Search This Blog

Friday, February 14, 2020

কিয়ামতের বড় ছোট আলামতসমূহ


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কিয়ামতের বড় ছোট আলামতসমূহ
কিয়ামতের ১০টি বড় আলামত
কিয়ামত শব্দটি অপরিচিত কোন শব্দ নয়। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া সৃষ্টির পর এর সময়কাল বেধে দিয়েছেন। দুনিয়াতে কখন কী ঘটবে তা আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসূলগণ দ্বারা জানিয়েছেন। কিয়ামত হলো এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা প্রত্যেক নবী-রাসূল তার উম্মতদের জানিয়েছেন। কখন হবে, কীভাবে সংঘটিত হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং কিয়ামত সম্পর্কিত কয়েকটি সূরা নাযিল করেছেন। যেমন- সূরা ক্বিয়ামাহ, সূরা যিলযাল। আল্লাহ তায়ালা এসব সূরার মাধ্যমে কিয়ামত সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। যার ওপর বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুমিনের জন্য জরুরী। অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয়টি মৌলিক বিষয়ের অন্যতম। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ”আর যারা অদৃশ্যের বিষয়াবলীতে পূর্ণ বিশ্বাস রেখে নামায কায়েম করবে…”[১]। অদৃশ্যের প্রতি ঈমান বলতে বুঝায় আল্লাহ পাক ও তাঁর নবী-রাসূল কর্তৃক যত বিষয় বর্ণিত হয়েছে তার ওপর পূর্ণ বিশ্বাস করা, পূর্ণ সত্যায়ন করা।
কিয়ামতের আলামত
কিয়ামত বলতে বুঝায় মহাপ্রলয়। যেসময় পৃথিবীর সমাপ্তি ঘটবে এবং সমস্ত সৃষ্ট-জীব মহান আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হওয়ার প্রস্তুত হবে। আরবি ব্যাকরণে কিয়ামতকে বলা হয় ‘الساعة ’  যার অর্থ মুহূর্ত। অর্থাৎ মুহূর্তের মধ্যে কিয়ামত সংঘটিত হবে। চোখের পলকে সকল কিছুর বিনাশ ঘটবে। পাহাড়-পর্বতসমূহ সবকিছু তুলোর মত ফানা ফানা হয়ে উড়তে থাকবে। একটি বিভেষিকাময় মুহূর্ত সৃষ্টি হবে। গর্ভধারিণী মা তার গর্ভের সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করে ফেলবে ভয়ের কারণে। আসমান-জমিনের মধ্যে যাকিছু আছে সবকিছু উলট-পালট হয়ে যাবে।
হযরত হুযায়ফা রাঃ বলেন: আমরা পরস্পর আলাপ রত অবস্থায় ছিলাম, নবী করীম সাঃ এসে জিজ্ঞাসা করলেন- তোমরা কী প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলে? সবাই বলল- কিয়ামত প্রসঙ্গে। তখন নবী করীম সাঃ এরশাদ করলেন- ”কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা দশটি (বড়) নিদর্শন প্রত্যক্ষ করবেঃ[২]
·         ধোঁয়া (ধূম্র)
·         দাজ্জাল
·         অদ্ভুত প্রাণী
·         পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়
·         মরিয়ম আঃ এর সন্তান ঈসা আঃ এর পৃথিবীতে প্রত্যাগমন
·         ইয়াজুজ-মাজুজের উদ্ভব
·         তিনটি ভূমিধ্বস
·         প্রাচ্যে ভূমি ধ্বস
·         পাশ্চাত্যে ভূমিধ্বস
·         আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস
·         পরিশেষে ইয়েমেন থেকে উত্থিত হাশরের ময়দানে দিকে তাড়নাকারী বিশাল অগ্নি।
অন্য এক বর্ণনায় ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ, কাবা শরীফ ধ্বংস এবং মানুষের অন্তর থেকে কুরআনুল কারীম উঠিয়ে নেয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
দাজ্জালের ফেতনা
উপরের সবগুলো নিদর্শন বড় নিদর্শন যা এখনোও সংঘটিত হয়নি। এর মধ্যে দাজ্জালের ফেতনা সবচেয়ে ভয়ানক। নবী করীম সাঃ বলেন-”আদম আঃ সৃষ্টির পর থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত দাজ্জালের ফেতনা অপেক্ষা বৃহৎ ও সুবিস্তৃত ফেতনা দ্বিতীয়টি হবে না।” এমন কোন নবী নাই যে তার উম্মতকে দাজ্জাল ফেতনা সম্পর্কে সতর্ক করে নাই।
আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাঃ দাজ্জাল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণনা করেছেন। ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- একদা নবী করীম সাঃ মানুষের মাঝে ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন। প্রথমে আল্লাহর যথাযথ প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জালের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বললেন- “ আমার পূর্বে যত নবী পৃথিবীতে এসেছেন, সবাই এ সম্পর্কে সতর্ক করে গেছেন, আমিও তোমাদের সতর্ক করছি। তবে দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের এমন তথ্য দিচ্ছি, যা ইতিপূর্বে কোন নবী দেননি। মনে রেখো! দাজ্জাল কানা হবে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা কানা নন।” [৩]
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী দাজ্জালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সে কানা হবে। অর্থাৎ সে এক চোখ দিয়ে দেখবে এবং অন্য চোখ কানা হবে। তার কপাল প্রশস্ত হবে। দুচোখের মাঝামাঝিতে  ر  ك ف (কাফের) লেখা থাকবে। যা প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির স্পষ্ট দেখতে পারবে।
দাজ্জাল আসার পূর্বে মুসলমানদের সাথে খ্রিস্টানদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হবে। এর মধ্যে একটি যুদ্ধ বিশাল আকার ধারণ করবে। আল্লাহ তায়ালা ঐ যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় দান করবেন। মুসলমানরা কনস্টান্টিনোপল বিজয় করবেন। তখন দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। নবী করীম সাঃ বলেন- “শীঘ্রই তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের বিজয়ী দান করবেন। অতঃপর পারস্যের (বর্তমান ইরান) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে বিজয়ী দান করবেন। অতঃপর রোমানদের (বাইযাইন্টাইন বাহিনীর) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে বিজয়ী দান করবেন। অবশেষে দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, সেখানেও আল্লাহ তায়ালা তোমাদের বিজয়ী দান করবেন।” [২]
আরেক হাদিসে আল্লাহর রাসুল সাঃ বলেন,- “জেরুজালেমে জনবসতি বৃদ্ধি মানে মদিনার বিনাশ। মদিনার বিনাশ মানে বিশ্বযুদ্ধের সূচনা। বিশ্বযুদ্ধের সূচনা মানে কনস্টান্টিনোপল বিজয়। কনস্টান্টিনোপল বিজয় মানে দাজ্জালের আবির্ভাব।”
দাজ্জালকে আল্লাহ তায়ালা এখনো কোন এক স্থানে গোপন করে রেখেছেন। অচিরেই তাকে মুক্ত করা হবে। সে বের হয়ে চল্লিশ দিন পৃথিবীতে অবস্থান করবে। তার এই চল্লিশ দিনের প্রথম দিন হবে এক বৎসরের ন্যায়, দ্বিতীয় দিন এক মাস, তৃতীয় দিন এক সপ্তাহের ন্যায় হবে। চল্লিশ দিনে সারাবিশ্ব ভ্রমণ করবে শুধু মক্কা মদিনায় ব্যতীত। মক্কা মদিনার প্রতিটি সড়কে ফেরেশতারা প্রহরী হিসেবে অবস্থান করবে। বাতাসের ন্যায় চলার গতি হবে। মুহূর্তের মধ্যে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাবে। নবী করীম সাঃ বলেন- “মক্কা-মদিনা ব্যতীত পৃথিবীর এমন কোন শহর নেইও যেখানে দাজ্জাল গিয়ে পৌছবে না।” [৪]
দাজ্জালকে আল্লাহ তায়ালা এক অন্যরকম অভূতপূর্ব ক্ষমতা দান করবেন। সে মৃতকে জীবিত করতে পারবে আবার জীবিতকে মৃত করতে পারবে। দাজ্জালের সাথে স্বরচিত জান্নাত-জাহান্নাম থাকবে। সে মানুষদের জান্নাতের আশা দিবে আবার জাহান্নামের ভয়ও সৃষ্টি করবে। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে তার সাথে দুটি নদী থাকবে। একটি সাদা পানি এবং অপরটি জ্বলন্ত আগুনের মত। আসলে তার সাদা পানি নদীটিই হবে জাহান্নাম এবং অপরটি জান্নাত। যেমনটা এই হাদিসে বলা হয়েছে, নবী করীম সাঃ বলেন-”আমি ভাল করেই জানি, দাজ্জালের সাথে কি থাকবে। তার সাথে দুটি নদী থাকবে। দেখতে একটিকে সাদা পানি এবং অপরটিকে জ্বলন্ত আগুনের মত মনে হবে।তোমরা যদি দাজ্জালকে পেয়ে যাও, তবে তার আগুনে ঝাপ দিয়ে দিও।”
তার অলৌকিক সব ক্ষমতা ও জাদুময় কর্মকাণ্ডের কারণে মানুষের ঈমান নিয়ে খেলবে। দুর্বল চিত্তের মুমিনরাও তার অলৌকিক ক্ষমতার কাছে তাদের ঈমানকে বিক্রি করবে। তার অসাধারণ জাদুময় কর্মকাণ্ডের দ্বারা সে কিছুসময়ের মধ্যে অসংখ্য অনুসারী করে ফেলবে। তার অনুসারী সবাই জাহান্নামী হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
আল্লাহর রসূল সাঃ দাজ্জালের এই ভয়াবহ ফিতনা থেকে বাঁচার বিভিন্ন উপায় তার উম্মত শিখিয়ে গেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রত্যেক শুক্রবার সূরা কাহাফ এর প্রথম দশ আয়াত নিয়মিত তিলাওয়াত করা। নবী করীম সাঃ বলেন- “ যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ এর প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে নিল, সে দাজ্জাল থেকে রক্ষা পেয়ে গেল।”[২]
দাজ্জাল ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া পাঠ করা। মহানবী সাঃ নিজে প্রত্যেক নামাজের পর দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতেন। হাদিস শরিফে তার এই দোয়াটি প্রসিদ্ধ রয়েছে।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব, জীবন-মরণের ফিতনা এবং মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।[৩]
দাজ্জালের ফিতনাটি ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় বলে এর আলোচনাটি একটু দীর্ঘ করা হলো।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাব
মুসলমানরা যখন কাফের-মুশরিকদের অত্যাচার-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রে বিধ্বস্ত হয়ে যাবে আল্লাহ তায়ালা তখন মুসলমানদের মুক্তিদাতা স্বরুপ ইমাম মাহদীকে প্রেরণ করবেন। সকল কালো শক্তির বিরুদ্ধে তাকে বিজয়ী দান করবেন। তখন পুরো পৃথিবীতে ইসলামের পতাকা উড়বে। মুসলমানদের জয়গান বেজে উঠবে।
তার বংশ পরম্পরা হাসান বিন আলী রাঃ বংশধর পর্যন্ত পৌছবে। তার আসল নাম হবে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ। নবী করীম সাঃ বলেন- “পৃথিবীর জীবন সায়াহ্নে যদি একটি মাত্র অবশিষ্ট থাকে, তবে সেই দিনটিকে আল্লাহ তায়ালা দীর্ঘ করে আমার পরিবারস্থ একজন ব্যক্তিকে প্রেরণ করে ছাড়বেন, তার নাম আমার নাম এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নাম সদৃশ হবে।”[৫]
ইমাম মাহদী আঃ দুনিয়ার জমিনে সাত-আট বছর রাজত্ব করবে। তার রাজত্বকালে দুনিয়ার বুকে সকল অন্যায়-অবিচার দূরীভূত হবে, মানুষের মধ্যে পাপাচার লোপ পাবে, সকল সম্পদের সুসম বণ্টন নিশ্চিত হবে, মুসলমানদের হারানো রাজত্ব ফিরে পাবে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো আল্লাহ তায়ালা ইমাম মাহদীকে একরাত্রে নেতৃত্বের  যোগ্য বানিয়ে দিবেন। মক্কা মোকাররমায় তার প্রকাশ ঘটবে। মূলত তার সময়ই মাসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। [৮]
ঈসা আঃ প্রত্যাগমন
আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচানোর জন্য ঈসা বিন মারিয়াম আঃ কে পুনরায় দুনিয়াতে প্রেরণ করবেন। নবী করীম সাঃ বলেন-”ঐ সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ নিহিত, অচিরেই মরিয়মের সন্তান (ঈসা আঃ) সৎ নিষ্ঠাবান বিচারক হিসেবে আসমান থেকে অবতরণ করবেন। ক্রোশ ভেঙ্গে দেবেন, শুকর নিশ্চিহ্ন করবেন, জিযয়ার (কর) বিধান রহিত করবেন, কোন কাফের থেকে জিযয়া নেয়া হবে না, সেদিন ধন-সম্পদের প্রাচুর্য ঘটবে। আল্লাহর জন্য একটি সেজদা সেদিন সারা দুনিয়া অপেক্ষা উত্তম হবে।” [৪]
ঈসা আঃ কোন এক ফজর নামাযের সময় দুজন ফেরেশতার ওপর ভর করে দুনিয়া জমিনে অবতরণ করবেন। তখন ফজরের ইকামত হতে থাকবে। এ বিষয়ে ইবনে কাছীর রহিমাহুল্লাহ বলেন- ”প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে, তিনি দামেস্কের পূর্ব প্রান্তে সাদা মিনারের কাছাকাছি স্থানে অবতরণ করবেন। তখন নামাযের ইকামত হতে থাকবে, তাকে দেখে ইমাম মাহদী বলবে- হে আল্লাহর নবী! নামাযের ইমামতি করুন। ঈসা নবী বলবেন- না! তুমিই পড়াও! ইকামত তোমার জন্য দেয়া হয়েছে!”
এখানে উল্লেখ যে, ঈসা আঃ ইমাম মাহদীর পিছনে নামায পড়লেও ইমাম মাহদী কখনোও ঈসা আঃ মর্যাদার ওপর হবেন না। ইমাম মাহদীর পিছনে ইকতেদা দ্বারা প্রকাশ পায় তার প্রত্যাগমন নবী হিসেবে নয় বরং মুহাম্মাদ সাঃ এর উম্মত হিসেবে গ্রাহ্য হবে।
তাকে দেখে সকল খ্রিস্টান ইসলামে দীক্ষিত হবেন। যতদূর তার দৃষ্টি যাবে, তত দুর তার নিশ্বাস গিয়ে পৌঁছবে। অর্থাৎ ঈসা আঃ এর দৃষ্টির মাধ্যমেই অর্ধেক শত্রুবাহিনী ধ্বংস হয়ে যাবে। ঈসা আঃ দেখামাত্রই দাজ্জাল পানিতে লবণের ন্যায় গলে যাবে। পলায়নের উদ্দেশ্যে দৌড় দিবে। ঈসা আঃ তার পিছু ধাওয়া করে লুদ এলাকার প্রধান ফটকের কাছে তাকে পেয়ে যাবেন এবং বর্শা দ্বারা দাজ্জালকে হত্যা করবেন। ঈসা আঃ চল্লিশ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকবেন।[৬]
ইয়াজুজ এবং মাজূজ এর আবির্ভাব
দাজ্জাল মৃত্যুর পর দুটি অদ্ভুত জাতির আবির্ভাব ঘটবে। এরা হচ্ছে ইয়াজূজ ও মাজূজ। তারা মূলত আদমেরই সন্তান। তারা বর্বর, অসভ্য, এবং অনিষ্টকর জাতি ছিল বিধায় তাদেরকে বাদশাহ যুলকারনাইন বিশাল দেয়াল দিয়ে পাহাড়ের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিলেন। তারা প্রাচীর ভেঙ্গে বেরিয়ে আসবে। আল্লাহর আদেশে ঈসা আঃ মুমিনদেরকে নিয়ে তূর পর্বতে আশ্রয় নিবেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা ইয়াজূজ এবং মাজূজ জাতি দুটিকে এক প্রকার পোকা দ্বারা ধ্বংস করবেন। এরপর প্রাচ্যে, পাশ্চাত্যে এবং আরবে বেশ শক্তিশালী এবং ভয়াবহ ভূমিকম্প সৃষ্টি হবে। হাদিসের এই বৃহত্তম নিদর্শনগুলি এখানে সংক্ষিপ্তাকারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এসব নিদর্শনগুলি ধারাবাহিক সংঘটিত হলে কিয়ামত সংঘটিত হবে। এসব বৃহৎ নিদর্শনগুলির সময়ে আরও বেশ কিছু ক্ষুদ্র নিদর্শন সংঘটিত হবে যা এখানে সংক্ষিপ্ত করার জন্য উল্লেখ করা হয়নি। [৭]
উৎসঃ
১. সূরা বাকারা
২. সহিহ মুসলিম: ১
৩. সহিহ বুখারী: ৮৬
৪. বুখারী, মুসলিম
৫. তিরমিযী, আবু দাউদ
৬. মহাপ্রলয়: ডা.মুহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আরিফী
৭. আল লু’লু ওয়াল মারজান: ১৮২৯
৮. কেয়ামতের আলামত: মাওলানা মুহাম্মাদ আশেকে এলাহী বুলন্দশহরী রহ.
কেয়ামতের ছোট ছোট ১৩১টি আলামত
কেয়ামতের আলামত দুই ধরনের। ছোট ও বড়। ছোট আলামত বলতে সেসব লক্ষণকে বোঝানো হয় যা কেয়ামতের অনেক আগে থেকে সংঘটিত হবে। কেয়ামতের ছোট আলামতগুলো নিম্নরূপ :
কেয়ামতের আলামত দুই ধরনের। ছোট ও বড়। ছোট আলামত বলতে সেসব লক্ষণকে বোঝানো হয় যা কেয়ামতের অনেক আগে থেকে সংঘটিত হবে। কেয়ামতের ছোট আলামতগুলো নিম্নরূপ :
১. রাসুলুল্লাহ (সা.) এর আগমন। বোখারি; ২. তাঁর ওফাত। বোখারি; ৩. তাঁর আঙুলের ইশারায় চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া। সূরা কামার ১-২; ৪. সাহাবাগণের বিদায়। মুসলিম; ৫. বায়তুল মোকাদ্দাস বিজয়। বোখারি; ৬. দুইটি প্রলয়ঙ্করী মহামারী (যা ১৬ ও ২৫ হিজরিতে হয়েছিল।) বোখারি; ৭. নানা ধরনের ফিতনা প্রকাশ ঘটবে। মুসলিম; ৮. আকাশ মিডিয়ার বিস্তার। ইবনে আবি শায়বা; ৯. সিফফিনের যুদ্ধ (যা আলী ও মুয়াবিয়া (রা.) এর মাঝে ঘটেছিল)। বোখারি ও মুসলিম; ১০. খারেজিদের প্রকাশ। বোখারি; ১১. ৩০ জন নবুয়তের দাবিদার, মহামিথ্যুকের প্রকাশ। বোখারি; ১২. সুখ-শৌখিনতা বৃদ্ধি ও দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। আহমাদ; ১৩. হেজাজ থেকে আগ্নেয়গিরি প্রকাশ। বোখারি; ১৪. মুসলমানদের সঙ্গে তুর্কিদের যুদ্ধ। (যা সাহাবিযুগে হয়েছিল) বোখারি; ১৫. জুলুমবাজ লোকেরা ছড়ি ও চামড়ার বেত দিয়ে নিরীহ মানুষকে প্রহার করবে। আহমাদ; ১৬. খুন বেড়ে যাবে। মুসলিম; ১৭. অন্তর থেকে আমানত উঠে যাবে। বোখারি; ১৮. ইহুদিদের অনুকরণের প্রবণতা বেড়ে যাবে। বোখারি; ১৯. ক্রীতদাসীর গর্ভ থেকে মালিকের জন্ম হবে। মুসলিম; ২০. স্বল্পবসনা নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। মুসলিম; ২১. ছাগলের রাখাল, নগ্নপদের লোকেরা ও বস্ত্রবঞ্চিতরা অট্টালিকা হাঁকাবে। মুসলিম; ২২. চেনাজানা ও বিশিষ্ট লোকদের সালাম দেয়ার প্রচলন হবে। ইবনে খুজাইমা; ২৩. ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। আহমাদ; ২৪. স্বামীর ব্যবসায় (শেয়ার হিসেবে) স্ত্রী যোগ দেবে। আহমাদ; ২৫. কিছু ব্যবসায়ী গোটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। আহমাদ; ২৬. মিথ্যা সাক্ষী বেড়ে যাবে। আহমাদ; ২৭. সত্য সাক্ষ্য গোপনের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ; ২৮. মূর্খতা বেড়ে যাবে। বোখারি; ২৯. মানুষের অন্তরে হিংসা ও কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ; ৩০. প্রতিবেশীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ
৩১. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ; ৩২. অশ্লীলতার সয়লাব শুরু হবে। আহমাদ; ৩৩. আমানতদারকে অবিশ্বাস আর খেয়ানতকারীদের বিশ্বাস করা হবে। হাকেম; ৩৪. সমাজের ভালো লোকেরা দ্রুত বিলুপ্ত হবে ও নিচু লোকদের উত্থান হবে। হাকেম; ৩৫. সম্পদ কোথা থেকে কীভাবে এলো তার বাছবিচার করবে না কেউ। বোখারি; ৩৬. যুদ্ধলব্ধ সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হবে না। তিরমিজি; ৩৭. আমানতকে গনিমতের সম্পদ ভেবে ভোগ করা হবে। তিরমিজি; ৩৮. জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে। তিরমিজি; ৩৯. পার্থিব উদ্দেশ্যে এলম শিখবে। তিরমিজি; ৪০. মানুষ স্ত্রীর কথা শুনবে, মায়ের কথা শুনবে না। তিরমিজি; ৪১. পিতাকে দূরে রেখে বন্ধুদের কাছে টানা হবে। তিরমিজি; ৪২. মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা ও হৈহট্টগোলের প্রবণতা দেখা যাবে। তিরমিজি; ৪৩. অপরাধী ও অসৎ লোকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতা হবে। তিরমিজি; ৪৪. সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সমাজের নেতৃত্বে থাকবে। তিরমিজি; ৪৫. মানুষকে শ্রদ্ধা করা হবে তার অনিষ্ট ও ক্ষতির ভয়ে। তিরমিজি; ৪৬. ব্যভিচারকে অবৈধ মনে করা হবে না। বোখারি; ৪৭. পুরুষের জন্য রেশমকে হালাল মনে করা হবে। বোখারি; ৪৮. মদকে বৈধ মনে করা হবে। বোখারি; ৪৯. গানবাজনার অবৈধতার ধারণা বিলুপ্ত হবে। বোখারি; ৫০. মৃত্যু কামনা বেড়ে যাবে। বোখারি; ৫১. সকালের মোমিন বিকালে কাফের এবং বিকালের কাফের সকাল না হতেই ঈমানদার হয়ে যাবে। বোখারি; ৫২. মসজিদগুলোতে অতিরিক্ত সাজসজ্জা করা হবে। নাসাঈ; ৫৩. বাসাবাড়িতে সাজগোজে সীমালঙ্ঘন করা হবে। আদাবুল মুফরাদ; ৫৪. বেশি বেশি বজ্রপাত হবে। আহমাদ; ৫৫. লেখনী ও লেখকের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ; ৫৬. গলাবাজিকে পেশা বানানো হবে। আহমাদ; ৫৭. মানুষ কোরআনবিমুখ হয়ে যাবে এবং অন্য বইয়ের কদর ও বিস্তার হবে। তাবরানি; ৫৮. সমাজে কারি ফকিহ ও আলেম কমে যাবে। হাকেম; ৫৯. যারা নিজের যুক্তি দিয়ে কথা বলে এবং বেদাতে লিপ্ত, তাদের থেকে মানুষ এলম অর্জন করবে। ইবনুল মুবারক ফিয-যুহদ; ৬০. হঠাৎ মৃত্যুর হার বেড়ে যাবে। তাবরানি
৬১. নির্বোধরা নেতা হবে। বাজ্জার; ৬২. সময় কাছাকাছি হয়ে যাবে। বোখারি; ৬৩. স্বল্পবুদ্ধির লোকেরা জাতির মুখপাত্র বনে যাবে। মাজমাউজ যাওয়াইদ; ৬৪. নির্বোধরাই বেশি সফল হবে। ত্বহাবি; ৬৫. মসজিদকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। হাকেম; ৬৬. মোহরানার আকার বৃদ্ধি পাবে। হাকেম; ৬৭. ঘোড়ার দাম বেড়ে যাবে। হাকেম; ৬৮. বাজারগুলো নিকটবর্তী ও সবকিছু হাতের নাগালে হয়ে যাবে। আহমাদ; ৬৯. অন্যসব জাতি মুসলিমদের নিধনে ঐক্যবদ্ধ হবে। আবু দাউদ; ৭০. মানুষ ইমামতি করতে চাইবে না। প্রাগুক্ত; ৭১. ঈমানদারদের অনেক স্বপ্ন সত্য প্রমাণ হবে। বোখারি; ৭২. মিথ্যার প্রচলন বাড়বে। মুসলিম; ৭৩. মানুষ একে অন্যকে চিনতে চাইবে না। কেউ কারও সঙ্গে একান্ত স্বার্থ ছাড়া পরিচিত হতে চাইবে না। আহমাদ; ৭৪. ভূমিকম্পের হার বেড়ে যাবে। আহমাদ; ৭৫. মহিলাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বোখারি; ৭৬. পুরুষ কমে যাবে। বোখারি; ৭৭. অশ্লীল কাজ প্রচুর এবং প্রকাশ্যে হবে। মুসলিম; ৭৮. কোরআন পাঠ করে মানুষের কাছে বিনিময় চাওয়া হবে। আহমাদ; ৭৯. মোটা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে। বোখারি; ৮০. সাক্ষ্য চাওয়া ছাড়াই আগ বেড়ে সাক্ষ্য দেয়ার লোক প্রকাশ পাবে। মুসলিম; ৮১. মানত করে তা পুরা করবে না। মুসলিম; ৮২. শক্তিশালীরা দুর্বলদের ভক্ষণ করবে। আহমাদ; ৮৩. আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধান অনুসৃত হবে। আহমাদ; ৮৪. পশ্চিমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আরবরা কমে যাবে। মুসলিম; ৮৫. অভাবি লোক থাকবে না। জাকাত গ্রহণের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। মুসলিম; ৮৬. ভূগর্ভ তার ভেতরের খনিজসম্পদ বের করে দেবে। মুসলিম; ৮৭. আকৃতি-বিকৃতির ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি; ৮৮. ভূমিধস দেখা দেবে। তিরমিজি; ৮৯. আকাশ থেকে প্রস্তর বৃষ্টি হবে। তিরমিজি; ৯০. কেয়ামতের আগে এমন বৃষ্টি হবে যা সব কাঁচা-পাকা বাড়িকে নিমজ্জিত করে দেবে। কিন্তু উটের পশম দ্বারা নির্মিত (বিশেষ ধরনের) তাঁবু রক্ষা পাবে। আহমাদ
৯১. কেয়ামতের আগে বৃষ্টি হবে কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফসল হবে না। আহমাদ; ৯২. একটি ভয়াবহ দাঙা গোটা আরবকে পরিষ্কার করে দেবে (মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে)। আহমাদ; ৯৩. আল্লাহর হুকুমে বৃক্ষ কথা বলবে। বোখারি; ৯৪. মুসলমানদের সাহায্যার্থে পাথরের জবান খুলে যাবে এবং পাথরের আড়ালে লুকানো ইহুদিদের কথা অলৌকিকভাবে বলে দেবে সে। বোখারি; ৯৫. মুসলমানরা ইহুদিদের সঙ্গে চূড়ান্ত যুদ্ধ করবে। বোখারি; ৯৬. ফোরাত নদীতে সোনার পাহাড় আবিষ্কার হবে। বোখারি; ৯৭, কেউ গোনাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে সমাজের মানুষ তাকে অচল, অসামাজিক, অযোগ্য ইত্যাদি তকমা দেবে। আহমাদ; ৯৮. আরব উপদ্বীপে নদীনালা ও পানির নহর হবে। মুসলিম; ৯৯. আহলাস নামক ফিতনা-দাঙ্গা দেখা দেবে। আবু দাউদ; ১০০. সাররা নামক আরেকটি ফিতনা প্রকাশ হবে। আবু দাউদ; ১০১. কেয়ামতের আগে দাহিমা নামক একটি ভয়াবহ দাঙ্গা সৃষ্টি হবে। আবু দাউদ; ১০২. এমন একটা সময় আসবে যখন এক সিজদার মর্যাদা গোটা পৃথিবী ও তন্মধ্যকার সবকিছুর চেয়ে বেশি হবে। বোখারি; ১০৩. মাসের শুরুতেই চাঁদ মোটা দেখা যাবে, যা সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম। তাবরানি; ১০৪. মানুষ সিরিয়ামুখী হবে। আহমাদ; ১০৫. পশ্চিমাদের সঙ্গে মুসলমানদের মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। তিরমিজি; ১০৬. মুসলমানরা কুসতুনতুনিয়া (ইস্তান্বুল) জয় করবে। তিরমিজি; ১০৭. মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টন করা হবে না। মুসলিম; ১০৮. গনিমত-যুদ্ধলব্ধ সম্পদে মানুষ সন্তুষ্ট হবে না। মুসলিম; ১০৯. পুরাতন যুদ্ধাস্ত্রের প্রচলন পুনরায় চালু হবে। তিরমিজি; ১১০. কিছুকাল বিরান থাকার পর পুনরায় বায়তুল মোকাদ্দাস আবাদ হবে। আবু দাউদ; ১১১. মদিনা তখন বিরান হবে এবং সেখানে পর্যটক ও অধিবাসী কমে যাবে। আবু দাউদ; ১১২. কামারের হাপর যেমন লোহার জং দূর করে, মদিনা তেমনিভাবে তার ভেতরের সব মন্দকে বের করে দেবে। বোখারি; ১১৩. পাহাড় নিজ স্থান থেকে সরে যাবে। (অলৌকিকভাবে অথবা মানুষ পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করবে)। তাবরানি; ১১৪. একজন কাহতানি বংশীয় লোক আত্মপ্রকাশ করবে এবং সবাই তাকে অনুসরণ করবে। বোখারি; ১১৫. জাহজাহ নামের এক লোক আবির্ভূত হবে। মুসলিম; ১১৬. কেয়ামতের পূর্বে চতুষ্পদ হিংস্র জন্তু ও জড় পদার্থ কথা বলার মতো অলৌকিক ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি; ১১৭. ছড়ির মাথা থেকে কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি; ১১৮. জুতার ফিতা থেকেও কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি; ১১৯. এমন একটা সময় আসবে, মানুষের ঊরু অলৌকিকভাবে তার স্ত্রীর অনৈতিকতার কথা জানিয়ে দেবে। তিরমিজি;
১২০. ধরাপৃষ্ঠ থেকে ইসলামচর্চা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইবনে মাজাহ; ১২১. আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে কোরআন উঠিয়ে নেবেন। ফলে কারও স্মৃতিতে আর কোরআন থাকবে না। ইবনে মাজাহ; ১২২. কিছু লোক মক্কার হারামে যুদ্ধ করতে আসবে এবং ইমাম মাহদিকে গ্রেফতার করতে চাইবে, তখন তাদের পুরো বাহিনীসহ ভূমিধস হবে। মুসলিম; ১২৩. বায়তুল্লাহর হজ পরিত্যাজ্য হয়ে যাবে। ইবনে হিব্বান; ১২৪. আরবের কোনো কোনো গোত্র মূর্তিপূজা আরম্ভ করবে। বোখারি; ১২৫. কোরাইশ বংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আহমাদ; ১২৬. একজন নিগ্রো কর্তৃক কাবা ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটবে। বোখারি; ১২৭. মোমিনদের জান কবজ করার জন্য একটি স্নিগ্ধ বাতাস বইবে। বোখারি; ১২৮. মক্কায় সুউচ্চ দালান নির্মিত হবে। ইবনে আবি শায়বা; ১২৯. উম্মতের উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের অভিশাপ দেবে। ইবনে আবি শায়বা; ১৩০. নিত্যনতুন দামি বাহন বের হবে। ইবনে হিব্বান; ১৩১. ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিরমিজি।
(সমাপ্ত)
(১) কিয়ামত সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

(২) কিয়ামত সংক্রান্ত কোরআনের আয়াত ও হাদিসসমূহ জানতে এখানে ক্লিক করুন।


 প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)
“তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)
নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে হেদায়েতের প্রতি আহবান জানায়, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে, তবে তা তাদের সওয়াব থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না। আর যে পথভ্রষ্টতার প্রতি আহবান জানায়, তার ওপর তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপ আরোপিত, তবে তা তাদের পাপ থেকে কোন কিছু হ্রাস করবে না।” [মুসলিম (২৬৭৪)]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয়। বনী-ইস্রাঈল থেকে (ঘটনা) বর্ণনা কর, তাতে কোন ক্ষতি নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করল, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিল।”
(বুখারী ৩৪৬১, হাদিস  সম্ভার, হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩৮৮।)
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন, এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর কারমাইকেল
ইউনিভার্সিটি  কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।

ইসলামের অন্যান্য সকল বিষয় সহিহভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ

Please Share On

No comments:

Post a Comment

দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দান-ছাদাক্বা করার গুরুত্ব ও ফজিলত   আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস...