বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
(৩১৩-৪১৭টি মোট ১০৫টি হাদিস)
হায়েযের ইতিকথা।
আর আল্লাহ্র বাণীঃ “তারা আপনার কাছে জিজ্ঞেস
করে রক্তস্রাব সম্বন্ধে। আপনি বলুনঃ তা অশুচি। কাজেই রক্তস্রাব অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমণ
থেকে বিরত থাকবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না। সুতরাং যখন তারা
উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হবে তখন তোমরা তাদের কাছে ঠিক সেভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদের
আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ্ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন।”
(সূরা আল-বাক্বারাহ্ ২/২২২)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
এটি এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ্তা’আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কারো
কারো মতে সর্বপ্রথম হায়য শুরু হয় বনী ইসরাঈলী মহিলাদের। আবূ আবদুল্লাহ্ বুখারী (রহঃ)
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসই গ্রহণযোগ্য।
২. অধ্যায়ঃ
ঋতুকালীন ঋতুবতী মহিলাদের প্রতি নির্দেশ।
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা হজ্জের উদ্দেশেই (মদীনা হতে)
বের হলাম। ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়েয আসলো। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তা’আলাই আদম-কন্যাদের
জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বাইতুল্লাহ্র ত্বওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী
সব কাজ করে নাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হতে গাভী কুরবানী করলেন।
(সহিহ বুখারী, তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-২৯৪,
৩০৫, ৩১৬, ৩১৭, ৩১৯, ৩২৮, ১৫১৬, ১৫১৮, ১৫৫৬, ১৫৬০, ১৫৬১, ১৫৬২, ১২৩৮, ১৬৫০, ১৭০৯, ১৭২০,
১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭১, ১৭৭২, ১৭৮৩, ১৭৮৬, ১৭৮৭, ১৭৮৮, ২৯৫২, ২৯৮৪, ৪৩৯৫, ৪৪০১, ৪৪০৮,
৫৩২৯, ৫৫৪৮, ৫৫৫৯, ৬১৫৭,৭২২৯; মুসলিম ১৫/১৭, হাঃ ১২১১) (আধুনিক প্রকাশনী- ২৮৫, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ২৯০)
৩. অধ্যায়ঃ
হায়েযের সময় স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া ও চুল আঁচড়ে দেয়া।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি হায়েয অবস্থায় আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাথা আঁচড়ে দিতাম। সহিহ বুখারী, তাওহীদ
প্রকাশনী- হাদিস নং-২৯৫,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে (‘উরওয়াহ্কে) প্রশ্ন করা হয়েছিল যে,
ঋতুবতী স্ত্রী কি স্বামীর খিদমত করতে পারে? অথবা গোসল ফরয হওয়ার অবস্থায় কি স্ত্রী
স্বামীর নিকটবর্তী হতে পারে? ‘উরওয়াহ (রহঃ) জবাব দিলেন, এ সবই আমার নিকট সহজ। এ ধরনের
সকল মহিলাই স্বামীর খিদমত করতে পারে। এ ব্যাপারে কারো অসুবিধা থাকার কথা নয়। আমাকে
‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, তিনি হায়েযের অবস্থায় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর চুল আঁচড়ে দিতেন। আর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মু’তাফিক অবস্থায় মসজিদ হতে তাঁর (‘আয়িশার) হুজরার দিকে তাঁর নিকট মাথাটা
বাড়িয়ে দিতেন। তখন তিনি মাথার চুল আঁচড়াতেন অথচ তিনি ছিলেন ঋতুবতী। সহিহ বুখারী,
তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-২৯৬,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীর হায়য অবস্থায় তার কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করা।
আবূ ওয়াইল (রহঃ) তাঁর ঋতুবতী দাসীকে আবূ রাযীন
(রহঃ)-এর কাছে পাঠাতেন, আর দাসী জুযদানে পেঁচিয়ে কুরআন শরীফ নিয়ে আসত।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। আর তখন আমি হায়েযের অবস্থায়
ছিলাম। সহিহ বুখারী, তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-২৯৭
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫. অধ্যায়ঃ
যারা নিফাসকে হায়েয এবং হায়েযকে নিফাস বলেন।
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়েয দেখা দিলে আমি
চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি নিফাস দেখা
দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর সঙ্গে চাদরের ভেতর শুয়ে
পড়লাম।
(সহিহ বুখারী,তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-২৯৮,
৩২২, ৩২৩, ১৯২৯; মুসলিম ৩/২, হাঃ ২৯৬, আহমাদ ২৬৫৮৭) (আ.প্র. ২৮৯, ই.ফা. ২৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬. অধ্যায়ঃ
হায়েয অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংস্পর্শ করা।
PMMRC হাদিস নং-৩১৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জানাবাত অবস্থায় একই পাত্র হতে পানি নিয়ে গোসল করতাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-২৯৯,
২৫০) (আ.প্র. ২৯০, ই.ফা. ২৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩১৯
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এবং তিনি আমাকে নির্দেশ দিলে আমি ইযার পরে
নিতাম, আমার হায়েয অবস্থায় তিনি আমার সাথে মেলামেশা করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০০,
৩০২, ২০৩০ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ২৯০, ই.ফা. ২৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩২০
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাছাড়া তিনি ই’তিকাফ অবস্থায় মাথা বের করে
দিতেন, আর আমি হায়েয অবস্থায় মাথা ধুয়ে দিতাম। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস
নং-৩০১, ২৯৫) (আ.প্র. ২৯০, ই.ফা. ২৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩২১
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমাদের কেউ হায়েয অবস্থায় থাকলে
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে মিশামিশি করতে চাইলে
তাকে প্রবল হায়েযে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর তার সাথে মিশামিশি করতেন। তিনি
[‘আয়িশা রাযিআল্লাহু আনহা] বলেনঃ তোমাদের মধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
মত কাম-প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখে কে? খালিদ ও জারীর (রহঃ) শায়বানী (রহঃ) হতে
এ হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০২,
৩০০; মুসলিম ৩/১, হাঃ ২৯৩) (আ.প্র. ২৯১, ই.ফা. ২৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মাইমূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় মিশামিশি করতে চাইলে তাকে ইযার
পরতে বলতেন। শায়বানী (রহঃ) হতে সুফিয়ান (রহঃ) এ বর্ণনা করেছেন। সহিহ বুখারী-তাওহীদ
প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৩, (মুসলিম ৩/১, হাঃ ২৯৪, আহমাদ ২৬৯১৮) (আ.প্র. ২৯২, ই.ফা. ২৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭. অধ্যায়ঃ
হায়েয অবস্থায় সওম ছেড়ে দেয়া।
PMMRC হাদিস নং-৩২৩
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার ঈদুল আযহা অথবা ঈদুল ফিতরের সালাত আদায়ের
জন্য আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন।
তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেনঃ হে মহিলা সমাজ! তোমার সদাক্বাহ করতে থাক।
কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেনঃ কী
কারণে, হে আল্লাহ্র রসূল? তিনি বললেনঃ তোমরা অধিক পরিমানে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর
অকৃতজ্ঞ হও। বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও একজন সদাসতর্ক ব্যক্তির
বুদ্ধি হরণে তোমাদের চেয়ে পারদর্শী আমি আর কাউকে দেখিনি। তারা বললেনঃ আমাদের দ্বীন
ও বুদ্ধির ত্রুটি কোথায়, হে আল্লাহ্র রসূল? তিনি বললেনঃ একজন মহিলার সাক্ষ্য কি একজন
পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? তারা উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ’। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে
তাদের বুদ্ধির ত্রুটি। আর হায়েয অবস্থায় তারা কি সালাত ও সিয়াম হতে বিরত থাকে না?
তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে তাদের দ্বীনের ত্রুটি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৪,
১৪৬২, ১৯৫১, ২৬৫৮; মুসলিম ১/৩৪, হাঃ ৭৯, ৮০ আহমাদ ৫৪৪৩) (আ.প্র. ২৯৩, ই.ফা. ২৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৮. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী নারী হজ্জের যাবতীয় বিধান পালন করবে তবে কাবা গৃহের ত্বওয়াফ ব্যতীত।
ইবরাহীম (রহঃ) বলেছেনঃ (হায়েজ অবস্থায়) আয়াত
পাঠে কোন দোষ নেই। ইব্ন আ’ব্বাস (রাঃ) জুনুবীর জন্য কুরআন পাঠে কোন দোষ মনে করতেন
না। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির করতেন।
উম্মে আ’তিয়্যাহ (রাঃ) বলেনঃ (ঈ’দের দিন) হায়েজ অবস্থায় মহিলাদের বাইরে নিয়ে আসার জন্য
আমাদের বলা হতো, যাতে তারা পুরুষদের সাথে তাকবীর বলে ও দু’আ করে। ইব্ন আ’ব্বাস (রাঃ)
আবূ সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, হিরাক্ব্ল ( রোম সম্রাট) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পত্র চেয়ে নিলেন এবং তা পাঠ করলেন। তাতে লেখা ছিলঃ
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে। আপনি বলুন!
হে কিতাবীগণ! এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই -যেন আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত
কারো ই’বাদাত না করি। কোন কিছুকেই তাঁর শরীক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ্
ব্যতীত রবরূপে গ্রহণ না করি। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলুন, তোমরা সাক্ষী থাক আমরা
মুসলিম (৩:৬৪)। আ’ত্বা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আ’য়িশা (রাঃ) হায়েজ
অবস্থায় কা’বা ত্বওয়াফ ছাড়া হ’জ্জের অন্যান্য আহকাম পালন করেছেন কিন্তু স্বলাত আদায়
করেন নি। হা’কাম (রহঃ) বলেছেনঃ আমি জুনুবী অবস্থায়ও যবে’হ করে থাকি। অথচ আল্লাহ্র
বাণী হলোঃ
অর্থাৎ “তোমরা আহার করো না সে সব প্রাণী, যার উপর আল্লাহ্র নাম নেওয়া হয়নি”। (৬:১২১)
অর্থাৎ “তোমরা আহার করো না সে সব প্রাণী, যার উপর আল্লাহ্র নাম নেওয়া হয়নি”। (৬:১২১)
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হজ্জের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলাম। আমরা ‘সারিফ’ নামক
স্থানে পৌঁছেলে আমি ঋতুবতী হই। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে
আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কাঁদছ কেন? আমি বললামঃ আল্লাহ্র শপথ!
এ বছর হজ্জ না করাই আমার জন্য পছন্দনীয়। তিনি বললেনঃ সম্ভবত তুমি ঋতুবতী হয়েছ। আমি
বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটাতো আদম-কন্যাদের জন্যে আল্লাহ্ নির্ধারিত করেছেন। তুমি
পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য হাজীদের মত সমস্ত কাজ করে যাও, কেবল কা’বার তাওয়াফ
করবে না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৫, ২৯৪) (আ.প্র. ২৯৪, ই.ফা. ২৯৯)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৫, ২৯৪) (আ.প্র. ২৯৪, ই.ফা. ২৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯. অধ্যায়ঃ
ইসতিহাযা
PMMRC হাদিস নং-৩২৫
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিনতু আবূ হুবায়শ (রাঃ)
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র
রসূল! আমি কখনও পবিত্র হই না। এমতাবস্থায় আমি কি সালাত ছেড়ে দেব? আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ হলো এক ধরনের বিশেষ রক্ত, হায়েযের রক্ত
নয়। যখন তোমার হায়েয শুরু হয় তখন তুমি সালাত ছেড়ে দাও। আর হায়েয শেষ হলে রক্ত
ধুয়ে সালাত আদায় কর।[১]
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৬,
২২৮) (আ.প্র. ২৯৫, ই.ফা. ৩০০)
[১]
হায়েয ও নিফাসের মেয়াদের অতিরিক্ত সময়কালীন রজঃস্রাবকে ইসতিহাযা এবং সে মহিলাকে
মুস্তাহাযা বলা হয় । (আইনী ৩খ: ১৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩২৬
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু হাবিবাহ বিনতু জাহাশ তাঁর রক্তস্রাবের সমস্যার বিষয় নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট ব্যক্ত করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁকে বললেন, ‘তুমি এ সমস্যা দেখা দেয়ার পূর্বে তোমার হায়িযের জন্য যে ক’দিন অপেক্ষা
করতে সে ক’দিন তুমি হায়িযের বিধি নিষেধ মেনে চলবে। তারপর গোসল করবে। তারপর থেকে উম্মু
হাবিবাহ প্রত্যেক সলাতের জন্যেই গোসল করতেন। [১]
[১] মুসলিম ৬৬, ৩৩৪
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০. অধ্যায়ঃ
ইস্তিহাযার শিরা।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) সাত বছর পর্যন্ত
ইস্তিহাযায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাঁকে গোসলের নির্দেশ দিলেন এবং বললেনঃ এ রগ থেকে
বের হওয়া রক্ত। অতঃপর উম্মু হাবীবা (রাঃ) প্রতি সালাতের জন্য গোসল করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৭,
মুসলিম ৩/১৪, হাঃ ৩৩৪, আহমাদ ২৭৫১৬) (আ.প্র. ৩১৬, ই.ফা. ৩২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১১. অধ্যায়ঃ
ইস্তিহাযাগ্রস্তা নারীর পবিত্রতা দেখা।
ইবন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ ইস্তিহাযাগ্রস্তা
নারী দিনের কিছু সময়ের জন্য হলেও পবিত্রতা দেখলে গোসল করবে ও সালাত আদায় করবে। আর সালাত
আদায় করার পর তার স্বামী তার সাথে মিলতে পারে। কারণ, সালাতের গুরুত্ব অত্যাধিক।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হায়েয দেখা দিলে সালাত ছেড়ে দাও আর হায়েযের সময়
শেষ হয়ে গেলে রক্ত ধুয়ে নাও এবং সালাত আদায় কর। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস
নং-৩৩১, ২২৮) (আ.প্র. ৩১৯, ই.ফা. ৩২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ইস্তিহাযা নারী দু’সলাত
কে একত্রিত করে আদায় করতে পারবে
PMMRC হাদিস নং-৩২৯
হামনাহ বিনতু জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমার ‘ইস্তেহাযা’ নামক ব্যধির জন্য অত্যন্ত
কঠিনরুপে রক্তস্রাব হতো। আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এ বিষয়ে
ফতোয়ার জন্য এলাম।’ তিনি বললেন, ‘এটা শয়তানের আঘাতজনিত কারনেই (হচ্ছে), তুমি ছয় বা
সাত দিন হায়িয পালন করবে। তারপর হায়িযের গোসল করে পবিত্র হয়ে প্রতি মাসে চব্বিশ বা
তেইশ দিন নিয়মমাফিক সলাত আদায় করবে, সওম পালন করবে ও সলাত আদায় করবে, তোমার জন্য এটাই
যথেষ্ট হবে। এভাবে হায়িযা মহিলার মত প্রতি মাসে করতে থাকবে। যদি তোমার পক্ষে সম্ভব
হয় তাহলে যুহুরকে পিছিয়ে দিয়ে এবং ‘আসরকে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গোসল করে দু’ ওয়াক্তের
সলাত একসঙ্গে আদায় করবে। অনুরুপভাবে মাগরিবকে পিছিয়ে ও ‘ইশাকে এগিয়ে নিয়ে গোসল করে
উভয় সলাত আদায় করবে এবং ফাজর সালাতের জন্য গোসল করে তা আদায় করবে। (নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন ) আমার নিকটে এটাই অধিক পছন্দ।’ তিরমিযী একে সহীহ্ বলেছেন
আর বুখারী একে হাসান বলেছেন। [১]
[১] হাসান। আবূ দাঊদ ২৭৮; তিরমিযী ১২৮, ইবনু মাজাহ
৬২৭; আহমাদ ৬/ ৪৩৯।
হাদিসের মানঃ হাসান
হাদিস
ইস্তিহাযা নারীর (হায়েযের
রোগীর) গোসল করা ও তার সময় সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
PMMRC হাদিস নং-৩৩০
‘উমাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একটা বড় পানির গামলাতে বসবে। অতঃপর হলদে রং এর রক্ত
দেখতে পাও তবে যুহর ও ‘আসরের জন্য একবার এবং মাগরিব ও ‘ইশা সলাতের জন্য একবার গোসল
করবে এবং ফজর সলাতের জন্য একবার করে গোসল করবে আর এর মাঝে (প্রত্যেক সলাতের জন্য) উযু
করবে। [১]
[১]
আবূ দাঊদ ২৯৬, আসমা বিনতে উমাইস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহ্র রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ফাতিমাহ বিনতে হুবাইসের এমন বেশি পরিমাণে হায়য
হচ্ছে যে, সে সালাত আদায় করতে পারছেনা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, সুবহানআল্লাহ! এতো শয়তানের পক্ষ থেকে হয়েছে । সে বসবে...।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১২. অধ্যায়ঃ
হায়েযের রক্ত ধুয়ে ফেলা।
PMMRC হাদিস নং-৩৩১
আসমা বিন্ত আবূ বক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক মহিলা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের কারো কাপড়ে হায়েযের
রক্ত লাগলে কী করবে? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের
কারো কাপড়ে হায়েযের রক্ত লাগলে সে তা রগড়িয়ে, তারপর পানিতে ধুয়ে নেবে এবং সে কাপড়ে
সালাত আদায় করবে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৭, ২২৭) (আ.প্র. ২৯৬, ই.ফা. ৩০১)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৭, ২২৭) (আ.প্র. ২৯৬, ই.ফা. ৩০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমাদের কারো হায়েয হলে, পবিত্র
হওয়ার পর রক্ত গড়িয়ে কাপড় পানি দিয়ে ধুয়ে সেই কাপড়ে তিনি সালাত আদায় করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৮,
আ.প্র. ২৯৭, ই.ফা. ৩০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৩. অধ্যায়ঃ
‘মুসতাহাযা’র ই’তিকাফ ।
PMMRC হাদিস নং-৩৩৩
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁর কোন এক স্ত্রী ইস্তিহাযার অবস্থায় ই’তিকাফ করেন। তিনি রক্ত
দেখতেন এবং স্রাবের কারণে প্রায়ই তাঁর নীচে একটি পাত্র রাখতেন। রাবী বলেনঃ ‘আয়িশা
(রাঃ) হলুদ রঙের পানি দেখে বলেছেন, এ যেন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর অমুক স্ত্রীর ইস্তিহাযার রক্ত।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩০৯,
৩১০, ৩১১, ২০৩৭ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ২৯৮, ই.ফা. ৩০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৩৪
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁর কোন একজন স্ত্রী ই’তিকাফ করেছিলেন। তিনি রক্ত
ও হলদে পানি বের হতে দেখতেন আর তাঁর নীচে একটা পাত্র বসিয়ে রাখতেন এবং সে অবস্থায়
সালাত আদায় করতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১০,
৩০৯) (আ.প্র. ২৯৯, ই.ফা. ৩০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৩৫
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মুল-মুমিনীনের একজন ইস্তিহাযা অবস্থায়
ইতিকাফ করেছিলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১১,
৩০৯) (আ.প্র. ৩০০, ই.ফা. ৩০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৪. অধ্যায়ঃ
হায়েয অবস্থায় পরিহিত পোশাকে সালাত আদায় করা যায় কি?
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমাদের কারো একটির অধিক কাপড় ছিল
না। তিনি হায়েয অবস্থায়ও এই কাপড়খানিই ব্যবহার করতেন, তাতে রক্ত লাগলে থুথু দিয়ে
ভিজিয়ে নখ দ্বারা খুঁটিয়ে নিতেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১২, আ.প্র. ৩০১, ই.ফা. ৩০৬)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১২, আ.প্র. ৩০১, ই.ফা. ৩০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৫. অধ্যায়ঃ
হায়েয হতে পবিত্রতার গোসলে সুগন্ধি ব্যবহার।
PMMRC হাদিস নং-৩৩৭
উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কোন মৃত ব্যক্তির জন্যে আমাদের
তিন দিনের অধিক শোক পালন করা হতে নিষেধ করা হতো। কিন্তু স্বামীর ক্ষেত্রে চার মাস দশদিন
(শোক পালনের অনুমতি ছিল)। আমরা তখন সুরমা লাগাতাম না, সুগন্ধি ব্যবহার করতাম না, ইয়েমেনের
তৈরি রঙিন কাপড় ছাড়া অন্য কোন রঙিন কাপড় পরিধান করতাম না। তবে হায়েয হতে পবিত্রতার
গোসলে আজফারের খোশবু মিশ্রিত বস্ত্রখন্ড ব্যবহারের অনুমতি ছিল। আর আমাদের জানাযার পেছনে
যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এই বর্ণনা হিশাম ইব্নু হাস্সান (রহঃ) হাফসা (রাঃ) হতে, তিনি
উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) হতে এবং তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বিবৃত
করেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৩, ১২৭৮, ১২৭৯, ৫৩৪০, ৫৩৪১, ৫৩৪২, ৫৩৪৩; মুসলিম ১১/১১, হাঃ ৯৩৮) (আ.প্র. ৩০২, ই.ফা. ৩০৭)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৩, ১২৭৮, ১২৭৯, ৫৩৪০, ৫৩৪১, ৫৩৪২, ৫৩৪৩; মুসলিম ১১/১১, হাঃ ৯৩৮) (আ.প্র. ৩০২, ই.ফা. ৩০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৬. অধ্যায়ঃ
হায়েযের পরে পবিত্রতা অর্জনের সময় দেহ ঘষা মাজা করা, গোসলের পদ্ধতি এবং
মিশকযুক্ত বস্ত্র খন্ড দিয়ে রক্তের চিহ্ন পরিষ্কার করা।
PMMRC হাদিস নং-৩৩৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক মহিলা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে হায়েযের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাকে গোসলের নিয়ম বলে
দিলেন যে, এক টুকরা কস্তুরী লাগানো নেকড়া নিয়ে পবিত্রতা হাসিল কর। মহিলা বললেনঃ কীভাবে
পবিত্রতা হাসিল করব? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা
দিয়ে পবিত্রতা হাসিল কর। মহিলা (তৃতীয়বার) বললেনঃ কীভাবে? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দিয়ে তুমি পবিত্রতা হাসিল কর। ‘আয়িশা
(রাঃ) বলেনঃ তখন আমি তাকে টেনে আমার নিকট নিয়ে আসলাম এবং বললামঃ তা দিয়ে রক্তের চিহ্ন
বিশেষভাবে মুছে ফেল।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৪, ৩১৫, ৭৩৫৭; মুসলিম ৩/১৩, হাঃ ৩৩২) (আ.প্র. ৩০৩, ই.ফা. ৩০৮)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৪, ৩১৫, ৭৩৫৭; মুসলিম ৩/১৩, হাঃ ৩৩২) (আ.প্র. ৩০৩, ই.ফা. ৩০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৭. অধ্যায়ঃ
হায়েযের গোসলের বিবরণ।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন আনসারী মহিলা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কীভাবে হায়েযের গোসল করবো? আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এক টুকরো কস্তুরীযুক্ত নেকড়া লও
এবং তিনবার ধুয়ে নাও। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতঃপর লজ্জাবশত অন্যদিকে
মুখ ঘুরিয়ে নিলেন এবং বললেনঃ তা দিয়ে তুমি পবিত্র হও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে
নিজের দিকে টেনে নিলাম। তারপর তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথার
মর্ম বুঝিয়ে দিলাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৫,
৩১৪) (আ.প্র. ৩০৪, ই.ফা. ৩০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৮. অধ্যায়ঃ
হায়েযের গোসলের সময় চুল আঁচড়ানো।
PMMRC হাদিস নং-৩৪০
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলাম। আমিও তাদেরই একজন
ছিলাম যারা তামাত্তুর নিয়্যত করেছিল এবং সঙ্গে কুরবানীর পশু নেয়নি। তিনি বলেনঃ তার
হায়েয শুরু হয় আর আরাফা এর রাত পর্যন্ত তিনি পাক হননি। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম,
হে আল্লাহ্র রসূল! আজ তো আরাফার রাত, আর আমি হজ্জের সঙ্গে উমরারও নিয়্যত করেছি। আল্লাহ্র
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ মাথার বেণী খুলে ফেল, চুল আঁচড়াও
আর উমরা হতে বিরত থাক। আমি তাই করলাম। হজ্জ সমাধা করার পর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুর (রহঃ) কে ‘হাসবায়’ অবস্থানের রাতে (আমাকে উমরা করানোর)
নির্দেশ দিলেন। তিনি তানঈম হতে আমাকে ‘উমরা করালেন, যেখান হতে আমি ‘উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৬, ২৯৪) (আ.প্র. ৩০৫, ই.ফা. ৩১০)
[১]
একই সফরে হজ্জ ও উমরা করা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯. অধ্যায়ঃ
হায়েযের গোসলে চুল খোলা।
PMMRC হাদিস নং-৩৪১
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার
সময় নিকটবর্তী হলে বেরিয়ে পড়লাম। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ যে উমরার ইহরাম বাঁধতে চায় সে তা করতে পারে। কারণ, আমি সাথে কুরবানীর পশু না
আনলে উমরার ইহরামই বাঁধতাম। তারপর কেউ উমরার ইহরাম বাঁধলেন, আর কেউ হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন।
আমি ছিলাম উমরার ইহরামকারীদের মধ্যে। আরাফার দিনে আমি ঋতুবতী ছিলাম। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আমার অসুবিধার কথা বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার উমরা ছেড়ে
দাও, মাথার বেণী খুলে চুল আঁচড়াও, আর হজ্জের ইহরাম বাঁধ। আমি তাই করলাম। ‘হাসবা’ নামক
স্থানে অবস্থানের রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে আমার ভাই
আবদুর রহমান ইব্নু আবূ বকর (রাঃ) কে পাঠালেন। আমি তানঈমের দিকে বের হলাম। সেখানে পূর্বের
উমরার পরিবর্তে ইহরাম বাঁধলাম। হিশাম (রহঃ) বলেনঃ এসব কারণে কোন দম (কুরবানী), সওম
বা সদকা দিতে হয়নি।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৭,
২৯৪) (আ.প্র. ৩০৬, ই.ফা. ৩১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২০. অধ্যায়ঃ
“পূর্ণাকৃতি ও অপূর্ণাকৃতি গোশ্ত পিণ্ড।”
(সূরা হজ্জ ২২/৫)
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা মাতৃগর্ভের জন্য একজন মালাইকা নির্ধারণ করেছেন। তিনি
(পর্যায়ক্রমে) বলতে থাকেন, হে রব! এখন বীর্য-আকৃতিতে আছে। হে রব! এখন জমাট রক্তে পরিণত
হয়েছে। হে রব! এখন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা যখন তার সৃষ্টি
পূর্ণ করতে চান, তখন জিজ্ঞেস করেনঃ পুরুষ, না স্ত্রী? সৌভাগ্যবান, না দুর্ভাগা? রিয্ক
ও বয়স কত? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তার মাতৃগর্ভে
থাকতেই তা লিখে দেয়া হয়।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৮, ৩৩৩৩, ৬৫৯৫; মুসলিম ৪৬/১, হাঃ ২৬৪৬) (আ.প্র. ৩০৭, ই.ফা. ৩১২)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৮, ৩৩৩৩, ৬৫৯৫; মুসলিম ৪৬/১, হাঃ ২৬৪৬) (আ.প্র. ৩০৭, ই.ফা. ৩১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২১. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী কীভাবে হজ্জ ও উমরা’র ইহরাম বাঁধবে?
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের সময় বের হয়েছিলাম। আমাদের কেউ ইহরাম
বেঁধেছিল ‘উমরার আর কেউ বেঁধেছিল হজ্জের। আমরা মক্কায় এসে পৌঁছলে আল্লাহ্র রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যারা ‘উমরার ইহরাম বেঁধেছে কিন্তু কুরবানীর
পশু সাথে আনেনি, তারা যেন ইহরাম খুলে ফেলে। আর যারা উমরার ইহরাম বেঁধেছে ও কুরবানীর
পশু সাথে এনেছে, তারা যেন কুরবানী করা পর্যন্ত ইহরাম না খোলে। আর যারা হজ্জের ইহরাম
বেঁধেছে তারা যেন হজ্জ পূর্ণ করে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ অতঃপর আমার হায়েয শুরু হয়
এবং আরাফার দিনেও তা বহাল থাকে। আমি শুধু ‘উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে মাথার বেণী খোলার, চুল আঁচড়ে নেয়ার এবং ‘উমরার ইহরাম
ছেড়ে হজ্জের ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দিলেন। আমি তাই করলাম। পরে হজ্জ সমাধা করলাম। অতঃপর
‘আবদুর রহমান ইব্নু আবূ বকর (রাঃ) কে আমার সাথে পাঠালেন। তিনি আমাকে তান’ঈম হতে পূর্বের
পরিত্যক্ত উমরার পরিবর্তে ‘উমরা পালনের আদেশ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩১৯,
১৯৪) (আ.প্র. ৩০৮, ই.ফা. ৩১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২. অধ্যায়ঃ
হায়েয শুরু ও শেষ হওয়া।
মহিলারা ‘আয়িশা (রাঃ) -এর নিকট কৌটায় করে তুলা
প্রেরণ করতো। তাতে হলুদ রং দেখলে ‘আয়িশা (রাঃ) বলতেনঃ তাড়াহুড়া করো না, সাদা পরিস্কার
দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা কর। এ দ্বারা তিনি হায়েয পাক হওয়া বোঝাতেন। যায়দ ইব্নু সাবিত
(রাঃ) এর কন্যার নিকট সংবাদ এলো যে, স্ত্রীলোকেরা রাতের অন্ধকারে প্রদীপ চেয়ে নিয়ে
হায়েয হতে পবিত্র হলো কিনা তা দেখতেন। তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোকেরা (পূর্বে) এমনটি করতেন
না। তিনি তাদের দোষারোপ করেন।
PMMRC হাদিস নং-৩৪৪
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিনতে আবূ হুবায়শ (রাঃ)
এর ইস্তিহাযা হতো। তিনি এ বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস
করলেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ হচ্ছে রগের রক্ত,
হায়েযের রক্ত নয়। সুতরাং হায়েয শুরু হলে সালাত ছেড়ে দেবে। আর হায়েয শেষ হলে গোসল
করে সালাত আদায় করবে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২০, ২২৮) (আ.প্র. ৩০৯, ই.ফা. ৩১৪)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২০, ২২৮) (আ.প্র. ৩০৯, ই.ফা. ৩১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩. অধ্যায়ঃ
হায়েযকালীন সালাতের কাযা নেই।
জাবির ইব্ন ‘আবদুল্লাহ্ ও আবূ সা’ঈদ খুদরী
(রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, ( স্ত্রীলোক হায়েযকালীন
সময়ে) সালাত ছেড়ে দেবে।
মু’আযাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জনৈকা মহিলা ‘আয়িশা (রাঃ) কে বললেনঃ হায়েযকালীন
কাযা সালাত পবিত্র হওয়ার পর আদায় করলে আমাদের জন্য চলবে কি-না? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ
তুমি কি হারূরিয়্যাহ? (খারিজীদের একদল) [১] আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
সময়ে ঋতুবতী হতাম কিন্তু তিনি আমাদের সালাত কাযার নির্দেশ দিতেন না। অথবা তিনি [‘আয়িশা
(রাঃ)] বলেনঃ আমরা তা কাযা করতাম না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২১,
মুসলিম ৩/১৫, হাঃ ৩৩৫, আহমাদ ২৪৭১৪) (আ.প্র. ৩১০, ই.ফা. ৩১৫)
[১]
খারিজীদের একটি দল যারা ঋতুবতীর জন্য সালাতের কাযা ওয়াজিব মনে করত। (আইনী, ৩খ ৩০০
পৃ.)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৪. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী মহিলার সাথে হায়েযের কাপড় পরিহিত অবস্থায় একত্রে শোয়া।
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শায়িত অবস্থায় আমার হায়েয দেখা দিল। তখন আমি
চুপিসারে বেরিয়ে এসে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডেকে নিয়ে তাঁর চাদরের নীচে স্থান দিলেন। বর্ণনাকারী যায়নাব
(রহঃ) বলেনঃ আমাকে উম্মু সালামা (রাঃ) এও বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) রোযা রাখা অবস্থায় তাকে চুমু খেতেন। [উম্মে সালামা (রাঃ) আরও বলেন] আমি ও
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র হতে পানি নিয়ে জানাবাতের গোসল
করতাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২২,
২৯৮) (আ.প্র. ৩১১, ই.ফা. ৩১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৫. অধ্যায়ঃ
হায়েযের জন্য স্বতন্ত্র কাপড় পরিধান করা।
PMMRC হাদিস নং-৩৪৭
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক সময় আমি ও নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই চাদরের নীচে শুয়েছিলাম। আমার হায়েয শুরু হলো। তখন আমি
গোপনে বেরিয়ে গিয়ে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কি হায়েয
আরম্ভ হয়েছে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি আমাকে ডেকে নিলেন এবং আমি তার সঙ্গে একই চাদরের
নীচে শুয়ে পড়লাম।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৩, ২৯৮) (আ.প্র. ৩১২, ই.ফা. ৩১৭)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৩, ২৯৮) (আ.প্র. ৩১২, ই.ফা. ৩১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৬. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী মহিলাদের উভয় ঈদ ও মুসলমানদের দাওয়াতী সমাবেশে উপস্থিত হওয়া এবং
ঈদগাহ হতে দূরে অবস্থান করা।
হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা আমাদের যুবতীদের ঈদের সালাতে
বের হতে নিষেধ করতাম। এক মহিলা বনূ কালাফের মহলে এসে পৌঁছলেন এবং তিনি তার বোন হতে
বর্ণনা করলেন। তার ভগ্নীপতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বারটি
গায্ওয়াহ (বড় যুদ্ধ) –এ অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বলেনঃ আমার বোনও তার সঙ্গে ছয়টি
গায্ওয়ায় শরীক ছিলেন। সেই বোন বলেনঃ আমরা আহতদের পরিচর্যা ও অসুস্থদের সেবা করতাম।
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমাদের কারো ওড়না
না থাকার কারণে বের না হলে কোন অসুবিধা আছে কি? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার সাথীর ওড়না তাকে পরিয়ে দেবে, যাতে সে ভাল মজলিস ও মু’মিনদের
দা’ওয়াতে শরীক হতে পারে। যখন উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) আসলেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ
আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এরূপ শুনেছেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ
আমার পিতা তাঁর জন্য কুরবান হোক। হ্যাঁ, তিনি এরূপ বলেছিলেন। নবীর কথা আলোচিত হলেই
তিনি বলতেন, “আমার পিতা তার জন্য কুরবান হোক।” আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, যুবতী, পর্দানশীন ও ঋতুবতী মহিলারা বের হবে এবং ভাল স্থানে
ও মু’মিনদের দা’ওয়াতে অংশ গ্রহণ করবে। অবশ্য ঋতুবতী মহিলা ঈদগাহ হতে দূরে থাকবে। হাফসা
(রাঃ) বলেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলাম ঋতুবতীও কি বেরুবে? তিনি বললেনঃ সে কি ‘আরাফাতে ও অমুক
অমুক স্থানে উপস্থিত হবে না?
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৪, ৯৩৫১, ৯৭১, ৯৭৪, ৯৮০, ৯৮১, ১৬৫২; মুসলিম ৮/১, হাঃ ৮৯০) (আ.প্র. ৩১৩, ই.ফা. ৩১৮)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৪, ৯৩৫১, ৯৭১, ৯৭৪, ৯৮০, ৯৮১, ১৬৫২; মুসলিম ৮/১, হাঃ ৮৯০) (আ.প্র. ৩১৩, ই.ফা. ৩১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৭. অধ্যায়ঃ
একই মাসে তিন হায়েয হলে। সম্ভাব্য হায়েয ও গর্ভধারণের ব্যাপারে স্ত্রীলোকের
কথা গ্রহণ যোগ্য।
কারণ আল্লাহ্ তা’আলা ঘোষণা করেছেনঃ “তাদের
পক্ষে বৈধ নয় গোপন রাখা যা আল্লাহ্ তাদের জরাযুতে সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আল-বাক্বারা
২ : ২২৮) ।
আলী ও শুরাযহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। যদি মহিলার
নিজ পরিবারের দ্বীনদার কেউ সাক্ষ্য দেয় যে, এ মহিলা মাসে তিন বার ঋতুবতী হয়েছে, তবে
তার কথা গ্রহণযোগ্য হবে। ‘আত্বা (রহঃ) বলেনঃ মহিলার হায়েযের দিন গণনা করা হবে তার পূর্ব
স্বভাব অনুসারে। ইবরাহীম (রহঃ)-ও অনুরূপ বলেন। ‘আত্বা (রহঃ) আরো বলেনঃ হায়েয একদিন
হতে পনের দিন পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মু’তামির তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি
বলেছেনঃ আমি ইব্নু সীরীন (রহঃ)-কে এমন মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে তার পুর্ব
অভ্যাস অনুযায়ী হায়েযের পাঁচ দিন পূর্ণ হওয়ার পরও রক্ত দেখে? তিনি জবাবে বললেনঃ এ ব্যাপারে
মহিলারা ভাল জানে।
PMMRC হাদিস নং-৩৪৯
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিনতু আবূ হুবায়শ (রাঃ)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আমার ইস্তিহাযা হয়েছে
এবং পবিত্র হচ্ছি না। আমি কি সালাত পরিত্যাগ করবো? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ না, এ হলো রগ থেকে বের হওয়া রক্ত। তবে এরূপ হওয়ার পূর্বে যতদিন হায়েয
হতো সে কয়দিন সালাত অবশ্যই পরিত্যাগ করো। তারপর গোসল করে নিবে ও সালাত আদায় করবে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৫,
২২৮) (আ.প্র. ৩১৪, ই.ফা. ৩১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৮. অধ্যায়ঃ
হায়েযের দিন গুলো ছাড়া হলুদ এবং মেটে রং দেখা।
‘উম্মু
আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা মেটে ও হলুদ রং হায়েযের মধ্যে
গণ্য করতাম না।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৬,
আ.প্র. ৩১৫, ই.ফা. ৩২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৯. অধ্যায়ঃ
ত্বওয়াফে যিয়ারাতের পর স্ত্রীলোকের হায়েয শুরু হওয়া।
PMMRC হাদিস নং-৩৫১
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল! সফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইয়ের হায়েয
শুরু হয়েছে। তিনি বললেনঃ সে তো আমাদেরকে আটকিয়ে রাখবে। সে কি তোমাদের সঙ্গে তাওয়াফে-যিয়ারত
করেনি? তাঁরা জবাব দিলেন, হ্যাঁ করেছেন। তিনি বললেনঃ তা হলে বের হও।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৮,
২৯৪), (আ.প্র. ৩১৭, ই.ফা. ৩২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আবদুল্লাহ ইব্নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ (তাওয়াফে যিয়ারতের পর) মহিলার
হায়েয হলে তার চলে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩২৯,
১৭৫৫, ১৭৬০) (আ.প্র. ৩১৮, ই.ফা. ৩২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৫৩
ইব্নু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এর পূর্বে ইব্নু উমার (রাঃ) বলতেনঃ সে যেতে
পারবে না। তারপর তাঁকে বলতে শুনেছি যে, সে যেতে পারে। কারণ, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জন্য (যাওয়ার) অনুমতি দিয়েছিলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩৩০,
১৭৬১ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ৩১৮ শেষাংশ, ই.ফা. ৩২৩ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩০. অধ্যায়ঃ
নিফাস অবস্থায় মৃত স্ত্রীলোকের জানাযার নামায ও তার পদ্ধতি।
PMMRC হাদিস নং-৩৫৪
সামুরাহ ইব্নু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একজন প্রসূতি মহিলা মারা গেলে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযার সালাত আদায় করলেন। সালাতে তিনি মহিলার
দেহের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩৩২, ১৩৩১, ১৩৩২ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ৩২০, ই.ফা. ৩২৫)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩৩২, ১৩৩১, ১৩৩২ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ৩২০, ই.ফা. ৩২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩১. অধ্যায়ঃ
PMMRC হাদিস নং-৩৫৫
‘আবদুল্লাহ ইব্নু শাদ্দাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আমার খালা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী মাইমূনা (রাঃ) হতে শুনেছি যে, তিনি হায়েয অবস্থায়
সালাত আদায় করতেন না; তখন তিনি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর সালাতের সিজদার জায়গায় সোজাসুজি শুয়ে থাকতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তার চাটাইয়ে সালাত আদায় করতেন। সিজদা করার সময় তাঁর কাপড়ের অংশ আমার
(মাইমূনাহ্র) শরীর স্পর্শ করতো।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩৩৩, ৩৭৯, ৩৮১, ৫১৭, ৫১৮ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ৩২১, ই.ফা. ৩২৬)
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী- হাদিস নং-৩৩৩, ৩৭৯, ৩৮১, ৫১৭, ৫১৮ দ্রষ্টব্য) (আ.প্র. ৩২১, ই.ফা. ৩২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
নিফাস ওয়ালী মহিলা সলাত
ও সওম হতে বিরত থাকার সময়সীমা
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে নিফাসের (প্রসবোত্তরস্রাব)
জন্য (দীর্ঘ মেয়াদ হিসাবে) মেয়েরা চল্লিশ দিন (সলাত ও সওম ইত্যাদি হতে) অপেক্ষমান থাকতেন।’
শব্দ বিন্যাস আবূ দাঊদের। [১]
আবূ
দাঊদের শব্দে আরও আছে, ‘নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিফাসের অবস্থায় সলাত
কাযা পড়বার আদেশ তাদের করতেন না।’ হাকিম হাদীসটি সহীহ বলেছেন। [২]
[১]
আবূ দাঊদ ৩১১; তিরমিযী ১৩৯; ইবনু মাজাহ ৬৪৮; আহমাদ ৬/৩০০; ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাদীসটি
‘গরীব’। ইমাম বাইহাকী তাঁর সুনান আল কুবরা গ্রন্থে (১/৩৪১) বলেন, হাদীসটি মাহফূয বা
সংরক্ষিত নয়। ইবনুল কীসরানী তাঁর মা‘রিফাতুত তাযকিরাহ (১৮০) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে
কাসীর বিন যিয়াদ রয়েছে, সে কিছু হাদীস এলোমেলোভাবে বর্ণনা করেছেন। পক্ষান্তরে শাইখ
আলবানী সহীহ আবূ দাঊদ (৩১১) গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী
তাঁর গায়াতুল মাকসূদ (৩/১৩১) গ্রন্থে ও বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম (১৪৫) গ্রন্থে
এর শাহেদ থাকার কথা বলেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম তাঁর যাদুল মা‘আদ (৪/৩৬৯) গ্রন্থে হাদীসটিকে
সহীহ বলেছেন।
শাইখ আলবানী ইরওয়াউল গালীল (২০১) গ্রন্থে হাদীসটিকে
হাসান বলেছেন। ইমাম বুখারী তাঁর ইলালুল কাবীর (১২৬) গ্রন্থে বলেন, আশাকরি হাদীসটি মাহফূয।
[২] যঈফ। আবূ দাঊদ ৩১২; হা. ১৭৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হায়েয ওয়ালী মহিলার দেহের
যতটুকু বৈধ
PMMRC হাদিস নং-৩৫৭
মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে
জিজ্ঞেস করলেন, ‘হায়িয অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে কি কি কাজ হালাল বা বৈধ?’ তিনি বললেন,
‘পাজামা বা লুঙ্গির মধ্যে শরীরের যে অংশটুকু থাকে তা বাদে সবকিছু বৈধ।’ আবূ দাঊদ এটিকে
য‘ঈফ (দুর্বল) রূপে বর্ণনা করেছেন। [১]
[১] আবূ দাঊদ ২১৩। বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম
(১৪৫) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে সা‘দ বিন আবদুল্লাহ আল আগত্বাস রয়েছে যাকে হাদীস বর্ণনায়
লীন (অপরিপক্ক) বলা হয়েছে, অপর একজন বর্ণনাকারী বাকিয়্যাহ ইবনুল ওয়ালীদ, সে আন আন করে
হাদীস বর্ণনাকারী মুদাল্লিস। এর সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। তবে আবদুল্লাহ সাদ আল আসনারী
থেকে হাসান সনদে এর শাহেদ হাদীস রয়েছে। শাইখ আলবানী উক্ত আবদুল্লাহ সাদ আল আসনারী বর্ণিত
হাদীসটিকে সহীহ আবূ দাঊদ (২১২) গ্রন্থে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
ঋতুমতী মহিলার সাথে যৌন
সঙ্গম করার কাফ্ফারা (প্রায়শ্চিত্ত)
PMMRC হাদিস নং-৩৫৮
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর হায়িয অবস্থায় তার সাথে যৌন
মিলন করবে তার বিধান সম্বন্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন , ‘ঐ
ব্যক্তি যেন এক দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) বা অর্ধ দিনার খয়রাত (দান) করে।’ ইবনু হিব্বান
ও হাকিম হাদীসটিকে সহীহ্ বলেছেন। আর অন্য মুহাদ্দিসগণ – এর মাওকুফ হওয়াকে প্রাধান্য
দিয়েছেন। [১]
[১] হাফেজ ইবনু হাজার যে শব্দে উল্লেখ করেছেন কেবল
সেই শব্দে হাদীসটি মারফূ‘ হিসেবে সহীহ। আবূ দাঊদ ২৬৪; নাসায়ী ১৫৩; তিরমিযী ১৩৬; ইবনু
মাজাহ ৬৪; আহমাদ ১৭২; হা. ১৭৩
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ঋতুমতী মহিলার যে সকল
কাজ বৈধ ও অবৈধ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহুদী লোকেরা তাদের হায়িযা স্ত্রীর সাথে পানাহার করা পরিত্যাগ করতো।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তোমরা (কেবল) যৌন মিলন ছাড়া (যথারীতি)
তাদের সঙ্গে সবই করবে।’ [১]
[১] মুসলিম ৩০২; শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। আনাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, ইহুদীদের নারীরা যখন হায়েযা হয়ে পড়ত তখন তারা তাদের সাথে পানাহার করত
না, তাদের সাথে একঘরে বসবাস করতো। সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে (আরবী) “তারা তোমার কাছে হায়িয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলে
দাও যে, তা হল নাপাক। সুতরাং হায়িয অবস্থায় তোমরা মহিলাদের হতে পৃথক থাক...আয়াতটি নাযিল
হয়। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন , “তোমরা তোমাদের
স্রীদের সাথে সঙ্গম ব্যতীত সবকিছুই করবে । এ কথাটি ইহুদী্দের কাছে পৌঁছে গেল। ফলে তারা
বলল যে, এ লোকটির উদ্দেশ্য কি যে, আমরা যা করি তার বিপরীত করে বসে। অতঃপর (তাদের এ
কথা শুনে) উসাইদ বিন হুযাইর (রাঃ) এবং ইবাদ বিন বাশার (রাঃ) এসে রাসুল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইহুদী্রা এমন এমন কথা বলেছে; তাহলে আমরা কি আমাদের স্ত্রীদের সাথে এমতাবস্থায় সঙ্গম
করবো? তাদের উভয়ের এ কথা শ্রবণ করতঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চেহারা
পরিবর্তন হয়ে গেল এমনটি আমরা ধারনা করলাম যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাদের উপর রাগান্বিত হয়েছেন। তারপর তারা দুজনে সেখান থেকে বের হয়ে গেল। ইতোমধ্যেই রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য দুধ হাদিয়া আসলো । তিনি তাদেরকে ডেকে পাঠালেন
। (তারা এলে) তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন তখন তারা বুঝল যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাদের উপর রাগ করেন নি ।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৬০
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হায়িয চলাকালীন
সময়ে আমাকে ইযার (লুঙ্গি বিশেষ) পরতে বলতেন। আমি তাই করতাম তারপর তিনি আমার সাথে হায়িয
অবস্থায় (যৌন মিলন ব্যতীত) প্রেমময় আলিঙ্গন করতেন।’ [১]
[১] বুখারী ৩০০; মুসলিম ২৯৩ শব্দ বিন্যাস বুখারীর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
যে মহিলার মাসিক নিয়মিত
হয় না তার বিধান
PMMRC হাদিস নং-৩৬১
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুবায়সের কন্যা ফাতিমাহ ‘ইস্তিহাযা’ (প্রদর রোগ)
নামক রোগে ভুগতেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন,
‘অবশ্য হায়িযের রক্ত কালো বর্ণের, তা (সহজেই) চেনা যায়। যখন এমন রক্ত দেখতে পাবে তখন
সলাত বন্ধ করে দিবে। তারপর যখন অন্য রক্ত সেখা দেয় তখন উযু করে সলাত আদায় কর।’ আবূ
দাঊদ, নাসায়ী। ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন; আবূ হাতিম এটিকে মুন্কার
হাদীসের মধ্যে গণ্য করেছেন। [১]
[১] আবূ দাঊদ ২৮৬, না, ১৮৫ ইবনু হিব্বান ১৩৪৮; হাকিম
১৭৪; হাদীসটিকে ইবনু হিব্বান ব্যতীত সকলেই (আরবী) “এটাতো এক শিরা থেকে বয়ে আসা রক্ত”
কথাটি বৃদ্ধি করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিহিত কাপড়ের ওপরে ঋতুবতী
মহিলার সাথে মেলামেশা করা।
PMMRC হাদিস নং-৩৬২
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুবতী হয়ে পড়ত তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর নির্দেশে সে পরিহিত কাপড় ভাল করে বেঁধে নিত। অতঃপর রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তার সাথে মেলামেশা করতেন। (ই.ফা. ৫৭০, ই.সে. ৫৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুবতী হয়ে পড়ত তখন রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তার হায়িয আসার স্থানে তাকে শক্ত করে কাপড় বেঁধে নেয়ার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর তার সাথে
মেলামেশা করতেন। তিনি [আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেন, তোমাদের মধ্যে কে তার যৌনকামনা সেরূপ নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সক্ষম-রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেরূপ যৌন কামনা নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সক্ষম ছিলেন? (ই.ফা. ৫৭১, ই.সে ৫৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৬৪
মাইমুনাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহধর্মিণীদের সাথে পরিহিত
কাপড়ের উপর ঋতুর অবস্থায় মেলামেশা করতেন। (ই.ফা. ৫৭২, ই.সে. ৫৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩২. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী
মহিলার সাথে একই চাদরের নীচে শোয়া
PMMRC হাদিস নং-৩৬৫
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব থেকে বর্ণিতঃ
আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী মাইমূনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ
আমি ঋতুবতী অবস্থায় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সঙ্গে একই
বিছানায় শুইতেন। এ সময় আমার ও তাঁর মাঝে কেবলমাত্র একখানা কাপড়ের আড়াল থাকত। (ই.ফা
৫৭৩, ই.সে. ৫৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৬৬
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা আমি ও রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রেখাযুক্ত চাদরের
নীচে শুয়েছিলাম। ইতোমধ্যেই আমার হায়িয এলো। আমি চুপিসারে উঠে গিয়ে আমার হায়িয-এর কাপড়
পরে নিলাম। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ‘তোমার কি
হায়িয এসেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি আমাকে (কাছে) ডাকলেন। অতঃপর আমি তাঁর চাদরটির
নীচে শুইলাম। ’
রাবী বলেন, তিনি (উম্মু সালামাহ) ও রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) নাপাকির পবিত্র হওয়ার গোসল করতেন। (ই.ফা. ৫৭৪, ই.সে. ৫৯০)
রাবী বলেন, তিনি (উম্মু সালামাহ) ও রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) নাপাকির পবিত্র হওয়ার গোসল করতেন। (ই.ফা. ৫৭৪, ই.সে. ৫৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৩. অধ্যায়ঃ
ঋতুবতী
মহিলাদের জন্যে তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া, তার চুল আঁচড়িয়ে দেয়া জায়িয; তার উচ্ছিষ্ট
পবিত্র; তার কোলে মাথা রেখে হেলান দেয়া ও সেখানে কুরআন পাঠ করা জায়িয।
PMMRC হাদিস নং-৩৬৭
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলূল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ই’তিকাফ করতেন তখন আমার দিকে তাঁর মাথা ঝুঁকিয়ে
দিতেন। আমি তা আঁচড়ে দিতাম। (ই’তিকাফ কালে) তিনি ঘরে প্রবেশ করতেন না প্রাকৃতিক প্রয়োজন
(যেমন প্রস্রাব পায়খানা) ছাড়া। (ই.ফা. ৫৭৫, ই.সে. ৫৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ(রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, (ই’তিকাফের সময়) আমি যখন প্রাকৃতিক প্রয়োজনে ঘরে প্রবেশ করতাম। ঘরে কোন রোগী
থাকে তাহলেও তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস না করেই চলে যেতাম। ই’তিকাফের সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদ থেকে আমার দিকে মাথা এগিয়ে দিতেন, আর আমি তাঁর চুল আঁচড়ে
দিতাম। ই’তিকাফ থাকাবস্থায় তিনি (প্রাকৃতিক) কোন প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না।
ইবনু রুমহ্ বলেছেন: যখন তাঁরা ইতিকাফের অবস্থায় থাকতেন, প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। (ই.ফা. ৫৭৬, ই.সে. ৫৯২)
ইবনু রুমহ্ বলেছেন: যখন তাঁরা ইতিকাফের অবস্থায় থাকতেন, প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। (ই.ফা. ৫৭৬, ই.সে. ৫৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৬৯
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফে থাকাবস্থায় (অধিকাংশ
সময়) মাসজিদ থেকে তাঁর মাথা আমার দিকে বের করে দিতেন। আমি ঋতুবতী অবস্থায় তা ধুয়ে দিতাম।
(ই.ফা. ৫৭৭, ই.সে. ৫৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৭০
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন।
আমার হুজরায় থেকে ঋতুবতী অবস্থায় আমি তাঁর মাথা আঁচড়ে দিতাম। (ই.ফা. ৫৭৮, ই.সে. ৫৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৭১
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাথা
ধুয়ে দিতাম। (ই.ফা. ৫৭৯, ই.সে. ৫৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৭২
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, “মাসজিদ থেকে
আমার জায়নামাযটি (হাত বাড়িয়ে) নিয়ে এসো”। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি তো ঋতুবতী। তিনি
বললেনঃ তোমার হায়িয তো তোমার হাতে নয়। (ই.ফা. ৫৮০, ই.সে. ৫৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদা রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদ থেকে জায়নামায
(হাত বাড়িয়ে) তুলে নিয়ে আসতে আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম যে, আমি তো ঋতুবতী। তিনি
বললেন, তুমি তো আমার কাছে নিয়ে এসো। কারণ হায়িয তোমার হাতে নেই (লেগে যায়নি)। ই.ফা.
৫৮১, ই.সে. ৫৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই’তিকাফরত অবস্থায় মাসজিদ
থেকে বললেন, হে ‘আয়িশাহ! আমাকে কাপড়টা এগিয়ে দাও। তিনি (‘আয়িশাহ (রাঃ)] বলেন, আমি যে
ঋতুবতী! জবাবে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঋতু তো তোমার
হাতে লাগে নাই। তারপর আমি তা এনে দিলাম। (ই.ফা. ৫৮২, ই.সে. ৫৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৭৫
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় পানি পান করতাম এবং পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে অবশিষ্টটুকু প্রদান করলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়ে পান করতাম তিনিও পাত্রের সে স্থানে
মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আবার আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় খেয়ে তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে দিলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়েছিলাম তিনি সেখানে মুখ লাগিয়ে খেতেন। তবে
যুহায়র কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে “পান করার” উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৫৮৩, ই.সে.৫৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, (অধিকাংশ সময়) রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার হায়িয অবস্থায়
আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন পাঠ করতেন। (ই.ফা. ৫৮৪, ই.সে. ৬০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৭৭
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহূদীগণ
তাদের মহিলাদের হায়িজ হলে তার সাথে এক সঙ্গে খাবার খেত না এবং এক ঘরে বাস করত না। সাহাবায়ে
কিরাম এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করলেন।
তখন আল্লাহ্ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করলেন, “তারা তোমার কাছে হায়িয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।
বলে দাও যে, তা হলো নাপাক। সুতরাং হায়িয অবস্থায় তোমরা মহিলাদের থেকে পৃথক থাক....”(সূরাহ
আল বাকারাহ্ ২ : ২২২)। এরপর রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
তোমরা (সে সময় তাদের সাথে) শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ কর। এ খবর ইয়াহূদীদের কাছে
পৌছলে তারা বলল, এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করতে চায়। অতঃপর উসায়দ ইবনু
হুযায়র (রাঃ) ও ‘আব্বাস ইবনু বিশর (রাঃ) এসে বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ্! ইয়াহূদীরা এমন
এমন বলছে। আমরা কি তাদের সাথে (হায়িয অবস্থায়) সহবাস করব না? রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চেহারা মুবারক বিবর্ণ হয়ে গেল। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি
তাদের উপর ভীষণ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা (উভয়ে) বেরিয়ে গেল। ইতোমধ্যেই রসূলূল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে দুধ হাদিয়া এলো। তিনি তাদেরকে ডেকে আনার
জন্যে লোক পাঠালেন। (তারা এলে) তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন। তখন তারা বুঝল যে, তিনি
তাদের উপর রাগ করেননি। (ই.ফা. ৫৮৫, ই.সে. ৬০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পুরুষ ও মহিলার বীর্যের
বর্ণনা এবং সন্তান যে উভয়ের বীর্য ও শুক্র থেকে সৃষ্টি হয় তার বর্ণনা
রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুক্তিপ্রাপ্ত গোলাম
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একবার রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম।
ইতোমধ্যেই ইয়াহূদীদের এক ‘আলিম এসে বলল, আসসালামু ‘আলাইকা ইয়া মুহাম্মাদ! এরপর আমি
তাকে এমন এক ধাক্কা মারলাম যে, সে প্রায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো! সে বলল, তুমি আমাকে
ধাক্কা মারলে কেন? আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ্! বলতে পার না। ইয়াহূদী বলল, আমরা তাঁকে
তাঁর পরিবার-পরিজন যে নাম রেখেছে সে নামেই ডাকি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার নাম মুহাম্মাদ। আমার পরিবারের লোকই আমার এ নাম রেখেছে। এরপর
ইয়াহূদী বলল, আমি আপনাকে (কয়েকটি কথা) জিজ্ঞেস করতে এসেছি। রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তোমার কী লাভ হবে, যদি আমি তোমাকে কিছু বলি? সে বলল,
আমি আমার কান পেতে শুনব। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
কাছে যে খড়িটি ছিল তা দিয়ে মাটিতে আঁকাঝোকা দাগ কাটতে ছিলেন। তারপর বললেন, জিজ্ঞেস
কর। ইয়াহূদী বলল, যেদিন এ জমিন ও আকাশমন্ডলী পাল্টে গিয়ে অন্য জমিন ও আকাশমন্ডলীতে
পরিণত হবে (অর্থাৎ কিয়ামাত হবে) সেদিন লোকজন কোথায় থাকবে? রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তারা সেদিন পুলসিরাতের কাছে অন্ধকারে থাকবে। সে বলল, কে
সর্বপ্রথম (তা পার হবার) অনুমতি লাভ করবে? তিনি বললেন, দরিদ্র মুহাজিরগণ! ইয়াহূদী বলল,
জান্নাতে যখন তারা প্রবেশ করবে তখন তাদের তোহফা কি হবে? তিনি বললেন, মাছের কলিজার টুকরা।
সে বলল, এরপর তাদের দুপুরের খাদ্য কি হবে? তিনি বললেন, তাদের জন্য জান্নাতের ষাঁড় যাবাহ
করা হবে যা জান্নাতের আশে পাশে চড়ে বেড়ায়। সে বলল, এরপর তাদের পানীয় কি হবে? তিনি বললেন,
সেখানকার একটি ঝর্ণার পানি যার নাম ‘সালসাবীল’। সে বলল, আপনি ঠিক বলেছেন। সে আরো বলল
যে, আমি আপনার কাছে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছি যা নবী ছাড়া পৃথিবীর
কোন অধিবাসী জানে না অথবা একজন কি দুজন লোক ছাড়া। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাকে তা বলে
দেই তবে তোমার কি কোন উপকার হবে? সে বলল, আমি আমার কান পেতে শুনব। সে বলল, আমি আপনাকে
সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছি। তিনি বললেন, পুরুষের বীর্য সাদা এবং মেয়েলোকের
বীর্য হলুদ। যখন উভয়টি একত্রিত হয়ে যায় এবং পুরুষের বীর্য মেয়েলোকের বীর্যের উপর প্রাধান্য
লাভ করে তখন আল্লাহর হুকুমে পুত্র সন্তান হয়। আর যখন মেয়েলোকের বীর্য পুরুষের বীর্যের
ওপর প্রাধান্য লাভ করে তখন আল্লাহর হুকুমে কন্যা সন্তান হয়্।
ইয়াহূদী
বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন এবং নিশ্চয়ই্ আপনি নাবী। এরপর সে চলে গেল। তখন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ লোক আমার কাছে যা জিজ্ঞেস করছে, ইতোপূর্বে
আমার সে সম্পর্কে কোন জ্ঞানই ছিল না। আল্লাহ্ তা‘আলা এক্ষনে আমাকে তা জানিয়ে দিলেন।
(ই.ফা. ৬০৭, ই.সে. ৬২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মু‘আবিয়াহ্ ইবনু সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি তার বর্ণনাতে এতটুকু অতিরিক্ত বলেছেন যে, আমি
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট বসে ছিলাম। আর তিনি বললেনঃমাছের
কলিজা‘র টুকরা আর তিনি ‘আয্কারা’ ও ‘আ-নাসা’ শব্দ দুটির একবচন রূপ ব্যবহার করেছেন,
দ্বিবচন ব্যবহার করেননি। (ই.ফা. ৬০৮, ই.সে. ৬২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হায়িয থেকে গোসলকারিনীর
জন্যে রক্তের স্থানে (লজ্জাস্থানে) সুগন্ধযুক্ত কাপড়ের টুকরা বা তুলা ব্যবহার করা মুস্তাহাব
PMMRC হাদিস নং-৩৮০
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল যে, কিভাবে
সে তাঁর হায়িয থেকে গোসল করবে? হাদীসের রাবী বলেন, ‘আয়িশাহ(রাঃ) উল্লেখ করেন যে, রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভদ্রমহিলাকে সে কিভাবে গোসল করবে, তা শিখিয়ে দিলেন
তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা ব্যবহার করবে এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। সে
বলল, এ সুগন্ধযুক্ত কাপড় দ্বারা আমি কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বললেন, তা দ্বারা
পবিত্রতা অর্জন করবে। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ্! (এত সোজা কথাও বুঝ না)। এরপর তিনি
(মুখ) সরিয়ে নিলেন। (রাবী বলেন) সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ নিজ মুখের উপর হাত দিয়ে
আমাদেরকে ইশারা করে দেখালেন। ‘আয়িশাহ(রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে আমার দিকে টেনে আনলাম। আর
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বুঝাতে চাচ্ছেন তা আমি বুঝে ফেললাম।
অতঃপর আমি মহিলাটিকে বললাম, তুমি তা (সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা) রক্তের স্থানে (লজ্জাস্থানে)
বুলিয়ে নিবে। ইবনু ‘উমার তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, তিনি বলেনঃ আমি বললাম, রক্তের
স্থানে সুগন্ধযুক্ত কাপড়টি বুলিয়ে দিন। (ই.ফা. ৬৩৯, ই.সে. ৬৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮১
‘আয়িশাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল যে, আমি তুহ্র
এর (হায়িয থেকে পবিত্রতার) সময় কিভাবে গোসল করব? তিনি বললেন, এক টুকরো সুগন্ধযুক্ত
কাপড় বা তুলা নিবে তারপর তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। এরপর সুফ্ইয়ানের হাদীসের
অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৬৪০, ই.সে. ৬৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
আসমা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কাছে হায়িযের গোসল সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ পানি এবং বরইয়ের পাতা নিয়ে সুন্দর ভাবে পবিত্রতা
অর্জন করবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে দিয়ে ভালভাবে নাড়াচড়া করবে যাতে পানি সমস্ত
চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তারপর তার উপর পানি ঢেলে দিবে। তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড়
নিয়ে তার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। আসমা বলল, তা দিয়ে সে কিভাবে পবিত্রতা অর্জন
করবে। অতঃপর ‘আয়িশা (রাঃ) তাকে যেন চুপি চুপি বলে দিলেন, রক্ত বের হবার জায়গায় তা বুলিয়ে
দিবে। সে অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেন, পানি নিয়ে তার দ্বারা
সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে। তার মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভাল করে নাড়াচড়া করবে যাতে
চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন,
আনসারদের মহিলারা কত ভাল ! লজ্জা তাদেরকে দীন-এর জ্ঞান থেকে ফিরিয়ে রাখে না। (ই.ফা.
৬৪১, ই.সে. ৬৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮৩
শু’বাহ্ থেকে বর্ণিতঃ
অবিকল
বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সুবহানাল্লাহ!
তা দ্বারা পবিত্রতা লাভ করবে। অতঃপর তিনি আড়াল করলেন। (ই.ফা. ৬৪২, ই.সে. ৬৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮৪
‘আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আসমা বিনতু শাকাল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে
বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের কেউ যখন হায়িয থেকে পবিত্র হবে তখন সে কিভাবে গোসল করবে?
এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে হাদীসটির মধ্যে অপবিত্রতার গোসলের
কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৬৪৩, ই.সে. ৬৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো
হারাম
PMMRC হাদিস নং-৩৮৫
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী(রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলূল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন পুরুষ অপর পুরুষের লজ্জাস্থানের দিকে
তাকাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলা লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না; কোন পুরুষ অপর পুরুষের
সাথে এক কাপড়ের নীচে (উলঙ্গ অবস্থায়) ঘুমাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই
কাপড়ের নীচে ঘুমাবে না। (১)
(ই.ফা.
৬৫৯, ই.সে. ৬৭৪)
[১] “কোন পুরুষ অপর পুরুষের
সাথে এক কাপড়ের নীচে ঘুমাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই কাপড়ের নীচে ঘুমাবে
না ।” এর দ্বারা উদ্দেশ্য উভয়ের উলঙ্গ অবস্থায় যখন কোন প্রকার কাপড় থাকবে না । (নাবাবী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮৬
যাহ্হাক ইবনু ‘উসমান (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁরা উভয়েই (আরবি) এর স্থলে (আরবি) এর উল্লেখ করেছেন।
অর্থাৎ- উলঙ্গ অবস্থায় পুরুষ পুরুষের দিকে এবং নারী নারীর দিকে তাকাতে পারবেনা এবং
একই বিছানায় ঘুমাবে না। (ই.ফা. ৬৬০, ই.সে. ৬৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৪. অধ্যায়ঃ
মানবীয় ফিত্রাহ্-এর (স্বভাবের)
বিবরণ
PMMRC হাদিস নং-৩৮৭
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফিত্রাহ্ (স্বভাব) পাঁচটি অথবা বলেছেন, পাঁচটি কাজ
হলো ফিত্রাহ্-এর অন্তর্ভুক্ত- খাতনা করা, ক্ষুর দ্বারা নাভীর নিচের লোম পরিষ্কার
করা, নখ কাটা, বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং গোঁফ কাটা। (ই.ফা. ৪৮৭, ই.সে. ৫০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮৮
.আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পাঁচটি কাজ ফিত্রাহ্ বা (সুষ্ঠু স্বভাব) খাতনা করা,
নাভীর নিচের লোম পরিষ্কার করে ফেলা, গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা এবং বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা।
(ই.ফা. ৪৮৯, ই.সে. ৫০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৮৯
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
গোঁফ
ছাঁটা, নখ কাটা এবং বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নীচের লোম ছেঁচে ফেলার জন্যে আমাদেরকে
সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছিল যে আমরা তা চল্লিশ দিনের অধিক দেরি না করি। (ই.ফা.
৪৯০, ই.সে. ৫০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা গোঁফ কেটে ফেল (অর্থাৎ ঠোটের ওপর থেকে
কেটে দেয়া) এবং দাড়ি ছেড়ে দাও অর্থাৎ বড় হতে দাও। (ই.ফা. ৪৯১, ই.সে. ৫০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৯১
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোঁফ ছোট করতে এবং দাড়ি বড় করে রাখতে আদেশ করেছেন।
(ই.ফা. ৪৯২, ই.সে. ৫০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৯২
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধাচরণ কর-মোচ কেটে
ফেল এবং দাড়ি লম্বা কর। (ই.ফা. ৪৯৩, ই.সে. ৫০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৯৩
আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা মোচ কেটে ফেলে এবং দাড়ি লম্বা করে অগ্নি পূজকদের
বিরুদ্ধাচরণ কর। (ই.ফা. ৪৯৪, ই.সে. ৫১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৯৪
‘আয়িশাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, দশটি কাজ ফিতরাতের অন্তর্ভুক্তঃ মোচ খাটো
করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দিয়ে ঝাড়া, নখ কাটা এবং আঙ্গুলের গিরাসমূহ
ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভীর নীচের পশম মুন্ডন করা এবং পানি দ্বারা ইস্তিঞ্জা
করা। যাকারিয়্যা বলেন, হাদীসের রাবী মুস‘আব বলেন, দশমটির কথা আমি ভুলে গিয়েছি। সম্ভবতঃ
সেটি হবে কুলি করা। এ হাদীসের বর্ণনায় কুতাইবাহ আরো একটি বাক্য বাড়াল যে, ওয়াকী’ বলেন,
(আরবী) অর্থাৎ ইস্তিঞ্জা করা। (ই.ফা. ৪৯৫, ই.সে. ৫১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-৩৯৫
আবূ কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই
সানাদে মুস’আব ইবনু শাইবাহ্(রহঃ)-এর পুর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে
তার বর্ণনায় এ কথাও আছে যে, তাঁর পিতা বলেছেনঃ আমি দশম বস্তুটি ভুলে গেছি। (ই.ফা.৪৯৬,
ই.সে. ৫১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মাযীর বিবরণ
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বললেন, আমার বেশি বেশি মাযী বের হত। আমি এ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর কাছে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করতাম। কারণ তাঁর কন্যা ছিল আমার স্ত্রী। তাই
আমি মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে (এ সম্পর্কে জানতে) বললাম, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি বললেন, এ তার পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে এবং ওযূ
করে নিবে। (ই.ফা. ৫৮৬, ই.সে. ৬০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে মাযী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে
লজ্জাবোধ করছিলাম ফাতিমার কারণে। তাই আমি মিকদাদকে বললাম, তখন তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে
জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তাতে (মাযী বের হলে) শুধু ওযূ করতে হয়। (ই.ফা. ৫৮৭, ই.সে.
৬০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ‘আলী আবূ তালিব (রাঃ) বলেন, আমি একবার মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পাঠালাম। তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলেন যে, কোন লোকের মাযী বের হলে সে তখন কি করবে? তিনি বললেনঃপুরুষাঙ্গ
ধুয়ে ফেলবে এবং ওযূ করবে। (ই.ফা. ৫৮৮, ই.সে. ৬০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ঘুম থেকে জেগে মুখ এবং
দু’হাত ধুয়ে নিবে
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে (ঘুম থেকে) জেগে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারলেন
(প্রস্রাব-পায়খানা), তারপর তাঁর মুখমন্ডল এবং উভয় হাত ধুলেন। এরপর ঘুমিয়ে গেলেন।
(ই.ফা.
৫৮৯, ই.সে. ৬০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
নাপাক অবস্থায় ঘুমানো
জায়িয; তবে খাদ্যগ্রহণ, শয়নকালে অথবা স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করতে চাইলে তার জন্যে ওযূ
করা এবং লজ্জাস্থান ধুয়ে নেয়া মুস্তাহাব
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলূল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাপাকী অবস্থায় যখন ঘুমাতে ইচ্ছা করতেন তখন ঘুমাবার
আগে সলাতের জন্য যেমন ওযূ করতে হয় তেমন ওযূ করতেন। (ই.ফা. ৫৯০, ই.সে. ৬০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নাপাক থাকতেন তখন কিছু খেতে
অথবা ঘুমানো ইচ্ছা করলে ওযূ করে নিতেন যেমন, সলাতের ওযূ করতেন। (ই.ফা. ৫৯১, ই.সে. ৬০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না, ইবনু বাশশার ও ‘উবাইদুল্লাহ্ ইবনু মু‘আয
(রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
উক্ত
সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
ইবনু
আল মুসান্না তাঁর হাদীসে বলেছেন: আমাকে হাকাম বর্ণনা করে বলেন যে, আমি ইবরাহীমকে এ
হাদীস বলতে শুনেছি। ( ই.ফা. ৫৯২, ই.সে. ৬০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন
‘উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের
কেউ নাপাক অবস্থায় কি ঘুমাতে পারবে? তিনি বললেনঃহ্যাঁ, যখন সে ওযূ করে নিবে।
(ই.ফা.
৫৯৩, ই.সে. ৬০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার
(রাঃ) একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে ফাতাওয়া জিজ্ঞেস করলেন
যে, আমাদের কেউ কি নাপাক অবস্থায় ঘুমাতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, সে যেন ওযূ করে
তারপর ঘুমায়। এরপর যখন ইচ্ছা গোসল করে নেয়। (ই.ফা. ৫৯৪, ই.সে. ৬১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একবার রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললেন,
তিনি যদি রাতে (স্ত্রী সহবাসকালে) নাপাক হন (তাহলে কি করবেন)। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, তুমি (তখন) ওযূ করবে এবং তোমার লজ্জাস্থান ধুয়ে
ফেলবে তারপর ঘুমাবে। (ই.ফা. ৫৯৫, ই.সে. ৬১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ কায়স
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিতর সম্বন্ধে ‘আয়িশাহ
(রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি (তৎবিষয়ে) হাদীস বর্ণনা করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি
নাপাকির সময় কী করতেন, তিনি কি ঘুমাবার আগে গোসল করতেন, না গোসল করার আগে ঘুমাতেন?
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)] বললেন, সবই করতেন। কখনো গোসল করে ঘুমাতেন আর কখনো ওযূ করে ঘুমিয়ে
পড়তেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা সে আল্লাহর যিনি সব কাজেই অবকাশ রেখেছেন।
(ই.ফা. ৫৯৬, ই.সে. ৬১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মহিলার মানী (বীর্য)
বের হলে তার উপর গোসল করা ওয়াজিব
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উম্মু সুলায়ম (রাঃ) যিনি ছিলেন (এ হাদীসের রাবী) ইসহাকের দাদী-একদা রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) তখন তাঁর নিকট
উপস্থিত ছিলেন-ইয়া রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!পুরুষ যেমন স্বপ্নে
দেখে, নারীও যদি তা দেখে, এমতাবস্থায় সে কি করবে? তখন আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, উম্মু সুলায়ম!
তুমি নারী জাতিকে অপমানিত করেছ। তোমার অকল্যাণ হোক (তার এ কথা ছিল ভাল উদ্দেশ্যে)।
অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশাহ(রাঃ) কে বললেন, বরং
তোমার অকল্যাণ হোক! [এরপর উম্মু সুলায়ম (রাঃ) এর জবাবে বললেন] হ্যাঁ, উম্মু সুলায়ম!
সে গোসল করে ফেলবে যখন ঐরূপ দেখবে। (ই.ফা. ৬০০, ই.সে, ৬১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু
সুলায়ম (রাঃ) বলেন, তিনি রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মহিলা
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন যে ঘুমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখতে পায়। রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মেয়েলোক যখন তেমনই দেখবে তখন সে গোসল করবে। উম্মু সালামাহ
(রাঃ) বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বললেন, এ রকমও কি হয়? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কেমন করে হয়? পুরুষের বীর্য
গাঢ়, সাদা আর মহিলাদের বীর্য পাতলা, হলুদ। দুয়ের মধ্যে থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায়
অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়। (ই.ফা. ৬০১, ই.সে. ৬১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ঐ মহিলা সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলেন, যে পুরুষ লোক ঘুমের মধ্যে যা দেখতে পায় সেও তাই। তখন রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃপুরুষের যা হয় (স্বপ্নদোষ) মহিলাদেরও এমন হলে সে গোসল করবে।
(ই.ফা.
৬০২, ই.সে. ৬১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, উম্মু সুলামাহ একদা রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট
এসে বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা‘আলা হক
কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মহিলাদের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন কি তার উপর গোসল করা
জরুরী? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃহ্যাঁ, যখন সে বীর্য
দেখবে। (এ কথা শুনে) উম্মু সালামা (রাঃ) বললেন, “ইয়া রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)! মহিলাদেরও কি স্বপ্নদোষ হয়”? তিনি বললেন, তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক!
তাহলে তার সন্তান কেমন করে তার সদৃশ হয়?
(ই.ফা. ৬০৩, ই.সে. ৬১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘উরওয়াহ্ থেকে বর্ণিতঃ
এ
সানাদে উপরোক্ত হাদীসের অর্থের অবিকল বর্ণিত আছে। তিনি আরো একটু বাড়িয়ে বলেন যে, তিনি
[উম্মু সালামা (রাঃ)] বললেন, তুমি নারী জাতিকে লজ্জিত করেছ। (ই.ফা. ৬০৪, ই.সে. ৬২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
উম্মুল মু‘মিনীন ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন যে, আবূ তালহার সন্তানদের মা উম্মু সুলায়ম একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে হিশামের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসটিতে
ব্যতিক্রম যা রয়েছে তা হল, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, “ছিঃ ছিঃ (অসন্তোষ প্রকাশক
শব্দ)! মেয়েলোক কি ঐরূপ দেখে?” (ই.ফা. ৬০৫, ই.সে. ৬২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক
মহিলা রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলল, মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ
হবে এবং সে বীর্যরস দেখতে পাবে তখন কি সে গোসল করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এরপর ‘আয়িশাহ
(রাঃ) মহিলাটিকে বললেন, তোমার উভয় হাত ধূলিময় হোক এবং তাতে অস্ত্রের খোঁচা লাগুক।
তিনি [‘আয়িশাহ (রাঃ)] বলেন, তারপর রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, ছেড়ে দাও ওকে (ভর্ৎসনা করো না) সন্তান মা-বাবার সদৃশের কারণেই হয়ে থাকে। যখন
স্ত্রীর বীর্য পুরুষের বীর্যের আগে জরায়ুতে প্রবেশ করে তখন সন্তানের আকৃতি তার মামাদের
মতই হয়। আর যখন পুরুষের বীর্য মেয়েলোকের বীর্যের উপর প্রাধান্য লাভ করে তখন তার আকৃতি
চাচাদের মতই হয়। (ই.ফা. ৬০৬, ই.সে. ৬২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল
করা জায়িয
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন, এগুলো আবূ হুরায়রা (রাঃ) মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে একটি হল,
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বানী ইসরাঈলগণ উলঙ্গ হয়ে গোসল
করত, একে ওপরের লজ্জাস্থানের দিকে দেখত। আর মূসা (‘আঃ) গোসল করতেন একাকী। তাই তারা
বলাবলি করত, আল্লাহর কসম মূসা আমাদের সাথে গোসল করে না কারণ তার একশিরা রোগ হয়েছে।
একবার তিনি গোসল করতে গিয়ে একটি পাথরের উপর তাঁর কাপড় রাখলেন। এরপর পাথরটি তাঁর কাপড়
নিয়ে দৌড়াতে লাগল। রাবী বলেন, মূসা (‘আঃ) তার পিছু পিছু ছুটলেন আর বলতে লাগলেন, পাথর!
আমার কাপড়, পাথর! আমার কাপড়। এমনিভাবে বনী ইসরাঈলগণ মূসা (‘আঃ)-এর লজ্জাস্থান দেখে
ফেলল এবং তারা বলল, আল্লাহর কসম মুসার তো কোন খুত নেই। এরপর পাথর দাঁড়িয়ে গেল এবং তাঁকে
দেখে নিল। রাবী বলেন, এরপর তিনি তাঁর কাপড় তুলে নিলেন এবং (রাগে) পাথরকে মারতে শুরু
করে দিলেন।
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! পাথরের ওপর মূসা (আঃ)- এর আঘাতের ছয়টি কি সাতটি চিহ্ন
রয়েছে। (ই.ফা. ৬৬১, ই.সে. ৬৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯.
অধ্যায়ঃ
লজ্জাস্থান ঢাকার ব্যাপারে
বিশেষভাবে সাবধানতা অবলম্বনের বর্ণনা
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন কা’বাহ্ তৈরি করা হচ্ছিল তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ও ‘আব্বাস (রাঃ) পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, পাথর বহনের সুবিধার্থে তোমার লুঙ্গি কাঁধের উপর তুলে
নাও। এরপর তিনি এরুপ করলেন। সাথে সাথেই তিনি (বেহুশ হয়ে) মাটিতে পড়ে গেলেন। আর তাঁর
উভয় চোখ আকাশের দিকে নিবদ্ধ হল। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, আমার লুঙ্গি , আমার লুঙ্গি।
এরপর তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল। ইবনু রাফি’ তার রিওয়াতে কাধের স্থলে ঘাড়ে উল্লেখ করেছেন।
(ই.ফা. ৬৬২, ই.সে. ৬৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে কা’বাহ্
মেরামতের জন্যে পাথর বয়ে নিচ্ছিলেন। আর তাঁর পরনের ছিল লুঙ্গি। এরপর তাঁর চাচা ‘আব্বাস
(রাঃ) তাঁকে বললেন, ভাতিজা; তোমার লুঙ্গি খুলে যদি কাঁধের উপর পাথরের নীচে রেখে নিতে
(তাহলে ভাল হত)। তিনি লুঙ্গি খুলে তাঁর কাঁধের উপর রাখলেন। সাথে সাথেই তিনি বেহুশ হয়ে
পড়ে গেলেন। যাবির (রাঃ) বলেন, সেদিনের পর থেকে আর কখনো তাঁকে উলঙ্গ দেখা যায়নি। (ই.ফা.
৬৬৩, ই.সে.৬৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি একটি ভারী পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আর তখন আমার পরনে ছিল একটা পাতলা লুঙ্গি।
তিনি বলেন, এরপর আমার লুঙ্গি খুলে গেল। পাথরটি তখন আমার কাছে ছিল। তাই আমি লুঙ্গি তুলে
নিতে পারলাম না। এমনিভাবে আমি পাথরটি যথাস্থানে নিয়ে গেলাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাপড়ের কাছে ফিরে গিয়ে তা নিয়ে এসো। আর কখনো উলঙ্গ
হয়ে চলবে না। (ই.ফা. ৬৬৪, ই.সে. ৬৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
প্রবন্ধের
লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের
Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির
লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ
উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের
আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে
ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে,
আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে
হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে
তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়,
তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস
করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ
ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও
একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি
ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে
বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১,হাদিস সম্ভার, হাদিস
নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল
আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
সকল বিষয় ৩০টির অধিক
হাদিস গ্রন্থ থেকে লিখিত। সহিহ বা জাল-জইফ
হাদিসগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। যারা আরবীতে লেখা পড়া করেছেন, ওয়াজ করে
বেড়ান, কেউ ইমামতি করেন, কেউ হাফেজ, কেউ মুফতি, কেউ আবার মাওলানা, আল্লামা, কেউ পির-অলি
ইত্যাদি কিন্তু সহিহ আর জাল-জইফ হাদিস কোনটি সেইটা জানেন না। তিনি আবার ইসলামের দাঈ।
তাদের জন্য এখানে উল্লেখিত অধ্যায়গুলো খুবই উপকারে আসবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিহ
পথে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
No comments:
Post a Comment