Search This Blog

Friday, December 27, 2019

বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-৫(পবিত্রতা-তায়াম্মুম অধ্যায়)-২৫ টি হাদিস


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
 বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-৫(পবিত্রতা-তায়াম্মুম অধ্যায়)
 (২৮৮-৩১২টি মোট ২৫টি হাদিস)
 সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত
তায়াম্মুম




১. অধ্যায়ঃ

 হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ, আর (নামাযের কাছে যেও না) ফরয গোসলের আবস্থায়ও যতক্ষণ না গোসল করে নাও। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাক কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পা য়খানা থেকে এসে থাকে কিংবা নারী গমন করে থাকে, কিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা ক্ষমাশীল। [ সুরা নিসা ৪:৪৩ ]

PMMRC হাদিস নং-২৮৮

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কোন এক সফরে বের হয়েছিলাম যখন আমরা ‘বায়যা’ অথবা ‘যাতুল জায়শ’ নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন একখানা হার হারিয়ে গেল। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-সেখানে হারের খোঁজে থেমে গেলেন আর লোকেরাও তাঁর সঙ্গে থেমে গেলেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে ছিলেন না। তখন লোকেরা আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট এসে বললেনঃ ‘আয়িশা কী করেছেন আপনি কি দেখেন নি? তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও লোকদের আটকিয়ে ফেলেছেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে নেই এবং তাঁদের সাথেও পানি নেই। আবূ বকর (রাঃ) আমার নিকট আসলেন, তখন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-আমার উরুর উপরে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তুমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর লোকদের আটকিয়ে ফেলেছ! অথচ আশেপাশে কোথাও পানি নেই। এবং তাঁদের সাথেও পানি নেই। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আবূ বক্‌র আমাকে খুব তিরস্কার করলেন আর, আল্লাহ্‌র ইচ্ছা, তিনি যা খুশি তাই বললেন। তিনি আমার কোমরে আঘাত দিতে লাগলেন। আমার উরুর উপর আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাথা থাকায় আমি নড়তে পারছিলাম না। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ভোরে উঠলেন, কিন্তু পানি ছিল না। তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করলেন। অতঃপর সবাই তায়াম্মুম করে নিলেন। উসায়দ ইব্‌নু হুযায়্‌র (রাঃ) বললেনঃ হে আবূ বকরের পরিবারবর্গ! এটাই আপনাদের প্রথম বরকত নয়। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ তারপর আমি যে উটে ছিলাম তাকে দাঁড় করালে দেখি আমার হারখানা তার নীচে পড়ে আছে।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৪, ৩৩৬, ৩৬৭২, ৩৭৭৩, ৪৫৮৩, ৪৬০৭, ৪৬০৮, ৫১৬৪, ৫২৫০, ৫৮৮২, ৬৮৪৪, ৬৮৪৫; মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৭, আহমাদ ২৫৫১০) (আ.প্র. ৩২২, ই.ফা. ৩২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-২৮৯

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-বলেনঃ আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় দান করা হয়েছে, যা আমার পুর্বে কাউকেও দান করা হয়নি।
(১) আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যে, একমাস দূরত্বেও তা প্রতিফলিত হয়;
(২) সমস্ত যমীন আমার জন্য পবিত্র ও সালাত আদায়ের উপযোগী করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কোন লোক ওয়াক্ত হলেই সালাত আদায় করতে পারবে;
(৩) আমার জন্য গানীমাতের মাল হালাল করে দেওয়া হয়েছে, যা আমার পূর্বে আর কারো জন্য হালাল করা হয়নি;
(৪) আমাকে (ব্যাপক) শাফা’আতের অধিকার দেওয়া হয়েছে;
(৫) সমস্ত নবী প্রেরিত হতেন কেবল তাঁদের সম্প্রদায়ের জন্য, আর আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমগ্র মানব জাতির জন্য।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৫,৪৩৮, ৩১২২; মুসলিম ৫/১, হাঃ ৫২১ আহমাদ ১৪২৬৮) (আ.প্র. ৩২৩, ই.ফা. ৩২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২. অধ্যায়ঃ

পানি ও মাটি না পাওয়া গেলে।

PMMRC হাদিস নং-২৯০

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদা (তাঁর বোন) আসমা (রাঃ) এর হার ধার করে নিয়ে গিয়েছিলেন। (পথিমধ্যে) হারখানা হারিয়ে গেল। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-সেটির অনুসন্ধানে লোক পাঠালেন। তিনি হারটি এমন সময় পেলেন, যখন তাঁদের সালাতের সময় হয়ে গিয়েছিল অথচ তাঁদের কাছে পানি ছিল না। তাঁরা সালাত আদায় করলেন। তারপর বিষয়টি তাঁরা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করেন। তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করেন। সেজন্য উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহ্‌ আপনাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন। আল্লাহ্‌র কসম! আপনি যে কোন অপছন্দনীয় অবস্থার মুখোমুখী হয়েছেন, তাতেই আল্লাহ্‌ তা’আলা আপনার ও সমস্ত মুসলমানের জন্য মঙ্গল রেখেছেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৬, ৩৩৪) (আ.প্র. ৩২৪, ই.ফা. ৩২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩. অধ্যায়ঃ

মুকীম অবস্থায় পানি না পেলে এবং সালাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলে তায়াম্মুম করা।
‘আত্বা (রহঃ)-এর মতামতও তাই। হাসান বসরী (রহঃ) বলেনঃ যে রোগীর নিকট পানি আছে কিন্তু তার নিকট তা পৌঁছাবার কোন লোক না থাকে, তবে সে তায়াম্মুম করবে।
ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তাঁর জরুফ নামক স্থানের জমি হতে ফেরার সময় ‘মিরবাদুল গানাম’-এ পৌঁছলে আসরের সময় হয়ে যায়। তখন তিনি (তায়াম্মুম করে) সালাত আদায় করলেন। পরে তিনি মদীনা পৌঁছলেন। তখনো সূর্য উপরে ছিল। কিন্তু তিনি সালাত পুনরায় আদায় করলেন না।

PMMRC হাদিস নং-২৯১

আবূ জুহায়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনার কাছে অবস্থিত ‘বি’রে জামাল’ হতে আসছিলেন। পথিমধ্যে তাঁর সাথে এক ব্যক্তির সাক্ষাত হলো। লোকটি তাঁকে সালাম করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জওয়াব না দিয়ে দেয়ালের নিকট অগ্রসর হয়ে তাতে (হাত মেরে) নিজের চেহারা ও হস্তদ্বয় মাস্‌হ করে নিলেন, তারপর সালামের জবাব দিলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৭, মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৯ আহমদ ১৭৫৪৯) (আ.প্র. ৩২৫, ই.ফা. ৩৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৪. অধ্যায়ঃ
তায়াম্মুমের জন্য মাটিতে হাত মারার পর উভয় হাতে ফুঁ দেয়া।

PMMRC হাদিস নং-২৯২

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ জনৈক ব্যক্তি ‘উমর ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট এসে জানতে চাইল : একবার আমার গোসলের দরকার হল অথচ আমি পানি পেলাম না। তখন ‘আম্মার ইব্‌নু ইয়াসার (রাঃ) ‘উমর ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে বললেনঃ আপনার কি সেই ঘটনা মনে আছে যে, একদা আমরা দু’জন সফরে ছিলাম এবং দু’জনেরই গোসলের প্রয়োজন দেখা দিল। আপনি তো সালাত আদায় করলেন না। আর আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে সালাত আদায় করলাম। তারপর আমি ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্য তো এতটুকুই যথেষ্ট ছিল- এ বলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ হাত মাটিতে মারলেন এবং দু’হাতে ফুঁ দিয়ে তাঁর চেহারা ও উভয় হাত মাস্‌হ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৮, ৩৩৯, ৩৪০, ৩৪১, ৩৪২, ৩৪৩, ৩৪৫, ৩৪৬, ৩৪৭; মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৮, আহমাদ ১৮৩৫৬) (আ.প্র. ৩২৬, ই.ফা. ৩৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫ অধ্যায়ঃ

মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয়ে তায়াম্মুম করা।

PMMRC হাদিস নং-২৯৩

‘আম্মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আম্মার (রাঃ)-ও এ কথা (যা পূর্বের হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে তা) বর্ণনা করেছেন। শু’বাহ (রহঃ) নিজের হস্তদ্বয় মাটিতে মেরে মুখের নিকট নিলেন (ফুঁ দিলেন)। তারপর নিজের চেহারা ও উভয় হাত মাস্‌হ করলেন। নাযর (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৩৯, ৩৩৮) (আ.প্র. ৩২৭, ই.ফা. ৩৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-২৯৪

ইব্‌নু ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আব্‌যা (রহঃ) তাঁর পিতা হতে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (‘আবদুর রহমান) ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলেন, আর ‘আম্মার (রাঃ) তাঁকে বলছিলেনঃ আমরা এক অভিযানে গিয়েছিলাম, আমরা উভয়ই জুনুবী হয়ে পড়লাম। উক্ত রিওয়ায়াতে হাত দু’টোতে ফুঁ দেয়ার বর্ণনা --- -এর স্থলে --- বলেছেন। উভয়ই সমার্থক।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪০, ৩৩৮) (আ.প্র. ৩২৮, ই.ফা. ৩৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-২৯৫

‘আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ ‘আম্মার (রাঃ) ‘উমর (রাঃ)-কে বলছিলেনঃ আমি (তায়াম্মুমের জন্য) মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি বলেছিলেন: চেহারা ও হাত দু’টো মাস্‌হ করাই তোমার জন্য যথেষ্ট।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪১, ৩৩৮) (আ.প্র. ৩২৯, ই.ফা. ৩৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-২৯৬

আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, ‘আম্মার (রাঃ) তাঁকে বললেন, .... এরপর রাবী পূর্বের হাদীসটি বর্ণনা করেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪২, ৩৩৮) (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৩৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-২৯৭

ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু আবযা তাঁর পিতা (‘আবদুর রহমান) থেকে বর্ণিতঃ
‘আম্মার (রাঃ) বলেছেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটিতে হাত মারলেন এবং তাঁর চেহারা ও হস্তদ্বয় মাস্‌হ করলেন।
(সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৩, ৩৩৮) (আ.প্র. ৩৩০, ই.ফা. ৩৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৬. অধ্যায়ঃ

পবিত্র মাটি মুসলমানদের উযূর পানির স্থলবর্তী। পবিত্রতার জন্য পানির পরিবর্তে এটাই যথেষ্ট।

হাসান (রহঃ) বলেনঃ হাদস না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য তায়াম্মুমই যথেষ্ট । ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তায়াম্মুম করে ইমামতি করেছেন । ইয়াহ্ইয়া ইব্‌ন সাঈদ (রহঃ) বলেনঃ লোনা ভূমিতে সালাত আদায় করা বা তাতে তায়াম্মুম করায় কোন বাধা নেই ।

PMMRC হাদিস নং-২৯৮

ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। আমরা রাতে চলতে চলতে শেষরাতে এক স্থানে ঘুমিয়ে পড়লাম। মুসাফিরের জন্য এর চেয়ে মধুর ঘুম আর হতে পারে না। (আমরা এমন ঘোর নিদ্রায় নিমগ্ন ছিলাম যে,) সূর্যের উত্তাপ ছাড়া অন্য কিছু আমাদের জাগাতে পারেনি। সর্বপ্রথম জাগলেন অমুক, তারপর অমুক, তারপর অমুক। (রাবী) আবূ রাজা’ (রহঃ) তাঁদের সবার নাম নিয়েছিলেন কিন্তু ‘আওফ (রহঃ) তাঁদের নাম মনে রাখতে পারেন নি। চতুর্থবারের জেগে ওঠা ব্যক্তি ছিলেন ‘উমর ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমালে আমরা তাকে কেউ জাগাতাম না, যতক্ষণ না তিনি নিজেই জেগে উঠতেন। কারণ নিদ্রাবস্থায় তাঁর উপর কী অবতীর্ণ হচ্ছে তা তো আমাদের জানা নেই। ‘উমর (রাঃ) জেগে মানুষের অবস্থা দেখলেন, আর তিনি ছিলেন দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তি – উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর বলতে আরম্ভ করলেন। তিনি ক্রমাগত উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর বলতে থাকলেন। এমন কি তাঁর শব্দে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠলেন। তখন লোকেরা তাঁর নিকট ওজর পেশ করলো। তিনি বললেনঃ কোন ক্ষতি নেই বা বললেনঃ কোন ক্ষতি হবে না। এখান হতে চল। তিনি চলতে লাগলেন। কিছু দূর গিয়ে থামলেন। উযূর পানি আনালেন এবং উযূ করলেন। সালাতের আজান দেয়া হলো। তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে দেখলেন, একলোক আলাদা দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি লোকদের সাথে সালাত আদায় করেন নি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে অমুক! তোমাকে লোকদের সাথে সালাত আদায় করতে কিসে বিরত রাখলো? তিনি বললেন আমার উপর গোসল ফরয হয়েছে। অথচ পানি নেই। তিনি বললেনঃ পবিত্র মাটি নাও (তায়াম্মুম কর), এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় সফর শুরু করলেন। লোকেরা তাঁকে পিপাসার কষ্ট জানালো। তিনি অবতরণ করলেন, তারপর অমুক ব্যক্তিকে ডাকলেন। (রাবী) আবূ রাজা’ (রহঃ) তার নাম উল্লেখ করেছিলেন কিন্তু ‘আওফ (রহঃ) তা ভুলে গেছেন। তিনি ‘আলী (রাঃ)-কেও ডাকলেন। তারপর উভয়কেই পানি খুঁজে আনতে বললেন। তারা পানির খোঁজে বের হলেন। তাঁরা পথে এক মহিলাকে দুই মশক পানি উটের উপর করে নিতে দেখলেন। তাঁরা তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ পানি কোথায়? গতকাল এ সময়ে আমি পানির নিকটে ছিলাম। আমার গোত্র পিছনে রয়ে গেছে। তাঁরা বললেনঃ এখন আমাদের সঙ্গে চলো। সে বললো: কোথায়? তারা বললেনঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট। সে বললো: সেই লোকটির নিকট যাকে সাবি’ (ধর্ম পরিবর্তনকারী) বলা হয়? তাঁরা বললেনঃ হ্যাঁ, তোমরা যাকে এই বলে থাক। আচ্ছা, এখন চলো। তারা তাকে নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন এবং সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। ‘ইমরান (রাঃ) বললেনঃ লোকেরা স্ত্রীলোকটিকে তার উট হতে নামালেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পাত্র আনতে বললেন এবং উভয় মশকের মুখ খুলে তাতে পনি ঢাললেন এবং সেগুলোর মুখ বন্ধ করে দিলেন। তারপর সে মশকের নীচের মুখ খুলে দিয়ে লোকদের মধ্যে পানি পান করার ও জন্তু-জানোয়ারকে পানি পান করানোর ঘোষণা দিয়ে দিলেন। তাঁদের মধ্যে যার ইচ্ছা পানি পান করলেন ও জন্তুকে পান করালেন। অবশেষে যে ব্যক্তির গোসল দরকার ছিল, তাকেও এক পাত্র পানি দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ পানি নিয়ে যাও এবং গোসল সার। ঐ মহিলা দাঁড়িয়ে দেখছিল যে, তার পানি নিয়ে কী করা হচ্ছে। আল্লাহ্‌র কসম! যখন তার হতে পানি নেয়া শেষ হ’ল তখন আমাদের মনে হ’ল, মশকগুলো পূর্বাপেক্ষা অধিক ভর্তি। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মহিলার জন্য কিছু একত্র কর। লোকরা মহিলার জন্যে আজওয়া (বিশেষ খেজুর), আটা ও ছাতু এনে একত্র করলেন। যখন তাঁরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী জমা করলেন, তখন একটা কপড়ে বেঁধে মহিলাকে উটের উপর সওয়ার করালেন এবং তার সামনে কাপড়ে বাঁধা গাঁঠরিটি রেখে দিলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি জান যে, আমরা তোমার পানি মোটেই কম করিনি; বরং আল্লাহ তা’আলাই আমাদের পানি পান করিয়েছেন। অতঃপর সে তার পরিজনের নিকট ফিরে গেল। তার বেশ দেরী হয়েছিল। পরিবারের লোকজন তাকে জিজ্ঞেস করলো, হে অমুক! তোমার এত দেরী হল কেন? উত্তরে সে বললোঃ একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা! দু’জন লোকের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তারা আমাকে সেই লোকটির কাছে নিয়ে গিয়েছিল, যাকে সাবি’ বলা হয়। আর সেখানে সে এসব করল। এ বলে সে মধ্যমা এবং তর্জনী আঙুল দিয়ে আসমান ও জমিনের দিকে ইঙ্গত করে বলল, আল্লাহ্‌র কসম! সে এ দুটির মধ্যে সবচেয়ে বড় জাদুকর নয় তো সে বস্তবিকই আল্লাহ্‌র রসূল। এ ঘটনার পর মুসলিমরা ঐ মহিলার গোত্রের আশপাশের মুশরিকদের উপর হামলা করতেন কিন্তু মহিলার সাথে সম্পর্কযুক্ত গোত্রের কোন ক্ষতি করতেন না। একদা মহিলা নিজের গোত্রকে বললোঃ আমার মনে হয়, তারা ইচ্ছা করে আমাদের নিস্কৃতি দিচ্ছে। এসব দেখে কি তোমরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে না? তারা সবাই মহিলাটির কথা মেনে নিল এবং ইসলামে দাখিল হয়ে গেল।
আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ.) বলেনঃ صباء শব্দের অর্থ নিজের দ্বীন ছেড়ে অন্যের দ্বীন গ্রহণ করা। আবুল ‘আলিয়া (রহ.) বলেনঃ صابئين হচ্ছে আহলে কিতাবের একটি দল, যারা যবূর কিতাব পড়ে থাকে। أصب শব্দের অর্থ ঝুঁকে পড়া। (সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৪, ৩৪৮, ৩৫৭১; মুসলিম ৫/৫৫, হাঃ ৬৮২ আহমদ ১৯৯১৯) (আ.প্র. ৩৩১, ই.ফা. ৩৩৭)
সূরা ইউসুফের ৩৩নং আয়াতে এ শব্দটি এসেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭. অধ্যায়ঃ

অপবিত্র ব্যক্তির রোগ বেড়ে যাওয়ার, মৃত্যুর বা তৃষ্ণার্ত থেকে যাবার আশঙ্কাবোধ হলে তায়াম্মুম করা।

বর্ণিত আছে যে, এক শীতের রাতে ‘আমর ইবনু’ল ‘আস (রাঃ) জুনুবী হয়ে পড়লে তায়াম্মুম করলেন। আর (এ প্রসঙ্গে) তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন : তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (৪ : ২৯) এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তিনি তাকে দোষারোপ করেননি।

PMMRC হাদিস নং-২৯৯

আবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবূ মূসা (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ (অপবিত্র ব্যক্তি) পানি না পেলে কি সালাত আদায় করবে না? ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) বললেনঃ হাঁ, আমি একমাসও যদি পানি না পাই তবে সালাত আদায় করবো না। এ ব্যাপারে যদি লোকদের অনুমতি দেই তা হলে তারা একটু শীত বোধ করলেই এরূপ করতে থাকবে। অর্থাৎ তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করবে। আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তাহলে ‘উমর (রাঃ)-এর সামনে ‘আম্মার (রাঃ)-এর কথার তাৎপর্য কী হবে? তিনি উত্তরে বললেনঃ ‘উমর (রাঃ) ‘আম্মার (রাঃ)-এর কথায় সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে আমি মনে করি না।সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৫,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-৩০০

শাক্বীক ইব্‌নু সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’ঊদ ও আবূ মূসা (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তাঁকে আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ হে আবূ ‘আবদুর রহমান। কেউ অপবিত্র হলে যদি পানি না পায় তবে কী করবে? তখন ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) বললেনঃ পানি না পাওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে না। আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তা হলে ‘আম্মার (রাঃ)-এর কথার উত্তরে আপনি কী বলবেন? তাঁকে যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন (তায়াম্মুম করে নেয়া) তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল। ‘আবদুল্লাহ্‌ (ইব্‌নু মাস’ঊদ) (রাঃ) বললেনঃ তুমি দেখ না ‘উমর (রাঃ) ‘আম্মারের এই কথায় সন্তুষ্ট ছিলেন না? আবূ মূসা (রাঃ) পুনরায় বললেন ‘আম্মারের কথা বাদ দিলেও তায়াম্মুমের আয়াতের কী ব্যাখ্যা করবেন? ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) এর কোন উত্তর দিতে পারলেন না। তিনি তবুও বললেনঃ আমরা যদি লোকদের তার অনুমতি দিয়ে দেই তাহলে আশঙ্কা হয়, কারো নিকট পানি ঠাণ্ডা মনে হলেই তায়াম্মুম করবে। রাবী আ’মাশ (রহঃ) বলেনঃ আমি শাক্বীক (রহঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, “আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) এ কারণে কি তায়াম্মুম অপছন্দ করেছিলেন?” তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৬,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮. অধ্যায়ঃ

তায়াম্মুমের জন্য মাটিতে একবার হাত মারা

PMMRC হাদিস নং-৩০১

শাক্বীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ‘আবদুল্লাহ্‌ (ইব্‌নু মাস’ঊদ) ও আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ)-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। আবু মূসা (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ)-কে বললেনঃ কোন ব্যক্তি জুনুবী হলে সে যদি এক মাস পর্যন্ত পানি না পায়, তা হলে কি সে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করবে না? শাক্বীক (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) বললেনঃ এক মাস পানি না পেলেও সে তায়াম্মুম করবে না। তখন তাঁকে আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তাহলে সূরা মায়িদাহ্‌র এ আয়াত সম্পর্কে কী করবেন যে, “পানি না পেলে পাক মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে”- (সূরা আল-মায়িদা ৫/৬)। আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) জওয়াব দিলেন, মানুষকে সেই অনুমতি দিলে অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছার সম্ভাবনা রয়েছে যে, সামান্য ঠান্ডা লাগলেই লোকেরা মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। আমি বললাম আপনারা এ জন্যেই কি তা অপছন্দ করেন? তিনি জবাব দিলেন, হাঁ। আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ আপনি কি ‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)–এর সম্মুখে ‘আম্মার (রাঃ)-এর এ কথা শোনেননি যে, আমাকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটা প্রয়োজনে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। সফরে আমি জুনুবী হয়ে পড়লাম এবং পানি পেলাম না। এজন্য আমি জন্তুর মত মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমার জন্য তো এটুকুই যথেষ্ট ছিল- এই বলে তিনি দু’ হাত মাটিতে মারলেন, তারপর তা ঝেড়ে নিলেন এবং তা দিয়ে তিনি বাম হাতে ডান হাতের পিঠ মাস্‌হ করলেন কিংবা রাবী বলেছেন, বাম হাতের পিঠ ডান হাতে মাস্‌হ করলেন। তারপর হাত দু’টো দিয়ে তাঁর মুখমন্ডল মাস্‌হ করলেন। ‘আবদুল্লাহ্‌ বললেনঃ আপনি দেখেন নি যে, ‘উমর (রাঃ) ‘আম্মার (রাঃ)-এর কথায় সন্তুষ্ট হননি? ইয়া’লা (রাঃ) আ’মাশ (রহঃ) হতে এবং তিনি শাক্বীক (রহঃ) হতে আরো বলেছেন যে, তিনি বললেনঃ আমি ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) ও আবূ মূসা (রাঃ)–এর নিকট হা্যির ছিলামঃ আবূ (রাঃ) বলছিলেনঃ আপনি ‘উমর (রাঃ) হতে ‘আম্মারের এ কথা শোনেননি যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ও আপনাকে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। তখন আমি জুনুবী হয়ে গিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়েছিলাম। তারপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট এসে এ বিষয় তাঁকে জানালাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এই যথেষ্ট ছিল- এ বলে তিনি তাঁর মুখমন্ডল ও দু’ হাত একবার মাস্‌হ করলেন?সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৭,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৯. অধ্যায়ঃ

PMMRC হাদিস নং-৩০২

‘ইমরান ইব্‌নু হুসায়ন আল-খু্যা’ঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যাক্তিকে জামা’আতে সালাত আদায় না করে পৃথক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। তিনি লোকটিকে ডেকে বললেনঃ হে অমুক! তুমি জামা’আতে সালাত আদায় করলে না কেন? লোকটি বললোঃ হে আল্লাহর রসূল! আমার গোসলের প্রয়োজন হয়েছিল, কিন্তু পানি নেই। তিনি বললেনঃ তুমি পবিত্র মাটির ব্যবহার (তায়াম্মুম) করবে। তা-ই তোমার জন্য যথেষ্ট।সহিহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনী-হাদিস নং-৩৪৮,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

এক তায়াম্মুম দ্বারা কেবল মাত্র এক ওয়াক্ত সলাত পড়া যায়

PMMRC হাদিস নং-৩০৩

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘সুন্নাত (পদ্ধতি) হচ্ছে মানুষ তায়াম্মুম দ্বারা মাত্র এক ওয়াক্তেরই সলাত আদায় করবে তারপর অন্য সালাতের জন্য আবারো তায়াম্মুম করবে।’ দারকুতনী অতি দুর্বল সানাদে।
[১৬৪] দারাকুতনী ১৮৫; ইমাম বাইহাকী তাঁর সুনান আল কুবরা (১/২২২) গ্রন্থে , ও আল খিলাফিয়্যাত (১/৪৬৫) গ্রন্থে, ইবনুল মুলকিন তাঁর (২/৬৭৪) গ্রন্থে বলেন, ইমাম সনআনী তাঁর সুবুলুস সালাম (১/১৫৫) গ্রন্থে এর সনদে আল হাসান বিন আম্মারাহ রয়েছেন, যাকে ইমাম দারাকুতনী দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী সিলসিলাহ যঈফা (৪২৩) গ্রন্থে হাদীসটিকে জাল বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাঁর গায়াতুল মাকসূদ (৩/২০৮) গ্রন্থে বলেন, ইবনুল মাদীনী আল হাসান বিন আম্মারাহকে হাদীস জালকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। আহমাদ, মুসলিম ও আবূ হাতিম উক্ত রাবীকে মাতরূক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইবনু হাজার তাঁর তালখীসুল হাবীর (১/২৪১) গ্রন্থে হাদীসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। ইমাম ইবনু কাসীর তাঁর ইরশাদুল ফাকীহ (১/৭৫) গ্রন্থে বলেন, আল হাসান বিন আম্মারাহকে একেবারেই পরিত্যক্ত বলে মন্তব্য করেছেন। শু‘বাহ তাকে মিত্থাবাদী ও হাদীস জালকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। এরপরেও ইমাম দারাকুতনী কয়েকটি উত্তম সনদসহকারে হাদীসটিকে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

PMMRC হাদিস নং-৩০৪

জাবির বিন ‘আবদিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক সহাবী সম্পর্কে বর্ণিত- যিনি গোসল করার পর মারা গিয়েছিলেন। তাঁর জন্য তায়াম্মুমই যথেষ্ট হতো, সে ক্ষতস্থানে পট্টি বেঁধে নিত। অতঃপর তার উপর মাসহ করে নিত এবং বাকি সমস্ত শরীর ধুয়ে নিত।’ আবূ দাঊদ দূর্বল সানাদে এবং তাতে বর্ণনাকারীর ব্যাপারেও মতানৈক্য রয়েছে।
(যঈফ। আবূ দাঊদ (৩৩৬) জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা সফরে রওয়ানা হলাম। আমাদের এক সাথীর পাথর লেগে মাথা ফুড়ে গেল। অতঃপর তার স্বপ্লদোষ হল। সে তার সাথীদের কাছে এ মর্মে জিজ্ঞেস করলো যে, তার জন্য কি তায়াম্মুমের অনুমতি আছে? তারা বললেন, আমরা তোমার জন্য এ ব্যাপারে কোন অনুমতি পাচ্ছি না। আর তুমি তো পানি ব্যবহারে সক্ষম। ফলে ঐ ব্যক্তি গোসল করল, অতঃপর মারা গেল। যখন সফর শেষে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এ ঘটনা বিবৃত করলাম, তিনি বললেন, তার সাথীগণ তাকে ধ্বংস করেছে, আল্লাহ তাদের ধ্বংস করুন। যেহেতু তাদের এ সম্পর্কিত জ্ঞান নেই তাহলে কেন জিজ্ঞাসা করলো না। আর ঐ ব্যক্তির জিজ্ঞেস করার অর্থই হলো সে (গোসল করার) ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। ...আল-হাদীস বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম (১৩৭) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আয যুবাইর বিন খারীক আল যাযারী রয়েছে, যাকে ইমাম দারাকুতনী ও ইমাম আবূ দাঊদ শক্তিশালী নয় বলে মন্তব্য করেছেন। আর ইবনু আব্বাস বর্ণিত হাদীসটিতে দুর্বলতা ও সনদের বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। শাইখ আলবানী তাঁর যঈফুল জামে (৪০৭৪) গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমীন তাঁর বুলুগুল মারামের শরাহ (১/৩৭৫) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে ও ইযতিরাব (পরস্পর বিরোধিতা) সংঘটিত হয়েছে। ইবনু হাজার তাঁর তালখীসুল হাবীর (১/২২৯) গ্রন্থে দারাকুতনী ও ইমাম যাহাবীর মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন, দারাকুতনী বলেন, সে শক্তিশালী নয়। ইমাম যাহাবী বলেন, “এ রাবীটি সত্যবাদী ও হাদীসটি এবং আলীর হাদীসটি যুক্ত করলে শক্তিশালী হয়”। ইমাম সনআনী সুবুলুস সালাম (১/১৫৪) ইবনু হাজারের উপরোক্ত মন্তব্য নকল করেছেন।)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
১০. অধ্যায়ঃ

পটির উপর মাসাহ করার বিধান

PMMRC হাদিস নং-৩০৫

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমার একটি কবজি ভেঙ্গে যাওয়াতে আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে (করণীয় সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে পট্টির (ব্যান্ডেজ) উপর মাসহ করার নির্দেশ দিলেন।’ ইবনু মাজাহ অতি দুর্বল সানাদে।
হাদীসটি মাওজূ‘ বা জাল। ইবনু মাজাহ (৬৫৭)
ইমাম যাহাবী তাঁর মীযানুল ই’তিদাল (৩/২৫৮) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে উমার বিন খালিদ আল কারশী রয়েছে যাকে ক্রটিযুক্ত বর্ণনাকারীদের তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম দারাকুতনী তাঁর সুনানে (১/৪৯৯), ইবনু হাজার তাঁর আদ দিরাইয়াহ (১/৮৩) গ্রন্থে, বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম (১৩৬) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আমর বিন খালিদ আল ওয়াসিত্বী রয়েছে যিনি মাতরূক (আরবী) শাইখ আলবানী যঈফ ইবনু মাজাহ (১২৬), ইবনু উসাইমীন তাঁর বুলুগুল মারামের শরাহ (১/৩৭৪) গ্রন্থে হাদীসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। আবূ হাতিম আর রাযী তাঁর তানকীহু তাহকীকুত তা‘লীক (১/২০০) গছে বলেন, হাদীসটি বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই।

হাদিসের মানঃ জাল হাদিস

১১. অধ্যায়ঃ

অসুস্থ ব্যক্তির (অযুর সময়) পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হলে তার বিধান

PMMRC হাদিস নং-৩০৬

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর বাণী ‘যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাকো [১৬০] - এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, “কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর পথে কোন জখম বা আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং সে জুনুৰী বা অপবিত্র হয়ে পড়ে আর গোসল করতে মৃত্যুর আশংকা করে, তবে মতাবস্থায় সে তায়াম্মুম করবে।” দারাকুৎনী এটিকে মাওকুফরূপে ও বাযযার মারফূ‘রূপে রিওয়ায়াত করেছেন; এবং ইমাম হাকিম ও ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ বলেছেন। [১৬১]
[১৬০] আবূ দাঊদ ৩৩৮; নাসায়ী ১১৩
[১৬১] হাদীসটি মারফূ‘ ও মাওকূফ উভয় হিসেবেই যঈফ। মাওকূফ‘ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দারাকুৎনী (৯/১৭৭) আর মারফূ‘ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইবনু খুজাইমাহ (২৭২) ও হাকিম (১৬৫)
এ হাদীসে রয়েছে জাসারা বিনতু দাজাজা। তিনি তার বর্ণনায় ইজতিরাব ঘটিয়েছেন। ইজতিরাব হচ্ছে হাদীসের ক্রটি। তাই এক দল মুহাদ্দিস এ হাদীসটিকে দুর্বল আখ্যায়িত করেছেন। (তামামুল মিন্নাহ ১১৮)
জাসারা বিন দাজাজাহকে ইমাম বুখারী দুর্বল আখ্যায়িত করেছেন (ইরওয়াউল গলীল ১/২১০), সহীহ ইবনু খুযাইমাহ (১৩২৭), আলবানী যঈফ বলেছেন, ইমাম শাওকানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (নায়লুল আওতার ১/২৮৭)

হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

PMMRC হাদিস নং-৩০৭

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘দু-জন সহাবী সফরে বের হলেন। (পথিমধ্যে) সলাতের সময় উপস্থিত হল, কিন্তু তাদের কাছে কোন পানি ছিল না; ফলে তাঁরা উভয়ে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে সলাত আদায় করলেন। তারপর (সলাতে) ওয়াক্ত থাকতেই তাঁরা পানি পেয়ে গেলেন। তাদের মধ্যে একজন উযু করে পুনরায় সলাত আদায় করলেন আর অপর ব্যক্তি তা করলেন না। তারপর তাঁরা উভয়েই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বিষয়টি তাঁকে জানালেন। যিনি পুনরায় সলাত আদায় করেননি তাঁকে বললেন, তুমি সুন্নাত (নিয়ম) অনুযায়ী ঠিকই করেছ।’ তোমার জন্য ঐ সলাতই যথেষ্ট হয়েছে আর অপর ব্যক্তিটিকে বললেন, ‘তোমার দ্বিগুণ সওয়াব হয়েছে।’ [১৫৯]
[১৫৯] আবূ দাঊদ ৩৩৮; নাসায়ী ১১৩
হাদিসের মানঃ মুরসাল

১২. অধ্যায়ঃ

অযুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে তায়াম্মুম নাপাকী দূর করে

PMMRC হাদিস নং-৩০৮

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘মুমিন মুসলিমের জন্য পবিত্র মাটি উযু বিশেষ (অর্থাৎ-পানির স্থলাভিসিক্ত) যদিও সে দশ বছর ধরে পানি না পায়। তারপর পানি পেলে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে ও তার দেহে তা ব্যবহার করে (অর্থাৎ পানি দিয়ে উযু করে) ।’ ইবনুল কাত্তান একে সহীহ বলেছেন। কিন্তু দারাকুৎনী এটি মুরসাল হওয়াকেই সঠিক বলেছেন। [১৫৭]
[১৫৭] বাজ্জার ৩১০ যাওয়ায়েদ
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-৩০৯

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং তিনি একে সহীহও বলেছেন। [১৫৮]
[১৫৮] তিরমিযী ১২৪; তিরমিযীর শব্দসমূহ হচ্ছে: (আরবী) “নিশ্চয়ই পবিত্র মাটি মুসলিমের জন্য পবিত্রকারী যদিও সে দশ বছর যাবৎ পানি না পায়। আর যখন পানি পেয়ে যাবে তখন সে তা তার শরীরে স্পর্শ করায় তথা ব্যবহার করে গোসল করে নেয়। কেননা এটা তার জন্য অতি উত্তম । তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৩. অধ্যায়ঃ

তায়াম্মুমের ভিন্ন পদ্ধতির বিবরণ

PMMRC হাদিস নং-৩১০

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তায়াম্মুমের জন্য মাটিতে দু’ বার হাত মারতে হয়। এক বার মুখমণ্ডলের জন্য আরেক বার কনুই পর্যন্ত দু’হাতের জন্য।’ হাদীসবেত্তাগণ হাদীসটির মওকুফ হওয়াকেই সহীহ বলে সাব্যস্ত করেছেন। [১৫৬]
[১৫৬] দারাকুতনী ১৮০৬। ইমাম নববী তাঁর আল-মাজমু‘ (২/২১০) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি মুনকার, এর কোন ভিত্তিই নেই। ইমাম হায়সামী তার মাযমাউয যাওয়ায়েদ (১/২৬৭) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আলী বিন যিবইয়ান রয়েছে, ইয়াহইয়া বিন মুঈন ও একদল মুহাদ্দিস তাকে দুর্বল আখ্যায়িত করে বলেন, সে হচ্ছে মহামিথ্যাবাদী, খবীস। তবে আবূ আলী নিসাবুরী বলেন, তার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। ইবনুল মুলকিন তার বদরুল মুনীর (২/৬৩৮) গ্রন্থে বলেন, এর শাহেদ রয়েছে।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল

১৪. অধ্যায়ঃ

মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা শর্ত

PMMRC হাদিস নং-৩১১

হুযইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“পানি না পাওয়া গেলে তদস্থলে মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রকারী করা হয়েছে।” [১৫২]
[১৫২] মুসলিম ৫২২
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

PMMRC হাদিস নং-৩১২

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমার জন্য মাটিকে পবিত্রকারী করা হয়েছে।’
(হাসান। আহমাদ ৭৬৩; হাদীসটির পূর্ণাঙ্গ রূপ এইঃ (আরবী) আমাকে যা দেয়া হয়েছে তা পূর্ববর্তী কোন নবীকেই দেয়া হয়নি। আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটা কী জিনিস? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমাকে ভীতিসঞ্চারকারী প্রতাপ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, জমীনের ধনভাণ্ডারসমূহের চাবিকাঠি আমাকে দেয়া হয়েছে, আমার নাম রাখা হয়েছে আহমদ, আমার জন্য মাটিকে পবিত্রকারী করা হয়েছে এবং আমার উম্মতকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে ভূষিত করা হয়েছে।)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
 “যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” 
(বুখারী ৩৪৬১,হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।


ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...