বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২৬
(পাক পবিত্রতা অধ্যায়)
(প্রথম পর্ব)
হাদিস গ্রন্থ--মিশকাতুল মাসাবিহ (মিশকাত)-প্রকাশক-হাদিস একাডেমী
(PMMRC হাদিস নং-৩০৬৯-৩৩৫১টি মোট ২৮৩টি হাদিস)
(সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত)
(জাল-জইফ হাদিস আমলযোগ্য নয়)
মিশকাতুল মাসাবিহ (মিশকাত)-হবহু প্রকাশিত
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা ২৮১-৫৬৩
পরিচ্ছদঃ
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-২৮১
PMMRC হাদিস নং-৩০৬৯
আবূ মালিক আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পাক-পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক। ‘আলহাম্দু লিল্লা-হ’ মানুষের
‘আমালের পাল্লাকে ভরে দেয় এবং ‘সুবহানাল্ল-হি ওয়াল হাম্দু লিল্লা-হ’ সাওয়াবে পরিপূর্ণ
করে দেয় অথবা বলেছেন, আকাশমণ্ডলী ও জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে তা পরিপূর্ণ করে দেয়।
সলাত হল নূর বা আলো। দান-খায়রাত (দানকারীর পক্ষে) দলীল। সব্র বা ধৈর্য হল জ্যোতি।
কুরআন হল তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলীল । প্রত্যেক মানুষ ভোরে ঘুম হতে উঠে নিজের আত্মাকে
তাদের কাজে ক্রয়-বিক্রয় করে– হয় তাকে সে আযাদ করে দেয় অথবা জীবনকে ধবংস করে দেয় ।
[১]
আর এক বর্ণনায় এসেছে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু
আল্ল-হু আকবার’ আসমান ও জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে সব পরিপুর্ণ করে দেয়। [2] মিশকাতুল
মাসাবীহ-এর সংকলক বলেছেন, আমি এ বর্ণনাটি বুখারী-মুসলিম কিংবা হুমায়দী বা জামিউল উসূলে
কোথাও পাইনি। অবশ্য দারিমী এ বর্ণনাটিকে ‘সুবহানাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি’ এর স্হলে
বর্ণনা করেছেন।
[১] সহীহ : মুসলিম ২২৩, আহমাদ ৫/৩৪২-৪৩।
[2] দারিমী ৬৫৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮২
PMMRC হাদিস নং-৩০৭০
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) (সহাবীগণের উদ্দেশ্য করে) বললেনঃ আমি কি তোমাদের এমন একটি কথা বলব না
আল্লাহ তা’আলা যা দিয়ে তোমাদের গুনাহখাতা মাফ করে দিবেন এবং (জান্নাতেও) পদমর্যাদা
বাড়িয়ে দিবেন? সহাবীগণ আবেদন করলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আবশ্যই। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কষ্ট হলেও পরিপূর্ণভাবে উযূ কর, মাসজিদের দিকে অধিক পদক্ষেপ
রাখা এবং এক ওয়াক্ত আদায়ের পর আর এক ওয়াক্তের সালাতের প্রতীক্ষায় থাকা। আর এটাই হল
‘রিবাত্ব’ (প্রস্তুতি গ্রহণ)। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৩
PMMRC হাদিস নং-৩০৭১
মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘এটাই রিবা-ত্ব, এটাই রিবা-ত্ব দু’বার বলা
হয়েছে- (মুসলিম ২৫১) । আর তিরমিযীতে তা তিনবার উল্লিখিত হয়েছে । [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫১, তিরমিযী ৫১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৪
PMMRC হাদিস নং-৩০৭২
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি উযূ করে এবং উত্তমভাবে উযূ করে, তার শরীর হতে তার
সকল গুনাহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার নখের নিচ হতেও তা বের হয়ে যায়। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৪৫। মিশকাত গ্রন্থকার বলেন,
আমি বুখারীতে এ হাদীসটি পাইনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৫
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৩
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন মুসলিম অথবা মু’মিন বান্দা উযূ করে এবং তার চেহারা ধুয়ে
নেয়, তখন তার চেহারা হতে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার চোখের দ্বারা
কৃত সকল গুনাহ বের হয়ে যায় যা সে চোখ দিয়ে দেখেছে। যখন সে তার দুই হাত ধোয় তখন তার
দুই হাত দিয়ে করা গুনাহ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় যা তার দু’হাত
দিয়ে ধরার কারণে সংঘটিত হয়েছে। অনুরূপভাবে সে যখন তার দুই পা ধোয়, তার পা দ্বারা কৃত
গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় যে পাপের জন্য তার দু’ পা
হাঁটছে। ফলে সে (উযূর জায়গা হতে উঠার সময়) সকল গুনাহ হতে পাক-পবিত্র হয়ে যায়। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৪৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৬
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৪
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মুসলিম ফার্য সলাতের সময় হলে উত্তমভাবে উযূ করে, বিনয় ও ভয়
সহকারে রুকূ’ করে (সলাত আদায় করে তার এ সলাত), তা তার সলাতের পূর্বের গুনাহর কাফ্ফারাহ্
(প্রায়চিত্ত) হয়ে যায়, যতক্ষন না সে কাবীরাহ্ গুনাহ করে থাকে। আর এভাবে সর্বদাই চলতে
থাকবে। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২২৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৭
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৫
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি এরূপে উযূ করলেন, তিনবার নিজের দু’
হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন, তারপর তিনবার কুলি করলেন, নাকে পানি দিয়ে তা ঝেড়ে পরিষ্কার
করলেন, তিনবার মুখমন্ডল ধুলেন, তারপর কনুই পর্যন্ত তিনবার ডান হাত ধুলেন, এভাবে বাম
হাতও কনুই পর্যন্ত ধুলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন, তারপর ডান পা তিনবার ও বাম পা তিনবার
করে ধুলেন। এরপর তিনি [‘উসমান (রাঃ)] বললেন, যে ব্যক্তি আমার ন্যায় উযূ করবে ও মনোযোগ
সহকারে দুই রাক্’আত (নাফ্ল) সলাত আদায় করবে তার পূর্বেকার সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
মুত্তাফাকুন ‘আলায়হি; এ বর্ণনার শব্দসমুহ ইমাম বুখারীর। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৯৩৪, মুসলিম ২২৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৮
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৬
উক্ববাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে মুসলিম উযূ করে এবং উত্তমরূপে উযূ করে, অতঃপর দাঁড়িয়ে মনোযোগ
দিয়ে (অন্তর ও দেহ সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর দিকে রুজু করে) দু’রাক্’আত সলাত আদায় করে,
তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৩৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৮৯
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৭
উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উযূ করবে এবং উত্তমভাবে অথবা পরিপূর্ণভাবে
উযূ করবে এরপর বলবেঃ “আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ
ওয়া রসূলুহ”, অর্থাৎ- ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রসূল’। আর এক বর্ণনায় আছেঃ “আশহাদু
আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান
‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহ”- (অর্থাৎ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই।
তিনি এক ও একক। তাঁর কোন শারীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল।) তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে
যাবে। এসব দরজার যেটি দিয়ে খুশী সে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। ইমাম
মুসলিম তার সহীহ গ্রন্থে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আর হুমায়দী তাঁর আফরাদে মুসলিম গ্রন্থে, ইবনুল
‘আসীর জামিউল উসূল গ্রন্থে এরূপ ও শায়খ মুহীউদ্দীন নাবাবী হাদীসের শেষে আমি যেরূপ বর্ণনা
করেছি এরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইমাম তিরমিযী উপরউক্ত দু’আর পরে আরো বর্ণনা করেছেনঃ
“আল্লা-হুম্মাজ ‘আলনী মিনাত্ তাওয়া-বীনা ওয়াজ ‘আলনী মিনাল মুতাত্বাহ্হিরীন”- (অর্থাৎ-
হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তাওবাহকারীদের মধ্যে শামিল কর এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যে
গণ্য কর”। [১]
মুহয়ুস্ সুন্নাহ তাঁর সিহাহ গ্রন্থে যে হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন, “যে উযূ করল ও উত্তমভাবে তা করল শেষ …. পর্যন্ত। তিরমিযী তার জামি কিতাবে
হুবহু এটাই বর্ণনা করেছেন। অবশ্য তিনি (আরবী) (আন্না মুহাম্মাদান) শব্দের পূর্বে (আরবী)
(আশহাদু) শব্দটি বর্ণনা করেননি।
[১] সহীহ : মুসলিম ২৩৪, তিরমিযী ৫৫, সহীহুল
জামি‘ ৬১৬৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯০
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৮
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন আমার উম্মাতকে (জান্নাতে যাবার জন্য) এই অবস্থায়
ডাকা হবে যখন তাদের চেহারা উযূর কারণে ঝকমক করতে থাকবে, সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চমকাতে থাকবে।
“অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ উজ্জ্বলতাকে বাড়াতে সক্ষম সে যেন তাই করে”। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৩৬, মুসলিম ২৪৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯১
PMMRC হাদিস নং-৩০৭৯
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (জান্নাতে) মু’মিনের অলংকার অর্থাৎ উযূর চিহ্ন সে পর্যন্ত পৌঁছবে
যে পর্যন্ত উযূর পানি পৌঁছবে (তাই উযূ সুন্দরভাবে করবে)। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-২৯২
PMMRC হাদিস নং-৩০৮০
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (হে মু’মিনগণ!) তোমরা দ্বীনের উপর যথাযথভাবে অটল থাকবে। অবশ্য
তোমরা সকল (কাজ) যথাযথভাবে করতে পারবে না, তবে মনে রাখবে তোমাদের সকল কাজের মধ্যে সলাতই
হচ্ছে সর্বোত্তম। আর উযূর সব নিয়ম-কানুনের প্রতি মু’মিন ব্যতীত অন্য কেউ লক্ষ্য রাখে
না। [১]
[১] সহীহ : আহমাদ ২১৮৭৩, ইবনু মাজাহ্ ২৭৭,
দারিমী ৬৫৫, মুয়াত্ত্বা মালিক ৩৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯৩
PMMRC হাদিস নং-৩০৮১
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি উযূ থাকতে উযূ করে তার জন্য (অতিরিক্ত) দশটি নেকী
রয়েছে। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৫৯, য‘ঈফুল জামি‘ ৫৫৩৬।
কারণ এর সানাদে ‘আবদুর রহমান ইবনু যিয়াদ আফ্রিক্বী নামে একজন দুর্বল বারী রয়েছে। এছাড়াও
আবূ গাত্ফি একজন মাজহূল বা অপরিচিত রাবী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছদঃ
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-২৯৪
PMMRC হাদিস নং-৩০৮২
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের চাবি হল সলাত। আর সলাতের চাবি হল ত্বহারাত (উযূ)।
[১]
[১] য‘ঈফ : আহমাদ ১৪২৫২, য‘ঈফুল জামি‘ ৫২৬৫।
কারণ এর সানাদে আবূ ইয়াহ্ইয়া আল ফাতাত থেকে সুলায়মান ইবনু কাওম রয়েছে যারা দু’জনই স্মৃতি
বিভ্রাটজনিত কারণ দুর্বল রাবী। হাদীসের দ্বিতীয় অংশ তথা مِفْتَاحُ
الصَّلَاةِ
الطُّهُورُ
-এর শাহিদ রিওয়ায়াত থাকায় তা সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
মিশকাত হাদিস নং-২৯৫
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৩
শাবীব ইবনু আবূ রাওহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর কোন এক সহাবী হতে বর্ণনা করেন। একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন এবং (সলাতে) সূরাহ আর্ রূম তিলাওয়াত করলেন।
সলাতের মধ্যে তাঁর তিলাওয়াতে গোলমাল বেঁধে গেল। সলাত শেষে তিনি বললেন, মানুষের কি হল!
তারা আমার সাথে সলাত আদায় করছে অথচ উত্তমরূপে উযূ করছে না। এটাই সলাতে আমার কিরাআতে
গোলযোগ সৃষ্টি করে। [১]
[১] য‘ঈফ : নাসায়ী ৯৪৮, য‘ঈফুল জামি‘ ৫০৩৪।
কারণ এর সানাদে ‘আবদুল মালিক ইবনু ‘উমায়র রয়েছে যার মুখস্থশক্তিতে পরিবর্তন ঘটেছিল,
এমনকি ইবনু মা‘ঈন তাকে مخلط (মুখলাত্ব) বলেছেন। আর ইবনু হাজার তার ব্যাপারে
তাদলিসের অভিযোগ এনেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯৬
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৪
বানী সুলায়ম গোত্রের এক ব্যক্তি (সাহাবী) থেকে
বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পাঁচটি কথা আমার হাতে অথবা তাঁর নিজের হাতে গুণে বললেনঃ ‘সুবহা-নাল্ল-হ’ বলা
হল দাঁড়ি পাল্লার অর্ধেক, আর ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলা হল দাঁড়ি পাল্লাকে পূর্ণ করা এবং
‘আল্ল-হু আকবার’ বলা হল আকাশমন্ডলী ও জমিনের মধ্যে যা আছে তা পূর্ণ করে দেয়া। সিয়াম
ধৈর্যের অর্ধেক এবং পাক-পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৩৫১৯, য‘ঈফুল তারগীব ৯৪৪।
কারণ এর সানাদে ইবনু কুলায়ব হুবারী আল হিম্দী নামে একজন মাজহূল (অপরিচিত রাবী) রয়েছে।
কারণ তার থেকে আবূ ইসহক আস্ সাবি‘ঈ ছাড়া আর কেউ হাদীস বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯৭
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৫
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন মু’মিন বান্দা উযূ করে ও কুলি করে, তখন তার মুখ থেকে
গুনাহ বের হয়ে যায়। আর যখন সে নাক ঝাড়ে তখন তার নাক থেকে গুনাহ বের হয়ে যায়। যখন মুখমণ্ডল
ধোয়, গুনাহ তার মুখ থেকে বের হয়ে যায়, এমনকি তার চোখের পাতার নীচ হতেও গুনাহ বের হয়ে
যায়। এরপর যখন নিজের দু’টি হাত ধোয়, তখন তার হাত হতে গুনাহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার
হাতের নখের নীচ থেকেও গুনাহ বের হয়ে যায়। যখন মাথা মাসাহ করে, মাথা হতে গুনাহ বের হয়ে
যায়, এমনকি দুই কান থেকেও গুনাহ বের হয়ে যায়। যখন নিজের পা দু’টো ধোয়, তার দুই পায়ের
গুনাহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার পায়ের নখের নীচ হতেও গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। অতঃপর মাসজিদের
দিকে গমন এবং তার সলাত হয় তার জন্য অতিরিক্ত। [১]
[১] সহীহ লিগয়রিহী : নাসায়ী ১০৩, সহীহুত্ তারগীব
১৮৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ লিগাইরিহি
মিশকাত হাদিস নং-২৯৮
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৬
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ক্ববরস্থানে (অর্থাৎ- মাদীনার বাকী’তে) উপস্থিত হলেন এবং সেখানে (মৃতদের
উদ্দেশ্যে) বললেনঃ ‘‘আস্সালা-মু ‘আলায়কুম, (তোমাদের প্রতি আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক)
হে মু’মিন অধিবাসীগণ! আমরা ইনশা-আল্লাহ তোমাদের সাথে এসে মিলিত হচ্ছি। আমরা আশা করি,
আমরা যেন আমাদের ভাইদের দেখতে পাই’’। সহাবীগণ আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি
আপনার ভাই নই ? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা আমার বন্ধু।
আমার ভাই তারা যারা এখনো দুনিয়ায় আসেনি (পরে আসবে)। সহাবীগণ আবেদন করলেন, হে আল্লাহর
রসূল! আপনার উম্মাতদের যারা এখন আসেনি, তাদের আপনি ক্বিয়ামাতের দিন কিভাবে চিনবেন?
উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বল দেখি, যদি কোন ব্যক্তির
একদল নিছক কালো রঙের ঘোড়ার মধ্যে ধবধবে সাদা কপাল ও সাদা হাত-পা সম্পন্ন ঘোড়া থাকে,
সে কি তার ঘোড়াগুলো চিনতে পারবে না? তারা বললেন, হাঁ, নিশ্চয়ই চিনতে পারবে হে আল্লাহর
রসূল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, আমার উম্মাত উযূর কারণে
(ক্বিয়ামাতের দিন) সাদা ধবধবে কপাল ও সাদা হাত-পা নিয়ে উপস্থিত হবে এবং আমি হাওযে কাওসারের
নিকট তাদের অগ্রগামী হিসেবে উপস্থিত থাকব। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৪৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-২৯৯
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৭
আবুদ্ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমিই প্রথম ব্যক্তি, যাকে ক্বিয়ামাতের দিন (আল্লাহর দরবারে) সাজদাহ্
করার অনুমতি দেয়া হবে। আর এভাবে আমিই প্রথম ব্যক্তি যাকে সাজদাহ্ হতে মাথা উঠাবার অনুমতি
দেয়া হবে। অতঃপর আমি আমার সামনে (উপস্থিত উম্মাতদের দিকে) দৃষ্টি নিক্ষেপ করব এবং সকল
নাবী-রাসূলদের উম্মাতদের মধ্য হতে আমার উম্মাতকে চিনে নিব। এভাবে আমার পেছনে, ডান দিকে,
বাম দিকেও তাকাব। আমার উম্মাতকে চিনে নিব। (এটা শুনে) এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে
আল্লাহর রসূল! কিভাবে আপনি নূহ (আঃ) থেকে আপনার উম্মাত পর্যন্ত এত লোকের মধ্যে আপনার
উম্মাতকে চিনে নিবেন? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার
উম্মাত উযূর কারণে ধবধবে সাদা কপাল ও ধবধবে হাত-পা সম্পন্ন হবে, অন্য কোন উম্মাতের
মধ্যে এরূপ হবে না। তাছাড়া আমি তাদেরকে চিনতে পারব এসব কারণে যে, তাদের ডান হাতে ‘আমালনামা
থাকবে এবং তাদেরকে আমি এ কারণেও চিনব যে, তাদের অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানরা তাদের সামনে
দৌড়াদৌড়ি করবে। [১]
[১] সহীহ : আহমাদ ৩১২৩০, সহীহুত্ তারগীব ১৮০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ১.
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩০০
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৮
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার উযূ ছুটে গেছে তার সলাত কবুল হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত সে উযূ
না করে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৩৫, মুসলিম ২২৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০১
PMMRC হাদিস নং-৩০৮৯
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পাক-পবিত্রতা ছাড়া সলাত এবং হারাম ধন সম্পদের দান-খায়রাত কবূল
হয় না। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২২৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০২
PMMRC হাদিস নং-৩০৯০
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার অত্যধিক ‘মাযী’ বের হত। কিন্তু
আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যার (ফাত্বিমার) স্বামী, তাই এ ব্যাপারে
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কিছু জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করতাম। তাই
আমি মাসআলাটি জানার জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করতে
মিক্বদাদকে বললাম। সে (নাম প্রকাশ ব্যতীত) রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
জিজ্ঞেস করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ অবস্থায় সে প্রথমে
পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে ও তারপর উযূ করে নিবে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৩২, ১৭৮, ১৬৯, মুসলিম ৩০৩;
শব্দবিন্যাস মুসলিমের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৩
PMMRC হাদিস নং-৩০৯১
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আগুন দিয়ে পাকানো কোন জিনিস খেলে তোমরা উযূ করে
নেবে। [১]
ইমাম মুহ্য়িয়ুস্ সুন্নাহ্ (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের
হুকুম ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীস দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
[১] সহীহ : মুসলিম ৩৫২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৪
PMMRC হাদিস নং-৩০৯২
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বকরীর রানের (পাকানো) গোশ্ত খেয়ে সলাত আদায় করলেন কিন্তু উযূ করেননি। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২০৭, মুসলিম ৩৫৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৫
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৩
জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি বকরীর গোশ্ত খেলে উযূ করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি চাইলে করতে পার, না চাইলে না কর। সে আবার জিজ্ঞেস
করল, উটের গোশ্ত খাবার পর কি উযূ করব? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
হাঁ, উটের গোশ্ত খাবার পর উযূ কর। অতঃপর সে ব্যক্তি আবার জিজ্ঞেস করল, বকরী থাকার
স্থানে কি সলাত আদায় করতে পারি? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ,
পারো। তারপর সে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, উটের বাথানে কি সলাত আদায় করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৩৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৬
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৪
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার পেটের মধ্য কিছু (বায়ু) শব্দ পায় এবং এরপর
তার সন্দেহ হয় যে, তার পেট হতে কিছু (বায়ু) বের হয়েছে কিনা, তাহলে সে যেন (উযূ) নষ্ট
হয়ে গেছে ভেবে মাসজিদ হতে বের না হয়, যে পর্যন্ত সে (বায়ু বের হবার দরুন) কোন শব্দ
না শুনে বা গন্ধ না পায়। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৩৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৭
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৫
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) দুধ পান করলেন । অতঃপর কুলি করলেন এবং বললেন, দুধের মধ্যে চর্বি থাকে
। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২১১, মুসলিম ৩৫৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৮
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৬
বুরায়দাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মাক্কাহ্ বিজয়ের দিন এক উযূতে কয়েক ওয়াক্তের সলাত আদায় করলেন এবং মোজার উপর
মাসাহ করলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, আজ আপনি এমন কিছু করলেন যা পূর্বে কখনো করেননি।
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে, ‘উমার! আমি ইচ্ছা করেই এরূপ করেছি।
[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৭৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩০৯
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৭
সুওয়াইদ ইবনু নু‘মান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর সাথে খায়বার যুদ্ধে গিয়েছিলেন। তাঁরা খায়বারের অতি নিকটে ‘সহ্বা’ নামক
স্থানে যখন পৌঁছলেন, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আস্রের সলাত
আদায় করলেন। অতঃপর আহার পরিবেশন করতে বললেন, কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছু পাওয়া গেল না।
তিনি নির্দেশ দিলেন। তাই পানি দিয়ে ছাতু নরম করা হল। এ ছাতু তিনি নিজেও খেলেন আমরাও
খেলাম। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের সলাতের জন্য দাঁড়ালেন
এবং শুধু কুলি করলেন। আর আমরাও কুলি করলাম। এ অবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সলাত আদায় করলেন, অথচ নতুনভাবে উযূ করলেন না। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২০৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ১.
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩১০
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৮
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (বায়ু নির্গত হবার) শব্দ কিংবা গন্ধ পেলেই কেবল উযূ করতে হবে।
[১]
[১] সহীহ : আহমাদ ৯৭৪৩, তিরমিযী ৭৪, ইবনু মাজাহ্
৫১৫, সহীহুল জামি‘ ৭৫৫২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১১
PMMRC হাদিস নং-৩০৯৯
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে ‘মাযী’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ‘মাযীর’ কারণে উযূ আর
‘মানীর’ কারণে গোসল করতে হবে। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ১১৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১২
PMMRC হাদিস নং-৩১০০
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সলাতের চাবি হল ‘উযূ’, আর সলাতের ‘তাহরীম’ হল ‘তাকবীর’ (অর্থাৎ
আল্ল-হু আকবার বলা) এবং তার ‘তাহলীল’ হল (সলাতের শেষে) সালাম ফিরানো। [১]
[১] হাসান সহীহ : আবূ দাঊদ ৬১৮, তিরমিযী ৩,
আহমাদ ১/১২৯, দারিমী ৭১৪।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
মিশকাত হাদিস নং-৩১৩
PMMRC হাদিস নং-৩১০১
‘আলী ও আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু মাজাহ্ এ হাদীসটিকে ‘আলী ও আবূ সা’ঈদ
(রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। [১]
[১] সহীহ : ইবনু মাজাহ ২৭৫, ২৭৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৪
PMMRC হাদিস নং-৩১০২
আলী ইবনু ত্বলক্ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কারও যখন বায়ু বের হয়, তখন সে যেন আবার উযূ করে নেয়।
আর তোমরা নারীদের গুহ্যদ্বারে সঙ্গম করবে না। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ১১৬৫, আবূ দাঊদ ২০৫। শব্দবিন্যাস
আত্ তিরমিযীর اَلسَّهُ
(আস্ সাহু) হলো নিতম্বের নাম। আর اَلْوِكَاءُ
(আল বিকা-উ) হলো মশকের মুযবাধার রশি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৫
PMMRC হাদিস নং-৩১০৩
মু‘আবিয়াহ্ ইবনু আবী সুফ্ইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেনঃ চোখ দু’টো হল গুহ্যদ্বারের ফিতা-বন্ধন স্বরূপ। সুতরাং চোখ যখন ঘুমায়
ফিতা (ঢাকনা) তখন খুলে যায়। [১]
[১] হাসান : আহমাদ ১৬৪৩৭, দারিমী ৭২২, সহীহুল
জামি‘ ৪১৪৮। এর সানাদে আবূ বাকর ইবনু আবূ মারইয়াম (আঃ) নামক একজন দুর্বল রাবী থাকা
সত্ত্বেও তার শাহিদ বর্ণনা থাকায় হাসানের স্তরে উন্নীত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৬
PMMRC হাদিস নং-৩১০৪
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গুহ্যদ্বারের ফিতা বা ঢাকনা হল চক্ষুদ্বয়। তাই যে ব্যক্তি ঘুমাবে
সে যেন উযূ করে। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২০৩, সহীহুল জামি‘ ৭১১৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৭
PMMRC হাদিস নং-৩১০৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর
সহাবীগণ ‘ইশার সলাতের জন্যে বসে অপেক্ষা করতেন। এমনকি ঘুমের আমেজে তাদের মাথা নীচের
দিকে ঝুঁকে পড়তো। এরপর তারা সলাত আদায় করতেন, অথচ নতুন উযূ করতেন না। [১] তবে ইমাম
তিরমিযী ‘ইশার সলাতের অপেক্ষায় বসে থাকতেন”-এর জায়গায় “ঘুম যেতেন” শব্দ উল্লেখ করেছেন।
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২০০, তিরমিযী ৭৮, মুসলিম
৩৭৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৮
PMMRC হাদিস নং-৩১০৬
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই
উযূ সে ব্যক্তির জন্যে ওয়াজিব যে কাত হয়ে ঘুমায়। কারণ কাত হয়ে ঘুমালে শরীরের বন্ধনগুলো
শিথিল হয়ে পড়ে। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ২০২, তিরমিযী ৭৭, য‘ঈফুল
জামি‘ ১৮০৮। কারণ এর সানদে ইয়াযীদ ইবনু খালিদ আদ্ দালানী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে
এবং সে হাদীসের মাতানের ক্ষেত্রেও ভুল করে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩১৯
PMMRC হাদিস নং-৩১০৭
বুসরাহ্ বিনতু সফ্ওয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করে তাহলে তাকে উযূ করতে
হবে । [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৮১, তিরমিযী ৮২, নাসায়ী
৪৪৭, মালিক ৯১, আহমাদ ২৬৭৫১, সহীহুল জামি‘ ৬৫৫৪, ইবনু মাজাহ ৪৭৯, দারিমী ৭৫১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২০
PMMRC হাদিস নং-৩১০৮
ত্বলক্ব ইবনু ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হল, উযূ করার পর কেউ যদি তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করে তাহলে
এর হুকুম কী? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সেটা তো মানুষের
শরীরেরই একটা অংশবিশেষ। [১]
ইমাম মুহ্য়িয়ূস সুন্নাহ্ (রহঃ) বলেছেন, এ
হাদীসটি মানসূখ (রহিত)। কেননা আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ত্বল্ক্ব-এর মাদীনাহ্ আগমনের পর
ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৮২, তিরমিযী ৮৫, নাসায়ী
১৬৫। ইবনু মাজাহও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২১
PMMRC হাদিস নং-৩১০৯
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তোমাদের কারো
হাত নিজের পুরুষাঙ্গের উপর লাগলে এবং হাত ও পুরুষাঙ্গের মধ্যে কোন আবরণ না থাকলে তাকে
উযূ করতে হবে”। [১]
[১] সহীহ : মুসনাদে শাফি‘ঈ ১২ পৃঃ, দারাকুত্বনী
১/১৪৭, সহীহুল জামি‘ ৩৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২২
PMMRC হাদিস নং-৩১১০
বুসরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাসায়ী (রহঃ) বুসরাহ্ (রাঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা
করেছেন, তবে তিনি “হাত ও পুরুষাঙ্গের মধ্যে কোন আবরণ নেই”-এ শব্দগুলো বর্ণনা করেননি।
[১]
[১] সহীহুল ইসনাদ : নাসায়ী ৪৪৫ (সহীহ সুনান
আন্ নাসায়ী)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৩
PMMRC হাদিস নং-৩১১১
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর কোন স্ত্রীকে চুমু দিতেন, এরপর সলাত আদায় করতেন, অথচ উযূ করতেন না।
[১]
ইমাম তিরমিযী বলেছেন, আমাদের হাদীসবেত্তাদের
মতে কোন অবস্থাতেই ‘উরওয়ার সানাদ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে, এমনকি ইবরাহীম আত্ তায়মী (রহঃ)-এর
সানাদও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে সহীহ হতে পারে না।
আবূ দাউদ বলেছেন, এ হাদীসটি মুরসাল। কারণ ইবরাহীম
আত্ তায়মী (রহঃ) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে শুনেননি।
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৭৮, তিরমিযী ৮৬, নাসায়ী
১৭০, ইবনু মাজাহ্ ৫০২, সহীহুল জামি‘ ৪৯৯৭। শব্দবিন্যাস নাসায়ীর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৪
PMMRC হাদিস নং-৩১১২
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ভেড়ার বাজুর গোশ্ত খেলেন, তারপর আপন হাতকে আপন পায়ের তলায় ঘষে মুছে নিলেন,
অতঃপর সলাত আদায় করতে দাঁড়িয়ে গেলেন, অথচ (নতুন করে) উযূ করলেন না। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৮৯, ইবনু মাজাহ্ ৪৮৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৫
PMMRC হাদিস নং-৩১১৩
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট পাঁজরের ভুনা গোশ্ত পেশ করলাম। তিনি তা থেকে কিছু খেলেন, তারপর
সলাতে দাঁড়িয়ে গেলেন, নতুন করে উযূ করেননি। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ১৮২৯, আহমাদ ২৬০৮২, ইবনু
মাজাহ্ ৪৯১, নাসায়ী পবিত্রতা অধ্যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ১.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩২৬
PMMRC হাদিস নং-৩১১৪
আবূ রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বকরীর পেটের গোশ্ত (কলিজা প্রভৃতি) ভুনা
করে দিতাম (তিনি তা খেতেন)। এরপর তিনি সলাত আদায় করতেন, কোন উযূ করতেন না। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৩৫৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৭
PMMRC হাদিস নং-৩১১৫
আবূ রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাকে একটি বকরী হাদিয়্যাহ্ দেয়া
হল এবং তিনি তা পাতিলে রান্না করলেন। এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-তার কাছে এসে উপস্থিত হলেন। তিনি বললেন, এটা কী, হে আবূ রাফি’? তিনি বললেন,
আমাদেরকে একটি বকরী হাদিয়্যাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছে, হে আল্লাহর রসূল! পাতিলে তা পাক
করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আবূ রাফি’! আমাকে এর একটি
বাজু দাও তো। আমি তাঁকে একটি বাজু দিলাম। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, আমাকে আরো একটি বাজু দাও। অতঃপর আমি তাঁকে আরো একটি বাজু দিলাম। এরপর তিনি
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, আমাকে আরো একটি বাজু দাও। তখন আমি
বললাম, হে আল্লাহ রসূল! একটি বকরীর তো দু’টি বাজু হয়। এটা শুনে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আহ! তুমি যদি চুপ থাকতে, তাহলে ‘বাজুর পর বাজু আমাকে দিতে
পারতে, যে পর্যন্ত তুমি নিশ্চুপ থাকতে। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
পানি চাইলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুলি করলেন, নিজের আঙ্গুলের
মাথা ধুয়ে নিলেন, অতঃপর সলাতে দাঁড়ালেন এবং সলাত আদায় করলেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার তাদের কাছে ফিরে এলেন। এবার তাদের কাছে ঠান্ডা গোশ্ত দেখতে
পেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেলেন, এরপর মাসজিদে প্রবেশ করলেন
এবং সলাত আদায় করলেন। কিন্তু তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পানি ব্যবহার
করলেন না অর্থাৎ উযূ করলেন না। [১]
[১] য‘ঈফ : আহমাদ ২৬৬৫৪। কারণ এর সানাদে শুরাহবিল
বিন সা‘দ নামে দুর্বল রাবী এবং আবূ জা‘ফার আর্ রাযী নামে মতবিরোধপূর্ণ রাবী রয়েছে।
তবে ‘‘শামায়িল’’-এর তাহ্ক্বীক্বে ‘আল্লামা আলবানী (রহঃ) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৮
PMMRC হাদিস নং-৩১১৬
আবূ ‘উবায়দ থেকে বর্ণিতঃ
দারিমী আবূ ‘উবায়দ হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু দারিমী ‘অতঃপর তিনি পানি চাইলেন হতে শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেননি। [১]
[১] সহীহ : দারিমী ১/২২, আহমাদ ৩/৪৮৪-৮৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩২৯
PMMRC হাদিস নং-৩১১৭
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি, উবাই ইবনু কা’ব ও আবূ ত্বলহাহ্
(রাঃ)-এ তিনজন এক জায়গায় বসে গোশ্ত ও রুটি খেলাম। অতঃপর খাওয়া শেষে আমি উযূ করার জন্য
পানি চাইলাম। এটা দেখে তাঁরা [উবাই ইবনু কা’ব ও আবূ ত্বালহাহ্ (রাঃ)] বললেন, তুমি
উযূ কেন করবে? আমি বললাম, এ খাবারের কারণে? তাঁরা উভয়ে বললেন, এ পাক-পবিত্র খেয়েও কি
তুমি উযূ করবে? অথচ তোমার চেয়ে অনেক বেশী উত্তম যিনি ছিলেন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁর আহারের পর উযূ করেননি। [১]
[১] জায়য়িদুল ইসনাদ : আহমাদ ১৫৯৩০।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
মিশকাত হাদিস নং-৩৩০
PMMRC হাদিস নং-৩১১৮
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে চুমু
দেয়া অথবা তার স্বীয় হাত দিয়ে স্পর্শ করা ‘লামস্’-এর মধ্য গণ্য। সুতরাং যে লোক তার
স্ত্রীকে চুমু দিবে কিংবা হাত দিয়ে স্পর্শ করবে তার জন্য উযূ করা ওয়াজিব। [১]
[১] সহীহ : মুয়াত্ত্বা মালিক ৯৭, মুসনাদে শাফি‘ঈ
১১ নং পৃঃ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩১
PMMRC হাদিস নং-৩১১৯
ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে চুমু দিলে
উযূ করা অত্যাবশ্যক। [১]
[১] সহীহ : মালিক ৯৬, বায়হাক্বী ১/১২৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩২
PMMRC হাদিস নং-৩১২০
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার (রাঃ) বলেছেন, চুমু দেয়া ‘লামস্’-এর
অন্তর্ভূক্ত। (যা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে)। সুতরাং চুমু দেয়ার পরে তোমরা উযূ করবে।
[১]
[১] য‘ঈফ : দারাকুত্বনী ১/১৪৪। কারণ এর সানাদে
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনু ‘উসমান যিনি স্মরণশক্তিগত ত্রুটির কারণে
দুর্বল প্রমাণিত হয়েছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৩
PMMRC হাদিস নং-৩১২১
‘উমার (রাঃ) ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) তামীম
আদ্ দারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক প্রবাহমান রক্তের কারণেই উযূ করতে হবে। [১]
দারাকুত্বনী হাদীস দু’টো বর্ণনা করেছেন। তিনি
বলেছেন, ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) এ হাদীসটি তামীম আদ্ দারী (রাঃ) হতে শুনেননি।
তিনি তাঁকে দেখেনওনি। অপর রাবী ইয়াযীদ ইবনু খালিদ ও ইয়াযীদ ইবনু মুহাম্মাদ উভয়ই অজ্ঞাত
ব্যক্তি। সুতরাং এ হাদীস গ্রহণযোগ্য নয়।
[১] য‘ঈফ : দারাকুত্বনী ১/১৫৭। হাদীসে উল্লেখিত
কারণ ছাড়াও এর দুর্বলতার তৃতীয় একটি কারণ হলো সানাদে বাক্বিয়্যাহ্ ইবনু ওয়ালীদ এর উপস্থিতি
যিনি একজন মুদাল্লিস রাবী হিসেবে পরিচিত।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছদঃ ২.
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৪
PMMRC হাদিস নং-৩১২২
আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যখন পায়খানায় যাবে তখন ক্বিবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসবে
না, বরং পূর্বদিকে ফিরে বসবে অথবা পশ্চিম দিকে। [১]
শায়খ ইমাম মুহ্য়িয়ুস্ সুন্নাহ বলেছেন, এটা
উন্মুক্ত প্রান্তরের হুকুম। দালান কোঠা বা ঘরের মধ্যকার পায়খানায় অথবা ঘরের মতো করে
নির্মিত পায়খানায় এরূপ করা দোষের নয়।
[১] সহীহ : বুখারী ৩৯৪, মুসলিম ২৬৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৫
PMMRC হাদিস নং-৩১২৩
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার কোন কাজে (আমার বোন উম্মুল
মু’মিনীন) হাফসার ঘরের ছাদে উঠেছিলাম। তখন আমি দেখলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) (নীচে এক ঘেরাও করা জায়গায়) ক্বিবলাহকে পেছনে রেখে (উত্তরে) সিরিয়ার দিকে
মুখ ফিরিয়ে পায়খানা করছেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৮, মুসলিম ২৬৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৬
PMMRC হাদিস নং-৩১২৪
সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ক্বিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব-পায়খানা করতে, ডানহাতে ইস্তিঞ্জা
করতে, তিনটির কম ঢিলা দিয়ে ইস্তিঞ্জা করতে এবং শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে ইস্তিঞ্জা করতে
নিষেধ করেছেন। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৭
PMMRC হাদিস নং-৩১২৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পায়খানায় গেলে বলতেনঃ “আল্ল- হুম্মা ইনী আ‘উযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল
খবা-য়িস”- [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট নর ও নারী শায়ত্বনদের (ক্ষতি সাধন)
থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।[১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪২, মুসলিম ৩৭৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৮
PMMRC হাদিস নং-৩১২৬
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দু’টি ক্ববরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, এ দুই ক্ববরবাসীকে শাস্তি
দেয়া হচ্ছে, কিন্তু কোন বিরাট গুনাহের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এদের একজন প্রস্রাব
করার সময় আড়াল করত না। সহীহ মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, প্রস্রাব করার পর উত্তমভাবে
পাক-পবিত্রতা অর্জন করত না। আর অপরজন একজনের কথা অন্যজনের কানে লাগাত (চোগলখোরি করত)।
এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি য়া সাল্লাম) খেজুরের একটি তাজা ডাল ভেঙ্গে তা দুই
ভাগ করলেন এবং প্রত্যেক ক্ববরে তার একটি অংশ গেড়ে দিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন,
হে আল্লাহর রসূল! আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
যে পর্যন্ত ডাল দু’টি শুকিয়ে না যাবে, হয়তো তাদের শাস্তি হ্রাস করা হবে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২১৮, মুসলিম ২৯২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৩৯
PMMRC হাদিস নং-৩১২৭
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমরা দু’টি অভিসম্পাত থেকে বেঁচে থাকবে। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন,
হে আল্লাহর রসূল! সে দুটি অভিসম্পাত কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
যে ব্যক্তি মানুষের চলাচলের পথে অথবা তাদের কোন কিছুর ছায়ার স্থানে পায়খানা করে।
[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪০
PMMRC হাদিস নং-৩১২৮
আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ পানি পান করার সময় যেন পানপাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে,
শৌচাগারে গেলে ডান হাতে নিজের পুরুষাঙ্গকে না ধরে এবং নিজের ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য
না করে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৫৩, মুসলিম ২৬৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪১
PMMRC হাদিস নং-৩১২৯
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : কোন ব্যক্তি উযূ করার সময় যেন ভাল করে নাক ঝেড়ে নেয় এবং ইস্তিঞ্জা
করার সময় বেজোড় সংখ্যায় ঢিলা (তিন, পাঁচ ও সাত) ব্যবহার করে। [৩৫৮]
(আরবী) (সে যেন প্রয়োজন পূরণের সময় ডান হাত
দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে (আরবী) (অর্থাৎ যখন তোমাদের
কেউ পেশাব করে সে যেন ডান হস্ত দ্বারা স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে)। আরেকটি বর্ণনায়
রয়েছে (আরবী) (অর্থাৎ তোমাদের কেউ যেন পেশাবরত অবস্থায় ডান হাত দ্বারা স্বীয় পুরুষাঙ্গ
স্পর্শ না করে) উপরোক্ত সবগুলো বর্ণনা প্রমাণ করে যে পুরুষাঙ্গ স্পর্শের নিষেধাজ্ঞাটা
পেশাবরত অবস্থার সাথে শর্তযুক্ত। এছাড়া অন্য অবস্থায় তা বৈধ। সর্বাবস্থায় ডান হাত
দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করা নিষেধ সম্পর্কিত যে সকল বর্ণনা এসেছে এগুলোর উৎসস্থল একই।
আবার কেউ কেউ বলেন ; সর্বাবস্থায় এ বিষয়টি
নিষিদ্ধ হওয়াটাই যথাযথ হওয়া সত্ত্বেও নিষেধ করেছেন। কেননা প্রস্রাবরত অবস্থায় তা
স্পর্শ করা প্রয়োজন। আর ত্বল্ক্ব বিন ‘আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটিও ১ম উক্তিকে
সমর্থন করে যেখানে “তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে লজ্জাস্থান স্পর্শ
সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেন যে তাতো তোমার শরীরের একটি অঙ্গ মাত্র।” ত্বল্ক্ব
(রাঃ)-এর এ বর্ণনাটি সর্বাবস্থায় তা স্পর্শ করার বৈধতা প্রমাণ করে। তবে আবূ ক্বাতাদাহ্
(রাঃ)-এর সহীহ হাদীসটির মাধ্যমে প্রস্রাবরত অবস্থাটি বৈধতা থেকে বের হয়ে গেল এবং অন্য
অবস্থায় তা বৈধতার উপর অবশিষ্ট রইল। ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা নিষেধের কারণ ডান হাতের
মর্যাদা রক্ষা। হাদীসটি উল্লিখিত তিনটি বিষয় যথা পানি পানের সময় পাত্রে শ্বাস ফেলা,
প্রস্রাব করা কালে ডান হাত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ এবং ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা
নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ। কেননা নাহীর মূল অর্থ হল হারাম করা যদি অন্য
কোন অর্থে গ্রহণের কারণ না থাকে। এখানে সে ধরনের কোন কারণ নেই। তবে জমহুরের মতে এখানে
নাহী দ্বারা উদ্দেশ্য নাহীয়ে তানযীহি।
[১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৬১, মুসলিম ২৩৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪২
PMMRC হাদিস নং-৩১৩০
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পায়খানায় যেতেন। আমি এবং অন্য এক বালক পানির পাত্র ও বর্শাধারী একটি
লাঠি নিয়ে যেতাম। সে পানি দিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শৌচ
কার্য সমাধা করতেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৫২, মুসলিম ২৭১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ২.
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৩১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পায়খানায় প্রবেশকালে নিজের হাতের আংটি খুলে রাখতেন। [১] ইমাম তিরমিযী
বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। ইমাম আবূ দাঊদ বলেন, হাদীসটি ‘মুনকার’। অধিকন্তু
তিনি ‘খুলে রাখতেন’ এর পরিবর্তে ‘রেখে দিতেন’ বলেছেন।
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ১৯, নাসায়ী ৫২১৩, তিরমিযী
১৭৪৬।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৩২
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন পায়খানায় যেতে ইচ্ছা করতেন, তখন এত দূরে চলে যেতেন যাতে কেউ তাঁকে দেখতে
না পায়। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৩
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদিন নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। তিনি প্রস্রাব করার ইচ্ছা করলে একটি দেয়ালের
কাছে গিয়ে নরম জায়গায় প্রস্রাব করলেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের কেউ প্রস্রাব করতে ইচ্ছা
করলে এরূপ নরম স্থান খোঁজ করবে (যাতে শরীরে প্রস্রাবের ছিটা না আসে)। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ৩, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্
২৩২০। এর সানাদে একজন অপরিচিত রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) প্রস্রাব-পায়খানার সময় নির্দিষ্ট স্থানের কাছাকাছি যাওয়ার পরই কাপড় উঠাতেন
(অর্থাৎ বসার সময়ে উঠাতেন, তার পূর্বে নয়)। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ১৪, আবূ দাঊদ ১৪, সহীহুল
জামি‘ ৪৬৫২। যদিও আবূ দাঊদ সানাদে একজন অপরিচিত রাবী থাকায় হাদীসটি দুর্বল বলেছেন,
কিন্তু বায়হাক্বী সে রাবীর নাম ক্বাসিম ইবনু মুহাম্মাদ বলেছেন। আর তিনি একজন বিশ্বস্ত
রাবী। অতএব হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৫
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : (তা‘লীম ও নাসীহাতের ব্যাপারে) আমি তোমাদের জন্য পিতা-পুত্রের
ন্যায়। আমি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকি (তোমাদের দীন, এমনকি প্রস্রাব-পায়খানার শিষ্টাচারও)।
যখন তোমরা পায়খানায় যাবে ক্বিবলার দিকে মুখ করে বসবে না, পিঠ দিয়েও বসবে না। পায়খানা
করার পর তিনটি ঢিলা দিয়ে তিনি পাক-পবিত্র হবার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং শুকনা গোবর
ও হাড় দিয়ে (পাক-পবিত্র হতে) নিষেধ করেছেন। তিনি ডান হাতে শৌচ করতেও নিষেধ করেছেন।
[১]
আল্লামা ‘আযীযী বলেন : রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জমিনের নিকটবর্তী না হয়ে পরিপূর্ণ কাপড় উত্তোলন করতেন না বা করেননি।
অতএব, কাপড় অপবিত্র হওয়ার আশংকা থাকলে সতর সংরক্ষন করে তা উত্তোলন করা বৈধ অন্যথায়
প্রয়োজনানুপাতে উঠাবে।
[১] সহীহ : ইবনু মাজাহ্ ৩১৩, আবূ দাঊদ ৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৬
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর ডান হাত ছিল তাঁর পবিত্রতা অর্জন ও খাবারের জন্য। আর বাম হাত ছিল প্রস্রাব-পায়খানা
ও অপর অপছন্দনীয় কাজের জন্য। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৪৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৭
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় যায়, সে যেন তিনটি ঢিলা সাথে করে নিয়ে
যায়। এ ঢিলাগুলো দিয়ে সে পাক-পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে। [১]
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ৪০, আহমাদ ২৪৪৯১, নাসায়ী
৪৪, দারিমী ৬৯৭।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫০
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৮
‘আবদুল্লাহ) ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমরা শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে শৌচকর্ম করো না। কেননা এসব তোমাদের
ভাই জিনদের খোরাক। [১] তবে ইমাম নাসায়ী ‘জিন্দের খোরাক’ বাক্যটি উল্লেখ করেননি।
[১] সহীহ : সহীহুল জামি‘ ৭৩২৫, তিরমিযী ১৮।
যদিও ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে মুরসাল বলেছেন কিন্তু দু’জন বিশ্বস্ত রাবী হাদীস মাওসুল
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫১
PMMRC হাদিস নং-৩১৩৯
ওয়াইফি‘ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : হে রুওয়াইফি'! হয়তো তুমি আমার পরে দীর্ঘ জীবন লাভ করবে, তুমি
তখন মানুষকে এ সংবাদ দিবে যে, যে ব্যক্তি নিজের দাড়ি জট পাকাবে অথবা ধনুকের রশি গলায়
কবচ হিসেবে বাঁধবে অথবা পশুর গোবর বা হাড় দিয়ে শৌচকর্ম করবে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে কোন সম্পর্ক রাখেন না। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৬, সহীহুল জামি‘ ৭৩১০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫২
PMMRC হাদিস নং-৩১৪০
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি সুরমা লাগায়, সে যেন বেজোড় সংখ্যায় লাগায়। যে এভাবে
করল সে ভাল করল, আর যে এভাবে করল না সে গর্হিত কাজ করল না। আর যে ব্যক্তি (প্রস্রাব-পায়খানা
করার পর) ঢিলা ব্যবহার করে সে যেন বেজোড় ঢিলা ব্যবহার করে। যে ব্যক্তি এভাবে করল সে
ভাল করল, আর যে ব্যক্তি করল না সে গর্হিত কাজ করল না। যে ব্যক্তি খাবার খেলো এবং (খাবারের
পর) খিলাল দ্বারা দাঁত হতে কিছু বের করল, সে যেন তা মুখ থেকে ফেলে দেয়। আর যা জিহ্বা
দিয়ে বের করে নেয় তা যেন গিলে ফেলে। যে এভাবে করল সে উত্তম কাজ করল, আর যে এরূপ করল
না সে গর্হিত কাজ করল না। যে লোক পায়খানায় যায় সে যেন পর্দা করে। পর্দা করার জন্য যদি
সে বালুর স্তুপ ছাড়া কিছু না পায় তাহলে স্তুপের দিকে যেন পিঠ দিয়ে বসে (কাপড় দিয়ে সামনের
দিক ঢেকে রাখে)। কারণ শয়তান মানুষের বসার স্থান নিয়ে খেলা করে। যে এরূপ করল ভাল করল,
আর না করলে মন্দ কিছু করল না। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ৩৫, ইবনু মাজাহ্ ৩৩৭,
সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ১০২৮, দারিমী ৬৮৯। কারণ এর সানাদে দু’জন অপরিচিত রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৪১
আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় প্রস্রাব না করে, এরপর আবার সেখানে
গোসল করে অথবা উযূ করে। কারণ মানুষের অধিকাংশ ওয়াস্ওয়াসা এসব থেকেই উৎপন্ন হয়। [১]
কিন্তু শেষের দু'জন (তিরমিযী ও নাসায়ী), "এরপর সেখানে গোসল করে ও উযূ করে"
উল্লেখ করেননি।
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২৭, তিরমিযী ২১, নাসায়ী
৩৬, সহীহুস জামি‘ ৭৫৯৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৪২
আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন গর্তে প্রস্রাব না করে।[১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ২৯, নাসায়ী ৩৪। এর রাবীগণ
বিশ্বস্ত হলেও এর মধ্যে সূক্ষ্ম কিছু ত্রুটি রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৩
মু‘আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তিনটি অভিশপ্ত হওয়ার যোগ্য কাজ- (১) পানির ঘাটে, (২) চলাচলের
পথে ও (৩) কোন কিছুর ছায়ায় পায়খানা করা এমন করা হতে বেঁচে থাকবে। [১]
[১] হাসান লিগয়রিহী : আবূ দাঊদ ২৬, ইবনু মাজাহ
৩২৮, সহীহ তারগীব ১৪৬। যদিও বিচ্ছিন্নতা ও অপরিচিত রাবী থাকায় এর সানাদটি ত্রুটিযুক্ত,
তারপরও এর শাহিদ বর্ণনা থাকায় এটি হাসান-এর স্তরে পৌঁছেছে।
হাদিসের মানঃ হাসান লিগাইরিহি
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৪
আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : দুই ব্যক্তি এক সঙ্গে যেন পায়খানায় এমনভাবে না বসে যে, দু'জনেই
দু'জনার লজ্জাস্থান দেখতে পায় এবং পরস্পরের সাথে কথা বলে। কেননা মহান আল্লাহ এ ধরনের
কাজে খুবই রাগান্বিত হন। [১]
[১] সহীহ লিগয়রিহী : আবূ দাঊদ ১৫, সহীহুত্
তারগীব ১৫৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ লিগাইরিহি
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৫
যায়দ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : এসব পায়খানার স্থান হচ্ছে (জ্বিন ও শাইত্বনের) উপস্থিতির স্থান।
সুতরাং তোমাদের যারা পায়খানায় যাবে তারা যেন এ দু'আ পড়ে : “আ'উযু বিল্লা-হি মিনাল খুবুসি
ওয়াল খবা-য়িস”- (অর্থাৎ- আমি নাপাক নর-নারী শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই)। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৬, ইবনু মাজাহ্ ২৯৬, সহীহুল
জামি‘ ২২৬৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৬
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় প্রবেশ করবে তখন জিন শাইত্বনের চোখ
ও বানী আদামের লজ্জাস্থানের মধ্যে পর্দা হল “বিসমিল্লা-হ” বলা। [১] এ হাদীসটি ইমাম
তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব, এর সানাদ দুর্বল।
[১] সহীহ : তিরমিযী ৬০৬, সহীহুল জামি‘ ৩৫১১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৫৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৭
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন পায়খানা হতে বের হতেন তখন বলতেন : “গুফরা-নাকা” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমার
ক্ষমা প্রার্থনা করছি)। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩০, তিরমিযী ৭, ইবনু মাজাহ্
৩০০, সহীহুল জামি‘ ৪৭০৭, দারিমী ৭০৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬০
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৮
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পায়খানায় গেলে আমি তাঁর পেছনে পেছনে কখনও ‘তাওর’-এ করে আবার কখনও ‘রাক্ওয়াহ্’-এ
করে পানি নিয়ে যেতাম। এ পানি দ্বারা তিনি শৌচকর্ম সম্পাদন করতেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটিতে স্বীয় হাত ঘষতেন। অতঃপর আমি আর এক পাত্রে পানি আনতাম।
এ পানি দিয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করতেন। [১]
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ৪৫।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬১
PMMRC হাদিস নং-৩১৪৯
হাকাম ইবনু সুফ্ইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) প্রস্রাব করার পর উযূ করতেন এবং নিজের লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দিতেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৬৮, নাসায়ী ১৩৫, দারিমী
৭৩৮। হাদীসটির সানাদে অনেক বিশৃঙ্খলা থাকলেও এর অনেক শাহিদ বর্ণনা থাকায় তা সহীহ-এর
স্তরে পৌঁছেছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬২
PMMRC হাদিস নং-৩১৫০
উমায়মাহ্ বিনতু রুক্বায়ক্বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর খাটের নিচে একটি কাঠের গামলা ছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
রাতে এতে প্রস্রাব করতেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২৪, নাসায়ী ৩২, সহীহুল
জামি‘ ৪৮৩২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৫১
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাকে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে দেখে বললেন, ‘উমার! (আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতের
ন্যায়) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করো না। অতঃপর আমি আর কক্ষনো দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিনি। [১]
[১] য‘ঈফ : ইবনু মাজাহ্ ৩০৮, য‘ঈফাহ্ ৯৩৪,
তিরমিযী ১২। কারণ এর সানাদে ‘আবদুল কারীম ইবনু আবুল মাখরিক্ব নামে একজন দুর্বল রাবী
রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৫২
হুযায়ফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন
এক গোত্রের আবর্জনার স্থানে গেলেন এবং (সেখানে) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলেন। [১] বলা হয়ে
থাকে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ওযরের কারণে এরূপ করেছেন।
[১] সহীহ : বুখারী ২২৪, মুসলিম ২৭৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ২.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৩
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বলে, নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতেন, তোমরা তাঁর কথা বিশ্বাস করো না। তিনি
সবসময়ই বসে প্রস্রাব করতেন। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ১২, নাসায়ী ২৯, সিলসিলাহ্
আস্ সহীহাহ্ ২০১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৪
যায়দ ইবনু হারিসাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে জিবরীল আমিনের
মাধ্যমে যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ওয়াহী নাযিল করা হচ্ছিল,
তখনই তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উযূ করা ও সলাত আদায়ের শিক্ষা
দিলেন। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন উযূ করা শেষ করে এককোষ পানি
(হাতে উঠিয়ে) নিলেন এবং তখন নিজের পুরুষাঙ্গের উপর ছিটিয়ে দিলেন। [১]
[১] সহীহ : আহমাদ ১৭৪৮০, দারাকুত্বনী ৩৯০,
সহীহাহ্ ৭৪১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৫
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যখন আপনি উযূ
করবেন, তখন পানি (সন্দেহ দূর করার জন্য আপনার গুপ্তাঙ্গে) ছিটিয়ে দিবেন। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৫০, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্
১৩১২।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৬
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রস্রাব করলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁর পেছনে পানির পাত্র নিয়ে দাঁড়ালেন।
তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘উমার! এটা কী? ‘উমার (রাঃ) বললেন,
পানি। আপনার উযূ করার করার জন্য। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি
এজন্য আদিষ্ট হইনি যে, যখনই প্রস্রাব করব তখনই উযূ করব। যদি আমি সর্বদা এমন করি তাহলে
এটা ‘সুন্নাত’ হয়ে যাবে। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ৪২, ইবনু মাজাহ্ ৩২৭,
সহীহুল জামি‘ ৫৫৫১। কারণ এর সানাদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহ্ইয়া আত্ তাওয়াম নামক একজন
রাবী রয়েছে যাকে হাফিয ইবনু হাজার দুর্বল বলেছেন। তবে مَا أُمِرْتُ এর পরের অংশটুকুকে শায়খ
আলবানী ‘‘সহীহুল জামি’’-তে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
মিশকাত হাদিস নং-৩৬৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৭
আবূ আইয়ূব, জাবির ও আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“সেখানে (মাসজিদে কু’বায়) এমন কিছু লোক রয়েছে
যারা পবিত্রতা অর্জন করাকে পছন্দ করে এবং আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন”-
(সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯:১০৮) এ আয়াত যখন নাযিল হয় তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আনসারগণ! এ আয়াতে আল্লাহ পবিত্রতার ব্যাপারে তোমাদের প্রশংসা
করেছেন। তোমাদের পবিত্রতা কী? তাঁরা বললেন, আমরা সলাতের জন্য উযূ করি, নাপাকী হতে পবিত্র
হবার জন্য গোসল করি, পানি দিয়ে পবিত্রতা লাভ করে থাকি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, এটাই (পবিত্রতা), যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করেছেন। সুতরাং
তোমরা সবসময় এটা করতে থাকবে। [১]
[১] সহীহ লিগয়রিহী : ইবনু মাজাহ্ ৩৫৫, সহীহ
আবূ দাঊদ ৩৫। যদিও এর সানাদে দুর্বলতা রয়েছে কিন্তু এর শাহিদ রিওয়ায়াত থাকায় তা সহীহ
স্তরে উন্নীত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ লিগাইরিহি
মিশকাত হাদিস নং-৩৭০
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৮
সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুশরিকদের কেউ ঠাট্টা করে আমাকে
বলল, তোমাদের বন্ধু (অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) তো দেখছি
তোমাদেরকে পায়খানা-প্রস্রাবের নিয়ম-কানুনও শিখিয়ে দিচ্ছেন। আমি বললাম, হাঁ (এটা তো
তাঁর অনুগ্রহ, দোষের তো কিছু নেই)। তিনি আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আমরা যেন পায়খানার সময়
ক্বিবলার দিকে মুখ করে না বসি, ডান হাতে শৌচকর্ম না করি এবং পায়খানার পর তিনটি ঢিলার
কম ব্যবহার না করি। আর এতে (ঢিলা) যেন গোবর ও হাড় না থাকে। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬২, আহমাদ ২৩১৯১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭১
PMMRC হাদিস নং-৩১৫৯
আবদুর রহমান ইবনু হাসানাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ঘর থেকে বের হয়ে) আমাদের কাছে এলেন, আর তাঁর হাতে ছিল একটি চামড়ার
ঢাল (বর্ম)। তিনি ঢালটি (পর্দাস্বরূপ স্থাপন করে) তার দিকে ফিরে মাটিতে বসে প্রস্রাব
করলেন। তখন (মুশরিকদের) কয়েকজন বলে উঠল, দেখ, মেয়েদের মতো (পর্দা করে) প্রস্রাব করছেন।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা শুনলেন এবং বললেন, তোমার জন্য আফসোস হয়,
তুমি কি জানো না যে, বানী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির কি ঘটেছিল? অর্থাৎ তাদের শরীরে (বা
কাপড়ে) যখন প্রস্রাব লাগতো, তখন তারা কাঁচি দিয়ে তা কেটে ফেলতো। তাই সে (বানী ইসরাঈল-এর
এক ব্যক্তি) তা হতে মানুষকে নিষেধ করল। ফলে (মৃত্যুর পর) তাকে ক্ববরের ‘আযাব দেয়া হল।
[১]
[১] সহীহ : ইবনু মাজাহ্ ৩৪৬, আবূ দাঊদ, সহীহুত্
তারগীব ১৬২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭২
PMMRC হাদিস নং-৩১৬০
ইমাম নাসায়ী থেকে বর্ণিতঃ
ইমাম নাসায়ী এ হাদীসটি ‘আবদুর রহমান (রাঃ)
ও আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। [১]
[১] য‘ঈফ : নাসায়ী ৩০, ইবনু মাজাহ্, য‘ঈফ সুনানে
ইবনু মাজাহ্ ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৬১
মারওয়ান আল আসফার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে দেখলাম,
তিনি ক্বিবলার দিকে তার উটকে বসালেন। তারপর উটের দিকে বসে প্রস্রাব করতে লাগলেন। আমি
বললাম, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! এটা হতে কি নিষেধ করা হয়নি। তিনি বললেন, না, বরং উন্মুক্ত
জায়গায় এরূপ করা নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তোমার আর ক্বিবলার মধ্যে এমন কোন জিনিস
আড়াল হয়, তখন এরূপ করাতে কোন দোষ নেই। [১]
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ১১, ইরওয়া ৬১।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৬২
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যখন পায়খানা হতে বের হতেন, এ দু‘আ পড়তেন : “আলহাম্দু লিল্লা-হিল্লাযী আয্হাবা
‘আন্নিল আযা-ওয়া‘আ-ফানী”- [অর্থাৎ- সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার, যিনি আমার থেকে কষ্টদায়ক
জিনিস দূর করেছেন ও আমাকে নিরাপদ করেছেন]। [১]
[১] য‘ঈফ : ইবনু মাজাহ্ ৩০১, ইরওয়া ৫৩।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৩
ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিনের প্রতিনিধি দল যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌঁছলেন, তখন তাঁর নিকট বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার
উম্মাতকে গোবর, হাড় ও কয়লা দিয়ে ঢিলা ব্যবহার করতে নিষেধ করে দিন। আল্লাহ তা‘আলা এগুলোকে
আমাদের রিয্ক্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। অতএব রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এগুলো দ্বারা ইস্তিঞ্জা করতে নিষেধ করে দেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৩.
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৪
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : আমি আমার উম্মাতের জন্য যদি কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে
‘ইশার সলাত দেরীতে আদায় করতে ও প্রত্যেক সলাতের সময় মিসওয়াক করার আদেশ করতাম। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৮৮৭, মুসলিম ২৫২, আবূ দাঊদ
৪৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৫
তাবি'ঈ শুরায়হ ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্
(রাঃ)- কে জিজ্ঞেস করলাম, বলুন তো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে কোন্ কাজটি করতেন? তিনি বললেন, মিসওয়াক। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৬
হুযায়ফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাহাজ্জুদের সলাত আদায়ের জন্য ঘুম থেকে উঠেই মিসওয়াক দ্বারা ঘষে মুখ পরিষ্কার
করে নিতেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২৪৬, মুসলিম ২৫৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৭৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৭
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : দশটি বিষয় ফিত্বরাহ্ অর্থাৎ প্রকৃতিগত স্বভাবের অন্তর্গত। (১)
গোঁফ খাটো করা, (২) দাড়ি লম্বা করা, (৩) মিসওয়াক করা, (৪) পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা,
(৫) নখ কাটা,(৬) আঙ্গুলের গিরাগুলো ধোয়া, (৭) বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা, (৮) গুপ্তাঙ্গের
লোম কাটা, (৯) শৌচকাজ করা (পবিত্র থাকা) এবং রাবী বলেন, দশমটা আমি ভুলে গেছি, সম্ভবত
তা ‘কুলি করা’। [১]
অপর এক বর্ণনায় (দ্বিতীয় জিনিসটি) দাড়ি বাড়াবার
স্থলে খতনা করার কথা এসেছে। মিশকাতের সংকলক বলেন, এ বর্ণনাটি বুখারী-মুসলিমে আমি পাইনি,
আর হুমায়দীতেও নেই (যা সহীহায়নের জামি’)। অবশ্য এ রিওয়ায়াতকে জামিউস সগীরে উল্লেখ করেছেন।
এভাবে খাত্ত্বাবী (রহঃ) মা’আলিমুস সুনানে বর্ণনা করেছেন।
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮০
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৮
‘আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাদীসটি আবূ দাঊদ-এ ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)-এর
সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ৫৪।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৩.
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৮১
PMMRC হাদিস নং-৩১৬৯
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন : মিসওয়াক হল মুখগহবর পরিষ্কারকারী এবং আল্লাহর সন্তোষ লাভের মাধ্যম।
[১]
[১] সহীহ : বুখারী ২/৬৮২ (তা‘লীক সূত্রে),
নাসায়ী ৫, সহীহুত্ তারগীব ২০৯, আহমাদ ২৪২০৩, দারিমী ৭১১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮২
PMMRC হাদিস নং-৩১৭০
আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : চারটি বিষয় নাবী রসূলদের সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত- (১) লজ্জাশীলতা,
আর এক বর্ণনায় এর স্থলে খতনার কথা বলা হয়েছে; (২) সুগন্ধি ব্যবহার করা; (৩) মিসওয়াক
করা এবং (৪) বিয়ে করা। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ১০৮০, ইরওয়া ৩৩, সিলসিলা
য‘ঈফাহ্ ৪৫২৩। কারণ এর সানাদে ‘‘আবুশ শিমাল’’ নামক একজন অপরিচিত রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৭১
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দিনে বা রাতে যখনই ঘুম হতে উঠতেন, উযূ করার পূর্বে মিসওয়াক করতেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৫৭, আহমাদ। তবে وَلَا نَهَارٍ অংশটুকু দুর্বল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৭২
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মিসওয়াক করতেন। অতঃপর ধুয়ে রাখার জন্য তা আমাকে দিতেন। আমি (ধোয়ার আগে) ঐ
মিসওয়াক দিয়ে নিজে মিসওয়াক করতাম। তারপর তা ধুয়ে তাঁকে ((সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-কে) দিতাম। [১]
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ৫২।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৩.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৩
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন : একবার আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি একখন্ড মিসওয়াক দিয়ে মিসওয়াক করছি।
এমন সময় দু’জন লোক আমার কাছে এলো, যাদের মধ্যে একজন অপরজন হতে (বয়সে) বড়। আমি আমার
মিসওয়াকটি ছোটজনকে দিতে উদ্যত হলে আমাকে বলা হল, বড়জনকেই দিন। অতঃপর আমি তা বড়জনকেই
দিলাম। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩০০৩, মুসলিম ২২৭১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৪
আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যখনই জিবরীল (আঃ) আমার কাছে আসতেন আমাকে মিসওয়াক করার তাগিদ
দিতেন; এমনকি আমার ভয় হল যে, (মিসওয়াক করার দরুন) আমার মুখের সম্মুখভাগ যেন আবার ক্ষত-বিক্ষত
না করে ফেলি। [১]
[১] খুবই দুর্বল : আহমাদ ২১৭৬৬, য‘ঈফুল জামি‘
৫০৫০।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : আমি তোমাদেরকে মিসওয়াকের (গুরুত্ব ও ফাযীলাতের) ব্যাপারে অনেক
বেশি বললাম। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৮৮৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৬
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মিসওয়াক করছিলেন। তখন তাঁর কাছে দু’জন লোক উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে
একজন অপরজন হতে বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন। তখন মিসওয়াকের ফাযীলাত সম্পর্কে ওয়াহী নাযিল হল-
তাদের মধ্যে বড়জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে মিসওয়াকটি দিন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৫০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৮৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৭
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে সলাতের জন্য (উযূ করার সময়) মিসওয়াক করা হয় তার ফাযীলাত সত্তর
গুন বেশি সে সলাতের চেয়ে যে সলাতে মিসওয়াক করা হয়নি। [১]
[১] য‘ঈফ : বায়হাক্বী ২৭৭৪, সিলসিলাহ্ আয্
য‘ঈফাহ্ ১৫০৩, আহমাদ ৩/২৭২, হাকিম ১/১৪৬। কারণ এর সানাদে মু‘আবিয়াহ্ ইবনু ইয়াহ্ইয়া
আস্ সদাকী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে। এছাড়াও এর অন্য একটি সানাদে ওয়াক্বিদী নামে
একজন মিথ্যুক রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯০
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৮
যায়দ ইবনু খালিদ আল জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : আমি যদি উম্মাতকে কষ্টে ফেলার আশংকা না করতাম
তাহলে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যেক সলাতের সময় মিসওয়াক করতে হুকুম (ফার্য) করতাম এবং 'ইশার
সলাত রাতের এক-তৃতীয়াংশে পিছিয়ে দিতাম। তিনি [আবূ সালামাহ্ (রাঃ)] বলেন, (আমি দেখেছি)
যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) সলাতে উপস্থিত হতেন। তার মিসওয়াক স্বীয় কানে আটকানো থাকত, যেখানে
লেখকের কলম থাকে ঠিক তদ্রূপ। যখনই তিনি সলাতের জন্য দাঁড়াতেন তখনই মিসওয়াক করতেন। তারপর
তা আবার সেখানে (কানে) রেখে দিতেন।
আবূ দাঊদ ‘ইশার সলাত পিছিয়ে দিতাম’ বাক্য ছাড়া
বাকীটুকু বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী এ হাদিসকে হাসান সহীহ বলেছেন। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ২৩, আবূ দাঊদ ৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৪.
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৩৯১
PMMRC হাদিস নং-৩১৭৯
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে উঠে তখন সে যেন স্বীয় হাত (পানির)
পাত্রে না ডুবায়, যে পর্যন্ত তা তিনবার ধুয়ে না নেয়। কারণ সে জানে না রাতে তার হাত
কোথায় ছিল। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৬২, মুসলিম ২৭৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯২
PMMRC হাদিস নং-৩১৮০
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে উঠবে ও উযূ করবে, সে যেন তিনবার নাকে
পানি দিয়ে (নাক) ঝেড়ে ফেলে। কেননা শয়তান তার নাকের বাঁশিতে রাত যাপন করে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩২৯৫, মুসলিম ২৩৮; শব্দ
বিন্যাস মুসলিমের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৮১
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
'আবদুলাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম (রাঃ) কে জিজ্ঞেস
করা হল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে উযূ করতেন? (এ কথা শুনে)
তিনি উযূর জন্য পানি আনালেন, তারপর দুই হাতের উপর তা ঢাললেন এবং দুই হাত (কব্জি পর্যন্ত)
দু’বার ধুয়ে নিলেন। এরপর তিনবার করে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। এরপর তিনবার মুখ
ধুলেন। তারপর হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। এরপর দুই হাত দিয়ে ‘মাথা মাসাহ’ করলেন।
(মাসাহ এভাবে করলেন) দুই হাতকে মাথার সম্মুখভাগ হতে পেছনের দিকে নিয়ে আবার পেছন হতে
সম্মুখভাগে নিয়ে এলেন। তারপর আবার উল্টো দিকে যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে দুই
হাত নিয়ে এলেন। অতঃপর দুই পা ধুলেন। [১] মালিক ও নাসায়ী; আবূ দাঊদেও অনুরূপ বর্ণিত
হয়েছে। জামিউই উসূল-এর গ্রন্থকার এ কথা বলেছেন।
[১] সহীহ : নাসায়ী ৯৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৮২
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এ হাদিসটি বর্ণিত
হয়েছে এভাবে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিমকে বলা হল, যেভাবে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করতেন ঠিক সেভাবে আপনি আমাদের সামনে উযূ করুন। তাই তিনি
[‘আবদুল্লাহ ইবনে যায়দ (রাঃ)] পানি আনলেন। পাত্র কাত করে পানি নিয়ে দুই হাতের উপর পানি
ঢেলে তিনবার হাত ধুয়ে নিলেন। এরপর পাত্রের ভিতর হাত ঢুকিয়ে পানি এনে এক কোষ পানি দিয়ে
কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। এভাবে তিনি তিনবার করলেন। তারপর আবার নিজের হাত পাত্রে
ঢুকিয়ে পানি এনে তিনবার তার মুখমণ্ডল ধুইলেন। আবার পাত্রে হাত ঢুকিয়ে পানি এনে নিজের
মাথা মাসাহ এভাবে করলেন, প্রথমে নিজ হাত দু’টি সামনে থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন।
আবার পেছন থেকে সামনের দিকে নিয়ে এলেন, তারপর নিজের দুই পা গিরা পর্যন্ত ধুইলেন। অতঃপর
বললেন, এরূপই ছিল রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওযূ। [১]
সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায়
আছে, (মাসাহ করার জন্য) নিজের দুই হাতকে সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন। আবার
পিছনের দিক থেকে সামনের দিকে নিয়ে এলেন। অর্থাৎ মাথার সামনের অংশ হতে ‘মাসাহ’ শুরু
করে দুই হাত পিছন পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। তারপর আবার পিছন থেকে শুরু করে হাত সেখানে নিয়ে
এলেন যেখান থেকে শুরু করেছিলেন। অতঃপর দুই পা ধুইলেন। [2]
সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায়
এভাবে বলা হয়েছে, তিনি এক কোষ পানি দিয়ে কুলি করলেন, আর নাকে পানি দিলেন। এভাবে তিনবার
করলেন। [3]
বুখারী বর্ণনার শব্দ হল, তারপর তিনি মাথা মাসাহ
করলেন। নিজের দুই হাতকে সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন। আবার পেছন থেকে সামনের
দিকে নিয়ে এলেন। আর এটা তিনি একবার করেছেন। অতঃপর টাখনু পর্যন্ত দুই পা ধুইলেন।
[4]
বুখারীরই এক বর্ণনায় শব্দ হল, অতঃপর তিনি কুলি
করলেন ও নাক ঝারলেন তিনবার এক কোষ পানি দিয়ে। [5]
[১] সহীহ : বুখারী ১৯২, মুসলিম ২৩৫; শব্দ বিন্যাস
মুসলিমের
[2] সহীহ : বুখারী ১৮৫।
[3] সহীহ : মুসলিম ২৩৫।
[4] সহীহ : বুখারী ১৮৬।
[5] সহীহ : বুখারী ১৯৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৩
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (উযূর স্থানসমুহ) একবার করে উযূ করলেন। একবারের অধিক ধুলেন না।
[১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৫৭। তবে لَمْ يَزِدْ عَلى هذ অংশটুকু ব্যতীত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৪
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উযূর অঙ্গগুলোকে দু’বার করে ধুইলেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৫৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৫
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিনি মাক্বা‘ইদ নামক স্থানে উযূ
করতে বসলেন এবং বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
উযূ করে দেখাব না? অতঃপর তিনি তিন তিনবার করে ধুয়ে উযূ করলেন। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৩০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৬
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাক্কাহ্ হতে মাদীনায় ফিরে যাবার পথে একটি পানির কূপের
কাছে পৌঁছলাম। আমাদের কেউ কেউ ‘আসরের সলাতের সময় তাড়াতাড়ি উযূ করতে গেলেন এবং তাড়াহুড়া
করে উযূ করলেন। অতঃপর আমরা তাদের কাছে পৌঁছলাম, দেখি তাদের পায়ের গোড়ালি শুকনা, চকচক
করছে। সেখানে পানি পৌঁছেনি। এটা দেখে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, সর্বনাশ! (শুকনা) গোড়ালির লোকেরা জাহান্নামে যাবে, তোমরা পূর্ণরূপে উযূ কর।
[১] [১] সহীহ : মুসলিম ২৪১, বুখারী ৯৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৩৯৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৭
মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উযূ করলেন। তিনি কপালের চুলের উপর, পাগড়ীর উপর এবং মোজার উপর মাসাহ করলেন।
[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৭৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০০
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৮
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁর সব কাজই যথাসম্ভব ডান দিক হতে শুরু করতে পছন্দ করতেন- পাক-পবিত্রতা অর্জনে,
মাথা আঁচড়ানোয় ও জুতা পরনে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৪২৬, মুসলিম ২৬৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৪.
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৪০১
PMMRC হাদিস নং-৩১৮৯
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যখন তোমরা কিছু পরিধান করবে এবং উযূ করবে, তখন ডান দিক থেকে
শুরু করবে। [১] (আহমাদ, আবূ দাঊদ)
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৪১৪১, সহীহুল জামি‘ ৭৮৭,
আহমাদ ৮৬৫২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০২
PMMRC হাদিস নং-৩১৯০
সা‘ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি উযূর শুরুতে ‘বিসমিল্লা-হ’ (আল্লাহ তা‘আলার নাম)
পড়েনি তার ওযু হয়নি। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ২৫, ইবনু মাজাহ্ ৩৯৮, সহীহুল
জামি‘ ৭৫১৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৩
PMMRC হাদিস নং-৩১৯১
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আহমাদ ও আবূ দাঊদে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে
হাদীসটি বর্ণিত। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১০১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৪
PMMRC হাদিস নং-৩১৯২
দারিমী আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দারিমী আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে ও তিনি
তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন। ইমাম আহমাদ প্রমুখ তাদের বর্ণনায় তার প্রথমে এ কথা বৃদ্ধি
করেছেন যার উযূ নেই তার সলাতও নেই, অর্থাৎ- উযূ ব্যতীত সলাত হয় না। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১০১। হাদীসের এ সানাদটি
দুর্বল হলেও এর শাহিদমূলক বর্ণনা থাকায় তা সহীহ স্তরে উন্নীত হয়েছে। হাদিসের মানঃ সহিহ
হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৫
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৩
লাক্বীত্ব ইবনু সবুরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে উযূ সম্পর্কে বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, উযূর অঙ্গগুলো পরিপূর্ণভাবে ধুবে। আঙ্গুলগুলোর মধ্যে
(আঙ্গুল ঢুকিয়ে) খিলাল করবে এবং উত্তমরূপে নাকে পানি পৌঁছাবে, যদি সিয়াম পালনকারী
(রোযাদার) না হও। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৪২, তিরমিযী ৭৮৮, নাসায়ী
১১৪, ইবনু মাজাহ্ ৪৪৮। তবে নাসায়ী ইবনু মাজাতে শেষের অংশটুকু নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৬
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৪
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তুমি যখন উযূ করবে, হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলোর মধ্যে (আঙ্গুল ঢুকিয়ে)
খিলাল করবে। তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ। ইবনু মাজাহও একইরূপ বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী (রহঃ)
বলেছেন, এ হাদিসটি গরীব। [১]
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৭
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৫
মুস্তাওরিদ ইবনু শাদ্দাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উযূ করার সময় দেখেছি যে, তিনি বাম হাতের ছোট আঙ্গুল দিয়ে দুই
পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করতেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ২৪৭, তিরমিযী ৪০, ইবনু
মাজাহ্ ৪৪৬, সহীহুল জামি‘ ৪৭০০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৮
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৬
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উযূ করার সময় এক কোষ পানি নিয়ে চিবুকের নিচ দিয়ে দাড়িতে প্রবেশ করিয়ে
তা খিলাল করে নিতেন এবং বলতেন : আমার রব আমাকে এরূপ করতে নির্দেশ করেছেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৪৫, সহীহুল জামি‘ ৪৬৯৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪০৯
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৭
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) (উযূ করার সময়) নিজের দাড়ি খিলাল করতেন। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ৩১, দারিমী ৭০৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১০
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৮
তাবি’ঈ আবু হাইয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে উযূ করতে দেখেছি।
তিনি প্রথমে নিজের হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে পরিষ্কার করলেন। তারপর তিনবার কুলি করলেন
ও তিনবার নাকে পানি দিলেন, তিনবার করে মুখমণ্ডল ও দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নিলেন।
এরপর একবার মাথা মাসাহ করলেন। অতঃপর দুই পা গিরা পর্যন্ত ধুলেন। এরপর তিনি দাঁড়ালেন
এবং উযূর বাকী পানিটুকু নিয়ে তা দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। অতঃপর বললেন, রসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে উযূ করেছেন তা আমি তোমাদেরকে দেখাতে চাইলাম।
[১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ৪৮, নাসায়ী ৯৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১১
PMMRC হাদিস নং-৩১৯৯
তাবি‘ঈ ‘আবদ খায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বসে বসে ‘আলী (রাঃ)-এর উযূ
করা দেখছিলাম। তিনি ডান হাত পানির মধ্যে ডুবিয়ে পানি উঠিয়ে মুখ ভরে কুলি করলেন ও নাকে
পানি দিলেন। তারপর বাম হাত দিয়ে নাক ঝাড়লেন। তিনি এরূপ তিনবার করলেন, অতঃপর বললেন,
কেউ যদি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উযূ (করার পদ্ধতি) দেখে
আনন্দ লাভ করতে চায়, তবে দেখুক, এরূপই ছিল তাঁর ওযূ। [১]
[১] সহীহ : দারিমী ৭০১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১২
PMMRC হাদিস নং-৩২০০
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক কোষ
পানি দিয়ে কুলি করেছেন ও নাকে দিয়েছেন। এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তিনবার করেছেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১১৯, তিরমিযী ২৮, (সহীহ
সুনান আবী দাঊদ)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৩
PMMRC হাদিস নং-৩২০১
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) নিজের মাথা ও দুই কান মাসাহ করেছেন। কানের ভিতরাংশ নিজের দুই শাহাদাত আঙ্গুল
ও উপরিভাগ বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে মাসাহ করেছেন। [১]
[১] সহীহ : নাসায়ী ১০২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৪
PMMRC হাদিস নং-৩২০২
রুবায়্যিই‘ বিনতু মু‘আব্বিয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
উযূ করতে দেখেছেন। তিনি বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা মাসাহ
করলেন সামনের দিক ও পেছনের দিক (অর্থাৎ গোটা মাথা), দুই কানের পার্শ্ব ও দুই কান একবার
করে।
অপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উযূ করলেন এবং দুই আঙ্গুল দুই কানের ছিদ্রে ঢুকালেন। [১]
তিরমিযী প্রথম রিওয়ায়াতটি এবং আহমাদ ও ইবনু
মাজাহ দ্বিতীয় রিওয়ায়াতটি বর্ণনা করেছেন।
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ১২৯, ১৩১।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৫
PMMRC হাদিস নং-৩২০৩
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে
উযূ করতে দেখেছেন। আর এটাও দেখেছেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা
মাসাহ করলেন এমন পানি দিয়ে, যা তাঁর দুই হাতের পানির অবশিষ্টাংশ নয় (অর্থাৎ নতুন পানি
দিয়ে মাসাহ করলেন)। [১] [১] সহীহ : মুসলিম ২৩৬, তিরমিযী ৩৫। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৬
PMMRC হাদিস নং-৩২০৪
আবূ উমামাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর উযূর কথা উল্লেখ করলেন এবং বললেন, উযূর সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) চোখের দুই কোণ মললেন এবং বললেন, কান দু’টি মাথারই অংশ। (ইবনু মাজাহ, আবূ
দাঊদ, তিরমিযী)
আবূ দাঊদ ও তিরমিযী [১] এ কথাও বর্ণনা করেছেন
যে, এ হাদীসের অপর রাবী হাম্মাদ বলেছেন, আমি জানি না “কান দু’টি মাথারই অংশ” এ কথাটা
কার, আবূ উমামার না রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর?
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ১৩৪, তিরমিযী ৩৭, ইবনু
মাজাহ্ ৪৪৩, (য‘ঈফ সুনান আবী দাঊদ) ও সহীহুল জামি‘ ২৭৬৫। কারণ এর সানাদে সিনান ও শাহ্র
নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৭
PMMRC হাদিস নং-৩২০৫
আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন যে, এক বেদুঈন নাবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তাঁকে উযূ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায়, তিনি তাকে তিন
তিনবার করে (উযূর প্রতিটি অঙ্গ ধুয়ে) দেখালেন। অতঃপর বললেন, এই হল ওযূ। যে ব্যক্তি
এর চেয়ে বাড়িয়ে করল সে মন্দ করল, সীমালঙ্গল করল ও যুল্ম করল। [১]
[১] সহীহ : নাসায়ী ১৪০, ইবনু মাজাহ্ ৪২২, সহীহাহ্
২৯৭০। তবে আবূ দাঊদ أَوْ
نَقَصَ শব্দটি বৃদ্ধি করেছেন যা
মুনকার বা শায। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৮
PMMRC হাদিস নং-৩২০৬
আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার ছেলেকে এ দু‘আ করতে শুনলেন, হে আল্লাহ!
আমি তোমার কাছে জান্নাতের ডান দিকে সাদা বালাখানাটি চাই। এ কথা শুনে তিনি বললেন, হে
আমার ছেলে! তুমি আল্লাহর কাছে শুধু জান্নাত চাও এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাও।
আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, শীঘ্রই এ উম্মাতের
মধ্যে এমন লোকের উদ্ভব হবে যারা পবিত্রতা অর্জনে ও দু‘আর ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করবে।
[১]
[১] সহীহ : আহমাদ ১৬৩৫৪, আবূ দাঊদ ৯৬, ইবনু
মাজাহ্ ৩৮৬৪, সহীহুল জামি‘ ২৩৯৬। তবে ইবনু মাজাহ্তে فِي الطَّهُوْرِ অংশটুকু নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪১৯
PMMRC হাদিস নং-৩২০৭
উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন : (ওয়াস্ওয়াসা দেবার) জন্য উযূর
ক্ষেত্রে একটি শয়তান রয়েছে। এ শয়তান হল ‘ওয়ালাহান’। তাই (উযূ করার সময়) পানির ওয়াস্ওয়াসা
হতে সতর্ক থাকবে। [৪৪০]
ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি গরীব, সানাদ
দুর্বল। রাবী খারিজাহ্ ইবনু মুসহাব মুহাদ্দিসগণের মতে সবল নয়। অথচ তিনি ছাড়া অপর কেউ
এ হাদীসকে মারফূ’ সূত্রে বর্ণনা করেননি।
[১] [১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৫৭, ইবনু মাজাহ্ ৪২১,
য‘ঈফুল জামি‘ ১৯৭০। কারণ এর সানাদে খারিজাহ্ রয়েছে যাকে হাফিয ইবনু হাজার মাতরুক বলেছেন।
আর ইবনু মা‘ঈন মিথ্যুক বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪২০
PMMRC হাদিস নং-৩২০৮
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যে, তিনি উযূ করার পর নিজের কাপড়ের কিনারা দিয়ে নিজের
মুখমন্ডল মুছে ফেলতেন। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৫৪, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্
৪১৭০। কারণ এর সানাদে রিশদীন ইবনু সা‘দ ও ‘আবদুর রহমান ইবনু যিয়াদ ইবনু আন্‘আম রয়েছে
যারা হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
ব্যাখ্যা সরাসরি
মিশকাত হাদিস নং-৪২১
PMMRC হাদিস নং-৩২০৯
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৃথক একখন্ড কাপড় ছিল। এ কাপড় দিয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উযূ করার পর তাঁর উযূর অঙ্গগুলো মুছে নিতেন। [১]
ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি তেমন সবল নয়। এর
একজন বর্ণনাকারী আবূ ম‘আয মুহাদ্দিসীনের কাছে দুর্বল।
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৫৩। কারণ এর সানাদে সাবিত
ইবনু আবূ সফিয়্যাহ্ রয়েছে যে দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছদঃ ৪.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাত হাদিস নং-৪২২
PMMRC হাদিস নং-৩২১০
তাবি‘ঈ সাবিত ইবনু আবূ সফিয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জা‘ফার-এর পিতা মুহাম্মাদ বাক্বির
(ইবনু যায়নুল আবিদীন)-কে বললাম, আপনার কাছে কি জাবির (রাঃ) এ হাদীস বর্ণনা করেছেন যে,
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো একবার, কখনো দুই দুইবার, আবার কখনো তিনবার
করে উযূর অঙ্গগুলো ধৌত করেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। [১]
[১] য‘ঈফ : তিরমিযী ৪৫, ইবনু মাজাহ ৪১০। কারণ
এর সানাদে আবূ মু‘আয (রাঃ)নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
ব্যাখ্যা সরাসরি
মিশকাত হাদিস নং-৪২৩
PMMRC হাদিস নং-৩২১১
‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) দুই দুইবার করে উযূর অঙ্গগুলো ধুলেন। অতঃপর বললেন, এটা হল আলোর উপর আলো।
[১]
[১] ভিত্তিহীন : তারগীব ১/৯৯। মুনযিরী তারগীবে
বলেছেন, হয়তো এটি কোন সালাফের উক্তি হবে।
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪২৪
PMMRC হাদিস নং-৩২১২
উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তিন তিনবার করে উযূর অঙ্গগুলো ধুয়েছেন। এরপর তিনি বলেছেন, এটা হল আমার
ও আমার আগের নাবীগণের উযূ এবং ইবরাহীম (আঃ) এর ওযূ। [১]
এ হাদীস দু’টি ইমাম রযীন বর্ণনা করেছেন। ইমাম
নাবাবী শারহে মুসলিমে দ্বিতীয় হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন।
[১] ইবনু হিব্বান হাদীসটি ‘‘আল মাজরূহীন’’-এর
২/১৬১-৬২-তে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন আর وَوُضُوْءِ إبْرَاهِيْمَ
অংশটুকু ব্যতীত বাকী হাদীস আলবানী (রহঃ) সহীহ বলেছেন, (সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২৬১)।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
মিশকাত হাদিস নং-৪২৫
PMMRC হাদিস নং-৩২১৩
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক ফারয সলাতের জন্য উযূ করতেন। আর আমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তির জন্য
যে পর্যন্ত উযূ নষ্ট বা ভঙ্গ না হয় সে পর্যন্ত এক ওযূই যথেষ্ট ছিল। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২৪১, দারিমী ৭২০, সহীহ সুনানে
আবী দাঊদ ১৬৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
মিশকাত হাদিস নং-৪২৬
PMMRC হাদিস নং-৩২১৪
মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু হিব্বান (রহঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার-এর ছেলে
‘উবায়দুল্লাহকে বললাম, আমাকে বলুন তো, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) কি প্রত্যেক সলাতের
জন্য উযূ করতেন, চাই উযূ থাকুক কি না থাকুক, আর তিনি কার থেকে এ ‘আমাল অর্জন করেছেন?
‘উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বললেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট আসমা বিনতু যায়দ ইবনুল
খাত্ত্বাব এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু হানযালাহ্ আবূ ‘আমির ইবনুল
গসীল (রাঃ) এ হাদীস তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যেক সলাতে উযূ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, চাই তাঁর উযূ থাকুক
কি না থাকুক। এ কাজ তাঁর উপর কঠিন হয়ে পড়লে প্রত্যেক সলাতে মিসওয়াক করতে নির্দেশ দেয়া
হল, উযূ মাওকূফ করা হল, যতক্ষণ পর্যন্ত না উযূ ভঙ্গ হয়। ‘উবায়দুল্লাহ বললেন, ‘আবদুল্লাহ
ইবনু ‘উমার মনে করতেন যে, তার মধ্যে প্রত্যেক সলাতে উযূ করার শক্তি রয়েছে। তাই তিনি
মৃত্যু পর্যন্ত এ ‘আমাল করেছেন। [১]
[১] হাসান : আহমাদ ২১৪৫৩, আবূ দাঊদ ৪৮।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
(সমাপ্ত)
দ্বিতীয় পর্ব দেখতে
এখানে ক্লিক করুন
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ,
সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি,
এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ।
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook,
Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে
শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা
হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা
আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে,
নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম
সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের
সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে
পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে
তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে
জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা)
বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা
জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” (বুখারী ৩৪৬১,হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮,
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ,
সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি,
এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ইসলামি সকল পর্ব এক সাথে দেখতে চাইলে এর উপর ক্লিক
করুন-
Please Share On
No comments:
Post a Comment