Search This Blog

Friday, July 10, 2020

সহিহ হাদিসের আলোকে কুরবানীর সহিহ মাসায়েল


   বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সহিহ হাদিসের আলোকে কুরবানীর সহিহ মাসায়েল

২য় হিজরী সনে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা বিধিবদ্ধ হয়। ঈদুল আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শারঈ তরীকায় যে পশু যবহ করা হয়, তাকে ‘কুরবানী’ বলা হয়’। সকালের রক্তিম সূর্য উপরে ওঠার সময়ে ‘কুরবানী’ করা হয় বলে এই দিনটিকে ‘ইয়াওমুল আযহা’ বলা হয়ে থাকে। কুরবানীর মাসায়েল সংক্ষেপে নিম্নরূপ :
১. চুল-নখ না কাটা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা কুরবানী দেওয়ার এরাদা রাখে, তারা যেন যিলহজ্জ মাসের চাঁদ ওঠার পর হ’তে কুরবানী  সম্পন্ন  করা  পর্যন্ত  স্ব স্ব চুল ও নখ কর্তন করা হ’তে বিরত থাকে’।[1] (খ) কুরবানী দিতে অক্ষম ব্যক্তিগণ কুরবানীর খালেছ নিয়তে এটা করলে ‘আল্লাহর নিকটে তা পূর্ণাঙ্গ কুরবানী’ হিসাবে’ গৃহীত হবে।[2]
২. যিলহাজ্জ মাসের ১ম দশকের ফযীলত : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যিলহাজ্জ মাসের ১ম দশকের নেক আমলের চেয়ে প্রিয়তর কোন আমল আল্লাহর কাছে নেই। ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তি, যে নিজের জান ও মাল নিয়ে বেরিয়েছে, আর ফিরে আসেনি’।[3]
৩. আরাফার দিনের ছিয়াম : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আরাফার দিনের নফল ছিয়াম (যারা আরাফাতের বাইরে থাকেন তাদের জন্য) আমি আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তা বিগত এক বছরের ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে’।[4]
৪. ঈদায়নের তাকবীর ধ্বনি : ৯ই যিলহাজ্জ ফজর থেকে ১৩ই যিলহাজ্জ ‘আইয়ামে তাশরীক্ব’-এর শেষ দিন আছর পর্যন্ত ২৩ ওয়াক্ত ছালাত শেষে কমপক্ষে তিন বার করে ও অন্যান্য সকল সময়ে উচ্চকণ্ঠে তাকবীর ধ্বনি করা সুন্নাত। ঈদুল ফিৎরের দিন সকালে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া থেকে খুৎবা শুরুর আগ পর্যন্ত তাকবীর ধ্বনি করবে।[5]
৫. তাকবীরের শব্দাবলী : ইমাম মালেক ও আহমাদ (রহঃ) বলেন, তাকবীরের শব্দ ও সংখ্যার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। ওমর, আলী, ইবনু মাস‘ঊদ, ইবনু আববাস (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ তাকবীর দিতেন ‘আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু; ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, ওয়া লিল্লা-হিল হাম্দ’।[6] এছাড়া ‘আল্লা-হু আকবার কাবীরা, ওয়াল হামদু লিল্লা-হি কাছীরা, ওয়া সুবহানাল্লা-হি বুকরাতাঁও ওয়া আছীলা’। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এটাকে ‘সুন্দর’ বলেছেন।[7]
৬. ঈদায়নের সময়কাল : ঈদুল আযহায় সূর্য এক ‘নেযা’ পরিমাণ ও ঈদুল ফিৎরে দুই ‘নেযা’ পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ছয় হাত[8] উঠার পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদের ছালাত আদায় করতেন। অতএব ঈদুল আযহার ছালাত সূর্যোদয়ের পরপরই যথাসম্ভব দ্রুত শুরু করা উচিত।
৭. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদুল ফিৎরের দিন বেজোড় সংখ্যক খেজুর খাওয়াঃ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদুল ফিৎরের দিন বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেয়ে ঈদগাহে বের হ’তেন এবং ঈদুল আযহার দিন ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই খেতেন না’। তিনি কুরবানীর পশুর গোশত দ্বারা ইফতার করতেন।[9] বায়হাক্বীর বর্ণনায় নির্দিষ্টভাবে ‘কলিজা’র কথা এসেছে, তবে তা যঈফ।[10]
৮. মহিলাদের অংশগ্রহণ : ঈদায়নের জামা‘আতে পুরুষদের পিছনে পর্দার মধ্যে মহিলাগণ প্রত্যেকে বড় চাদরে আবৃত হয়ে যোগদান করবেন। ‘উম্মে ‘আত্বিইয়া (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হ’ল, আমরা যেন ঋতুবতী ও পর্দানশীন মহিলাদেরকে দুই ঈদের দিনে বের করে নিয়ে যাই। যেন তারা মুসলমানদের জামা‘আতে ও দো‘আয় শরীক হ’তে পারে। তবে ঋতুবতী মহিলারা একদিকে সরে বসবেন। জনৈকা মহিলা বললেন, আমাদের অনেকের বড় চাদর নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তার সাথী তাকে নিজের চাদর দ্বারা আবৃত করে নিয়ে যাবে’।[11] সেখানে ঋতুবতীরা ছালাত ব্যতীত সবকিছুতে শরীক হবেন।
৯. সম্মিলিত দো‘আ নয় : মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) বলেন, উপরোক্ত হাদীছের শেষে বর্ণিত ‘ওয়া দা‘ওয়াতাল মুসলিমীন’[12] কথাটি ‘আম’। এর দ্বারা ইমামের খুৎবা, যিকর ও নছীহত শ্রবণে শরীক হওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে। কেননা ঈদায়নের ছালাতের পরে প্রচলিত নিয়মে সম্মিলিত ভাবে হাত তুলে দো‘আ করার প্রমাণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম  থেকে কোন দলীল নেই।[13]
১০. ঈদায়নের ছালাতে অতিরিক্ত তাকবীর : প্রথম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা ও ছানা পড়ার পর ক্বিরাআতের পূর্বে সাত ও দ্বিতীয় রাক‘আতে ছালাতের তাকবীর ব্যতীত ক্বিরাআতের পূর্বে পাঁচ মোট বারো তাকবীর দেওয়া সুন্নাত। প্রচলিত নিয়মে ছয় তাকবীরের পক্ষে কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ নেই।
চার খলীফা ও মদীনার শ্রেষ্ঠ সাত জন তাবেঈ ফক্বীহ সহ প্রায় সকল ছাহাবী, তাবেঈ, তিন ইমাম ও অন্যান্য শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এবং ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর দুই প্রধান শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ) বারো তাকবীরের উপরে আমল করতেন। ভারতের দু’জন খ্যাতনামা হানাফী বিদ্বান আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌবী ও আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহঃ) বারো তাকবীরকে সমর্থন করেছেন।[14]
১১. ঈদায়নের ছালাত আদায়ের পদ্ধতি : প্রথমে ক্বিবলামুখী দাঁড়িয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে তাকবীরে তাহরীমা দিয়ে বাম হাতের উপরে ডান হাত  বুকের  উপরে  বাঁধবে। অতঃপর ‘ছানা’ পড়বে। অতঃপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ধীর-স্থিরভাবে দুই তাকবীরের মাঝে স্বল্প বিরতিসহ পরপর সাতটি তাকবীর দিবে। প্রতি তাকবীরে হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে, অতঃপর পূর্বের ন্যায় বুকে বাঁধবে। তাকবীর শেষ হ’লে প্রথম রাক‘আতে আ‘ঊযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পূর্ণভাবে পড়ে ইমাম হ’লে সরবে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বে। মুক্তাদী হ’লে নীরবে কেবল সূরা ফাতিহা ইমামের পিছে পিছে পড়বে ও ইমামের ক্বিরাআত শুনবে। অতঃপর দ্বিতীয় রাক‘আতে দাঁড়িয়ে পূর্বের নিয়মে ধীর-স্থিরভাবে দুই তাকবীরের মাঝে স্বল্প বিরতিসহ প্রথমে পরপর পাঁচটি তাকবীর দিবে। তারপর ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ অন্তে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বে।
ঈদায়নের ছালাতে ১ম ও ২য় রাক‘আতে যথাক্রমে সূরা আ‘লা ও গাশিয়াহ অথবা সূরা ক্বাফ ও ক্বামার পড়া সুন্নাত। ঈদায়নের জন্য প্রথমে ছালাত ও পরে খুৎবা প্রদান করতে হয়। তার আগে পিছে কোন ছালাত নেই, আযান বা এক্বামত নেই। ঈদগাহে বের হবার সময় উচ্চকণ্ঠে তাকবীর এবং পৌঁছার পরেও তাকবীর ধ্বনি ব্যতীত কাউকে জলদি আসার জন্য আহবান করাও ঠিক নয় ।
ছয় তাকবীরের তাবীল : ‘জানাযার চার তাকবীরের ন্যায়’[15] বলে ১ম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা সহ ক্বিরাআতের পূর্বে চার তাকবীর এবং ২য় রাক‘আতে রুকূর তাকবীর সহ ক্বিরাআতের পরে চার তাকবীর বলে ‘তাবীল’ করা হয়েছে। এর মধ্যে তাকবীরে তাহরীমা ও রুকূর ফরয তাকবীর দু’টি বাদ দিলে অতিরিক্ত (৩+৩) ছয়টি তাকবীর হয়। অথচ উক্ত যঈফ হাদীছে কোন তাকবীর বাদ দেওয়ার কথা নেই কিংবা ক্বিরাআতের আগে বা পরে বলে কোন বক্তব্য নেই।
ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ) বলেন, ‘জানাযার চার তাকবীরে ন্যায়’ মর্মের বর্ণনাটি যদি ‘ছহীহ’ বলে ধরে নেওয়া হয়[16], তথাপি এর মধ্যে ছয় তাকবীরের পক্ষে কোন দলীল নেই। কারণ তাকবীরে তাহরীমা সহ ১ম রাক‘আতে চার ও রুকূর তাকবীর সহ ২য় রাক‘আতে চার তাকবীর এবং ১ম রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে ও ২য় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পরে তাকবীর দিতে হবে বলে কোন কথা সেখানে নেই। বরং এটাই স্পষ্ট যে, দুই রাক‘আতেই জানাযার ছালাতের ন্যায় চারটি করে (অতিরিক্ত) তাকবীর দিতে হবে’।[17]
১২. একটি খুৎবাই সুন্নাত : ছহীহ বুখারী (হা/৯৫৬, ৯৭৭; মিশকাত হা/১৪২৬, ১৪২৯) ও মুসলিম (হা/৮৮৫, ৮৮৯) সহ অন্যান্য ছহীহ হাদীছ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ঈদায়নের খুৎবা মাত্র একটি। মাঝখানে বসে দু’টি খুৎবা প্রদান সম্পর্কে ইবনু মাজাহ (হা/১২৮৯) ও বাযযারে (হা/১১১৬) কয়েকটি ‘যঈফ’ হাদীছ রয়েছে, যা ছহীহ হাদীছ সমূহের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য নয়। ছাহেবে সুবুলুস সালাম ও ছাহেবে মির‘আত বলেন, ‘প্রচলিত দুই খুৎবার নিয়মটি মূলতঃ জুম‘আর দুই খুৎবার উপরে ক্বিয়াস করেই চালু হয়েছে। এটি রাসূল (ছাঃ)-এর ‘আমল’ দ্বারা এবং কোন নির্ভরযোগ্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়’।[18]
ছালাতের পর খুৎবা শোনা সুন্নাত। যারা খুৎবা না শুনে চলে যান, তারা খুৎবা শোনার ছওয়াব ও বরকত থেকে মাহরূম হন এবং সুন্নাত তরক করার জন্য গোনাহগার হন।
১৩. কুরবানী করা সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানী করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়’।[19] এটি ইসলামের একটি ‘মহান নিদর্শন’, যা ‘সুন্নাতে ইবরাহীমী’ হিসাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে মদীনায় প্রতি বছর আদায় করেছেন এবং ছাহাবীগণও নিয়মিতভাবে কুরবানী করেছেন।[20] তবে এটি ওয়াজিব নয় যে, যেকোন মূল্যে প্রত্যেককে কুরবানী করতেই হবে। লোকেরা যাতে এটাকে ওয়াজিব মনে না করে, সেজন্য সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হযরত আবুবকর ছিদ্দীক, ওমর ফারূক, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর, আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস, বেলাল, আবু মাসঊদ আনছারী প্রমুখ (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ কখনো কখনো কুরবানী করতেন না।[21] অতএব ঋণ থাকলে সেটা পরিশোধ করাই যরূরী। তবে দাতার সম্মতি থাকলে ঋণ দেরীতে পরিশোধ করে কুরবানী দেওয়ায় কোন বাধা নেই।
১৪. কুরবানীর পশু : এটা তিন প্রকার- উট, গরু ও ছাগল। দুম্বা ও ভেড়া ছাগলের মধ্যে গণ্য। প্রত্যেকটির নর ও মাদি (আন‘আম ৬/১৪৪-৪৫)। এগুলির বাইরে অন্য কোন পশু দিয়ে কুরবানী করার প্রমাণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম থেকে পাওয়া যায় না। তবে অনেক বিদ্বান গরুর উপরে ক্বিয়াস করে মহিষ দ্বারা কুরবানী করা জায়েয বলেছেন।[22] ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, ‘উপরে বর্ণিত পশুগুলি ব্যতীত অন্য কোন পশু দ্বারা কুরবানী সিদ্ধ হবে না’।[23] কুরবানীর পশু সুঠাম, সুন্দর ও নিখুঁৎ হ’তে হবে। চার ধরনের পশু কুরবানী করা নাজায়েয। স্পষ্ট খোঁড়া, স্পষ্ট কানা, স্পষ্ট রোগী ও জীর্ণশীর্ণ এবং অর্ধেক কান কাটা বা ছিদ্র করা ও অর্ধেক শিং ভাঙ্গা।[24] তবে নিখুঁৎ পশু ক্রয়ের পর যদি নতুন করে খুঁৎ হয় বা পুরানো কোন দোষ বেরিয়ে আসে, তাহ’লে ঐ পশু দ্বারাই কুরবানী বৈধ হবে’।[25] উল্লেখ্য যে, খাসি করা কোন খুঁৎ নয় এবং খাসি কুরবানীতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে খাসি কুরবানী করেছেন।[26]
১৫. ‘মুসিন্নাহ’ পশু দ্বারা কুরবানী : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘তোমরা দুধে দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত ওঠা (মুসিন্নাহ) পশু ব্যতীত যবহ করো না। তবে কষ্টকর হ’লে এক বছর পূর্ণকারী ভেড়া (দুম্বা বা ছাগল) কুরবানী করতে পার’।[27] জমহূর বিদ্বানগণ অন্যান্য হাদীছের আলোকে এই হাদীছে নির্দেশিত ‘মুসিন্নাহ’ পশুকে কুরবানীর জন্য ‘উত্তম’ বলেছেন।[28] ‘মুসিন্নাহ’ পশু ষষ্ঠ বছরে পদার্পণকারী উট এবং তৃতীয় বছরে পদার্পণকারী গরু বা ছাগল-ভেড়া-দুম্বাকে বলা হয়।[29] কেননা এই বয়সে সাধারণতঃ এই সব পশুর দুধে দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত উঠে থাকে। তবে অনেক পশুর বয়স বেশী ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও সঠিক সময়ে দাঁত ওঠে না। এসব পশু দ্বারা কুরবানী করা ইনশাআল্লাহ কোন দোষের হবে না।
১৬. নিজের ও নিজ পরিবারের পক্ষ হ’তে একটি পশু যথেষ্ট :
(ক) মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একটি শিংওয়ালা সুন্দর সাদা-কালো দুম্বা আনতে বললেন, ...অতঃপর নিম্নোক্ত দো‘আ পড়লেন, -‘আল্লাহর নামে (কুরবানী করছি), হে আল্লাহ! তুমি এটি কবুল কর মুহাম্মাদের পক্ষ হ’তে, তার পরিবারের পক্ষ হ’তে ও তার উম্মতের পক্ষ হ’তে’। এরপর উক্ত দুম্বা দ্বারা কুরবানী করলেন’।[30] আলবানী বলেন, ‘এর অর্থ কুরবানীর ছওয়াবে সকল উম্মতকে শরীক করা। কেননা সকল বিদ্বানের ঐক্যমতে একটি ছাগল একটি পরিবারের বেশী অন্যদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নয়’।[31]
(খ) বিদায় হজ্জে আরাফার দিনে সমবেত জনমন্ডলীকে উদ্দেশ্য করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘হে জনগণ! নিশ্চয়ই প্রত্যেক পরিবারের উপরে প্রতি বছর একটি করে কুরবানী ও আতীরাহ’। আবুদাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আতীরাহ’ প্রদানের হুকুম পরে রহিত করা হয়।[32] আবু আইয়ুব আনছারী (রাঃ) বলেন, ছাহাবীগণের মধ্যে পরিবারপিছু একটি করে বকরী কুরবানী দেওয়ার রেওয়াজ ছিল।[33] ধনাঢ্য ছাহাবী আবু সারীহা (রাঃ) বলেন, সুন্নাত জানার পর লোকেরা পরিবারপিছু একটি বা দু’টি করে বকরী কুরবানী দিত। অথচ এখন প্রতিবেশীরা আমাদের বখীল বলছে’।[34] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনায় মুক্বীম অবস্থায় নিজ পরিবার ও উম্মতের পক্ষ হ’তে দু’টি করে ‘খাসি’ কুরবানী করেছেন।[35] বিদায় হজ্জের সময় তিনি নিজ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেন।[36] অন্যদেরকে সাতজনে একটি উটে বা গরুতে শরীক হ’তে বলেন।[37] অতএব একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য সংখ্যা যত বেশীই হৌক না কেন সকলের পক্ষ থেকে একটি পশুই যথেষ্ট। এক পিতার সন্তান হ’লেও পৃথকান্ন হ’লে তারা পৃথক পরিবার হিসাবে গণ্য হবেন। তবে তারা পৃথক কুরবানীর জন্য পিতাকে অর্থ সাহায্য করতে পারেন।
১৭. কুরবানীতে শরীক হওয়া : আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,
(ক) ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হ’ল। তখন আমরা সাত জনে একটি গরু ও দশ জনে একটি উটে শরীক হ’লাম’।[38] সম্ভবতঃ তাঁরা কোন শহরে অবস্থান করছিলেন। যেখানে ঈদুল আযহা উপস্থিত হয় (মিরক্বাত)।
(খ) হযরত জাবির (রাঃ) বলেন, ‘আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে (১০ম হিজরীতে) হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন তিনি আমাদেরকে একটি গরু ও উটে সাতজন করে শরীক হওয়ার নির্দেশ দেন’।[39] (ইতিপূর্বে ৬ষ্ঠ হিজরীতে) হোদায়বিয়ার সফরেও আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে একইভাবে প্রতি সাত জনে একটি উট ও গরু কুরবানী করি’।[40] সফরে সাত বা দশজন মিলে একটি পরিবারের ন্যায়। যাতে গরু বা উটের ন্যায় বড় পশু যবহ ও কুটাবাছা এবং গোশত বন্টন সহজ হয়। জমহূর বিদ্বানগণের মতে হজ্জের হাদ্ঈর ন্যায় কুরবানীতেও শরীক হওয়া চলবে।[41]
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রতি বছর মদীনায় কুরবানী করেছেন।[42] কিন্তু তিনি বা ছাহাবায়ে কেরাম মুক্বীম অবস্থায় কখনো ভাগা কুরবানী করেছেন বলে জানা যায় না। অনেকে ৭-এর বদলে ৩, ৫, ১০ ভাগে কুরবানী করেন, যা একেবারেই ভিত্তিহীন। অথচ কুরবানী হ’ল একটি ইবাদত। যা রাসূল (ছাঃ)-এর তরীকা অনুযায়ী সম্পন্ন করা অপরিহার্য। যেটা তিনি করেননি বা করতে বলেননি, সেটা করার মাধ্যমে কিভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাছিল হবে? আজকাল অনেকে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দিচ্ছেন, আবার একটি গরুর ভাগা নিচ্ছেন, মূলতঃ গোশত বেশী পাবার স্বার্থে। ‘নিয়ত’ যখন গোশত খাওয়া, তখন কুরবানীর নেকী তিনি কিভাবে পাবেন?
১৮. কুরবানীর সাথে আক্বীক্বা : ‘দু’টিরই উদ্দেশ্য আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করা’ এই (ইসতিহসানের) যুক্তি দেখিয়ে কোন কোন হানাফী বিদ্বান কুরবানীর গরু বা উটে এক বা একাধিক সন্তানের আক্বীক্বা সিদ্ধ বলে মত প্রকাশ করেছেন (যা এদেশে অনেকের মধ্যে চালু আছে)।[43] হানাফী মাযহাবের স্তম্ভ বলে খ্যাত ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) এই মতের বিরোধিতা করেন। ইমাম শাওকানী (রহঃ) এর ঘোর প্রতিবাদ করে বলেন, এটি শরী‘আত, এখানে সুনির্দিষ্ট দলীল ব্যতীত কিছুই প্রমাণ করা সম্ভব নয়।[44]
১৯. কুরবানী করার পদ্ধতি :
উট দাঁড়ানো অবস্থায় এর ‘হলক্বূম’ বা কণ্ঠনালীর গোড়ায় কুরবানীর নিয়তে ‘বিসমিল্লা-হি আল্লাহু আকবার’ বলে সুতীক্ষ্ণ অস্ত্রাঘাতের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত করে ‘নহর’ করতে হয় এবং গরু বা ছাগলের মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে ফেলে ‘যবহ’ করতে হয়।[45] কুরবানী দাতা ধারালো ছুরি নিয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে দো‘আ পড়ে নিজ হাতে খুব জলদি যবহের কাজ সমাধা করবেন, যেন পশুর কষ্ট কম হয়। অন্যের দ্বারাও যবহ করানো জায়েয আছে। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি নিজ হাতে করা অথবা যবহের সময় স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করা উত্তম। ১০, ১১, ১২ যিলহাজ্জ তিন দিনের রাত-দিন যে কোন সময় কুরবানী করা যাবে।[46] তবে ১৩ তারিখেও জায়েয আছে।[47]
২০. ঈদের ছালাত ও খুৎবা শেষ হওয়ার পূর্বে কুরবানী করা নিষেধ। করলে তাকে তদস্থলে আরেকটি কুরবানী দিতে হবে।[48]
২১. যবহকালীন দো‘আ : (১) বিসমিল্লা-হি আল্লা-হু আকবার (অর্থ: আল্লাহর নামে কুরবানী করছি, আল্লাহ সবার চাইতে বড়) (২) বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নী ওয়া মিন আহলে বায়তী (আল্লাহর নামে, হে আল্লাহ! তুমি কবুল কর আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ হ’তে)।
এখানে কুরবানী অন্যের হ’লে তার নাম মুখে বলবেন অথবা মনে মনে নিয়ত করে বলবেন, ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন ফুলান ওয়া মিন আহলে বায়তিহী’ (...অমুকের ও তার পরিবারের পক্ষ হ’তে)। এই সময় দরূদ পড়া মাকরূহ’।[49] (৩) যদি দো‘আ ভুলে যান বা ভুল হবার ভয় থাকে, তবে শুধু ‘বিসমিল্লাহ’ বলে মনে মনে কুরবানীর নিয়ত করলেই যথেষ্ট হবে।[50]
২২. গোশত বণ্টন :  কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজ পরিবারের খাওয়ার জন্য, এক ভাগ প্রতিবেশী যারা কুরবানী করতে পারেনি তাদের জন্য ও এক ভাগ সায়েল ফক্বীর-মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করবে। প্রয়োজনে উক্ত বণ্টনে কমবেশী করায় কোন দোষ নেই।[51] কুরবানীর গোশত যত দিন খুশী রেখে খাওয়া যায়।[52] অমুসলিম দরিদ্র প্রতিবেশীকেও দেওয়া যায়।[53]
২৩. মৃত ব্যক্তির জন্য পৃথকভাবে কুরবানী দেওয়ার কোন ছহীহ দলীল নেই। যদি কেউ সেটা করেন, তবে প্রখ্যাত তাবেঈ বিদ্বান  আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) বলেন, তাকে সবটুকুই ছাদাক্বা করে দিতে হবে।[54]
২৪. কুরবানীর গোশত বিক্রি করা নিষিদ্ধ। তবে তার চামড়া বিক্রি করে শরী‘আত নির্দেশিত ছাদাক্বার খাত সমূহে ব্যয় করবে।[55] অনেকে কুরবানীর গোশত ফ্রিজে জমা করে পরবর্তীতে কমদামে বিক্রি করেন। এগুলি প্রতারণা মাত্র। বরং তা ছওয়াবের আশায় অন্যদের মধ্যে ছাদাক্বা বা হাদিয়া হিসাবে বিতরণ করে দিতে হবে। অথবা নিজে রেখে যতদিন খুশী খাবে।
২৫. কুরবানীর পশু যবহ করা কিংবা কুটা-বাছা বাবদ কুরবানীর গোশত বা চামড়ার পয়সা হ’তে কোনরূপ মজুরী দেওয়া যাবে না। ছাহাবীগণ নিজ নিজ পকেট থেকে এই মজুরী দিতেন। অবশ্য ঐ ব্যক্তি দরিদ্র হ’লে হাদিয়া স্বরূপ তাকে কিছু দেওয়ায় দোষ নেই।[56]
২৬. কুরবানীর বদলে তার মূল্য ছাদাক্বা করা নাজায়েয। আল্লাহর রাহে রক্ত প্রবাহিত করাই এখানে মূল ইবাদত। যদি কেউ কুরবানীর বদলে তার মূল্য ছাদাক্বা করতে চান, তবে তিনি মুহাম্মাদী শরী‘আতের প্রকাশ্য বিরোধিতা করবেন।[57]
দলিলের উৎসঃ
[1]. মুসলিম হা/১৯৭৭; মিশকাত হা/১৪৫৯।
[2]. আহমাদ হা/৬৫৭৫; হাকেম ৪/২৪৮, হা/৭৫২৯; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/১৪৭৯; মির‘আত হা/১৪৯৩।
[3]. বুখারী হা/৯৬৯; মিশকাত হা/১৪৬০।
[4]. মুসলিম হা/১১৬২; মিশকাত হা/২০৪৪।
[5]. ইরওয়া হা/৬৫৩, ৩/১২৫।
[6]. মির‘আত ৫/৭০।
[7]. যাদুল মা‘আদ ২/৩৬১ পৃ.।
[8]. মির‘আত ৫/৬২।
[9]. মির‘আত হা/১৪৪৭, ১৪৫৪; ৫/৩৭, ৪৫; আহমাদ হা/২৩০৩৪।
[10]. বায়হাক্বী ৩/২৮৩, হা/৫৯৫৬; সুবুলুস সালাম, তা‘লীক্ব আলবানী ২/২০০।
[11]. বুখারী হা/৯৮১; মুসলিম হা/৮৯০; মিশকাত হা/১৪৩১।
[12]. মুসলিম হা/৮৯০।
[13]. মির‘আত ৫/৩১।
[14]. মিশকাত হা/১৪৪১; মির‘আত হা/১৪৫৫ এর আলোচনা, ২/৩৩৮, ৩৪১ পৃ.; ঐ, ৫/৪৬, ৫১, ৫২ পৃ.।
[15]. আবুদাঊদ হা/১১৫৩; মিশকাত হা/১৪৪৩।
[16]. ছহীহাহ হা/২৯৯৭।
[17]. ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৫/৮৪ পৃ.।
[18]. সুবুলুস সালাম ১/১৪০; মির‘আত ৫/২৭।
[19]. ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩।
[20]. মির‘আত ৫/৭১, ৭৩ পৃ.।
[21]. মির‘আত ৫/৭২-৭৩।
[22]. মির‘আত ৫/৮১।
[23]. কিতাবুল উম্ম ২/২২৩ পৃ.।
[24]. আহমাদ হা/১৮৬৯৭, ১০৪৮, ১০৬১; তিরমিযী হা/১৪৯৭ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৪৬৫।
[25]. মির‘আত ৫/৯৯।
[26]. ইবনু মাজাহ হা/৩১২২; বায়হাক্বী হা/১৮৮২৬, ৯/২৬৭; ইরওয়া হা/১১৩৮, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/১৪৬১।
[27]. মুসলিম হা/১৯৬৩; মিশকাত হা/১৪৫৫।
[28]. মির‘আত ৫/৮০ পৃ.।
[29]. মির‘আত ৫/৭৮-৭৯।
[30]. মুসলিম হা/১৯৬৭; মিশকাত হা/১৪৫৪; মির‘আত ১/৭৬।
[31]. মিশকাত ১৪৫৪ হাদীছের টীকা।
[32]. তিরমিযী হা/১৫১৮; আবুদাঊদ হা/২৭৮৮; ইবনু মাজাহ হা/২৫৩৩ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৪৭৮; মির‘আত ৫/১১৪-১৫।
[33]. তিরমিযী হা/১৫০৫।
[34]. ইবনু মাজাহ হা/৩১৪৮।
[35]. বুখারী হা/৫৫৫৮; মুসলিম হা/১৯৬৬; মিশকাত হা/১৪৫৩।
[36]. বুখারী হা/৫৫৫৯; মুসলিম হা/১২১১।
[37]. মুসলিম হা/১৩১৮ (৩৫১)।
[38]. তিরমিযী হা/৯০৫; নাসাঈ হা/৪৩৯২; ইবনু মাজাহ হা/৩১৩১; মিশকাত হা/১৪৬৯, সনদ ছহীহ।
[39]. মুসলিম হা/১৩১৮।
[40]. মুসলিম হা/১৩১৮।
[41]. মির‘আত ৫/৮৪ পৃ.।
[42]. তিরমিযী হা/১৫০১; মিশকাত হা/১৪৭৫; মির‘আত ১/১১০ পৃ.।
[43]. হেদায়া ৪/৪৩৩; বেহেশতী জেওর ‘আক্বীক্বা’ অধ্যায় ১/৩০০ পৃ.।
[44]. নায়লুল আওত্বার, ‘আক্বীক্বা’  অধ্যায় ৬/২৬৮ পৃ.।
[45]. সুবুলুস সালাম ৪/১৭৭ পৃ.; মির‘আত ৫/৭৫ প্রভৃতি।
[46]. ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/৩০।
[47]. মির‘আত ৫/১০৬।
[48]. বুখারী হা/৯৮৫; মুসলিম হা/১৯৬০; মিশকাত হা/১৪৭২।
[49]. মির‘আত ৫/৭৪ পৃ.।
[50]. ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১১/১১৭ পৃ.।
[51]. মির‘আত ৫/১২০।
[52]. তিরমিযী হা/১৫১০; আহমাদ হা/২৬৪৫৮, সনদ হাসান।
[53]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১২৮।
[54]. তিরমিযী তুহফা সহ, হা/১৫২৮; মির‘আত ৫/৯৪ পৃ.।
[55]. মির‘আত ৫/১২১; তওবা ৬০।
[56]. আল-মুগনী, ১১/১১০ পৃ.।
[57]. মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ, ২৬/৩০৪; মুগনী, ১১/৯৪-৯৫ পৃ.।
  (সমাপ্ত)

ইসলামি যে কোনো বিষয় কুরআন ও সহিহ হাদিস ভিত্তিক জানতে এখানে ক্লিক করুন।


মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
উপদেষ্টা-
মোঃ আনোয়ার হোসাইন আকন্দ (কামিলফার্স্ট ক্লাশ-আল হাদিস)
সরকারি মাদ্রাসা- আলিয়াঢাকাবাংলাদেশ।
========================================================
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
 “যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” (বুখারী ৩৪৬১,হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,  রিয়াদুস  সলেহিন,  হাদিস নং  ১৩৮৮।)

--------------------------------------------------------------
(1) BCSসহ যেকোনো সরকারি বেসরকারি চাকরি সহজে পেতে এখানে ক্লিক করুন।


(2) মজার মজার ইসলামিক গজল ও অন্যান্য বিষয়ের ভিডিও দেখতে চাইলে এর উপর ক্লিক করুন।


-------------------------------------------------------------------
Please Share On

No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...