাআলী” (২/৮৭) গ্রন্থে সমর্থন করেছেন। অতঃপর
ইবনু আররাকও “তানযীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থে (২/২৬২) তা সমর্থন করেছেন। হাদীসটি
মুয়াফফাক উদ্দীন ইবনু কুদামা “আল-মুন্তাখাব” গ্রন্থে (১০/১৯৬/১) উল্লেখ করে ইমাম
আহমাদের উদ্ধৃতিতে বলেছেনঃ هذا كذب هذا باطل এটি মিথ্যা,
এটি বাতিল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৮ | 108 | ۱۰۸
১০৮।
তিনি আংগুর খেতেন টুকরো টুকরো করে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনু আদী “আল-কামিল” (১/২৮০) গ্রন্থে এবং বাইহাকী তার সূত্রে “শুয়াবুল ঈমান”
গ্রন্থে (২/২০১/১) উল্লেখ করেছেন। এ সনদে সুলায়মান ইবনু রাবী', কাদিহ্ ইবনু রাহমা
এবং হুসাইন ইবনু কাইস রয়েছেন। ইবনু আদী কাদিহ সম্পর্কে বলেনঃ তিনি যা কিছু বর্ণনা
করেছেন তা নিরাপদ নয় এবং তার সনদ এবং মতনগুলোর কোনটিরই অনুসরণ করা যায় না। ইবনুল
জাওযী ইবনু আদী সূত্রে তার “মাওযু'আত” গ্রন্থে (২/২৮৭) হাদীসটি উল্লেখ করে বলেছেনঃ
হুসাইন কিছুই না, কাদিহ মিথ্যুক এবং সুলায়মানকে দারাকুতনী দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
বাইহাকী
এবং ইবনুল জাওযী উকায়লী সূত্রে দাউদ ইবনু আবদিল জাব্বার আবৃ সুলায়মান আল-কূফী
হতে হাদীসটি নিম্নের ভাষায় বর্ণনা করেছেনঃ
رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يأكل العنب خرطا
এটি
সম্পর্কে উকায়লী বলেনঃ এটির কোন ভিত্তি নেই। দাউদ নির্ভরযোগ্য নন, তার অনুসরণ করা
যায় না।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তার (উকায়লী) সূত্রে হাদীসটি আবূ বাকর আশ-শাফেঈ “আল-ফাওয়াইদ”
গ্রন্থে (১/১১০) ও তাবারানী “মুজামুল কাবীর” গ্রন্থে (৩/১৭৪/২) উল্লেখ করেছেন।
সুয়ূতী
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/২১১০) হাদীসটি সম্পর্কে বলেনঃ এটিকে তাবারানী এবং বাইহাকী
“শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। অতঃপর (বাইহাকী) বলেছেনঃ তার কোন
শক্তিশালী সনদ নেই। ইরাকী “তাখরীজুল ইহইয়া” গ্রন্থে হাদীসটিকে শুধু দুর্বল বলেই
ক্ষান্ত হয়েছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ ইরাকী এবং বাইহাকীর দুর্বল আখ্যা প্রদান ব্যাখ্যা সম্বলিত নয়।
কারণ এ দাউদ সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন। তিনি আরো বলেছেনঃ তিনি
মিথ্যা বলতেন।
অতএব
তার মত ব্যক্তির হাদীস, মিথ্যুক কাদিহের হাদীসের জন্য শাহেদ হওয়ার উপযুক্ত নয়। এ
জন্য যাহাবী ও আসকালানী উকায়লী কর্তৃক لا أصل له এটির কোন
ভিত্তি নেই একথাকে সমর্থন করেছেন।
এ
কারণেই সুয়ূতী কর্তৃক হাদীসটি “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে উল্লেখ করা তার
শর্তানুযায়ী সঠিক হয়নি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১০৯ | 109 | ۱۰۹
১০৯।
আমার উম্মাতের সৎকর্মশীল পুরুষদের কর্ম হচ্ছে দরজীর কাজ আর আমার উম্মাতের সৎ
কর্মশীলা মহিলাদের কর্ম হচ্ছে চরকায় সুতা কাটা।
হাদীসটি
জাল।
এটি
ইবনু আদী (১/১৫৩), আবু নু’য়াইম “আখবার আসবাহান” গ্রন্থে (১/৩০৩) এবং ইবনু আসাকির
(১৫/২৬১/১) আবু দাউদ আন-নাখ'ঈ সুলায়মান ইবনু আদী বলেনঃ এটি সুলায়মান ইবনু আমর
কর্তৃক আবু হাযিমের উপর জালকৃত হাদীসগুলোর একটি।
সুয়ূতী-
তাম্মাম, খাতীব বাগদাদী ও ইবনু আসাকিরের বর্ণনা হতে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু
সূত্রে আবু দাউদ আন-নাখ'ঈ রয়েছেন। মানাবী বলেনঃ তার সম্পর্কে আল-খাতীব নিজে
বলেছেনঃ তিনি একজন মিথ্যুক, জালকারী, দাজ্জাল। যাহাবী “আয-যুয়াফা" গ্রন্থে
বলেনঃ তিনি মিথ্যুক, দাজ্জাল। তিনি তার “আল-মীযান” গ্রন্থে ইমাম আহমদের উদ্ধৃতিতে
বলেনঃ তিনি হাদীস জাল করতেন। ইয়াহইয়া তার সম্পর্কে বলেনঃ كان أكذب الناس তিনি
হাদীসের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা মিথ্যুক ছিলেন। ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে
তার এ কথাকে সমর্থন করেছেন। ইবনুল জাওযী জাল হিসাবেই হুকুম লাগিয়েছেন।
সুয়ূতী
এ হাদীসটি “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/১৫৪) এবং “আল-ফাতাওয়া” গ্রন্থে (২/১০৭)
তাম্মামের সূত্রে উল্লেখ করেছেন। যার সনদে মূসা ইবনু ইবরাহীম আল-মারওয়াযী
রয়েছেন। তাকে ইয়াহইয়া মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন। তার মুতাবা'য়াত দ্বারা আনন্দিত
হওয়ার কিছু নেই। এ জন্য ইবনু আররাক হাদীসটিকে জাল-এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ
হাদীসটি সম্পর্কে যাহাবী বলেনঃ قبح الله من وضعه আল্লাহ
খারাপ পরিণতি করুন সেই ব্যক্তির যিনি হাদীসটি জাল করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১০ | 110 | ۱۱۰
১১০।
যদি এ হৃদয় বিনয়ী হয়, তবে তার অঙ্গ-প্রতঙ্গ গুলোও বিনয়ী হবে।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
সুয়ূতী “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে হাকীমের বর্ণনায় উল্লেখ
করেছেন। শাইখ জাকারিয়া আনসারী বলেনঃ হাদীসটির সনদ য'ঈফ। কিন্তু এটি তার চাইতেও
আরো দুর্বল। যাইন আল-ইরাকী “শারহুত তিরমিযী” গ্রন্থে বলেনঃ এটির সনদে সুলায়মান
ইবনু আমর রয়েছেন। তিনি হচ্ছেন আবু দাউদ আন-নাখঈ। তার দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে
সকলেই একমত।
এটিকে
জানা যায় ইবনুল মুসাইয়্যাবের কথা হিসাবে। যেমনটি “আল-মুগনী" গ্রন্থে
(১/১৫১) উল্লেখ করা হয়েছেঃ এটির সনদ দুর্বল এবং সাঈদের কথা হিসাবে পরিচিতি লাভ
করেছে।
যায়লাঈ
বলেছেনঃ ইবনু আদী বলেন যে, তিনি (সুলায়মান) হাদীস জাল করতেন এ কথার উপর
মুহাদ্দিসগণ একমত হয়েছেন ।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক এটিকে “আল-যুহুদ” গ্রন্থে (১/২১৩) সাঈদ
হতে মওকুফ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এটির সনদে একজন ব্যক্তির পরিচয় উল্লেখ
করা হয়নি। অর্থাৎ সনদটি মাজহুল। আব্দুর রাযযাক “আল-মুসান্নাফ” গ্রন্থে (২/২২৬)
মাজহুল ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে বলেছেনঃ তিনি হচ্ছেন আবান, কিন্তু আবানও দুর্বল
বর্ণনাকারী। সুতরাং হাদীসটি মারফু হিসাবে জাল আর মওকুফ হিসাবে দুর্বল। তবে মওকুফ
হিসাবে এটির শাহেদ পাওয়া যায়। যার সনদটি ভাল। সেটি ইমাম আহমাদের পুত্রের
“মাসায়েল” গ্রন্থে (পৃঃ ৮৩) উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১১১ | 111 | ۱۱۱
১১১।
বংশ পরিচয় দানকারীগন মিথ্যা বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “এবং তাদের মধ্যবর্তী বহু
সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি।”
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
সুয়ূতী তার “আল-জামে” গ্রন্থে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে ইবনু সায়াদ এবং ইবনু
আসাকিরের বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন । মানাবী “জামেউস সাগীর-এর শারাহতে” দুটি স্থানে
এ হাদীসটি সম্পর্কে চুপ থেকেছেন। সম্ভবত তিনি এটির সনদ সম্পর্কে অবহিত হননি,
অন্যথায় তার এরূপ চুপ থাকা সঠিক হয়নি। ইবনু সায়াদ হাদীসটি “আত-তাবাকাত” গ্রন্থে
(১/১/২৮) হিশাম সূত্রে তার পিতা মুহাম্মাদের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ হিশাম হচ্ছেন ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুস সাঈব আল-কালবী। তিনি মাতরুক,
যেমনভাবে দারাকুতনী প্রমুখ বলেছেন। তার পিতা মুহাম্মাদ তার চেয়েও নিকৃষ্ট।
জুযজানী ও অন্যরা তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি মিথ্যুক। মুহাম্মাদ নিজে স্বীকার করেছেন
যে, তিনি মিথ্যা বর্ণনা করেছেন। বুখারী সহীহ্ সনদে সুফিইয়ান হতে বর্ণনা করেছেন
তিনি (সুফিইয়ান) বলেনঃ কালবী আমাকে বলেছেন যে, আমি তোমার নিকট যে সব হাদীস আবূ
সালেহ হতে বর্ণনা করেছি সেগুলো মিথ্যা। ইবনু হিব্বান বলেনঃ তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ)
হতে আবু সালেহ-এর সূত্রে তাফসীর বর্ণনা করেছেন। অথচ আবূ সালেহ ইবনু আব্বাসকে
দেখেননি আর কালবী আবু সালেহ হতে শুনেননি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১২ | 112 | ۱۱۲
১১২।
ফড়িং (পতঙ্গ) সামুদ্রিক মাছের হাঁচি।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনু মাজাহ্ (২/২৯২) যিয়াদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনে আলাসা সূত্রে মূসা ইবনু মুহাম্মাদ
হতে বর্ণনা করেছেন ... (এ অংশটুকু বর্ণিত হাদীসের অংশ বিশেষ)।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটির সনদ খুবই দুর্বল। এ মূসা ইবনু মুহাম্মাদ হচ্ছেন তাইমী মাদানী।
তিনি মুনকারুল হাদীস; যেমনভাবে নাসাঈ ও অন্যরা বলেছেন। হাদীসটিকে যাহাবী তার
মানাকীর গুলোর একটি মুনকার হাদীস হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
হাদীসটিকে
ইবনুল জাওযী তার “আল-মাওযুআত” গ্রন্থে (৩/১৪) মূসার সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটি
সহীহ্ নয়, মূসা মাতরূক।
সুয়ূতী
তার এ কথাকে “আল-লাআলী" গ্রন্থে (২/৩৩৩) সমর্থন করেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি
হাদীসটি "জামেউস সাগীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।
ইবনু
কুতায়বা হাদীসটি “গারীবুল হাদীস” গ্রন্থে (৩/১১৪) আবূ খালিদ আল-ওয়াসেতী সূত্রে
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে মওকুফ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এটিও মারফুটির ন্যায়। কারণ এর
সনদও নিতান্তই দুর্বল। কেননা এ আবূ খালিদ হচ্ছেন আমর ইবনু খালিদ, তিনি মাতরূক।
ওয়াকী’ তাকে মিথ্যার দোষে দোষী করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটি ইসরাইলী বর্ণনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৩ | 113 | ۱۱۳
১১৩।
অপবাদমূলক স্থানগুলো হতে বেঁচে চল।
এটির
কোন ভিত্তি নেই।
হাদীসটি
গাযালী “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (৩/৩১) উল্লেখ করেছেন। তার তাখরীজকারী হাফিয ইরাকী
বলেনঃ হাদীসটির কোন ভিত্তি পাচ্ছি না। সুবকী “আত-তাবাকাত” গ্রন্থে (৪/১৬২) অনুরূপ
কথাই বলেছেন। এছাড়া একইভাবে মওকুফ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দেখুন যুবাইদীর
“শারহুল ইহইয়া” গ্রন্থ (৭/২৮৩)
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৪ | 114 | ۱۱٤
১১৪।
যে ব্যাক্তি কোন শিশুকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা পর্যন্ত লালনপালন করবে; আল্লাহ
তার হিসাব কিতাব নিবেন না।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
খারায়েতী “মাকারিমূল আখলাক” গ্রন্থে (পৃঃ ৭৫), ইবনু আদী (২/১৬২) এবং ইবনুন
নাজ্জার “যায়লু তারীখে বাগদাদ” গ্রন্থে (১০/১৬৩/২) আবূ উমাইর আব্দুল কাবীর ইবনু
মুহাম্মাদ সূত্রে তার শাইখ সুলায়মান আশ-শাযকুনী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটির সনদ জাল। এ আব্দুল কাবীর ও তার শাইখ শাযকনী তারা উভয়ে
মিথ্যার দোষে দোষী। হাদীসটি ইবনুল জাওযী তার “আল-মাওযু’আত” গ্রন্থে (২/১৭৮)
বর্ণনাকারী আব্দুল কাবীর হতে ইবনু আদীর সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেনঃ হাদীসটি সহীহ্
নয়।
ইবনু
আদী বলেনঃ সম্ভবত এটির বিপদ হচ্ছে আবূ উমাইরের নিকট হতে। তিনি বলেনঃ এটিকে
ইব্রাহীম ইবনু বারা শাযকুনী হতে বর্ণনা করেছেন। এ ইবরাহীম বাতিল হাদীস বর্ণনা
করতেন। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে এ ইবরাহীমের জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ
করেছেনঃ উকায়লী বলেনঃ يحدث عن الثقات بالبواطيل তিনি
নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে বাতিল হাদীস বর্ণনাকারী। ইবনু হিব্বান বলেনঃ يحدث عن الثقات بالموضوعات তিনি
নির্ভরশীলদের উদ্ধৃতিতে জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন তার সমালোচনা করা ব্যতীত অন্য কোন
উদ্দেশ্যে তাকে উল্লেখ করাই বৈধ নয়’।
এ
হাদীসটি অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে; যেটি সুয়ূতী ইবনুল জাওযীর সমালোচনা করে
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/৯/৯১) উল্লেখ করেছেন। যাতে আশ'য়াস ইবনু মুহাম্মাদ আল-কালাঈ
নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন। তাকে শুধুমাত্র এ হাদীসের সনদেই চেনা যায়। এ জন্যেই
যাহাবী তাকে “আল-মীযান” গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেনঃ তিনি জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন।
যাহাবীর এ কথাকে হাফিয ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে সমর্থন করেছেন। এ
হাদীসটি বাতিল এ মর্মে হাফিযগণ (ইবনু হিব্বান, ইবনু আদী, যাহাবী, আসকালানী) ঐকমত্য
পোষণ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৫ | 115 | ۱۱۵
১১৫।
তোমরা তোমাদের খাদ্যকে আল্লাহর যিকর ও সালাত (নামায/নামাজ) দ্বারা পরিপূর্ণ রাখ,
তোমরা তার উপর নিদ্রা যেওনা; কারন তাহলে তোমাদের হৃদয়গুলো কঠিন হয়ে যাবে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনু নাসর “কিয়ামুল লাইল” গ্রন্থে (পৃঃ ১৯-২০), উকায়লী “আয-যুয়াফা” গ্রন্থে
(পৃ. ৯৬), ইবনু আদী “আল-কামিল” গ্রন্থে (২/৪০), আবু নু’য়াইম “আখবারু আসবাহান”
গ্রন্থে (১/৯৬), ইবনুস সুন্নী “আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইআহ” গ্রন্থে (পৃ. ১৫৬ নং
৪৮২) ও বাইহাকী “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে (২/২১১/১) বাযী আবুল খালীল সূত্রে ...
বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটি জাল। উকায়লী বলেনঃ বাযী অনুসরণযোগ্য নয়। ইবনু আদী তার কতিপয়
হাদীস উল্লেখ করে বলেছেনঃ এ সব হাদীসগুলো মুনকার। কোন ব্যক্তিই তার অনুসরণ করেননি।
বাইহাকী
বলেনঃ এটি মুনকার, বাযী একক ভাবে এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি দুর্বল। যাহাবী
“আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি মিথ্যার দোষে দোষী বর্ণনাকারী। ইবনু হিব্বান বলেনঃ
তিনি নির্ভরশীলদের উদ্ধৃতিতে বানোয়াট কিছু (হাদীস) বর্ণনা করেছেন, যেন তিনি তা
ইচ্ছাকৃতই করেছেন।
“লিসানুল
মীযান” গ্রন্থে এসেছে বুরকানী দারাকুতনীর উদ্ধৃতিতে বলেনঃ তিনি (বাযী') মাতরূক।
তার সব কিছুই বাতিল। হাকিম বলেনঃ তিনি জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং তিনি তা
নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটিকে
ইবনুল জাওযী তার “আল-মাওযূ"আত” গ্রন্থে (৩৬৯) এ সূত্রে ইবনু আদীর বর্ণনায়
উল্লেখ করেছেন। তিনি অন্য বর্ণনায় আসরাম ইবনু হাওশাব সূত্রে উল্লেখ করেছেন। অতঃপর
ইবনুল জাওযী বলেছেনঃ এটি জাল। বাযী মাতরূক এবং আসরাম মিথ্যুক।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৬ | 116 | ۱۱٦
১১৬।
তোমরা নৈশ খাদ্য গ্রহণ কর যদিও নিকৃষ্ট মানের খাদ্যের এক হাতের তালু পরিমাণও হয়।
কারন নৈশ খাদ্য পরিত্যাগ করা বার্ধক্যের কারন।
হাদীসটি
নিতান্তই দুর্বল।
এটি
ইমাম তিরমিযী (৩/১০০) ও কাযাঈ (১/৬৩) আম্বাসা ইবনু আবদির রহমান আল-কুরাশী সূত্রে
আব্দুল মালেক ইবনু আল্লাক হতে ... বর্ণনা করেছেন।
তিরমিযী
বলেনঃ হাদীসটি মুনকার, এ সূত্র ব্যতীত অন্য কোন মাধ্যমে এটিকে চিনি না। আম্বাসা
হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল আর আব্দুল মালেক মাজহুল।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ আম্বাসা সম্পর্কে আবু হাতিম বলেনঃ كان يضع الحديث "তিনি
হাদীস জাল করতেন" যেমনভাবে যাহাবীর "আল-মীযান" গ্রন্থে এসেছে।
অতঃপর তিনি তার কতিপয় হাদীস উল্লেখ করেছেন, এটি সেগুলোর একটি।
হাদীসটি
আবূ নু’য়াইম "হিলইয়াহ" গ্রন্থে (৮/ ২১৪-২১৫), খাতীৰ বাগদাদী (৩/৩৯৬),
ইবনু আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/১১) ও ইবনু আদী “আল-কামিল” গ্রন্থে (২/২৩২)
আম্বাসা সূত্রেই তার শাইখের নাম বিভিন্নরূপে উল্লেখ পূর্বক বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ কারণেই উক্ত বর্ণনাগুলো হতে সনদটি আম্বাসা সূত্রে মুযতারিব এটাই
সুস্পষ্ট। কারণ তিনি তার শায়খের নাম একবার বলছেন আব্দুল মালেক ইবনু আল্লাক
আরেকবার বলছেন মুসলিম, আরেক বার বলছেন আল্লাক ইবনু মুসলিম, আবার বলছেন মূসা ইবনু
উকবা। এরূপ ইযতিরাব হওয়াটাও হাদীসটি দুর্বল হওয়ার অন্যতম কারণ। [মুযতারিবের
ব্যাখ্যা দেখুন (৫৭-৫৮) পৃষ্ঠায়।]
হাদীসটি
সাগানী তার “আহাদীসুল মাওযুআহ” গ্রন্থে (পৃঃ ১২) এবং তার পূর্বে ইবনুল জাওযী
(৩/৩৬) তিরমিযীর সূত্রে উল্লেখ করেছেন।
ইবনু
মাজাহ্ (২/৩২২) অনুরূপ অর্থের হাদীস জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তার সনদে
ইবরাহীম ইবনু আবদিস সালাম ও আব্দুল্লাহ ইবনু মায়মুন রয়েছেন। কিন্তু সেটি সহীহ
নয় বরং নিতান্তই দুর্বল। কারণ ইবরাহীম মাতরূকদের দলভুক্ত; যেমনভাবে “তাহযীবুত
তাহযীব” গ্রন্থে এসেছে। যাহাবীর “আল-মীযান” গ্রন্থে এসেছেঃ ইবনু আদী তাকে দুর্বল
আখ্যা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেনঃ আমার নিকট তার অবস্থান হাদীস চোর হিসাবে।
আব্দুল্লাহ
ইবনু মায়মূন যদি কাদাহ হন, তাহলে তিনি মাতরূক। আর যদি অন্য কেউ হন তাহলে তিনি
মাজহুল। কুরাশী সূত্রে মূসা ইবনু উকবা হতে বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ সনদে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে
বলেনঃ আবুল হায়সামের বর্ণনা মূসা হতে। আবুল ফাতাহ আল-আযদী বলেনঃ كذاب তিনি
মিথ্যুক। "লিসানুল মীযান" গ্রন্থেও অনুরূপ কথা এসেছে।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৭ | 117 | ۱۱۷
১১৭।
যে ব্যাক্তি তার ঘরে আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক অধিক কল্যাণ কামনা করে, সে যেন তার
দুপুরের খাবার উপস্থিত হওয়ার সময় ওযু করে এবং যখন তা উঠিয়ে নেয়া হবে তখনও ওযু করে।
হাদীসটি
মুনকার।
এটি
ইবনু মাজাহ্ (৩২৬০), আবুশ শাইখ “কিতাবুল আখলকিন নাবী ওয়া আদাবুহু” (পৃঃ ২৩৫)
গ্রন্থে, ইবনু আদী “আল-কামিল” গ্রন্থে (১/২৭৫) ও ইবনুন নাজ্জার “যায়লু তারীখে
বাগদাদ” গ্রন্থে (১০/১৫৩/২) বিভিন্ন মাধ্যমে কাসীর ইবনু সুলাইম সূত্রে আনাস (রাঃ)
হতে বর্ণনা করেছেন।
অতঃপর
ইবনু আদী এ কাসীরের জীবনীতে বলেনঃ সাধারণত আনাস (রাঃ) হতে তার এ বর্ণনাগুলো নিরাপদ
নয়।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ কাসীর দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে সকলে একমত। বরং তার সম্পর্কে নাসাঈ
বলেনঃ متروك তিনি মাতরূক।
বূসয়রী
“আয-যাওয়াইদ” গ্রন্থে বলেছেনঃ যাবারা ও কাসীর তারা উভয়েই দুর্বল।
ইবনু
আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/১১) বলেনঃ আবূ যুরয়াহ বলেনঃ হাদীসটি মুনকার।
হাদিসের
মানঃ মুনকার (সর্বদা পরিত্যক্ত)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৮ | 118 | ۱۱۸
১১৮।
মৃত বস্তুর কোন কিছু দ্বারা তোমার উপকার গ্রহণ কর না।
হাদীসটি
দুর্বল। (কিন্তু পরবর্তীতে তা সহীহ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে)
হাদীসটি
ইবনু ওয়াহাব তার “আল-মুসনাদ” গ্রন্থে যাম'য়াহ ইবনু সালেহ হতে বর্ণনা করেছেন। এ
যাম'য়াহ বিতর্কিত; যেমনভাবে “নাসবুর রায়া” গ্রন্থে (১৯২২) এসেছে। এটির সনদ দুটি
কারণে দুর্বলঃ
১।
এ যামীয়াহ সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার “আত-তাকরীব” ও “তালখীস” গ্রন্থে (১/২৯৭)
বলেনঃ তিনি দুর্বল।
২।
আবু্য যুবায়ের তিনি মুদল্লিস । এছাড়া এ হাদীসটি সহীহ হাদীস বিরোধী।
নির্দেশিকাঃ
হাদীসটি
দুর্বল হওয়ার দুটি কারণ বর্ণনা করেছি এবং বলেছি যে, এটি সহীহ হাদীস বিরোধী যা
“ইরউয়া” গ্রন্থে উল্লেখ করেছি। কিন্তু পরবর্তিতে আবুয যুবায়েরের সুস্পষ্ট শ্রবণ
পেয়েছি এবং এটির শক্তিশালী শাহেদ আব্দুল্লাহ ইবনু উকায়েম হতে এ শব্দেই পেয়েছি।
যা আমি “ইরউয়া” গ্রন্থে স্পষ্ট করেছি। অতঃপর পুনরায় আমি এটির সনদের দিকে দৃষ্টি
দিয়েছি এবং এটি যে সহীহ্ এ মর্মে নিশ্চিত হয়েছি। এ জন্যই আমি এটিকে সহীহার মধ্যে
(৩১৩৩) নাম্বারে উল্লেখ করেছি।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১১৯ | 119 | ۱۱۹
১১৯।
ধনীদের মোরগ গ্রহণ করার সময় আল্লাহ গ্রামগুলোকে ধ্বংসের ঘোষণা দেন।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনু মাজাহ (২/৪৮) ও আবু সাঈদ ইবনুল আ'রাবী তার “আল-মুজাম" গ্রন্থে (১৭৬/১/২)
বর্ণনা করেছেন এবং তার থেকে ইবনু আসাকির (১২/২৩৮/১) উসমান ইবনু আবদির রহমান সূত্রে
‘আলী ইবনু উরওয়া হতে ... বর্ণনা করেছেন। সিন্দী ইবনু মাজার হাশিয়াতে বলেনঃ
“আয-যাওয়াইদ” গ্রন্থে এসেছে এটির সনদে আলী ইবনু উরওয়া রয়েছেন। যাকে মুহাদ্দিসগণ
মিথ্যার দোষে দোষী হওয়ার কারণে পরিত্যাগ করেছেন। ইবনু হিব্বান বলেনঃ يضع الحديث তিনি
হাদীস জাল করতেন। আর উসমান ইবনু আবদির রহমান মাজহুল। ইবনুল জাওযী হাদীসটির ভাষা
“আল-মাওযু’আত” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তাকে
(উসমান ইবনু আদির রহমানকে) সালেহ যাযারা ও অন্যরা মিথ্যুক বলেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ উসমান মাজহুল নন। তিনি হচ্ছেন পরিচিত হাররানী। হাফিয ইবনু হাজার
“আত-তাকরীব” গ্রন্থে বলেছেনঃ তিনি সত্যবাদী, কিন্তু তার বেশীরভাগ বর্ণনা দুর্বল
এবং মাজহুল বর্ণনাকারীদের থেকে হওয়ায় তাকে দুর্বল বলা হয়েছে। এমনকি ইবনু
নুমায়ের তাকে মিথ্যার দোষে দোষী করেছেন। অথচ তাকে ইবনু মাঈন নির্ভরযোগ্য বলেছেন।
ইবনুল
জাওযী (২/৩০৪) হাদীসটি ইবনু আদীর সূত্রে (৫/১৮৫১) আলী ইবনু উরওয়ার বর্ণনা ছাড়াও
উকায়লীর সূত্রে গিয়াস ইবনু ইবরাহীম হতে বর্ণনা করে বলেছেনঃ
হাদীসটি সহীহ নয়। কারণ আলী ইবনু উরওয়া এবং গিয়াস ইবনু ইবরাহীম তারা উভয়েই হাদীস জাল করতেন।
হাদীসটি সহীহ নয়। কারণ আলী ইবনু উরওয়া এবং গিয়াস ইবনু ইবরাহীম তারা উভয়েই হাদীস জাল করতেন।
সুয়ূতী
যে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/২২৭) অন্য সূত্র আছে বলে তার সমালোচনা করেছেন, ইবনু
আররাক এ সমালোচনাকে অমূলক বলেছেন, এ মিথ্যুক ‘আলী ইবনু উরওয়া সনদে থাকার কারণে।
উকায়লী
“আয-যুয়াফা” গ্রন্থে (৩৫১) বলেছেনঃ এ গিয়াস সম্পর্কে ইবনু মা'ঈন বলেনঃ তিনি
মিথ্যুক; তিনি নির্ভরযোগ্য নন এবং নিরাপদও নন।
ইমাম
বুখারী বলেনঃ মুহাদ্দিসগণ (মিথ্যার দোষে দোষী হওয়ার কারণে) তাকে পরিত্যাগ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২০ | 120 | ۱۲۰
১২০।
হে হুমাইরা (আয়িশা)! যে ব্যাক্তি (অন্যকে) আগুন দান করল, সে যেন সা’দকাহ করল সেই
সব বস্তু যেগুলোকে সে আগুন পাকিয়েছে। যে ব্যাক্তি (অন্যকে) লবন দান করল সে যেন
সা’দকা করল সেই সব বস্তুকে লবন যেগুলোকে পবিত্র করেছে। যে ব্যাক্তি কোন মুসলিম
ব্যাক্তিকে তার নিকট প্রাপ্ত পানি পান করালো, সে যেন একটি দাসী মুক্ত (স্বাধীন)
করল। আর যে ব্যাক্তি কোন মুসলিম ব্যাক্তিকে পানি পান করালো এমতাবস্থায় যে, তা ছিল
দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করলো।
হাদীসটি
দুর্বল।
হাদীসটি
ইবনু মাজাহ (২/৯২) আলী ইবনু গোরাব সূত্রে যুহায়ের ইবনু মারযূক হতে, তিনি আলী ইবনু
যায়েদ হতে ... বর্ণনা করেছেন।
আলী
ইবনু গোরাব মুদাল্লিস। যুহায়ের ইবনু মারযুক সম্পর্কে ইবনু মা'ঈন বলেনঃ তাকে চিনি
না। বুখারী তার সম্পর্কে বলেনঃ منكر الحديث، مجهول তিনি
মুনকারুল হাদীস, মাজহুল। আলী ইবনু যায়েদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। ইবনুল জাওযী
হাদীসটির দ্বিতীয়াংশ অন্য এক সনদে “আল-মাওষুআত” গ্রন্থে (২/১৭০) উল্লেখ করে
বলেছেনঃ ইবনু আদী বলেছেনঃ এটি জাল। কারণ বর্ণনাকারী আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আলী
হচ্ছে তার সমস্যা।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটির তৃতীয় সূত্রও পেয়েছি যেটি ইবনু আসাকির "তারীখু
দেমাস্ক" (২/১৫৩) গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটির সূত্রও একাধিক সমস্যা
জর্জরিত যার জন্য সনদটি দুর্বল।
১।
বর্ণনাকারী ওবায়েদ ইবনু ওয়াকেদ হচ্ছেন দুর্বল।
২।
আরজী ইবনুযিয়াদের জীবনী মিলছে না।
৩।
তার শাইখ আব্দু কাইস মাজহুল।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১২১ | 121 | ۱۲۱
১২১।
শেষ যামানায় হালাল পন্থায় দিরহাম অর্জন কমে যাবে বা এমন ভাই মিলা কমে যাবে যার উপর
নির্ভর করা যায়।
হাদীসটি
নিতান্তই দুর্বল অথবা জাল।
হাদীসটি
আবূ নু’য়াইম (৪/৯৪) মুহাম্মাদ ইবনু সাঈদ আল-হাররানী সূত্রে আবূ ফারওয়া আর-রাহাবী
হতে, তিনি তার পিতা হতে, তার পিতা মুহাম্মাদ ইবনু আইউব আর-রাকী হতে ... বর্ণনা
করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু সাঈদ আল-হাররানী সম্পর্কে নাসাঈ বলেনঃ তিনি কে জানি না।
আবূ ফরওয়া আর-রাহাবী; তার নাম ইয়াযীদ ইবনু মুহাম্মাদ। ইবনু আবী হাতিম তার জীবনী
উল্লেখ করলেও তার সম্পর্কে ভাল-মন্দ কিছুই বলেননি।
তার
পিতা মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াযীদ সম্পর্কে আবূ হাতিম বলেনঃ তিনি শক্তিশালী নন। তিনি
তার পিতা হতে হাদীস বর্ণনা করতে খুবই গাফিল ছিলেন। যদিও তিনি একজন নেককার ব্যক্তি
ছিলেন, ...। তার সম্পর্কে বুখারী বলেনঃ يروي عن أبيه مناكير তিনি
তার পিতা হতে মুনকারগুলো বর্ণনা করতেন। নাসাঈ বলেনঃ তিনি শক্তিশালী নন।
মুহাম্মাদ
ইবনু আইউব আর-রাকী সম্পর্কে ইবনু আবী হাতিম (৩/২/১৯৭) বলেনঃ আমার পিতা [আবূ
হাতিমা] বলেছেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে অন্য এক
মুহাম্মাদ ইবনু আইউব আর-রাকীর কথা উল্লেখ করেছেন। যিনি মালেক হতে বাতিল হাদীস
বর্ণনা করতেন। মুহাম্মাদ ইবনু আইউব আর-রাকী মালেক ইবনু আনাস হতে হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তার সম্পর্কে ইবনু হিব্বান বলেনঃ তিনি হাদীস জাল করতেন। আমার কাছে যা
স্পষ্ট হচ্ছে তা এই যে, তারা একজনই, দু'জন নয়
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২২ | 122 | ۱۲۲
১২২।
তিনি গান গাওয়া ও গান শ্রবণ করাকে নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি গীবত করা ও গীবত শ্রবণ
করাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং তিনি পরনিন্দা করা ও পরনিন্দা শ্রবণ করাকে নিষিদ্ধ
করেছেন।
হাদীসটি
নিতান্তই দুর্বল।
খাতীব
বাগদাদী তার “আত-তারীখ” গ্রন্থে (৮/২২৬), তাবারানী “মুজামুল কাবীর” ও “মুজামুল
আওসাত” গ্রন্থে এবং আবু নু’য়াইম (৪/৯৩) গেনা শব্দ ছাড়া ফুরাত ইবনু সাঈব সূত্রে
... উল্লেখ করেছেন।
ফুরাত
সম্পর্কে নাসাঈ ও দারাকুতনী বলেনঃ তিনি মাতরূক। হায়সামীও বলেনঃ তিনি মাতরূক। ইমাম
বুখারী বলেনঃ منكر الحديث তিনি মুনকারুল হাদীস।” ইমাম আহমাদ বলেনঃ
তিনি মুহাম্মাদ ইবনু তাহানের ন্যায়। তাকে যে মিথ্যার দোষে দোষী করা হয়, তিনি সেই
দোষে দোষী।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ মুহাম্মাদ ইবনু তাহান ইবনু যিয়াদ ইয়াশকুরীকে ইমাম আহমাদ ও
অন্যরা মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন, যেমনভাবে ১৬ ও ১৯ নং হাদীসে আলোচনা করা হয়েছে।
পরনিন্দা
এবং গীবাত হারাম মর্মে সহীহ হাদীস এসেছে। অতএব এ য’ঈফ হাদীসের কোন প্রয়োজনীয়তা
নেই।
তবে
গানের ক্ষেত্রে সব গানই হারাম নয়। যেগুলোতে হারাম স্থান, বস্তু বা কথার উল্লেখ
রয়েছে, সেগুলোই হারাম। যেগুলোতে এসব কিছু নেই সেগুলো হারাম নয়।
তবে
বাদ্যযন্ত্র; সেগুলোর সবই হারাম, এ মর্মে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৩ | 123 | ۱۲۳
১২৩।
আল্লাহ তা’আলা এক ঘণ্টা সঙ্গ দেওয়া সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করবেন।
হাদীসটি
বানোয়াট।
হাদীসটি
এভাবেই মুখে মুখে পরিচিতি লাভ করেছে। এটিকে এ শব্দে চিনি না। এটি আগত হাদীসটির
অর্থবোধক।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৪ | 124 | ۱۲٤
১২৪।
কোন ব্যাক্তি যদি তার সাথীদের সাথে সঙ্গ দেয় এবং তা যদি দিবসের একটি মুহূর্তের
জন্যও হয়; তবু তাকে তার সঙ্গদানের মুহূর্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। সে তাতে
আল্লাহর হক প্রতিষ্ঠা করেছে না নষ্ট করেছে?
হাদীসটি
জাল।
গাযালী
হাদীসটি “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (২/১৫৪) উল্লেখ করেছেন। “আল-ইহইয়া” গ্রন্থের
তাখরীজকারী হাফিয ইরাকী বলেনঃ এটির কোন ভিত্তি সম্পর্কে অবহিত হতে পারিনি। সুবকী
“আত-তাবাকাত” গ্রন্থে (৪/১৫৬) একই কথা বলেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির ভিত্তি পেয়েছি। কিন্তু সেটি জাল (বানোয়াট)। কারণ এটি
আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু উমারের বর্ণনাকৃত, যার সম্পর্কে ইবনু আবী হাতিম তার
জীবনীতে (১/১/৭১) বলেছেনঃ আমি তার সম্পর্কে আমার পিতাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি
বলেনঃ তিনি আমাদের নিকট এসেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন মিথ্যুক। তার নিকট হতে লিখেছি
কিন্তু তার থেকে হাদীস বর্ণনা করিনি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৫ | 125 | ۱۲۵
১২৫।
খারাপ চরিত্র এমন এক গুনাহ যা ক্ষমা করা হবে না আর কু-ধারনা এমন এক ত্রুটি যা
দুর্গন্ধ ছাড়ায়।
হাদীসটি
বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই।
এটিকে
গাযালী “আল-ইহইয়া” গ্রন্থে (৩/৪৫) উল্লেখ করেছেন। যদি ধরে নেই যে, এ হাদীসটি
হাদীস হিসাবে বাতিল একথাটি তার (গাযালী) নিকট লুক্কায়িত ছিল; তা বোধগম্য। কিন্তু
জানি না হাদীসটি ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকেও যে বাতিল, এ বিষয়টি তার নিকট কীভাবে
লুক্কায়িত থাকল?! কারণ হাদীসটি সম্পূর্ণরূপে আয়াত বিরোধী। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ)
অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করবেন না তার সাথে শরীক স্থাপন করাকে, তবে তা ছাড়া
অন্যান্য পাপ যাকে চান ক্ষমা করে দিবেন” (সূরা আন-নিসাঃ ৪৮)।
সম্ভবত
এর মাঝে শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে সেই ব্যক্তির জন্য যিনি হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে
শিথিলতা করেন এবং মুহাদ্দিসগণের তরীকায় সহীহ হাদীস হিসাবে সাব্যস্ত না করেই নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্ধৃতিতে তা বর্ণনা করেন।
সুবকী
“আত-তাবাকাত” গ্রন্থে (৪/১৬২) এ হাদীসটি “আল-ইহ্ইয়া” গ্রন্থের ঐ অধ্যায়ে উল্লেখ
করেছেন, যেখানে সেই হাদীসগুলো উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলোর সনদ নেই।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৬ | 126 | ۱۲٦
১২৬।
অসৎ চরিত্রের অধিকারী ব্যাতিত এমন কোন গুনাহ নেই যার জন্য তওবা নেই। কারন সে যখনই
গুনাহ হতে তওবা করে তখনই সে তার চেয়েও নিকৃষ্ট গুনহার মধ্যে পতিত হয়।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
তাবরানী “মুজামুস সাগীর" গ্রন্থে (পৃঃ ১১৪) এবং ইস্পাহানী “আত-তারগীব”
গ্রন্থে (১/১৫১) আমর ইবনু জামী সূত্রে ... উল্লেখ করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ হাদীসটি বানোয়াট। কারণ আমর সম্পর্কে নাক্কাশ বলেনঃ أحاديثه موضوعة وكذبه يحيى بن معين তার
হাদিসগুলো বানোয়াট এবং তাকে ইহইয়া ইবনু মাঈন মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন।
ইবনু
আদী বলেনঃ كان يتهم بالوضع তাকে জাল করার দোষে দোষী করা হত।
হাফিয
হায়সামী “মাজমাউয যাওয়াইদ” গ্রন্থে (৮/২৫) বলেছেনঃ এটিকে তাবারানী বর্ণনা
করেছেন। এ সনদে মিথ্যুক আমর ইবনু জামী' রয়েছেন। সুয়ূতী হাদীসটি "জামেউস
সাগীর" গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তা তার শর্ত মোতাবেক হয়নি। সনদে
মিথ্যুক ব্যক্তি এককভাবে বর্ণনা করার কারণে।
"তাখরীজুল
ইহইয়া" গ্রন্থে (৩/৪৫) ইরাকী কর্তৃক শুধুমাত্র হাদীসটির সনদ দুর্বল বলেই শেষ
করাও ঠিক হয়নি। তবে যদি এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলে থাকেন যে, জাল তো দুর্বল হাদীসেরই
একটি প্রকার, তাহলে সমস্যা নেই।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৭ | 127 | ۱۲۷
১২৭।
পাগড়ী পরে একটি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা বিনা পাগড়িতে ২৫টি সালাত
(নামায/নামাজ) আদায়ের সমতুল্য। পাগড়ী সহ একটি জুম’আহ পাগড়ী ছাড়া ৭০টি জুম’আর
সমতুল্য। ফেরেশতাগণ পাগড়ী পরা অবস্থায় জুম’আতে উপস্থিত হন এবং পাগড়ীধারীদের প্রতি
সূর্যাস্ত পর্যন্ত অব্যাহতভাবে রহমত কামনা করতে থাকেন।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনুন নাজ্জার তার সনদে মহাম্মাদ ইবনু মাহদী আল-মারওয়াযী পর্যন্ত ... বর্ণনা
করেছেন। ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে (৩/২৪৪) বলেছেনঃ এ হাদীসটি জাল। এটির
সনদে আব্বাস ইবনু কাসীর রয়েছেন। তার বিবরণ ইবনু ইউনুসের "আল-গুরাবা"
এবং তার “আয-যায়ল” নামক গ্রন্থে দেখছিনা। বর্ণনাকারী আবু বিশর ইবনু সায়য়ারকে
আবু আহমাদ হাকিম তার “আল-কুনা” গ্রন্থে উল্লেখ করেননি। এছাড়া আরেক বর্ণনাকারী
মুহাম্মাদ ইবনু মাহদী আল-মারওয়াযীকে চিনি না। আর মাহদী ইবনু মায়মূনকে সালিম হতে
বর্ণনাকারী হিসাবে চিনি না, তিনি বাসরীও নন।
সুয়ূতী
তার “যায়লুল আহাদীসিল মাওযুআহ” গ্রন্থে (পৃ. ১১০) হাদীসটি উল্লেখ করে আসকালানীর
কথাকে সমর্থন করেছেন। ইবনুল আররাকও (২/১৫৯) তার অনুসরণ করেছেন। তা সত্ত্বেও
সুয়ূতী তার “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন।
আলী
আল-কারী হাদীসটি তার “আল-মাওযুআত” গ্রন্থে (পৃ. ৫১) মানুকী হতে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেনঃ هذا حديث باطل এ হাদীসটি বাতিল।’
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৮ | 128 | ۱۲۸
১২৮।
পাগড়ী সহ দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় বিনা পাগড়ীতে সত্তর রাকা’য়াত সালাত
(নামায/নামাজ) আদায়ের চাইতেও উত্তম।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
সুয়ূতী “জমেউস সাগীর” গ্রন্থে দাইলামীর বর্ণনায় জাবের (রাঃ) হতে উল্লেখ করেছেন। এ
হাদীসটি তার “যায়লুল আহাদীসিল মাওযুআহ” গ্রন্থে উল্লেখ করা উচিত ছিল। যেমনটি
পূর্বে উল্লেখিত হাদীসের ক্ষেত্রে করেছেন। কারণ এটিতে পূর্বেরটির চেয়ে বেশী ফযীলত
বর্ণনা করা হয়েছে। এর উপর জালের হুকুম লাগানোটা বেশী উপযোগী ছিল। এটির সনদে তারেক
ইবনু আব্দির রহমান নামক এক বর্ণনাকারী আছেন। তাকে যাহাবী দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত
করে বলেছেনঃ নাসাঈ বলেনঃ তিনি শক্তিশালী নন। বুখারী তাকে দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত
করেছেন।
হাকিম
বলেন তিনি হেফযের ক্ষেত্রে ক্রটযুক্ত ছিলেন। এ কারণে সাখাবী বলেনঃ এ হাদীসটি
সাব্যস্ত হয়নি।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তারেক ইবনু আব্দির রহমান দু'জন রয়েছেন। একজন হচ্ছেন বাজালী কুফী।
তিনি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব হতে বর্ণনা করেছেন। অপরজন হচ্ছেন কুরাশী হিজাজী। তিনি
'আলা ইবনু আব্দির রহমান হতে বর্ণনা করেছেন। এ দ্বিতীয়জন সম্পর্কে জানা যায় না।
তার সম্পর্কে নাসাঈ বলেনঃ তিনি শক্তিশালী নন। এ হাদীসের সনদে এ দ্বিতীয়জনই
রয়েছেন।
ইমাম
আহমাদ ইবনু হাম্বালকে নাসীবীর শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু নু’য়াইম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হয়েছিল, তাকে বলা হয়েছিল তিনি সোহাইল হতে, আর সোহাইল তার পিতা হতে, তার পিতা আবু
হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে
বর্ণনা করেছেন। ‘পাগড়ী সহ সলাত আদায় করা বিনা পাগড়ীতে সত্তরবার সলাত আদায় করার
চেয়েও উত্তম? উত্তরে তিনি (আহমাদ ইবনু হাম্মাল) বলেনঃ তিনি মিথ্যুক, এটি বাতিল
হাদীস।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১২৯ | 129 | ۱۲۹
১২৯।
পাগড়ীসহ সালাত (নামায/নামাজ) পড়া দশ হাজার ভাল কর্মের সমতুল্য।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
সুয়ূতী “যায়লুল আহাদীসিল মাওযু'আহ” গ্রন্থে (পৃ. ১১১) দাইলামীর বর্ণনায় (২/২৫৬)
উল্লেখ করেছেন। এ সূত্রে আবান নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন। অতঃপর তিনি (সুয়ূতী)
বলেনঃ আবান মিথ্যার দোষে দোষী।
ইবনুল
আররাক “তানযীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থে (২/২৫৭) তার এ কথার অনুকরণ করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ সাখাবী “মাকাসীদুল হাসানা” গ্রন্থে (পৃ. ১২৪) তার শাইখ হাফিয ইবনু
হাজারের অনুকরণ করে বলেনঃ অবশ্যই হাদীসটি জাল। মানুকী বলেনঃ অবশ্যই উক্ত হাদীসটি
বাতিল, যেমনভাবে শাইখ আল-কারী তার “আল-মাওযুআত” গ্রন্থে (পৃ. ৫১) বলেছেন।
উল্লেখ্য
এ হাদীসটিসহ উপরের হাদীস দুটি বাতিল তাতে আমার নিকট কোন সন্দেহ নেই। কারণ
জামা'আতের সাথে সলাত আদায়ের চেয়েও পাগড়ী পরে সলাত আদায় করলে তা বেশী সাওয়াব
হবে এটি বোধগম্য নয়। কারণ পাগড়ী সম্পর্কে সর্বোচ্চ বলা যেতে পারে এটি মুস্তাহাব।
এমনকি পাগড়ী পরা অভ্যাসগত সুন্নাত ইবাদাতগত সুন্নাত নয়, এটিই সঠিক। অতএব এরূপ
ফযীলত সম্বলিত হাদীস বাতিল হওয়ারই উপযোগী।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩০ | 130 | ۱۳۰
১৩০।
নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা চোখে কালো মনি বিশিষ্ট সুন্দর চেহারার অধিকারীদের শাস্তি
দেবেন না।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
দাইলামী বর্ণনা করেছেন। তার সূত্রে বেনজীর ইবনু মানসূর, জা'ফার ইবনু মুহাম্মাদ
আল-আবহারী, আলী ইবনু আহমাদ আল-হারুরী, জাফর ইবনু আহমাদ আর-দাকাক এবং আব্দুল মালেক
ইবনু মুহাম্মাদ আর-রুকাশী রয়েছেন। সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/১১৩-১১৪) উল্লেখ
করে এটি সম্পর্কে কিছু না বলে চুপ থেকেছেন।
আমি
এটি সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করছি এর সমস্যা কি তা প্রকাশ করার জন্য।
আমাকে এটি সম্পর্কে আমার অতি আপনজন আমার পিতা বিশেষভাবে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। আমি
বলছিঃ এ হাদীসটির সনদে রুকাশীর নীচের বর্ণনাকারীগণ সকলেই মাজহুল। তাদের কারো
সম্পর্কে আমার নিকট যে সব আসমায়ে রিজালের (বর্ণনাকারীদের তথ্য সম্বলিত) গ্রন্থ
রয়েছে সে সবের কোনটিতেই (তাদের) আলোচনা পাইনি। তবে এ রুকাশীর জীবনী সম্পর্কে
“তাহযীবুত তাহযীব” (৬/৪১৯-৪২১) এবং “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (১০/৪২৫-৪২৭) আলোচনা
করা হয়েছে। তিনি হচ্ছেন ইবনু মাজার এক বর্ণনাকারী।
তিনি
সত্যবাদী হলেও যখন তিনি বাগদাদে আগমন করেন তখন তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছিল। ফলে
তার হাদীসের সনদ এবং মতনগুলোতে বহু ভুলের সমাহার ঘটে। সম্ভবত এ হাদীসটি সেগুলোর
একটি। নতুবা এটি সে সব মাজহুল বর্ণনাকারীদের কোন একজনের তৈরিকৃত।
ইবনুল
আররাক “তানীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থে (১/১৭৪) বলেনঃ তার সনদে জাফার ইবনু আহমাদ
আদ-দাকাক রয়েছেন। তিনিই হচ্ছেন হাদীসটির বিপদ।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটি বাতিল হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ পোষণ করছি না।
কারণ এটি শরীয়তে যা বর্ণিত হয়েছে তার সাথে বিরোধপূর্ণ। যেমন বলা হয়েছে প্রতিদান
দেয়া হবে অর্জন এবং কর্মের উপর ভিত্তি করে।
فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ ٭ وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
অর্থঃ
“যে ব্যক্তি এক অণু পরিমাণ নেক আমল করবে সে তা দেখতে পাবে, আর যে ব্যক্তি এক অণু
পরিমাণ বদ আমল করবে সে তা দেখতে পাবে।" (সূরা যিলযাল আয়াতঃ ৭-৮)
এমন
কিছুর উপর ভিত্তি করে নয় যা মানুষের কৃত নয় এবং যাতে মানুষের কোন হাত নেই, যেমন
ভাল-মন্দ। এ দিকেই ইঙ্গিত করে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
إن الله لا ينظر إلى أجسادكم ولا إلى صوركم ولكن ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم
অর্থঃ
নিশ্চয় আল্লাহ দৃষ্টি দিবেন না তোমাদের শরীর এবং তোমাদের আকৃতির দিকে, বরং দৃষ্টি
দিবেন তোমাদের অন্তর ও তোমাদের কর্ম সমূহের দিকে। এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম ও
অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
অতএব
আলোচ্য হাদীসটি যে বানোয়াট তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩১ | 131 | ۱۳۱
১৩১।
তোমরা সুন্দর (সুশ্রী) চেহারা এবং চোখে কালো মনি বিশিষ্ট রূপ ধারন কর। কারন আল্লাহ
সুশ্রী চেহারার অধিকারীকে জাহান্নামের শাস্তি দিতে লজ্জা পান।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
খাতীব বাগদাদী “আত-তারীখ” গ্রন্থে (৭/২৮২-২৮৩) হাসান ইবনু আলী ইবনু জাকারিয়ার
জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন। ইবনুল জাওযী হাদীসটি “আল-মাওযু'আত”
গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটির সমস্যা হচ্ছে হাসান ইবনু আলী ইবনু জাকারিয়া
আল-আদাবী। কারণ তিনি হাদীস জালকারী। সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/১১৩) বলেনঃ
তিনি প্রসিদ্ধ জালকারীদের একজন।
শাইখ
আল-কারী (পৃঃ ১১০) বলেনঃ فلعنة الله على واضعه الخبيث আল্লাহর
অভিশাপ এ হাদীসের জালকারী খবীসের উপর।
হাদীসটি
অন্য একটি সূত্রেও পেয়েছি, যাতে একাধিক সমস্যাধারী বর্ণনাকারী রয়েছেন। এ কারণে এ
সনদটি পূর্বোল্লেখিত হাদীসের সনদের মতই অথবা তার চেয়েও নিকৃষ্ট। এতে রয়েছেনঃ
১।
ইবরাহীম ইবনু সুলায়মান আয-যাইয়াত; তার সম্পর্কে ইবনু আদী বলেনঃ তিনি শক্তিশালী
নন।
২।
মুহাম্মাদ ইবনু তালহা আরুকী এবং তার থেকে বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল্লাহ
আল-কাযী; তাদের দু’জনকেই চিনি না।
৩।
লাহেক ইবনু হুসাঈন; তিনি এ হাদীসের সমস্যা। কারণ তিনি একজন মিথ্যুক, জালকারী।
হাফিয ইদরীসী বলেনঃ তিনি ছিলেন মিথ্যুক, নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে হাদীস জালকারী
আমাদের যুগে তার মত মিথ্যুক দ্বিতীয় কাউকে চিনি না।
মিথ্যুক
হাসান ইবনু আলী আল-আদাবীর হাদীসগুলোর একটি নিম্নের হাদীসটিও (দেখুন পরেরটি)
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩২ | 132 | ۱۳۲
১৩২।
সুন্দর চেহারার দিকে দৃষ্টিদান চোখকে উজ্জ্বল করে আর কুৎসিত চেহারার দিকে
দৃষ্টিদান মুখমণ্ডলে ভীতির চিহ্নের উদ্ভব ঘটায়।
হাদীসটি
জাল।
খাতীব
বাগদাদী হাদীসটি (৩/২২৬) উল্লেখ করেছেন এবং তার সূত্রে ইবনুল জাওযী “আল-মাওযূ'আত”
গ্রন্থে (১/১৬২-১৬৩) হাসান ইবনু আলী আল-আদাবীর মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। তার
সম্পর্কে ১৩১ নং হাদীসে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়ও তার সম্পর্কে ইবনু
হিব্বান বলেনঃ সম্ভবত তিনি নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে এক হাজারেরও বেশী জাল হাদীস
বর্ণনা করেছেন। ইবনু আদী বলেনঃ তিনিই হাদীসটি জাল করেছেন। ইবনুল জাওযী বলেনঃ আবু
সাঈদই যে, হাদীসটি জাল করেছেন তাতে কোন সন্দেহ করছি না।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৩ | 133 | ۱۳۳
১৩৩।
সুন্দর চেহারার অধিকারিণী নারী এবং সুন্দর ঘাসের দিকে দৃষ্টিদান দৃষ্টিশক্তিকে
বৃদ্ধি করে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
আবূ নু’য়াইম "হিলইয়াহ" গ্রন্থে (৩/২০১-২০২) উল্লেখ করেছেন এবং তার
থেকে দাইলামী (৪/১০৬) বর্ণনা করেছেন।
এটির
সনদে ইবরাহীম ইবনু হাবীব ইবনে সালাম আল-মাক্কী রয়েছেন। তার জীবনী পাচ্ছিনা। একই
অবস্থা তার থেকে বর্ণনাকারী আহমাদ ইবনু হুসাইনের ক্ষেত্রেও। কিন্তু তার মুতাবায়াত
পাওয়া গেছে। মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াকূব এবং মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ কাযী বুরানী তার
মুতাবায়াত করেছেন। তারা সকলেই ইবরাহীম হতে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সুয়ূতী
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/১১৬) উল্লেখ করেছেন। এ বুরানীর জীবনী আল-খাতীব (১/২৯৫)
উল্লেখ করে দারাকুতনীর উদ্ধৃতিতে বলেছেনঃ তার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু
তিনি দুর্বল শাইখদের থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটির সমস্যা হচ্ছে ইবরাহীম। হাদীসটি যাহাবী
"আল-মীযান" গ্রন্থে মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান আবুল ফযলের জীবনি
বর্ণনা করতে গিয়ে ইবরাহীমের সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেনঃ خبر باطل হাদীসটি
বাতিল।
সাগানী
হাদীসটি “আহাদীসুল মাওযুআহ” গ্রন্থে (পৃঃ ৭) উল্লেখ করেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম বলেনঃ
এ হাদীসসহ অনুরূপ হাদীসগুলো যিন্দীকদের (নাস্তিকদের) জালকৃত।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ সুয়ূতী তার “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে এটি এবং পরবতী হাদীসটি উল্লেখ
করে গ্রন্থটিকে কালিমালিপ্ত করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৪ | 134 | ۱۳٤
১৩৪।
তিনটি বস্তু দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ সবুজ বর্ণ, প্রবাহিত পানি ও সুন্দর চেহারার
দিকে দৃষ্টি দান।
হাদীসটি
জাল।
ইবনুল
জাওযী এটিকে “মাওযূ’আত” গ্রন্থে (১/১৬৩) ওয়াহাব ইবনু ওয়াহাব সূত্রে ... উল্লেখ
করে বলেছেনঃ باطل، وهب كذاب হাদীসটি বাতিল ওয়াহাব একজন
মিথ্যুক।
সুয়ূতী
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/১১৫-১১৭) তার সমালোচনা করে বলেছেনঃ হাদীসটির একাধিক
সূত্র রয়েছে। যা হাদীসটিকে জালের পর্যায় হতে বের করে নিয়ে আসে।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটির সুত্রগুলোতে হয় দুর্বল, না হয় মাজহুল, না হয় মিথ্যার দোষে
দোষী বর্ণনাকারী রয়েছেন। ইবনুল কাইয়্যিম তার “আল-মানার” গ্রন্থে জাল হাদীস চেনার
উপায় বলতে গিয়ে বলেছেনঃ (যা শাইখ আল-কারী তার “মাওযুআত” গ্রন্থে (পৃ. ১০৯)
উল্লেখ করেছেন) হাদীসটি নাবীদের কথার সাথে পূর্ণ হবে না, এমনকি সাহাবীদের কথার
সাথেও মিলবে না, যেমন বলে এ হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। অতঃপর শাইখ আল-কারী তার
সমালোচনা করে বলেছেনঃ এটি দুর্বল জাল নয়।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তাদের উভয়ের কথার মধ্যে কোন মতভেদ নেই। কারণ এটি সনদের দিক দিয়ে
দুর্বল এবং মতনের (ভাষার) দিক দিয়ে জাল।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৫ | 135 | ۱۳۵
১৩৫।
যখন তোমরা কোন পাহাড় সম্পর্কে শুনবে যে, পাহাড়টি স্থানচ্যুত হয়েছে, তখন তোমরা তা
বিশ্বাস করবে, আর যখন শুনবে কোন ব্যাক্তির চরিত্র পরিবর্তন হয়ে গেছে, তখন তোমরা তা
বিশ্বাস করবে না। কারন সে চলবে সেই ছাঁচে যার উপর তাকে তৈরি করা হয়েছে।
হাদীসটি
দুর্বল।
হাদীসটি
ইমাম আহমাদ (৬/৪৪৩) যুহরীর সূত্রে আবুদ-দারদা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এ সনদটি
মুনকাতি (বিচ্ছিন্ন)।
হায়সামী
“মাজমাউয যাওয়াইদ” গ্রন্থে (৭/৬৯৬) এ কারণই দর্শিয়েছেন। মানাবী “শারহুল জামেইস
সাগীর” গ্রন্থে তার অনুসরণ করে বলেনঃ হায়সামী বলেছেনঃ সনদের বর্ণনাকারীগণ সহীহার
বর্ণনাকারী। কিন্তু যুহরী আবুদ-দারদা (রাঃ)-কে পায়নি। সাখাবীও বলেছেনঃ হাদীসটি
মুনকাতি ।
আজলুনী
“আল-কাশফ” গ্রন্থে (১/৮৭) বলেছেনঃ এটিকে সহীহ্ সনদে ইমাম আহমাদ উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, তিনি অন্যত্র (১/৮২) উল্লেখ করে কোন হুকুম লাগাননি।
অতঃপর তৃতীয় স্থানে (১/২৫৯) উল্লেখ করে “আল মাকাসিদ” গ্রন্থ হতে নকল করে বলেছেনঃ
এটি মুনকাতি’। এ ঘটনা প্রমাণ করছে যে, আজলুনী একজন মুকাল্লিদ, নকল করে বর্ণনাকারী।
এ
হাদীসটির মধ্যে জাবরিয়াদের আকীদার গন্ধ পাওয়া যায়। কারণ তাদের নিকট মুসলিম
ব্যক্তি তার চরিত্র ভাল করার অধিকারী নয়। কেননা সে তার পরিবর্তন করতে সক্ষম নয়।
অথচ চরিত্র ভাল করার জন্য হাদীসে তাগাদা এসেছে। যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ أنا زعيم ببيت في أعلى الجنة لمن حسن خلقه 'আমি
সেই ব্যক্তির জন্য একটি ঘরের জিম্মাদার যে, তার চরিত্রকে সুন্দর করেছে।' আবু দাউদ
(২/২৮৮) ও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এটির সনদ সহীহ । এ হাদীসটি
প্রমাণ করছে যে, আলোচ্য হাদীসটি মুনকার।
হাদিসের
মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৬ | 136 | ۱۳٦
১৩৬।
যে ব্যাক্তি কোন হাদীস বর্ণনা করবে। অতঃপর তার নিকট হাঁচি দেয়া হবে, সে ব্যাক্তি
(তার কথাই) সত্য।
হাদীসটি
বাতিল।
হাদীসটি
তাম্মাম “আল-ফাওয়াইদ” গ্রন্থে (২/১৪৮) উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে তিরমিযী, হাকিম,
আবূ ইয়ালা, তাবারানী “মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে এবং ইবনু শাহীন বাকিয়া সূত্রে
মুয়াবিয়া ইবনু ইয়াহইয়া হতে ... বর্ণনা করেছেন। ইবনুল জাওযী “মাওযু'আত” গ্রন্থে
ইবনু শাহীন-এর সূত্রে উল্লেখ করে (৩/৭৭) বলেছেনঃ এটি বাতিল। মুয়াবিয়া এককভাবে
এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি কিছুই না। আব্দুল্লাহ ইবনু জাফার আল-মাদীনী আবু আলী তার
মুতাবায়াত করেছেন, কিন্তু এ আব্দুল্লাহ মাতরূক।
সুয়ূতী
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/২৮৬) কতিপয় হাদীস উল্লেখ করে তার সমালোচনা করেছেন। যেগুলোর
কোনটি মারফু’ আবার কোনটি মওকুফ, আবার কোনটি “আমভাবে হাঁচি প্রদানকারীর ফযীলত
বর্ণনায় এসেছে। সেগুলো এটির শাহেদ হতে পারে না যদিও সহীহ হয়। এছাড়া ইমাম নাবাবী
কর্তৃক তার “আল-ফাতাওয়া” গ্রন্থে (পৃঃ ৩৬-৩৭) ‘এটির সনদ ভাল ও হাসান বলা এবং
একমাত্র বাকিয়া ব্যতীত সকলে নির্ভরশীল; এছাড়া তিনি যখন শামীদের থেকে হাদীস
বর্ণনা করেছেন তখন তার হাদীসকে অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণ দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন এবং
মুয়াবীয়া শামী এ বক্তব্যটি তার ধারণা মাত্র। কারণ বাকিয়া তাদলীসের ব্যাপারে
প্রসিদ্ধ। মুয়াবিয়া হতে আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন। নাসাঈ সহ আরো অনেকে বলেছেনঃ
তিনি যখন বলবেনঃ حدثنا وأخبرنا আমাকে হাদীস শুনিয়েছেন, আমাকে
সংবাদ দিয়েছেন, তখন তিনি নির্ভরযোগ্য। একাধিক ব্যক্তি বলেছেনঃ তিনি যখন আন দিয়ে
হাদীস বর্ণনা করবেন তখন তিনি গ্রহণযোগ্য নন। এ জন্য আবু মুসহের বলেছেনঃ বাকিয়ার
হাদীসগুলো পরিচ্ছন্ন নয়, তার হাদীসগুলো হতে বেঁচে থাকুন।
যাহাবী
বলেনঃ বাকিয়া দুর্বল এবং মুনকারের অধিকারী। মুয়াবীয়া নিতান্তই দুর্বল
বর্ণনাকারী।
ইবনু
মাঈন বলেনঃ তিনি হালেক, কিছুই না।
আবু
হাতিম বলেনঃ তিনি দুর্বল, তার হাদীসে ইনকার রয়েছে।
নাসাঈ
বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন।
হাকিম
আবু আহমাদ বলেনঃ তার হাদীসগুলো মুনকার, জালের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সাজী
বলেনঃ হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি নিতান্তই দুর্বল। সকলেই তার দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে
একমত।
ইবনু
আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/৩৪২) বলেনঃ আমি আমার পিতাকে মুয়াবিয়া হতে
বাকিয়ার এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেনঃ এ হাদীসটি মিথ্যা।
ইবনুল
কাইয়্যিমও হাদীসটিকে জাল হিসাবেই উল্লেখ করেছেন। এছাড়া অর্থের দিক দিয়েও
হাদীসটি সহীহ্ নয়। কারণ যদি একশত ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
হাদীসের নিকটে হাঁচি দেয়, তবুও তাকে সহীহ বলে হুকুম লাগানো যাবে না। অনুরূপভাবে
কোন ব্যক্তির সাক্ষীর সাথে যদি তারা হাচি দেয় তাহলেও তাকে সত্যবাদী হিসাবে হুকুম
দেয়া যাবে না। মিথ্যা তার কর্ম চালিয়েই যাবে। অতএব কোন লোক যদি বলে যে, সনদটি
সহীহ তবুও হাদিসটি বানোয়াট অনুভূতি এমনই সাক্ষ্য দিচ্ছে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৭ | 137 | ۱۳۷
১৩৭।
যে কথার নিকট হাঁচি দেয়া হয় সেটিই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা সত্য কথা।
হাদীসটি
বাতিল।
এটিকে
তাবারানী “মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে (১/১৯১/২/৩৫০২) আম্মারা ইবনু যাযান সূত্রে সাবেত
হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে মারফু হিসাবে বর্ণনা করে বলেছেনঃ সাবেত হতে একমাত্র
আম্মারাই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
এ
আম্মারা সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বলেনঃ তিনি সাবেতের সূত্রে আনাস (রাঃ) হতে বহু মুনকার
হাদীস বর্ণনা করেছেন। এটিই হচ্ছে এ হাদীসের সমস্যা। হায়সামী “আল-মাজমা"
গ্রন্থে (৮/৫৯) এদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। অর্থের দিক দিয়েও যে হাদীসটি বাতিল তা
পূর্বের হাদীসেই আলোচনা করা হয়েছে।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৮ | 138 | ۱۳۸
১৩৮।
তিনটি বস্তু দ্বারা শরীর আনন্দিত (পরিতৃপ্ত) হয় এবং তার উপর ভর করেই বৃদ্ধি লাভ
করে; সুগন্ধি, মোলায়েম কাপড় এবং মধু পান করা।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
ইবনু হিব্বান “আয-যুয়াফা ওয়াল মাতরূকীন" গ্রন্থে (৩/১৪১) এবং আবু নু’য়াইম
(৬/৩৪০) তাবারানী সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু রাওহ আল-কাতাইরী হতে, তিনি ইউনুস ইবনু
হারূণ আল-আযদী হতে ... বর্ণনা করেছেন। আবূ নু’য়াইম বলেনঃ মালেক হতে তার পিতার
উদ্ধৃতিতে হাদীসটি গরীব। মুহাম্মাদ ইবনু রাওহ এককভাবে এটি বর্ণনা করেছেন। ইবনুস
সামায়ানী মুহাম্মাদ ইবনু রাওহ সম্পর্কে বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ ইবনু ইউনুসও বলেছেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস।
দারাকুতনী
তার এবং তার শাইখ ইউনুস ইবনু হারূণ সম্পর্কে বলেনঃ তারা দু’জনই দুর্বল। তিনি
“গারায়েবে মালেক” গ্রন্থে বলেনঃ মালেক হতে হাদীসটি সহীহ নয়।
ইবনু
হিব্বান বলেনঃ ইউনুস আশ্চর্যজনক কিছু বর্ণনা করেছেন। তার থেকে বর্ণনা করাই হালাল
নয়। মালেক তার পিতা ও তার দাদা হতে কিছুই বর্ণনা করেননি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৩৯ | 139 | ۱۳۹
১৩৯।
হতভাগ্যদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুঃখী সেই ব্যাক্তি যার মাঝে দুনিয়া ও আখেরাতের
দারিদ্রতা একত্রিত হয়েছে।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
হাকিম (৪/৩২২), বাইহাকী “সুনান” গ্রন্থে (৭/১৩) ও তাবারানী “মুজামুল আওসাত”
গ্রন্থে (২/২৯৪/১/৯৪২৩) খালেদ ইবনু ইয়াযীদ ইবনে আব্দির রহমান সূত্রে ... উল্লেখ
করেছেন। তাবারানী বলেনঃ তিনি এককভাবে এটি বর্ণনা করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তিনি দুর্বল, মিথ্যার দোষে দোষী। তবে তিনি এককভাবে বর্ণনা করেননি।
এ আলোচনা একটু পরেই আসবে। হাকিম বলেনঃ এটির সনদ সহীহ। যাহাবী তার সাথে ঐকমত্য পোষণ
করেছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ এটি তাদের দু'জনের অশোভনীয় ধারণা মাত্র। কারণ এ খালেদ সম্পর্কে
ইমাম আহমাদ বলেনঃ ليس بشيء 'তিনি কিছুই নন'।
ইবনু
আবিল হাওয়ারী বলেনঃ আমি ইবনু মা'ঈনকে বলতে শুনেছি যে, শাম দেশে একটি কিতাব আছে
সেটি গেড়ে দেয়া উচিত। সেটি হচ্ছে খালেদ ইবনু ইয়াযীদ ইবনে আবী মালেক-এর কিতাবুদ
দিয়াত’। তিনি তার পিতার উপর মিথ্যারোপ করে সম্ভষ্ট হতে পারেননি। এমনকি সাহাবীগণের
উপরেও মিথ্যারোপ করেছেন।
ইবনু
আবী হাতিম “আল-জারহ ওয়াত তা'দীল” গ্রন্থে (১/২/৩৫৯) বলেনঃ আমার পিতাকে এ খালেদ
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেনঃ তিনি মুনকার হাদীস বর্ণনাকারী। এ
হাদীসটি দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু কোনটিই জাল
বর্ণনাকারী হতে মুক্ত নয়।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪০ | 140 | ۱٤۰
১৪০।
ব্যভিচার (যিনা) দারিদ্রতার অধিকারী করে।
হাদীসটি
বাতিল।
এটিকে
কাযাঈ “মুসনাদুশ শিহাব” গ্রন্থে (৭/২) উল্লেখ করেছেন। দু'টি কারণে এটির সনদ
নিতান্তই দুর্বলঃ
১।
বর্ণনাকারী লাইস ইবনু আবী সুলাইম দুর্বল।
২।
অপর বর্ণনাকারী আল-মাযী ইবনু মুহাম্মাদ মাজহুল, মুনকারুল হাদীস। যাহাবী বলেছেনঃ
তার বহু মুনকার হাদীস রয়েছে এটি সেগুলোর একটি।
ইবনু
আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (১/৪১০-৪১১) বলেছেনঃ আমার পিতা এ হাদীসটি সম্পর্কে
বলেনঃ এটি বাতিল হাদীস, মাযীকে আমি চিনি না। এছাড়াও অন্য এক সূত্রে হাদীসটি
বাইহাকীর “আশ-শু'য়াব” গ্রন্থে (৬/৪৩২) এবং দাইলামীর “মুসনাদুল ফিরদাউস” গ্রন্থে
(২/৯৯/২) বর্ণিত হয়েছে। সেটিতে একাধিক মাজহুল বর্ণনাকারী রয়েছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪১ | 141 | ۱٤۱
১৪১।
তোমরা ব্যাভিচার (যেনা) থেকে বেঁচে থাক, কারন তাতে ছয়টি খাসালাত রয়েছে; যার তিনটি
ঘটবে দুনিয়ায় আর তিনটি ঘটবে আখেরাতে। যেগুলো দুনিয়াতে ঘটবে সেগুলো হচ্ছে; তা
(যেনা) উজ্জলতা নিয়ে যায়, দারিদ্রতার অধিকারী বানায় এবং রিযক কমিয়ে দেয়। আর যেগুলো
আখেরাতে ঘটবে সেগুলো হচ্ছে; তা প্রভুর ক্রোধ, মন্দ হিসাব-কিতাব এবং স্থায়ী
জাহান্নামী বানিয়ে দেয়।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
ইবনু আদী (২০/২৩) ও আবু নু’য়াইম (৪/১১১) আমাশ হতে মাসলামা ইবনু আলী সূত্রে ...
বর্ণনা করেছেন। ইবনু আদী বলেনঃ হাদীসটি আমাশ হতে নিরাপদ নয়, এটি মুনকার। আবু
নু’য়াইম বলেনঃ মাসলামা আ'মাশ হতে এককভাবে এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি হাদীসের
ক্ষেত্রে দুর্বল।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ মাসলামা মাতরূক হবার বিষয়ে সকলে একমত। বরং হাকিম বলেছেনঃ তিনি
আওযাঈ এবং যুবায়দীর উদ্ধৃতিতে মুনকার ও জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন। যাহাবী তার বহু
মুনকার হাদীস উল্লেখ করেছেন, এটি সেগুলোর একটি। তার অন্য একটি হাদীস সম্বন্ধে আবু
হাতিম বলেছেনঃ এটি বাতিল, জাল।
ইবনুল
জাওযী আলোচ্য হাদীসটিকে তার “আল-মাওযু'আত” গ্রন্থে (৩/১০৭) উল্লেখ করে বলেছেনঃ
মাসলামা মাতরূক। তার মুতাবায়াতকারী আবান ইবনু নাহশাল হচ্ছেন নিতান্তই মুনকারুল
হাদীস। ইবনু হিব্বান বলেনঃ হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই।
হাদীসটি
অন্য কোন সূত্রেও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীর মাধ্যমে বর্ণিত হয়নি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪২ | 142 | ۱٤۲
১৪২।
তোমরা ব্যাভিচার (যেনা) থেকে বেঁচে থাক, কারন তাতে ছয়টি খাসলত রয়েছে, যার তিনটি
ঘটবে দুনিয়াতে আর তিনটি আখেরাতে। যেগুলো দুনিয়াতে ঘটবে সেগুলো হচ্ছেঃ তাতে
(যেনাতে) চেহারার নুর লোপ পাবে, রিযক বন্ধ হয়ে যাবে এবং দ্রুত বিনাশ হয়ে যাবে। আর
যেগুলো আখেরাতে ঘটবে সেগুলো হচ্ছেঃ প্রভুর ক্রোধ, মন্দ হিসাব-কিতাব এবং স্থায়ী
জাহান্নামী হওয়া। তবে আল্লাহ যাকে চান তাকে বাদ দেন।
হাদীসটি
জাল।
এটিকে
খাতীব বাগদাদী তার “আত-তারীখ” (১২/৪৯৩) গ্রন্থে এবং তার থেকে ইবনুল জাওযী
“আল-মাওযু"আত” গ্রন্থে (৩/১০৭) কা'য়াব ইবনু আমর আল-বালখী সূত্রে ... উল্লেখ
করেছেন। আল-খাতীব ও ইবনুল জাওযী বলেছেনঃ কা'য়াব ইবনু আমর আল-বালখী ছাড়া এ
হাদীসটির অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। তিনি নির্ভরযোগ্য ছিলেন না।
মুহাম্মাদ ইবনু আবুল ফাওয়ারিস বলেনঃ হাদীসের ক্ষেত্রে তার মন্দ অবস্থা ছিল।
ওতায়কী বলেনঃ হাদীসের ক্ষেত্রে তার মধ্যে শিথিলতা ছিল।
সুয়ূতী
ইবনুল জাওযীর সমালোচনা করে হাদীসটির অন্য একটি সনদ “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/১৯১)
উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেটির সনদে আবুদ-দুনিয়া নামক এক বর্ণনাকারী আছেন, তিনি
মিথ্যুক। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি একজন মিথ্যুক। তিনি তিনশত হিজরীর
পরের, তা সত্ত্বেও আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) হতে শুনেছেন এরূপ দাবী করতেন। তার নাম
উসমান ইবনু খাত্তাব আবূ আমর।
সুয়ূতী
কর্তৃক মিথ্যুকের বর্ণনা দ্বারা শাহেদ পেশ করা প্রমাণ করছে যে, তিনি হাদীসের উপর
হুকুম লাগানোর ক্ষেত্রে নরমপন্থীদের একজন। [শাহেদ শব্দেরব্যাখ্যা দেখুন (৫৬)
পৃষ্ঠায়]
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৩ | 143 | ۱٤۳
১৪৩।
তোমরা ব্যাভিচার (যেনা) থেকে বেঁচে থাক, কারন তাতে চারটি খাসলত রয়েছে; সেগুলো
চেহারা থেকে উজ্জলতা নিয়ে যায়, রিযক বন্ধ করে দেয়, দয়াময় আল্লাহকে রাগম্বিত করে
এবং স্থায়ী জাহান্নামী বনায়।
হাদীসটি
জাল।
এটি
তাবারানী “আল-আওসাত” গ্রন্থে (২/১৪৪/২/৭২৩৪) এবং ইবনুল জাওযী “আল-মাওযু’আত”
গ্রন্থে (৩/১০৬) ইবনু আদীর সূত্রে আমর ইবনু জামী' হতে ... বর্ণনা করেছেন। এ আমর
একজন মিথ্যুক। তাকে ইবনুল জাওযী মিথ্যুক বলেছেন। ১২৬ নং হাদীসের মধ্যে তার
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া
তার একটি মুতাবা'য়াত মিলেছে। কিন্তু সে সনদটিতে তিনটি সমস্যা রয়েছে। ফলে তা
হাদীসটিকে জাল হওয়া থেকে মুক্ত করতে পারেনি। তাতে রয়েছেন ইসমাঈল বাসরী; তিনি
দুর্বল বর্ণনাকারী। মুখতার ইবনু গাসসান; তাকে কোন ব্যক্তিই নির্ভরযোগ্য বলেননি,
এবং ইবরাহীম ইবনু ইসমাঈল; কে তার জীবনী বর্ণনা করেছেন তা পাচ্ছিনা। এছাড়া হাদীসটি
ইবনু যুরায়েজ কর্তৃক আন্ আন্ শব্দে বর্ণনাকৃত। তিনি মুদাল্লিস। [মুতাবা’আত
শব্দের ব্যাখ্যা (৫৭) পৃষ্ঠায়।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৪ | 144 | ۱٤٤
১৪৪।
লোকেদের মাঝে সর্বাপেক্ষা মিথ্যুক হচ্ছে বস্ত্রাদিতে রংকারীরা এবং অলঙ্কারাদী
প্রস্তুত কারীরা।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
তায়ালীসী তার “মুসনাদ” গ্রন্থে (১/২৬২) হুমাম-এর মাধ্যমে ফারকাদ আস-সাবখী হতে ...
উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ইবনু মাজাহ (২/৬), ইমাম আহমাদ (২/২৯২,৩২৪,৩৪৫) ও আবূ সাঈদ
ইবনুল আরাবী তার “আল-মুজাম" গ্রন্থে (২/৭৮) বিভিন্ন সূত্রে হুমাম হতে বর্ণনা
করেছেন। এ ফারকাদ ব্যতীত এটির সনদের সকলেই নির্ভরযোগ্য। এ ফারকাদ সম্পর্কে আবু
হাতিম বলেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে শক্তিশালী নন। নাসাঈ বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন।
ইমাম বুখারী তার সম্পর্কে বলেনঃ তার হাদীসে মুনকার রয়েছে। যাহাবী “আল-মীযান”
গ্রন্থে তার মুনকার হাদীসগুলো উল্লেখ করেছেন। সেগুলোর প্রথমটি হচ্ছে এটি।
এ
জন্য ইবনুল জাওযী “আল-ইলাল” গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটি সহীহ নয়।
ইবনু আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/২৭৮) অন্য একটি সূত্রে হাদীসটি ভিন্ন ভাষায়
বর্ণনা করেছেন। এ সনদে ইয়াহইয়া ইবনু সালাম রয়েছেন, তিনি উসমান ইবনু মুকসিম হতে
বর্ণনা করেছেন। অতঃপর বলেছেনঃ আমার পিতা বলেছেন যে, এ হাদীসটি মিথ্যা। এ উসমান
হচ্ছেন বাররী, তাকে ইবনু মাঈন এবং জুযজানী মিথ্যুক বলেছেন।
এছাড়াও
দারাকুতনী ইয়াহইয়া ইবনু সালামকে দুর্বল বলেছেন।
অন্য
একটি ইবনু আদী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাতে মুহাম্মাদ ইবনু ইউনুস আল-কুদায়মী
রয়েছেন। অতঃপর তিনি বলেছেনঃ কুদায়মীর বিষয়টি এতই স্পষ্ট যে, তার দুর্বলতা
বর্ণনা করার কোন প্রয়োজনীয়তাই নেই। একথা দ্বারা তিনি ইঙ্গিত করেছেন যে, তিনি
একজন মিথ্যুক, হাদীস জালকারী।
তাছাড়া
ইবনু আদী মুহাম্মাদ ইবনু ওয়ালীদ ইবনে আবান সূত্রেও হাদীসটি বর্ণনা (২/৩১৫)
করেছেন। কিন্তু এ সনদটি বাতিল। কারণ ইবনুল ওয়ালীদ আল-কালানিসী হাদীস জাল করতেন।
ইবনু
তাহের হাদীসটি “তাযকেরাতুল মাওযুআত” গ্রন্থে (পৃঃ ১৫) উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৫ | 145 | ۱٤۵
১৪৫।
তিনি শুধুমাত্র তিন দিন পর রোগীর সেবা করতে (দেখতে) যেতেন।
হাদীসটি
জাল।
এটি
ইবনু মাজাহ (১/৪৩৯), আবূশ শাইখ “আল-আখলাক” গ্রন্থে (২৫৫) এবং ইবনু আসাকির
(১৬/২২৬/২, ১৯/১৩১/১) মাসলামা ইবনু আলীর সূত্রে ... বর্ণনা করেছেন।
এ
মাসলামা সম্পর্কে ১৪১ নং হাদীসে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি মাতরূক, মিথ্যার দোষে
দোষী, মুনকার এবং জাল হাদীস বর্ণনাকারী।
এছাড়া
ইবনু যুরায়েজ মুদাল্লিস। তিনি দুর্বল বর্ণনাকারীদের থেকে তাদলীস করতেন।
ইবনু
আবী হাতিম “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/৩১৫) বলেনঃ আমি আমার পিতাকে এ হাদীসটি সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি উত্তরে বলেনঃ এটি একটি বাতিল, জাল হাদীস।
তার
এ কথাকে যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে সমর্থন করেছেন। তা সত্ত্বেও সুয়ূতী এটি উল্লেখ
করে "জামেউস সাগীর” গ্রন্থকে কালিমালিপ্ত করেছেন।
হাফিয
ইবনু হাজার “তাহযবুত তাহযীব” গ্রন্থে মাসলামার মুনকারগুলো উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৬ | 146 | ۱٤٦
১৪৬।
রোগীর সেবা করতে হবে (দেখতে যেতে হবে) তিন দিন পর।
হাদীসটি
জাল।
এটি
তাবারনী “মু'জামুল আওসাত” গ্রন্থে (১/২০০/১/৩৬৪৭) নাসর ইবনু হাম্মাদ (আবুল হারিস
আল-ওররাক) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি রাওহ ইবনু জানাহ হতে ... বর্ণনা করেছেন।
তাবারানী বলেনঃ আবুল হারিস এটিকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
এ
আবুল হারিস আল-ওররাক সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেনঃ كذاب তিনি মিথ্যুক।
ইমাম
বুখারী বলেনঃ মুহাদ্দিসগণ তার সমালোচনা করেছেন।
আর
রাওহ হচ্ছেন মিথ্যার দোষে দোষী।
ইবনুল
জাওযী হাদীসটি তার “আল-মাওযূ’আত” গ্রন্থে (৩/২০৫) উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটি সহীহ
নয়, রাওহ এবং নাসর দু’জনই মাতরূক।
সুয়ূতী
তার সমালোচনা করে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/৪০৩) হাদীসটির শাহেদ উল্লেখ করেছেন। এর
সূত্রে নূহ ইবনু আবী মারইয়াম এবং আবান রয়েছেন। নূহ মিথ্যার দোষে দোষী আর আবানও
নূহের মতই। তিনি হচ্ছেন ইবনু আবী আইয়াশ
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৭ | 147 | ۱٤۷
১৪৭।
তোমরা বিবাহ কর তবে তালাক দিওনা; কারন তালাকের জন্য আরশ কেঁপে উঠে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
খাতীব বাগদাদী “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (১২/১৯১) এবং তার সূত্রে ... ইবনুল জাওযী
(২/২৭৭) উল্লেখ করেছেন।
এটির
সনদে আমর ইবনু জামী' রয়েছেন। তিনি যুওয়াইবীর হতে বর্ণনা করেছেন। অতঃপর ইবনুল জাওযী
বলেছেনঃ এ আমর প্রসিদ্ধ বর্ণনাকারীদের উদ্ধৃতিতে মুনকার হাদীস এবং নিৰ্ভযোগ্যদের
উদ্ধৃতিতে জাল হাদীস বর্ণনা করতেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ তিনি একজন মিথ্যুক এবং যুওয়াইবীর নিতান্তই দুর্বল। এ কারণই
দর্শিয়ে ইবনুল জাওযী বলেছেনঃ হাদীসটি সহীহ্ নয়। হাদীসটি সাগানী
"আল-মাওযুআত" গ্রন্থে (পৃঃ ৭) উল্লেখ করেছেন। সুয়ূতী ইবনুল জাওযীর
কথাকে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/১৭৯) সমর্থন করেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি "জামেউস
সাগীর” গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন।
কীভাবে
এ হাদীসটি সহীহ্ হয় যেখানে সালাফদের একদল তাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন। এমনকি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও হাফসা বিনতু উমার (রাঃ)-কে তালাক
দিয়েছিলেন।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৮ | 148 | ۱٤۸
১৪৮।
(কাপড়ে) এক দিহরাম পরিমাণ রক্ত লাগলে পুনরায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে অন্য
এক ভাষায় এসেছেঃ ‘যদি কাপড়ে এক দিহরাম পরিমাণ রক্ত থাকে, তাহলে কাপড়টি ধুয়ে নিতে
হবে এবং সালাতটি পুনরায় আদায় করতে হবে।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
ইবনু হিব্বান "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে (১/২৯৮), দারাকুতনী তার
"সুনান" গ্রন্থে (পৃঃ ১৫৪) এবং বাইহাকী (২/৪০৪) রাওহ ইবনু গুতাঈফ হতে
... বর্ণনা করেছেন। অতঃপর ইবনু হিব্বান বলেছেনঃ হাদীসটি বানোয়াট হওয়ার ব্যাপারে
কোন সন্দেহ নেই। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি বলেননি। কুফাবাসীরা এটি
তৈরি করেছেন। রাওহ নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে জাল হাদীস বর্ণনা করতেন।
যায়লাঈ
“নাসবুর রায়া” গ্রন্থে (১/২১২) এবং ইবনুল মুলাক্কান "আল-খুলাসা"
গ্রন্থে (কাফ ৩০/১) তার (ইবনু হিব্বানের) কথাকে সমর্থন করেছেন। দারাকুতনী বলেনঃ
যুহরী হতে রাওহ ইবনু গুতাঈফ ছাড়া অন্য কেউ এটিকে বর্ণনা করেননি। তিনি মাতরূকুল
হাদীস। ইমাম বুখারী “তারীপুস সাগীর” গ্রন্থে (পৃ. ১৩৮) বলেনঃ তার অনুসরণ করা যায়
না।
উকায়লী
“আয-যুয়াফা” গ্রন্থে (১৩৩) হাদীসটি এ সূত্রে বর্ণনা করে বলেছেনঃ আমাকে আদাম
হাদীসটি শুনিয়েছেন, তিনি বলেনঃ আমি বুখারীকে বলতে শুনেছি যে, এ হাদীসটি বাতিল এবং
এ রাওহ মুনকারুল হাদীস।
উকায়লীর
সূত্রে হাদীসটি ইবনুল জাওযী “আল-মাওযূ’আত” গ্রন্থে (২/৭৬) উল্লেখ করেছেন, আর
সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে তাকে সমর্থন করেছেন। অতঃপর ইবনুল আররাকও “তানযীহুশ
শারীয়াহ" গ্রন্থে (২/৪২৮) তাকে সমর্থন করেছেন। আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, তার
পরেও সুয়ূতী কীভাবে হাদীসটি “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন!
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৪৯ | 149 | ۱٤۹
১৪৯।
রক্ত এক দিহরাম পরিমাণ হলে, তা ধুয়ে নিতে হবে এবং তার কারণে সালাত (নামায/নামাজ)
পুনরায় আদায় করতে হবে।
হাদীসটি
জাল।
খাতীব
বাগদাদী হাদীসটি “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (৯/৩৩০) উল্লেখ করেছেন এবং তার থেকে
ইবনুল জাওযীও (২/৭৫) নূহ ইবনু আবী মারইয়াম সূত্রে ... বর্ণনা করেছেন। এটির সনদটি
জাল, নূহ ইবনু আবী মারইয়াম মিথ্যার দোষে দোষী।
ইবনুল
জাওযী বলেনঃ নূহ মিথ্যুক। যায়লাঈ “নাসবুর রায়া” গ্রন্থে (১/২১২) এবং সুয়ূতী
“আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/৩) তার (ইবনুল জাওযীর) এ কথাকে সমর্থন করেছেন। তা সত্ত্বেও
সুয়ূতী “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন!
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ
তাওহীদ পাবলিকেশন / গ্রন্থঃ যঈফ ও জাল হাদিস / অধ্যায়ঃ ১/ বিবিধ
হাদিস
নম্বরঃ ১৫০ | 150 | ۱۵۰
১৫০।
তিন ধরনের রোগীর সেবা করা যায় না (দেখতে যাওয়া যায় না); চোখ উঠা রোগী, দাঁতের রোগী
এবং ফোড়াধারি রোগী।
হাদীসটি
জাল।
হাদীসটি
তাবারানী “মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে (১/১১/১/১৫০), উকায়লী (৪২১) ও ইবনু আদী (২/৩১৯)
মাসলামা ইবনু আলী আল-খুশানীর সূত্রে ... উল্লেখ করেছেন। তাবারানী ও ইবনু আদী বলেনঃ
হাদীসটি আওযাঈ হতে মাসলামা ছাড়া অন্য কেউ বর্ণনা করেননি।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ মাসলামা মিথ্যার দোষে দোষী। তার সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেনঃ তিনি
কিছুই না। বুখারী বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস। হাদীসটি ইবনুল জাওযী “আল-মাওযু'আত”
গ্রন্থে (৩/২০৮) উল্লেখ করে বলেছেনঃ এটি জাল (বানোয়াট)। এটিকে ইয়াহইয়া ইবনু আবী
কাসীরের কথা হিসাবে বর্ণনা করা হয়। হাফিয ইবনু হাজার খুশানীর মুনকারগুলো
“তাহযীবুত তাহযীব” গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেনঃ আবু হাতিম বলেনঃ এটি বাতিল, মুনকার।
সুয়ূতী ইবনুল জাওযীর সমালোচনা করে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/৪০৬) বলেছেনঃ মাসলামা
মিথ্যার দোষে দোষী নন, তাকে বাইহাকী দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
আমি
(আলবানী) বলছিঃ হক হচ্ছে ইবনুল জাওযীর কথায়। কারণ এ মাসলামা জাল হাদীস বর্ণনা
করেছেন। দেখুন ১৪১ এবং ১৪৫ নং হাদীস। এ কারণে সুয়ূতী “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে
হাদীসটি উল্লেখ করে ঠিক কাজ করেননি।
বাইহাকী
“শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে (৬/৫৩৫/৯১৯০) বলেছেনঃ সঠিক হচ্ছে এই যে, এটি ইয়াহইয়ার
কথা।
এটি
জাল হওয়ার প্রমাণ এই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখ উঠা রোগী দেখতে
যেতেন। যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ)-এর চোখ উঠলে তিনি তাকে দেখতে যান। যেটি ‘আলী ইবনু
জায়াদ তার “মুসনাদ” গ্রন্থে (২/৮৪৪/২৩৩৫) এবং হাকিম (১৩৪২) (তবে অন্য সূত্রে)
বর্ণনা করেছেন এবং তিনি সেটিকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। যাহাবীও তার সাথে ঐকমত্য পোষণ
করেছেন। তারা দু'জনে যেমনটি বলেছেন সেটি তেমনই।
এছাড়া
এ যায়েদ-এর হাদীস হতেই এটির শাহেদ রয়েছে। যেটিকে হাকিম এবং যাহাবী সহীহ আখ্যা
দিয়েছেন। সেটিকে আমি "সহীহ আবী দাউদ" এর মধ্যে (২৭১৬) উল্লেখ করেছি।
হাদিসের
মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদিস
নম্বরঃ ১৫১ | 151 | ۱۵۱
No comments:
Post a Comment