বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
বাংলা সহিহ হাদিস সিরিজ-২৪
(বিয়ে শাদী অধ্যায়)
হাদিস গ্রন্থ--সহিহ বুখারী
-তাওহীদ প্রকাশনী
(PMMRC হাদিস নং-২৫০২-২৬৮৯টি মোট ১৮৮টি হাদিস)
( সহিহ বুখারী-সহিহ ও জাল-জইফ হাদিস চিহ্নিত/নির্নিত)
(জাল-জইফ হাদিস আমলযোগ্য নয়)
(সহিহ
বুখারী-হুবগু প্রকাশিত)
(বিয়ে শাদী -সহিহ বুখারী হাদিস নং ৫০৬৩ থেকে
৫২৫০)
৬৭/১. অধ্যায়ঃ
বিয়ে করার অনুপ্রেরণা দান। শ্রবণ করিনি
এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ ‘তোমরা
নারীদের মধ্য হতে নিজেদের পছন্দ মত বিয়ে কর।’ (আন-নিসা ৪:২)
PMMRC হাদিস নং-২৫০২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৩
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন
তারা ‘ইবাদাতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ্ ক্ষমা ক’রে
দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য হতে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সলাত আদায় করতে
থাকব। অপর একজন বলল, আমি সবসময় সওম পালন করব এবং কক্ষনো বাদ দিব না। অপরজন বলল, আমি
নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা কি ঐ সব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা
বলেছ? আল্লাহ্র কসম! আমি আল্লাহ্কে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর
প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সলাত আদায় করি
এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি। [১] সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ
পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়। [২] [মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০১, আহমাদ ১৩৫৩৪] (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৪৬৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৩)
[১] যে কোন ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে ‘ইবাদাতের সময়, পরিমাণ,
স্থান, অবস্থা ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবেগ তাড়িত হয়ে ফারযের মধ্যে যেমন
কম বেশি করা যাবে না; তেমনি সুন্নাতের ক্ষেত্রেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশ বা তার ‘আমালের পরিবর্তন করা যাবে না। নফল ‘ইবাদাতেও কারো
সময় থাকলে বা নিজের খেয়াল খুশি মত করা ইসলাম সমর্থিত নয়। ইসলামে সলাত, সওমের পাশাপাশি
ঘুমানো, বিয়ে করা, বাণিজ্য করা ইত্যাদিও ‘ইবাদাতের মধ্যে গণ্য যদি তা সাওয়াবের আশায়
এবং সঠিক নিয়মানুসারে পালন করা হয়।
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ
হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে,
তাহলে সে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
যাবে।
[২] আল্লাহ তা’আলা মানুষকে যে প্রকৃতি,
বৈশিষ্ট্য ও চাহিদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে উপেক্ষা করে আল্লাহর প্রিয়পাত্র
হওয়া তো দূরের কথা, মানুষ মানুষের স্তরেই থাকতে পারবে না। মানুষ অতিরিক্ত খাদ্য খেলে
বা একেবারেই খাদ্য পরিত্যাগ করলে তার বেঁচে থাকা নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিবে। একাধারে
সওম পালন করলেও একই অবস্থা দেখা দিবে। তাই আল্লাহর রসূল আমাদেরকে এমন শিক্ষা দিয়েছেন
যাতে আমরা মানুষ হিসেবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।
জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক পন্থা অবলম্বন করলে দুর্ভোগ ও বিপর্যয় আসবে। খ্রীস্টান
পাদ্রীদের অনুসৃত বৈরাগ্যবাদ ও দাম্পত্য জীবনের প্রতি লোক-দেখানো অনীহা তাদের অনেককেই
যৌনাচারের ক্ষেত্রে পশুর স্তরে নামিয়ে দিয়েছে।
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের
একমাত্র বৈধ পন্থা হল বিবাহ। পরিবার গঠন, সংরক্ষণ ও বংশ-বিস্তারের জন্যই বিয়ে ছাড়া
আর কোন বিধি সম্মত পথ নেই। এর মাধ্যমেই ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন পবিত্র ও কলুষমুক্ত
হয়ে নৈতিকতার সর্বোচ্চ শিখরে উন্নীত হতে পারে। এ জন্যই ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা
করলে আল্লাহ্র চিরাচরিত বিধান এবং নবী - এর সুন্নাত হিসেবে বিয়ে করা ফরয আর এ অবস্থায়
অর্থনৈতিক দিক থেকে সমর্থ না হলে সওম পালন করার বিধান দেয়া হয়েছে। আবার শারীরিক দিক
থেকে সমর্থ হলে আর ব্যভিচারে লিপ্ত হবার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে করা মুসতাহাব। আর জৈবিক
চাহিদা শূন্য হলে বিয়ে করা মুবাহ্। আবার এ অবস্থায় যদি মহিলার পক্ষ থেকে তার বিয়ের
উদ্দেশ্যই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এরূপ স্বামীর শারীরিকভাবে সমর্থ নারীকে বিয়ে
করা মাকরূহ।
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ
হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে,
তাহলে সে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫০৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৪
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উরওয়া (রহঃ) আমাকে অবহিত
করেছেন যে, তিনি 'আয়িশা (রাঃ) - কে আল্লাহ্র এ বাণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “যদি
তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে নারীদের মধ্য হতে
নিজেদের পছন্দমত দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার জনকে বিয়ে কর, কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা
কর যে, তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে কিংবা তোমাদের অধীনস্থ দাসীকে; এটাই
হবে অবিচার না করার কাছাকাছি।” (সূরাহঃ আন-নিসাঃ ৩)
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! এক ইয়াতীম
বালিকা এমন একজন অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে ছিল, যে তার সম্পদ রূপের প্রতি আকৃষ্ট ছিল।
সে তাকে যথোচিতের চেয়ে কম মাহ্র দিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা করে। তখন লোকদেরকে নিষেধ করা
হল ঐসব ইয়াতীমদের বিয়ে করার ব্যাপারে। তবে যদি তারা সুবিচার করে ও পূর্ণ মাহ্র আদায়
করে (তাহলে বিয়ে করতে পারবে)। (অন্যথায়) তাদের বাদ দিয়ে অন্য নারীদের বিয়ে করার
আদেশ করা হল। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২. অধ্যায়ঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর বাণী, “তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা,
বিয়ে তার দৃষ্টিকে নিম্নমুখী রাখতে সাহায্য করবে এবং তার লজ্জাস্থান রক্ষা করবে এবং
যার প্রয়োজন নেই সে বিয়ে করবে কিনা?”
PMMRC হাদিস নং-২৫০৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৫
‘আলক্বামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)
- এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে ‘আবদুর রহমান!
আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ)
বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব,
যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন তার এ বিয়ের
দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে শুনলাম,
আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে
করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সাওম’ পালন করে। কেননা, সাওম যৌন ক্ষমতাকে
দমন করে।[১৯০৫; মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০০, আহমাদ ৪০৩৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯২, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩. অধ্যায়ঃ
বিয়ে করার যার সামর্থ্য নেই, সে সওম পালন করবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫০৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৬
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছু ছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন। হে যুবক সম্প্রদায় [৩]! তোমাদের মধ্যে
যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত
রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সাওম পালন
করে। কেননা, সাওম তার যৌনতাকে দমন করবে।(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪৬৯৬)
[৩] হাদীসে ‘যুব সম্প্রদায়’ কাদের বলা
হয়েছে, এ সম্পর্কে ইমাম নাবাবী লিখেছেন-
আমাদের লোকদের মতে যুবক-যুবতী বলতে তাদেরকে
বোঝানো হয়েছে যারা বালেগ [পূর্ণ বয়স্ক] হয়েছে এবং ত্রিশ বছর বয়স পার হয়ে যায়নি।
আর এ যুবক-যুবতীদের বিয়ের জন্য রাসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকীদ করলেন কেন, তার কারণ সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দীন
আইনী তার বিশ্ববিখ্যাত বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থ “উমদাতুল ক্বারী” গ্রন্থে লিখেছেনঃ
“হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের বিয়ে
করতে বলার কারণ এই যে, বুড়োদের অপেক্ষা এ বয়সের লোকদের মধ্যেই বিয়ে করার প্রবণতা
ও দাবী অনেক বেশী বর্তমান দেখা যায়। যুবক-যুবতীদের বিয়ে যৌন সম্ভোগের পক্ষে খুবই
স্বাদপূর্ণ হয়। মুখের গন্ধ খুবই মিষ্টি হয়, দাম্পত্য জীবন যাপন খুবই সুখকর হয়, পারস্পরিক
কথাবার্তা খুবই আনন্দদায়ক হয়, দেখতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়, স্পর্শ খুব আরামদায়ক
হয় এবং স্বামী বা স্ত্রী তার জুড়ির চরিত্রে এমন কতগুলো গুণ সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই
পছন্দনীয় হয়, আর এ বয়সের দাম্পত্য ব্যাপার প্রায়ই গোপন রাখা ভাল লাগে। যুবক বয়স
যেহেতু যৌন সম্ভোগের জন্য মানুষকে উন্মুখ করে দেয়। এ কারণে তার দৃষ্টি যে কোন মেয়ের
দিকে আকৃষ্ট হতে পারে এবং সে যৌন উচ্ছৃঙ্খলতায় পড়ে যেতে পারে। এজন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে করতে তাকীদ করেছেন এবং বলেছেনঃ বিয়ে
করলে চোখ যৌন সুখের সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে না এবং বাহ্যত তার কোন ব্যভিচারে
লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এ কারণে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যদিও কথা শুরু করেছেন যুবক মাত্রকেই সম্বোধন করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের এ তাকীদকে
নির্দিষ্ট করেছেন কেবল এমন সব যুবক-যুবতীদের জন্য যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে। আর যারা
বিয়ের ব্যয় বহনের সঙ্গতি রাখে না তারা সওম পালন করবে। সওম পালন তাদের যৌন উত্তেজনা
দমন করবে। কারণ পানাহারের মাত্রা কম হলে যৌন চাহিদা প্রশমিত হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪.অধ্যায়ঃ
বহুবিবাহ
PMMRC হাদিস নং-২৫০৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৭
‘আত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘সারিফ’
নামক স্থানে মাইমূনাহ (রাঃ) - এর জানাযায় হাজির ছিলাম। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,
ইনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিনী। কাজেই যখন তোমরা তাঁর
জানাযাহ উঠাবে তখন ধাক্কা-ধাক্কি এবং তা জোরে নাড়া-চাড়া করো না; বরং ধীরে ধীরে নিয়ে
চলবে। কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নয়জন সহধর্মিনী ছিলেন।
[৪] আট জনের সঙ্গে তিনি পালাক্রমে রাত্রি যাপন করতেন। আর একজনের সঙ্গে রাত্রি যাপনের
কোন পালা ছিল না। [৫][মুসলিম ১৭/১১৪, হাঃ ১৪৬৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪৬৯৭)
[৫] যার সঙ্গে রাত্রি যাপনের পালা ছিল না তিনি হলেন
সাউদা বিনতে যাম’আ (রাঃ), বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি নিজের পালায় ছাড় দিয়ে তা ‘আয়িশা
(রাঃ)-কে দান করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫০৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৮
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একই রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সকল স্ত্রীর নিকট যেতেন আর তাঁর ন’জন স্ত্রী। (আ. প্র.
৪৬৯৫) অন্য সনদে ‘মুসাদ্দাদ’ এর জায়গায় খলীফা এর নাম আছে।(ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫০৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৬৯
সা’ঈদ ইব্নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) আমাকে
বললেন, তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, বিয়ে কর। কারণ, এই উম্মাতের
সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির অধিক সংখ্যক স্ত্রী ছিল। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪৬৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫. অধ্যায়ঃ
যদি কেউ কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে
হিজরাত করে কিংবা কোন নেক কাজ করে তবে সে তার নিয়্যত অনুসারে (কর্মফল) পাবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫০৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭০.
‘উমার ইব্নু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, নিয়্যতের ওপরেই কাজের ফলাফল নির্ভর করে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি
তার নিয়্যত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। কাজেই যার হিজরাত আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির
জন্য, তার হিজরাত আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলের জন্যই। আর যার হিজরাত পার্থিব লাভের জন্য
অথবা কোন মহিলাকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরাতের ফল সেটাই, যে উদ্দেশ্যে সে হিজরাত
করেছে। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬. অধ্যায়ঃ
এমন দরিদ্র লোকের সঙ্গে বিয়ে যিনি কুরআন ও ইসলাম সম্পর্কে অবহিত।
সাহ্ল ইব্নু সা’দ নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫১০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭১.
ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে জিহাদে অংশ গ্রহণ করতাম। আমাদের সঙ্গে আমাদের বিবিগণ থাকত
না। তাই আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমরা কি খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে তা করতে
নিষেধ করলেন।(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭. অধ্যায়ঃ
কেউ যদি তার (মুসলিম) ভাইকে বলে, আমার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে চাও, আমি তোমার
জন্য তাকে ত্বলাক্ব দেব।
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫১১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭২
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ
(রাঃ) মদীনায় আসলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এবং সা’দ ইব্নু রাবী’
আল আনসারী (রাঃ) - এর মধ্যে ভ্রাতৃ বন্ধন গড়ে দিলেন। এ আনসারীর দু’জন স্ত্রী ছিল।
সা’দ (রাঃ) ‘আবদুর রহমান (রাঃ) - কে নিবেদন করলেন, আপনি আমার স্ত্রী এবং সম্পদের অর্ধেক
নিন। তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্ আপনার স্ত্রী ও সম্পদে বারাকাত দিন। আপনি আমাকে বাজার
দেখিয়ে দিন। এরপর তিনি বাজারে গিয়ে পনির ও মাখনের ব্যবসা করে লাভবান হলেন। কিছুদিন
পরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর শরীরে হলুদ রং-এর দাগ দেখতে পেলেন
এবং জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আবদুর রহমান। তোমার কী হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেন, আমি এক আনসারী
মেয়েকে বিয়ে করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি
কত মোহর দিয়েছ। তিনি উত্তরে বললেন, খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর, একটি বকরী দিয়ে হলেও। [৬] (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৪৬৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮. অধ্যায়ঃ
বিয়ে না করা এবং খাসি হয়ে যাওয়া অপছন্দনীয়।
PMMRC হাদিস নং-২৫১২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৩
সা’দ ইব্নু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘উসমান ইব্নু মাজ’উনকে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছেন। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে যদি অনুমতি দিতেন, তাহলে আমরাও খাসি হয়ে
যেতাম।[৫০৭৪; মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০২, আহমাদ ১৫১৬] ] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০০, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫১৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৪
(ভিন্ন একটি সনদে) সা’দ ইব্নু আবী ওয়াক্কাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘উসমান ইব্নু মাজ’উনকে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি
তাকে অনুমতি দিলে, আমরাও খাসি হয়ে যেতাম। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪৭০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫১৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৫
‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে জিহাদে অংশ নিতাম; কিন্তু আমাদের কোন কিছু ছিল না। সুতরাং
আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে বললাম, আমরা কি খাসি
হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এবং কোন মহিলার সঙ্গে একটি কাপড়ের বদলে
হলেও বিয়ে করার অনুমতি দিলেন এবং আমাদেরকে এই আয়াত পাঠ করে শোনালেনঃ অর্থাৎ, “ওহে
ঈমানদারগণ! পবিত্র বস্তুরাজি যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম
করে নিও না আর সীমালঙ্ঘন করো না, অবশ্যই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না।” (আল-মায়িদাহ
৫: ৮৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৫ প্রথমাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫১৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৬
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি একজন যুবক। আমার ভয় হয় যে, আমার
দ্বারা না জানি কোন গুনাহ্র কাজ সংঘটিত হয়ে যায়; অথচ আমার কাছে নারীদেরকে বিয়ে করার
মত কিছু নেই। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ থাকলেন। আমি
আবারও কথা বললাম। তিনি চুপ থাকলেন। আমি আবারও কথা বললাম। তিনি চুপ থাকলেন। আবারও কথা
বললে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর দিলেন, হে আবূ হুরায়রা! তোমার
ভাগ্যলিপি লেখা হয়ে গেছে আর কলমের কালি শুকিয়ে গেছে। তুমি খাসি হও বা না হও, তাতে
কিছু আসে যায় না। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৫ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯. অধ্যায়ঃ
কুমারী মেয়েদেরকে বিয়ে করা সম্পর্কে।
ইব্নু আবী মুলাইকাহ (রহঃ) বলেন, ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন, আপনাকে ছাড়া নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আর কোন কুমারীকে বিয়ে করেননি।
PMMRC হাদিস নং-২৫১৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৭
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রাসূল! মনে করুন আপনি একটি ময়দানে পৌঁছেছেন, সেখানে একটি গাছ আছে যার কিছু অংশ খাওয়া
হয়ে গেছে। আর এমন একটি গাছ পেলেন, যার কিছুই খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে কোন্ গাছের পাতা
আপনার উটকে খাওয়াবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন, যে গাছ
থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। এ কথার উদ্দেশ্য হল - নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁকে ব্যতীত অন্য কোন কুমারীকে বিয়ে করেননি। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ
৪৭০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫১৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন। দু’বার আমাকে স্বপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে। এক ব্যক্তি
রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকে দেখে বলল, এ তোমার স্ত্রী। তখন আমি
তার পর্দা খুললাম, আর সেটা হলে তুমি। তখন আমি বললাম, এ স্বপ্ন যদি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে
হয়, তবে তিনি বাস্তবে তা-ই করবেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০. অধ্যায়ঃ
তালাক্বপ্রাপ্তা অথবা বিধবা মেয়েকে বিয়ে করা।
উম্মু হাবীবা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, আমাকে তোমাদের কন্যাদেরকে বা বোনদেরকে আমার সঙ্গে
(বিয়ের) প্রস্তাব দিও না।
PMMRC হাদিস নং-২৫১৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৭৯
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে জিহাদ থেকে ফিরছিলাম। আমি আমার দুর্বল উটটি দ্রুত চালাতে
চেষ্টা করছিলাম। এমন সময় এক আরোহী আমার পিছন থেকে আমার উটটিকে ছড়ি দিয়ে খোঁচা দিলে
উটটি দ্রুত চলতে লাগল যেমন ভাল ভাল উটকে তুমি চলতে দেখ। ফিরে দেখি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, জাবির, তোমার এত তাড়াতাড়ি করার
কারণ কী? আমি উত্তর দিলাম, আমি নতুন বিয়ে করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কুমারী, না বিধবা?
আমি উত্তর দিলাম, বিধবা। তিনি বললেন, তুমি কুমারী মেয়ে বিয়ে করলে না? যার সঙ্গে খেলা-কৌতুক
করতে আর সেও তোমার সঙ্গে খেলা-কৌতুক করত। বর্ণনাকারী বলেন, যখন আমরা মদীনাহ্য় প্রবেশ
করব, এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, তুমি অপেক্ষা
কর এবং রাতে প্রবেশ কর, যেন অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী নিজের অবিন্যস্ত কেশরাশি বিন্যাস
করতে পারে এবং লোম পরিষ্কার করতে পারে। [৪৪৩; মুসলিম ৩৩/৫৬, হাঃ ১৯২৮, আহমাদ ১৩১১৭](আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৪৭০৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫১৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮০
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসুলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ?
আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের
কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা ‘আমর ইব্নু দীনার (রাঃ) - কে জানালে
তিনি বলেন, আমি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) - কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে
তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত?(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৭০৭, ইসলামী
ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১. অধ্যায়ঃ
বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে অল্প বয়স্কা মেয়েদের বিয়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৫২০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮১
‘উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আবূ বকর (রাঃ) - এর কাছে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) - এর বিয়ের পয়গাম দিলেন। আবূ বকর (রাঃ)
বললেন, আমি আপনার ভাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি আমার আল্লাহ্র
দ্বীনের এবং কিতাবের ভাই। কিন্তু সে আমার জন্য হালাল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭০৮, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২. অধ্যায়ঃ
কোন্ প্রকৃতির মেয়ে বিয়ে করা উচিত
এবং কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম এবং নিজের
ঔরসের জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে পছন্দ করা মুস্তাহাব।
PMMRC হাদিস নং-২৫২১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮২
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উষ্ট্রারোহী মহিলাদের মধ্যে কুরাইশ বংশীয়া মহিলারা
সর্বোত্তম। তারা শিশু সন্তানদের প্রতি স্নেহশীল এবং স্বামীর মর্যাদার উত্তম রক্ষাকারিণী।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৩. অধ্যায়ঃ
দাসী গ্রহণ এবং আপন দাসীকে মুক্ত করে বিয়ে করা।
PMMRC হাদিস নং-২৫২২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৩
আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, যে আপন ক্রীতদাসীকে শিক্ষা দেয় এবং উত্তম শিক্ষা দান করে এবং শিষ্টাচার
শিক্ষা দেয় এবং উত্তমভাবে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়, এরপর তাকে মুক্ত করে বিয়ে করে তার
জন্য দ্বিগুণ সওয়াব।[৭] ঐ আহলে কিতাব, যে তার নবীর উপর ঈমান আনে এবং আমার ওপরে ঈমান
এনেছে, তার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব রয়েছে। আর ঐ গোলাম, যে তার প্রভুর হক আদায় করে এবং
আল্লাহ্রও হাক্ব আদায় করে তার জন্যে দ্বিগুণ সওয়াব। হাদীসটি বর্ণনা করার সময় এর
অন্যতম বর্ণনাকারী ইমাম শা'বী (রহঃ) (স্বীয় ছাত্র সালিহ বিন সালিহ হামদানীর লক্ষ্য
করে) বলেন, হাদীসটি গ্রহণ কর বিনা পরিশ্রমে অথচ এমন এক সময় ছিল যখন এর চেয়ে ছোট হাদীস
সংগ্রহ করার জন্য কোন লোক মদীনা পর্যন্ত সফর করতো। ...... অন্য বর্ণনায় আছে, “মুক্ত
করে মাহ্র নির্ধারণ করে বিয়ে করে”।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫২৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৪
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইব্রাহীম (আঃ) তিনবার ব্যতীত কোন মিথ্যা কথা বলেননি। অত্যাচারী
বাদশাহ্র দেশে তাকে যেতে হয়েছিল এবং তার সঙ্গে ‘সারা’ (রাঃ) ছিলেন। এরপর রাবী পূর্ণ
হাদীস বর্ণনা করেন। (সেই বাদশাহ) হাজেরাকে তাঁর সেবার জন্য তাঁকে দান করেন। তিনি ফিরে
এসে বললেন, আল্লাহ্ কাফির থেকে আমাকে নিরাপত্তা দান করেছেন এবং আমার খিদমতের জন্য আজারা
(হাজেরা) - কে দিয়েছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, “হে আকাশের পানির সন্তানগণ (কুরাইশ)!
এ আজারাই তোমাদের মা।” (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫২৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) খায়বার এবং মদীনাহ্র মাঝে তিন দিন অবস্থান করলেন এবং হুয়ায়্যার কন্যা
সাফীয়ার সঙ্গে রাতে বাসর যাপনের ব্যবস্থা করলেন। আমি মুসলিমদেরকে তাঁর ওয়ালীমার দাওয়াত
দিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দস্তুরখানা বিছানোর নির্দেশ দিলেন
এবং সেখানে গোশত ও রুটি ছিল না। খেজুর, পনির, মাখন ও ঘি রাখা হল। এটাই ছিল রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর ওয়ালীমা। উপস্থিত মুসলমানরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল
- তিনি (সফ্যীয়াহ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণীদের মধ্যে
গণ্য হবেন, ক্রীতদাসীদের মধ্যে গণ্য হবেন। তাঁরা বলাবলি করলেন যে, যদি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফীয়ার জন্য পর্দার ব্যবস্থা করেন, তাহলে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিণী হিসাবে গণ্য করা হবে। আর যদি পর্দা না করা হয়,
তাহলে তাঁকে ক্রীতদাসী হিসাবে মনে করা হবে। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সেখান থেকে অন্যত্র যাবার ব্যবস্থা করলেন, তখন সাফীয়ার জন্য উটের পিছনে জায়গা করলেন
এবং তাঁর ও লোকদের মাঝে পর্দার ব্যবস্থা করলেন। [৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১২, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭১৪)
[৮] জিন্ন-ইনসানের মহান নেতার ওয়ালীমাহ
এর বিবরণে যা পাওয়া গেল তাথেকে মুসলিম জাতি শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের বিলাসিতা অপচয়
এবং অহংকার-প্রতিযোগিতা বন্ধ করবেন কি?
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৪. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাসীকে আযাদ করাকে মাহ্র হিসাবে গণ্য করা।
PMMRC হাদিস নং-২৫২৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৬
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) সাফীয়াকে আযাদ করলেন এবং এই আযাদীকে তার বিয়ের মাহ্র ধার্য করলেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৫. অধ্যায়ঃ
দরিদ্র ব্যক্তির বিয়ে করা বৈধ। আল্লাহ্
তা'আলা ইরশাদ করেনঃ "যদি তারা দরিদ্র হয়, আল্লাহ্ তার মেহেরবানীতে সম্পদশালী করে
দেবেন।" (সূরা নূর ২৪/৩২)
PMMRC হাদিস নং-২৫২৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৭
সাহ্ল ইব্নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার জীবনকে আপনার
হাতে সমর্পণ করতে এসেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকালেন
এবং সতর্ক দৃষ্টিতে তার আপাদমস্তক লক্ষ্য করলেন। তারপর তিনি মাথা নিচু করলেন। যখন মহিলাটি
দেখল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা দিচ্ছেন না,
তখন সে বসে পড়ল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহাবীদের মধ্যে
একজন দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি আপনার বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে
আমার সঙ্গে এর বিয়ে দিন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন,
তোমার কাছে কিছু আছে কি? সে উত্তর করলো- না, আল্লাহ্র কসম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার
কাছে কিছুই নেই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার
পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ, কিছু পাও কিনা। এরপর লোকটি চলে গেল। ফিরে এসে
বলল, আল্লাহ্র কসম! আমি কিছুই পাইনি। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, আবার দেখ, লোহার একটি আংটিও যদি পাও। তারপর লোকটি আবার ফিরে গেল। এসে
বলল, হে আল্লাহর রসূল! তাও পেলাম না, কিন্তু এই আমার লুঙ্গি (শুধু এটাই আছে)। (রাবী)
সাহ্ল (রাঃ) বলেন, তার কাছে কোন চাদর ছিল না। লোকটি এর অর্ধেক তাকে দিতে চাইল। তখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তোমার লুঙ্গি দিয়ে কী
করবে? তুমি যদি পরিধান কর, তাহলে তার কোন কাজে আসবে না, আর সে যদি পরিধান করে, তবে
তোমার কোন কাজে আসবে না। তারপর বেশ কিছুক্ষণ লোকটি নীরবে বসে থাকল। তারপর উঠে দাঁড়াল।
সে যেতে উদ্যত হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে আনলেন এবং জিজ্ঞেস
করলেন, তোমার কী পরিমাণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ আছে? সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ
আছে এবং সে গণনা করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো
কি তোমার মুখস্থ আছে। সে বলল, হাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
যে পরিমাণ কুরআন তোমার মুখস্থ আছে তার বিনিময়ে তোমার কাছে এ মহিলাটিকে তোমার অধীনস্থ
করে (বিয়ে) দিলাম। [৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৬. অধ্যায়ঃ
স্বামী এবং স্ত্রীর একই দ্বীনভুক্ত হওয়া
এবং আল্লাহ্র বাণীঃ
অর্থাৎ "তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি
করেছেন মানুষ, অতঃপর মানুষকে করেছেন বংশ সম্পর্কীয় ও বিবাহ সম্পর্কীয়, তোমার প্রতিপালক
সব কিছু করতে সক্ষম।" (সূরাহ আল-ফুরকানঃ ৫৪)
PMMRC হাদিস নং-২৫২৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুযাইফাহ (রাঃ) ইব্নু
উত্বাহ ইব্নু রাবিয়া ইব্নু আবদে শাম্স, যিনি বাদ্রের যুদ্ধে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, তিনি সালিমকে পালক পুত্র হিসাবে গ্রহণ
করেন এবং তার সঙ্গে তিনি তাঁর ভাতিজী ওয়ালীদ ইব্নু উত্বাহ ইব্নু রাবিয়ার কন্যা হিন্দাকে
বিয়ে দেন। সে ছিল এক আনসারী মহিলার আযাদকৃত দাস যেমন যায়দকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পালক-পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। জাহিলী যুগের রীতি ছিল যে, কেউ যদি
অন্য কোন ব্যক্তিকে পালক-পুত্র হিসেবে গ্রহণ করত, তবে লোকেরা তাকে ঐ ব্যক্তির পুত্র
হিসেবে ডাকত এবং মৃত্যুর পর ঐ ব্যক্তির উত্তরাধিকারী হত। যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্
তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ অর্থাৎ, “তাদেরকে (পালক পুত্রদেরকে) তাদের জন্মদাতা
পিতার নামে ডাক......তারা তোমাদের মুক্ত করা গোলাম।” (সূরা আহযাবঃ ৫) এরপর থেকে তাদেরকে
পিতার নামেই শুধু ডাকা হত। যদি তাদের পিতা সম্পর্কে জানা না যেত, তাহলে তাকে মাওলা
বা দ্বীনি ভাই হিসাবে ডাকা হত। তারপর [আবূ হুযাইফাহ ইব্নু ‘উত্বাহ (রাঃ) - এর স্ত্রী]
সাহ্লা বিনতে সুহায়ল ইব্নু ‘আম্র আল কুরাইশী আল আমিরী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমরা সালিমকে আমাদের পুত্র হিসেবে মনে
করতাম; অথচ এখন আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তা তো আপনিই ভাল জানেন। এরপর তিনি পুরো হাদীস
বর্ণনা করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫২৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৮৯
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবা’আ বিনতে যুবায়র - এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন তোমার হাজ্জে
যাবার ইচ্ছে আছে কি? সে উত্তর দিল, আল্লাহ্র কসম! আমি খুবই অসুস্থবোধ করছি (তবে হাজ্জে
যাবার ইচ্ছে আছে)। তার উত্তরে বললেন, তুমি হাজ্জের নিয়্যতে বেরিয়ে যাও এবং আল্লাহ্র
কাছে এই শর্তারোপ করে বল, হে আল্লাহ্! যেখানেই আমি বাধাগ্রস্ত হব, সেখানেই আমি আমার
ইহ্রাম শেষ করে হালাল হয়ে যাব। সে ছিল মিকদাদ ইব্নু আসওয়াদের সহধর্মিণী। (আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫২৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯০
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা,
তার সৌন্দর্য ও তার দীনদারী। সুতরাং তুমি দীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত
হবে। [১০] [মুসলিম ১৭/১৫, হাঃ ১৪৬৬, আহমাদ ৯৫২৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭১৯)
[১০] যে সব কারণে একজন পুরুষ বিশেষ একটি
মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্য উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে চারটি।
(১) সৌন্দর্য (২) সম্পদ (৩) বংশ (৪) দীনদারী। এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ
করা হয়েছে দীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বাগ্রগণ্য
ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর আলোচ্য নির্দেশের
সার কথা হল- দীনদারীর গুণসম্পন্না কনে পাওয়া গেলে তাকেই যেন স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়,
তাকে বাদ দিয়ে অপর কোন গুণসম্পন্না মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া উচিত নয় - (সুবুলুস
সালাম)। চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই
নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সে অগ্রাধিকার
যোগ্য কনে নয়। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর
গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করাই উচিত নয়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন- তোমরা
স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না- কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক
সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা
এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে
বিয়ে করবে। বস্তুত একজন দীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভাল- (ইবনে মাজাহ, বায্যার,
বাইহাকী)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল - বিয়ের
জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন- যে স্ত্রীকে দেখলে সে তার স্বামীকে
আনন্দ দেয়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর
ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোন কাজই করে না- (মুসনাদে আহমাদ)। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন- দুনিয়ার সব জিনিসই ভোগ সামগ্রী আর
সবচেয়ে উত্তম সামগ্রী হচ্ছে নেক চরিত্রের স্ত্রী- (মুসনাদে আহমাদ)।
উপরের উদ্ধৃত হাদীসগুলো থেকে যে কথাটি
স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা এই যে, ইসলামের দৃষ্টিতে তাকওয়া, পরহেযগারী, দীনদারী ও উন্নত
চরিত্রই হচ্ছে জীবন সঙ্গিনী পছন্দ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৩০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯১
সাহ্ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিল। তখন তিনি (সাহাবীবর্গকে) বললেন,
তোমাদের এর সম্পর্কে কী ধারণা? তারা উত্তর দিলেন, “যদি কোথাও কোন মহিলার প্রতি এ লোকটি
বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তার সঙ্গে বিয়ে দেয়া যায়। যদি সে সুপারিশ করে, তাহলে সুপারিশ
গ্রহণ করা হয়, যদি কথা বলে, তবে তা শোনা হয়। রাবী বলেন, অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ করে থাকলেন। এরপর সেখান দিয়ে একজন গরীব মুসলিম অতিক্রম
করতেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যক্তি
সম্পর্কে তোমাদের কী ধারণা? তারা জবাব দিলেন, যদি এ ব্যক্তি কোথাও বিয়ের প্রস্তাব
করে, তার সাথে বিয়ে দেয়া হয় না। যদি কারও জন্য সুপারিশ করে, তবে তা গ্রহণ করা হয়
না। যদি কোন কথা বলে, তবে তা শোনা হয় না। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, দুনিয়া ভর্তি ঐ ধনীদের চেয়ে এ দরিদ্র লোকটি উত্তম।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৭. অধ্যায়ঃ
বিয়ের ব্যাপারে ধন-সম্পদের সামঞ্জস্য প্রসঙ্গে এবং ধনী মহিলার সঙ্গে গরীব
পুরুষের বিয়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৩১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯২
ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছে ‘উরওয়া (রহঃ) বলেছেন
যে, তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - এর কাছে “যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার
করতে পারবে না” (সূরা আন-নিসাঃ ৩) এ আয়াতের মর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,
হে ভাগ্নে! এ আয়াত ঐসব ইয়াতীম বালিকাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা কোন অভিভাবকের
তত্ত্বাবধানে আছে। আর অভিভাবক তার ধন-সম্পদ ও সৌন্দর্যের প্রতি আসক্ত; কিন্তু বিয়ের
পর মাহ্র দিতে অনিচ্ছুক। এ রকম অভিভাবককে ঐ ইয়াতীম বালিকাদের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করতে
নিষেধ করা হয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ইনসাফের সঙ্গে পূর্ণ মাহ্র তাদেরকে দিয়ে
দেয় এবং এদেরকে ছাড়া অন্যদের বিয়ে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন,
পরবর্তীকালে লোকেরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এ বিষয়ে
জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন “আর লোকে তোমার নিকট নারীদের বিষয়ে
ব্যবস্থা জানতে চায়, বল, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা জানাচ্ছেন এবং
ইয়াতীম নারী সম্পর্কে যাদের তোমরা (মাহ্র) প্রদান কর না, অথচ তোমরা তাদেরকে বিয়ে
করতে চাও এবং অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে ও ইয়াতীমদের প্রতি তোময়াদের ন্যায় বিযার সম্পর্কে
যা কিতাবে তোমাদেরকে শোনানো হয়, তাও পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন। সেই হুকুমগুলো যা এ
ইয়াতীম মেয়েদের সম্পর্কে যাদের হক তোমরা সঠিক মত আদায় কর না। যাদেরকে বিয়ে বন্ধনে
আবদ্ধ করার কোন আগ্রহ তোমাদের নেই।” (সূরা আন-নিসাঃ ১২৭) ইয়াতীম বালিকারা যখন সুন্দরী
এবং ধনবতী হয়, তখন অভিভাবকগণ তার বংশমর্যাদা রক্ষা এবং বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য
আগ্রহ প্রকাশ করতঃ তারা এদের পূর্ণ মাহ্র আদায় না করা পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে না।
আর তারা যদি এদের ধন-সম্পদ এবং সৌন্দর্যের অভাবের কারণে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে আগ্রহী
না হত, তাহলে তারা এদের ব্যতীত অন্য মহিলাদের বিয়ে করত। সুতরাং যখন তারা এদের মধ্যে
স্বার্থ পেতো না তখন তাদের বাদ দিত। এ কারণে তাদেরকে স্বার্থের বেলায় পূর্ণ মাহ্র
আদায়
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৮. অধ্যায়ঃ
অশুভ স্ত্রীলোকদের থেকে দূরে থাকা। আল্লাহ্ বলেনঃ
“তোমাদের স্ত্রী আর সন্তানদের মধ্যে কতক তোমাদের
শত্রু।” (সূরাহ আত্-তাগাবুন ৬৪/১৪)
PMMRC হাদিস নং-২৫৩২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৩
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্ত্রী, বাড়িঘর এবং ঘোড়ায় অশুভ আছে (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৪
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট লোকেরা অশুভ সম্পর্কে আলোচনা করলে তিনি বলেন, কোন
কিছুর মধ্যে যদি অশুভ থাকে, তা হলোঃ বাড়ি-ঘর, স্ত্রীলোক এবং ঘোড়া।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৫
সাহ্ল ইব্নু সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি কোন কিছুর মধ্যে
অশুভ থাকে, তা হচ্ছে, ঘোড়া, স্ত্রীলোক এবং বাসগৃহ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২২, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৬
উসামাহ ইব্নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, পুরুষের জন্য স্ত্রীজাতি অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর কোন ফিত্না আমি রেখে গেলাম না।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১৯. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাসের সঙ্গে মুক্ত মহিলার বিয়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৭
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘বারীরা’ থেকে তিনটি বিষয়
জানা গেছে যে, যখন তাকে মুক্ত করা হয় তখন তাকে দু’টির একটি বেছে নেয়ার অধিকার
(Option) দেয়া হয় (সে ক্রীতদাস স্বামীর সঙ্গে থাকবে কি থাকবে না?) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ক্রীতদাসের ওয়ালার [১১] অধিকার মুক্তকারীর। রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে প্রবেশ করে চুলার ওপরে ডেকচি দেখতে পেলেন।
কিন্তু তাকে রুটি এবং বাড়ির তরকারী থেকে তরকারী দেয়া হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, চুলার ওপরের ডেকচির তরকারী দেখতে পাচ্ছি না যে?
উত্তর দেয়া হল, ডেকচিতে বারীরার জন্য দেয়া সদাকাহর গোশ্ত রয়েছে। আর আপনি তো সদাকাহ্র
গোশ্ত খান না। তখন তিনি বললেন, এটা তার জন্য সদাকাহ আর আমাদের জন্য হাদিয়া।[৪৫৬; মুসলিম
২০/২, হাঃ ১৫০৪, আহমাদ ২৫৫০৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৬)
[১১] মুক্ত দাস-দাসীর ব্যাপারে যে অধিকার
জন্মে তাকে ‘ওয়ালা’ বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২০. অধ্যায়ঃ
চারের অধিক বিয়ে না করা সম্পর্কে।
আল্লাহ্ তা’আলার বানী: “তোমরা বিয়ে কর
দু’জন, তিনজন অথবা চারজন।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/২)
‘আলী ইব্নু হুসায়ন (রহঃ) বলেন: এর অর্থ
হচ্ছে দু’জন অথবা তিনজন অথবা চারজন। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “(ফেরেশতাদের) দু’ অথবা তিন
অথবা চারখানা পাখা আছে” – (সূরাহ ফাতির ৩৫/১)– এর অর্থ দু’ দু’খানা, তিন তিনখানা এবং
চার চারখানা।
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘যদি তোমরা ভয় কর ইয়াতীমদের মধ্যে পূর্ণ
ইনসাফ কায়িম করতে পারবে না’– (সূরাহ আন্-নিসা ৪/৩) – এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, এ আয়াত ঐ সমস্ত ইয়াতীম বালিকাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যাদের অভিভাবক
তাদের সম্পদের লোভে বিয়ে করে। কিন্তু তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং তাদের সম্পত্তিকে
ইনসাফের সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করে না। তার জন্য সঠিক পন্থা এই যে, ঐ বালিকাদের ছাড়া
মহিলাদের মধ্য থেকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী দু’জন অথবা তিনজন অথবা চারজনকে বিয়ে করতে পারবে।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২১. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ্ বলেন,), “তোমাদের জন্য দুধমাকে
(বিয়ে) হারাম করা হয়েছে।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/২৩)
রক্তের সম্পর্কের কারণে যাদের সঙ্গে বিয়ে
হারাম, দুধের সম্পর্কের কারণেও তাদের সঙ্গে বিয়ে হারাম।
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫০৯৯
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে বসে ছিলেন। এমন সময় শুনলেন এক ব্যক্তি হাফসাহ (রাঃ)
- এর ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! লোকটি আপনার ঘরে
প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলেন,
আমি জানি, সে ব্যক্তি হাফ্সার দুধের সম্পর্কের চাচা। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, যদি অমুক
ব্যক্তি বেঁচে থাকত সে দুধ সম্পর্কে আমার চাচা হত (তাহলে কি আমি তার সঙ্গে দেখা করতে
পারতাম)? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, হাঁ, রক্ত সম্পর্কের কারণে
যাদের সঙ্গে বিয়ে নিষিদ্ধ, দুধ সম্পর্কের কারণেও তাদের সঙ্গে বিয়ে নিষিদ্ধ।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৩৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০০
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলু্ল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বলল, আপনি কেন হামযাহ (রাঃ) - এর মেয়েকে
বিয়ে করছেন না? তিনি বললেন, সে আমার দুধ সম্পর্কের ভাইয়ের মেয়ে। বিশ্র ... জাবির
বিন যায়দ থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৪০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০১
উম্মু হাবীবা বিনতে আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি আমার বোন আবূ সুফিয়ানের
কন্যাকে বিয়ে করুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি এটা পছন্দ
কর? তিনি উত্তর করলেন, হাঁ। এখন তো আমি আপনার একক স্ত্রী নই এবং আমি চাই যে, আমার বোনও
আমার সাথে উত্তম কাজে অংশীদার হোক। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর
দিলেন, এটা আমার জন্য হালাল নয়। আমি বললাম, আমরা শুনতে পেলাম, আপনি নাকি আবূ সালামার
মেয়েকে বিয়ে করতে চান। তিনি বললেন, তুমি বলতে চাচ্ছ যে, আমি উম্মু সালামার মেয়েকে
বিয়ে করতে চাই। আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, যদি সে আমার প্রতিপালিতা কন্যা না হত,
তাহলেও তাকে বিয়ে করা হালাল হত না। কেননা, সে দুধ সম্পর্কের দিক দিয়ে আমার ভাতিজী।
কেননা, আমাকে এবং আবূ সালামাকে সুওয়াইবা দুধ পান করিয়েছে। সুতরাং, তোমরা তোমাদের
কন্যা ও বোনদেরকে বিয়ের জন্য পেশ করো না। ‘উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন, সুওয়াইবা ছিল
আবূ লাহাবের দাসী এবং সে তাকে আযাদ করে দিয়েছিল। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে দুধ পান করায়। আবূ লাহাব যখন মারা গেল, তার একজন আত্মীয়
তাকে স্বপ্নে দেখল যে, সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে। তাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার সঙ্গে
কেমন ব্যবহার করা হয়েছে। আবূ লাহাব বলল, যখন থেকে তোমাদের হতে দূরে আছি, তখন থেকেই
ভীষণ কষ্টে আছি। কিন্তু সুওয়াইবাকে আযাদ করার কারণে কিছু পানি পান করতে পারছি। [৫১০৬,
৫১০৭, ৫১২৩, ৫৩৭২; মুসলিম ১৭/৪, হাঃ ১৪৪৯, আহমাদ ২৭৪৮২](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৮, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২২. অধ্যায়ঃ
যারা বলে দু’বছরের পরে দুধপান করালে দুধের সম্পর্ক স্থাপন হবে না।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “যে
ব্যক্তি দুধপান কাল পূর্ণ করাতে ইচ্ছুক তার জন্য মায়েরা নিজেদের সন্তানদেরকে পূর্ণ
দু’ বৎসরকাল স্তন্য দান করবে।” – (সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২৩৩)
কম-অধিক যে পরিমাণ দুধ পান করলে বৈবাহিক
সম্পর্ক হারাম হয়।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০২
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তার কাছে এলেন। সে সময় এক লোক তার কাছে বসা ছিল। এরপর রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর চেহারায় ক্রোধের ভাব প্রকাশ পেল, যেন তিনি
এ ব্যাপারে অসন্তুষ্ট হয়েছেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এ আমার ভাই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যাচাই করে দেখ, তোমাদের ভাই কারা? কেননা দুধের সম্পর্ক
কেবল তখনই কার্যকরী হবে যখন দুধই হল শিশুর প্রধান খাদ্য। [১২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭২৯,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩১)
[১২] সন্তানের দু’বছর বয়সের মধ্যে যদি দুধপান ক’রে
থাকে, তবে দুধের সম্পর্ক হবে, নইলে হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৩. অধ্যায়ঃ
দুগ্ধ পানকারী হল দুগ্ধদাত্রীর স্বামীর দুগ্ধ-সন্তান।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৩
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হবার
পর তাঁর [‘আয়িশার (রাঃ)] দুধ সম্পর্কীয় চাচা আবূল কু’আয়াসের ভাই ‘আফলাহ্’ তাঁর ঘরে
প্রবেশের অনুমতি চাইল। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানালাম। এরপর
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এলেন। আমি যা করেছি, সে সম্পর্কে তাঁকে জানালাম।
তিনি তাকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দিতে আমাকে নির্দেশ দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩০,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৪. অধ্যায়ঃ
দুধমার সাক্ষ্য গ্রহণ।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৪
‘উক্বাহ ইব্নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলাম। এরপর একজন
কালো মহিলা এসে বলল, আমি তোমাদের দু’জনকে দুধ পান করিয়েছি। এরপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে এসে বললাম, আমি অমুকের কন্যা অমুককে বিয়ে করেছি।
এরপর এক কালো মহিলা এসে আমাদেরকে বলল যে, আমি তোমাদের দু’জনকে দুধ পান করিয়েছি; অথচ
সে মিথ্যাবাদিনী। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুখ ফিরিয়ে
নিলেন। আমি আবার রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সামনে এসে বললাম,
সে মিথ্যাচারী। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কী করে বিয়ে
হতে পারে যখন তোমাদের দু’জনকেই ঐ মহিলা দুধ পান করিয়েছে- এ কথা বলছে। কাজেই, তোমার
স্ত্রীকে ছেড়ে দাও। রাবী ইসমাঈল শাহাদাত এবং মধ্যমা আঙ্গুল দু’টো তুলে ইশারা করেছে
যে, তার উর্ধ্বতন রাবী আইউব এমন করে দেখিয়েছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৫. অধ্যায়ঃ
কোন্ কোন্ মহিলাকে বিয়ে করা হালাল এবং কোন্ কোন্ মহিলাকে বিয়ে করা হারাম।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: “তোমাদের প্রতি
হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগিনী, দুধ মা, দুধ
বোন, শ্বাশুরী, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সঙ্গত হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত
মেয়ে যারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে– নিশ্চয় আল্লাহ সবিশেষ পরিজ্ঞাত ও পরম কুশলী।”
(সূরাহ আন্-নিসা ৪/২৩-২৪)
আনাস (রাঃ) বলেন, (وَالْمُحْصَنَت مِنَ النِّسَاءِ) এ কথা দ্বারা সধবা
স্বাধীনা মহিলাদেরকে বিয়ে করা হারাম বোঝানো হয়েছে; কিন্তু ক্রীতদাসীকে ব্যবহার করা
হারাম নয়। যদি কোন ব্যক্তি বাঁদীকে তার স্বামী থেকে ত্বলাক্ব নিয়ে পরে ব্যবহার করে,
তাহলে দোষ নেই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্র বাণী : “মুশরিকা নারীরা ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা
তাদেরকে বিয়ে করো না।” (আল-বাক্বারাহঃ ২২১) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, চারজনের অধিক
বিয়ে করা ঐরূপ হারাম বা অবৈধ যেরূপ তার গর্ভধারিণী মা, কন্যা এবং ভগিনীকে বিয়ে করা
হারাম।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৫
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, রক্তের সম্পর্কের
সাতজন ও বৈবাহিক সম্পর্কের সাতজন নারীকে বিয়ে করা হারাম। এরপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন:
“তোমাদের জন্যে তোমাদের মায়েদের বিয়ে করা হারাম করা হয়েছে।” (সূরাহ আন-নিসা: ২৪)
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু জা’ফর (রহঃ) একসঙ্গে
‘আলী (রাঃ) - এর স্ত্রী [১৩] ও কন্যাকে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করেন (তারা উভয়েই সৎ-মা
ও সৎ-কন্যা ছিল) ইব্নু শিরীন বলেন, এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু হাসান বসরী (রহঃ) প্রথমত
এ মত পছন্দ করেননি; কিন্তু পরে বলেন, এতে দোষের কিছুই নেই। কিন্তু হাসান ইব্নু হাসান
ইব্নু ‘আলী একই রাতে দুই চাচাত বোনকে একই সঙ্গে বিয়ে করেন। জাবির ইব্নু যায়দ সম্পর্কচ্ছেদের
আশংকায় এটা মাকরূহ মনে করেছেন; কিন্তু এটা হারাম নয়। যেমন আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
“এসব ছাড়া আর যত মেয়ে লোক রয়েছে তা তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে।” (আন-নিসা:
২৪) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যদি কেউ তার শালীর সঙ্গে অবৈধ যৌন মিলন করে তবে তার
স্ত্রী তার জন্য হারাম হয়ে যায় না। শা’বী এবং আবূ জা’ফর বলেন, যদি কেউ কোন বালকের
সঙ্গে সমকামে লিপ্ত হয়, তবে তার মা তার জন্য বিয়ে করা হারাম হয়ে যাবে। ইকরামাহ
(রাঃ)... ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কেউ যদি শাশুড়ির সঙ্গে যৌন মিলনে
লিপ্ত হয়, তবে তার স্ত্রী হারাম হয় না। আবূ নাসর ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা
করেন যে, হারাম হয়ে যাবে। ‘ইমরান ইব্নু হুসায়ন (রাঃ) জাবির ইব্নু যায়দ (রাঃ) আল
হাসান (রহঃ) এবং কতিপয় ইরাকবাসী থেকে বর্ণনা করেন যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক
হারাম হয়ে যাবে। উপরোক্ত ব্যাপারে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের
সম্পর্ক ততক্ষণ হারাম হয় না, যতক্ষণ না কেউ তার শাশুড়ির সঙ্গে অবৈধ যৌন মিলনে লিপ্ত
হয়। ইব্নু মুসাইয়িব, ‘উরওয়া (রাঃ) এবং যুহ্রী এমতাবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক
রাখা বৈধ বলেছেন। যুহ্রী বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেন, হারাম হয় না। ওখানে যুহ্রীর কথা
মুরসাল অর্থাৎ এ কথা যুহুরী ‘আলী (রাঃ) থেকে শোনেননি। (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)
[১৩] ফাতিমাহ (রাঃ)-এর জীবদ্দশায় ‘আলী
(রাঃ) কাউকে বিয়ে করেননি। পরে তিনি বিয়ে করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৬. অধ্যায়ঃ
“এবং (তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে)
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সঙ্গত হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত মেয়ে যারা তোমাদের
তত্ত্বাবধানে আছে।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/২৩)
এ প্রসঙ্গে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন
যে, ‘দুখুল ‘মাসীস ও ‘লিমাস’ শব্দ তিনটির অর্থ হচ্ছে, যৌন মিলন। যে
ব্যক্তি বলে যে, স্ত্রীর কন্যা কিংবা তার সন্তানের কন্যা হারামের ব্যাপারে নিজ কন্যার
সমান, সে দলীল হিসেবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর হাদীস পেশ করে।
আর তা হচ্ছেঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু হাবীবা (রাঃ)-কে বলেন,
তোমরা তোমাদের কন্যাদের ও বোনদের আমার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব করো না। একইভাবে নাতবৌ
এবং পুত্রবধু বিয়ে করা হারাম। যদি কোন সৎ-কন্যা কারো অভিভাবকের আওতাধীন না থাকে তবে
তাকে কি সৎ-কন্যা বলা যাবে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একটি সৎ কন্যাকে
কারো অভিভাবকত্বে দিয়ে ছিলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় দৌহিত্রকে
পুত্র সম্বোধন করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৬
উম্মু হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল!
আপনি কি আবূ সুফিয়ানের কন্যার ব্যাপারে আগ্রহী? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উত্তর দিলেন, তাকে দিয়ে আমার কী হবে? আমি বললাম, তাকে আপনি বিয়ে করবেন। তিনি প্রশ্ন
করলেন, তুমি কি তা পছন্দ করবে? আমি বললাম, হাঁ। এখন তো আমি একাই আপনার স্ত্রী নই। সুতরাং
আমি চাই, আমার বোনও আমার সঙ্গে কল্যাণে অংশীদার হোক। তিনি বললেন, তাকে বিয়ে করা আমার
জন্য হালাল নয়। আমি বললাম, আমরা শুনেছি যে, আপনি আবূ সালামার কন্যা দুররাকে বিয়ে
করার জন্য পয়গাম পাঠিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, উম্মু সালামার কন্যা? আমি বললাম,
হাঁ। তিনি বললেন, সে আমার প্রতিপালিতা সৎ কন্যা যদি নাও হতো তবুও তাকে বিয়ে করা আমার
জন্য হালাল হতো না। কেননা সুয়াইবিয়া আমাকে ও তার পিতাকে দুধ পান করিয়েছিলেন। সুতরাং
বিয়ের জন্য তোমাদের কন্যা বা বোন কাউকে পেশ করো না।
লায়স বলেন, হিশাম দুররা বিনত আবী সালামার
নাম বলেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৭. অধ্যায়ঃ
“দু’ বোনকে একত্রে বিয়ে করা (হালাল নয়)
তবে অতীতে যা হয়ে গেছে।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/২৩)
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৭
উম্মু হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল!
আপনি আমার বোন আবূ সুফ্ইয়ানের কন্যাকে বিয়ে করুন। তিনি বলেন, তুমি কি তা পছন্দ কর?
আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি তো আপনার একমাত্র স্ত্রী নই এবং আমি যাকে সবচেয়ে ভালবাসি, তার
সঙ্গে আমার বোনকেও অংশীদার বানাতে চাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
এটা আমার জন্য হালাল নয়। আমি বললাম, আল্লাহ্র কসম! আমরা শুনেছি যে আপনি আবূ সালামার
কন্যা দুররাকে বিয়ে করতে চান। তিনি বললেন, তুমি কি উম্মু সালামার কন্যার কথা বলছ?
আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম, যদি সে আমার সৎ কন্যা নাও হতো তবুও তাকে
বিয়ে করা আমার জন্য হালাল হতো না। কারণ সে হচ্ছে আমার দুধ সম্পর্কীয় ভাইয়ের কন্যা।
সুওয়াইবা আমাকে এবং তার পিতা আবূ সালামাকে দুধ পান করিয়েছিলেন। সুতরাং তোমাদের কন্যা
বা বোনদের বিয়ের ব্যাপারে আমার কাছে প্রস্তাব করো না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৩, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৮. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলার আপন ফুফু যদি কোন পুরুষের স্ত্রী হয়, তবে ঐ মহিলা যেন উক্ত পুরুষকে
বিয়ে না করে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৮
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন মহিলার আপন ফুফু বা খালা কোন পুরুষের স্ত্রী হলে ঐ মহিলা
যেন উক্ত পুরুষকে বিয়ে না করে।
অপর এক সূত্রে এই হাদীসটি আবূ হুরায়রা
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১০৯
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, কেউ যেন ফুফু ও তার ভাতিজীকে এবং খালা এবং তার বোনঝিকে একত্রে বিয়ে না করে।
[৫১১০; মুসলিম ১৬/৩, হাঃ ১৪০৮, আহমাদ ১০০০২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৪৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১০
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কাউকে একসঙ্গে ফুফু ও ভ্রাতুষ্পুত্রী এবং খালা ও তার বোনের মেয়েকে বিয়ে করতে নিষেধ
করেছেন। অধঃস্তন রাবী যুহরী বলেছেন, আমরা স্ত্রীর পিতার খালার ব্যাপারেও এ নির্দেশ
জানি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৫০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১১
‘উরওয়া আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রক্তের সম্পর্কের কারণে যা হারাম, দুধ
পানের কারণেও এসব তোমরা হারাম মনে করো।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/২৯. অধ্যায়ঃ
আশ্-শিগার বা বদল বিয়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৫১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১২
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আশ্শিগার নিষিদ্ধ করেছেন। ‘আশ্-শিগার’ হলো: কোন ব্যাক্তি নিজের কন্যাকে অন্য এক ব্যক্তির
পুত্রের সঙ্গে বিবাহ দিবে এবং তার কন্যা নিজের পুত্রের জন্য আনবে এবং দু কন্যাই মাহ্র
পাবে না।[৬৯৬০; মুসলিম ১৬/৬, হাঃ ১৪১৫, আহমাদ ৪৫২৬] ](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৭, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩০. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলা কোন পুরুষের কাছে নিজেকে সমর্পন করতে পারে কিনা?
PMMRC হাদিস নং-২৫৫২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৩
হিশামের পিতা ‘উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে সব মহিলা নিজেদেরকে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট সমর্পণ করেছিলেন, খাওলা বিনতে হাকীম
তাদেরই একজন ছিলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, মহিলাদের কি লজ্জা হয় না যে, নিজেদেকে পুরুষের
কাছে সমর্পণ করছে? কিন্তু যখন কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হল- “হে মুহাম্মাদ! তোমাকে অধিকার
দেয়া হল যে, নিজ স্ত্রীগণের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা আলাদা রাখতে পার...।” (আল-আহযাব:
৫১) ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মনে হয়, আপনার রব আপনার মনোবাঞ্ছা
পূর্ণ করার ত্বরিৎ ব্যবস্থা নিচ্ছেন। উক্ত হাদীসটি আবূ সা’ঈদ মুয়াদ্দিব, মুহাম্মাদ
ইব্নু বিশ্র এবং ‘আবদাহ্ হিশাম থেকে আর হিশাম তার পিতা হতে একে অপরের চেয়ে কিছু বর্ধিতভাবে
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩১. অধ্যায়ঃ
ইহ্রামকারীর বিয়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৪
জাবির ইব্নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) আমাদেরকে
জানিয়েছেন যে, ইহ্রাম অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিবাহ করেছেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩২. অধ্যায়ঃ
অবশেষে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুত’আহ বিয়ে নিষেধ করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৫
হাসান ইব্নু মুহাম্মাদ ইব্নু ‘আলী ও তাঁর
ভাই ‘আবদুল্লাহ্ তাঁদের পিতা থেকে বর্ণিতঃ
‘আলী (রাঃ) ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) - কে
বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বর যুদ্ধে মুত’আহ বিয়ে এবং গৃহপালিত
গাধার গোশ্ত খাওয়া নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৬
আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি মহিলাদের মুত’আহ বিয়ে সম্পর্কে ইব্নু
‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, তখন তিনি তার অনুমতি দেন। তাঁর আযাদকৃত গোলাম
তাঁকে বললেন যে, এরূপ হুকুম নিতান্ত প্রয়োজন ও মহিলাদের স্বল্পতা ইত্যাদির কারণেই
ছিল? ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৭
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া‘
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরিত এক ব্যক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে
মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৮
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া‘
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরিত এক ব্যক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে
মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১১৯
ইব্নু আবূ যিব থেকে বর্ণিতঃ
আয়াস ইবনু সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ তার পিতা
সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং
মহিলা উভয়ে (মুত‘আহ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এ সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে।
এরপর তারা ইচ্ছে করলে এর চেয়ে অধিক সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে
বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানি না এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য
নির্দিষ্ট ছিল, না সকল মানুষের জন্য ছিল।[মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৫] (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) বলেন,
‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এটা পরিষ্কার করে ব’লে দিয়েছেন,
মুতা‘আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে। [মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৩. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীলোকের সৎ পুরুষের কাছে নিজেকে (বিয়ের উদ্দেশে) পেশ করা।
PMMRC হাদিস নং-২৫৫৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২০
সাবিত আল বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) - এর কাছে
ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার
কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ) - এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ,
ছি: লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারনেই সে নিজেকে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে পেশ করেছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৩,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২১
সাহ্ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন মহিলা এসে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে নিজেকে পেশ করলেন। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! তাকে
আমার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দিন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, তোমার কাছে কি আছে? সে উত্তর দিল, আমার কাছে কিছুই নেই। রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যাও, তালাশ কর, কোন কিছু পাও কিনা? দেখ যদি একটি লোহার
আংটিও পাও। লোকটি চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল, কিছুই পেলাম না এমনকি একটি লোহার আংটিও
না; কিন্তু আমার এ তহবন্দখানা আছে। এর অর্ধেকাংশ তার জন্য। সাহ্ল (রাঃ) বলেন, তার দেহে
কোন চাদর ছিল না। অতএব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার তহবন্দ
দিয়ে সে কি করবে? যদি তুমি এটা পর, মহিলার শরীরে কিছুই থাকবে না, আর যদি এটা সে পরে
তবে তোমার শরীরে কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি অনেকক্ষণ বসে রইল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে চলে যেতে দেখে ডাকলেন বা তাকে ডাকানো হল এবং বললেন, তুমি
কুরআন কতটুকু জান? সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মূখস্থ আছে এবং সে সূরাগুলোর উল্লেখ
করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান,
তার বিনিময়ে তোমাকে এর সঙ্গে বিয়ে দিলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৪. অধ্যায়ঃ
নিজের কন্যা অথবা বোনকে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে কোন নেক্কার পরহেজগার ব্যক্তির
সামনে পেশ করা।
PMMRC হাদিস নং-২৫৬১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২২
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন ‘উমার (রাঃ) - এর কন্যা হাফসাহ (রাঃ)
খুনায়স ইব্নু হুযাইফাহ সাহমীর মৃত্যুতে বিধবা হলেন, তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর একজন সাহাবী ছিলেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। ‘উমার ইব্নুল
খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি ‘উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান (রাঃ) - এর কাছে গেলাম এবং হাফসাকে বিয়ে
করার জন্য প্রস্তাব দিলাম; তখন তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখি।
এরপর আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম, তারপর আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমার কাছে
এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, যেন এখন আমি তাকে বিয়ে না করি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, তারপর আমি
আবূ বক্র সিদ্দিক (রাঃ) - এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, যদি আপনি চান তাহলে আপনার
সঙ্গে ‘উমরের কন্যা হাফসাকে বিয়ে দেই। আবূ বকর (রাঃ) নিরব থাকলেন এবং প্রতি-উত্তরে
আমাকে কিছুই বললেন না। এতে আমি ‘উসমান (রাঃ) - এর চেয়ে অধিক অসন্তুষ্ট হলাম, তারপর
আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হাফসাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠালেন এবং হাফসাকে আমি তার সঙ্গে বিয়ে দিলাম। এরপর
আবূ বকর (রাঃ) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, সম্ভবত আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
আপনি যখন হাফসাকে আমার জন্য পেশ করেন তখন আমি কোন উত্তর দেইনি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি
বললাম, হাঁ। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আপনার প্রস্তাবে সাড়া দিতে কোন কিছুই আমাকে বিরত
করেনি; এ ছাড়া যে, আমি জানি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাফসার
বিষয় উল্লেখ করেছেন আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর গোপন
ভেদ প্রকাশ আমার পক্ষে কখনও সম্ভব নয়। যদি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা ত্যাগ করতেন তাহলে আমি হাফসাকে গ্রহন করতাম।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৩
ইরাক ইব্নু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যাইনাব বিন্তে আবূ সালামাহ (রাঃ) তাঁর
কাছে বর্ণনা করেছেন যে, উম্মু হাবীবা (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর কাছে বলেছেন, আপনি দুররাহ্ বিন্তে আবূ সালামাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন।
এ কথা আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, উম্মু সালামাহ থাকতে আমি তাকে বিয়ে করব? যদি আমি উম্মু সালামাকে বিয়ে না-ও
করতাম, তবুও সে আমার জন্য হালাল হত না। কেননা তার পিতা আমার দুধভাই। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণী: তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই
যদি তোমরা কথার ইশারায় নারীদেরকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ।
আল্লাহ অবগত আছেন ......... ক্ষমাকারী এবং ধৈর্যশীল। (সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২৩৫)
(আরবী) আরবী অর্থ - তোমরা গোপনে মনে পোষণ কর, প্রত্যেক
বস্তু যা তুমি গোপনে রাখ তা হলো 'মাকনূন'।
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৪
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৩
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“যদি কোন ব্যক্তি ইদ্দত পালনকারী কোন
মহিলাকে বলে যে, আমার বিয়ে করার ইচ্ছে আছে। আমি কোন নেক্কার মহিলাকে পেতে ইচ্ছে পোষণ
করি।” কাসিম (রহঃ) বলেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেন কোন ব্যক্তি বলল, তুমি আমার
কাছে খুবই সম্মানিতা এবং আমি তোমাকে পছন্দ করি। আল্লাহ্ তোমার জন্য কল্যাণ বর্ষণ করুন।
অথবা এ ধরনের উক্তি। ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, বিয়ের ইচ্ছে ইশারায় ব্যক্ত করা উচিত, খোলাখুলি
এ ধরণের কোন কথা বলা ঠিক নয়। কেউ এ ধরণের বলতে পারে, আমার এ সকল গুণের প্রয়োজন আছে।
আর তোমার জন্য সুখবর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য আপনি পুন: বিয়ের উপযুক্ত। সে মহিলাও
বলতে পারে- আপনি যা বলেছেন, তা আমি শুনেছি কিন্তু এর অধিক ওয়াদা করা ঠিক নয়। তার
অভিভাবকদেরও তার অজ্ঞাতে কোন প্রকার ওয়াদা দেয়া ঠিক নয়। কিন্তু যদি কেউ ইদ্দাতের
মাঝে কাউকে বিয়ের কোন প্রকার ওয়াদা করে এবং ইদ্দত শেষে সে ব্যক্তি যদি তাকে বিয়ে
করে তবে সেই বিয়ে বিচ্ছেদ করতে হবে না। হাসান (রহঃ) বলেছেন, (আরবি) এর অর্থ হল: ব্যভিচার।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা বলা হয় যে, (আরবি) অর্থ হল- ‘ইদ্দত পূর্ণ
হওয়া।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৬. অধ্যায়ঃ
বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া।
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৫
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, আমি তোমাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখেছি, একজন ফেরেশতা
তোমাকে রেশমী চাদরে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে এসে বলল, এ হচ্ছে আপনার স্ত্রী। এরপর আমি
তোমার মুখমন্ডল থেকে চাদর খুলে ফেলে তোমাকে দেখতে পেলাম। তখন আমি বললাম, যদি স্বপ্ন
আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা বাস্তবায়িত হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৭,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৬
সাহল ইব্নু সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মহিলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ
করতে এসেছি। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে দেখলেন
এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দৃষ্টি দিলেন। আপাদমস্তক দেখা শেষ করে তিনি মাথা নিচু করলেন।
যখন মহিলা দেখতে পেল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা
দিচ্ছেন না, তখন সে বসে পড়ল। তারপর একজন সাহাবী দাঁড়িয়ে অনুরোধ করলেন, হে আল্লাহ্র
রসূল! যদি আপনার এ মহিলার কোন প্রয়োজন না থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে তাকে বিয়ে দিয়ে
দিন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কোন সম্পদ
আছে কি? সে বলল - না আল্লাহ্র কসম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার কাছে কোন সম্পদ নেই। তখন
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার পরিবারের কাছে
গিয়ে দেখ, কোন কিছু পাও কিনা? তারপর সে চলে গেল, ফিরে এসে বলল, না, হে আল্লাহ্র রসূল!
আমি কিছুই পেলাম না। তখন তিনি বললেন, দেখ একটি লোহার আংটি পাও কিনা! এরপর সে চলে গেল।
ফিরে এসে বলল, না, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ্র কসম, একটি লোহার আংটিও পেলাম না; কিন্তু
এই আমার তহবন্দ আছে। [বর্ণনাকারী সাহল (রাঃ) বলেন তার কোন চাদর ছিল না] এর অর্ধেক তাকে
দিয়ে দেব। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমার এ তহবন্দ
দ্বারা কি হবে? যদি তুমি পর তবে তার জন্য কিছুই থাকবে না, আর যদি সে পরে তাহলে তোমার
জন্য কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি বসে পড়ল। দীর্ঘক্ষণ পরে সে চলে যাবার জন্য উদ্যত
হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখলেন এবং ডেকে এনে জিজ্ঞেস
করলেন, তোমার কুরআন কতটুকু জানা আছে? সে বলল, হ্যাঁ, আমার অমুক, অমুক, অমুক সূরা জানা
আছে। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি এগুলো মুখস্থ
পড়তে পার? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, যাও, যে পরিমাণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ জান,
এর বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৮, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৭. অধ্যায়ঃ
যারা বলে, ওয়ালী বা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ্ তা'আলার
কালাম দলীল হিসাবে পেশ করে:
“যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, তারপর তাদের ইদ্দৎ
পূর্ণ হয়ে যায়, সে অবস্থায় তারা স্বামীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে তাদেরকে
বাধা দিও না।” -(সুরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২৩২) এ নির্দেশের আওতায় বয়স্কা বিবাহিতা মহিলারা
যেমন, তেমনি কুমারী মেয়েরাও এসে গেছে। মহান আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “তোমরা মুশরিক মহিলাদের
কখনও বিয়ে করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান না আনবে”- (সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২২১)।
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন, “তোমাদের ভিতরে যারা অবিবাহিতা আছে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও”
- (সূরাহ আন-নূর ২৪/৩২)।
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৭
‘উরওয়া ইব্নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের
বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলছে অর্থাৎ কোন ব্যক্তি
কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব
দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে
মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হবার পর এ কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যক্তির কাছে যাও এবং তার সঙ্গে
যৌন মিলন কর। এরপর স্ত্রী তার স্বামীর থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না,
যতক্ষণ না সে অন্য ব্যক্তির দ্বারা গর্ভবতী হত, যার সঙ্গে তার যৌন মিলন হত। যখন তার
গর্ভ সুস্পষ্টভাবে ইচ্ছে করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করত। এটা ছিল তার
স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করতে পারে।
এ ধরনের বিয়েকে ‘নিকাহুল ইস্তিবদা’ বলা হত। তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কয়েক
ব্যক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর
ফলে গর্ভবতী হত এবং সন্তান ভূমিষ্ট হবার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যক্তিকে
ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত
হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জান- তোমরা কী করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি,
সুতরাং হে অমুক! এটা তোমার সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন ঐ ব্যক্তি
উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত। চতুর্থ প্রকারের
বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ ঐ মহিলার সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার আছে যত
পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-সঙ্গী করতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল পতিতা, যার চিহ্ন হিসেবে
নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছে করলে অবাধে এদের সঙ্গে যৌন মিলনে
লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ্ পুরুষ এবং একজন ‘কাফাহ্’ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের
মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান)-কে ডেকে আনা হত। সে
সন্তানটির যে লোকটির সঙ্গে সাদৃশ্য দেখতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি
ঐ সন্তানকে নিজের হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হত এবং লোকে ঐ সন্তানকে তার সন্তান হিসেবে
আখ্যা দিত এবং সে এই সন্তানকে অস্বীকার করতে পারত না। যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি বর্তমানে প্রচলিত ব্যবস্থা
ছাড়া জাহিলী যুগের সমস্ত বিবাহের রীতি বাতিল করে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ
৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে দিচ্ছেন সেসব নারী সম্পর্কে যাদের
প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না অথচ তাদেরকে বিয়ে করতে চাও” (সূরা আন-নিসাঃ ১২৭) তিনি
বলেন, এ আয়াত হচ্ছে ঐ ইয়াতীম নারীদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকের আওতাধীন রয়েছে
এবং তার ধন-সম্পদে সে মালিকানা রাখে কিন্তু তাকে বিয়ে করা পছন্দ করে না এবং তার সম্পদের
জন্য অন্যের কাছে বিয়ে দিতে আগ্রহীও নয়, যাতে করে অন্য লোক এ সম্পত্তিতে তাদের সঙ্গে
অংশীদার হয়ে না বসে (উক্ত আয়াতে অভিভাবকদের এরূপ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা
হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১২৯
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) - এর কন্যা হাফসা
(রাঃ) যখন তার স্বামী খুনায়স ইব্নু হুযাফা আস্সাহ্মীর মৃত্যুর ফলে বিধবা হল, ইনি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাহাবী ছিলেন এবং বদরের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ
করেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমি ‘উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান (রাঃ)
–এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁর কাছে হাফসার বিয়ের প্রস্তাব করলাম এই ব’লে যে, যদি
আপনি ইচ্ছা করেন, তবে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব। তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা
করে দেখি। আমি কয়েকদিন অপেক্ষা করলাম। তারপর তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমি
বর্তমানে বিয়ে না করার জন্য মনস্থির করেছি। ‘উমর (রাঃ) আরো বলেন, আমি আবূ বকর (রাঃ)
–এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, আপনি যদি চান, তাহলে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৬৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩০
আল হাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি “তোমরা তাদেরকে আটকে রেখো না” –
এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, মা’কিল ইব্নু ইয়াসার (রাঃ) বলেছেন যে, উক্ত আয়াত
তাঁর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমি আমার বোনকে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে
দেই, সে তাকে তালাক দিয়ে দেয়। যখন তাঁর ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয় তখন সেই ব্যক্তি
আমার কাছে আসে এবং তাকে পুনরায় বিয়ের পয়গাম দেয়। কিন্তু আমি তাকে বলে দিই, আমি
তাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম এবং তোমরা মেলামেশা করেছ এবং আমি তোমাকে মর্যাদা
দিয়েছি। তারপরেও তুমি তাকে তালাক দিলে? পুনরায় তুমি তাকে চাওয়ার জন্য এসেছ? আল্লাহ্র
কসম, সে আবারও কখনও তোমার কাছে ফিরে যাবে না। মা’কিল বলেন, সে লোকটি অবশ্য খারাপ ছিল
না এবং তার স্ত্রীও তার কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী ছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত
অবতীর্ণ করলেনঃ “তাদেরকে বাধা দিও না,” এরপর আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার
বোনকে তার কাছে বিয়ে দেব। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাকে তার সঙ্গে পুনরায় বিয়ে দিলেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৮. অধ্যায়ঃ
ওয়ালী বা অভিভাবক নিজেই যদি বিয়ের প্রার্থী হয়।
মুগীরা ইব্নু শু’বাহ (রাঃ) এমন এক মহিলার
সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যার নিকটতম অভিভাবক তিনিই ছিলেন। সুতরাং তিনি অন্য একজনকে
তার বিয়ে বন্ধনের আদেশ দিলে সে ব্যক্তি তার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলেন।
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) উম্মু
হাকীম বিন্তে কারিয (রাঃ) -কে বললেন, তুমি কি তোমার বিয়ের ব্যাপারে আমাকে দায়িত্ব দেবে?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম। ‘আত্বা বলেন,
অভিভাবক লোকদেরকে সাক্ষী রেখে বলবে, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম, অথবা ঐ মহিলার নিকটতম আত্মীয়দের
কাউকে তার কাছে তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য বলবে।
সাহ্ল (রাঃ) বলেন, একজন মহিলা এসে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে বলল, আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম।
এরপর একজন লোক বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! এই মহিলাকে যদি আপনার প্রয়োজন না থাকে তাহলে
আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩১
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ আয়াত হচ্ছে “লোকেরা তোমার কাছে নারীদের
সম্বন্ধে বিধান জানতে চাচ্ছে। বলে দাও, ‘আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে
দিচ্ছেন......” –(সূরা আন্-নিসা ৪/১২৭)। এ আয়াত হচ্ছে ইয়াতিম বালিকাদের সম্পর্কে,
যারা কোন অভিভাবকদের অধীনে আছে এবং তারা ঐ অভিভাবকের ধন-সম্পদেও অংশীদার; অথচ সে নিজে
ওকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক নয় এবং অন্য কেউ তাদেরকে বিয়ে করুক এবং ধন-সম্পদে ভাগ বসাক
তাও সে পছন্দ করে না। তাই সে তার বিয়েতে বাধার সৃষ্টি করে। সুতরাং আল্লাহ তা’আলা এই
ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৭১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩২
সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর নিকট একজন মহিলা এসে নিজেকে পেশ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তার আপাদমস্তক ভাল করে দেখলেন; কিন্তু তার কথার কোন উত্তর দিলেন না। একজন সাহাবী আরজ
করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি উত্তর করল, না,
আমার কাছে কিছু নেই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একটি
লোহার আংটিও নেই? লোকটি উত্তর করল, না, আমার একটি লোহার আংটিও নেই। কিন্তু আমি আমার
পরিধানের তহবন্দের অর্ধেক তাকে দেব আর অর্ধেক নিজে পরব। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না। তোমার কুরআন মাজীদের কিছু জানা আছে? সে বলল, হ্যাঁ।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার পরিবর্তে
আমি তাকে তোমার সাথে বিয়ে দিলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৩৯. অধ্যায়ঃ
কার জন্য ছোট শিশুদের বিয়ে দেয়া বৈধ।
আল্লাহ তা’আলার কালাম “এবং যারা ঋতুবতী
হয়নি” –(সূরা আত-ত্বলাকঃ ৪) এই আয়াতকে দলীল হিসাবে ধরে নাবালেগার ইদ্দাত তিন মাস নির্ধারণ
করা হয়েছে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৩
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যখন তাঁকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল
ছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪০. অধ্যায়ঃ
আপন পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া।
‘উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমার কন্যা-হাফসাহ্র সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তাকে তাঁর সঙ্গে বিয়ে
দেই।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৪
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে।
হিশাম (রহঃ) বলেন, আমি জেনেছি যে, ‘আয়িশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
– এর কাছে নয় বছর ছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪১. অধ্যায়ঃ
সুলতানই ওলী (যার কোন ওলী নাই)। এর প্রমাণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) – এর হাদীসঃ আমি তাকে তোমার কাছে জানা কুরআনের বিনিময়ে বিয়ে দিলাম।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৫
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এসে বলল, আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে দান করলাম। এরপর
সে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকল। তখন একজন লোক বলল, আপনার দরকার না হলে, আমার সঙ্গে এর
বিয়ে দিয়ে দিন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন,
তোমার কাছে মোহর দেয়ার মত কি কিছু আছে? লোকটি বলল, আমার এ তহবন্দ ছাড়া আর কিছুই নেই।
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি তুমি তহবন্দখানা তাঁকে
দিয়ে দাও, তাহলে তোমার কিছু থাকবে না। কাজেই তুমি অন্য কিছু খুঁজে আন। লোকটি বলল,
আমি কোন কিছুই পেলাম না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খুঁজে দেখ,
যদি একটি লোহার আংটিও পাও। সে কিছুই পেল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
জিজ্ঞেস করলেন, কুরআনের কিছু অংশ তোমার জানা আছে কি? লোকটি বলল হ্যাঁ! অমুক অমুক সূরা
আমার জানা আছে এবং সে সূরাগুলোর নাম বলল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, কুরআনের যা তোমার জানা আছে, তার বিনিময়ে আমি তাকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম।
[২৩১০; মুসলিম ১৬/১২, হাঃ ১৪২৫, আহমাদ ২২৯১৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪২. অধ্যায়ঃ
পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিবাহ দিতে
পারে না।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৬
আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাদের কাছে
বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে
তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে
দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে।
তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই তার অনুমতি।[৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১]
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬০)
[১৫] এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ইমাম আবূ
হানীফা (রহঃ) বলেছেন - অলী বিবাহিত ও অবিবাহিত মেয়েকে কোন নির্দিষ্ট ছেলেকে বিয়ে
করতে বাধ্য করতে পারে না। অতএব পূর্বে বিবাহিত মেয়েদের কাছ থেকে বিয়ের জন্য রীতিমত
আদেশ পেতে হবে এবং অবিবাহিত বালেগ মেয়ে থেকে যথারীতি অনুমতি নিতে হবে। এ সম্পর্কে
ইমাম মুসলিম হাদীস বর্ণনা করেছেন- পূর্বে বিবাহিত মেয়েরা তাদের নিজেদের বিয়ের মত
জানানোর ব্যপারে তাদের অলী অপেক্ষাও বেশি অধিকার রাখে। আর পূর্বে অবিবাহিত মেয়েদের
নিকট তাদের পিতা বিয়ের মত জানতে চাইলে তাদের চুপ থাকাই তাদের অনুমতিজ্ঞাপক।
কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার বর্তমান
অধঃপতিত মুসলিম সমাজে মেয়েদের এ অধিকার বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না। এর অপর
একটি দিক বর্তমানে খুবই প্রাবল্য লাভ করেছে। আধুনিক ছেলেমেয়েরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে
তাদের বাপ-মা-গার্জিয়ানদের কোন তোয়াক্কাই রাখে না। তাদের কোন পরোয়াই করা হয় না।
‘বিয়ে নিজের পছন্দেই ঠিক’ এ কথার সত্যতা অস্বীকার করা হচ্ছে না, তেমনি এ কথাও এ কথাও
অস্বীকার করার উপায় নেই, আধুনিক যুবক যুবতীরা যৌবনের উদ্দামতায় অবাধ মেলামেশার গড্ডালিকা
প্রবাহে পড়ে দিশেহারা হয়ে যেতে পারে এবং ভাল-মন্দ, শোভন-অশোভন বিচারশূন্য হয়ে যেখানে
সেখানে আত্মদান করে বসতে পারে। তাই উদ্দাম-উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ বিচার বিবেচনারও
বিশেষ প্রয়োজন। কেননা বিয়ে কেবলমাত্র যৌন পরিতৃপ্তির মাধ্যম নয়; ঘর, পরিবার, সন্তান,
সমাজ, জাতি ও দেশ সর্বপরি নৈতিকতার প্রশ্নও তাঁর সাথে গভীরভাবে জড়িত। তাই বিয়ের ব্যপারে
ছেলেমেয়ের পিতা বা অলীর মতামতের গুরুত্ব আছে। কেননা সাধারণতঃ অলী-পিতা-মাতা নিজেদের
ছেলেমেয়েদের কখনও অকল্যাণকামী হতে পারে না। তাই বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিতামাতার
মতের গুরুত্ব কিছুতেই অস্বীকার করা চলেনা।
ছেলেরা বিয়েতে অলী তথা অভভাবকের বাধ্য
বাধকতা নেই কিন্তু মেয়ের জন্য বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মেয়ের বৈধ অলী থাকাবস্থায় তাকে
না জানিয়ে নকল অলী বানিয়ে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে যত বিবাহ হয়ে থাকে তা সবই বাতিল।
তাদের দাম্পত্য জীবন হবে ব্যভিচারী জীবনের মত। তাদের অর্জিত সন্তান সন্ততি জারজ হিসেবে
পরিগণিত হবে। এ অভিশপ্ত জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য তাদের বৈধ অলীর মাধ্যমে পুনর্বিবাহ
পড়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় অলী বর্তমান থাকা সত্বেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং
তাঁর নির্দেশ ও সম্মতি ব্যতিরেকে অন্য কোন লোককে অলী হিসিবে দাঁড় করিয়ে বিবাহ কার্য
সম্পন্ন করা হয়, এটা না-জায়িয। বরং মূল অলী নিজেই অথবা তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্ব
দিবে সে অলী হিসেবে বিবাহ কার্য সম্পাদন করবে।
উল্লেখ্য অলী কর্তৃক মেয়ের পক্ষ থেকে
পূর্ব অনুমতি বা সমর্থন নিতে হবে ঠিক আছে। কিন্তু বৈধ অলীর [অভিভাবকের] সমর্থন ও অনুমতি
ব্যতীত কোন মেয়ের বিয়েই বৈধ হবে না। কারণ আয়েশা হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, রসূল
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েকে তার অভিভাবক বিয়ে
না দিবে [সে নিজে বিয়ে করলে] তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল...।“[হাদীসটি
ইবনু মাজাহ্ বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি সহীহ্, দেখুন “সহীহ্ ইবনু মাজাহ্”(১৮৭৯)।
অন্য বর্ণনায় আয়েশা(রাঃ) হতে বর্ণিত
হয়েছে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েই তার অভিভাবকের
অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করবে তার বিয়ে বাতিল। এ কথাটি তিনবার উল্লেখ করেন।“[এ ভাষায়
হাদীসটি ইমাম আবূ দাউদ (২০৮৩), তিরমিযী (১১০২) বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ্, দেখুন
“সহীহ্ আবূ দাউদ, “সহীহ্ তিরমিযী, “সহীহ্ জামে’ইস সাগীর (২৭০৯) ও “মিশকাত (৩১৩১)]।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৭
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! নিশ্চয়ই
কুমারী মেয়েরা লজ্জা করে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, চুপ থাকাটাই
হচ্ছে তার সম্মতি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৩. অধ্যায়ঃ
কন্যার অসন্তুষ্টিতে পিতা তার বিয়ে দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৮
খান্সা বিনতে খিযাম আল আনসারইয়্যাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি অকুমারী
ছিলেন তখন তার পিতা তাকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তিনি অপছন্দ করলেন। এরপর তিনি রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৩৯
‘আবদুর রহমান ইব্নু ইয়াযীদ এবং মুজাম্মি’ ইব্নু
ইয়াযীদ থেকে বর্ণিতঃ
‘খিযামা নামীয় এক লোক তার মেয়েকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে
দেন। পরবর্তী অংশ পূর্বোক্ত হাদীসের ন্যায়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৪. অধ্যায়ঃ
ইয়াতীম বালিকার বিয়ে দেয়া।
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “যদি তোমরা ভয় কর
যে ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি পূর্ণ ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা পছন্দ মতো অন্য
কাউকে বিয়ে কর।” –(সূরা আন্-নিসা ৪/৩)। কেউ কোন অভিভাবককে যদি বলে, অমুক মহিলাকে আমার
সঙ্গে বিয়ে দিন এবং সে যদি চুপ থাকে অথবা তাকে বলে তোমার কাছে কী আছে?সে উত্তরে বলে
আমার কাছে এই এই আছে অথবা নীরব থাকে। এরপর অভিভাবক বলেন, আমি তাকে তোমার কাছে বিয়ে
দিলাম, তাহলে তা বৈধ। এ ব্যাপারে সাহ্ল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫৭৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪০
‘উরওয়া ইব্নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - কে জিজ্ঞেস করেন,
হে খালা! “যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে পারবে না
তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যার মালিক......।” (সূরা আন-নিসাঃ ৪/৩) এ আয়াত কোন্ প্রসঙ্গে
অবতীর্ণ হয়েছে? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, হে আমার ভাগ্নে! এ আয়াত ঐ ইয়াতীম বালিকাদের
ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা তার অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং সেই অভিভাবক
তার রূপ ও সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে তাকে বিয়ে করতে চায়; কিন্তু মোহর কম দিতে চায়। এ আয়াতের
মাধ্যমে উক্ত বালিকাদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের ব্যতীত অন্য নারীদের
বিয়ে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্য যদি সে এদের পূর্ণ মোহর আদায় করে দেয় তবে
সে বিয়ে করতে পারবে। ‘আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, পরবর্তী সময় লোকেরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
“তারা তোমার কাছে মহিলাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে... এবং তোমরা যাদের বিয়ে করতে চাও”
(সূরা আন-নিসাঃ ৪/১২৭) আল্লাহ তা’আলা এদের জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ করেন; যদি কোন ইয়াতীম
বালিকার সৌন্দর্য এবং সম্পদ থাকে, তাহলে এরা তাদেরকে বিয়ে করতে চায় এবং এদের স্বীয়
আভিজাত্যের ব্যাপারেও এ ইচ্ছা পোষণ করে এবং মোহর কম দিতে চায়। কিন্তু সে যদি তাদের
পছন্দমতো পাত্রী না হয়, তার সম্পদ ও রূপ কম হবার কারণে এদেরকে ত্যাগ করে অন্য মেয়ে
বিয়ে করে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, যেমনিভাবে এদের প্রতি অনীহার সময় এদের পরিত্যাগ করতে
চায় তেমনি যে সময় আকর্ষণ থাকবে, সে সময়েও যেন তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করে পূর্ণ
মোহর আদায় করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৫. অধ্যায়ঃ
যদি কোন বিয়ে প্রার্থী পুরুষ অভিভাবককে বলে, অমুক মেয়েকে আমার কাছে বিয়ে
দিন এবং মেয়ের অভিভাবক বলে, তাকে এত মোহরের বিনিময়ে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম, তাহলে
এই বিয়ে বৈধ হবে যদিও সে জিজ্ঞেস না করে, তুমি কি রাযী আছ? তুমি কি কবুল করেছ?
PMMRC হাদিস নং-২৫৮০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪১
সাহ্ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) – এর কাছে এলো এবং বিয়ের জন্য নিজেকে তাঁর কাছে পেশ করল। তিনি বললেন, এখন
আমার কোন মহিলার প্রয়োজন নেই। এরপর উপস্থিত একজন লোক বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! তাকে
আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন,
তোমার কী আছে? লোকটি বলল আমার কিছু নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
তাকে একটি লোহার আংটি হলেও দাও। লোকটি বলল, আমার কাছে কিছুই নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কী পরিমাণ কুরআন আছে? লোকটি বলল, এই এই পরিমাণ।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কুরআনের যা জান, তার বিনিময়ে
এই মহিলাকে তোমার মালিকানায় দিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৬. অধ্যায়ঃ
কারো প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব দেবে না, যতক্ষণ না তার বিয়ে হবে কিংবা প্রস্তাব
ত্যাগ করবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪২
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৬৬)
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এক ভাই দরদাম করলে অন্যকে তার দরদাম করতে নিষেধ করেছেন এবং এক মুসলিম
ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের ওপরে অন্য ভাইকে প্রস্তাব দিতে নিষেধ করেছেন, যতক্ষণ না
প্রথম প্রস্তাবকারী তার প্রস্তাব উঠিয়ে নেবে বা তাকে অনুমতি দেবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৮২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৩
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে বর্ণিত। তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারনা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারনা সবচেয়ে
বড় মিথ্যা। একে অপরের দোষ-ত্রুটি খুঁজিও না, একে অন্যের ব্যাপারে মন্দ কথায় কান দিও
না এবং একে অপরের প্রতি শত্রুতা পোষণ করো না; বরং ভাই ভাই হয়ে যাও।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৪
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব
করো না; যতক্ষণ না সে তাকে বিয়ে করে অথবা বাদ দেয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৪, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৭. অধ্যায়ঃ
বিয়ের প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৫
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমর (রাঃ) বলেন, হাফসা (রাঃ) বিধবা হলে
আমি আবূ বকর (রাঃ) – এর সঙ্গে দেখা করে তাকে বললাম, আপনি যদি চান তবে হাফসা বিন্ত
‘উমরকে আপনার কাছে বিয়ে দিতে পারি। আমি কয়েকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বিয়ের জন্য পয়গাম পাঠালেন। পরে আবূ বকর
(রাঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বললেন, আপনার প্রস্তাবের উত্তর দিতে কিছুই আমাকে বাধা
দেয়নি এ ছাড়া যে, আমি জেনেছিলাম রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তার সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং আমি কখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
– এর গোপন তথ্য প্রকাশ করতে পারি না। তিনি যদি তাকে বাদ দিতেন, তাহলে আমি তাকে গ্রহণ
করতাম। ইউনুস, মূসা ইব্নু ‘উকবাহ এবং আতীক যুহরীর সূত্রে উক্ত হাদীসের সমর্থন করেছেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৮. অধ্যায়ঃ
বিয়ের খুৎবাহ
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৬
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বাঞ্চল থেকে দু’ব্যক্তি এসে বক্তৃতা
দিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন কোন বক্তৃতায় যাদু আছে।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৪৯. অধ্যায়ঃ
বিয়ে ও ওয়ালীমায় দফ বাজানো।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৭
রুবাই বিন্ত মুআব্বিয ইব্নু আফরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাসর রাতের পরের দিন
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এলেন এবং আমার বিছানার ওপর বসলেন, যেমন বর্তমানে
তুমি আমার কাছে বসে আছ। সে সময় আমাদের ছোট মেয়েরা দফ বাজাচ্ছিল এবং বাদ্রের যুদ্ধে
শাহাদাত প্রাপ্ত আমার বাপ-চাচাদের শোকগাঁথা গাচ্ছিল।[১৬] তাদের একজন বলে বসল, আমাদের
মধ্যে এক নবী আছেন, যিনি আগামী দিনের কথা জানেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ কথা বাদ দাও, আগে যা বলছিলে, তাই বল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৭,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ এবং তোমরা তোমাদের
স্ত্রীদের সন্তুষ্টচিত্তে মাহ্র পরিশোধ কর। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৪)
আর অধিক মাহ্র এবং সর্বনিম্ন মাহ্র কত
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “এবং তোমরা যদি তাদের একজনকে অগাধ অর্থও দিয়ে থাক,
তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করো না।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/২০) এবং আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেন,
“অথবা তোমরা তাদের মাহ্রের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দাও।” (সূরাহ আল-বাকারাহঃ ২/২৩৬)
সাহ্ল (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেন, যদি একটি লোহার আংটিও হয়, তবে মাহ্র হিসাবে
যোগাড় করে দাও।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৮
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ
(রাঃ) কোন এক মহিলাকে বিয়ে করলেন এবং তাকে মাহ্র হিসাবে খেজুর দানার পরিমাণ স্বর্ণ
দিলেন। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মুখে বিয়ের খুশির ছাপ দেখলেন
তখন তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন; তখন সে বললঃ আমি এক নারীকে খেজুর আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ
দিয়ে বিয়ে করেছি। [২০৪৯]
ক্বাতাদাহ আনাস থেকে বর্ণনা করেন যে,
‘আবদুর রহমান বিন ‘আওফ (রাঃ) খেজুরের দানা পরিমাণ স্বর্ণ মাহ্র হিসাবে দিয়ে কোন মহিলাকে
বিয়ে করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫১. অধ্যায়ঃ
কুরআন শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে মাহ্র ব্যতীত বিবাহ প্রদান।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৪৯
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি অন্যান্য লোকের সঙ্গে রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন মহিলা দাঁড়িয়ে
বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি নিজেকে আপনার কাছে পেশ করছি, এখন আপনার মতামত দিন। নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন উত্তর দিলেন না। এরপর মহিলাটি পুনরায় দাঁড়িয়ে
বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি আমার জীবনকে আপনার কাছে পেশ করছি। আপনার মতামত দিন। তিনি
কোন উত্তর করলেন না। তারপর তৃতীয় বারে দাঁড়িয়ে বলল, আমি আমার জীবন আপনার কাছে সোপর্দ
করছি। আপনার মতামত দিন। এরপর একজন লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল, এ মহিলাকে
আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, যাও খুঁজে দেখ, একটি লোহার আংটি
হলেও নিয়ে এসো। লোকটি চলে গেল এবং খুঁজে দেখল। এরপর এসে বলল, আমি কিছুই পেলাম না;
এমনকি একটি লোহার আংটিও না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার
কি কিছু কুরআন জানা আছে? সে বলল, অমুক অমুক সূরা আমার মুখস্থ আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার যে পরিমাণ কুরআন মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে এ মহিলাকে
তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫২. অধ্যায়ঃ
মাহ্র হিসাবে দ্রব্যসামগ্রী এবং লোহার আংটি।
PMMRC হাদিস নং-২৫৮৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫০
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেন, তুমি বিয়ে কর একটি লোহার আংটির বিনিময়ে হলেও।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৩. অধ্যায়ঃ
বিয়েতে শর্তারোপ করা।
‘উমার (রাঃ) বলেছেন, কোন চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করলেই
অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মিস্ওয়ার (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর এক জামাতার প্রশংসা করে বলেছেন যে, যখন সে আমার সঙ্গে কথা বলেছে, সত্য বলেছে।
যখন সে ওয়াদা করেছে, তখন ওয়াদা রক্ষা করেছে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫১
‘উক্বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, সকল শর্তের চেয়ে বিয়ের শর্ত পালন করা তোমাদের অধিক কর্তব্য এজন্য
যে, এর মাধ্যমেই তোমাদেরকে স্ত্রী অঙ্গ ভোগ করার অধিকার দেয়া হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৪. অধ্যায়ঃ
বিয়ের সময় মেয়েদের জন্য যেসব শর্তারোপ করা বৈধ নয়।
ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, একজন নারীর
জন্য এরূপ শর্তারোপ করা বৈধ নয় যে, সে তার (মুসলিম) বোনকে (অর্থাৎ আগের স্ত্রীকে) ত্বলাক্ব
দেয়ার কথা বলবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫২
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, বিয়ের সময় কোন নারীর জন্য এরূপ শর্তারোপ করা বৈধ নয় যে, তার বোনের (আগের
স্ত্রীর) ত্বালাক্ব দাবি করবে, যাতে সে তার পাত্র পূর্ণ করে নিতে পারে (একচেটিয়া অধিকার
ভোগ করতে পারে) কেননা, তার ভাগ্যে যা নির্দিষ্ট আছে তাই সে পাবে।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৫. অধ্যায়ঃ
বরের জন্য সুফ্রা (হলুদ রঙের সুগন্ধি) ব্যবহার করা।
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৩
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এমন অবস্থায় এলেন যে, তার সুফরার (হলুদ
রঙ) চিহ্ন ছিল। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে চিহ্ন সম্পর্কে প্রশ্ন
করলেন। ‘আবদুর রাহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) তার উত্তরে বললেন, তিনি এক আনসারী নারীকে বিয়ে
করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে কী পরিমাণ
মাহ্র দিয়েছ? তিনি বললেন, আমি তাকে খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর একটি বকরী দিয়ে হলেও।[২০৪৯; মুসলিম
১৬/১২, হাঃ ১৪২৭, আহমাদ ১৩৩৬৯](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৬. অধ্যায়ঃ
বরের জন্য কিভাবে দোয়া করতে হবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যয়নাব (রাঃ) - এর বিয়েতে ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেন এবং মুসলিমদের জন্য
উত্তম খাদ্যের ব্যবস্থা করেন। তারপর তাঁর বিয়ের সময়ের নিয়ম মত তিনি বাইরে আসেন এবং
উম্মুল মু’মিনীনদের গৃহে প্রবেশ করে তাদের জন্য দোয়া করেন এবং তাঁরাও তাঁর জন্য দোয়া
করেন। এরপরে ফিরে এসে তিনি দেখলেন, দু’জন লোক বসে আছে। এরপর তিনি ফিরে গেলেন। বর্ণনাকারী
বলেন, আমার মনে নেই আমি তাঁকে ঐ লোক দু’টি চলে যাবার সংবাদ দিয়েছিলাম, না অন্য মাধ্যমে
তিনি খবর পেয়েছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৭. অধ্যায়ঃ
বরের জন্য কীভাবে দু’আ করতে হবে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) - এর দেহে সুফ্রার (হলুদ রঙ) চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন,
এ কী? ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, আমি এক মহিলাকে একটি খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণের
বিনিময়ে বিয়ে করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্ তা’আলা
তোমার এ বিয়েতে বারাকাত দান করুন। তুমি একটি ছাগলের দ্বারা হলেও ওয়ালীমার ব্যবস্থা
কর।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৮. অধ্যায়ঃ
ঐ নারীদের দোয়া যারা কনেকে সাজায় এবং
বরকে উপহার দেয়।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৬
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাকে বিয়ে করেন তখন আমার মা আমার কাছে এলেন এবং আমাকে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করালেন,
আমি সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলাকে দেখলাম। তারা কল্যাণ, বারাকাত ও সৌভাগ্য কামনা করে
দু’আ করছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৫৯. অধ্যায়ঃ
জিহাদে যাবার পূর্বে যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হতে চায়।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, নবীগণের মধ্য থেকে কোন একজন নবী জিহাদের জন্য বের হলেন এবং নিজ লোকদেরকে বললেন,
ঐ ব্যক্তি যেন আমার সঙ্গে জিহাদে না যায়, যে বিয়ে করেছে এবং স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত
হতে চায় অথচ এখনও মিলন হয়নি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬০. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি নয় বছরের মেয়ের সঙ্গে বাসর করে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৮
‘উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ) - কে বিয়ে করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর
করেন তখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর এবং নয় বছর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর সঙ্গে জীবন কাটান।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬১. অধ্যায়ঃ
সফরে বাসর করা সম্পর্কে।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৫৯
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তিনদিন মদীনা এবং খায়বরের মধ্যবর্তী কোন স্থানে অবস্থান করেন। সেখানে
তিনি সফিয়্যাহ বিনতে হুইয়াই (রাঃ) - এর সঙ্গে মিলিত হন। এরপর আমি মুসলিমদেরকে ওয়ালীমার
জন্য দাওয়াত করি, তাতে রুটি ও গোশত ছিল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
চামড়ার দস্তরখান বিছাবার জন্য আদেশ করলেন এবং তাতে খেজুর, পনির এবং মাখন রাখা হল।
এটাই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর ওয়ালীমা। মুসলিমেরা একে
অপরকে বলতে লাগল, সফীয়্যাহ কি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -
এর স্ত্রী হিসাবে গণ্য হবেন, না ক্রীতদাসী হিসাবে। সকলে বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যদি তাকে পর্দার ভিতরে রাখেন তাহলে তিনি ইম্মুহাতুল মু’মিনীনদের মধ্যে
গণ্য হবেন। আর যদি পর্দায় না রাখেন, তাহলে ক্রীতদাসী হিসাবে গণ্য হবে। এরপর যখন নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রওয়ানা হলেন, তাকে উটের পিঠে তাঁর পেছনে বসালেন
এবং তার জন্য লোকদের থেকে পর্দার ব্যবস্থা করলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬২. অধ্যায়ঃ
শোভাযাত্রা ও মশাল ছাড়া দিবাভাগে বাসর করা।
PMMRC হাদিস নং-২৫৯৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬০
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন আমাকে বিয়ে করার পর আমার আম্মা আমার কাছে এলেন এবং আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর ঘরে নিয়ে গেলেন। দুপুর বেলা আমার কাছে তাঁর আগমন ব্যতীত
আর কিছুই আমাকে বিস্মিত করেনি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৩. অধ্যায়ঃ
মহিলাদের জন্য বিছানার চাদর ও বালিশের ওয়ার ব্যবহার করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬০০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬১
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কি বিছানার চাদর ব্যবহার করেছ? আমি বললাম, হে
আল্লাহ্র রসূল! বিছানার চাদর কোথায় পাব? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, খুব শীঘ্রই এগুলো পেয়ে যাবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৪. অধ্যায়ঃ
যেসব নারী কনেকে বরের কাছে সাজিয়ে পাঠায় তাদের প্রসঙ্গে।
PMMRC হাদিস নং-২৬০১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬২
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক আনসারীর জন্য এক মহিলাকে বিয়ের
কনে হিসাবে সাজালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘আয়িশা! এতে
আনন্দ ফূর্তির ব্যবস্থা করনি? আনসারগণ এ সব আনন্দ-ফূর্তি পছন্দ করে।(আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৫. অধ্যায়ঃ
দুলহীনকে উপঢৌকন প্রদান।
PMMRC হাদিস নং-২৬০২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৩
আবূ ‘উসমান থেকে বর্ণিতঃ
একদিন আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) আমাদের
বানী রিফা’আর মসজিদের নিকট গমনকালে তাকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, যখনই উম্মু সুলায়মের
নিকট দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেতেন, তাঁকে সালাম দিতেন। আনাস
(রাঃ) আরো বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর যখন যাইনাব (রাঃ) -
এর সঙ্গে বিয়ে হয়, তখন উম্মু সুলায়ম আমাকে বললেন, চল আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর জন্যে কিছু হাদীয়া পাঠাই। আমি তাকে বললাম, হ্যাঁ, এ ব্যবস্থা
করুন। তখন তিনি খেজুর, মাখন ও পনির এক সঙ্গে মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে একটি ডেকচিতে
করে আমাকে দিয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে পাঠালেন।
আমি সেসব নিয়ে তাঁর কাছে উপস্থিত হলে তিনি এগুলো রেখে দিতে বলেন এবং আমাকে কয়েকজন
লোকের নাম উল্লেখ করে ডেকে আনার আদেশ করেন। আরো বলেন, যার সঙ্গে দেখা হয় তাকেও দাওয়াত
দিবে। তিনি যেভাবে আমাকে হুকুম করলেন, আমি সেভাবে কাজ করলাম। যখন আমি ফিরে এলাম, তখন
ঘরে আনেক লোক দেখতে পেলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন হালুয়া (হাইশ)
পাত্রের মধ্যে হাত রাখা অবস্থায় ছিলেন এবং আল্লাহ্ তা’আলার মর্জি মোতাবেক কিছু কথা
বললেন। তারপর তিনি দশ দশ জন করে লোক খাওয়ার জন্য ডাকলেন এবং বললেন, তোমরা ‘বিসমিল্লাহ’
বলে খাওয়া শুরু কর এবং প্রত্যেকে পাত্রের নিজ নিজ দিক হতে খাও। যখন তাদের খাওয়া-দাওয়া
শেষ হল তাদের মধ্য থেকে অনেকেই চলে গেল এবং কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তা বলতে থাকল। যা
দেখে আমি বিরক্তি বোধ করলাম। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখান
থেকে বের হয়ে অন্য ঘরে গেলেন। আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি বললাম, তারাও
চলে গেছে তখন তিনি নিজের কক্ষে ফিরে এলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তিনি তাঁর কক্ষে থাকলেন
এবং এই আয়াত পাঠ করলেনঃ “তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোন! নবীগৃহে প্রবেশ কর না যতক্ষণ না
তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয় খাদ্য গ্রহণের জন্য, (আগেভাগেই এসে পড় না) খাদ্য প্রস্তুতির
জন্য অপেক্ষা করে যেন বসে থাকতে না হয়। তবে তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা প্রবেশ কর। অতঃপর
তোমাদের খাওয়া হলে তোমরা চলে যাও। কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। তোমাদের এ কাজ
নবীকে কষ্ট দেয়। সে তোমাদেরকে (উঠে যাওয়ার জন্য বলতে) লজ্জাবোধ করে, আল্লাহ সত্য
কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না।” (সূরাহ আল-আহযাব ৩৩: ৫৩) আবূ ‘উসমান (রাঃ) বলেন, আনাস
(রাঃ) বলেছেন যে, তিনি দশ বছর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর খিদমাত
করেছেন।[৪৭৯১; মুসলিম ১৬/১৩, হাঃ ১৪২৮]
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৬. অধ্যায়ঃ
কনের জন্যে পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি ধার করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬০৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৪
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তিনি আসমা (রাঃ) থেকে গলার
একছড়া হার ধার হিসাবে এনেছিলেন। এরপর তা হারিয়ে যায়। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কয়েকজন সাহাবীকে তা খোঁজ করে বের করার জন্য পাঠালেন। এমন
সময় সলাতের ওয়াক্ত হয়ে গেলে তারা বিনা ওযূতে সলাত আদায় করলেন। এরপর যখন রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর খেদমতে হাযির হয়ে অভিযোগ করলেন, তখন তায়াম্মুমের
আয়াত অবতীর্ণ হল। উসায়দ ইব্নু হুযায়র (রাঃ) বললেন, [হে ‘আয়িশা (রাঃ)!] আল্লাহ্
আপনাকে উত্তম পুরষ্কার দান করুন! কারণ যখনই আপনার ওপর কোন অসুবিধা আসে, তখনই আল্লাহ্
তা’আলার তরফ থেকে তা আপনার জন্য বিপদমুক্তির ও উম্মাতের জন্য বারাকাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৭. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীর কাছে গমনকালে কী বলতে হবে?
PMMRC হাদিস নং-২৬০৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৫
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন যৌন সঙ্গম করে, তখন যেন সে বলে, “বিসমিল্লাহি
আল্লাহুম্মা জান্নিবনিশ শায়তানা ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা”- আল্লাহ্র
নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ্! আমাকে তুমি শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাকে তুমি যা দান
করবে তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। এরপরে যদি তাদের দু’জনের মাঝে কিছু ফল দেয়া হয় অথবা
বাচ্চা পয়দা হয়, তাকে শয়তান কখনো ক্ষতি করতে পারবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৪, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৮. অধ্যায়ঃ
ওয়ালীমাহ একটি অধিকার।
‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর, একটি বকরী দিয়ে হলেও।
PMMRC হাদিস নং-২৬০৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৬
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসেন তখন আমার বয়স দশ বছর ছিল। আমার মা, চাচী ও ফুফুরা আমাকে
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর খাদিম হবার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন।
এরপর আমি দশ বছরকাল তাঁর খেদমত করি। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর ইন্তিকাল হয় তখন আমার বয়স ছিল বিশ বছর। আমি পর্দা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে অধিক
জানি। পর্দা সম্পর্কীয় প্রাথমিক আয়াতসমূহ যয়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) – এর সঙ্গে নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর বাসর রাত যাপনের সময় অবতীর্ণ হয়েছিল। সেদিন
সকাল বেলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুলহা ছিলেন এবং লোকদেরকে ওয়ালীমার
দাওয়াত করলেন। সুতরাং তাঁরা এসে খানা খেলেন। কিছু লোক ব্যতীত সবাই চলে গেলেন। তাঁরা
দীর্ঘ সময় অবস্থান করলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে বাইরে
গেলেন। আমিও তাঁর পিছু পিছু চলে এলাম, যাতে করে অন্যেরাও বের হয়ে আসে। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন, এমন কি তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - এর কক্ষের
নিকট পর্যন্ত গেলেন, এরপরে বাকি লোকগুলো হয়ত চলে গেছে এ কথা ভেবে তিনি ফিরে এলেন,
আমিও তাঁর সঙ্গে ফিরে এলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাইনাব (রাঃ)
- এর কক্ষে প্রবেশ করে দেখতে পেলেন যে, লোকগুলো বসে রয়েছে - চলে যায়নি। সুতরাং নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় বাইরে বেরুলেন এবং আমি তাঁর সঙ্গে এলাম।
যখন আমরা ‘আয়িশা (রাঃ) -এর কক্ষের নিকট পর্যন্ত পৌঁছলাম, তিনি ভাবলেন যে, এতক্ষণে
হয়ত লোকগুলো চলে গেছে। তিনি ফিরে এলেন। আমিও তাঁর সঙ্গে ফিরে এসে দেখলাম যে, লোকগুলো
চলে গেছে। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ও তাঁর মাঝখানে একটি
পর্দা টেনে দিলেন। এ সময় পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৫, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৬৯. অধ্যায়ঃ
ওয়ালীমার ব্যবস্থা করতে হবে একটা বকরী দিয়ে হলেও।
PMMRC হাদিস নং-২৬০৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৭
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ
(রাঃ) একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস
করলেন, কী পরিমাণ মাহ্র দিয়েছ? তিনি উত্তর করলেন, খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি।
আনাস (রাঃ) আরও বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাহাবীগণ মদীনায়
আসলেন, তখন মুহাজিরগণ আনসারদের গৃহে অবস্থান করতেন। আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) সা’দ
ইব্নু রাবী (রাঃ)-এর গৃহে অবস্থান করতেন। সা’দ (রাঃ) ‘আবদুর রহমান (রাঃ) - কে বললেন,
আমি আমার বিষয়-সম্পত্তি দু’ভাগ করে আমারা উভয়ে সমান ভাগে ভাগ করে নেব এবং আমি আমার
দু’ স্ত্রীর মধ্যে একজন তোমাকে দেব। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তোমার সম্পত্তি
ও স্ত্রীতে বারকাত দান করুন। তারপর ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বাজারে গেলেন এবং ব্যবসা করতে
লাগলেন এবং লাভ হিসেবে কিছু পনির ও ঘি পেলেন এবং বিয়ে করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, একটি ছাগল দিয়ে হলেও ওয়ালীমাহ কর।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৬,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬০৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৮
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যখন বিয়ে করেন, তখন ওয়ালীমা করেন, কিন্তু যাইনাব (রাঃ) - এর বিয়ের
সময় যে পরিমাণ ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেছিলেন, তা অন্য কারো বেলায় করেননি। সেই ওয়ালীমা
ছিল একটি ছাগল দিয়ে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬০৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৬৯
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফিয়্যাহ (রাঃ) - কে আযাদ করে বিয়ে করেন এবং এই আযাদ করাকেই
তাঁর মাহ্র নির্দিষ্ট করেন এবং তার ‘হায়স’ (এক প্রকার সুস্বাদু হালুয়া) দ্বারা ওয়ালীমাহ’র
ব্যবস্থা করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬০৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭০
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক সহধর্মিণীর সঙ্গে বাসর ঘরের ব্যবস্থা করলেন এবং ওয়ালীমার দাওয়াত
দেয়ার জন্য আমাকে পাঠালেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭০. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তির কোন স্ত্রীর বিয়ের সময় অন্যদেরকে
বিয়ের সময়ের ওয়ালীমার চেয়ে বড় ধরণের ওয়ালীমার ব্যবস্থা করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬১০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যায়নাবের বিয়ের আলোচনায় আনাস (রাঃ)
উপস্থিত হয়ে তিনি বললেন, যায়নাব বিনতে জাহাশের সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর বিয়ের সময় যে ওয়ালীমার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তার চেয়ে বড় ওয়ালীমার
ব্যবস্থা তাঁর অন্য কোন স্ত্রীর বিয়েতে আমি দেখিনি। এতে তিনি একটি ছাগল দ্বারা ওয়ালীমা
করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭১. অধ্যায়ঃ
একটি ছাগলের চেয়ে কম কিছুর দ্বারা ওয়ালীমা
করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬১১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭২
সফীয়্যাহ বিন্তে শাইবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তাঁর কোন এক স্ত্রীর বিয়েতে দুই মুদ (চার সের) যব দ্বারা ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেন।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭২. অধ্যায়ঃ
ওয়ালীমার দাওয়াত গ্রহণ করা কর্তব্য। যদি কেউ একাধারে সাত দিন অথবা অনুরূপ
অধিক দিন ওয়ালীমার ব্যবস্থা করে।
কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ওয়ালীমার সময় এক বা দু’ দিন ধার্য করেননি।
PMMRC হাদিস নং-২৬১২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৩
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কাউকে ওয়ালীমার দাওয়াত করা হলে তা অবশ্যই
গ্রহণ করবে।[৫১৭৯; মুসলিম ১৬/১৫, হাঃ ১৪২৯, আহমাদ ৪৯৪৯](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯২, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬১৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৪
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বন্দীদেরকে মুক্তি দাও, দাওয়াত কবুল কর এবং রোগীদের সেবা কর।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৭৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬১৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৫
বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে সাতটি কাজ করতে বলেছেন এবং সাতটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদেরকে রোগীর
সেবা করার, জানাযায় অংশগ্রহণ করার, হাঁচি দিলে তার জবাব দেয়ার, কসম পুরা করায় সহযোগিতা
করার, মজলুমকে সাহায্য করার, সালামের বিস্তার করার এবং কেউ দাওয়াত দিলে তা কবূল করার
নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি আমাদের নিষেধ করেছেন স্বর্ণের আংটি পরতে, রুপার পাত্র
ব্যবহার করতে, ঘোড়ার পিঠের ওপরে রেশমী গদি ব্যবহার করতে এবং ‘কাস্সিয়া’ বা পাতলা
রেশমী কাপড় এবং দ্বিবাজ ব্যবহার করতে। আবূ ‘আওয়ানাহ এবং শায়বানী আশ্আস সূত্রে সালামের
বিস্তারের কথা সমর্থন করে বর্ণনা করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৭৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬১৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৬
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ উসায়দা আস্ সা’ঈদী
(রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে তার বিয়ে উপলক্ষে ওয়ালীমায়
দাওয়াত করলেন। তাঁর নববধূ সেদিন খাদ্য পরিবেশন করছিলেন। সাহ্ল বলেন, তোমরা কি জান,
সে দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে কী পানীয় দেয়া হয়েছিল? সারারাত
ধরে কিছু খেজুর পানির মধ্যে ভিজিয়ে রেখে তা থেকে তৈরি পানীয়। নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খাওয়া শেষ করলেন, তখন তাঁকে ঐ পানীয়ই পান করতে দেয়া হল।
[৫১৮২, ৫১৮৩, ৫৫৯১, ৫৫৯৭, ৬৬৮৫; মুসলিম ৩৬/৯, হাঃ ২০০৬, আহমাদ ৭২৮৩](আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৩. অধ্যায়ঃ
যে দাওয়াত কবূল করে না, সে যেন আল্লাহ্
এবং তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর অবাধ্য হল।
PMMRC হাদিস নং-২৬১৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে ওয়ালীমায় কেবল ধনীদেরকে
দাওয়াত করা হয় এবং গরীবদেরকে দাওয়াত করা হয় না সেই ওয়ালীমা সবচেয়ে নিকৃষ্ট। যে
ব্যক্তি দাওয়াত কবুল করে না, সে আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর সঙ্গে অবাধ্যতা করে। [মুসলিম ১৬/১৪, হাঃ ১৪৩২, আহমাদ ৭২৮৩] (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৭৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৪. অধ্যায়ঃ
বকরীর পায়া খাওয়ানোর জন্যও যদি দাওয়াত করা হয়।
PMMRC হাদিস নং-২৬১৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৮
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ আমাকে পায়া খেতে দাওয়াত দেয়া হলে আমি তা কবুল করব এবং আমাকে যদি কেউ পায়া
হাদীয়া দেয়, তবে আমি তা অবশ্যই গ্রহন করব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৫. অধ্যায়ঃ
বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে দা’ওয়াত গ্রহন করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬১৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৭৯
‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, যদি তোমাদেরকে বিয়ে অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয়, তবে তা
রক্ষা কর। নাফি’ বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) - এর নিয়ম ছিল, তিনি সওমরত অবস্থাতেও
বিয়ের বা অন্য কোন দাওয়াত রক্ষা করতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৬. অধ্যায়ঃ
বরযাত্রীদের সঙ্গে মহিলা ও শিশুদের গমন।
PMMRC হাদিস নং-২৬১৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮০
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কিছু সংখ্যক মহিলা এবং শিশুকে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ফিরতে দেখলেন। তিনি
আনন্দে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, আমি আল্লাহ্র নামে বলছি, তোমরা সকল মানুষের চেয়ে
আমার কাছে প্রিয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৭. অধ্যায়ঃ
যদি কোন অনুষ্ঠানে দ্বীনের খেলাফ বা অপছন্দনীয় কোন কিছু নজরে আসে,তা হলে
ফিরে আসবে কি?
ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) কোন এক বাড়িতে (প্রাণীর)
ছবি দেখে ফিরে এলেন।
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) আবূ আইয়ূব (রাঃ) -
কে দাওয়াত করে বাড়িতে আনলেন। তিনি এসে ঘরের দেয়ালের পর্দায় ছবি দেখতে পেলেন। এরপর ইব্নু
‘উমার (রাঃ) এ ব্যাপারে বললেন, মহিলাদের সঙ্গে পেরে উঠিনি। আবূ আইয়ূব (রাঃ) বল্লেন,
আমি যাদের সম্পর্কে আশংকা করে ছিলাম, তাতে আপনার ব্যাপারে আশঙ্কা করিনি। আল্লাহ্র কসম,
আমি আপনার ঘরে কোন খাদ্য খাব না। এরপর তিনি চলে গেলেন।
PMMRC হাদিস নং-২৬২০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮১
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি বালিশ বা গদি কিনে
এনেছিলাম, যার মধ্যে ছবি ছিল। যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সেই ছবিটি দেখলেন, তিনি দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে গেলেন; ভিতরে প্রবেশ করলেন না। আমি
বুঝতে পারলাম যে, তাঁর চোখে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় ব্যাপার। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমি আল্লাহ্র কাছে তাওবাহ করছি এবং তাঁর রাসূলের কাছে ফিরে আসছি। আমি কী অন্যায়
করেছি? তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ বালিশ কিসের
জন্য? আমি বললাম, এটা আপনার জন্য খরিদ করে এনেছি, যাতে আপনি বসতে পারেন এনং হেলেন দিতে
পারেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই ছবি নির্মাতাকে
ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি প্রদান করা হবে এবং বলা হবে, যা তুমি সৃষ্টি করেছ তার প্রাণ
দাও এনং তিনি আরও বলেন, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৮. অধ্যায়ঃ
নববধূ কর্তৃক বিয়ে অনুষ্ঠানে খিদমত করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬২১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮২
সাহ্ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আবূ উসায়দ আস্সা’ঈদী
(রাঃ) তাঁর ওয়ালীমায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীগণকে
দাওয়াত দিলেন, তখন তাঁর নববধূ উম্মু উসায়দ ব্যতীত আর কেউ সে খাদ্য প্রস্তুত এবং পরিবেশন
করেননি। তিনি একটি পাথরের পাত্রে সারা রাত পানির মধ্যে খেজুর ভিজিয়ে রাখেন। যখন (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খওয়া-দাওয়া শেষ করেন, তখন সেই তোহফা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - কে পান করান।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৭৯. অধ্যায়ঃ
আন্-নাকী বা অন্যন্য যাতে মাদকতা নেই। এমন শরবত ওয়ালীমাতে পান করানো।
PMMRC হাদিস নং-২৬২২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৩
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ উসায়দ আস্সা’ঈদী (রাঃ)
তাঁর ওয়ালীমায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে দাওয়াত দেন। তাঁর নববধূ
সেদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে খাদ্য এবং পানীয় পরিবেশন করেন।
সাহ্ল (রাঃ) বলেন, তোমরা কি জান সেই নববধূ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- কে কী পান করিয়েছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর জন্য
একটি পানপাত্রে কিছু খেজুর সারারাত ধরে ভিজিয়ে রেখেছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০২,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮০. অধ্যায়ঃ
নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার ।
আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর বানী, নারীরা পাজঁরের হাড়ের মত।
PMMRC হাদিস নং-২৬২৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৪
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, নারীরা হচ্ছে পাঁজরের হাড়ের ন্যায়। যদি একেবারে সোজা করতে চাও,
তাহলে ভেঙ্গে যাবে। সুতরাং, যদি তোমরা তাদের থেকে উপকার লাভ করতে চাও, তাহলে ঐ বাঁকা
অবস্থাতেই লাভ করতে হবে।[১৭] [৩৩৩১; মুসলিম ১৭/১৭, হাঃ ১৪৬৮](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৩,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৬)
[১৭] এ প্রসঙ্গে রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একটি হাদীস উল্লেখ করা হচ্ছে। এ হাদীসে তিনি স্ত্রীলোকদের
প্রকৃতিগত এক মৌলিক দুর্বলতার প্রতি বিশেষ খেয়াল রেখে চলার জন্যে স্বামীদের প্রতি
নির্দেশ দিয়েছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন - মেয়েলোক সাধারণত
স্বামীদের অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকে এবং তাদের অনুগ্রহকে অস্বীকার করে। তুমি যদি জীবন ভরেও
কোন স্ত্রীর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন কর আর কোন এক সময় যদি সে তার মর্জি মেজাজের বিপরীত
কোন ব্যবহার তোমার মাঝে দেখতে পায় তাহলে তখনি বলে উঠবে- আমি তোমার কাছে কোনদিনই সামান্য
কল্যাণ দেখতে পাইনি- বুখারী। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর এ কথা
থেকে একদিকে যেমন নারীদের মৌলিক প্রকৃতিগত দোষের কথা জানা গেল। তেমনি এ হাদীস স্বামীদের
জন্যে এক বিশেষ সাবধান বাণী। স্বামীরা যদি নারীদের এ প্রকৃতিগত দোষের কথা স্মরণ না
রাখে, তাহলে পারিবারিক জীবনে অতি তাড়াতাড়ি ভাঙ্গন ও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এ জন্য
পুরুষদের অবিচল নিষ্ঠা ও অপরিসীম ধৈয্য ধারণের প্রয়োজন রয়েছে এবং এ ধরনের নাজুক পরিস্থিতিতে
ধৈয্য ধারণ করে পারিবারিক জীবনের মাধুর্য ও মিলমিশকে অক্ষুণ্ন রাখতে পুরুষদেরকেই প্রধান
ভূমিকা রাখতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮১. অধ্যায়ঃ
নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহারের ওসীয়ত।
PMMRC হাদিস নং-২৬২৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৫
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, যে আল্লাহ্ এবং আখিরাতের ওপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬২৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৬
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আর তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।
কেননা, তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরার হাড় থেকে এবং সবচেয়ে বাঁকা হচ্ছে পাঁজরার
ওপরের হাড়। যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙ্গে যাবে। আর যদি তা যেভাবে আছে সেভাবে
রেখে দাও তাহলে বাঁকাই থাকবে। অতএব, তোমাদেরকে ওসীয়ত করা হলো নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার
করার জন্য।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬২৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৭
ইব্নু ‘উমার [রাঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সময় আমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা-বার্তা ও হাসি-তামাশা করা থেকে
দূরে থাকতাম এই ভয়ে যে, এ বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক করে কোন ওয়াহী অবতীর্ণ হয়ে যায়
নাকি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর আমরা তাদের সঙ্গে
নির্ভয়ে কথাবার্তা বলতাম ও হাসি-তামশা করতাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা’য়ালা বলেন, “তোমরা নিজেকে
এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।” (সূরা আত-তাহরীমঃ ৬)
PMMRC হাদিস নং-২৬২৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৮
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক এবং তোমরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। একজন শাসক সে
তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পরুষ তার পরিবারের রক্ষক, সে এ সম্পর্কে
জিজ্ঞাসিত হবে। একজন স্ত্রী তার স্বামীর গৃহের রক্ষক, সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।
একজন গোলাম তার মনিবের সম্পদের রক্ষক, সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব সাবধান, তোমরা
প্রত্যেকেই রক্ষক এবং তোমরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৬, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৩. অধ্যায়ঃ
পরিবার-পরিজনের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার।
PMMRC হাদিস নং-২৬২৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৮৯
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ১১ জন মহিলা এক স্থানে একত্রিত
বসল এবং সকলে মিলে এ কথার ওপর একমত হল যে, তারা নিজেদের স্বামীর ব্যাপারে কোন কিছুই
গোপন রাখবে না।
প্রথম মহিলা বলল, আমার স্বামী হচ্ছে অত্যন্ত
হাল্কা-পাতলা দুর্বল উঠের গোশতের মত যেন কোন পর্বতের চুড়ায় রাখা হয়েছে এবং সেখানে
উঠা সহজ কাজ নয় এবং গোশতের মধ্যে এত চর্বিও নেই, যে কারণে সেখানে উঠার জন্য কেউ কষ্ট
স্বীকার করবে।
দ্বিতীয় জন বলল, আমি আমার স্বামী সম্পর্কে
কিছু বলব না, কারণ আমি ভয় করছি যে, তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে শেষ করা যাবে না। কেননা,
যদি আমি তার সম্পর্কে বলতে যাই, তা হলে আমাকে তার সকল দুর্বলতা এবং মন্দ দিকগুলো সম্পর্কেও
বলতে হবে।
তৃতীয় মহিলা বলল, আমার স্বামী একজন দীর্ঘদেহী
ব্যক্তি। আমি যদি তার বর্ণনা দেই (আর সে যদি তা শোনে) তাহলে সে আমাকে ত্বলাক্ব দিবে।
আর যদি আমি কিছু না বলি, তাহলে সে আমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখবে। অর্থাৎ ত্বলাক্বও দেবে
না, স্ত্রী মত ব্যবহারও করবে না।
চতুর্থ মহিলা বলল, আমার স্বামী হচ্ছে
তিহামার রাতের মত মাঝামাঝি অতি গরমও না, অতি ঠান্ডাও না, আর আমি তাকে ভয়ও করি না,
আবার তার প্রতি অসন্তুষ্টও নই।
পঞ্চম মহিলা বলল, যখন আমার স্বামী ঘরে
ঢুকে তখন চিতা বাঘের মত থাকে। যখন বাইরে যায় তখন সিংহের মত তার স্বভাব থাকে এবং ঘরের
কোন কাজের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন তোলে না।
৬ষ্ঠ মহিলা বলল, আমার স্বামী যখন খেতে
বসে, তখন সব খেয়ে ফেলে। যখন পান করে, তখন সব শেষ করে। যখন নিদ্রা যায়, তখন একাই চাদর
বা কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে। এমনকি হাত বের করেও আমার খবর নেয়া না।
সপ্তম মহিলা বলল, আমার স্বামী হচ্ছে পথভ্রষ্ট
অথবা দুর্বল মানসিকতা সম্পন্ন এবং চরম বোকা, সব রকমের দোষ তার আছে। সে তোমার মাথায়
বা শরীরে অথবা উভয় স্থানে আঘাত করতে পারে।
অষ্টম মহিলা বলল, আমার স্বামীর স্পর্শ
হচ্ছে খরগোশের মত এবং তার দেহের সুগন্ধ হচ্ছে যারনাব (এক প্রকার বনফুল)- এর মত।
নবম মহিলা বলল, আমার স্বামী হচ্ছে অতি
উচ্চ অট্টালিকার মত এবং তার তরবারি ঝুলিয়ে রাখার জন্য সে চামড়ার লম্বা ফালি পরিধান
করে (অর্থাৎ সে দানশীল ও সাহসী)। তার ছাইভষ্ম প্রচুর পরিমাণের (অর্থাৎ প্রচুর মেহমান
আছে এবং মেহমাহদারীও হয়) এবং মানুষের জন্য তার গৃহ অবারিত। এলাকার জনগণ তার সঙ্গে
সহজেই পরামর্শ করতে পারে।
দশম মহিলা বলল, আমার স্বামীর নাম হল মালিক।
মালিকের কী প্রশ্নংসা আমি করব। যা প্রশ্নংসা করব সে তার চেয়ে ঊর্ধ্বে। তার অনেক মঙ্গলময়
উট আছে, তার অধিকাংশ উটকেই ঘরে রাখা হয় (অর্থাৎ মেহমানদের যবাই করে খাওয়ানোর জন্য)
এবং অল্প সংখ্যক মাঠে চরার জন্য রাখা হয়। বাঁশির শব্দ শুনলেই উটগুলো বুঝতে পারে যে,
তাদেরকে মেহমাদের জন্য যবাই করা হবে।
একাদশতম মহিলা বলল, আমার স্বামী আবূ যার’আ।
তার কথা আমি কী বলব। সে আমাকে এত অধিক গহনা দিয়েছে যে, আমার কান ভারী হয়ে গেছে, আমার
বাজুতে মেদ জমেছে এবং আমি এত সন্তুষ্ট হয়েছি যে, আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। সে আমাকে
এনেছে অত্যন্ত গরীব পরিবার থেকে, যে পরিবার ছিল মাত্র কয়েকটি বকরীর মালিক। সে আমাকে
অত্যন্ত ধনী পরিবারে নিয়ে আসে, যেখানে ঘোড়ার হ্রেষাধ্বনি এবং উটের হাওদার আওয়াজ
এবং শস্য মাড়াইইয়ের খসখসানি শব্দ শোনা যায়। সে আমাকে ধন-সম্পদের মধ্যে রেখেছে। আমি
যা কিছু বলতাম, সে বিদ্রূপ করত না এবং আমি নিদ্রা যেতাম এবং সকালে দেরী করে উঠতাম এবং
যখন আমি পান করতাম, অত্যন্ত তৃপ্তি সহকারে পান করতাম। আর আবূ যার’আর আম্মার কথা কী
বলব! তার পাত্র ছিল সর্বদা পরিপূর্ণ এবং তার ঘর ছিল প্রশস্ত। আবূ জার’আর পুত্রের কথা
কী বলব! সেও খুব ভাল ছিল। তার শয্যা এত সংকীর্ণ ছিল যে, মনে হত যেন কোষবদ্ধ তরবারি
অর্থাৎ সে অত্যন্ত হালকা-পাতলা দেহের অধিকারী। তার খাদ্য হচ্ছে ছাগলের একখানা পা। আর
আবূ যার’আর কন্যা সম্পর্কে বলতে হয় যে, সে কতই না ভাল। সে বাপ-মায়ের সস্পূর্ণ বাধ্য
সন্তান। সে অত্যন্ত সুস্বাস্থ্যের অধিকারিনী, যে কারণে সতীনরা তাকে হিংসা করে। আবূ
যার’আর ক্রীতদাসীরাও অনেক গুন। সে আমাদের গোপন কথা কখনো প্রকাশ করত না, সে আমাদের সম্পদকে
কমাত না এবং আমাদের বাসস্থানকে আবর্জনা দিয়ে ভরে রাখত না। সে মহিলা আরও বলল, একদিন
দুধ দোহান করার সময় আবূ যার’আ বাইরে বেরিয়ে এমন একজন মহিলাকে দেখতে পেল, যার দু’টি
পুত্র-সন্তান রয়েছে। ওরা মায়ের স্তন্য নিয়ে চিতা বাঘের মত খেলছিল (দুধ পান করছিল)।
সে ঐ মহিলাকে দেখে আকৃষ্ট হল এবং আমাকে ত্বলাক্ব দিয়ে তাকে বিয়ে করল। এরপর আমি এক
সম্মানিত ব্যক্তিকে বিয়ে করলাম। সে দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ত এবং হাতে বর্শা রাখত। সে
আমাকে অনেক সম্পদ দিয়েছে এবং প্রত্যেক প্রকারের গৃহপালিত জন্তু থেকে এক এক জোড়া আমাকে
দিয়েছে এবং বলেছে, হে উম্মু যার’আ! তুমি এ সম্পদ থেকে খাও, পরিধান কর এবং উপহার দাও।
মহিলা আরও বলল, সে আমাকে যা কিছু দিয়েছে, তা আবূ যার’আর একটি ক্ষুদ্র পাত্রও পূর্ণ
করতে পারবে না (অর্থাৎ আবূ যার’আর সম্পদের তুলনায় তা খুবই সামান্য ছিল)। ‘আয়িশা
(রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলবেন, “আবূ যার’আ
তার স্ত্রী উম্মু যার’আর জন্য যেমন আমিও তোমরা প্রতি তেমন (তবে আমি কক্ষনো তোমাকে ত্বলাক্ব
দিব না)”। [মুসলিম ৪৪/১৪, হাঃ ২৪৪৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬২৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯০
‘উরওয়া, ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন হাবশীরা তাদের বর্শা নিয়ে খেলা
করছিল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নিয়ে পর্দা করে তার
পেছনে দাঁড় করিয়ে ছিলেন এবং আমি সেই খেলা দেখছিলাম। যতক্ষণ আমার ভাল লাগছিল ততক্ষণ
আমি দেখছিলাম। এরপর আমি স্বেচ্ছায় সে স্থান ত্যাগ করলাম। সুতরাং তোমরা অনুমান করতে
পার কোন্ বয়সের মেয়েরা আমদ-প্রমোদ পছন্দ করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৪. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তির নিজ কন্যাকে তার স্বামী সম্পর্কে নাসীহাত দান করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯১
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বহুদিন ধরে উৎসুক ছিলাম
যে, আমি ‘উমার ইব্নু খাত্তাব (রাঃ) - এর নিকট জিজ্ঞেস করব, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীগণের মধ্যে কোন্ দু’জনের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলা
এ আয়াত অবতীর্ণ করেছেনঃ “তোমরা দু’জন যদি অনুশোচনারভরে আল্লাহ্র দিকে ফিরে আস (তবে
তা তোমাদের জন্য উত্তম), তোমাদের অন্তর (অন্যায়ের দিকে) ঝুঁকে পড়েছে।” (সূরাহ আত-তাহরীম
৬৬: ৪) এরপর একবার তিনি [‘উমার(রাঃ)] হাজ্জের জন্য রওয়ানা হলেন এবং আমিও তাঁর সঙ্গে
হাজ্জে গেলাম। (ফিরে আসার পথে) তিনি ইস্তিনজার জন্য রাস্তা থেকে সরে গেলেন। আমি পানি
পূর্ণ পাত্র হাতে তাঁর সঙ্গে গেলাম। তিনি ইস্তিনজা করে ফিরে এলে আমি ওযূর পানি তাঁর
হাতে ঢেলে দিতে লাগলাম। তিনি যখন ওযূ করছিলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আমীরুল
মু’মুনীন! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিণীগণের মধ্যে কোন্
দু’জন, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ “তোমরা দু’জন যদি আল্লাহ্র কাছে তাওবাহ
কর (তবে তোমাদের জন্য উত্তম), কেননা তোমাদের মন সঠিক পথ থেকে সরে গেছে।” জবাবে তিনি
বলেন, হে ইব্নু ‘আব্বাস! আমি তোমরা প্রশ্ন শুনে অবাক হচ্ছি। তাঁরা দু’জন তো ‘আয়িশাহ্
(রাঃ) ও হাফসা (রাঃ)। এরপর ‘উমার (রাঃ) এ ঘটনাটি বর্ণনা করলেন, “আমি এবং আমার একজন
আনসারী প্রতিবেশী যিনি উমাইয়াহ ইব্নু যায়দ গোত্রের লোক এবং তাঁর মদীনার উপকন্ঠে বসবাস
করত। আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে পালাক্রমে সাক্ষাৎ
করতাম। সে একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর দরবারে যেত, আমি আর
একদিন যেতাম। যখন আমি দরবারে যেতাম, ঐ দিন দরবারে ওয়াহী অবতীর্ণসহ যা ঘটত সবকিছুর
খবর আমি তাকে দিতাম এবং সেও তেমনি খবর আমাকে দিত। আমরা কুরাইশরা নিজেদের স্ত্রীগণের
ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে রেখেছিলাম। কিন্তু আমরা যখন আনসারদের মধ্যে এলাম, তখন দেখতে
পেলাম, তাদের স্ত্রীগণ তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে এবং তাদের ওপর কর্তৃত্ব করে
চলেছে। সুতরাং আমাদের স্ত্রীরাও তাদের দেখাদেখি সেরূপ ব্যবহার করতে লাগল। একদিন আমি
আমার স্ত্রীর প্রতি নারাজ হলাম এবং তাকে উচ্চৈঃস্বরে কিছু বললাম, সেও প্রতি-উত্তর দিল।
আমার কাছে এ রকম প্রতি-উত্তর দেয়াটা অপছন্দ হল। সে বলল, আমি আপনার কথার পাল্টা উত্তর
দিচ্ছি এতে অবাক হচ্ছেন কেন? আল্লাহ্র কসম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর স্ত্রীগণ তাঁর কথার মুখে মুখে পাল্টা উত্তর দিয়ে থাকেন এবং তাঁদের মধ্যে কেউ
কেউ আবার একদিন এক রাত পর্যন্ত কথা না বলে কাটান। [‘উমার (রাঃ) বলেন], এ কথা শুনে আমি
ঘাবড়ে গেলাম এবং আমি বললাম, তাদের মধ্যে যারা এরূপ করেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরপর
আমি আমার কাপড় পরলাম এবং আমার কন্যা হাফসার ঘরে প্রবেশ করলাম এবং বললামঃ হাফ্সা! তোমাদের
মধ্য থেকে কারো প্রতি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি সারা দিন রাত পর্যন্ত
অসন্তুষ্ট থাকেননি? সে উত্তর করল, হ্যাঁ। আমি বললাম, তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তোমরা
কি এ ব্যাপারে ভীতি হচ্ছো না যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর অসন্তুষ্টির কারণে আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট হয়ে যাবেন? পরিণামে তোমরা ধবংসের মধ্যে
পড়ে যাবে। সুতারাং তুমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে অতিরিক্ত
কোন জিনিস দাবি করবে না এবং তাঁর কথার প্রতি-উত্তর করবে না এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলা
বন্ধ করবে না। তোমার যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয়, তবে আমার কাছে চেয়ে নেবে। আর তোমার
সতীন তোমার চেয়ে অধিক রূপবতী এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর অধিক প্রিয় - তা যেন তোমাকে বিভ্রান্ত না করে। এখানে সতীন বলতে ‘আয়িশা (রাঃ)
- কে বোঝানো হয়েছে। ‘উমার (রাঃ) আরো বলেন, এ সময় আমাদের মধ্যে এ কথা ছড়িয়ে পড়েছিল
যে, গাস্সানের শাসনকর্তা আমাদের ওপর আক্রমণ চালাবার উদ্দেশে তাদের ঘোড়াগুলোকে প্রস্তুত
করছে। আমার প্রতিবেশী আনসার তার পালার দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর খিদমাত থেকে রাতে ফিরে এসে আমার দরজায় খুব জোরে করঘাত করল এবং জিজ্ঞেস
করল, আমি ঘরে আছি কিনা? আমি শংকিত অবস্থায় বেরিয়ে এলাম। সে বলল, আজ এক বিরাট ঘটনা
ঘটে গেছে। আমি বললাম, সেটা কী? গ্যাস্সানিরা কি এসে গেছে? সে বলল, না তাঁর চেয়েও বড়
ঘটনা এবং তা ভয়ংকর। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহধর্মিণীগণকে
ত্বলাক্ব দিয়েছেন। আমি বললাম, হাফ্সা তো ধ্বংস হয়ে গেল, ব্যর্থ হলো। আমি আগেই ধারণা
করেছিলাম, খুব শিগগিরই এ রকম কিছু ঘটবে। এরপর আমি পোশাক পরলাম এবং ফাজ্রের সলাত নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে আদায় করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ওপরের কামরায় (মাশরুবা) একাকী আরোহন করলেন, আমি তখন হাফ্সার কাছে গেলাম
এবং তাকে কাঁদতে দেখলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে এ ব্যাপারে
আগেই সতর্ক করে দেইনি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি তোমাদের সকলকে ত্বলাক্ব
দিয়েছেন? সে বলল আমি জানি না। তিনি ওখানে ওপরের কামরায় একাকী রয়েছেন। আমি সেখান
থেকে বেরিয়ে মিম্বারের কাছে বসলাম। সেখানে কিছু সংখ্যক লোক বসা ছিল এবং তাদের মধ্যে
অনেকেই কাঁদছিল। আমি তাদের কাছে কিছুক্ষণ বসলাম, কিন্তু আমার প্রাণ এ অবস্থা সহ্য করতে
পারছিল না। সুতরাং যে ওপরের কামরায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবস্থান
করছিলেন আমি সেই ওপরের কামরায় গেলাম এবং তাঁর হাবশী কালো খাদিমকে বললাম, তুমি কি
‘উমারের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে যাবার অনুমতি এনে
দেবে? খাদিমটি গেল এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে কথা বলল।
ফিরে এসে উত্তর করল, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে আপনার
কথা বলেছি, কিন্তু তিনি নিরুত্তর আছেন। তখন আমি ফিরে এলাম এবং যেখানে লোকজন বসা ছিল
সেখানে বসলাম। কিন্তু এ অবস্থা আমার কাছে অসহ্য লাগছিল। তাই আবার এসে খাদেমকে বললাম,
তুমি কি ‘উমারের জন্য অনুমতি এনে দিবে? সে গেল এবং ফিরে এসে বলল, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে আপনার কথা বলেছি কিন্তু তিনি নিরুত্তর ছিলেন। তখন
আমি আবার ফিরে এসে মিম্বরের কাছে ঐ লোকজনের সঙ্গে বসলাম। কিন্তু এ অবস্থা আমার আকছে
অসহ্য লাগছিল। পুনরায় আমি খাদেমের কাছে গেলাম এবং বললাম, তুমি কি ‘উমারের জন্য অনুমতি
এনে দিবে? সে গেল এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল, আমি আপনার কথা উল্লেখ করলাম; কিন্তু
তিনি নিরুত্তর আছেন। যখন আমি ফিরে যাবার উদ্যোগ নিয়েছি, এমন সময় খাদিমটি আমাকে ডেকে
বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। এরপর আমি রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট প্রবেশ করে দেখলাম, তিনি খেজুরের চাটাইর
ওপর চাদরবিহীন অবস্থায় খেজুরের পাতা ভর্তি একটি বালিশে ভর দিয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর
শরীরে পরিস্কার চাটাইয়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। আমি তাঁকে সালাম করলাম এবং দাঁড়ানো অবস্থাতেই
জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি আপনার স্ত্রীগণকে ত্বলাক দিয়েছেন? তিনি
আমার দিকে চোখ ফিরিয়ে বললেন, না (অর্থাৎ ত্বলাক দেইনি)। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার।
এরপর কথাবার্তা হালকা করার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে থেকেই বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি
যদি শোনেন তাহলে বলিঃ আমরা কুরাইশগণ, মহিলাদের উপর আমাদের প্রতিপত্তি খাটাতাম; কিন্তু
আমরা মদীনায় এসে দেখলাম, এখানকার পুরুষদের উপর নারীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিদ্যমান।
এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসলেন। তখন আমি বললাম,
হে আল্লাহ্র রসূল! যদি আপনি আমার কথার দিকে একটু নজর দেন। আমি হাফ্সার কাছে গেলাম এবং
আমি তাকে বললাম, তোমার সতীনের রূপবতী হওয়া ও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর প্রিয় পাত্রী হওয়া তোমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে। এর দ্বারা ‘আয়িশা
(রাঃ) - এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার
মুচকি হাসলেন। আমি তাঁকে হাসতে দেখে বসে পড়লাম। এরপর আমি তাঁর ঘরের চারদিকে তাকিয়ে
দেখলাম। আল্লাহ্র কসম! কেবল তিনটি চামড়া ব্যতীত আর আমি তাঁর ঘরে উল্লেখ করার মত কিছুই
দেখতে পেলাম না। তারপর আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! দু’আ করুন, আল্লাহ্ তা’আলা যাতে
আপনার উম্মাতদের সচ্ছলতা দান করেন। কেননা, পারসিক ও রোমানদের প্রাচুর্য দান করা হয়েছে
এবং তাদের দুনিয়ার আরাম প্রচুর পরিমাণে দান করা হয়েছে; অথচ তারা আল্লাহ্র ‘ইবাদাত
করে না। এ কথা শুনে হেলান দেয়া অবস্থা থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সোজা হয়ে বসে বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কি এখনো এ ধারণা পোষণ করছ? ওরা ঐ লোক,
যারা উত্তম কাজের প্রতিদান এ দুনিয়ায় পাচ্ছে! আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল, আমার
ক্ষমার জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করুন। হাফ্সা (রাঃ) কর্তৃক ‘আয়িশা (রাঃ) - এর কাছে
কথা ফাঁস করে দেয়ার কারণে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঊনত্রিশ দিন তাঁর
স্ত্রীগণ থেকে আলাদা থাকেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, আমি
এক মাসের মধ্যে তাদের কাছে যাব না তাদের প্রতি গোস্বার কারণে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে
মৃদু ভর্ৎসনা করেন। সুতরাং যখন ঊনত্রিশ দিন হয়ে গেল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সর্বপ্রথম ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গেলেন এবং তাঁকে দিয়েই শুরু করলেন। ‘আয়িশা
(রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কসম করেছেন যে, একমাসের মধ্যে আমাদের কাছে
আসবেন না; কিন্তু এখন তো ঊনত্রিশ দিনেই এসে গেলেন। আমি প্রতিটি দিন এক এক করে হিসাব
করে রেখেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঊনত্রিশ দিনেও একমাস হয়।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ মাস ২৯ দিনের। ‘আয়িশা (রাঃ) আরও
বলেন, ঐ সময় আল্লাহ্ তা’আলা ইখতিয়ারের আয়াত অবতীর্ণ করেন [১৮] এবং তিনি তাঁর স্ত্রীগণের
মধ্যে আমাদে দিয়েই শুরু করেন এবং আমি তাঁকেই গ্রহণ করি। এরপর তিনি অন্য স্ত্রীগণের
অভিমত চাইলেন। সকলেই তাই বলল, যা ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮০৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮১২)
[১৮] সূরা আহযাবের ২৮নং আয়াত অবতীর্ণ
হল। যাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর বিবিগণকে দুনিয়া বা আখিরাত
- এ দু’টোর যে কোন একটিকে বেছে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৫. অধ্যায়ঃ
স্বামীর অনুমতি নিয়ে স্ত্রীদের নফল সওম পালন করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯২
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, কোন স্ত্রী স্বামীর উপস্থিতিতে তাঁর অনুমতি ব্যতীত নফল
সওম রাখবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৬. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলা তার স্বামীর বিছানা ছেড়ে রাত কাটালে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৩
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে একই বিছানায় শোয়ার জন্য ডাকে, আর সে
আসতে অস্বীকার করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ ঐ মহিলার উপর লা’নত বর্ষণ করতে থাকে।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৪
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর শয্যা ছেড়ে অন্যত্র রাত্রি যাপন করে তাহলে যতক্ষণ
না সে তার স্বামীর শয্যায় ফিরে আসে, ততক্ষন ফেরেশতাগণ তার উপর লা’নত বর্ষণ করতে থাকে।(আধুনিক
প্রকাশনী-
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৭. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলা স্বামীর অনুমতি ব্যতীত অন্য কাউকে স্বামীগৃহে প্রবেশ করতে দিবে
না।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৫
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, যখন স্বামী উপস্থিত থাকবে, তখন স্বামীর অনুমতি ব্যতীত মহিলার জন্য
সওম পালন বৈধ নয় এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতীত অন্য কাউকে তার গৃহে প্রবেশ করতে দেবে
না। যদি কোন স্ত্রী স্বামীর নির্দেশ ব্যতীত তার সম্পদ থেকে খরচ করে, তাহলে স্বামী তার
অর্ধেক সওয়াব পাবে। [২০৬৬]
হাদীসটি সিয়াম অধ্যায়ে আবূয্যানাদ মূসা
থেকে, তিনি নিজ পিতা থেকে এবং তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৮. অধ্যায়ঃ
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৬
উসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম, যারা জান্নাতে প্রবেশ করেছে তাদের
অধিকাংশই গরীব-মিসকীন; অথচ ধনবানগণ আটকা পড়ে আছে। অন্যদিকে জাহান্নামীদের জাহান্নামে
নিক্ষেপ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি জাহান্নামের প্রবেশ দ্বারে দাঁড়ালাম এবং দেখতে
পেলাম যে, অধিকাংশই নারী। [৬৫৪৭; মুসলিম ২৬/হাঃ ২৭৩৬, আহমাদ ২১৮৮৪] (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৮৯. অধ্যায়ঃ
‘আল-আশীর অর্থাৎ স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ
হওয়া। ‘আল-আশীর বলতে সাথী-সঙ্গী বা বন্ধুকে
বোঝায়। এ শব্দ মু’আশারা থেকে গৃহীত।
এ প্রসঙ্গে আবূ সা’ঈদ (রাঃ) রসূলূল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করেন
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৭
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) - এর জীবদ্দশায় একদিন সূর্য গ্রহণ আরম্ভ হলো। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাতুল খুসুফ বা সূর্যগ্রহণের সালাত পড়লেন এবং লোকেরাও তাঁর
সঙ্গে অংশগ্রহণ করল। তিনি এত দীর্ঘক্ষণ কিয়াম করলেন, যাতে সুরা বাকারাহ্র পরিমাণ কুরআন
পাঠ করা যায়। এরপর তিনি দীর্ঘক্ষণ রুকূ করলেন এবং মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকলেন; এটা
প্রথম কিয়ামের চেয়ে কম সময়ের ছিল। তারপর কুরআন তিলাওয়াত করলেন, পুনরায় দীর্ঘক্ষণ
রুকু করলেন। কিন্তু এবারের রুকূর পরিমাণ পূর্বের চেয়ে সংক্ষিপ্ত ছিল। এরপর তিনি দাঁড়ালেন
এবং সাজদায় গেলেন। এরপর তিনি কিয়াম করলেন, কিন্তু এবারের সময় ছিল পূর্বের কিয়ামের
চেয়ে স্বল্পস্থায়ী। এরপর পুনরায় তিনি রুকুতে গেলেন, কিন্তু এবারের রুকূর সময় পূর্ববর্তী
রুকূর সময়ের চেয়ে কম ছিল। এরপর পুনরায় তিনি দাঁড়ালেন। কিন্তু এবারের দাঁড়াবার
সময় ছিল পূর্বের চেয়েও কম। এরপরে রুকূতে গেলেন, এবারের রুকূর সময় পূর্ববর্তী রুকূর
চেয়ে কম ছিল। তারপর সাজদাহয় গেলেন এবং সলাত শেষ করলেন। ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ শেষ হয়ে
গেছে। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, চন্দ্র এবং সূর্য এ দু’টি
আল্লাহ্র নিদর্শনের অন্যতম। কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে এদের গ্রহণ হয় না। তাই তোমরা
যখন প্রথম গ্রহণ দেখতে পাও, তখন আল্লাহ্কে স্মরণ কর। এরপর তাঁরা বলল, হে আল্লাহ্র রসূল!
আমরা আপনাকে দেখতে পেলাম যে, আপনি কিছু নেয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছেন, এরপর আবার আপনাকে
দেখতে পেলাম যে, আপনি পিছনের দিকে সরে এলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, আমি জান্নাত দেখতে পেলাম অথবা আমাকে জান্নাত দেখানো হয়েছে এবং আমি সেখান থেকে
আঙ্গুরের থোকা ছিঁড়ে আনার জন্য হাত বাড়ালাম এবং তা যদি ধরতে পারতাম, তবে তোমরা তা
থেকে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত খেতে পারতে। এরপর আমি জাহান্নামের আগুন দেখতে পেলাম।
আমি এর পূর্বে কখনও এত ভয়াবহ দৃশ্য দেখিনি এবং আমি আরও দেখতে পেলাম যে, তার অধিকাংশ
অধিবাসীই নারী। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! এর কারণ কী? তিনি বললেন, এটা
তাদের অকৃতজ্ঞতার ফল। লোকেরা বলল, তারা কি আল্লাহ্ তা’আলার সঙ্গে নাফরমানী করে? তিনি
বললেন, তারা তাদের স্বামীদের প্রতি অকৃতজ্ঞ এবং তাদের প্রতি যে অনুগ্রহ দেখানো হয়,
তার জন্য তাদের শোকর নেই। তোমরা যদি সারা জীবন তাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর; কিন্তু
তারা যদি কখনও তোমার দ্বারা কষ্টদায়ক কোন ব্যবহার দেখতে পায়, তখন বলে বসে, আমি তোমার
থেকে জীবনে কখনও ভাল ব্যবহার পেলাম না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৮
‘ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, আমি জান্নাতের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। দেখলাম, অধিকাংশ বাসিন্দাই হচ্ছে
গরীব এবং জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখি তার অধিকাংশ অধিবাসী হচ্ছে নারী। আইউব এবং
সাল্ম বিন যরীর উক্ত হাদীসের সমর্থন ব্যক্ত করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৬, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯০. অধ্যয়ঃ
তোমার স্ত্রীর তোমার ওপর অধিকার আছে।
আবূ হুযাইফাহ (রাঃ) এ প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫১৯৯
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র ইব্নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, হে ‘আবদুল্লাহ্! আমাকে কি এ খবর প্রদান করা হয়নি যে, তুমি
রাতভর ‘ইবাদতে দাঁড়িয়ে থাক এবং দিনভর সিয়াম পালন কর? আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র
রসূল! তিনি বললেন, তুমি এরূপ করো না, বরং সিয়ামও পালন কর, ইফতারও কর, রাত জেগে ‘ইবাদত
কর এবং নিদ্রাও যাও। তোমার শরীরেরও তোমার ওপর হক আছে; তোমার চোখেরও তোমার উপর হক আছে
এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার ওপর হক আছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯১. অধ্যয়ঃ
স্ত্রী স্বামীগৃহের রক্ষক।
PMMRC হাদিস নং-২৬৩৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০০
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকেই এক একজন রক্ষক এবং তোমারা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের ব্যাপারে
জিজ্ঞাসিত হবে। আমীর রক্ষক, একজন ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের রক্ষক, একজন নারী তার
স্বামীর গৃহের ও সন্তানদের রক্ষক। এ ব্যাপারে তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক, আর তোমাদের প্রত্যেককেই
নিজ নিজ অধীনস্থ লোকদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৮,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯২. অধ্যায়ঃ
পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এ কারণে
যে, আল্লাহ তাদের এককে অন্যের উপর মর্যাদা প্রদান করেছেন......... নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোচ্চ,
সর্বশ্রেষ্ঠ। (সূরাহ আন্-নিসা ৪/৩৪)
PMMRC হাদিস নং-২৬৪০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করলেন যে, এক মাসের মধ্যে তিনি স্ত্রীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ
করবেন না। তিনি নিজস্ব একটি উঁচু কামরায় অবস্থান করছিলেন। ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হলে
তিনি সেখান থেকে নিচে নেমে এলেন। তাঁকে বলা হলো, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি শপথ করেছেন
যে, এক মাসের মধ্যে কোন স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন না। তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও
হয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৩. অধ্যয়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর আপন স্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা
থাকার সিদ্ধান্ত এবং তাদের কক্ষের বাইরে অন্য কক্ষে অবস্থানের ঘটনা।
মু’আবিয়াহ ইবনু হাইদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমার স্ত্রী থেকে স্বতন্ত্র শয্যা গ্রহণ
করলে তা একই ঘরে হওয়া উচিৎ। প্রথম হাদীসটি অধিকতর সহীহ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৪১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০২
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) শপথ গ্রহণ করলেন যে, এক মাসের মধ্যে তাঁর কতিপয় স্ত্রীর নিকট তিনি গমন
করবেন না। কিন্তু যখন ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হল তখন তিনি সকালে কিংবা বিকালে তাঁদের
কাছে গেলেন। কোন একজন তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি শপথ করেছেন এক মাসের মধ্যে
কোন স্ত্রীর কাছে যাবেন না। তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়। [১৯১০; মুসলিম ১৩/৪,
হাঃ ১০৮৫, আহমাদ ২৬৭৪৫](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২০,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৪২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৩
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একদিন প্রত্যুষে দেখতে
পেলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীগণ কাঁদছেন এবং তাঁদের প্রত্যেকের
সঙ্গে পরিবারের লোকজনও রয়েছে। আমি মসজিদে গেলাম এবং সেখানকার অবস্থা ছিল জনাকীর্ণ।
‘উমার ইব্নু খাত্তাব (রাঃ) সেখানে এলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
- এর উপরস্থিত কক্ষে আরোহণ করলেন এবং সালাম করলেন, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) কোন উত্তর দিলেন না। পুনরায় তিনি সালাম দিলেন; কিন্তু কোনরূপ সাড়া
দিল না। আবার তিনি সালাম দিলেন; কিন্তু কেউ কোনরূপ জবাব দিল না। এরপর খাদিমকে ডাকলেন
এবং তিনি ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি আপনার স্ত্রীগণকে ত্বলাক্ব
দিয়েছেন? তিনি বললেন, না, কিন্তু আমি শপথ করেছি যে, তাদের কাছে এক মাস পর্যন্ত যাব
না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঊনত্রিশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাঁর
স্ত্রীগণের কাছে গমণ করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৪. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং
আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ (প্রয়োজনে) “তাদেরকে মৃদু প্রহার কর।” (সূরাহ আন-নিসাঃ ৪/৩৪)
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৪
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যাম’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মত প্রহার করো না। কেননা,
দিনের শেষে তার সঙ্গে তো মিলিত হবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৫. অধ্যায়ঃ
অবৈধ কাজে স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য করবে না।
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৫
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক আনসারী মহিলা তার মেয়েকে
বিয়ে দিলেন। কিন্তু তার মাথার চুলগুলো উঠে যেতে লাগলো। এরপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে এসে এ ঘটনা বর্ণনা করে বলল, তার স্বামী আমাকে বলেছে
আমি যেন আমার মেয়ের মাথায় কৃত্রিম চুল পরিধান করাই। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বললেন, না তা করো না, কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা এ ধরনের মহিলাদের ওপর লা’নত
বর্ষণ করেন, যারা মাথায় কৃত্রিম চুল পরিধান করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৬. অধ্যায়ঃ
এবং যদি কোন নারী স্বীয় স্বামী হতে রূঢ়তা
কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে। (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৮)
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৬
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“এবং যদি কোন নারী স্বীয় স্বামী হতে
রূঢ়তা কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে” এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, এ আয়াত হচ্ছে ঐ মহিলা সম্পর্কে,
যার স্বামী তার স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখতে চায় না; বরং তাকে ত্বলাক্ব দিয়ে অন্য কোন
মহিলাকে বিয়ে করতে চায়। তখন তার স্ত্রী তাকে বলে, আমাকে রাখ এবং ত্বলাক্ব দিও না
বরং অন্য কোন মহিলাকে বিয়ে করে নাও এবং তুমি ইচ্ছে করলে আমাকে খোরপোষ না-ও দিতে পার,
আর আমাকে শয্যাসঙ্গিনী না-ও করতে পার। আল্লাহ্ তা’আলার উক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা যায়
যে, “তবে তারা পরস্পর আপোষ করলে তাদের কোন গুনাহ নেই, বস্তুতঃ আপোষ করাই উত্তম।” (সূরাহ
আন-নিসাঃ ৪/১২৮) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৭. অধ্যায়ঃ
‘আয্ল প্রসঙ্গে
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৭
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা ‘আযল করতাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৮
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘আযল করতাম। সে সময়
কুরআন অবতীর্ণ হচ্ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২০৯
অন্য সূত্র থেকেও জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর যুগে এবং কুরআন অবতীর্ণ হওয়াকালে ‘আযল করতাম।[৫২০৭; মুসলিম
ত্বলাক/২১, হাঃ ১৪৪০, আহমাদ ১৪৩২২](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৪৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১০
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধকালীন সময়ে গানীমাত
হিসাবে কিছু দাসী পেয়েছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে ‘আয্ল করতাম। এরপর আমরা এ সম্পর্কে
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি উত্তরে
বললেনঃ কী! তোমারা কি এমন কাজও কর? একই প্রশ্ন তিনি তিনবার করলেন এবং পরে বললেন, ক্বিয়ামাত
পর্যন্ত যে রূহ পয়দা
৬৭/৯৮. অধ্যায়ঃ
সফরে যেতে ইচ্ছে করলে স্ত্রীদের মধ্যে লটারী করে নেবে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১১
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখনই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) সফরে যাবার ইরাদা করতেন, তখনই স্ত্রীগণের মাঝে লটারী করতেন। এক সফরের
সময় ‘আয়িশা (রাঃ) এবং হাফসাহ (রাঃ) - এর নাম লটারীতে ওঠে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর রীতি ছিল যখন রাত হত তখন ‘আয়িশা (রাঃ) - এর সঙ্গে এক সওয়ারীতে
আরোহণ করতেন এবং তাঁর সাথে কথা বলতে বলতে পথ চলতেন। এক রাতে হাফসাহ (রাঃ) ‘আয়িশা
(রাঃ) - কে বললেন, আজ রাতে তুমি কি আমার উটে আরোহণ করবে এবং আমি তোমার উটে, যাতে করে
আমি তোমাকে এবং তুমি আমাকে এক নতুন অবস্থায় দেখতে পাবে? ‘আয়িশা (রাঃ) উত্তর দিলেন,
হ্যাঁ, আমি রাযী আছি। সে হিসাবে ‘আয়িশা (রাঃ) হাফসাহ (রাঃ) - এর উটে এবং হাফসাহ (রাঃ)
‘আয়িশা (রাঃ) - এর উটে সওয়ার হলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা
(রাঃ)-এর নির্ধারিত উটের কাছে এলেন, যার ওপর হাফসাহ (রাঃ) বসা ছিলেন। তিনি তাকে সালাম
দিলেন এবং তাঁর পার্শ্বে বসে সফর করলেন। পথিমধ্যে এক স্থানে সবাই অবতরণ করলেন। ‘আয়িশা
(রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হলেন। যখন
তাঁরা সকলেই অবতরণ করলেন তখন ‘আয়িশা (রাঃ) নিজ পা দু’টি ‘ইযখির’ নামক ঘাসের মধ্যে
প্রবেশ করিয়ে বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ্! তুমি আমার জন্য কোন সাপ বা বিচ্ছু পাঠিয়ে
দাও, যাতে আমাকে দংশন করে। কেননা, আমি এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - কে কিছু বলতে পারব না। [মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪৫] (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/৯৯. অধ্যায়ঃ
যে স্ত্রী স্বামীকে নিজের পালার দিন সতীনকে দিয়ে দেয় এবং এটা কীভাবে ভাগ
করতে হবে?
PMMRC হাদিস নং-২৬৫১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১২
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সওদা বিনতে যাম‘আহ (রাঃ) তাঁর
পালার রাত ‘আয়িশা (রাঃ) - কে দান করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
‘আয়িশা (রাঃ) - এর জন্য দু’দিন বরাদ্দ করেন- ‘আয়িশা (রাঃ)-’র দিন এবং সওদা (রাঃ)-’র
দিন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ
আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
আল্লাহ্ বলেন, “তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের
মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর... আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী,
মহাকুশলী।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)
৬৭/১০১. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ সাইয়্যেবা স্ত্রী [২০] থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।
[২০] যে স্বামী মারা যাবার পর বা তালাকপ্রাপ্তা হবার
পর পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৩
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সাথে সাত
দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে
তিন দিন যাপন করতে হবে।[৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাঃ ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০](আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০২. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ কুমারী স্ত্রী থাকা অবস্থায় কোন বিধবাকে বিয়ে করে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সুন্নাত হচ্ছে, যদি কেউ বিধবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী বিয়ে
করে তবে সে যেন তার সঙ্গে সাত দিন অতিবাহিত করে এবং এরপর পালা অনুসারে এবং কেউ যদি
কোন বিধবাকে বিয়ে করে এবং তার ঘরে পূর্ব থেকেই কুমারী স্ত্রী থাকে তবে সে যেন তার
সঙ্গে তিন দিন কাটায় এবং তারপর পালাক্রমে। আবূ কিলাবাহ (রহঃ) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে
বলতে পারতাম যে, আনাস (রাঃ) এ হাদীসে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত
পৌঁছিয়েছেন। ‘আবদুর রাযযাক (রাহ.) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে বলতে পারতাম যে, খালেদ হাদীস
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি একই গোসলে একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৫
ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) বর্ণনা
করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই রাত্রে সকল স্ত্রীর নিকট গমন
করেছেন। ঐ সময় তাঁর ন’জন স্ত্রী ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৪. অধ্যায়ঃ
দিনের বেলা স্ত্রীদের নিকট গমন করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৬
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সলাত শেষ করতেন, তখন স্বীয় স্ত্রীদের মধ্য থেকে যে কোন একজনের
নিকট গমন করতেন। একদিন তিনি স্ত্রী হাফসাহ (রাঃ) - এর কাছে গেলেন এবং সাধারণতঃ যে সময়
কাটান তার চেয়ে বেশি সময় কাটালেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/ ১০৫. অধ্যায়ঃ
কেউ যদি অসুস্থ হয়ে স্ত্রীদের অনুমতি নিয়ে এক স্ত্রীর কাছে সেবা-শুশ্রূষার
জন্য থাকে যদি তাকে সবাই অনুমতি দেয়।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৭
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তাঁর যে অসুখে ইন্তিকাল করেছিলেন, সেই অসুখের সময় জিজ্ঞেস করতেন, আগামীকাল
আমার কার কাছে থাকার পালা? আগামীকার আমার কার কাছে থাকার পালা? তিনি ‘আয়িশা (রাঃ)
- এর পালার জন্য এরূপ বলতেন। সুতরাং উম্মাহাতুল মু’মিনীন তাঁকে যার ঘরে ইচ্ছে থাকার
অনুমতি দিলেন এবং তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - এর ঘরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘আয়িশা
(রাঃ) বলেন, আমার পালার দিনই আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন এ অবস্থায় যে, আমার
বুক ও গলার মাঝখানে তাঁর বুক ও মাথা ছিল এবং তাঁর মুখের লালা আমার মুখের লালার সঙ্গে
মিশেছিল। [২১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭)
[২১] ‘আয়িশা (রাঃ) কাঁচা মিসওয়াক চিবিয়ে
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে দিলেন এবং তিনি নিজ দাঁত দ্বারা
চিবালেন, এভাবে একজনের মুখের লালা অন্যের মুখের লালার সঙ্গে মিশ্রিত হল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৬. অধ্যায়ঃ
এক স্ত্রীকে অন্য স্ত্রীর চেয়ে অধিক ভালবাসা
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৮
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) ‘উমার (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
‘উমার (রাঃ) হাফসাহ (রাঃ) - এর কাছে প্রবেশ
করলেন এবং বললেন, হে আমার কন্যা! তার আচরণ-ব্যবহার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ো না, কারণ
সে তার সৌন্দর্য ও তার প্রতি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর
ভালবাসার কারণে গর্ব অনুভর করে। এ কথার দ্বারা তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) - কে বুঝিয়েছিলেন।
তিনি আরো বললেন, আমি এ ঘটনা আল্লাহ্র রসূলের কাছে বললাম। তিনি এ কথা শুনে মুচকি হাসলেন।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৭. অধ্যায়ঃ
কোন নারীর কৃত্রিম সাজ-সজ্জা করা এবং সতীনের মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করা
নিষেধ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২১৯
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, কোন এক মহিলা বলল, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমার সতীন আছে। এখন তাকে রাগানোর জন্য যদি আমার স্বামী আমাকে যা দেয়নি তা বাড়িয়ে
বলি, তাকে কি কোন দোষ আছে? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃযা তোমাকে
দেয়া হয়নি, তা দেয়া হয়েছে বলা ঐরূপ প্রতারকের কাজ, যে প্রতারণার জন্য দুপ্রস্থ
মিথ্যার পোশাক পরিধান করল।[মুসলিম ৩৭/৩৫, হাঃ ২১৩০, আহমাদ ২৬৯৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৮. অধ্যায়ঃ
আত্মমর্যাদাবোধ।
সা‘দ ইব্নু ‘উবাদাহ (রাঃ) বললেন, আমি
যদি অন্য কোন পুরুষকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে দেখতে পাই; তাহলে আমি তাকে তরবারির ধারালো
দিক দিয়ে আঘাত করব অর্থাৎ হত্যা করব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
সাহাবিগণকে বললেন, তোমরা কি সা’দের আত্মমর্যাদাবোধের কারণে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ? (আল্লাহ্র
কসম!) আমার আত্মমর্যাদাবোধ তার চেয়েও অনেক অধিক এবং আল্লাহ্র আত্মমর্যাদাবোধ আমার চেয়েও
অনেক অধিক।
PMMRC হাদিস নং-২৬৫৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২০
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, আল্লাহ্র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাশীল কেউ নয় এবং এ কারণেই তিনি সকল অশ্লীল কাজ
হারাম করেছেন আর (আল্লাহ্র) প্রশংসার চেয়ে আল্লাহ্র অধিক প্রিয় কিছু নেই।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২১
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে উম্মতে মুহাম্মদী! আল্লাহ্র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ
আর কারো নেই। তিনি তাঁর কোন বান্দা নর হোক কি নারী হোক তার ব্যভিচার তিনি দেখতে চান
না। হে উম্মতে মুহাম্মদী! যা আমি জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে হাসতে খুব কম এবং
কাঁদতে অধিক অধিক।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২২
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি: আল্লাহ্র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ আর কারো নেই।(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৩
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলার আত্মমর্যাদাবোধ আছে এবং আল্লাহ্র আত্মমর্যাদাবোধ
এই যে, যেন কোন মু‘মিন বান্দা হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে না পড়ে।[মুসলিম ৪৯/৬, হাঃ ২৭৬২,
আহমাদ ৯০৩৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৪
আসমা বিন্তে আবূ বক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন যুবায়র (রাঃ) আমাকে বিয়ে
করলেন, তখন তার কাছে কোন ধন-সম্পদ ছিল না, এমন কি কোন স্থাবর জমি-জমা, দাস-দাসীও ছিল
না; শুধুমাত্র কুয়ো থেকে পানি উত্তেলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাঁর উট
ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতাম,
আটা পিষতাম, কিন্তু ভালো রুটি তৈরি করতে পারতাম না। তাই আনসারী প্রতিবেশী মহিলারা আমার
রুটি তৈরিতে সাহায্য করত। আর তারা ছিল খুবই উত্তম নারী। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) যুবায়র (রাঃ) - কে একখন্ড জমি দিয়েছিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে
খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ঐ জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দু‘মাইল। একদিন আমি মাথায়
করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিয়ে আসছিলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর সাক্ষাৎ হল, তখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর
সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডাকলেন এবং
আমাকে তাঁর উটের পিঠে বসার জন্য তাঁর উটকে আখ্! আখ্! বললেন, যাতে উটটি বসে এবং আমি
তাঁর পিঠে আরোহণ করতে পারি। আমি পরপুরুষের সঙ্গে একত্রে যাওয়ার ব্যাপারে লজ্জাবোধ
করতে লাগলাম এবং যুবায়র (রাঃ) - এর আত্মসম্মানবোধের কথা আমার মনে পড়ল। কেননা, সে
ছিল খুব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বুঝতে পারলেন, আমি খুব লজ্জাবোধ করছি। সুতরাং তিনি এগিয়ে চললেন। আমি যুবায়ার (রাঃ)
- এর কাছে পৌছালাম এবং বললাম, আমি খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে আমার দেখা হয় এবং তাঁর সঙ্গে
কিছু সংখ্যক সহাবী ছিলেন। তিনি তাঁর উটকে হাঁটু গেড়ে বসালেন, যেন আমি তাতে সওয়ার
হতে পারি। কিন্তু আমি তোমার আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে লজ্জা অনুভব করলাম। এ কথা
শুনে যুবায়ের (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় বহন করা তাঁর
সঙ্গে উট চড়ার চেয়ে আমার কাছে অধিক লজ্জাজনক। এরপর আবূ বক্র সিদ্দীক (রাঃ) ঘোড়ার
দেখাশুনার জন্য আমার সাহায্যের নিমিত্ত একজন খাদিম পাঠিয়ে দিলেন। এরপরই আমি যেন মুক্ত
হলাম। [৩১৫১; মুসলিম ৩৯/১৪, হাঃ ২১৮২, আহমাদ ২৭০০৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪১, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৫
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একজন স্ত্রীর কাছে ছিলেন। ঐ সময় উম্মুহাতুল মু’মিনীনের
আর একজন একটি পাত্রে কিছু খাদ্য পাঠালেন। যে স্ত্রীর ঘরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) অবস্থান করছিলেন সে স্ত্রী খাদিমের হাতে আঘাত করলেন। ফলে খাদ্যের পাত্রটি
পড়ে ভেঙ্গে গেল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রের ভাঙ্গা টুকরোগুলো
কুড়িয়ে একত্রিত করলেন, তারপর খাদ্যগুলো কুড়িয়ে তাতে রাখলেন এবং বললেন, তোমাদের
আম্মাজীর আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লেগেছে। তারপর তিনি খাদিমকে অপেক্ষা করতে বললেন এবং
যে স্ত্রীর কাছে ছিলেন তাঁর নিকট হতে একটি পাত্র নিয়ে যার পাত্র ভেঙ্গেছিল, তার কাছে
পাঠালেন এবং ভাঙ্গা পাত্রটি যে ভেঙ্গেছিল তার ঘরেই রাখলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪২,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৬
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করে একটি প্রাসাদ দেখতে পেলাম এবং জিজ্ঞেস
করলাম, এটি কার প্রাসাদ? তাঁরা (ফেরেশতাগণ) বললেন, এ প্রাসাদটি ‘উমার ইব্নু খাত্তাব
(রাঃ) - এর। আমি তার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলাম; কিন্তু [তিনি সেখান উপস্থিত ‘উমার
(রাঃ) - এর উদ্দেশে বললেন] তোমার আত্মমর্যাদাবোধ আমাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিল। এ
কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক!
আপানার কাছেও আমি (‘উমার) আত্মমর্যাদাবোধ প্রকাশ করব?(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৩, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বসা ছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেন, আমি একদিন ঘুমন্ত অবস্থায় জান্নাতে একটি প্রাসাদের পার্শ্বে একজন
মহিলাকে ওযু করতে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই প্রাসাদটি কার? আমাকে বলা হলো, এটা
‘উমার (রাঃ) - এর। তখন আমি ‘উমারের আত্মমর্যাদার কথা স্মরন করে পিছন ফিরে চলে এলাম।
এ কথা শুনে উমার (রাঃ) সেই মজলিসেই কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার
কাছেও কি আত্মসম্মানবোধ প্রকাশ করব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১০৯. অধ্যায়ঃ
মহিলাদের বিরোধিতা এবং তাদের ক্রোধ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৮
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, “আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশী থাক এবং কখন
রাগান্বিত হও।” আমি বললাম, কি করে আপনি তা বুঝতে সক্ষম হন? তিনি বললেন, তুমি প্রসন্ন
থাকলে বল, না! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর রব-এর কসম! কিন্তু
তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বল, না! ইব্রাহীম (আঃ) - এর রব-এর কসম! শুনে আমি বললাম,
আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহ্র কসম, হে আল্লাহ্র রসূল! সে ক্ষেত্রে শুধু আপনার নাম উচ্চারণ
করা থেকেই বিরত থাকি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২২৯
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীগণের মধ্য থেকে খাদীজাহ (রাঃ) - এর চেয়ে অন্য কোন
স্ত্রীর প্রতি অধিক হিংসা করিনি। কারণ, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
প্রায় তাঁর কথা স্মরণ করতেন এবং তাঁর প্রশংসা করতেন। তাছাড়াও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে ওয়াহীর মাধ্যমে তাঁকে [খাদীজাহ (রাঃ)] - কে জান্নাতের
মধ্যে একটি মতির প্রাসাদের সুসংবাদ দেবার জন্য জ্ঞাত করানো হয়েছিল।[২৬৪৪, ৩৮১৬; মুসলিম
৪৪/১৩, হাঃ ২৪৩৯, আহমাদ ২৪৩৭২](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১০. অধ্যায়ঃ
কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৬৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩০
মিসওয়ার ইব্নু মাখরামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইব্নু মুগীরাহ,
‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিবের কাছে তাদের মেয়ে বিয়ে দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে;
কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না
‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব আমার কন্যাকে ত্বলাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে বিয়ে
করতে পারে। কেননা, ফাতিমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে; আমিও তা ঘৃণা
করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১১. অধ্যায়ঃ
পুরুষের সংখ্যা কম হবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
আবূ মূসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, (এমন একটা সময় আসবে যখন) একজন পুরষকে দেখতে পাবে
তার পেছনে চল্লিশজন নারী অনুসরন করছে আশ্রয়ের জন্য। কেননা, তখন পুরুষের সংখ্যা অনেক
কমে যাবে আর নারীর সংখ্যা বর্ধিত হবে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩১
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি তোমাদের কাছে একটি হাদীস
বর্ণনা করব, যা আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে শুনেছি
এবং আমি ব্যতীত আর কেউ সে হাদীস বলতে পারবে না। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - কে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামতের আলামতের মধে রয়েছে ইল্ম ওঠে যাবে, অজ্ঞতা
বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ্য পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে
যাবে এবং নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে যে, একজন পুরুষকে পঞ্চাশজন নারীর দেখাশোনা করতে
হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১২. অধ্যায়ঃ
‘মাহ্রাম’ অর্থাৎ যার সঙ্গে বিয়ে হারাম
সে ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে কোন নারী নির্জনে দেখা করবে না এবং স্বামীর অসাক্ষাতে
কোন নারীর কাছে কোন পুরুষের গমন (হারাম)।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩২
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার
জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! দেবরের ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি উত্তর দিলেন দেবর হচ্ছে
মৃত্যুতুল্য। [মুসলিম ৩৯/৮, হাঃ ২১৭২, আহমাদ ১৭৩৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮৫২)
[২২] ---------- শব্দের অর্থের ব্যাপারে
ইমাম তিরমিযী বলেছেন- ‘হামো’ মানে স্বামীর ভাই –স্বামীর ছোট হোক বা বড়। ইমাম লাইস
বলেছেন- ‘হামো’ হচ্ছে স্বামীর ভাই, আর তার মত স্বামীর অপরাপর নিকটবর্তী লোকেরা যেমন
চাচাত, মামাত, ফুফাত ভাই ইত্যাদি। বরং এর সঠিক অর্থে বুঝা যায় – স্বামীর ভাই, স্বামীর
ভাই পো, স্বামীর চাচা, চাচাতো ভাই, ভাগ্নে এবং এদেরই মত অন্যসব পুরুষ যাদের সাথে এ
মেয়েলোকের বিয়ে হতে পারে- যদি না সে বিবাহিতা হয়। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এদের মৃত্যু বা মৃত্যুদূত বললেন কেন? এর কারণস্বরূপ বলা হয়েছে –
সাধারন প্রচলিত নিয়ম ও লোকদের অভ্যাসই
হচ্ছে যে, এসব নিকটাত্মীয়ের ব্যাপারে উপেক্ষা প্রদর্শন করা হয়। (এবং এদের পারস্পরিক
মেলামেশায় কোন দোষ মনে করা হয় না) ফলে ভাই ভাইর বউ - এর সাথে একাকীত্বে মিলিত হয়।
এভাবে একাকীত্বে মিলিত হওয়াকে তোমরা ভয় কর যেমনভাবে তোমরা মৃত্যুকে ভয় কর। আল্লামা
কাযী ইয়ায বলেছেন – স্বামীর এসব নিকটাত্মীয়ের সাথে স্ত্রীর (কিংবা স্ত্রীর এসব নিকটাত্মীয়ের
সঙ্গে স্বামীর) গোপন মেলামেশা নৈতিক ধ্বংস টেনে আনে। ইমাম কুরতুবী বলেছেন- এ ধরনের
লোকদের সাথে গোপন মিলন নীতি ও ধর্মের মৃত্যু ঘটায় কিংবা স্বামীর আত্মসম্মানবোধ তীব্র
হওয়ার পরিণামে তাকে তালাক দেয় বলে তার দাম্পত্য জীবনের মৃত্যু ঘটে। কিংবা এদের কারো
সাথে যদি জ্বেনায় লিপ্ত হয়, তাহলে তাকে সঙ্গেসার করার দন্ড দেয়া হয়, ফলে তার জৈবিক
মৃত্যুও ঘটে। আল্লামা তাবারী বলেছেন, যে কোন অপছন্দনীয় ব্যাপারকে আরবরা মৃত্যু বলে
আখ্যায়িত করত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৭২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৩
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাহ্রামের বিনা উপস্থিতিতে কোন পুরুষ কোন নারীর সঙ্গে
সাক্ষাৎ করবে না। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার স্ত্রী
হাজ্জ করার জন্য বেরিয়ে গেছে এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহনের জন্য আমার নাম তালিকাভুক্ত
করা হয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ফিরে যাও এবং তোমার স্ত্রীর
সঙ্গে হাজ্জ সম্পন্ন কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৩. অধ্যায়ঃ
লোকজন না থাকলে স্ত্রীলোকের সঙ্গে পুরুষের কথা বলা জায়িজ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৪
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক আনসারী মহিলা নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট এলে, তিনি তাকে একান্তে বললেন, আল্লাহ্র
কসম! তোমরা (আনসাররা) আমার কাছে সকল লোকের চেয়ে অধিক প্রিয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫১,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৪. অধ্যায়ঃ
নারীর বেশধারী পুরুষের নিকট নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৫
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) তার কাছে থাকাকালে সেখানে একজন মেয়েলী পুরুষ ছিল। ঐ মেয়েলী পুরুষটি
উম্মু সালামার ভাই ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমাইয়াকে বলল, যদি আগামীকাল আপনাদেরকে আল্লাহ্
তায়েফ বিজয় দান করেন, তবে আমি আপনাকে গায়লানের মেয়েকে গ্রহণ করার পরামর্শ দিচ্ছি।
কেননা, সে এত মেদবহুল যে, সে সম্মুখ দিকে আগমন করলে তার পেটে চার ভাঁজ পড়ে আর পিছু
ফিরে যাবার সময় আট ভাঁজ পড়ে। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেন, সে যেন কখনো তোমাদের কাছে আর না আসে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৫. অধ্যায়ঃ
সন্দেহজনক না হলে হাব্শী বা অনুরূপ লোকদের প্রতি মহিলারা দৃষ্টি দিতে পারবে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৬
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদিন হাবশীদের খেলা দেখছিলাম।
তারা মসজিদের আঙ্গিনায় খেলা খেলছিল। আমি খেলা দেখে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখছিলাম।
তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর দিয়ে আমাকে আড়াল করে রেখেছিলেন।
তোমরা অনুমান কর যে, অল্পবয়স্কা মেয়েরা খেলাধূলা দেখতে কী পরিমান আগ্রহী!(আধুনিক
প্রকাশনী- ৪৮৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৬. অধ্যায়ঃ
প্রয়োজন দেখা দিলে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাতায়াত।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৭
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে উম্মুহাতুল মু’মিনীন
সওদা বিন্ত জাম’আ (রাঃ) কোন কারণে বাইরে গেলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁকে দেখে চিনে ফেললেন।
তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! হে সাওদা! তুমি নিজেকে আমাদের নিকট হতে লুকাতে পারনি। এতে
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট ফিরে গেলেন এবং উক্ত ঘটনা
তাঁর কাছে বললেন। তিনি তখন আমার ঘরে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন এবং তাঁর হাতে গোশ্তওয়ালা
একখানা হাড় ছিল। এমন তাঁর কাছে ওয়াহী অবতীর্ণ হল। ওয়াহী শেষ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্ তা’আলা প্রয়োজনে তোমাদেরেকে বাইরে যাবার অনুমতি
দিয়েছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৭. অধ্যায়ঃ
মসজিদে অথবা অন্য কোথাও যাবার জন্য মহিলাদের স্বামীর অনুমতি গ্রহণ।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৮
সালিমের পিতা [ইব্নু ‘উমার (রাঃ)] থেকে
বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো স্ত্রী মসজিদে যাবার অনুমতি চাইলে তাকে নিষেধ করো
না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৮. অধ্যায়ঃ
দুধ সম্পর্কীয় মহিলাদের নিকট গমন করা এবং তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করার বৈধতা
সম্পর্কে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৯
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার দুধ সম্পর্কের চাচা এলেন
এবং আমার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন; কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) - এর কাছে অনুমতি নেয়া ব্যতিত তাকে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম।
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসার পর তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি
বললেন, তিনি হচ্ছে তোমার চাচা। কাজেই তাকে ভিতরে আসার অনুমতি দাও। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র
রসূল! আমাকে মহিলা দুধ পান করিয়েছেন, কোন পুরুষ আমাকে দুধ পান করায়নি। রসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তোমার চাচা, কাজেই তাঁকে তোমার কাছে
আসার অনুমতি দাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এটা – পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হবার পরের ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, জন্মসূত্রে যারা হারাম, দুধ সম্পর্কেও তারা হারাম। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১১৯. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলা তার দেখা আরেক মহিলার দেহের বর্ণনা নিজের স্বামীর কাছে দিবে না।
PMMRC হাদিস নং-২৬৭৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪০
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর
নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) চাক্ষুস দেখতে পাচ্ছে। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৮০
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪১
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর
নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) দেখতে পাচ্ছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৮,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২০. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, নিশ্চয়ই আজ রাতে সে তার সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত
হবে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৮১
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪২
আবূ হুরায়রার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দাউদ (আঃ) - এর পুত্র সুলায়মান
(আঃ) একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আজ রাতে আমি আমার একশ’ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব এবং তাদের
প্রত্যেকেই একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করবে, যারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবে। এ কথা
শুনে একজন ফেরেশতা বলেছিলেন, আপনি ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলুন; কিন্তু তিনি এ কথা ভুলক্রমে
বলেননি। এরপর তিনি তার স্ত্রীগণের সঙ্গে মিলিত হলেন; কিন্তু তাদের কেউ কোন সন্তান প্রসব
করল না। কেবল এক স্ত্রী একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন, যদি সুলায়মান (আঃ) ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলেতেন, তাহলে তাঁর শপথ ভঙ্গ
হত না। আর তাতেই ভালোভাবে তার আশা মিটত।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২১. অধ্যায়ঃ
দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর রাতে পরিবারের নিকট ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়, যাতে
করে কোন কিছু তাকে আপন পরিবার সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে, অথবা তাদের অপ্রীতিকর কিছু
চোখে পড়ে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৮২
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৩
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সফর থেকে এসে রাতে ঘরে প্রবেশ করা অপছন্দ করতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬০,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৩
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৪
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে রাতে আকস্মিকভাবে তার
ঘরে যেন প্রবেশ না করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২২. অধ্যায়ঃ
সন্তান কামনা করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৪
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৫
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক যুদ্ধে আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা ফিরে আসছিলাম, আমি আমার ধীর গতিসম্পন্ন
উটকে দ্রুত হাঁকালাম। তখন আমার পিছনে একজন আরোহী এসে মিলিত হলেন। তাকিয়ে দেখলাম যে,
তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, তোমার এ ব্যস্ততা কেন?
আমি বললাম, আমি সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী, না পুর্ব-বিবাহিতা বিয়ে করেছ?
আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা। তিনি বললেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ
করতে, আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। (রাবী) বলেন, আমরা মদীনায় পৌঁছে নিজ নিজ
বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলাম। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা
অপেক্ষা কর - পরে রাতে অর্থাৎ এশা নাগাদ ঘরে যাবে, যাতে নারী তার অবিন্যস্ত চুল আঁচড়ে
নিতে পারে এবং প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে। (রাবী) বলেন, আমাকে
নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বলেছেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ হাদীসে এও
বলেছেন যে, হে জাবির। বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও, বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও। অর্থাৎ সন্তান
কামনা কর। [২৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৫)
[২৩] আল্লাহ্র একজন সচেতন বান্দাহ সর্বক্ষণ সওয়াব
হাসিল করতে থাকে। সলাত, সওম, হাজ্জ ও যাকাতের মাধ্যমেই সে শুধু নেকী হাসিল করে না,
সে তার চলাফেরা, উঠা বসা, খাওয়া দাওয়া, ব্যবসা বাণিজ্য এমনকি দৈনন্দিনের মলমূত্র
ত্যাগের মাধ্যমেও নেকী হাসিল করতে থাকে। স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা, হাসি তামাশা
ও তার মুখে খাবার তুলে দিয়ে একই সাথে সে অপার আনন্দ ও সওয়াব হাসিল করতে থাকে। কেবল
শর্ত হল এসব জায়িয কাজগুলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়তে তাঁরই শেখানো পদ্ধতিতে
করতে হবে। আল্লাহর কথা ভুলে গিয়ে একজন কাফিরের মত কিংবা জন্তু-জানোয়ারের মত এসব কাজ
করলে তাতে কোন সওয়াব পাওয়া যাবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৫
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৬
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন, সফর থেকে রাতে প্রত্যাবর্তন করে গৃহে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না অনুপস্থিত
স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে এবং এলোকেশী স্ত্রী চিরুনি করে নিতে পারে।
(রাবী), বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার কর্তব্য
সন্তান কামনা করা, সন্তান কামনা করা। [৪৪৩]
‘উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ) ওয়াহাব (রহঃ) থেকে
জাবির (রাঃ) - এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ‘সন্তান অন্বেষণ’
শব্দটি উল্লেখ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২৩. অধ্যায়ঃ
অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করবে এবং এলোকেশী নারী (মাথায়)
চিরুনি করে নিবে।
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৬
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৭
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে এক যুদ্ধে ছিলাম। যুদ্ধ শেষে ফেরার পথে আমরা মদীনার
নিকটবর্তী হলাম, আমি আমার ধীর গতি উটকে দ্রুত হাঁকালাম। একটু পরেই এক আরোহী আমার পিছনে
এসে মিলিত হলেন এবং তাঁর লাঠি দ্বারা আমার উটটিকে খোঁচা দিলেন। এতে আমার উটটি সর্বোৎকৃষ্ট
উটের মত চলতে লাগল যেমনভাবে উত্কৃষ্ঠ উটকে তোমরা চলতে দেখ। মুখ ফিরিয়ে দেখলাম যে,
তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি
সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, বিয়ে করেছ? বললাম, জি-হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী, না
পূর্ব-বিবাহিতা? আমি বললাম বরং পূর্ব-বিবাহিতা। তিনি বললেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি
তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করতে আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। রাবী বলেন, এরপর আমরা
মদীনায় পৌঁছে (নিজ নিজ গৃহে) প্রবেশ করতে উদ্যত হলাম, তখন তিনি বললেন, অপেক্ষা কর,
সকলে রাতে অর্থাৎ সন্ধ্যায় প্রবেশ করবে, যাতে এলোকেশী নারী চিরুনি করে নিতে পারে এবং
অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৪, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২৪. অধ্যায়ঃ
“তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর,
পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই - এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন
দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক
ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩১)
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৭
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৮
আবূ হাযিম থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহুদের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর ক্ষতস্থানে কী ঔষধ লাগানো হয়েছিল, এ নিয়ে লোকদের মধ্যে
মতভেদ সৃষ্টি হল। পরে তারা সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদীকে জিজ্ঞেস করল, যিনি মদীনার অবশিষ্ট
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সাহাবীগণের সর্বশেষ ছিলেন। তিনি বললেন,
এ ব্যপারে আমার চেয়ে অধিক অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি অবশিষ্ট নেই। ফাতিমাহ (রাঃ) তাঁর মুখমণ্ডল
হতে রক্ত ধুয়ে দিচ্ছিলেন আর ‘আলী (রাঃ) ঢালে করে পানি আনছিলেন। পরে একটি চাটাই পুড়িয়ে,
তা ক্ষতস্থানে চারপাশে লাগিয়ে দেয়া হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৪৮৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২৫. অধ্যায়ঃ
যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি। (সুরাহ্ আন্-নূর ২৪/৫৮)
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৮
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৪৯
‘আবদুর রহমান ইব্নু আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ
আমি এক ব্যক্তিকে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
- এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি যে, আপনি আযহা বা ফিতরের কোন ঈদে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ’। অবশ্য
তাঁর সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তাঁর সঙ্গে উপস্থিত
হতে পারতাম না। তিনি (আরও) বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন।
তারপর সলাত আদায় করলেন, এরপর খুৎবাহ দিলেন। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) আযান ও ইকামাতের কথা
উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ ও নাসীহাত করলেন ও
তাদেরকে সদাকাহ করার আদেশ দিলেন। (রাবী বলেন,) আমি দেখলাম, তারা তাদের কর্ণ ও কন্ঠের
দিকে হাত প্রসারিত করে (গয়নাগুলো) বিলালের কাছে অর্পণ করছে। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও বিলাল (রাঃ) গৃহে প্রত্যাবর্তন করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৬,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৬৭/১২৬. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তি তার সাথীকে বলা যে, তোমরা কি গত রাতে যৌন সঙ্গম করেছ? এবং ধমক
দেয়া কালে কোন ব্যক্তির নিজ কন্যার কোমরে আঘাত করা।
PMMRC হাদিস নং-২৬৮৯
সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫২৫০
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) আমাকে ভৎর্সনা
করলেন এবং আমার কোমরে তাঁর হাত দ্বারা খোঁচা দিলেন। আমার ঊরুর ওপর রসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর মস্তক থাকার কারণে আমি নড়াচড়া করতে পারিনি। (আধুনিক প্রকাশনী-
৪৮৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সমাপ্ত)
প্রবন্ধের
লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের
Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির
লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ
উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের
আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে
ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে,
আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে
হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে
তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়,
তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস
করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ
ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও
একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি
ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে
বানিয়ে নিল।”
(বুখারী
৩৪৬১, হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল
আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর),
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এর উপর ক্লিক করুনঃ
PLEASE SHARE ON
No comments:
Post a Comment