বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম
৪০টি মূল্যবান হাদিস
(১) আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেনঃ হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন
হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেনো তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন
কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের
প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা
যায় নি (যেমন: করোনা)। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে
আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত এবং যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ
বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর
কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন
আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু
কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না (তথা ইসলামি
আইন মোতাবেক বিচারিক কার্যক্রম ও রাষ্ট্র শাসন করে না) এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে
গ্রহণ করে না (তথা কুরআনকে সংবিধান হিসেবে মেনে নেয় না), তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের
মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-৪০১৯,
সহীহাহ ১০৬)। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস।
(২) মুআয
বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করলেন। তিনি অবসর হলে আমরা বললাম, বা তারা বলেন, হে আল্লাহর
রাসূল! আজ আপনি নামায দীর্ঘায়িত করেছেন। তিনি বলেনঃ আমি আশাব্যঞ্জক ও ভীতিজনক নামায
পড়েছি। আমি মহামহিমান্বিত আল্লাহর নিকট আমার উম্মাতের জন্য তিনটি জিনিস প্রার্থনা করেছি।
তিনি আমাকে দু’টি দান করেছেন এবং একটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমি তাঁর নিকট প্রার্থনা
করলাম যে, তাদের ব্যতীত তাদের শত্রুপক্ষ যেন আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। তিনি আমাকে
এটা দান করলেন। আমি তাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম যে, আমার গোটা উম্মাতকে যেন পানিতে
ডুবিয়ে মারা না হয়। তিনি এটাও আমাকে দান করেছেন। আমি তাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম
যে, আমার উম্মাত যেন পরস্পর যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি আমার এ প্রার্থনা আমাকে ফেরত
দিলেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-হাদিস নং-৩৯৫১, আহমদ ২১৫৭৭,
২১৬০৩, ২১৬২০, সহীহাহ ১৭২৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস।
(৩) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমের ওপর মুসলিমের
ছয়টি হক (অধিকার) আছে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! এ অধিকারগুলো কি কি?
জবাবে তিনি বলেন, (১) কোন মুসলিমের সাথে দেখা হলে, সালাম দেবে, (২) তোমাকে কেউ দা’ওয়াত
দিলে, তা কবূল করবে, (৩) তোমার কাছে কেউ কল্যাণ কামনা করলে তাকে কল্যাণের পরামর্শ দেবে,
(৪) হাঁচি দিলে তার জবাব “ইয়ারহামুকাল্ল-হ” বলবে, (৫) কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দেখতে
যাবে, (৬) কারো মৃত্যু ঘটলে তার জানাযায় শরীক হবে। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫২৫, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৫৫৪৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২১৬২,
আহমাদ ৮৮৪৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০৯০৯, শু‘আবুল ঈমান ৮৭৩৭, শারহুস্ সুন্নাহ্
১৪০৫, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৯৯১, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৯৪, সহীহ আল জামি‘ ৩১৫১)। হাদিসের
মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৪) বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাতটি আদেশ ও সাতটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন।
তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন- (১) রোগীর খোঁজ-খবর নিতে, (২) জানাযায় শরীক হতে, (৩) হাঁচির
আলহামদুলিল্লা-হ’র জবাবে ইয়ারহামুকাল্ল-হ বলতে,
(৪) সালামের জবাব দিতে, (৫) দা’ওয়াত দিলে তা কবূল করতে, (৬) কসম করলে তা পূর্ণ করতে,
(৭) মাযলূমের সাহায্য করতে।
এভাবে তিনি আমাদেরকে (১) সোনার আংটি পরতে,
(২) রেশমের পোশাক, (৩) ইস্তিবরাক [মোটা রেশম], (৪) দীবাজ [পাতলা রেশম] পরতে, (৫) লাল
নরম গদীতে বসতে, (৬) ক্বাস্সী ও (৭) রূপার পাত্র ব্যবহার করতে। কোন কোন বর্ণনায়, রূপার
পাত্রে পান করতে নিষেধ করেছেন। কেননা যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রূপার পাত্রে পান করবে আখিরাতে
সে তাতে পান করতে পারবে না। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
১৫২৬, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১২৩৯, ২৪৪৫, ৫১৭৫, ৫৬৩৫, ৫৬৫০, ৫৮৪৯, ৬২২২, সহীহ
মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৫২৮২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২০৬৬, সুনান আত্ তিরযিমী ২৮০৯,
সুনান আননাসায়ী ১৯৩৯, ৫৩০৯, আহমাদ ১৮৫০৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৯২৪, সুনানুল কুবরা লিল
নাসায়ী ২০৭৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৮৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫২১৫, ইসলামিক সেন্টার
৫২২৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।
(৫) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের (কিয়ামতের)
দিন বলবেন, হে বানী আদম! আমি অসুস্থ ছিলাম। তুমি আমাকে দেখতে আসোনি। সে বলবে, হে আমার
রব! আমি তোমাকে কিভাবে দেখতে যাব? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব! আল্লাহ বলবেন, তুমি কি
জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল? তুমি তাকে দেখতে যাওনি। তুমি কি জানতে না
যে, তুমি যদি তাকে দেখতে যেতে, আমাকে অবশ্যই তার কাছে পেতে। হে আদম সন্তান! আমি তোমার
কাছে খাবার চেয়েছিলাম। তুমি আমাকে খাবার দাওনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে
খাবার দিতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা
তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল? তুমি তাকে খাবার দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, সে সময় যদি
তুমি তাকে খাবার দিতে তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে? হে বানী আদম! আমি তোমার কাছে পিপাসা
নিবারণের জন্য পানি চেয়েছিলাম। তুমি পানি দিয়ে তখন আমার পিপাসা নিবারণ করোনি। সে বলবে,
হে আমার রব! আমি কিভাবে তোমার পিপাসা নিবারণ করতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ
বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তখন তাকে পানি দাওনি। যদি তুমি
সে সময় তাকে পানি দিতে, তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫২৮, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৪৫০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৫৬৯,
ইবনু হিব্বান ৯৪৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৫১৭, সহীহ আত্ তারগীব ৯৫২, সহীহ আল জামি‘ আস্
সগীর ১৯১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৩২২, ইসলামিক সেন্টার ৬৩৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(৬) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে মুসলিম সকাল বেলায় কোন অসুস্থ মুসলিমকে
দেখতে যায়, তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার মালাক (ফেরেশতা) দু’আ করতে থাকে।
যদি সে তাকে সন্ধ্যায় দেখতে যায়, তার জন্য সত্তর হাজার মালাক সকাল পর্যন্ত দু’আ করতে
থাকে এবং তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান তৈরি হয়। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫৫০, সুনান আত্ তিরমিযী ৯৬৯, সুনান আবূ দাঊদ ৩০৯৮, সুনান ইবনু মাজাহ্
১৪৪২, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৭৬, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭৬৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(৭) শাদ্দাদ ইবন আওস ও সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
একবার তাঁরা দু’জন এক রোগীকে দেখতে গেলেন। তাঁরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আজ সকালটা তোমার
কেমন যাচ্ছে? রোগীটি বলল, আল্লাহর রহমতে ভালই। তার কথা শুনে শাদ্দাদ বললেন, তোমার গুনাহ
ও অপরাধ মাফ হবার শুভ সংবাদ! কারণ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে
বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দাদের মধ্যে কোন মু’মিন বান্দাকে
রোগাক্রান্ত করি। রোগগ্রস্ত করা সত্ত্বেও যে আমার শুকরিয়া আদায় করবে, সে রোগশয্যা হতে
সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো সব গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে উঠবে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা মালাকগণকে (ফেরেশতাদেরকে) বলেন, আমি আমার বান্দাকে
রোগ দিয়ে বন্দী করে রেখেছি। তাই তোমরা তার সুস্থ অবস্থায় তার জন্য যা লিখতে তা-ই লিখো।
(মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫৭৯, আহমাদ ১৭১১৮, সিলসিলাহ্
আস্ সহীহাহ্ ২০০৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪২৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৩০০)। হাদিসের মানঃ
হাসান (Hasan)।
(৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন মু’মিনের মৃত্যুর সময় উপস্থিত
হয়, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) সাদা রেশমী কাপড় নিয়ে আসেন এবং রূহকে বলেন, তুমি আল্লাহ
তা’আলার ওপর সন্তুষ্ট, আল্লাহও তোমার ওপর সন্তুষ্ট এ অবস্থায় দেহ হতে বেরিয়ে এসো এবং
আল্লাহ তা’আলার করুণা, উত্তম রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) ও পরওয়ারদিগারের দিকে চলো। তিনি
তোমার ওপর রাগান্বিত নন। বস্ত্ততঃ মিসকের খুশবুর মতো রূহ দেহ হতে বেরিয়ে আসে। মালাকগণ
সম্মানের সাথে তাকে হাতে হাতে নিয়ে চলে। এমনকি আসমানের দরজা পর্যন্ত নিয়ে আসে। ওখানে
মালাকগণ পরস্পর বলাবলি করেন, কি পবিত্র খুশবু জমিনের দিক হতে আসছে! তারপর তাকে মু’মিনদের
রূহের কাছে (ইল্লীয়্যিনে) আনা হয়। ওই রূহগুলো এ রূহটিকে দেখে এভাবে খুশী হয়ে যায়, যেভাবে
তোমাদের কেউ (সফর হতে ফিরে এলে তোমরা) এ সময় খুশী হও। তারপর সব রূহ এ রূহটিকে জিজ্ঞেস
করে অমুক কি করে? অমুক কি করে? তারা নিজেরা আবার বলাবলি করে, এখন এ রূহকে ছেড়ে দাও
(অর্থাৎ কিছু জিজ্ঞেস করো না।) এখন যে দুনিয়ার শোকতাপে আছে। তারপর একটু স্বস্তির পরে
(সে নিজেই বলে) অমুক ব্যক্তি যার সম্বন্ধে তোমরা জিজ্ঞেস করেছিলে, সে মরে গেছে। সে
কি তোমাদের কাছে আসেনি? রূহগুলো বলে, তাকে তো তার (উপযুক্ত স্থান) হাবিয়্যাহ্ জাহান্নামে
নিয়ে যাওয়া হয়েছে। (ঠিক এভাবে কোন কাফিরের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে তার কাছে ’আযাবের
মালাক (ফেরেশতা) শক্ত চটের বিছানা নিয়ে আসেন। আর তার রূহকে বলেন, হে রূহ! আল্লাহর
’আযাবের দিকে বেরিয়ে এসো। এ অবস্থায় যে, তুমি আল্লাহর ওপর অসন্তুষ্ট ছিলে, তিনিও তোমার
প্রতি অসন্তুষ্ট। তারপর রূহ তার (কাফির ব্যক্তির) দেহ থেকে পচা লাশের দুর্গন্ধ নিয়ে
বেরিয়ে আসবে। মালায়িকাহ্ (ফেরেশতারা) একে জমিনের দরজার দিকে নিয়ে যাবে। সেখানে মালায়িকাহ্
বলবে, কত খারাপ এ দুর্গন্ধ! তারপর এ রূহটিকে কাফিরদের রূহের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ১৬২৯, সুনান আননাসায়ী ১৮৩৩, সিলসিলাহ্
আস্ সহীহাহ্ ১৩০৯, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৯০, ইবনু হিব্বান ৩০১৪, সহীহ আত্ তারগীব
৩৫৫৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।
(৯) আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, এক ব্যক্তি মদীনায় মারা গেলেন, মদীনায়ই তার জন্ম হয়েছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। তারপর তিনি
বললেন, হায়! এ ব্যক্তি যদি তার জন্মস্থান ছাড়া অন্য কোন জায়গায় মৃত্যুবরণ করত। সাহাবীগণ
জিজ্ঞেস করলেন, কেন? হে আল্লাহর রসূল! তখন তিনি বললেন, কোন লোক জন্মস্থান ছাড়া অন্য
কোথাও মৃত্যুবরণ করলে তার মৃত্যুস্থান ও জন্মস্থানের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের জায়গা
হিসেবে গণ্য করা হয়। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫৯৩,
সুনান আননাসায়ী ১৮৩২, সুনান ইবনু মাজাহ্ ১৬১৪, সহীহ আত্ তারগীব ৩১৩৪)। হাদিসের মানঃ
হাসান (Hasan)।
(১০) উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কোন অসুস্থ ব্যক্তির কাছে
কিংবা কোন মৃত্যু পথযাত্রীর কাছে ভাল ভাল কথা বলবে। কারণ তোমরা তখন যা বলো, (তা শুনে)
মালাকগণ (ফেরেশতারা) ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ
(মিশকাত) ১৬১৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ২০১৪, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৯১৯, সুনান
আত্ তিরমিযী ৯৭৭, সুনান আবূ দাঊদ ৩১১৫, সুনান আননাসায়ী ১৮২৫, সুনান ইবনু মাজাহ্ ১৪৪৭,
মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৬০৬৬, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৮৪৭, আহমাদ ২৬৪৯৭, ইবনু হিব্বান
৩০০৫, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৬৭৫৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭১২৪, শারহুস্ সুন্নাহ্
১৪৬১, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৮৯, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ৪৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯৯৮, ইসলামীক
সেন্টার ২০০৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১১) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বয়োকনিষ্ঠ বয়োজ্যেষ্ঠকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক
অধিক সংখ্যককে সালাম দিবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
৪৬৩৩, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬২৩১, ৬২৩৪; সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২৭০৪,
সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৫১৯৮, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১১৪৯, সহীহ আল জামি‘উস্ সগীর
৮০৯০, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৭৬৮, শু‘আবুল ইমান ৮৮৬৪, ‘বায়হাক্বী’র কুবরা ১৯১৮৮, ‘ত্ববারানী’র
আল মু‘জামুল কাবীর ১৫১৯৯, দারিমী ২৬৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৯৭, আবূ ইয়া‘লা ৬২৩৪, আহমাদ
৮১৬২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ১৯৪৪৫, আধুনিক প্রকাশনী ৫৭৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬৮৫)।হাদিসের
মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১২) আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিজ্ঞেস করল,
ইসলামে কোন্ ’আমলটি উত্তম? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ অপরকে
খাবার খাওয়াবে এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ৪৬২৯, সহীহ বুখারী (তাওহীদ
পাবলিকেশন) ১২, ২৮; সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৬৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৯, সুনান ইবনু মাজাহ ৩২৫৩, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৫১৯৪, আহমাদ ৬৫৪৫, ৬৮০৯,
৬৫৮১, নাসায়ী ৫০০০, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৯৪৪, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৭৭৯,
সহীহ ইবনু হিব্বান ৫০৫, ‘নাসায়ী’র কুবরা ১১৭৩১, শু‘আবুল ঈমান ৩৩৫৯, আধুনিক প্রকাশনী
১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৩) আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য
এটা বৈধ নয় যে, সে তিনদিনের বেশি সময় অপর কোন মুসলিম ভাইকে ত্যাগ করে। তারা কোথাও একে
অপরের মুখোমুখি হলে একজন এদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং অপরজন ওদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের
দু’জনের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে কথাবার্তা আরম্ভ করে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৫০২৭, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৬০৭৭, ৬২৩৭; সহীহ
মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৪২৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৫৬০, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
১৯৩২, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৯১১, সহীহুল জামি ৭৬৬০, আহমাদ ২৩৬৫৪, সহীহ আত্ তারগীব
২৭৫, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৩১৪, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৩৬৫, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার
লিল বায়হাক্বী ৬৩৬৫, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৫৩৬৮, আহমাদ ১৩৩৫৪, সহীহ ইবনু হিব্বান
৫৬৬৯, শু‘আবুল ঈমান ৬৬১৭, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩৮৫২, আস্ সুনানুল কাবীর
লিল বায়হাক্বী ২০৫২১, সহীহ বুখারী (ইসলামিক
ফাউন্ডেশন) ৫৬৪৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬০৭৭, ইরওয়া ২০২৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৪) জাবির (রাঃ) ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নাত করেছেন,
যে ব্যক্তি সুদ খায়, যে সুদ দেয়, যে সুদের কাগজপত্র লিখে, যে দু’জন সুদের সাক্ষী হয়
তাদের সকলের ওপর। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন, (গুনাহের সাথে
সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে) তারা সকলেই সমান। (মিশকাতুল মাসাবীহ
(মিশকাত) ২৮০৭, সুনান ইবনু মাজাহ ২২৭৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৩৯৮৪, আন্তর্জাতিক
নাম্বারঃ ১৫৯৭, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৩৩৩৩, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১২০৬,
সহীহ আত্ তারগীব ১৮৪৭, আহমাদ ৩৭২৯, ৩৭৯৯, ৩৮৭১, ৪০৭৯, ৪২৭১, ৪৩১৫, ৪৩৮৯, ৪৪১৪, দারেমী
২৫৩৫, ইরওয়া ৫/১৮৪, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৯৪৭, ইসলামিক সেন্টার
৩৯৪৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)। (Sahih)।
(১৫) আবূ জুহায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তমোক্ষণ কাজের বিনিময়, কুকুর বিক্রয় মূল্য ও
যিনা-ব্যভিচারের বিনিময় মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) লা’নাত (অভিসম্পাত) করেছেন সুদগ্রহীতা ও সুদদাতার প্রতি। তিনি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো লা’নাত করেছেন ওই ব্যক্তির প্রতি যে দেহের কোনো অংশে নাম বা
চিত্রাঙ্কন করে ও করায়। তাছাড়াও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছবি অঙ্কনকারীর
প্রতিও লা’নাত করেছেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৭৬৫,
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৫৯৬২, ২০৮৬, আহমাদ ১৮৭৬৮, আধুনিক প্রকাশনী ৫৫২৯, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন ৫৪২৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৬) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের (অপরাধের) মধ্যে সর্বপ্রথম
নরহত্যার (অপরাধের) বিচার করা হবে। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ
পাবলিকেশন) ৬৫৩৩, ৬৮৬৪, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬১৫, ২৬১৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৪২৭৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৬৭৮, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ১৩৯৬, ১৩৯৭, নাসায়ী
২৯৯১, ২৯৯২, ২৯৯৩, ২৯৯৪, ২৯৯৬, আহমাদ ৩৬৬৫, ৪২০১, সহীহাহ ১৭৪৮, আধুনিক প্রকাশনী ৬০৮৩,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৮৯)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৭) আবূ ইসহাক (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
যায়দ ইবনু আরকামের পাশে ছিলাম। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কয়টি যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি। আবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কয়টি
যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে ছিলেন? তিনি বললেন, সতেরটিতে। বললাম, এসব যুদ্ধের কোনটি সর্বপ্রথম
সংঘটিত হয়েছিল? তিনি বললেন, ‘উশাইরাহ বা ‘উশায়র। বিষয়টি আমি ক্বাতাদাহ (রহ.)-এর কাছে
উল্লেখ করলে তিনিও বললেন, ‘উশায়র। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ
পাবলিকেশন) ৩৯৪৯, ৪৪০৪, ৪৪৭১, সহীহ মুসলিম
(হাদীস একাডেমী) ২৯২৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১২৫৪, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৮, ইসলামিক
ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৬১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৮) আয়িয ইবনু ’আমর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ শাসকদের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট শাসক সে, যে অত্যাচারী ও নিপীড়নকারী।
(মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৬৮৮, সহীহ মুসলিম (হাদীস
একাডেমী) ৪৬২৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৮৩০, আহমাদ ২০৬৩৭, সহীহাহ্ ২৮৮৫, সহীহ আল জামি
২০৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৫৮১, ইসলামিক সেন্টার ৪৫৮৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(১৯) মা’ক্বিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিম জনতার ওপর যদি কোনো শাসক নিযুক্ত হয়, অতঃপর সে আত্মসাৎকারীরূপে
মৃত্যুবরণ করে, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৬৮৬, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭১৫১, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ২৫৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ
২৬১, ইসলামিক সেন্টারঃ ২৭১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২০) আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন
করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (মিশকাতুল মাসাবীহ
(মিশকাত) ১৪০, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ২৬৯৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪৩৮৪,
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৭১৮, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪৬০৬, সুনান ইবনু মাজাহ্ ১৪,
আহমাদ ২৩৯২৯, ২৪৬০৪, ২৪৯৪৪, ২৫৫০২, ২৫৬৫৯, ২৫৭৯৭, ২৬০৩৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ২৬, ইরওয়া
৮৮, সহীহ আল জামি‘ ৫৯৭০, সহীহাহ্ ২৩০২, সহীহ আত্ তারগীব ৪৯, আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৫০১,
ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫১৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২১) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন
সব জিনিসের পূর্বে লোকের যে আমলের হিসাব হবে, তা হলো সালাত। যদি তার সালাত সঠিক হয়
তাহলে সে সফলকাম হবে ও নাজাত পাবে। আর যদি সালাত বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে সে বিফল ও ক্ষতিগ্রস্ত
হবে। যদি ফরয সালাতে কিছু ভুল হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তা’আলা মালায়িকাহ্-কে (ফেরেশতাগণকে)
বলবেন, দেখো! আমার বান্দার নিকট সুন্নাত ও নফল সালাত আছে কি-না? তাহলে সেখান থেকে এনে
বান্দার ফরয সালাতের ত্রুটি পূরণ করে দেয়া হবে। এরপর এ রকম বান্দার অন্যান্য হিসাব
নেয়া হবে। অন্য এক বিবরণ এসেছে, তারপর এ রকম যাকাতের হিসাব নেয়া হবে। অতঃপর অবশিষ্ট
সব ’আমলের হিসাব একের পর এক এ রকম নেয়া হবে। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১৩৩০, ১৬৭৮, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৪১৩, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
৮৬৪, ৮৬৬, সুনান ইবনু মাজাহ ১৪২৫, সুনান আননাসায়ী ৪৬৫-৬৭, সহীহ আত্ তারগীব ৫৪০, সহীহ
আল জামি ২০২০, আহমাদ ৭৮৪২, ৯২১০, ১৬৫০১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২২) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বরকতময় মহান প্রভু থেকে বর্ণনা করেছেন,
তিনি বলেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ পুণ্যসমূহ ও পাপসমূহ লিখে দিয়েছেন। অতঃপর তিনি তার ব্যাখ্যাও
করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি কোন নেকী করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত
করতে পারে না, আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা তার জন্য (কেবল নিয়্যাত করার বিনিময়ে) একটি পূর্ণ
নেকী লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর কাজটি করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার বিনিময়ে
দশ থেকে সাতশ গুণ, বরং তার চেয়েও অনেক গুণ নেকী লিখে দেন। পক্ষান্তরে যদি সে একটি পাপ
করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত না করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিকট
একটি পূর্ণ নেকী হিসাবে লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর ঐ পাপ কাজ করে ফেলে, তাহলে
আল্লাহ মাত্র একটি পাপ লিপিবদ্ধ করেন। (হাদীস সম্ভার ৩৮০০,
৩৮০১, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৭৫০১, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ২৩২, ২৩৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১২৮, আধুনিক প্রকাশনী-
৬৯৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৯২)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২৩) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন বান্দা গুনাহ করে বলে, ’হে
আমার রব! আমি গুনাহ করে ফেলেছি। তুমি আমার এ গুনাহ ক্ষমা করে দাও।’ তখন আল্লাহ তা’আলা
বলেন, (হে আমার মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা)!) আমার বান্দা কি জানে, তার একজন ’রব’ আছেন? যে
’রব’ গুনাহ মাফ করেন অথবা (এর জন্য) তাকে শাস্তি দেন? (তোমরা সাক্ষী থেক) আমি তাকে
মাফ করে দিলাম। অতঃপর যতদিন আল্লাহ চাইলেন, সে গুনাহ না করে থাকল। তারপর আবার সে গুনাহ
করল ও বলল, ’হে রব’! আমি আবার গুনাহ করে ফেলেছি। আমার এ গুনাহ মাফ করো। তখন আল্লাহ
তা’আলা বলেন, আমার বান্দা কি জানে, তার একজন ’রব’ আছেন, যে রব গুনাহ মাফ করেন অথবা
এর জন্য শাস্তি দেন। আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। অতঃপর আল্লাহ যতদিন চাইলেন,
সে কোন গুনাহ না করে থাকল। তারপর সে আবারও গুনাহ করল এবং বলল, হে রব! আমি আবার গুনাহ
করেছি। তুমি আমার এ গুনাহ ক্ষমা করো। তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা কি জানে,
তার একজন ’রব’ আছেন, যে রব গুনাহ মাফ করেন অথবা অপরাধের জন্য শাস্তি দেন? আমি আমার
বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সে যা চায় করুক। (মিশকাতুল মাসাবীহ
(মিশকাত) ২৩৩৩, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৭৫০৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৮৭৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৫৮, আহমাদ ৭৯৪৮, সুনানুল
কুবরা লিল বায়হাক্বী ২০৭৬৪, শু‘আবূল ঈমান ৬৬৮৫, সহীহ আত্ তারগীব ৩১৪০, ইবনু হিব্বান
৬২২, আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৮৮, ইসলামিক
(২৪) আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে জনৈক
ব্যক্তি নিরানব্বই জন মানুষ হত্যা করেছিল। তারপর সে শার’ঈ বিধান জানার জন্য একজন আল্লাহভীরুর
কাছে জিজ্ঞেস করল, এ ধরনের মানুষের জন্য তাওবার কোন অবকাশ আছে কিনা? তিনি বললেন, নেই।
তারপর সে তাকেও (’আলিমকেও) হত্যা করল। এভাবে সে লোকদেরকে অনবরত জিজ্ঞেস করতে থাকল।
এক ব্যক্তি শুনে বলল, অমুক গ্রামে গিয়ে অমুককে জিজ্ঞেস করো। এমন সময়েই সে মৃত্যুমুখে
পতিত হলো এবং মৃত্যুর সময় সে ওই গ্রামের দিকে নিজের সিনাকে বাড়িয়ে দিলো। তারপর রহমতের
মালাক (ফেরেশতা) ও ’আযাবের মালাক পরস্পর ঝগড়া করতে লাগল, কারা তার রূহ নিয়ে যাবে। এমন
সময় আল্লাহ তা’আলা ওই গ্রামকে বললেন, তুমি মৃত ব্যক্তির কাছে আসো। আর নিজ গ্রামকে বললেন,
তুমি দূরে সরে যাও। অতঃপর আল্লাহ মালায়িকাহকে (ফেরেশতাদের) বললেন, তোমরা উভয় দিকের
পথের দূরত্ব পরিমাপ করে দেখো। মাপের পর মৃতকে এ গ্রামের দিকে এক বিঘত নিকটে পাওয়া গেল।
সুতরাং তাকে ক্ষমা করে দেয়া হলো। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
২৩২৭, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩৪৭০, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৯০১, আন্তর্জাতিক
নাম্বারঃ ২৭৬৬, সুনান ইবনু মাজাহ ২৬২২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫৮৩৬, শু‘আবূল
ঈমান ৬৬৬৩, ইবনু হিব্বান ৬১৫, সহীহাহ্ ২৬৪০, সহীহ আত্ তারগীব ৩১৫১, সহীহ আল জামি‘ ২০৭৬)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২৫) আগার আল মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার অন্তরে মরিচা পড়ে, আর (ওই
মরিচা পরিষ্কার করার জন্য) আমি দিনে একশ’বার করে ইস্তিগফার করি। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২৩২৪, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৭৫১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭০২, মু‘জামুল কাবীর
লিত্ব ত্ববারানী ৮৮৩, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৮৮১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩৩৩৪১,
শু‘আবূল ঈমান ৬৩১, সহীহ আল জামি‘ ২৪১৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(২৬) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে,
আল্লাহ তা’আলা তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করবেন। তার দশটি গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে, আর
আল্লাহর নৈকট্যের জন্য দশটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ৯২২, সুনান আননাসায়ী ১২৯৭, হাকিম ১/৫৫০)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(২৭) সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে শাহাদাতের
মনোষ্কামনা করে; আল্লাহ তা’আলা তাকে শাহীদের মর্যাদায় উন্নীত করেন, যদিও সে স্বীয় বিছানায়
মৃত্যুবরণ করে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৮০৮, সহীহ
মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪৮২৪, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯০৯, সুনান আবূ দাঊদ ১৫২০, সুনান
আননাসায়ী ৩১৬২, সুনান আততিরমিযী ১৬৫৩, সুনান ইবনু মাজাহ ২৭৯৭, দারিমী ২৪৫১, ২৪০৭, সহীহ
আল জামি‘ ৬২৭৬, সহীহ আত্ তারগীব ১২৭৬, ইবনু হিব্বান ৩১৯২, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/৭৭,
বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৭০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৬৯, সহীহ আবু দাউদ ১৩৬০)। হাদিসের মানঃ
সহিহ (Sahih)।
(২৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জিহাদে অংশগ্রহণ করেনি
এবং জিহাদের নিয়্যাত না করে মৃত্যুবরণ করে, সে প্রকৃতপক্ষে মুনাফিক হয়েই মৃত্যুবরণ
করল। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৮১৩, সহীহ মুসলিম (হাদীস
একাডেমী) ৪৮২৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯১০, সুনান আবূ দাঊদ ২৫০২, সুনান আননাসায়ী ৩০৯৭,
মুসনাদ আহমাদ ৮৮৬৫, সহীহ আল জামি‘ ৬৫৪৮, সহীহ আত্ তারগীব ১৩৯০)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(২৯) মিকদাম ইবনে মাদীকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ শহীদের জন্য আল্লাহর নিকট ছয়টি বৈশিষ্ট্য
রয়েছে।
(১) তার দেহের রক্তের প্রথম ফোঁটাটি বের হতেই
তিনি তাকে ক্ষমা করেন এবং জান্নাতে তার ঠিকানা তাকে দেখানো হয়,
(২) কবরের আযাব থেকে তাকে রক্ষা করা হয়,
(৩) (কিয়ামতের) ভয়ংকর ত্রাস থেকে সে নিরাপদ
থাকবে;
(৪) তাকে ঈমানের চাদর পরানো হবে;
(৫) আয়তলোচনা হুরের সাথে তার বিবাহ দেয়া হবে
এবং
(৬) তার নিকট আত্মীয়দের মধ্য থেকে সত্তরজনের
পক্ষে তাকে শাফা’আত করার অনুমতি দেয়া হবে। (সুনান ইবনু
মাজাহ ২৭৯৯, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৮৩৪, সুনান আততিরমিযী ১৬৬৩, সহীহাহ্ ৩২১৩,
আহমাদ ১৬৭৩০, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৬৪, বায়হাকী ফিশ শুআব ১০৮২৩, ১০৮২৪, আল-আহকাম ৩৬
নং পৃষ্ঠা, মিশকাত আত-তালীকুর রাগীব ২/১৯৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৩০) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাঁর কোন বান্দার কল্যাণ চাইলে আগে-ভাগে
দুনিয়াতেই তাকে তার গুনাহখাতার জন্য কিছু শাস্তি দিয়ে দেন। আর কোন বান্দার অকল্যাণ
চাইলে দুনিয়ায় তার পাপের শাস্তিদান হতে বিরত থাকেন। পরিশেষে কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন
তাকে তার পূর্ণ শাস্তি দিবেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
১৫৬৫, সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ২৩৯৬, সুনান ইবনু মাজাহ ৪০৩১, শারহুস্ সুন্নাহ্
১৪৩৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১২২০, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ৩০৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(৩১) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিঃসন্দেহে তিন লোকের
দু’আ কবূল হয়।
(ক) পিতার দু’আ,
(খ) মুসাফিরের দু’আ এবং
(গ) মাযলূমের (পীড়িতের) দু’আ। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ২২৫০, আবূ দাঊদ ১৫৩৬, তিরমিযী ১৯০৫,
ইবনু মাজাহ ৩৮৬২, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৮৩০, মু‘জামুল আওসাত ২৪, শু‘আবূল ঈমান ৩৩২৩, সহীহ
ইবনু হিব্বান ২৬৯৯, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ২৪/৩২, রিয়াযুস্ সলিহীন ৯৮৭, সহীহাহ্ ৫৯৬,
সহীহ আত্ তারগীব ৩১৩২)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।
(৩২) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমীরের (শাসকের) আনুগত্যের অবাধ্য হলো এবং মুসলিম
জামা’আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল, এমতাবস্থায় সে মারা গেলে তার মৃত্যু জাহিলিয়্যাত যুগের
উপর হবে। আর যে ব্যক্তি এমন পতাকার নিচে যুদ্ধ করে যার হক বা বাতিল হওয়া সম্পর্কে অজানা;
বরং সে যেন দলীয় ক্রোধের বশীভূত হয়ে অথবা দলীয় স্বার্থ রক্ষায় লোকেদেরকে আহবান করে
কিংবা দলীয় প্রেরণায় মদদ জোগায়। এমতাবস্থায় সে মারা গেলে জাহিলিয়্যাতের উপরই মৃত্যুবরণ
করবে। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের বিরুদ্ধে তরবারি উত্তোলন করল এবং ভালো-মন্দ সকলকে
নির্বিচারে আক্রমণ করতে লাগল। এমনকি তাত্থেকে আমার উম্মাতের কোনো মু’মিনেরও পরোয়া করল
না এবং আশ্রিত তথা নিরাপত্তায় অধিকারী ব্যক্তির সাথে যে অঙ্গীকার রয়েছে, তার চুক্তিও
পূরণ করল না, সে আমার উম্মাতের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং তার সাথে আমার কোনই সম্পর্ক নেই।
(মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৬৬৯, সহীহ মুসলিম (হাদীস
একাডেমী) ৪৬৮০-৪৬৮২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৮৪৮, নাসায়ী ৪১১৪, সুনান ইবনু মাজাহ ৩৯৪৮,
আহমাদ ৮০৬১, সহীহাহ্ ৪৩৩, সহীহ আল জামি‘ ৬২৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৬৩৩, ইসলামিক সেন্টার
৪৬৩৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih।
(৩৩) আবদুল্লাহ
ইবনে ’আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শরাব পান করে এবং মাতাল হয়, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামায কবুল
হয় না। সে মারা গেলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর যদি সে তওবা করে, তবে আল্লাহ তা’আলা
তার তওবা কবুল করবেন। সে পুনরায় শরাব পানে লিপ্ত হলে কিয়ামতের দিন অল্লাহ তা’আলা অবশ্যি
তাকে ’’রাদগাতুল খাবাল’’ পান করাবেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ’রাদগাতুল
খাবাল’ কী? তিনি বলেনঃ জাহান্নামীদের দেহ থেকে নির্গত পুঁজ ও রক্ত। (সুনান ইবনু মাজাহ ৩৩৭৭, মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩৬৪৩, সুনান
আততিরমিযী ১৮৬২, সুনান আননাসায়ী ৫৬৬৪, ৫৬৭০, আহমাদ ৬৬০৬, ৬৭৩৪, দারেমী ২০৯১, সহীহাহ
৭০৯, আত-তালীক আলা ইবনু খুযাইমাহ ৯৩৯, তাখরীজুল ঈমান লি ইবনুস সালাম ৯১)। হাদিসের মানঃ
সহিহ (Sahih)।
(৩৪) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম
আছে অর্থাৎ এক কম এক শত। যে ব্যক্তি এই নামগুলো কণ্ঠস্থ করলো বা গুণে গুণে পড়লো সে
জান্নাতে প্রবেশ করলো। (সুনান ইবনু মাজাহ ৩৮৬০, ৩৮৬১,
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ২৭৩৬, ৭৩৯২, ৬৪১০, মুসলিম ২৬৭৭, তিরমিযী ৩৫০৬, ৩৫০৭,
৩৫০৮, আহমাদ ৭৪৫০, ৭৫৬৮, ২৭৩৬৩, ৯২২৯, ১০১০৩, ১০১৫৪, ১০৩০৭, মিশকাত ২২৮৭, আদ্ দা‘ওয়াতুল
কাবীর ২৯২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৮১৬, ইবনু হিব্বান ৮১৭, সহীহ আল জামি ২১৬৬,
আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৫৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৪৬)। হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)।
(৩৫) আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্ তা‘আলা প্রতি রাতে রাতের
শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ
কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন যে, আমার নিকট চাইবে?
আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১১৪৫, ৬৩২১, ৭৪৯৪; মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১২২৩, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৬৫৭-১৬৬২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭৫৮, মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১২২৩, আহমাদ ৭৫৯৫, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৭৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৩৬) উম্মু হাবীবাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক দিন রাতে বারো রাক্’আত সালাত
আদায় করবে তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সে বারো রাক্’আত সালাত হলো) চার
রাক্’আত যুহরের ফারযের পূর্বে আর দু’ রাক্’আত যুহরের (ফারযের) পরে, দু’ রাক্’আত মাগরিবের
(ফরয সালাতের) পরে। দু’ রাক্’আত ’ইশার ফরয সালাতের পরে। আর দু’ রাক্’আত ফাজ্রের (ফজরের)
(ফরয সালাতের) পূর্বে। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ১১৫৯,
সুনান ইবনু মাজাহ ১১৪১, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৫৭৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৭২৮,
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) ৪১৫, সহীহ আল জামি ৬৩৬২, সুনান আননাসায়ী ১৭৯৬-৯৯, ১৮০১-২,
১৮০৪, ১৮০৬, ১৮০৮-১০; আহমাদ ২৬২২৮, ২৬৮৬৫, ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৫৬৪, ইসলামীক সেন্টার
১৫৭১, সহীহাহ ২৩৪৭)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৩৭) উমারাহ্ ইবনু রুআয়বাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ এমন ব্যক্তি
জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্য উঠার ও ডোবার আগে সালাত আদায় করেছে, অর্থাৎ- ফাজর (ফজর)
ও আসরের সালাত। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৬২৪, ৬২৫,
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৩২২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬৩৪, সহীহ আল জামি ৫২২৮, সুনান
আবূ দাঊদ ৪২৭, সুনান আননাসায়ী ৪৭১, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৭৩৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
(৩৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কাছে রাতে একদল ও দিনে
একদল মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) আসতে থাকেন। তারা ফাজর (ফজর) ও ’আসরের ওয়াক্তে মিলিত হন।
যারা তোমাদের কাছে থাকেন তারা আকাশে উঠে গেলে আল্লাহ তা’আলা তাদের কাছে (বান্দার) অবস্থা
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, যদিও তিনি তাদের সম্পর্কে অধিক অবগত। বলেন, তোমরা আমার বান্দাদেরকে
কী অবস্থায় রেখে এসেছো? উত্তরে মালায়িকাহ্ বলেন, হে আল্লাহ! আমরা আপনার বান্দাদেরকে
সালাত আদায়ে রত অবস্থায় ছেড়ে এসেছি। আর যে সময় আমরা তাদের কাছে গিয়ে পৌঁছেছি তখনও তারা
সালাত আদায় করছিল। (মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৬২৬, সহীহ
বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৫৫৫, ৩২২৩, ৭৪২৯, ৭৪৮৬; সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ১৩১৮,
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬৩২, নাসায়ী ৪৮৫, মালিক ১৮০/৫৯০, আহমাদ ১০৩০৯, সহীহ ইবনু হিব্বান
১৭৩৭, সহীহ আল জামি ৮০১৯, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫২৮)। হাদিসের
মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৩৯) খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ)...সাহল (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা
আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীরাই প্রবেশ করবে।
তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, সাওম পালনকারীরা
কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের
পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। (সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ১৭৭৫, ১৭৭২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ
১৮৯৬, সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ১৮৯৬, ৩২৫৭, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী ২৬০০,
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৫২, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৬১)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(৪০) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মাইমূন (রহঃ)....উকবাহ
ইবনু আমির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার ওপর উট চড়ানোর দায়িত্ব ছিল। আমার
পালা এলে আমি উট চরিয়ে বিকেলে ফিরিয়ে নিয়ে এলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে পেলাম, তিনি দাঁড়িয়ে লোকেদের সঙ্গে কথা বলছেন। তখন আমি তার এ কথা শুনতে
পেলাম, "যে মুসলিম সুন্দরভাবে ওযু করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে পুরোপুরি আল্লাহর
প্রতি নিবদ্ধ রেখে দু’ রাকাআত সালাত আদায় করে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। উকবাহ বলেন,
কথাটি শুনে আমি বলে উঠলামঃ বাহ! হাদীসটি কত চমৎকার! তখন আমার সামনের একজন বলতে লাগলেন,
আগের কথাটি আরো উত্তম। আমি সে দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনি ’উমার। তিনি আমাকে বললেন, তোমাকে
দেখেছি, এ মাত্র এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগে বলেছেন, তোমাদের
মধ্য থেকে যে ব্যক্তি উত্তম ও পূর্ণরূপে ওযু করে এ দু’আ পড়বে-
"আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়
আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু"।
তার জন্যে জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে এবং
যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ
মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৪৪১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৪, ইসলামিক
সেন্টারঃ ৪৬০)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য
করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Addressসহ অন্য Social
Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে
দিন।
(ক) আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত,
মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে
এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)।
(খ) তিনি আরো বলেন, “তার চেয়ে ভাল কথা আর
কি হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ
মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)।
(গ)
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন লোককে সৎ কাজের দিকে আহবান করবে, তার জন্যও সে পরিমাণ
সাওয়াব রয়েছে যা তার অনুসারীদের জন্য রয়েছে, অথচ তাদের সাওয়াবের কোন অংশ একটুও কমবে
না। অনুরূপ যে ব্যক্তি কাউকে গোমরাহীর দিকে আহবান করে তারও সে পরিমাণ গুনাহ হবে, যতটুকু
গুনাহ তার অনুসারীদের জন্য হবে। অথচ এটা অনুসারীদের গুনাহকে একটুও কমাবে না। (মিশকাতুল
মাসাবীহ (মিশকাত) ১৫৮, সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী) ৬৬৯৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৬৭৪,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৬০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬১৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)।
(ঘ) আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, তা যদি এক আয়াতও হয়। আর বনী ইসরাঈলের ঘটনাবলী বর্ণনা কর। এতে
কোন দোষ নেই। কিন্তু যে কেউ ইচ্ছে করে আমার উপর মিথ্যারোপ করল, সে যেন জাহান্নামকেই
তার ঠিকানা নির্দিষ্ট করে নিল। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) ৩৪৬১, আধুনিক প্রকাশনীঃ
৩২০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২১২, হাদিস সম্ভার,
হাদিস নং ১৫৪৮, রিয়াদুস সলেহিন,
হাদিস নং ১৩৮৮)। হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)।
===========================================
লেখক
ও সংকলকঃ
মো: ইজাবুল আলম-এম.এ, সি.ইন,এড (ইসলামিক স্টাডিজ-রংপুর
কারমাইকেল ইউনিভার্সিটি কলেজ, রংপুর), বিশিষ্ট
ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক।
(মহাপরিচালক-পিএমএমআরসি, এমএসএইসআরসি, গুলশান-২, ঢাকা, বাংলাদেশ।
No comments:
Post a Comment