বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সহিহ হাদিসের আলোকে তারাবীর সালাত আদায়ের সঠিক নিয়মঃ
তারাবীর
সালাত নিয়ে আমাদের মুসলিম সমাজে মারামারী এমনকি মসজিদ পর্যন্ত ভাগাভাগি হয়েছে। কেউ
বলে তারাবীহর সালাতের রাকাত সংখ্যা ১১ রাকাত, কেউ বলে ২০ রাকাত। খতমে তারাবীহ বনাম
সুরা তারাবীহ, কেউ বলে বিদ্যুত গতিতে পড়ে ১ ঘন্টার মধ্যে ২০ রাকাত শেষ করতে হবে, আবার
অন্যরা বলে আস্তে ধীরে সুন্দরভাবে তেলাওয়াতে করতে হবে।
এর
মূল দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে সহিহ ও জাল জইফ হাদিস দিয়ে। তারাবীহর সালাতের রাকাত সংখ্যা
নিয়ে সহিহ হাদিসও আছে আবার জাল জইফ হাদিসও আছে। তবে আমাদের যাচাই বাছাই করে যা সহিহ
তাই গ্রহণ করতে হবে। এখানে এক ঘেঁয়েমী ভাব, কারো অন্ধ অনুকরন ও অনুসরন করা যাবে না।
নিচে সংক্ষেপে তারাবীর
সালাতের বর্ণনা করা হলোঃ-
“তারাবীহ” কাকে বলে?
-
রমযান মাসে ইশার সালতের পরে ও বিতির সালতের আগে “রাতের প্রথম অংশে বিশেষ নফল সালাতকে”
তারাবীহ বলে। এই সালাতের প্রত্যেক চার রাকাতের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া হয়, এই জন্য
এই সালাতকে তারাবীহ বলা হয় (ফতহুল বারী)।
‘তারা-বীহ’
অর্থঃ প্রশান্তির বৈঠকসমূহ (আল-মুনজিদ)।
“তারাবীহ” কখন পড়তে হবে?
-
ইশার ফরয ৪ রাকাত ও সুন্নত দুই রাকাতের পরে ঘুমানো পর্যন্ত রাতের প্রথম অংশে তারাবীহ
পড়া যাবে।
তারাবীর সালাত পড়া কি
ফরয/ওয়াজিব না সুন্নত?
-
তারাবীর সালাত পড়া “সুন্নত” কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই সালাত পড়েছেন। আবার এই সালাত
পড়া “নফল” বা অতিরিক্ত কারণ ফরয সালাতের পর সমস্ত সালাতই নফলের অন্তর্ভুক্ত।
তারাবীহ কত রাকাতঃ
রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) তারাবীহ ১১ রাকাত পড়তেন। তাই তারাবীহ ১১ রাকাত পড়া সুন্নত। দলীল – আয়িশাহ (রাঃ)
বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমযানে বা রমযানের বাইরে রাতের সালাত কখনোই ১১ রাকাতের বেশি
পড়তেন না (বুখারীঃ১১৪৭)। এই হাদীস সিহাহ সিত্তাহসহ প্রায় সমস্ত হাদীসের কিতাবেই রয়েছে।
২০ রাকাত সম্পর্কে কোনো হাদীস সিহাহ সিত্তাতে নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বা ওমর (রাঃ)
২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন এই মর্মে কিছু হাদীস রয়েছে যা জইফ আর অসংখ্য সহীহ হাদীস বিরোধী।
আর তাই দেওবন্দ মাদ্রাসার হানাফী বড় আলেম, আনোয়ার শাহ কাস্মিরী বলেন, “এই কথা মেনে
নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর তারাবীহ ছিলো ৮ রাকাত” (বিতির ছাড়া)*।
উল্লেখ্য,
এর বেশি কারো ইচ্ছা হলে পড়তে, সেটা জায়েজ রয়েছে।
তারাবীহর সালাত পড়ার
সহিহ নিয়ম কি?
নিয়তঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া
লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই ছালাতিত তারাবীহ ইক্তাদাইতুল বিহাযাল ইমামি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি
তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
মুখে উচ্চারিত এই “নাওয়াইতু
আন“ দিয়ে নিয়ত করা বিদআতা। ইহা কোনো হাদিস
দ্বারা প্রমাণিত নয়।
তবে যেকোনো কাজ করার পূর্বে নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত করতে হবে দৃঢ় চিত্তে
ও মনে মনে। মুখে উচ্চারন করে নিয়ত করা যাবে না। তাই উক্ত “নাওয়াইতু আন“ বাক্য দিয়ে
নিয়ত না করে, মনে মনে তারাবীহর সালাত পড়ার নিয়ত করে শুধু তাকবীর বলে দুই হাত তুলে বুকে
হাত বাঁধতে হবে। তথা অন্যান্য সালাতের মতো।
এরপর
২ রাকাত ২ রাকাত করে চার রাকাত পড়ে একটু বসে বিশ্রাম নিতে হবে। এই সময় হালকা কিছু দুয়া,
জিকির ও ইস্তিগফার পড়ে আবার ২ রাকাত ২ রাকাত করে ৪ রাকাত পড়ে আবার বিশ্রাম নিয়ে ৩ রাকাত
বিতির পড়তে হবে।
এই
সালাতের আলাদা কোনো নিয়ম বা দুয়া নেই। তবে চেষ্টা করতে হবে দীর্ঘ কিরাত পড়ার জন্য,
রুকু সিজদার তাসবীহ বেশি বেশি পড়ার জন্য। এই জন্য লম্বা সুরা বা ছোট ২-৩টা সুরা দিয়ে
পড়লে ভালো হয়। তবে ছোট সুরা দিয়েও তারাবীহ হবে। এই বিষয়গুলো হলো যার যার ব্যক্তিগত
ইচ্ছা ও সাধ্য অনুযায়ী।
৪
রাকাতের পর প্রচলিত যে দুয়া “সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি,
সুবহানা যিল ইজ্জাতি, ওয়াল আজমাতে, ওয়াল হায়বাতি,ওয়াল কুদরাতি, ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়া
জাবারুত। সুবহানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা, সুববুহুন
ক্কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার রূহ ।" এই দুয়া কুরআন
হাদীসের কোথাও নাই – তাই এই দুয়া পড়া বিদআত।
নারী
ও পুরুষের তারাবীর সালাতে কোনো পার্থক্য নেই। পুরুষের জন্য জামাতে পড়া উত্তম। সুযোগ
থাকলে নারীরাও জামাতে শরীক হতে পারে।
মোনাজাত?
সম্মিলিত
মোনাজাত বিদআত। তবে দুই হাত তুলে একাকী যেকোনো সময় দোয়া করা যেতে পারে। তাই তারাবীহর
সালাত ৮ রাকাত শেষে বা বিতরসহ ১১ রাকাত শেষে সালাতের জায়গায় বসে অতিরিক্ত বিভিন্ন প্রকার
যিকির বা দোয়া পাঠ করে একাকী দুই হাত তুলে মোনাজাত করা যাবে।
তারাবীহর
সালাতে সম্মিলিত মোনাজাতে বা একাকী মোনাজাতে
নিচের যে দোয়াটি পড়া হয় তা বিদআত। ইহা কোনো হাদিসে নেই।
“আল্লাহুম্মা ইন্না নাসয়ালুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নারি ইয়া
খালিকাল জান্নাতি ওয়ান্নারি, বিরাহমাতিকা ইয়া আজিজু, ইয়া গাফফারু, ইয়া কারিমু, ইয়া
সাত্তারু, ইয়া রাহিমু, ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালীকু, ইয়া বার। আল্লাহুম্মা আযিরনা মিনান্নারি,
ইয়া মুজিরু, ইয়া মুজিরু, ইয়া মুজিরু, বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমীন ।” এই দোয়াটি বানানো একটি
দোয়া, যা পড়া বিদআত।
সর্বশেষঃ
আমাদের
ইবাদত হবে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। তাই অন্যরা এত রাকাত পড়ে আমাকেও পড়তে হবে এই
মন মানসিকতা রাখা ঠিক না। আপনার শক্তি সামর্থ, ইচ্ছা অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব পড়বেন –
আর এটা সুন্নত ইবাদত কিন্তু অনেক ফযীলতের। তাই আপনি খুশু ও খুজুর সাথে ধীর স্থিরভাবে
এই সালাত আদায় করবেন।
আল্লাহ
আমাদের ইবাদতগুলো সহজ-সুন্দর ও কবুল করুন, আমিন।
জরুরী কিছু সহিহ মাসলা মাসায়েল
(১) প্রশ্ন: সেহরি খাওয়ার
পূর্বে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করার বিধান কি এবং আমরা কিভাবে নিয়ত করব?
উত্তর: সেহরি খাওয়ার পূর্বে নিয়ত মুখে উচ্চারণ
করা বিদআত। কেননা, হাদিসে নিয়ত করার কথা এসেছে কিন্তু মুখে উচ্চারণ করার কথা আসে নি।
সালাত, সওম, যাকাত, হজ্জ, ওযু, গোসল ইত্যাদি কোনো ক্ষেত্রেই নয়।
সুতরাং
নিয়তের নামে গদ বাধা কতগুলো আরবী বা বাংলা বাক্য উচ্চারণ করা দ্বীনের মধ্যে নতুন সংযোজন
ছাড়া অন্য কিছু নয়। যার কারণে এ সকল গদ বাধা বাক্য মুখে উচ্চারণ করা জঘণ্য বিদআত হিসেবে
অবশ্যই পরিত্যাজ্য। কেননা প্রতিটি বিদআতই ভ্রষ্টতা আর প্রতিটি ভ্রষ্টতার পরিণতি জাহান্নাম।
(আল্লাহ আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।)
আমাদেরকে
জানতে হবে যে, সেহরি খাওয়া একটি ইবাদত। আর যে কোনো ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিয়ত থাকা
অপরিহার্য শর্ত। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«
إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ »
“সকল
আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।” (সহীহ বুখারীর প্রথম হাদিস)
তাই
রোযা রাখার জন্য নিয়ত থাকা অপরিহার্য। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
مَنْ
لَمْ يُبَيِّتْ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَا صِيَامَ لَهُ
“যে
রাতে (ফজরের আগে) রোযা রাখার নিয়ত করে নি তার রোযা হবে না।” (সুনান নাসাঈ, আল্লামা
আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।) কিন্তু জানা দরকার, নিয়ত কি বা কিভাবে নিয়ত করতে হয়?
নিয়ত কি বা কিভাবে নিয়ত
করতে হয়?
ইমাম
নববী রাহ. বলেন: “মনের মধ্যে কোন কাজের ইচ্ছা করা বা সিদ্ধান্ত নেয়াকেই নিয়ত বলা হয়।”
সুতরাং রোযা রাখার কথা মনে মধ্যে সক্রিয় থাকাই নিয়তের জন্য যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করার
প্রয়োজন নেই। কেননা, ইসলামী শরীয়তে কোন ইবাদতের নিয়ত মুখে উচ্চারণের কথা আদৌ প্রমাণিত
নয়।
অথচ
আশ্চর্য জনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ওযুর নিয়ত, নামাযের
নিয়ত, সেহরি খাওয়ার নিয়ত ইত্যাদি চর্চা করা হয়। নামায শিক্ষা, রোযার মাসায়েল শিক্ষা
ইত্যাদি বইয়ে এ সব নিয়ত আরবিতে অথবা বাংলা অনুবাদ করে পড়ার জন্য জনগণকে শিক্ষা দেয়া
হয়! কিন্তু আমাদের একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, দ্বীনের মধ্যে এভাবে নতুন নতুন সংযোজনের
পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে সতর্ক করে
গেছেন। তিনি বলেন:
«
مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ »
“যে
আমাদের এই দ্বীনে এমন নতুন কিছু তৈরি করল যা তার অন্তর্ভুক্ত নয় তা পরিত্যাজ্য।” (বুখারী
ও মুসলিম)
তাই
মুসলমানদের কর্তব্য হল, দলীল-প্রমাণ ছাড়া গদ বাধা নিয়ত (নাওয়াই আন…..) সহ সব ধরণের
বিদআতি কার্যক্রম পরিত্যাগ করা এবং সুন্নতকে শক্তভাবে ধারণ করা।
আল্লাহ
তাআলা আমাদেরকে সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার এবং বিদআত বর্জন করার তওফিক দান করুন। আমিন।
(২) প্রশ্ন : তারাবীহর
সালাতে প্রতি চার রাকআত পর: “সুবহানা যিল মুলকি….মর্মে যে দোয়াটি পড়া হয় তা কি সহিহ?
উত্তর:
অনেক
মসজিদে দেখা যায়, তারাবীহ নামাযের প্রতি চার রাকাত শেষে মুসল্লিগণ উঁচু আওয়াজে ‘সুবহানা
যিল মুলকে ওয়াল মালাকূতে…” দুআটি পাঠ করে থাকে। এভাবে নিয়ম করে এই দুয়া পাঠ করা বিদআত।
অনুরূপভাবে এ সময় অন্য কোন দুআ এক সাথে উঁচু আওয়াজে পাঠ করাও বিদআত। কারণ, এ ব্যাপারে
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোন সহীহ হাদিস নেই।
বরং
নামায শেষে যে সকল দুআ ও যিকির সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো পাঠ করা সুন্নত। যেমন,
তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ”, একবার আল্লাহুম্মা আন্তাস সালাম ওয়ামিন্কাস সালাম, তাবারাক্তা
ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকারাম” ইত্যাদি। এ দুয়াগুলো প্রত্যেকেই চুপি স্বরে নিজে নিজে
পাঠ করার চেষ্টা করবে।
আল্লাহ
তাআলা বিদআত থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী ইবাদত করার তাওফিক দান
করুন। আমিন।
(৩ ) ইফতারের দো‘আ সম্পর্কে
জানতে চাই?
উত্তরঃ ‘বিসমিল্ললাহ’ বলে
শুরু ও ‘আলহামদুলিল্ললাহ’ বলে শেষ করবে। (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৯৯; মুসলিম, ঐ,
হা/৪২০০।)
ইফতারের দো‘আ হিসাবে
প্রসিদ্ধ আল্ললাহুম্মা লাকা
ছুমতু... হাদীছটি ‘যঈফ’। উক্ত দোয়াটি পড়ে
ছিয়াম ভঙ্গ করা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
ইফতার শেষে নিম্নোক্ত
দো‘আ পড়া যাবে- ‘যাহাবায যামাউ
ওয়াবতাল্ললাতিল উরূকু ওয়া ছাবাতাল আজরু ইনশাআল্ললাহ’ (পিপাসা দূরীভূত হ’ল ও শিরাগুলি সঞ্জীবিত হ’ল এবং আল্ললাহ
চাহেন তো পুরস্কার ওয়াজিব হ’ল)। (আবুদাঊদ হা/২৩৫৭-২৩৫৮; মিশকাত হা/১৯৯৩-৯৪।)
(৪) রোযা অবস্থায় বিশেষ করে ইফতারের পূর্বে দুআ কবুলের সম্ভাবনা
বেশি সম্পর্কে জানতে চাই?
উত্তরঃ রোযা অবস্থায় দুআ
করলেও তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন:
ثلاث دعوات لا ترد : دعوة الوالد لولده ، ودعوة الصائم ودعوة المسافر
“তিন ব্যক্তির দুআ
ফিরিয়ে দেয়া হয় না। সন্তানদের জন্য পিতার দুআ, রোজাদারের দুআ ও মুসাফিরের দুআ।”
(বায়হাকী, সহীহুল জামে হা/২০৩২)
তবে বিশেষকরে ইফতারে
পূর্বে দুআ কবুলের সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন:
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর
রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إنَّ للصائمِ عندَ فِطرِه لَدعوةً ما تُرَدُّ قال سمِعتُ عبدَ اللهِ يقولُ عندَ فِطرِه : اللهم إني أسألُكَ برحمتِكَ التي وسِعَتْ كلَّ شيءٍ أن تغفِرَ لي – زاد في روايةٍ : ذُنوبي
“রোজাদারের ইফতারের
সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।” তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. কে ইফতার
করার সময় বলতে শুনেছি:
اللهم إني أسألُكَ برحمتِكَ التي وسِعَتْ كلَّ شيءٍ أن تغفِرَ لي
”হে আল্লাহ, তোমার
সর্বব্যাপী দয়ার ওসিলায় প্রার্থনা করছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।” অন্য বর্ণনায়:
“আমার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দাও।”
ইমাম বুসীরী তার
ইতহাফুল মাহারা গ্রন্থে (৩/১০২) উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে বলেন, হাদিসটি সহীহ। আর এর
সমর্থনে আরও হাদিস রয়েছে।
ইবনে হাজার রহঃ
“রোজাদারের ইফতারের সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।” হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলে সাব্যস্ত
করেছেন। [ আল ফাতুহাত আর রাব্বানিয়াহ ৪/৩৪২)]
আহমদ শাকিরও উক্ত
হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। [উমদাতুত তাফসীর ১/২২৫)০
তবে ইমাম আলবানী
হাদিসটিকে জঈফ বা দুর্বল বলেছেন। (জঈফ ইবনে মাজাহ হা/৩৪৫)
মোটকথা, হাদিসটি
সহীহ/জঈফ হওয়ার ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের মাঝে দ্বিমত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ইফতারের
সময় মানুষ ক্লান্ত-শ্রান্ত থাকে, ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর থাকে। এমন কষ্টকর পরিস্থিতিতে
দুআ করলে তা কবুলের সম্ভাবনা থাকে-যেমনটি বলেছেন আল্লামা উসাইমীন রহ.।
সুতরাং রোযা অবস্থায়
সারাদিন বেশী বেশী দুআ করার চেষ্টা করার উচিৎ। বিশেষ করে ইফতারে সময়। হতে পারে,
দয়াময় আল্লাহ আমাদের দুআ কবুল করবেন। আল্লাহ তাওফিক দানকারী।
(৫) সেহরি সংক্রান্ত
বিদআত সম্পর্কে জানতে চাই?
উত্তরঃ আমাদের দেশে দেখা যায়, রমাযান মাসের
মধ্যরাত থেকেই মুয়াজ্জিনগণ মাইকে কুরআন তিলাওয়াত, গজল, ইসলামী সঙ্গীত ইত্যাদি গাওয়া
শুরু করে অথবা টেপ রেকর্ডার, মোবাইল, ইউটিউব ইত্যাদি থেকে বক্তাদের ওয়াজ, গজল ইত্যাদি
বাজাতে থাকে। সেই সাথে চলতে থাকে অনবরত ডাকাডাকি: রোযাদার ভায়েরা, মা ও বোনেরা, উঠুন,
সেহরীর সময় হয়েছে, রান্নাবান্না করুন, খাওয়া-দাওয়া করুন” ইত্যাদি। অথবা কোথাও বা কিছুক্ষণ
পরপর উঁচু আওয়াজে হুইশেল বাজানো হয়!
এর
থেকে আরো আজব কিছু আচরণ দেখা যায়। যেমন, এলাকার কিছু যুবক রমাযানের শেষ রাতে মাইক নিয়ে
সম্মিলিত কণ্ঠে গজল বা কাওয়ালি গেয়ে বা অডিও রেকর্ড বাজিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে
চাঁদা আদায় করে অথবা মাইক বাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকে! এ ছাড়াও এলাকা ভেদে বিভিন্ন
ধরণের কার্যক্রম দেখা যায়।
আমাদের
জানা উচিত যে, শেষ রাতে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা নিচের আসমানে নেমে আসেন। এটি
দুআ কবুলের গুরুত্বপূর্ণ সময়। আল্লাহ তাআলার নিকট এ সময় কেউ দুআ করলে তিনি তা কবুল
করেন। মুমিন বান্দাগণ এ সময় তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করেন, কুরআন তিলাওয়াত করেন, মহান
আল্লাহ তাআলা তায়ালা দরবারে রোনাজারি-কান্নাকাটি করেন।
সুতরাং
এ সময় মাইক বাজিয়ে, গজল গেয়ে বা চাঁদা তুলে এ মূল্যবান সময়ে ইবাদতে বিঘ্নিত করা নিঃসন্দেহে
গুনাহর কাজ। এতে রোগী, শিশু বা যাদের উপর রোযা ফরয নয় তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এদের
হাঁকডাকে অস্থির হয়ে অনেকে সেহরির শেষ সময় পর্যন্ত বিলম্ব না করে আগে ভাগে সেহরি শেষ
করে দেয়।
তাহলে আমাদেরকে জানতে
হবে এ ক্ষেত্রে সুন্নত কি?
এ
ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে, ফজরের আগে সেহরির জন্য আলাদা একটি আযান দেয়া। এই আযান হল সেহরি
খাওয়ার জন্য এবং তারপর ফজর সালাতের জন্য আরেকটি আযান দেয়া।
রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে দুজন মুয়াজ্জিন নিয়োগ করা ছিল। যেমন
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«
إِنَّ بِلاَلاً يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ »
“বেলাল
রাতে আযান দেয়। অত:এব তোমরা বেলালের আযান শুনলে পানাহার করতে থাক ইবনে উম্মে মাকতুমের
আযান দেয়া পর্যন্ত।” [বুখারী, অনুচ্ছেদ: ফজরের আগে আযান দেয়া। মুসলিম: অনুচ্ছেদ: ফজর
উদিত হলে রোযা শুরু হবে……।]
সহীহ
মুসলিমের বর্ণনা রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
إِنَّ
بِلَالًا يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ لِيُوقِظَ نَائِمَكُمْ وَلِيَرْجِعَ قَائِمَكُمْ
“বিলাল
রা. আযান দেয় এজন্য যে, যেন ঘুমন্ত লোক জাগ্রত হয় আর তাহাজ্জুদ আদায়কারী ফিরে আসে অর্থাৎ
নামায বাদ দিয়ে সেহরি খায়।” সহিহ মুসলিম,কিতাবুস সওম, হা/ ১০৯৩)
সুতরাং
এ দুটির বেশি কিছু করতে যাওয়া বিদআত ছাড়া অন্য কিছু নয়।
এজন্যই
ওলামাগণ বলেছেন: “যেখানে একটি সুন্নত উঠে যায় সেখানে একটি বিদআত স্থান করে নেয়।” আমাদের
অবস্থাও হয়েছে তাই। সুন্নত উঠে গিয়ে সেখানে নিজেদের মনগড়া পদ্ধতি স্থান দখল করে নিয়েছে।
আল্লাহ আমাদেরকে পুনরায় সুন্নতের দিকে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
তবে
লক্ষ্য রাখতে হবে, যে এলাকায় দুটি আযান দেয়ার প্রচলন নেই সেখানে রমাযান মাসে হঠাৎ করে
দুটি আযান দেয়া ঠিক নয়। কেননা, এতে মানুষের মাঝে সেহরি খাওয়া ও ফজর সালাতের সময় নিয়ে
বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। দুটি আযান চালু করার পূর্বে জনগণের মধ্যে পর্যাপ্ত সচেতনতা
তৈরি করা আবশ্যক। অন্যথায় ফেতনা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকলে তা না করাই উত্তম।
আল্লাহ
আমাদেরকে রমাযান কেন্দ্রিক সব ধরণের বিদাআত ও শরিয়ত গর্হিত কাজ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
সিয়াম (রোযা পালন) সম্পর্কিত
হাদিসসমূহ
বুলুগুল
মারাম
সিয়াম (রোযা পালন) হাদিস নং ৬৫০ থেকে
৭০৭
(হুবহু প্রকাশিত)
পরিচ্ছেদ
০১.
সাওম পালন করে রমাযানকে
গ্রহণ করা নিষেধ
বুলুগুল মারাম হাদিস নং-৬৫০
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم
-: «لَا تَقَدَّمُوا
رَمَضَانَ بِصَوْمِ
يَوْمٍ وَلَا يَوْمَيْنِ، إِلَّا
رَجُلٌ كَانَ يَصُومُ صَوْمًا، فَلْيَصُمْهُ»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কেউ রমযানের একদিন কিংবা দুদিন আগে
হতে সওম শুরু করবে না। তবে কেউ যদি এ সময় সিয়াম পালনে অভ্যস্ত থাকে তাহলে সে সেদিন
সওম পালন করতে পারবে। [৬৯৬]
৬৯৬]
বুখারী ১৯১৪৩, মুসলিম ১০৮২, ১১০৯, তিরমিয়ী ৬৮৪, ৬৮৫, নাসায়ী ২১৭২, ২১৭৩, আবু দাউদ
২৩২৫, ইবনু মাজাহ ১৬৫০, আহমাদ ৭১৫৯, ৭৭২২, ৮২৭০, দারেমী ১৬৮৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০২.
(চাঁদ উঠা-না উঠা) সন্দেহের
দিনে রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫১
وَعَنْ
عَمَّارِ
بْنِ يَاسِرٍ - رضي
الله عنه
- قَالَ: مَنْ
صَامَ اليَوْمَ
الَّذِي يُشَكُّ
فِيهِ فَقَدْ
عَصَى أَبَا
القَاسِمِ - صلى
الله عليه
وسلم -. وَذَكَرَهُ البُخَارِيُّ
تَعْلِيقًا، وَوَصَلَهُ
الخَمْسَةُ، وَصَحَّحَهُ
ابْنُ خُزَيْمَةَ
وَابْنُ حِبَّانَ
আম্মার
বিন ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যে ব্যক্তি সন্দেহ-দিনে সওম পালন করল সে অবশ্যই আবুল কাসিম (রাঃ)-এর বিরুদ্ধাচরণ
করল। এ হাদীসকে বুখারী (রহঃ) মু'আল্লাক হিসেবে এবং পাচজনে (আহমাদ, আবু দাউদ, নাসায়ী,
তিরমিয়ী, ইবনু মাজাহ) মাওসুলরূপে একে বর্ণনা করেছেন। আর ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু হিব্বান
একে সহীহ বলেছেন। [৬৯৭]
[৬৯৭]
সিলাহ বিন যুফার বলেন, আমরা আম্মার (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে ভুনা ছাগলের
গোশত নিয়ে আসা হলো। তিনি সকলকে খেতে বললেন। তখন কতিপয় লোক সরে গিয়ে বলল, আমি রোযাদার।
আম্মার (রাঃ) উপরোক্ত হাদীস উল্লেখ করলেন। ইমাম তিরমিয়ী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
আবু দাউদ ২৩৩৪, তিরমিয়ী ৬৮৬, নাসায়ী ২১৮৮ ইবনু মাজাহ ১৬৪৫ , দারেমী ১৬৮২
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৩.
রোযা রাখা এবং ভঙ্গ করা
চাঁদ দেখার সাথে সম্পর্কিত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫২
وَعَنِ ابْنِ
عُمَرَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
قَالَ: سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- يَقُولُ: «إِذَا
رَأَيْتُمُوهُ فَصُومُوا،
وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ
فَأَفْطِرُوا، فَإِنْ
غُمَّ عَلَيْكُمْ
فَاقْدُرُوا لَهُ»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
وَلِمُسْلِمٍ: «فَإِنْ
أُغْمِيَ عَلَيْكُمْ
فَاقْدُرُوا لَهُ
ثَلَاثِينَ» وَلِلبُخَارِيِّ:
«فَأَكْمِلُوا العِدَّةَ
ثَلَاثِينَ»
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা
তা (চাঁদ) দেখবে তখন সওম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন সওম ছাড়বে। আর যদি আকাশ মেঘলা
থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে। মুসলিমের হাদীসে আছে, যদি মেঘাচ্ছন্ন
থাকে তাহলে ত্রিশ দিন গণনা কর। বুখারীতে আছে, ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। [৬৯৮]
[৬৯৮]
বুখারী ১৯০০, ১৯০৬, ১৯০৭, ১৯০৮ মুসলিম ১০৮০, নাসায়ী ২১২০, ২১২১, আবু দাউদ ২২১৯, ২৩২০,
আহমাদ ৪৪৭৪, ৪৫৯৭, ৪৮০০, মুসলিম ৬২৩, ৬২৪, দারেমী ১৬৮৪
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৩
وَلَهُ فِي
حَدِيثِ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- «فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ
شَعْبَانَ ثَلَاثِينَ»
বুখারীতে
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এর
হাদীসে আছে- "মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবান মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। [৬৯৯]
৬৯৯]
বুখারী ১৯০৯, মুসলিম ১০৮১, তিরমিয়ী ৬৮৪, নাসায়ী ২১১৭, ২১১৮, ২১১৯, ইবনু মাজাহ ১৬৫৫,
আহমাদ ৭৪৬৪, ৭৫২৭, দারেমী ১৬৮৫
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৪.
সাওম আরম্ভ হওয়ার ব্যাপারে
একজনের সাক্ষাদানই যথেষ্ট
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৪
وَعَنِ ابْنِ
عُمَرَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
قَالَ: تَرَاءَى
النَّاسُ الهِلَالَ،
فَأَخْبَرْتُ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - أَنِّي
رَأَيْتُهُ، فَصَامَ،
وَأَمَرَ النَّاسَ
بِصِيَامِهِ. رَوَاهُ
أَبُو دَاوُدَ،
وَصَحَّحَهُ ابْنُ
حِبَّانَ وَالحَاكِمُ
ইবনু
'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লোকেরা
আমাকে হিলাল (নতুন চাঁদ) দেখলো। তাই আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
সংবাদ দিলাম যে আমি চাঁদ দেখেছি। ফলে তিনি নিজে সওম পালন করলেন এবং লোকেদেরকে সওম পালনের
আদেশ দিলেন। -ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন।” [৭০০]
[৭০০]
আবু দাউদ ২৩৪২, দারেমী ১৬৯১
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৫
وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
أَنَّ أَعْرَابِيًّا
جَاءَ إِلَى
النَّبِيِّ - صلى
الله عليه
وسلم - فَقَالَ:
إِنِّي رَأَيْتُ
الهِلَالَ، فَقَالَ:
«أَتَشْهَدُ أَنْ
لَا إِلَهَ
إِلَّا اللَّهُ»
? قَالَ: نَعَمْ.
قَالَ: «أَتَشْهَدُ
أَنَّ مُحَمَّدًا
رَسُولُ اللَّهِ»
? قَالَ: نَعَمْ.
قَالَ: «فَأَذِّنْ
فِي النَّاسِ
يَا بِلَالُ
أَنْ يَصُومُوا
غَدًا» رَوَاهُ
الخَمْسَةُ، وَصَحَّحَهُ
ابْنُ خُزَيْمَةَ
وَابْنُ حِبَّانَ
وَرَجَّحَ النَّسَائِيُّ
إِرْسَالَهُ
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন
একজন অশিক্ষিত গ্রাম্য লোক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে এসে বললো,
আমি চাঁদ দেখেছি। তিনি বললেন, তুমি কি এ সত্যের সাক্ষ্য দাও যে আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত
কোন উপাস্য নেই-সে বললো, হা। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন-তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর
রসূল। লোকটা বললো, হা। অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে বিলাল!
আগামী কাল সওম পালনের নির্দেশটি লোকেদের মাঝে ঘোষণা করে দাও। -ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু
হিব্বান একে সহীহ বলেছেন। নাসায়ী এর মুরসাল হওয়াকে অধিকতর প্রাধান্য দিয়েছেন।”
[৭০১]
[৭০১]
আবু দাউদ ২৩৪১, তিরমিযী ৬৯১, নাসায়ী ২১১২, ২১১৩, ইবনু মাজাহ ১৬৫২, ১৬৯২। সাম্মাক বিন
হারব ইকরামা থেকে, তিনি ইবনু আব্বাস থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। সাম্মাক ইকরামা থেকে বর্ণনার
সময় এলোমেলো করে বর্ণনা করেছেন। তিনি কখনও মারফু’ আবার কখনও মুরসাল হিসেবে বর্ণনা
করেছেন। শাইখ সুমাইর আয যুহাইর বলেন, মুসনাদে আমি এ হাদীসটি পাইনি।
হাদিসের মানঃ মুরসাল
পরিচ্ছেদ
০৫.
সাওমের নিয়্যাত অপরিহার্য
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৬
وَعَنْ حَفْصَةَ
أُمِّ المؤْمِنِينَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا، عَنِ
النَّبِيِّ - صلى
الله عليه
وسلم - قَالَ:
«مَنْ لَمْ
يُبَيِّتِ الصِّيَامَ
قَبْلَ الفَجْرِ
فَلَا صِيَامَ
لَهُ» رَوَاهُ
الخَمْسَةُ، وَمَالَ
التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ
إِلَى تَرْجِيحِ
وَقْفِهِ، وَصَحَّحَهُ
مَرْفُوعًا ابْنُ
خُزَيْمَةَ وَابْنُ
حِبَّانَ وَلِلدَّارَقُطْنِيِّ:
«لَا صِيَامَ
لِمَنْ لَمْ
يَفْرِضْهُ مِنَ
اللَّيْلِ
হাফসা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাত থাকতে
ফরয রোযার নিয়াত করলো না তার রোযা হয়নি। -তিরমিয়ী ও নাসায়ী এর মাওকুফ হওয়ার উপর
গুরুত্বারোপ করেছেন ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু হিব্বান এর মারফু হওয়াকে সঠিক বলেছেন।
আর
দারাকুৎনীর মধ্যে আছে- "তার সওম হবে না যে রাতের বেলাতেই (ফরয) সওম পালন ঠিক
(নিয়্যাত) না করবে।" [৭০২]
৭০২]
আবু দাউদ ২৪৫৪, তিরমিযী ২৭৩০, নাসায়ী ২২৩১, ২২৩২, ২২৩৪, ইবনু মাজাহ ১৭০০, আহমাদ ২৫৯১৮,
মুওয়াত্তা মালেক ৬২৭, দারেমী ৬৯৮
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৬.
দিনের বেলায় নফল সাওমের
নিয়্যাত এবং ভঙ্গ করার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৭
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا قَالَتْ:
دَخَلَ عَلَيَّ
النَّبِيُّ - صلى
الله عليه
وسلم - ذَاتَ
يَوْمٍ، فَقَالَ:
«هَلْ عِنْدَكُمْ شَيْءٌ»
? قُلنَا: لَا.
قَالَ: «فَإِنِّي
إِذًا صَائِمٌ»
ثُمَّ أَتَانَا
يَوْمًا آخَرَ
، فَقُلْنَا:
أُهْدِيَ لَنَا
حَيْسٌ، فَقَالَ:
«أَرِينِيهِ، فَلَقَدْ
أَصْبَحْتُ صَائِمًا»
فَأَكَلَ. رَوَاهُ
مُسْلِمٌ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা আমার নিকট এসে বললেন তোমার নিকট
কোন খাবার আছে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে আমি এখন সায়িম (সওম পালনকারী)। তারপর
অন্য একদিন তিনি আমাদের নিকট আসলে আমরা বললাম, আমাদের জন্য হায়স উপটৌকন হিসেবে পাঠানো
হয়েছে। তিনি বললেন, তা আমাকে দেখাও, আমি কিন্তু (নফল) সায়িম (রোযাদার) হিসেবে সকাল
করেছি, তারপর তিনি খাদ্য গ্রহণ করলেন।" [৭০৩]
[৭০৩]
মুসলিম ১১৫৪, নাসায়ী ২২২২, ২৩২৩, ২৩২৮, আবূ দাউদ ২৪৫৫. আহমাদ ২৫২০৩
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৭.
সময় হওয়ার সাথে সাথেই
তাড়াতাড়ি ইফতার করা মুস্তাহাব
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৮
وَعَنْ سَهْلِ
بْنِ سَعْدٍ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُمَا، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «لَا
يَزَالُ النَّاسُ
بِخَيْرٍ مَا
عَجَّلُوا الفِطْرَ»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
সাহল
ইবনু সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা যতদিন শীঘ্ৰ ইফতার করবে, ততদিন
তারা কল্যাণের উপর থাকবে। [৭০৪]
[৭০৪]
বুখারী ১৯৫৭, মুসলিম ১০৯৮, তিরমিয়ী ৬৯৯, ইবনু মাজাহ ১৬৯৭, আহমাদ ২২৩৬৩, ২২৩৫২, মুওয়াত্তা
মালেক ৬২৮
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৫৯
وَلِلتِّرْمِذِيِّ: مِنْ
حَدِيثِ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- عَنِ النَّبِيِّ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «قَالَ
اللَّهُ - عز
وجل -: أَحَبُّ عِبَادِي إِلَيَّ
أَعْجَلُهُمْ فِطْرًا»
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
"নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন- আমার বান্দাদের
মধ্যে আমার নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় তারা যারা শীঘ্ৰ ইফতার করে। [৭০৫]
[৭০৫]
তিরমিয়ী ৭০০, আবু দাউদ ৮১৬০। আলবানী যঈফুত তারগীব (৬৪৯) বলেন, দুর্বল। আলবানী যঈফুল
জামি' (৪০৪১) গ্রন্থে বলেন, দুর্বল। আলবানী সহীহ ইবনু খুযাইম (২০৬২) গ্রন্থে বলেছেন,
তার সানাদ যঈফ। আলবানী যঈফ তিরমিয়ীতে (৭০০) বলেছেন, দুর্বল। আহমদ শাকির মুসনাদ আহমাদ
(১২/২৩২) গ্রন্থে বলেছেন, তার সানাদ সহীহ। যাহাবী মিযানুল ইতিদাল (৪/১১০) গ্রছে বলেন,
এর সনদে মাসলামা বিন আলী রয়েছে যিনি দুর্বল।
হাদিসের
মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৮.
সাহরীর ব্যাপারে উৎসাহ
প্রদান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬০
وَعَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ
- رضي الله
عنه - قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم -: «تَسَحَّرُوا فَإِنَّ
فِي السَّحُورِ
بَرَكَةً» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আনাস
বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- আনাস ইবনু মালিক ভুল হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাহরী খাও, কেননা সাহরীতে
বরকত রয়েছে।" [৭০৬]
[৭০৬]
বুখারী ১৯২৩, মুসলিম ১০৯৫, তিরমিয়ী ৭০৮, নাসায়ী ২১৪৬, ইবনু মাজাহ ১৬৮২, আহমাদ ১১৫২৯,
১২৮২৩, দারেমী ১৬৯৬।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৯.
যা দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬১
وَعَنْ سَلْمَانَ
بْنِ عَامِرٍ
الضَّبِّيِّ - رضي
الله عنه
- عَنِ النَّبِيِّ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «إِذَا
أَفْطَرَ أَحَدُكُمْ
فَلْيُفْطِرْ عَلَى
تَمْرٍ، فَإِنْ
لَمْ يَجِدْ
فَلْيُفْطِرْ عَلَى
مَاءٍ، فَإِنَّهُ
طَهُورٌ» رَوَاهُ
الخَمْسَةُ، وَصَحَّحَهُ
ابْنُ خُزَيْمَةَ
وَابْنُ حِبَّانَ
وَالحَاكِمُ
সুলায়মান
বিন ‘আমির আযযাব্বী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন—যখন কেউ ইফতার করবে তখন সে যেন খেজুর দ্বারা
ইফতার করে, যদি সে তা না পায় তাহলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা সেটা পরিবত্রকারী।
-ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ বলেছেন। [৭০৭]
[৭০৭]
তিরমিয়ী ৬৯৫, আবু দাউদ ২২৫৫, ইবনু মাজহ ১৬৯৯, আহমাদ ১৫৭৯২, ১৫৭৯৮, ১৭৪১৪, দারেমী ১৭০১।
আল বানী যঈফুত তিরমিয়ী (৬৯৫) গ্রন্থে বলেছেন, দুর্বল। ইবনু বায হাশিয়াতু বুলুগিল
মারাম লি ইবনিল বায (৪০৬) গ্রন্থে তার সানাদ সুন্দর। আল বানী যঈফু ইবনি মাজাহ (৩৩৪)
যঈফ বলেছেন। সুমৃতী আল জামিউস সগীর (৪৬৪) সহীহ বলেছেন। আল বানী সিলসিলাতু্য যঈফা (৬৩৮৩)
গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। আল বানী যঈফুত তিরমিযী (৬৫৮) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। মুনযির
আত তারগীব ওয়াত তারহীব (১/১৫১) গ্রন্থে তার সানাদ সহীহ ও হাসান বলেছেন। আল বানী সহীহুত
তিরমিয়ী (৬৫৮) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার মুহাল্লা (৭/৩১) গ্রন্থে বলেছেন,
তার দ্বারা দালীল গ্রহন করা যাবে। আল বানী যঈফুত তারগীব (৬৫১) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের
মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ
১০.
লাগাতার (ইফতার না করে)
সওম রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬২
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- قَالَ: نَهَى
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- عَنِ الوِصَالِ،
فَقَالَ رَجُلٌ
مِنَ الْمُسْلِمِينَ:
فَإِنَّكَ يَا
رَسُولَ اللَّهِ
تُوَاصِلُ? قَالَ:
«وَأَيُّكُمْ مِثْلِي?
إِنِّي أَبِيتُ
يُطْعِمُنِي رَبِّي
وَيَسْقِينِي». فَلَمَّا
أَبَوْا أَنْ
يَنْتَهُوا عَنِ
الوِصَالِ وَاصَلَ
بِهِمْ يَوْمًا،
ثُمَّ يَوْمًا،
ثُمَّ رَأَوُا
الهِلَالَ، فَقَالَ:
«لَوْ تَأَخَّرَ
الهِلَالُ لَزِدْتُكُمْ»
كَالْمُنَكِّلِ لَهُمْ
حِينَ أَبَوْا
أَنْ يَنْتَهُوا.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ইফতার না করে লাগাতার
সওম রেখো না। তখন মুসলিমদের মধ্য হতে জনৈক ব্যক্তি বলে উঠলো ঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি
তো ইফতার না করে লাগাতার সওম রাখেন। উত্তরে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার মত কে আছ? আমি রাত কাটাই তাতেই আমার রব আমাকে খাওয়ান ও
পান করান। কিন্তু তারা লাগাতার সওম রাখা থেকে বিরত হলো না। ফলে তাদের সঙ্গে নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও দু'দিন অথবা (বর্ণনাকারী বলেছিলেন) দু' রাত লাগাতার সওম রাখলেন।
এরপর তারা নতুন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
যদি চাঁদ (আরও কয়েক দিন) দেরী করে উঠত, তাহলে আমিও (লাগাতার সওম রেখে) তোমাদের সওমের
সময়কে বাড়িয়ে দিতাম, তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য। (বিসাল অর্থ পানাহার
না করেই বিরতিহীনভাবে সওম পালন করা)। [৭০৮]
[৭০৮]
বুখারী ৬৭০১, মুসলিম ১৬৪২, তিরমিয়ী ১৫২৭, নাসায়ী ৩৮৫২, ৩৮৫৩, ৩৮৫৪, আবু দাউদ ২৩০১,
আহমাদ ১১৬২৭, ১১৭১৭, ১২৪৭৮
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১১.
রোযাদার ব্যক্তির যা
পরিত্যাগ করা উচিত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৩
وَعَنْهُ قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم -: «مَنْ لَمْ يَدَعْ
قَوْلَ الزُّورِ
وَالعَمَلَ بِهِ،
وَالجَهْلَ، فَلَيْسَ
لِلَّهِ حَاجَةٌ
فِي أَنْ
يَدَعَ طَعَامَهُ
وَشَرَابَهُ» رَوَاهُ
البُخَارِيُّ، وَأَبُو
دَاوُدَ وَاللَّفْظُ
لَهُ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ
করা আর মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই।
-শব্দ বিন্যাস আবু দাউদের।” [৭০৯]
[৭০৯]
বুখারী ১৯০৩, ৬০৫৭, তিরমিয়ী ৭০৭, ২৩৬২, আবূ দাউদ ২৩৬২, ইবনু মাজাহ ১৬৮৯, আহমাদ ৮৫২৯,
১০১৮৪
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১২.
রোযাদারের চুম্বন এবং
স্পৰ্শ করার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৪
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا قَالَتْ:
كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - يُقَبِّلُ
وَهُوَ صَائِمٌ،
وَيُبَاشِرُ وَهُوَ
صَائِمٌ، وَلَكِنَّهُ
أَمْلَكُكُمْ لِإِرْبِهِ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ،
وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ
وَزَادَ فِي
رِوَايَةٍ: فِي
رَمَضَانَ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে
গা লাগাতেন। তবে তিনি তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন।
-শব্দ মুসলিমের।
মুসলিম
ভিন্ন একটি বর্ণনায় "তিনি রমযানে এরূপ করেছেন" কথাটি বৃদ্ধি করেছেন।” [৭১০]
[৭১০]
বুখারী ১৯২৭, ১৯২৮, মুসলিম ১১০৪, তিরমিয়ী ৭২৮, ৭২৯, আবূ দাউদ ২৩৮২, ২৩৮৩, ২৩৮৪, ইবনু
মাজাহ ১৬৮৩, ১৬৮৭, আহমাদ ২৩৬১০, ২৩৬২৪, মুওয়াত্তা মালেক ৬৪৬, দারেমী ৭২৯, ১৭২২
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৩.
সাওম পালনকারীর শিঙ্গা
লাগানোর বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৫
وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا؛
أَنَّ النَّبِيَّ
- صلى الله
عليه وسلم
- احْتَجَمَ وَهُوَ
مُحْرِمٌ، وَاحْتَجَمَ
وَهُوَ صَائِمٌ.
رَوَاهُ البُخَارِيُّ
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহরিম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন
এবং সায়িম (রোযা রাখা) অবস্থায়ও শিঙ্গা লাগিয়েছেন। [৭১১]
[৭১১]
বুখারী ১৮২৫, ১৯৩৮, ২৯২৯, ২১০৩, মুসলিম ১২০২, তিরমিয়ী ৭৭৫, ৭৭৬, ৭৭৭, নাসায়ী ২৮৪৫,
২৮৪৬, ২৮৪৭, ১৮২৫, ইবনু মাজাহ ১৬৮২, ২০৮১, আহমাদ ১৮৫২, ১৯২২, দারেমী ১৮১৯, ১৯২১ ।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৬
وَعَنْ شَدَّادِ
بْنِ أَوْسٍ
- رضي الله
عنه - أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- أَتَى عَلَى
رَجُلٍ بِالبَقِيعِ
وَهُوَ يَحْتَجِمُ
فِي رَمَضَانَ.
فَقَالَ: «أَفْطَرَ
الحَاجِمُ وَالمَحْجُومُ»
رَوَاهُ الخَمْسَةُ
إِلَّا التِّرْمِذِيَّ،
وَصَحَّحَهُ أَحْمَدُ
وَابْنُ خُزَيْمَةَ
وَابْنُ حِبَّانَ
শাদাদ
বিন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাকী নামক স্থানে এক ব্যক্তির নিকট এলেন যে রমযান
মাসে রক্তমোক্ষণ (শিঙ্গা লাগিয়েছিল) করছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ রক্তমোক্ষক ও যার রক্তমোক্ষণ করা হয়েছে তারা উভয়ে রোযা ভঙ্গ করেছে।
-আহমাদ, ইবনু খুযাইমাহ ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ সাব্যস্ত করেছেন।” [৭১২]
[৭১২]
আবু দাউদ ২৩৬৭, ২৩৬৯, ২৩৭০, ২৩৭১, ইবনু মাজাহ ১৬৮০, ১৬৮১, আহমাদ ১৬৬৬৮, ১৬৬৭৫, দারেমী
১৭৩০ ।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৭
وَعَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ
- رضي الله
عنه - قَالَ:
أَوَّلُ مَا
كُرِهَتِ الحِجَامَةُ
لِلصَّائِمِ; أَنَّ
جَعْفَرَ بْنَ
أَبِي طَالِبٍ
احْتَجَمَ وَهُوَ
صَائِمٌ، فَمَرَّ
بِهِ النَّبِيُّ
- صلى الله
عليه وسلم
- فَقَالَ: «أَفْطَرَ
هَذَانِ»،
ثُمَّ رَخَّصَ
النَّبِيُّ - صلى
الله عليه
وسلم - بَعْدُ
فِي الحِجَامَةِ
لِلصَّائِمِ، وَكَانَ
أَنَسٌ يَحْتَجِمُ
وَهُوَ صَائِمٌ.
رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيُّ
وَقَوَّاهُ
আনাস
বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, প্রথম দিকে সিঙ্গা লাগান মাকরূহ হবার কারণ ছিল, জাফার বিন আবু তালিব সওমের অবস্থায়
সিঙ্গা লাগিয়েছিলেন আর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন,
তিনি বললেন-এরা দুজনেই সওম ভঙ্গ করে ফেলেছে। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সায়িমকে সিঙ্গা লাগানোর ব্যাপারে অবকাশ দিয়েছেন। ফলে আনাস (রাঃ) সায়িম
অবস্থায় সিঙ্গা লাগাতেন। -দারাকুৎনী একে কাবি (মজবুত) সানাদ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
[৭১৩]
[৭১৩]
ইমাম যাহাবী তানকীহুত তাহকীক ১/৩৮২ গ্রন্থে বলেন, খালেদ নামে এতে একজন বর্ণনাকারী আছে
যাকে ইমাম আহমাদ মুনকার বর্ণনাকারীদের মধ্যে গণ্য করেছেন। আরও রয়েছে আবদুল্লাহ ইবনুল
মুসান্না যাকে ইমাম আবৃ দাউদ দুর্বল বলেছেন। তথাপিও ইমাম বুখারী এ দুজনের বর্ণিত হাদীসকে
দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আলবানী ইরওয়াউল গলীল (৪/৭২) গ্রন্থে বলেছেন, সে বিশ্বস্ত
রাবী।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৪.
রোযাদারের সুরমা লাগানোর
বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৮
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا أَنَّ
النَّبِيَّ - صلى
الله عليه
وسلم - اكْتَحَلَ
فِي رَمَضَانَ،
وَهُوَ صَائِمٌ.
رَوَاهُ ابْنُ
مَاجَهْ بِإِسْنَادٍ
ضَعِيفٍ، قَالَ
التِّرْمِذِيُّ: لَا
يَصِحُّ فِيهِ
شَيْءٌ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সায়ম (রোযা রাখা) অবস্থায় চোখে সুরমা লাগিয়েছেন।
ইবনু মাজহ দুর্বল সনদে। তিরমিয়ী বলেছেন-এ অধ্যায়ে এ ব্যাপারে কোন সহীহ বর্ণনা নেই।
[৭১৪]
[৭১৪]
তিরমিয়ী ৭২৬। ইবনু হাজার আসকালানী আত-তালখীসুল হাবীর (২/৭৮২) গ্রন্থে সাঈদ ইবনু সাঈদকে
দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমিন বুলুগুল মারামের শরাহ (৩/২২২) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৫.
ভুলে পানাহারকারীর সাওমের
বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৬৯
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «مَنْ نَسِيَ
وَهُوَ صَائِمٌ،
فَأَكَلَ أَوْ
شَرِبَ، فَلْيُتِمَّ
صَوْمَهُ، فَإِنَّمَا
أَطْعَمَهُ اللَّهُ
وَسَقَاهُ» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সওম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা
পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সওম পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।
[৭১৫]
[৭১৫]
বুখারী ১৯৩৩, ৬৬৬৯, মুসলিম ১১৫৫, তিরমিয়ী ৭২১, আবু দাউদ ২৩৯৮, ইবনু মাজাহ ১৬৭৩, আহমাদ
৮৮৮৯, ৯২০৫, দারেমী ১৭২৬, ১৭২৭
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭০
وَلِلْحَاكِمِ: «مَنْ
أَفْطَرَ فِي
رَمَضَانَ نَاسِيًا
فَلَا قَضَاءَ
عَلَيْهِ وَلَا
كَفَّارَةَ» وَهُوَ
صَحِيحٌ
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
হাকিমে
আছে, যে ব্যক্তি ভুলক্রমে ইফতার করে ফেলল তার জন্য কোন কাযা বা কাফফারা নেই। হাদীসটি
সহীহ। [৭১৬]
৭১৬]
হাসান। হাকিম ১/৪৩০, ইবনু খুযাইমাহ ১৯৯০
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৬.
সাওমের ক্ষেত্রে বমির
প্রভাব
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭১
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم -: «مَنْ ذَرَعَهُ القَيْءُ
فَلَا قَضَاءَ
عَلَيْهِ، وَمَنِ
اسْتَقَاءَ فَعَلَيْهِ
القَضَاءُ» رَوَاهُ
الخَمْسَةُ، وَأَعَلَّهُ
أَحْمَدُ، وَقَوَّاهُ
الدَّارَقُطْنِيُّ
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন ঃ যার মুখ ভরে বমি হয় তাকে রোযা
কায করতে হবে না। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করে তাকে রোযার কাযা করতে হবে। -আহমাদ
একে দুর্বল সাব্যস্ত করেছেন ও দারাকুৎনী একে মজবুত সানাদের হাদীস হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
[৭১৭]
[৭১৭]
আবু দাউদ ২৩৮০, তিরমিয়ী ৭২০, ইবনু মাজাহ ১৬৭৩, আহমাদ ১০০৮৫, দারেমী ১৭২৯
হাদিসের
মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৭.
সফরে রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭২
وَعَنْ جَابِرِ
بْنِ عَبْدِ
اللَّهِ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا;
أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - خَرَجَ
عَامَ الفَتْحِ
إِلَى مَكَّةَ
فِي رَمَضَانَ،
فَصَامَ حَتَّى
بَلَغَ كُرَاعَ
الغَمِيمِ، فَصَامَ
النَّاسُ، ثُمَّ
دَعَا بِقَدَحٍ
مِنْ مَاءٍ
فَرَفَعَهُ، حَتَّى
نَظَرَ النَّاسُ
إِلَيْهِ، ثُمَّ
شَرِبَ، فَقِيلَ
لَهُ بَعْدَ
ذَلِكَ: إِنَّ
بَعْضَ النَّاسِ
قَدْ صَامَ.
قَالَ: «أُولَئِكَ
العُصَاةُ، أُولَئِكَ
العُصَاةُ»
জাবির
বিন আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কা বিজয়কালে রমযান মাসে (মদীনা থেকে মাক্কাভিমুখে)
যাত্রা করেন। তিনি ও তার সঙ্গীগণ সওম পালন করছিলেন। যখন তিনি কুরা'আল গামীম নাম স্থানে
পৌছলেন তখন এক পেয়ালা পানি নিয়ে ডাকলেন ও ঐ পানির পেয়ালা এমন উচু করে ধরলেন যাতে
লোকেরা তা দেখতে পেলো। তারপর তিনি তা পান করলেন। অতঃপর তাকে বলা হলো এরপরও কিছু লোক
রোযা রেখেছে। তিনি : বললেন, ওরা অবাধ্য, ওরা অবাধ্য!
ভিন্ন
একটি বর্ণনায় এ শব্দ রয়েছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হল,
লোকেদের উপর (আজ) সওম পালন কঠিন হয়ে পড়েছে। আপনি কি করেন এরই অপেক্ষায় তারা আছে।
তারপর আসরের পরে পানির পেয়াল নিয়ে ডাকলেন ও অতঃপর তিনি পানি পান করলেন। [৭১৮]
[৭১৮]
মুসলিম ১১:১৪, তিরমিয়ী ৭১০, নাসায়ী ২২৬৩।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৩
وَعَنْ حَمْزَةَ
بْنِ عَمْرٍو
الأَسْلَمِيِّ - رضي
الله عنه
- أَنَّهُ قَالَ:
يَا رَسُولَ
اللَّهِ! أَجِدُ
بِي قُوَّةً
عَلَى الصِّيَامِ
فِي السَّفَرِ،
فَهَلْ عَلَيَّ
جُنَاحٌ? فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «هِيَ رُخْصَةٌ
مِنَ اللَّهِ،
فَمَنْ أَخَذَ
بِهَا فَحَسَنٌ،
وَمَنْ أَحَبَّ
أَنْ يَصُومَ
فَلَا جُنَاحَ
عَلَيْهِ» رَوَاهُ
مُسْلِمٌ
হামযাহ
বিন আমর আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বললেন, হে আল্লাহর রসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি সফরের অবস্থায় সওম
পালনের মত ক্ষমতা রাখি। রোযা পালন আমার জন্য কি কোন দূষনীয় হবে। তদুত্তরে রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন-এটা আল্লাহ প্রদত্ত অবকাশ, যে তা গ্রহণ করবে
সে তাতে উত্তম করবে, আর যে সওম পালন পছন্দ করবে তারও কোন ক্ষতি নেই।” [৭১৯]
[৭১৯]
মুসলিম ২৪৭৭, বুখারী ১৪৩, তিরমিয়ী ২৮২৪, ইবনু মাজাহ ১৬৬ আহমাদ ২২৯৩, ২৪১৮, ২৮৭৪।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৪
وَأَصْلُهُ فِي
المُتَّفَقِ مِنْ
حَدِيثِ عَائِشَةَ;
أَنَّ حَمْزَةَ
بْنَ عَمْرٍو
سَأَلَ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাদীসটির
মূল মুত্তাফাকুন আলাইহি (বুখারী ও মুসলিমে) রয়েছে। তাতে আছেঃ হামযাহ বিন আমর জিজ্ঞেস
করলেন। [৭২০]
[৭২০]
বুখারী ১৯৪২, ১৯৪৩, মুসলিম ১১২১, তিরমিয়ী ৭১১, নাসায়ী ২৩০৬, আবু দাউদ ২৪০২, ইবনু
মাজাহ ১৬৬২, আহমাদ ২৫০৭৯। পূর্ণাজ্ঞ হাদিসটি হচ্ছে , হামযা বিন আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সফরে রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন,
তদুত্তরে তিনি বললেন, যদি রোযা রাখতে চাও তাহলে রাখ। আর যদি না রাখতে চাও, তাহলে ভেঙ্গে
ফেল।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৮.
দূর্বল-অক্ষম ব্যক্তিদের
রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৫
وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
قَالَ: رُخِّصَ
لِلشَّيْخِ الكَبِيرِ
أَنْ يُفْطِرَ،
وَيُطْعِمَ عَنْ
كُلِّ يَوْمٍ
مِسْكِينًا، وَلَا
قَضَاءَ عَلَيْهِ.
رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيُّ
وَالحَاكِمُ، وَصَحَّحَاهُ
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, অতি বৃদ্ধের জন্য সওম পালনের ব্যাপারে এই অবকাশ দেয়া হয়েছে যে, সে প্রতি সওমের
বদলে একজন মিসকীনকে ইফতার করাবে ও খাওয়াবে। তার উপর কাযাও নেই। দারাকুৎনী ও হাকিম
একে সহীহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। [৭২১]
[৭২১]
হাদীসটি সহীহ। দারাকুতনী ২/২০৫/৬, হাকিম ১/৪৪০। ইমাম দারাকুতনী বলেনঃ এর ইসনাদ সহীহ।
ইমাম হাকিম বলেনঃ হাদীসটি বুখারীর শর্তানুপাতে সহীহ।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৯.
দিনের বেলায় রোযাদার
ব্যক্তি সহবাস করলে তার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৬
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- قَالَ: جَاءَ
رَجُلٌ إِلَى
النَّبِيِّ - صلى
الله عليه
وسلم - فَقَالَ:
هَلَكْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ،
قَالَ: «وَمَا
أَهْلَكَكَ?» قَالَ:
وَقَعْتُ عَلَى
امْرَأَتِي فِي
رَمَضَانَ، فَقَالَ:
«هَل تَجِدُ
مَا تُعْتِقُ
رَقَبَةً?» قَالَ:
لَا. قَالَ:
«فَهَلْ تَسْتَطِيعُ
أَنْ تَصُومَ
شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ?»
قَالَ: لَا.
قَالَ: «فَهَلْ
تَجِدُ مَا
تُطْعِمُ سِتِّينَ
مِسْكِينًا?» قَالَ:
لَا، ثُمَّ
جَلَسَ، فَأُتِي
النَّبِيُّ - صلى
الله عليه
وسلم - بِعَرَقٍ
فِيهِ تَمْرٌ.
فَقَالَ: «تَصَدَّقْ
بِهَذَا»،
فَقَالَ: أَعَلَى
أَفْقَرَ مِنَّا
? فَمَا بَيْنَ
لَابَتَيْهَا أَهْلُ
بَيْتٍ أَحْوَجُ
إِلَيْهِ مِنَّا،
فَضَحِكَ النَّبِيُّ
- صلى الله
عليه وسلم
- حَتَّى بَدَتْ
أَنْيَابُهُ، ثُمَّ
قَالَ: «اذْهَبْ
فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ»
رَوَاهُ السَّبْعَةُ،
وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম।
এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- বললেনঃ কি বিষয় তোমাকে ধ্বংস করেছে? সে বলল,
আমি সায়িম (রোযা রাখা) অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আযাদ করার মত কোন ক্রীতদাস তুমি পাবে কি? সে বলল, না।
তিনি বললেনঃ তুমি কি একাধারে দু'মাস সওম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেনঃ
ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না। তারপর সে বসে রইল। এ সময় নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক আরাক পেশ করা হল যাতে খেজুর ছিল। আরাক হল ঝুড়ি। নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন ঃ এগুলো নিয়ে সদাকাহ করে দাও। তখন লোকটি
বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার চাইতেও বেশি অভাবগ্রস্তকে সদাকাহ করব? আল্লাহর শপথ, মাদীনার
উভয় লাবা অর্থাৎ উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে উঠলেন এবং তার দাঁত (আনইয়াব) দেখা গেল।
অতঃপর তিনি বললেন ; এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও [৭২২] -শব্দ বিন্যাস মুসলিমের।
[৭২২]
বুখারী ১৯৩৬, মুসলিম ১১১১, তিরমিযী ৭২৪, আবূ দাউদ ২৩৯০,২৩৯২, ইবনু মাজাহ ১৬৭১, আহমাদ
৬৯০৫, ৭২৪৮, মালিক ৬৬০, দারিমী ১৭১৬।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
২০.
অপবিত্র অবস্থায় সকালকারীর
সাওমের বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৭
و 678 - وَعَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ
سَلَمَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
أَنَّ النَّبِيَّ
- صلى الله
عليه وسلم
- كَانَ يُصْبِحُ
جُنُبًا مِنْ
جِمَاعٍ، ثُمَّ
يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
زَادَ مُسْلِمٌ
فِي حَدِيثِ
أُمِّ سَلَمَةَ:
وَلَا يَقْضِي
আয়িশা
ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যৌন অপবিত্রতা বা জুনুবী অবস্থায় সকাল (সুবহে
সাদিক) করতেন, তারপর (ফজরের সলাতের পূর্বে) গোসল করতেন ও সওম পালন করতেন। মুসলিমে উম্মু
সালামাহর হাদীসে অতিরিক্ত আছে, “তিনি ঐরুপ সওমের কাযা আদায় করতেন না। [৭২৩]
[৭২৩]
বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, ১৯৩২, মুসলিম ১১০৯ তিরমিযী ৭৭৯, আবু দাউদ ১৯৮৪, ১৯৮৫, ২৩৮৮, আহমাদ
২৩৫৪২, মুওয়াত্তা মালেক ৬৪১, ৬৪২, দারেমী ১৭২৫
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং- ৬৭৮
و 678 - وَعَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ
سَلَمَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
أَنَّ النَّبِيَّ
- صلى الله
عليه وسلم
- كَانَ يُصْبِحُ
جُنُبًا مِنْ
جِمَاعٍ، ثُمَّ
يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
زَادَ مُسْلِمٌ
فِي حَدِيثِ
أُمِّ سَلَمَةَ:
وَلَا يَقْضِي
আয়িশা
ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যৌন অপবিত্রতা বা জুনুবী অবস্থায় সকাল (সুবহে
সাদিক) করতেন, তারপর (ফজরের সলাতের পূর্বে) গোসল করতেন ও সওম পালন করতেন। মুসলিমে উম্মু
সালামাহর হাদীসে অতিরিক্ত আছে, “তিনি ঐরুপ সওমের কাযা আদায় করতেন না। [৭২৩]
[৭২৩]
বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, ১৯৩২, মুসলিম ১১০৯ তিরমিযী ৭৭৯, আবু দাউদ ১৯৮৪, ১৯৮৫, ২৩৮৮, আহমাদ
২৩৫৪২, মুওয়াত্তা মালেক ৬৪১, ৬৪২, দারেমী ১৭২৫
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
২১.
মৃত ব্যক্তির উপর ওয়াজিব
হওয়া সাওম কাযা করার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৭৯
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا; أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «مَنْ
مَاتَ وَعَلَيْهِ
صِيَامٌ صَامَ
عَنْهُ وَلِيُّهُ»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সওমের কাযা যিম্মায় রেখে যদি কোন
ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার অভিভাবক তার পক্ষ হতে সওম আদায় করবে। [৭২৪]
[৭২৪]
বুখারী ১৯৫২, মুসলিম ১১৪৭, আবূ দাউদ ২৪০০, ২৩১১, আহমাদ ২৩৮৮০। সতর্কবানী ঃ উক্ত হাদীসে
যে রোযা রাখার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে তা শুধুমাত্র মানতের রোযা।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৮.
আইয়্যামুত তাশরীকের
(ঈদুল আযহার পরবর্তী তিন দিন) রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৭
وَعَنْ نُبَيْشَةَ
الهُذَلِيِّ - رضي
الله عنه
- قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «أَيَّامُ التَّشْرِيقِ
أَيَّامُ أَكْلٍ
وَشُرْبٍ، وَذِكْرٍ
لِلَّهِ - عز
وجل -» رَوَاهُ مُسْلِمٌ
নুবায়শাতুল
হুযালী থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে (যিলহাজের ১১ হতে
১৩ তারিখ) খাওয়া, পানাহার ও আল্লাহ্ তাআলার যিকর আযকারের দিন। অর্থাৎ কুরবানীর দিনসহ
তার পরে আরো তিনদিন মতান্তরে দু-দিন সওম পালন নিষিদ্ধ। [৭৩২]
[৭৩২]
মুসলিম ১১৪১, আহমাদ ২০১৯৮, ২০২০২।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৮
وَعَنْ عَائِشَةَ
وَابْنِ عُمَرَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُمْ قَالَا:
لَمْ يُرَخَّصْ
فِي أَيَّامِ
التَّشْرِيقِ أَنْ
يُصَمْنَ إِلَّا
لِمَنْ لَمْ
يَجِدِ الهَدْيَ.
رَوَاهُ البُخَارِيُّ
আয়িশা
(রা) ও ইবনু ‘উমার (রা) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা
উভয়ে বলেন, যাঁর নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ব্যতীত অন্য কারও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে
সওম পালন করার অনুমতি দেয়া হয়নি। [৭৩৩]
[৭৩৩]
বুখারী ১৯৯৭, ১৯৯৯, মুওয়াত্তা মালেক ৯৭২।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়
(১) :
নফল
সওম ও তার নিষিদ্ধকাল
পরিচ্ছেদ
০১.
যে দিনগুলোতে রোযা রাখা
মুস্তাহাব
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮০
عَنْ أَبِي
قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ
- رضي الله
عنه - أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- سُئِلَ عَنْ
صَوْمِ يَوْمِ
عَرَفَةَ، قَالَ:
«يُكَفِّرُ السَّنَةَ
المَاضِيَةَ وَالبَاقِيَةَ»
وَسُئِلَ عَنْ
صِيَامِ يَوْمِ
عَاشُورَاءَ، فَقَالَ:
«يُكَفِّرُ السَّنَةَ
المَاضِيَةَ» وَسُئِلَ
عَنْ صَوْمِ
يَوْمِ الاثْنَيْنِ،
قَالَ: «ذَاكَ
يَوْمٌ وُلِدْتُ
فِيهِ، وَبُعِثْتُ
فِيهِ، أَوْ
أُنْزِلَ عَلَيَّ
فِيهِ» رَوَاهُ
مُسْلِمٌ
আবূ
কাতাদাহ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আরাফাহর দিনে সওম সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হয়ে বললেন-এর
দ্বারা বিগত ও আগত এক বছরের গোনাহ (পাপ) মোচন হয়। "আশুরাহর দিনের সওম পালন সম্বন্ধে
জিজ্ঞাসিত হয়ে বললেন-বিগত এক বছরের পাপ মোচন হয়। সোমবারের দিনে সওম পালন সম্বন্ধে
জিজ্ঞাসিত হয়ে বললেন, এটা সেদিন যেদিন আমি জন্মেছি এবং নুবুওয়াত লাভ করেছি আর আমার
উপর (কুরআন) অবতীর্ণ হয়েছে।" [৭২৫]
[৭২৫]
মুসলিম ১১৬২, তিরমিযী ৬৭৬, নাসায়ী ২৩৮২, আবু দাউদ ২৪২৫, ইবনু মাজাহ ১৭১৩, আহমাদ ২২০২৪
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০২.
শাওয়াল মাসের ছয় রোযার
ফযীলত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮১
وَعَنْ أَبِي
أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ
- رضي الله
عنه - أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «مَنْ
صَامَ رَمَضَانَ،
ثُمَّ أَتْبَعَهُ
سِتًّا مِنْ
شَوَّالٍ كَانَ
كَصِيَامِ الدَّهْرِ»
رَوَاهُ مُسْلِمٌ
আবূ
আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- যে ব্যক্তি রমযানের সওমব্রত পালনের পর
শাওয়ালেরও ৬টি সওম পালন করল, (পুণ্যের দিক দিয়ে) পূর্ণ একটি বছর সওম পালন করল ।
[৭২৬]
[৭২৬]
মুসলিম ১১৬৪, তিরমিয়ী ৭৫৯, আবূ দাউদ ২৪৩৩, ইবনু মাজাহ ১৭১৬, আহমাদ ২৩০২২।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৩.
আল্লাহর রাস্তায় রোযা
রাখার ফযীলত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮২
وَعَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ
- رضي الله
عنه - قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم -: «مَا مِنْ عَبْدٍ
يَصُومُ يَوْمًا
فِي سَبِيلِ
اللَّهِ إِلَّا
بَاعَدَ اللَّهُ
بِذَلِكَ اليَوْمِ
عَنْ وَجْهِهِ
النَّارَ سَبْعِينَ
خَرِيفًا» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ، وَاللَّفْظُ
لِمُسْلِمٍ
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-যে বান্দা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত অবস্থায়
একটি দিন সওম পালন করবে আল্লাহ তার (বিনিময়ে) তার চেহারাকে জাহান্নাম হতে সত্তর বছরের
দূরত্বে রাখবেন। শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। [৭২৭]
[৭২৭]
বুখারী ২৮৪০, মুসলিম ১১৫৩, তিরমিয়ী ১৬২৩, নাসায়ী ২২৫১, ২২৫৩, ২২৫২, ইবনু মাজাহ ১৭১৭,
আহমাদ ১০৮২৬, দারেমী ২৩৯৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৪.
নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নফল রোযা পালনের পদ্ধতি
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৩
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا قَالَتْ:
كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - يَصُومُ
حَتَّى نَقُولَ
لَا يُفْطِرُ،
وَيُفْطِرُ حَتَّى
نَقُولَ لَا
يَصُومُ، وَمَا
رَأَيْتُ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - اسْتَكْمَلَ
صِيَامَ شَهْرٍ
قَطُّ إِلَّا
رَمَضَانَ، وَمَا
رَأَيْتُهُ فِي
شَهْرٍ أَكْثَرَ
مِنْهُ صِيَامًا
فِي شَعْبَانَ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ،
وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একাধারে (এত অধিক) সওম পালন
করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি)
সওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সওম
পালন করবেন না। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রমাযান ব্যতীত
কোন পুরা মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা'বান মাসের চেয়ে কোন মাসে অধিক (নফল) সওম
পালন করতে দেখিনি। শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। [৭২৮]
[৭২৮]
বুখারী ৪৩, ১১৩২, ১১৫১, ১৯৬৯, মুসলিম ৭৪১, ৭৮২, ৭৮৩, ৭৮৫, নাসায়ী ৭৬২, ১৬১৬, ১৬৪২,
আবু দাউদ ১২১৭, ১২৬৮, ১২৭০, ইবনু মাজাহ ১৭১০, ৪২২৮, আহমাদ ২৩৫২৩, মুওয়াত্তা মালেক
৪২২, ৬৮৮।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৫.
প্রত্যেক মাসে তিন দিন
রোজা রাখার ফযীলত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৪
وَعَنْ أَبِي
ذَرٍّ - رضي
الله عنه
- قَالَ: أَمَرَنَا
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- أَنْ نَصُومَ
مِنَ الشَّهْرِ
ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ:
ثَلَاثَ عَشْرَةَ،
وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ،
وَخَمْسَ عَشْرَةَ.
رَوَاهُ النَّسَائِيُّ
وَالتِّرْمِذِيُّ، وَصَحَّحَهُ
ابْنُ حِبَّانَ
আবূ
যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে প্রতি মাসে তিনটি (নফল)
সওম পালনের (ঐচ্ছিক) নির্দেশ দিলেন, (চান্দ্র মাসের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ। -ইবনু হিব্বান
একে সহীহ বলেছেন।” [৭২৯]
[৭২৯]
তিরমিয়ী ৭৬১, নাসায়ী ২৪২৪, হাদিসটি হাসান, তাওযিহুল আহকাম ৩/৫৪০ পৃঃ
হাদিসের
মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৬.
স্বামীর উপস্থিতিতে স্ত্রীর
নফল রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৫
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - قَالَ:
«لَا يَحِلُّ
لِلمَرْأَةِ أَنْ
تَصُومَ وَزَوْجُهَا
شَاهِدٌ إِلَّا
بِإِذْنِهِ» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ، وَاللَّفْظُ
لِلْبُخَارِيِّ زَادَ
أَبُو دَاوُدَ:
«غَيْرَ رَمَضَانَ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন স্বামী উপস্থিত থাকবে, তখন স্বামীর
অনুমতি ব্যতীত মহিলার জন্য সওম পালন বৈধ নয়। -শব্দ বিন্যাস বুখারী। আবু দাউদে একথাও
আছে, "রমাযানের সওম ব্যতীত’’। [৭৩০]
[৭৩০]
বুখারী ২০৬৬, ৫১৯২, ৫১৯৫, ৫২৬০, মুসলিম ১০২৬, আবু দাউদ ১৬৮৭, আহমাদ ২৭৪০৫।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৭.
দুই ঈদে রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৬
وَعَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ
- رضي الله
عنه - أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- نَهَى عَنْ
صِيَامِ يَوْمَيْنِ:
يَوْمِ الفِطْرِ
وَيَوْمِ النَّحْرِ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অবশ্য
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুটো দিন সওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।
-ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহার (কুরবানীর) দিন।
[৭৩১]
বুখারী ৩৬৭, ১৯৯১, ২১৪৪, ২১৪৭, ৫৮২০, ৫৮২২, মুসলিম ৮২৭, নাসায়ী ৫৬৬, ৫৬৭, আবূ দাউদ
২৪১৭, ইবনু মাজাহ ২১৭০, ২৫৫৯, আহমাদ ১০৬২৯, ১০৭১০ |
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৯.
জুমু‘আর দিনে রোযা রাখার
বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৮৯
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- عَنِ النَّبِيِّ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «لَا
تَخْتَصُّوا لَيْلَةَ
الجُمُعَةِ بِقِيَامٍ
مِنْ بَيْنِ
اللَّيَالِي، وَلَا
تَخْتَصُّوا يَوْمَ
الجُمُعَةِ بِصِيَامٍ
مِنْ بَيْنِ
الأَيَّامِ، إِلَّا
أَنْ يَكُونَ
فِي صَوْمٍ
يَصُومُهُ أَحَدُكُمْ»
رَوَاهُ مُسْلِمٌ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, রাতগুলোর মধ্যে থেকে শুধু জুমু‘আহর রাতকে
কিয়ামের (তাহাজ্জুদের) জন্য নির্দিষ্ট কর না। আর দিনগুলোর মধ্যে শুধু জুমু‘আহর দিনটিকে
সওম পালনের জন্য নির্দিষ্ট কর না। হাঁ, তবে কেউ (পূর্ববর্তী অভ্যাসের কারণে এক নির্দিষ্ট
তারিখে) সওম পালন করে আসছে সেই তারিখটি যদি জুমুআহর দিনে পড়ে যায় তবে কোন দোষ নেই।
[৭৩৪]
[৭৩৪]
বুখারী ১৯৮৫, মুসলিম ১১৪৪, ইরমিযী ৭৪৩, আবু দাউদ ২৪২০, ইবনু মাজাহ ১৭২৩, আহমাদ ৭৩৪১,
৭৭৮০, ১০৫০৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯০
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «لَا يَصُومَنَّ
أَحَدُكُمْ يَوْمَ
الجُمُعَةِ، إِلَّا
أَنْ يَصُومَ
يَوْمًا قَبْلَهُ،
أَوْ يَوْمًا
بَعْدَهُ» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন শুধু
জুম‘আর দিনে সওম পালন না করে কিন্তু তার পূর্বে একদিন অথবা পরের দিন (যদি পালন করে
তবে জুমু‘আর দিনে সওম পালন করা যায় )। [৭৩৫]
[৭৩৫]
বুখারী ১৯৮৫, মুসলিম ১১৪৪, তিরমিযী ৭৪৩, আবু দাউদ ২৪২০, ইবনু মাজাহ ১৭২৩, আহমাদ ৭৩৪১,
৭৭৮০, ১০৫০৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১০.
মধ্য শা‘বান হলে রোযা
রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯১
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - قَالَ:
«إِذَا انْتَصَفَ
شَعْبَانُ فَلَا
تَصُومُوا» رَوَاهُ
الخَمْسَةُ، وَاسْتَنْكَرَهُ
أَحْمَدُ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন-শা‘বানের অর্ধেক (১৫ দিনগত) হলে কোন নফল
সওম পালন করবে না। -আহমাদ একে মুনকার হাদীসরূপে (অগ্রহণযোগ্য) আখ্যায়িত করেছেন। [৭৩৬]
[৭৩৬]
আবূ দাউদ ২৩৩৭, তিরমিযী ৭২৮, ইবনু মাজাহ ১৬৫১, আহমাদ ৯৪১৪, দারেমী ১৭৪০
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ
১১.
শনিবার ও রবিবার রোযা
রাখা নিষেধ
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯২
وَعَنِ الصَّمَّاءِ
بِنْتِ بُسْرٍ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «لَا
تَصُومُوا يَوْمَ
السَّبْتِ، إِلَّا
فِيمَا افْتُرِضَ
عَلَيْكُمْ، فَإِنْ
لَمْ يَجِدْ
أَحَدُكُمْ إِلَّا
لِحَاءَ عِنَبٍ،
أَوْ عُودَ
شَجَرَةٍ فَليَمْضُغْهَا»
رَوَاهُ الخَمْسَةُ،
وَرِجَالُهُ ثِقَاتٌ،
إِلَّا أَنَّهُ
مُضْطَرِبٌ، وَقَدْ
أَنْكَرَهُ مَالِكٌ،
وَقَالَ أَبُو
دَاوُدَ: هُوَ
مَنْسُوخٌ
আসসাম্মা
বিনতু বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফরয ব্যতীত তোমরা শনিবারে সওম পালন করনা।
যদি তোমরা খাবার মত কিছু না পাও তবে আঙ্গুরের ছিলকা বা গাছের ডালও চিবিয়ে নেবে। -এর
রাবীগুলো নির্ভরযোগ্য তবে এটা মুযতারিব হাদীস। মালিক এ হাদীস গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন
করেছেন। আবূ দাউদ বলেন, হাদীসটি মান্সুখ (রহিত)। [ ৭৩৭]
[৭৩৭]
আবূ দাউদ ২৪২১, তিরমিযী ৭৪৪, ইবনু মাজাহ ১৭২৬, আহমাদ ২৬৫২৪, দারেমী ১৭৪৯।
হাদিসের
মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ
১২.
শনিবার এবং রবিবারে রোযা
রাখার ব্যাপারে অনুমতি প্রদান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৩
وَعَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهَا،
أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - أَكْثَرَ
مَا كَانَ
يَصُومُ مِنَ
الأَيَّامِ يَوْمَ
السَّبْتِ، وَيَوْمَ
الأَحَدِ، وَكَانَ
يَقُولُ: «إِنَّهُمَا
يَوْمَا عِيدٍ
لِلمُشْرِكِينَ، وَأَنَا
أُرِيدُ أَنْ
أُخَالِفَهُمْ» أَخْرَجَهُ
النَّسَائِيُّ، وَصَحَّحَهُ
ابْنُ خُزَيْمَةَ،
وَهَذَا لَفْظُهُ
উম্মু
সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেসব দিনে সওম পালন করতেন তার মধ্যে শনি ও রবিবারেই
বেশী সওম পালন করতেন। আর তিনি বলতেন-এ দুটি দিন মুশরিকদের ‘ঈদ (খুশির) উদ্যাপনের দিন,
আমি তাদের বিপরীত করতে চাই। নাসায়ী ইবনু খুযাইমাহ একে সহীহ বলেছেন আর শব্দ বিন্যাস
তারই। [৭৩৮]
[৭৩৮]
নাসায়ী কুবরা ২/১৪৬, ইবনু খুযাইমাহ ২১৬৭।
শাইখ
আলবানী সহীহ ইবনু খুযাইমাহ (২১৬৮), তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ (২০১০) গ্রন্থে বলেছেন,
এর সনদ দুর্বল। সিলসিলা যঈফা (১০৯৯) গ্রন্থেও এর সনদের দুর্বলতার কথা বলেছেন। জিলবাবুল
মারআহ (১৭৯) গ্রন্থে বলেছেন, তাতে দূর্বলতা রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৩.
আরাফার দিবসে আরাফার
মাঠে উপস্থিত থেকে রোযা রাখার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৪
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- أَنَّ النَّبِيَّ
- صلى الله
عليه وسلم
- نَهَى عَنْ
صَوْمِ يَوْمِ
عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ.
رَوَاهُ الخَمْسَةُ
غَيْرَ التِّرْمِذِيِّ،
وَصَحَّحَهُ ابْنُ
خُزَيْمَةَ وَالحَاكِمُ،
وَاسْتَنْكَرَهُ العُقَيْلِيُّ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আরাফাহর ময়দানে অবস্থানকালে ‘আরাফাহ দিবসের সওম
পালন করতে নিষেধ করেছেন। -ইবনু খুযাইমাহ ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন, উকাইলী একে মুনকার
(অগ্রহণযোগ্য) বলেছেন। [৭৩৯]
[৭৩৯]
আবূ দাউদ ২৪৪০, ইবনু মাজাহ ১৭৩২।
ইবনু
উসাইমিন বুলুগুল মারামের শরাহ (৩/২৫৮) গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম নববী মাজমু’
(৬/৩৮০) গ্রন্থে বলেছেন, এর সনদে অপরিচিত রাবী রয়েছে। কিন্তু বিন বুলুগুল মারামের হাশিয়া
(৪২৫) গ্রন্থে তার সানদকে উত্তম বলেছেন। শাইখ আলবানী যঈফুল জামি’ (৬০৬৯) গ্রন্থে দুর্বল
বলেছেন। যঈফ তারগীব (৬১২), যঈফ আবূ দাউদ আবী (২৪৪০) দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমীন মারহুল
মুমতি’ (৬/৪৭১)।
ইবনু
উসাইমিন মারহুল বুখারী লি ইবনি উসাইমিন (৪/৯৯) গ্রন্থে বলেছেন, এতে দুর্বলতা রয়েছে।
ইবনু উসাইমিন শারহু বুলুগিল মারাম লি ইবনু উসাইমিন (৩/২৮৭) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল
হাদিস
পরিচ্ছেদ
১৪.
সারা বছর সাওম ব্রত পালনের
বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৫
وَعَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ
عَمْرٍو رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «لَا صَامَ
مَنْ صَامَ
الأَبَدَ» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
‘আবদুল্লাহ্
বিন ‘উমার (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিরতিহীন সওম পালন করে সেটা
সওম নয়। [৭৪০]
[৭৪০]
বুখারী ১১৩১, ১১৫২, ১১৫৩, ১৯৭৭, মুসলিম ১১৫৯, তিরমিযি ৭৭০, নাসায়ী ১৬৩০, ২২৪৪, ২২৮৮,
আবূ দাউদ ১২৮৮, ১২৮৯, ১২৯০, ইবনু মাজাহ ১২৪৬, ১৭১২, আহমাদ ৬৩৪১, ৬৪৫৬, ৬৪৮০, দারেমী
২৪৮৬।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৬
وَلِمُسْلِمٍ عَنْ
أَبِي قَتَادَةَ
بِلَفْظِ: «لَا
صَامَ وَلَا
أَفْطَرَ
বর্ণনাকারী
থেকে বর্ণিতঃ
মুসলিমে
আবূ কাতাদাহ হতে বর্ণিত আছে এরূপ শব্দে : ''সাওম ও ইফতার কোনটিই হয় না " [৭৪১]
[৭৪১]
মুসলিম ১১৬২, তিরমিযি ৭৬৭, নাসায়ী ২২৮২, ২২৮৩, আবূ দাউদ ২৪২৫, ইবনু মাজাহ ১৭১৩, আহমাদ
২২০২৪, ২২০৪৪।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
অধ্যায়
(২) :
ই’তিকাফ ও রামাযান মাসে
রাতের সলাত
পরিচ্ছেদ
০১.
রামাযান মাসে রাতের সলাতের
তাৎপর্য
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৭
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ - رضي
الله عنه
- أَنَّ رَسُولَ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - قَالَ:
«مَنْ قَامَ
رَمَضَانَ إِيمَانًا
وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ
لَهُ مَا
تَقَدَّمَ مِنْ
ذَنْبِهِ» مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আবূ
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব
লাভের আশায় তারাবীহর সলাতে দাড়াবে তার পূর্ববতী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। [৭৪২]
[৭৪২]
বুখারী ৩৫, ৩৭, ২০০৯ মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৯, ২১৯৮, ২২০০, আবূ দাউদ
১২৭১, ১২৭২, আহমাদ ৭৭২৯, দারেমী ১৭৭৬
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০২.
রমাযানের শেষ দশ দিনে
আমল করার ফযীলত
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৮
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا قَالَتْ:
كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - إِذَا
دَخَلَ العَشْرُ
-أَيِ: العَشْرُ
الأَخِيرُ مِنْ
رَمَضَانَ- شَدَّ
مِئْزَرَهُ، وَأَحْيَا
لَيْلَهُ، وَأَيْقَظَ
أَهْلَهُ. مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, যখন রমযানের শেষ দশক আসত তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তার লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও
পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। [৭৪৩]
[৭৪৩]
বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৪, তিরমিযী ৭৯৬, নাসায়ী ১৬২৯, আবূ দাউদ ১২৭৬, ইবনু মাজাহ ১৭৬৭,
১৭৬৮, আহমাদ ২২৬১১, ২২৮৫৬, ২২৮২৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৩.
ইতিকাফের বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৬৯৯
وَعَنْهَا: أَنَّ
النَّبِيَّ - صلى
الله عليه
وسلم - كَانَ
يَعْتَكِفُ العَشْرَ
الأَوَاخِرَ مِنْ
رَمَضَانَ، حَتَّى
تَوَفَّاهُ اللَّهُ،
ثُمَّ اعْتَكَفَ
أَزْوَاجُهُ مِنْ
بَعْدِهِ. مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের শেষ দশক ইতিকাফ করতেন। তার ওফাত পর্যন্ত
এই নিয়মই ছিল। এরপর তার সহধর্মিণীগণও (সে দিনগুলোতে) ইতিকাফ করতেন । [৭৪৪]
[৭৪৪]
বুখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২, তিরমিয়ী ৭৯০, আবূ দাউদ ২৪৬২, আহমাদ ২৩৬১, ২৩৭১৩, মুওয়াত্ত
মালেক ৬৯৯
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৪.
ই’তিকাফকারী কখন তার
ই’তিকাফের স্থানে প্রবেশ করবে?
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০০
وَعَنْهَا قَالَتْ:
كَانَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم - إِذَا
أَرَادَ أَنْ
يَعْتَكِفَ صَلَّى
الفَجْرَ، ثُمَّ
دَخَلَ مُعْتَكَفَهُ.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইতিকাফের ইচ্ছা পোষণ করতেন তখন ফাজরের সলাত
আদায় করে ইতিকাফ স্থলে প্রবেশ করতেন। [৭৪৫]
[৭৪৫]
বুখারী ২০২৪, ২০৩৩, ২০৪১, ২০৪৫, মুসলিম ১১৭৩, তিরমিযী ৭৯১, নাসায়ী ৭০৯, আবূ দাউদ ২৪৬৪,
ইবনু মাজাহ ১৭৭১, আহমাদ ২৪০২৩, ২৫৩২৯। বুখারীর বর্ণনায় রয়েছে, রমযানের শেষ দশকে নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করতেন। আমি তার তাবু তৈরি করে দিতাম। তিনি
ফজরের সলাত আদায় করে তাতে প্রবেশ করতেন।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৫.
ই’তিকাফকারীর মাসজিদ
হতে বের হওয়া বা শরীরের অঙ্গ বের করার বিধান
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০১
وَعَنْهَا قَالَتْ:
إِنْ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
- لَيُدْخِلُ عَلَيَّ
رَأْسَهُ -وَهُوَ
فِي الْمَسْجِدِ-
فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ
لَا يَدْخُلُ
الْبَيْتَ إِلَّا
لِحَاجَةٍ، إِذَا
كَانَ مُعْتَكِفًا.
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ،
وَاللَّفْظُ لِلْبُخَارِيِّ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে
মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন তখন (প্রাকৃতিক)
প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে প্রবেশ করতেন না। -শব্দ বুখারীর [৭৪৬]
[৭৪৬]
বুখারী ২৪৮, ২৫০, ২৬১, ২০২৯, মুসলিম ২১৬, ২১৯, ২২১, ৩২১, তিরমিয়ী ১৩২, ১৭৫৫, নাসায়ী
২৩১, ২২৩, আবূ দাউদ ৭৭, ২৪২, ২৪৩, ইবনু মাজাহ ৩৭৬, ৬৩৩, আহমাদ ২৩৪৯৪, ২৩৫৬১, ২২৬৪০,
মুওয়াত্তা মালেক ১০০, ১২৮, দারেমী ৭৪৮, ১০৩৩, ১০৩৭
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৬.
ইতিকাফের বিধানাবলী
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০২
وَعَنْهَا قَالَتْ:
السُّنَّةُ عَلَى
الْمُعْتَكِفِ أَنْ
لَا يَعُودَ
مَرِيضًا، وَلَا
يَشْهَدَ جِنَازَةً،
وَلَا يَمَسَّ
امْرَأَةً، وَلَا
يُبَاشِرَهَا، وَلَا
يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ،
إِلَّا لِمَا
لَا بُدَّ
لَهُ مِنْهُ،
وَلَا اعْتِكَافَ
إِلَّا بِصَوْمٍ
وَلَا اعْتِكَافَ
إِلَّا فِي
مَسْجِدٍ جَامِعٍ.
رَوَاهُ أَبُو
دَاوُدَ، وَلَا
بَأْسَ بِرِجَالِهِ،
إِلَّا أَنَّ
الرَّاجِحَ وَقْفُ
آخِرِهِ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নাত বা শরয়ী ব্যবস্থা হচ্ছে তিনি কোন রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে
যাবেন না, জানাযায় শামিল হবেন না, স্ত্রীকে স্পর্শ করবে না ও তাকে জড়াবে না, প্রয়োজন
থাকলেও (মসজিদ হতে) বের হবেন না তবে যা না হলে মোটেই চলবে না (যেমন পায়খানা ও পেশাব
করার জন্যে); এবং সওম ব্যতীত ইতিকাফ হয় না এবং জুমুআহ মসজিদ ব্যতীত অন্যত্র ইতিকাফ
হয় না- আবূ দাউদ। এর রাবীদের মধ্যে কোন ক্রটি নেই, তবে এর শেষাংশ মওকুফ হওয়াটাই সমিচীন
(অর্থাৎ সওম ব্যতীত ইতিকাফ নেই হতে শেষাংশ রাবীর নিজস্ব কথা)। [৭৪৭]
[৭৪৭]
আবূ দাউদ ২৪৭৩
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৭.
ই’তিকাফের ক্ষেত্রে রোযা
রাখা কি শর্ত?
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০৩
وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا;
أَنَّ النَّبِيَّ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ: «لَيْسَ
عَلَى الْمُعْتَكِفِ
صِيَامٌ إِلَّا
أَنْ يَجْعَلَهُ
عَلَى نَفْسِهِ»
رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيُّ
وَالْحَاكِمُ، وَالرَّاجِحُ
وَقْفُهُ أَيْضًا
ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইতিকাফকারীর উপর সওম পালন জরুরী (ফরয)
নয়, তবে সে যদি ইচ্ছা করে রাখতে পারে। -এটারও মাওকুফ হওয়া অধিক সঙ্গত (ইবনু আব্বাসের
নিজস্ব কথা)।" [৭৪৮]
[৭৪৮]
দারাকুতনী ২/১৯৯/৩, হাকিম ১/৪৩৯, মাওকূফ । শাইখ আলবানী যঈফুল জামি’ (৪৮৯৬), সিলসিলা
যঈফা (৪৩৩৭৮) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আসকালানী আদদিরাইয়াহ ১/২৮৮ গ্রন্থে
বলেন, হাদীসটি মওকুফ হওয়াই সঠিক। ইমাম বাইহাকী তাঁর সুনান আল কুবর ৪/৩১৯ গ্রছে বলেন,
এ হাদীসটি আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন নাসর আর রমলী এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৮.
লাইলাতুল কাদর যে সময়ে
অন্বেষণ করতে হয়
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০৪
وَعَنِ ابْنِ
عُمَرَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا
أَنَّ رِجَالاً
مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ - صلى
الله عليه
وسلم - أُرُوا
لَيْلَةَ الْقَدْرِ
فِي الْمَنَامِ،
فِي السَّبْعِ
الْأَوَاخِرِ، فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ
- صلى الله
عليه وسلم
-: «أَرَى رُؤْيَاكُمْ
قَدْ تَوَاطَأَتْ
فِي السَّبْعِ
الْأَوَاخِرِ، فَمَنْ
كَانَ مُتَحَرِّيَهَا
فَلْيَتَحَرَّهَا فِي
السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
ইবনু
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কতিপয় সহাবীকে স্বপ্লের মাধ্যমে রমযানের শেষের
সাত রাত্রে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়। (এ শুনে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাকেও তোমাদের স্বপ্লের অনুরূপ দেখানো হয়েছে।” [৭৪৯] (তোমাদের
দেখা ও আমার দেখা) শেষ সাত দিনের ক্ষেত্রে মিলে গেছে। অতএব যে ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী,
সে যেন শেষ সাত রাতে সন্ধান করে। [৭৫০]
[৭৪৯]
কেউ কেউ হামযায় পেশ দিয়ে পড়েছেন তাহলে অর্থ হবে – তথা আমি ধারনা করছি। আবার অনেকেই
হামযায় যবর দিয়ে পড়েছেন, তাহলে অর্থ হবে, আমি জানি।
[৭৫০]
বুখারী ২০১৫, ৬৯৯১, মুসলিম ১১৬৫, আহমাদ ৪৪৮৫, ৪৫৩৩, ৪৬৫৭, মুওয়াত্তা মালেক ৭০৬।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
০৯.
২৭ তম রাত্রিকে লাইলাতুল
কাদর হিসেবে নির্দিষ্টকরণ
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০৫
وَعَنْ مُعَاوِيَةَ
بْنِ أَبِي
سُفْيَانَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُمَا،
عَنِ النَّبِيِّ
- صلى الله
عليه وسلم
- قَالَ فِي
لَيْلَةِ الْقَدْرِ:
«لَيْلَةُ سَبْعٍ
وَعِشْرِينَ» رَوَاهُ
أَبُو دَاوُدَ،
وَالرَّاجِحُ وَقْفُهُ
وَقَدِ اخْتُلِفَ
فِي تَعْيِينِهَا
عَلَى أَرْبَعِينَ
قَوْلًا أَوْرَدْتُهَا
فِي «فَتْحِ
الْبَارِي»
মু'আবীয়াহ
বিন আবূ সুফইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাইলাতুল কদর সম্বন্ধে বলেছেন, তা ২৭শে রমযানের
রাত। আবূ দাউদ এটি বর্ণনা করে মওকুফ হবার ব্যাপারেই অভিমত দিয়েছেন। লাইলাতুল কদরের
দিনক্ষণ নির্ণয়ের ব্যাপারে ৪০ প্রকার মতভেদপূর্ণ কওল (কথা) রয়েছে। যার উল্লেখ আমি
ফতহুল বারীতে (বুখারীর শরায়) করেছি।” [৭৫১]
[৭৫১]
আবূ দাউদ ১৩৮৬, হাদিসটি মাওকুফ, তাওযিহুল আহকাম ৩/৫৯০
হাদিসের
মানঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ
১০.
লাইলাতুল কদরের সন্ধান
পাওয়া ব্যাক্তি কি দোয়া পড়বে ?
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০৬
وَعَنْ عَائِشَةَ
رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهَا قَالَتْ:
قُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ:
أَرَأَيْتَ إِنْ
عَلِمْتُ أَيَّ
لَيْلَةٍ لَيْلَةُ
الْقَدْرِ، مَا
أَقُولُ فِيهَا?
قَالَ: قُولِي:
«اللَّهُمَّ إِنَّكَ
عَفُوٌّ تُحِبُّ
الْعَفْوَ فَاعْفُ
عَنِّي» رَوَاهُ
الْخَمْسَةُ، غَيْرَ
أَبِي دَاوُدَ،
وَصَحَّحَهُ التِّرْمِذِيُّ
وَالْحَاكِمُ
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি কদরের রাত পেয়ে যাই তবে তাতে কী বলবো? তিনি বলেন;
তুমি বলবে আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়্যন তুহিব্বূল আফওয়া ফা’ফু 'আনী)। "হে আল্লাহ
তুমি ক্ষমাকারী, তুমি ক্ষমা করতেই ভালোবাসো। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও"
-তিরমিযী ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন। [৭৫২]
[৭৫২]
তিরমিযী ৩৫১৩, ইবনু মাজাহ ৩৮৫০
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ
১১.
৩টি মাসজিদের যে কোনটিতে
ইতিকাফের উদ্দেশ্যে গমণ বৈধ
বুলুগুল মারাম হাদিস
নং-৭০৭
وَعَنْ أَبِي
سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
- رضي الله
عنه - قَالَ:
قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ - صلى
الله عليه
وسلم -: «لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ
إِلَّا إِلَى
ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ:
الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ،
وَمَسْجِدِي هَذَا،
وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى»
مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন- (সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে সফর কর না) তিনটি
মসজিদ ব্যতীতঃ ১. মাসজিদুল হারাম, ২. মাসজিদুল আকসা এবং ৩. আমার মাসজিদ। [৭৫৩]
[৭৫৩]
বুখারী ৫৮৬, ১১৮৯, ১৮৬৪, মুসলিম ৮২৭, নাসায়ী ৫৬৬, ৫৬৭, ইবনু মাজাহ ১২৪৯, ১৪১০, ১৭২১,
আহমাদ ১০৬৩৯, ১০৯৫৫, ১১০১৭, দারেমী ১৭৫৩ ।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
তারাবীহ্র সালাত সংক্রান্ত হাদিসসমূহ
সহিহ বুখারী-তাওহীদ পাবলিকেশন
তারাবীহ্র সালাত হাদিস নং ২০০৮
থেকে ২০১৩
৩১/১.
অধ্যায়ঃ
কিয়ামে রমযান- এর (রমযানে
তারাবীর সালাতের) গুরুত্ব।
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০০৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ بُكَيْرٍ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ،
عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، قَالَ
أَخْبَرَنِي أَبُو
سَلَمَةَ، أَنَّ
أَبَا هُرَيْرَةَ
ـ رضى
الله عنه
ـ قَالَ
سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى
الله عليه
وسلم يَقُولُ
لِرَمَضَانَ
" مَنْ
قَامَهُ إِيمَانًا
وَاحْتِسَابًا غُفِرَ
لَهُ مَا
تَقَدَّمَ مِنْ
ذَنْبِهِ ".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে রমযান সম্পর্কে বলতে
শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমযান অর্থাৎ তারাবীর
সালাত আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ
اللَّهِ بْنُ
يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا
مَالِكٌ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ حُمَيْدِ
بْنِ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ، عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ
ـ رضى
الله عنه
ـ أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله
عليه وسلم
قَالَ
" مَنْ
قَامَ رَمَضَانَ
إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا
غُفِرَ لَهُ
مَا تَقَدَّمَ
مِنْ ذَنْبِهِ
". قَالَ
ابْنُ شِهَابٍ
فَتُوُفِّيَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى
الله عليه
وسلم وَالأَمْرُ
عَلَى ذَلِكَ،
ثُمَّ كَانَ
الأَمْرُ عَلَى
ذَلِكَ فِي
خِلاَفَةِ أَبِي
بَكْرٍ وَصَدْرًا
مِنْ خِلاَفَةِ
عُمَرَ ـ
رضى الله
عنهما.
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব
লাভের আশায় তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। হাদীসের
রাবী ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল
করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবূ বকর (রাঃ)- এর খিলাফতকালে ও
‘উমর (রাঃ)- এর খিলাফতের প্রথমভাগে এরূপই ছিল।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০১০
وَعَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، عَنْ
عُرْوَةَ بْنِ
الزُّبَيْرِ، عَنْ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ
بْنِ عَبْدٍ
الْقَارِيِّ، أَنَّهُ
قَالَ خَرَجْتُ
مَعَ عُمَرَ
بْنِ الْخَطَّابِ
ـ رضى
الله عنه
ـ لَيْلَةً
فِي رَمَضَانَ،
إِلَى الْمَسْجِدِ،
فَإِذَا النَّاسُ
أَوْزَاعٌ مُتَفَرِّقُونَ
يُصَلِّي الرَّجُلُ
لِنَفْسِهِ، وَيُصَلِّي
الرَّجُلُ فَيُصَلِّي
بِصَلاَتِهِ الرَّهْطُ
فَقَالَ عُمَرُ
إِنِّي أَرَى
لَوْ جَمَعْتُ
هَؤُلاَءِ عَلَى
قَارِئٍ وَاحِدٍ
لَكَانَ أَمْثَلَ.
ثُمَّ عَزَمَ
فَجَمَعَهُمْ عَلَى
أُبَىِّ بْنِ
كَعْبٍ، ثُمَّ
خَرَجْتُ مَعَهُ
لَيْلَةً أُخْرَى،
وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ
بِصَلاَةِ قَارِئِهِمْ،
قَالَ عُمَرُ
نِعْمَ الْبِدْعَةُ
هَذِهِ، وَالَّتِي
يَنَامُونَ عَنْهَا
أَفْضَلُ مِنَ
الَّتِي يَقُومُونَ.
يُرِيدُ آخِرَ
اللَّيْلِ، وَكَانَ
النَّاسُ يَقُومُونَ
أَوَّلَهُ.
‘আবদুর
রাহমান ইবনু ‘আবদ আল-ক্বারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আমি রমযানের এক রাতে ‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)- এর সাথে মসজিদে নাবাবীতে গিয়ে
দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামা’আতে বিভক্ত। কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার কোন
ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং ইকতেদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। ‘উমর (রাঃ) বললেন,
আমি মনে করি যে, এই লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে জমা করে দেই, তবে তা
উত্তম হবে। এরপর তিনি ‘উবাই ইব্নু ‘কাব (রাঃ)- এর পিছনে সকলকে জমা করে দিলেন। পরে
আর এক রাতে আমি তাঁর [‘উমর (রাঃ)] সাথে বের হই। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত
আদায় করছিল। ‘উমর (রাঃ) বললেন, কতইনা সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে
ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা সালাত আদায় কর, এর দ্বারা তিনি
শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০১১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ،
قَالَ حَدَّثَنِي
مَالِكٌ، عَنِ
ابْنِ شِهَابٍ،
عَنْ عُرْوَةَ
بْنِ الزُّبَيْرِ،
عَنْ عَائِشَةَ،
رضى الله
عنها زَوْجِ
النَّبِيِّ صلى
الله عليه
وسلم أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله
عليه وسلم
صَلَّى وَذَلِكَ
فِي رَمَضَانَ.
নবী-সহধর্মিণী
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করেন এবং তা ছিল রমযানে।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০১২
حَدَّثَنَا يَحْيَى
بْنُ بُكَيْرٍ،
حَدَّثَنَا اللَّيْثُ،
عَنْ عُقَيْلٍ،
عَنِ ابْنِ
شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي
عُرْوَةُ، أَنَّ
عَائِشَةَ ـ
رضى الله
عنها ـ
أَخْبَرَتْهُ أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله
عليه وسلم
خَرَجَ لَيْلَةً
مِنْ جَوْفِ
اللَّيْلِ، فَصَلَّى
فِي الْمَسْجِدِ،
وَصَلَّى رِجَالٌ
بِصَلاَتِهِ، فَأَصْبَحَ
النَّاسُ فَتَحَدَّثُوا،
فَاجْتَمَعَ أَكْثَرُ
مِنْهُمْ، فَصَلَّوْا
مَعَهُ، فَأَصْبَحَ
النَّاسُ فَتَحَدَّثُوا،
فَكَثُرَ أَهْلُ
الْمَسْجِدِ مِنَ
اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ،
فَخَرَجَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى
الله عليه
وسلم فَصَلَّى،
فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ،
فَلَمَّا كَانَتِ
اللَّيْلَةُ الرَّابِعَةُ
عَجَزَ الْمَسْجِدُ
عَنْ أَهْلِهِ،
حَتَّى خَرَجَ
لِصَلاَةِ الصُّبْحِ،
فَلَمَّا قَضَى
الْفَجْرَ أَقْبَلَ
عَلَى النَّاسِ،
فَتَشَهَّدَ ثُمَّ
قَالَ
" أَمَّا
بَعْدُ، فَإِنَّهُ
لَمْ يَخْفَ
عَلَىَّ مَكَانُكُمْ،
وَلَكِنِّي خَشِيتُ
أَنْ تُفْتَرَضَ
عَلَيْكُمْ فَتَعْجِزُوا
عَنْهَا ". فَتُوُفِّيَ
رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله
عليه وسلم
وَالأَمْرُ عَلَى
ذَلِكَ
‘আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গভীর রাতে বের হয়ে মসজিদে সালাত
আদায় করেন, কিছু সংখ্যক পুরুষ তাঁর পিছনে সালাত আদায় করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে
আলোচনা করেন, ফলে লোকেরা অধিক সংখ্যায় সমবেত হন। তিনি সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা তাঁর
সঙ্গে সালাত আদায় করেন। সকালে তাঁরা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লীর
সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে
সালাত আদায় করেন ও লোকেরা তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীর
সংকুলান হল না, কিন্তু তিনি রাতে আর বের না হয়ে ফজরের সালাতে বেরিয়ে আসলেন এবং সালাত
শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দেয়ার পর বললেনঃ শোন! তোমাদের
(গতরাতের) অবস্থান আমার অজানা ছিল না, কিন্তু আমি এই সালাত তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবার
আশংকা করছি (বিধায় বের হই নাই) কেননা তোমরা তা আদায় করায় অপারগ হয়ে পড়তে। আল্লাহর রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ওফাত হলো আর ব্যাপারটি এভাবেই থেকে যায়।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
সহিহ বুখারী হাদিস নং-২০১৩
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ،
قَالَ حَدَّثَنِي
مَالِكٌ، عَنْ
سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ،
عَنْ أَبِي
سَلَمَةَ بْنِ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ،
أَنَّهُ سَأَلَ
عَائِشَةَ ـ
رضى الله
عنها ـ
كَيْفَ كَانَتْ
صَلاَةُ رَسُولِ
اللَّهِ صلى
الله عليه
وسلم فِي
رَمَضَانَ فَقَالَتْ
مَا كَانَ
يَزِيدُ فِي
رَمَضَانَ، وَلاَ
فِي غَيْرِهَا
عَلَى إِحْدَى
عَشْرَةَ رَكْعَةً،
يُصَلِّي أَرْبَعًا
فَلاَ تَسَلْ
عَنْ حُسْنِهِنَّ
وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ
يُصَلِّي أَرْبَعًا
فَلاَ تَسَلْ
عَنْ حُسْنِهِنَّ
وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ
يُصَلِّي ثَلاَثًا.
فَقُلْتُ يَا
رَسُولَ اللَّهِ،
أَتَنَامُ قَبْلَ
أَنْ تُوتِرَ
قَالَ
" يَا
عَائِشَةُ إِنَّ
عَيْنَىَّ تَنَامَانِ
وَلاَ يَنَامُ
قَلْبِي ".
আবূ
সালামা ইবনু ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রমযানে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
–এর সালাত কিরূপ ছিল? তিনি বললেন, রমযান মাসে ও রমযানে ব্যতীত অন্য সময়ে (রাতে) তিনি
এগার রাক’আত হতে বৃদ্ধি করতেন না। [২] তিনি চার রাক’আত সালাত আদায় করতেন, তুমি তার
সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি চার রাক’আত পড়েন। তুমি তার
সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। এরপর তিন রাক’আত সালাত আদায় করতেন। আমি
(‘আয়িশা রাঃ) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বিতর আদায়ের আগে ঘুমিয়ে যাবেন? তিনি বললেনঃ
হে ‘আয়িশা! আমার দু’চোখ ঘুমায় বটে কিন্তু আমার কাল্ব নিদ্রাভিভূত হয়না।
হাদিসের
মানঃ সহিহ হাদিস
(সমাপ্ত)
রমজান ও সিয়াম সম্পর্কে আরো অধিক তথ্য জানতে এদের উপর ক্লিক করুনঃ
===============================================
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ,
সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি,
এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
উপদেষ্টা-
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook,
Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে
শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা
হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা
আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে,
নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম
সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের
সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে
পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে
তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে
জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা)
বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা
জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১,হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
===============================================
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ,
সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি,
এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
উপদেষ্টা-
-----------------------------------------------------------------
(1) BCSসহ যেকোনো সরকারি বেসরকারি চাকরি সহজে পেতে এখানে ক্লিক করুন।
(2) মজার মজার ইসলামিক গজল ও অন্যান্য বিষয়ের ভিডিও দেখতে চাইলে এর উপর ক্লিক করুন।
No comments:
Post a Comment